বৈশাখ তুমি কতটা রঙিন কতটা সুন্দর তা জেনেছি অনেক পরে...। খুব ছোটবেলায়
যখন ফ্রক পরে ছুটোছুটি করি তখন জানতাম না তুমি কি..?কেমন তোমার ধরন..? শুধু
বুঝতাম তুমি এমন কিছু, যে দিন মানুষ গুলো হঠাৎ চঞ্চল হয়ে উঠতো।
আমরা শুধু রঙিন বেলুন,চকলেট মিমি আর খেলনা দিয়েই পাড় করে দিতাম।সেদিম মা
মজার মজার রান্না করতেন আর আমরা খেয়ে হইচই করেই দিন শেষ করতাম যদিও
জানতাম না বৈশাখ তুমি কেমন..।
বয়ঃসন্ধির সময়টা নিজেকে গুটিয়ে রেখেছি ঘরের কোনে চারদেয়ালের ভেতর কিন্তু
অনুভব করতাম তোমাকে।মা-কে পিড়াপিড়ি করতাম পান্তা আর ইলিশের আয়োজন
করার জন্য।সেই পান্তা ইলিশ খেয়ে কেটে যেত অলস দুপুর তারপর বান্দায় বসে থাকা ,
মানুষ দেখা..রঙিন মানুষ । বৈশাখ তুমি এলে দেখতাম পাশের বাসার অনার্স শেষ করা
ছেলেটাকে নতুন পাঞ্জাবী পরে বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যেতে।ওপর তলার তরুনী
আপুটাকে দেখতাম শাড়ি পরে একগুচ্ছ ফুল হাতে ঝড়ের বেগে সিড়ি দিয়ে নেমে যেতে
,তাকিয়ে থাকতাম,কতোইনা সুন্দর লাগছিল আপুটাকে ...এরপরো কতবার দেখেছি
তাকে কিণ্তু সেই দিনের দেখা আজীবন চোখে ভেসে থাকবে । বৈশাখ... তখনো তুমি
আমার অত কাছের না হলেও বুঝতাম তুমি কিভাবে মানুষের ভেতরটা রাঙিয়ে
দিতে,সকল কষ্টকে দূরে ঠেলে প্রানের তারুন্যের উত্তাপ মেলে ধরতে...আমি অনুভব
করতাম তোমার উপস্থিতি ।
কৈশোর পেরিয়ে আজ আমিও তারুন্যে রেখেছি সুদৃঢ় পদচ্ছাপ , সকল অস্বস্থি, জড়তা
ঝেড়ে নতুন আমি..আজ তোমাকে আলিঙ্গনে আমার নেই সে পুরোনো লজ্জা..আজ
আমিও প্রস্তুত তোমার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে নিজেকে আরও একটি অনুভূতির
সাথে পরিচিত হয়ে নিজেকে আরও পরিপূর্ন করতে ।
তোমাকে বরণ করতে আমার প্রথম শাড়ি কেনা..নিজেকে আয়নায় কৈশোরের খোলোস
ছেড়ে তরুনী রূপে দেখা ...নিজেকে নিজের কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার
সূচনা তুমি...
এখন তোমাকে দেখি আরো কাছ থেকে এখনকার অনুভুতিতে তুমি আরো আপন আরো
পরিচিত..তোমার আগমনে কাটেনা আর অলস দুপুর , বসে থাকিনা বারান্দায় রঙিন
মানুষের পথ চেয়ে , আজ যে আমার সময় এসেছে তোমাকে বরণ করার..আজ যে আমার
সময় তোমার রঙে নিজেকে রঙিন মানুষ তৈরী করার ।
তুমি আসবে ...আমি আবার ছুটে যাব লাল-সাদা শাড়ি পরে জনসমুদ্রে তোমাকে বরণ
করতে
তুমি আসবে ... তোমার আগমনের খুশিতে গালে আঁকব রঙিন আল্পনা..
তুমি আসবে ... ঢাকের তালে তালে আবার নেচে উঠবো বন্ধুদের হাত ধরে...
তুমি আসবে ... পুরোনো গানটা আবার নতুন করে গাইবো ..এসো হে বৈশাখ..এসো
এসো
বৈশাখ তুমি শুনতে পাও তোমার আগমনের উত্তেজনায় তরুনীর বুকের হৃদপিন্ডের শব্দ?
আজ সেই স্পন্দন শুধু তরুনীর বুকের খাঁচার ভেতরে নেই ছড়িয়ে গেছে আকাশে,
বাতাসে, রঙিন ফুলে, মানুষের কলকাকলিতে সবখানে সবার মাঝে ..
এত দিনের অনুভবের সাথে আজ তুমি পরিচিত হবে নতুন করে আবার ...
..এসো হে বৈশাখ..এসো এসো........
(জয়িতা)
মন্তব্য
উত্তম।
তবে আগামীতে বানান আর ফরম্যাটটা একটু দেখার অনুরোধ রাখছি ।
ইয়ে,...ফরমেশনটা মনে হয় আপনার নজর এড়িয়ে গেছে।
...আর আপনার মন্তব্য আগে অনেক দেখলেও লেখা এই প্রথম দেখছি, ভালো লেগেছে।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
আপনি আমার লেখা আগেও পড়েছেন এবং মন্তব্যে বুয়েটিয়ান কীর্তন গেয়েছেন...
তবে বুয়েটিয়ান ভাই আপনার লেখা গুলো অনেক মজার হয়...
(জয়িতা)
লেখাটা সচলায়তনের বৈশাখ ই-বুকের জন্য লেখা , ছবি হাতে ছিলনা তাই দেওয়া হয়নি। আমি কোন লেখা পাঠানোর আগে কম পক্ষে ৫ বার পড়ে নেই এই লেখাতে আরো একটু সময় দেওয়া দরকার ছিল...
ধন্যবাদ আপনাদের মন্তব্যের জন্য...
(জয়িতা)
নতুন মন্তব্য করুন