পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্বতাত্তিক স্থাপনা । । খননে উম্মুক্ত পাহাড়পুরের ধ্বংসাবশেষ হিমালয়ের দক্ষিণে সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ বিহারের পরিচয় বহন করছে। যুগ যুগ ধরে এ ধ্বংসাবশেষের উপরে বায়ু বাহিত ধূলা-বালি ক্রমান্বয়ে জমে এক বিশালাকার উচু ঢিবি বা পাহাড়ের রুপ পরিগ্রহ করে। সম্ভবত এভাবেই স্থানের নাম হয় পাহাড়পুর। ইংরেজী ১৯২৩ সাল হতে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত সময়ের খননের ফলে এখানে একটি গুপ্ত যুগের তাম্র শাসন (৪৯৭ খ্রি) সহ প্রস্তরলিপি প্রস্তর ও ব্রন্জ ভাস্কর্য , পোড়া মাটির ফলক চিত্র উৎকীর্ণ লিপিযুক্ত রোদ্র তাপে শুকানো মাটির সীল ,অলংকৃত ইট , বিভিন্ন ধাতব দ্রবাদি, রোপ্য মুদ্রা মাটির তৈরি বিভিন্ন পাত্র ইত্যাদি প্রচুর প্রত্বনির্দশন পাওয়া যায়।
উৎকীর্ণ লিপিযুক্ত মাটি সীলের পাঠোদ্ধোর হতে জানা যায় যে, এ বিহারের প্রকৃত নাম ছিল সোমপুর মহাবিহার (চাদের বিহার)। এ মহাবিহার পালবংশীয় দ্ধিতীয় রাজা ধর্মপাল (৭৭০-৮১০ খ্রিঃ)কতৃক নির্মিত। উল্লেখ্য যে, ১৯৮২ ইংরেজী সালে এবং পরবর্তী সময় পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কতিপয় ভিক্ষু কক্ষে গভীর খননের ফলে নিম্ন আবাস স্তরে একটি পোড়ামাটির মূর্তির মাথা, একটি তাম্র মুদ্রা ও অন্যান্য কতিপয় প্রত্ন দ্রব্যাদি পায়া যায়। এ সমস্ত দ্রব্যাদি বিশেষত পোড়ামটির মূর্তির মাথাটি গুপ্ত যুগের ভাস্কর্যের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আলোচ্য প্রত্ন নির্দশন ব্যতীত বৃহদকার কক্ষ বিশিষ্ট (১৬ ফুট×১৩ ফুট- ৬ ) একটি ইমারতের ধ্বংসাবশেষ উক্ত খননে উন্মুক্ত হয় ।বৃহদাকার এ ইমারতটি পাহাড়পুর তাম্র শাসনে উল্লেখিত জৈন বিহার বলে অনুমিত। এ বিষয়ে আরো নিশ্চিত হওযার জন্য আরো গভীর খনন, অনুসন্ধান সমীক্ষা প্রয়োজন।
পাহাড়পুর বিহারের উত্তর-দক্ষিণে ৯২২ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৯১৯ ফুট । বিহারের উতত্তর বাহুর মধ্যস্থলে অবস্থিত প্রধান ও আর্কষণীয় প্রবেশ পথ। বিহারের উম্মুক্ত আংগিনার চারপার্শ্বে চার বাহুতে ১৭৭ টি ভিক্ষু কক্ষ আছে। আংগিনার কেন্দ্রস্থলে সুউচ্চ মন্দির ও উহার অন্যান্য স্থানে বাহু থেকে নিবেদন স্তুপ, কেন্দ্রীয় মন্দীরের আনুকৃতি ছোট মন্দির , কূপ, রান্নাঘর ভোজনশালা ও ছোট ছোট মন্দির এবং অন্যান্য আট্রালিকার সমাবেশ খুবই চমৎকার। আর্কষণীয় কেন্দ্রীয় মন্দিরটি ক্রুশাকৃতি এবং ধাপে ধাপে উচু করে নির্মাণ করা হয়েছে।পোড়ামাটি ফলক চিত্র দ্ধারা মন্দিরের বর্হিদেয়াল মুখ সুশোভিত করা হয়েছে।
৯ম শতাব্দীর শেষ পর্ব হতে শুরু করে কতিপয় বিদেশী রাজাগণ এবং দিব্যো নামে এ দেশীয় এক কৈবর্ত সামন্ত নরপতি কর্তৃক পাল সাম্রাজ্য বার বার আক্রান্ত হয়। এভাবে পুন:আক্রমণের ফলে সোমপুর বিহারের যথেষ্ট ক্ষতি সাধিত হয়। প্রায় একই সময়ে বাংগাল সৈণ্যগণ পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ও মন্দির পুড়িয়ে দেন। খ্রীস্টিয় ১২ শতকে বাংলাদেশ সেন রাজাদের হস্তগত হয়। সেন রাজাগণ ব্রাম্মন ধর্মের গোড়া সমর্থক ছিলেন । এভাবে বারজকীয় পৃষ্টপোষকতার অভাবে পাহাড়পুরের বৌদ্ধ বিহারও মন্দির ক্রমে পরিত্যক্ত হয় এবং ভিক্ষু ও পূজারীগন পাহাড়পুর ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান।
তথ্য সূত্র: বাংলাদেশ প্রত্বতত্ত অধিদপ্তর কর্তক প্রকাশিত তথ্যকণিকা ।
মন্তব্য
ছবি তো দিলেননা। আমি কিছু ছবি দিয়ে লেখাটা স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দিই
...........................
Every Picture Tells a Story
সুন্দর ছবিগুলোর জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু ক্যাপশন কৈ ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
সাইকেল অফ সিভিলাইজেশনস! এক সময় বৌদ্ধ ধর্ম, অশোকের আর পাল রাজাদের দাপট, তারপর সেন রাজারা, তারপর লক্ষণ সেনের থেকে ইখতিয়ার উদ-দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী, তারপর এখন।
২০০ বছর পর?
নতুন মন্তব্য করুন