হাসান ভাইয়ের সিনেমা আর আমাদের টুকি টাকি…
নাহার মনিকা
-আপনার মেয়েরা নাচের রিহার্সাল করলো?
-হ্যা।পহেলা বৈশাখ, ওরা প্রতিবছরই তো করে। আপনার মেয়ে নাচবে না?
-কি যে বলেন। আমার তিন মেয়ের কেউ কোনদিন নাচ করে? এই ছোটটা একটু তিড়িং বিড়িং করে। আরবী পড়তে চায় না। বড় দুইটার এই বয়সেই কোরান খতম, আর এর সাত হয়ে গেল এখনো দুই পাড়া শেষ না। নাচতে দিলে আর আরবী পড়ায় মন দিবে?
কিসের মধ্যে কি? আমি ভদ্র হাসি মুখে ঝুলিয়ে রাখি। আমার মেয়েরা আটোসাটো লিফটে আরো কোল ঘেষে দাঁড়ায়। ওরা ইতিমধ্যে জেনে গেছে কাদের সামনে ওরা আড়ষ্ঠ থাকবে। আমাকে কখনো শিখিয়ে পড়িয়ে দিতে হয়নি।
ভদ্রমহিলার মাথায় শাড়ীর সঙ্গে ম্যাচিং হিজাব। ফর্সা গায়ের রংএ টক টকে লাল লিপষ্টিক।সিল্কের শাড়ী।পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক মৃদুভাষী স্বামী।এই ভদ্রমহিলা বাসায় বাসায় আয়োজিত “হালাকা”তে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন।
আমার মেয়েরা এখানকার একটা কমিউনিটি সংগঠন এর রবিবারের স্কুলে বাংলা শিখতে যায়। যে ভদ্রমহিলা ওদেরকে বাংলা শেখান তাকে বলা আছে যে বাংলা ক্লাসের পর আমার কন্যাদের আরবী ক্লাসে ঢোকা নিষেধ। সিরিয়ান আরবী শিক্ষক মহিলাকে প্রায়ই দেখি, আসা যাওয়ার পথে। উনি আমাদেরকে অবাক নয়নে দেখেন- এ কেমন আজব প্রানী, আরবী শিখতে চায় না। আরবী আমাকে না ভাষা হিসেবে টানে, না ধর্মীয় কারণে টানে। সপ্ত ঝুলন্ত গীতি কবিতা আর দু একটা অনুবাদ ছাড়া এই ভাষার সাহিত্য ইত্যাদির সাথে আমি খুব একটা পরিচিত না, বরং দিন কে দিন মানুষের বিভেদ বাড়াতে রাজনীতিতে, ধর্মীয় কুসংস্কার দিয়ে নারী নির্যাতনে, আর সবচেয়ে বেশী আমাদের রাজাকার আল বদরদের কুতসিত চেহারায় ধর্মের ওজর দেখে দেখে দৈনন্দিন ধর্মচর্চায় আরবী ভাষার ব্যবহারের ওপর ও মন প্রসন্ন হতে চায় না ।
তো পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের দিন জোব্বা পরা আরবী শিক্ষক গ্রীন রুমের এক কোনায় নামাজ পড়ছেন, এপাশে লিটল ষ্টারদের মায়েরা তাদের মেকাপ দিচ্ছেন, শাড়ি পরাচ্ছেন। নামাজ শেষে ভদ্রমহিলা – শালোয়ার কামিজ পরা একজনকে যা বললেন তার তর্জমা হলো- শাড়ি পোশাকটি অনৈসলামিক। কাফেরের পোশাক। শালোয়ারকে উনি গ্রহন করবেন, শাড়িকে না।
যে দুই চারজন মা ছিলেন, তাদের সন্তানদের আল্লার কালাম শেখানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তির বিরোধিতার সাহস তাদের নাই। আমিই নিজেকে ছাই ফেলতে ভাঙ্গা কুলো ভেবে রেগে মেগে – তোমাকে কে অধিকার দিয়েছে পোশাক দিয়ে ধার্মিক আর কাফের নির্ধারন করতে? আমাদের দেশে তোমার চেয়ে বেশী পরহেজগার মা খালা আছেন যারা সারা জীবন শাড়ী পড়ে ধর্মকর্ম করেছেন।
আরবী শিক্ষক বেশ হেসে হেসে বললেন- না মানে, তোমাদের পেট বেরিয়ে যায়, পিঠ বেরিয়ে পড়ে। আর শাড়ি পরে যেখানে সেখানে নামাজ পড়া যায় না।
মর জ্বালা! শাড়ী এমন পোশাক যা দিয়ে খোলা যেমন যায়, ঢাকা ও তেমন যায়।তোমরা বাঙ্গালী নারী সৌন্দর্যের আরেক রহস্য এই পোশাকের কি বুঝবে? আর যেখানে সেখানে প্রার্থনা করতে হবে কেন? ধর্মকে ঘরের মধ্যে আর বুকের মধ্যে রাখোনা!
মহিলা আমার মারমুখী মূর্তি দেখে মেয়ের অসুখ ইত্যাদি বলে রণে ভংগ দেন। কিন্ত আমি এভাবে রেগে যেতে চাই না। আরবী শিক্ষকের সঙ্গে যদি আরো যুক্তি দিয়ে, রেফারেন্স দিয়ে কথা বলে তার ভুল ভাঙ্গানো যেতো! আমার তখন হাসান ভাইয়ের কথা মনে পড়ে।
হালাকায় যাওয়া ছাড়াও মহিলারা আছেন, হাল ফ্যাশানের কাপড় জামা পড়েন, হিন্দি সিনেমা দেখেন। ভালো চাকরী করেন। যার পর নাই প্রগতিশীল, কিন্তু একটা জায়গায় তারা কথাহীন। সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধর্মের কিংবা ধর্মকে ব্যবহারের কোন সমালোচনা তারা করেন না । তাদেরকে আমাদের নূরজাহান বা সোমালিয়ায় আয়শা ইব্রাহিম দুহলোর কথা বললে আতংকিত হওয়ার বদলে বড়জোর ঠোঁট উলটে বলেন- ঐ গুলা মোল্লাদের কাজ। প্রকারান্তরে বোঝাতে চান – মোল্লারা আল্লার বান্দা। তাদের সমালোচনা করা মানুষের শোভা পায় না। এবং কৌশলে গল্পের প্রসঙ্গ পাল্টে যায় গয়না গাটিতে।
এই সব সময়ে আমি কথা খুঁজে পাই না।
প্রবাসী, ঋনগ্রস্থ(অধিকাংশ সময়)মানুষ, যারা নিজ গৃহে শাকান্ন ভোজন করে না তাদের আত্মপরিচয়ের সংকট থাকা স্বাভাবিক। ধর্ম সেই বর্মের ভুমিকা পালন করে, সেটাও আমি বুঝতে চাই। কিন্ত এদের তো দিন আনতে পান্তা ফুরোয় না, এরা কেন কলেরা হলে ওলা দেবীর পূজো দেবেন? হারাম বাজনা গান বলে ছোট ছোট শিশুদের সুকুমারবৃত্তি মুচড়ে দেবেন?
আমার আবেগী যুক্তি এনাদেরকে ঘায়েল করবে না জানি, আমার তখন হাসান ভাইয়ের কথা মনে হয়।
হাসান ভাই হচ্ছেন হাসান মাহমুদ ।ইসলাম ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা আর কুসংস্কার নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। আমার মত হাল ছেড়ে দিয়ে একঘরে হয়ে যাওয়ায় উনি বিশ্বাস করেন না। হাসান ভাইয়ের মিশন – নির্ভর যোগ্য ইসলামী দলিল ঘেটে প্রমান করা যে কুস্ংস্কারগুলো আসলেই কুসংস্কার। চব্বিশ ঘন্টা ধ্যান জ্ঞান ইসলাম ধর্ম থেকে কুসংস্কার আর নারীর উপর অনাচার দূর করা। তার নেশা নিয়ে আমরা যারা কাছের, তাকে বকা ঝকা দেই। এত কাজ করলে শরীর টিকবে? তার কথা হচ্ছে- যুগ যুগ ধরে ধর্মের কারণে নারীর প্রতি যে অবিচার হয়েছে তার তিল মাত্র ঋনশোধের নিমিত্ত যদি হওয়া যায়…।নিরন্তর বইপত্র ঘেটে যাচ্ছেন। বিভিন্ন কনফারেন্সে ইসলামী পন্ডিতদের সঙ্গে বিতর্কে যাচ্ছেন, চ্যালেঞ্জ করছেন। শিশুর সরলতা নিয়ে ফোন করছেন সেসব প্রসঙ্গে বলতে।
আজকে তার ডকু সিনেমার লিংক পাঠালেন। হিল্লা বিবাহ বিষয়ে। আমরা ভাবি বাংলাদেশ কত এগিয়ে গেছে, মানুষ অনেক আধুনিক, কিসের ফতোয়া কিসের কি, দু একটা গ্রামে ট্রামে কখনো সখনো হয়, ওগুলোকেই মিডিয়া রং চড়ায়। কিন্তু আসলেই কি তাই?
হিল্লা সিনেমা> কাহিনী ঃ হাসান মাহমুদ
http://www.youtube.com/view_play_list?p=B0305803702E7AE7
মন্তব্য
সুন্দর লেখা, দরকারি লেখা।
ধন্যবাদ মূলত পাঠক।
হাসান মাহমুদ, ফতেমোল্লা নামে যিনি অধিক পরিচিত- তাঁর সত্য ভাষণ ও উপস্থাপনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে আস্তিক মোল্লা ও নাস্তিক মোল্লাদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন। আস্তিক মোল্লা যারা ধর্মকে ভুজং-ভাজং দিয়ে উপস্থাপন করে মানুষকে ভয় দেখিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে- ফতেমোল্লা তাদের গোড়ায় টান দিয়েছেন। আর এই ভুজং-ভাজং তুলে ধরে যারা নাস্তিকতার পাদ্রীপনা করে বেড়ায়, শুরুতে ভুল বুঝে তারা ফতেমোল্লাকে গুরুত্ব দিলেও মূল উদ্দেশ্যে ব্যাঘাত ঘটায় এখন তাদের সেই উৎসাহে ভাটা পড়েছে।
হাসান মাহমুদকে অভিবাদন। আপনাকেও ধন্যবাদ।
নাস্তিকতার পাদ্রীপনা'র ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলবেন? তাঁদের মূল উদ্দেশ্য কি অন্ধবিশ্বাস দূর করা নয়? সেক্ষেত্রে তো কঠিন যুদ্ধে একজন সহযোদ্ধা পেয়ে তাঁদের খুশি হওয়ার কথা। পশ্চিমবঙ্গের প্রবীর ঘোষের কথা জানি, তিনি সম্ভবতঃ স্বাগতই জানাবেন এইরকম প্রচেষ্টাকে।
'নাস্তিকতার পাদ্রীপনা' শব্দবন্ধটি আরেক সচল অমি পিয়ালের কাছ থেকে ধার করা। এদের বৈশিষ্ট্য হল এরা শুধু মোল্লাদের ভুজং-ভাজংকে হাইলাইট করে ধর্মের অসারতা প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন। হাসান মাহমুদ যেমন ধর্মে আসলে কী বলা আছে তার ব্যাখা দিয়ে মোল্লাদের খন্ডন করেন- এরা নাস্তিকতা প্রচারের জন্য এ অংশটি আড়াল রেখে মোল্লাদের বক্তব্যকেই প্রকৃত ধর্ম হিসেবে তুলে ধরতে সচেষ্ট থাকেন। আমি তাই এই দুই এক্সট্রিমের মধ্যে মূলগত কোন পার্থক্য দেখি না।
তানভীরের সাথে একমত ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আপনাকে ও ধন্যবাদ তানভীর।
খুব সত্যি কথা।
- হাসান মাহমুদ ওরফে ফতে মোল্লাকে সবসময়ই পছন্দ করি। তাঁকে বলবেন আমাদের জন্য সচলে লেখার জন্য। খুব ভালো লাগবে তাঁকে আমাদের মাঝে পেলে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনাকে ও ধ ন্যবাদ ধূসর গোধুলী।
হাসান মাহমুদকে নিশ্চয়ই বলবো সচলায়তনে লেখার জন্য।
ভাল লাগল
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
থ্যাংক ইউ!
অনেক অনেক ধন্যবাদ। ওই (ভদ্র) মহিলার হিজাবের সামনে বাচ্চাকে যে কোনো বাঙালি অনুষ্ঠানে নজরুলের "মূর্খেরা সব শোনো, মানুষ এনেছে ধর্ম, ধর্ম মানুষ আনেনি কোনো" আবৃত্তি করানোর চেষ্টা নিতে পারেন , তাতে হয়তো কাজ হবেন কিন্তু তার গা'টা একটু হলেও জ্বলবে, যেটা আমার এই ভণ্ডামি দেখলে নিরন্তরই জ্বলে। ওটুকুও তো প্রয়োজন না'কি?
আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??[/color]
একদম ঠিক কথা।
ধন্যবাদ আপনাকেও।
আমার সামান্য দু' পয়সা যোগ করছিঃ-
ফেসবুকে এই সিনেমার প্রোমো দেখেছি । বলা হয়েছে- হিল্লা বিয়ে নামের এই জঘন্য 'ইসলাম বিরোধী' প্রথা বাংলাদেশের সমাজে জেকে বসে আছে ।
যে কোন বিচার বিবেচনায়, হিল্লা বিয়ে একটি অমানবিক,অশ্লীল,বর্বর প্রথা । কিন্তু এটি কি আসলেই 'ইসলাম বিরোধী'? কথিত মানবতাবাদী, রুচিশীল , শিক্ষিত ধার্মিকেরা প্রতিষ্ঠা করতে চান এরকম একটা বর্বর প্রথা ইসলামে থাকতেই পারেনা বরং অশিক্ষিত কাঠমোল্লারাই ইসলামের নামে এইসব প্রথা জারী করেছে ।
সত্যি কি তাই?
পবিত্র ধর্মগ্রন্থের সূরা বাকার ২৩০ নং আয়াত কি বলে?
"তারপর ঐ স্ত্রীকে যদি সে তালাক দেয় তবে যে-পর্যন্ত না ঐ স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিবাহ করছে তার পক্ষে সে বৈধ হবে না। তারপর যদি সে (দ্বিতীয় স্বামী) তাকে তালাক দেয় তবে তাদের আবার মিলনে কারও কোনো দোষ নেই, যদি দুজনে ভাবে যে তারা আল্লাহ্র নির্দেশ বজায় রেখে চলতে পারবে। এসব আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমারেখা; জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ্ এগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন ।"
নিশ্চয়ই আমার বুঝতে ভুল হচ্ছে । আমাকে কি কেউ দয়া করে বুঝিয়ে বলবেন- পবিত্র গ্রন্থে পদ্ধতি বলে দেয়ার পর এই জঘন্য প্রথাটি
'ইসলাম বিরোধী' হয় কি করে?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমিও সামান্য দুই পয়সা যোগ করে প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করছি-
ইসলামে ‘হিল্লা বিয়ে’ বলে কিছু নাই। এখন যে আয়াতের কথা আপনি বলেছেন তা ঠিকই আছে। কিন্তু আগে তার উদ্দেশ্যটাও বোঝা দরকার। ইসলামে যে সব কাজ অনুমোদিত বা ‘হালাল’ বলে গণ্য হয়, তার মধ্যে হালাল কিন্তু নিন্দনীয় কাজ হচ্ছে এই ‘তালাক’। বলা হয়েছে একান্ত নিরূপায় অবস্থায় শুধু তালাক কার্যকর করার জন্য। ইসলামপূর্ব অনেক ধর্মেই তালাকের কোন ব্যবস্থা ছিল না- যেমন খ্রীস্টধর্ম, হিন্দু ধর্ম ইত্যাদি। ফলে নারীকে অনেক সময় আজীবন পুরুষের হাতে নির্যাতিত হয়েছে। হিন্দু ধর্মে রাজা রামমোহনের সময় পর্যন্ত ‘সতীদাহ প্রথা’ বলবৎ ছিল। খ্রীষ্টধর্মে প্রটেস্টান্টরা অনেক পরে তালাক চালু করেছে।
ইসলামে তালাক শুরু থেকেই আছে। কিন্তু সেইসাথে পুরুষ যেন হুটহাট করে তালাক না দেয়, সেজন্য এটাকে কঠোরও করা হয়েছে। যে আয়াত উদ্ধৃত করেছেন তার মাধ্যমেই পুরুষকে সতর্ক করা হয়েছে- যদি কাউকে তালাক দাও, তবে তাকে সাথে সাথে আর বিয়ে করতে পারবে না যতদিন না সে অন্য আরেকটি বিয়ে থেকে তালাকপ্রাপ্ত হয়। ঐ আয়াতে এটাই বলা হয়েছে।
এখন একটু কমনসেন্স খাটাই। আমরা কি কাউকে তালাক দেই তাকে পুনরায় বিয়ে করার জন্য? অবশ্যই না। কাজেই রাগের মাথায় হুটহাট করে তালাক দেয়া ছাড়া (যেটা ইসলামে করাও যায় না, কেন পরে বিস্তারিত বলছি) ভাবনা-চিন্তা করে ডিসিশান নিলে এ আয়াত কোন এফেক্ট করার কথা না।
এখন দেখেন মোল্লারা কীভাবে এ আয়াতের অপব্যবহার করছে। গ্রামের অশিক্ষিত লোকেরা রাগের মাথায় মুখে হুটহাট তালাক দেয়। পরে আবার তারা স্ত্রীকে ফিরিয়েও নিতে চায় (সিনেমায় যেমন দেখানো হয়েছে)। মোল্লারা সুযোগ বুঝে এ জায়গায় ‘হিল্লা বিয়ে’ চালু করেছে। ভাড়া করা একজনের সাথে হিল্লা বিয়ে দিয়ে তার কাছ থেকে তালাক নিয়ে আবার প্রাক্তন স্বামীকে বিয়ে করার এ প্রথার নামই ‘হিল্লা বিয়ে’।
হিল্লা বিয়ে অবশ্যই ইসলাম বিরোধী। কারণ-
প্রথমত, ইসলামে তালাক এই রকম মুখের কথায় হুটহাট দেয়া যায় না। বাংলাদেশের গ্রামে যে ‘তিন তালাক’ প্রচলিত সেটা ইসলামের দৃষ্টিতে ‘জাহেলিয়াত’ বা ‘বর্বর’ যুগের নিয়ম। ইসলামে তিনটি ধাপে তালাক সম্পন্ন হতে হয় এবং শিয়া মতানুযায়ী কমপক্ষে দু’জন স্বাক্ষী থাকতে হয়। তালাকের প্রথম ধাপ হল এর ঘোষণা। দ্বিতীয় ধাপ হল ইদ্দতকালীন সময় পর্যন্ত পুর্নমিলনের চেষ্টা। এ মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে তারা সমঝোতায় আসতে পারে, তখন আর তালাক কার্যকর হবে না। দ্বিতীয় ধাপে সমঝোতা ব্যর্থ হলে শেষ ধাপে গিয়ে তালাক কার্যকর হবে। [url=http://en.wikipedia.org/wiki/Talaq_(Nikah)]উইকি নিবন্ধ[/url] থেকে বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন। কিন্তু ‘হিল্লা বিয়েতে’ তালাকের এসব নিয়ম কিছুই মানা হয় না।
দ্বিতীয়ত, যার সাথে দ্বিতীয় বিয়ে হবে তা অবশ্যই স্থায়ী ভিত্তিতে হতে হবে। কারো সাথে চুক্তিভিত্তিক এক মাস বা এক বছরের জন্য বিয়ে করলে বিয়ে হবে না। (শরীয়া আইন# ২৫৩৬)। কিন্তু হিল্লা বিয়ে ক্ষণস্থায়ী উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়, যা 'হারাম'।
তৃতীয়ত, ইসলামে ‘নিয়ত’ বা উদ্দেশ্য হল কোন কাজের একটা বিশাল অনুষঙ্গ। নিয়ত শুদ্ধ থাকলে কোন কাজে সফল না হলেও তা থেকে পূর্ণ সওয়াব পাওয়া যায়। হিল্লা বিয়ের নিয়তটাই তো আদতে খারাপ। কারো দুর্বল অবস্থার সুযোগ নেয়া ইসলামে হারাম।
কাজেই হিল্লা বিয়ে যে ‘ইসলাম বিরোধী’ তাতে মনে হয় কোন সন্দেহের অবকাশ থাকতে পারে না।
ঠিকাছে তানভীর ।
মুখে তিনবার তালাক বললেই তালাক হয়ে যায়- এটা ইসলামসম্মত নয়, তালাক আসলে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, হুটহাট-ঝোঁকের বশে তালাক হয়না- সবই মানলাম- কিন্তু 'হিল্লা বিয়ে' কে অনুমোদন করা কোরানের আয়াত এতে ভয়েড হয় কি করে?
'তালাক' এবং ' হিল্লা বিয়ে' কি দুটো আলাদা বিষয় নয় । 'তালাক' মানে একজন স্বামী তার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করছে- আপনি বর্ণনা করেছেন এই 'পরিত্যাগ' এর 'ইসলামী প্রক্রিয়া' । এই প্রক্রিয়ায় আমার কোন আপত্তি নেই ।
'হিল্লা বিয়ে' হলো একটা অপশন । তালাক দেয়া স্ত্রীকে 'যদি' স্বামী পুনঃ বিবাহ করতে চায় তাহলে যে প্রক্রিয়া মেনে এই 'পুনঃ বিবাহ' করতে হবে সেটাই 'হিল্লা বিয়ে'- তাইনা?
আপনিই বলছেন 'তালাক' নিন্দনীয় তবে 'নিষিদ্ধ' নয় । কেউ চাইলে 'ইসলামী প্রক্রিয়া' মেনে তালাক দিতে পারে । ঠিক তেমনি 'তালাক' দেয়ার পর কেউ চাইলে পরিত্যাক্ত স্ত্রীকে পুনঃ বিবাহ করতে ও পারে( হয়তো এটা ও নিন্দনীয় তবে নিষিদ্ধ নয়)
এবার কেউ যদি তার 'তালাক' দেয়া স্ত্রীকে পুনঃ বিবাহ করতে চায় সেটা তো ইসলাম বিরোধী নয়, নাকি?
কিন্তু এই পুনঃ বিবাহ কি রুপে হবে?
ধরেন এক কোটি বিয়ের ক্ষেত্রে এক হাজার তালাক এর মতো নিন্দনীয় কিন্তু নিষিদ্ধ নয় ঘটনা ঘটলো, সেই এক হাজার তালাকের থেকে মাত্র একটি নিন্দনীয় কিন্তু নিষিদ্ধ নয় পুনঃ বিবাহের ঘটনা ঘটবে- সেই একটি ঘটনা ঘটার প্রক্রিয়া কি?
কোরান মুসলমানদের জীবন বিধান, সেই জীবন বিধানে একেবারে স্পষ্ট এই প্রক্রিয়ার বর্ননা দেয়া আছেঃ-
তারপর ঐ স্ত্রীকে যদি সে তালাক দেয় তবে যে-পর্যন্ত না ঐ স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিবাহ করছে তার পক্ষে সে বৈধ হবে না।
তাহলে?
একজন যদি তার তালাক দেয়া স্ত্রীকে পুনরায় বৈধরুপে পেতে চায় তাহলে ঐ স্ত্রীর আরেক বিয়ের না করার কোন সুযোগ আছে? ঐ মধ্যবর্তী বিয়ে না করে সাবেক স্বামীর কাছে ফিরে আসা কি 'ইসলাম সম্মত' হবে?
এই মধ্যবর্তী বিয়েই তো 'হিল্লা বিয়ে' তাইনা?
তাহলে 'হিল্লা বিয়ে' - ইসলাম বিরোধী এই তথ্য কি আসলেই সত্য ?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
মধ্যবর্তী বিয়ে আর 'হিল্লা বিয়ে' এক নয়। মধ্যবর্তী বিয়েকে হতে হবে পার্মানেন্ট, প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরে আসার উদ্দেশ্যে নয়। সেখানে যদি যৌক্তিক কারণে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তালাক হয় বা দ্বিতীয় স্বামী মারা যায়, তবেই শুধু স্ত্রী আবার প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরে যেতে পারে। অপরদিকে 'হিল্লা বিয়ে'ই দেয়া হয় চুক্তিভিত্তিক প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরে যাবার উদ্দেশ্যে, যা 'হারাম'।
তালাক ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ন। কারণ হিল্লা বিয়েতে প্রধানত মুখের তালাককে তালাক ধরে নেয়া হয়, যা ইসলামে বৈধ নয়। স্বামী মুখে তালাক বললেই তালাক হয়ে যায় না। স্ত্রীর ইদ্দতকালীন সময়ে দু'জন সমঝোতায় এসে তালাক ফিরিয়ে নেয়া যায়। কাজেই কেউ যদি একবার তালাক দিতে মনস্থির করে, কিন্তু পরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চায়, ইদ্দতকালীন মধ্যবর্তী সময়ে সে ফিরিয়ে নিতে পারে। তার জন্য স্ত্রীর 'মধ্যবর্তী বিয়ে' বা কোন হিল্লা বিয়ের প্রয়োজন হয় না। এত সময় নিয়েও যদি সে তালাক দেয়, তবে তার পুনরায় তাকে প্রয়োজন হবার তো কথা নয়। তালাক ব্যাপারটা ছেলেখেলা নয় বলেই, এইটুকু কঠোরতার বিধান রাখা হয়েছে। এই বিধানের মাধ্যমে প্রকারান্তরে নারীই কি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো না- যে তুমি তাকে তালাক দিতে পার, কিন্তু তাকে আবার ফিরে পেতে হলে অনেক অসাধ্য সাধন করতে হবে। আমি তো ব্যাপারটাকে এভাবেই দেখি।
আপনি আমাকে একটা সহজ বিষয় কি বুঝাতে পারেন তানভীর?
ধরা যাক X(পুরুষ) ও Y( স্ত্রী) ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী এক দম্পত্তি । যে কোন কারনেই তাদের তালাক হলো, এবং একেবারে ইসলামী বিধিবিধান ও প্রক্রিয়া মেনেই তাদের তালাক হলো ।
তালাকের পর যে কোন কারনেই আবার X(পুরুষ) ও Y( স্ত্রী) সিদ্ধান্ত নিলো তারা পুনরায় দাম্পত্য জীবন শুরু করবে( ইসলাম উৎসাহিত না করলে ও কিন্তু এইরকম বিষয় নিষিদ্ধ করছেনা, যেমন দাসপ্রথা উৎসাহিত না করলে ও নিষিদ্ধ করেনি) ।
এবার X(পুরুষ) ও Y( স্ত্রী) কিভাবে ইসলামের বিধিবিধান মেনে পুনরায় সংসার শুরু করতে পারে?
Y কে আবার বিয়ে বসতে হবে Z এর কাছে (বসতেই হবে যদি ও আসলে তার ইচ্ছে X এর কাছে ফিরে যাওয়া- এই মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছেন? ধর্ম কিন্তু এটা বুঝেনা) এবং X,Y দুজনকেই অপেক্ষা করতে হবে কখন Z, Y তালাক দেয় । এ ছাড়া কি আর কোন ইসলামী বিধান আপনার জানা আছে?
আর টোটাল সাফারিংটা কার হচ্ছে? মেয়েটা একবার তালাক পাচ্ছে X এর কাছ থেকে, আবার বিয়ে হতে হচ্ছে Z এর সাথে, তারপর অপেক্ষা করতে হচ্ছে কবে Z এর কাছ থেকে তালাক পাওয়া যায়, তারপর আবার X এর সাথে পুনঃ বিবাহ ।
এখানে X মিয়ার সাফারিংটা কোথায়? নিজের সাবেক স্ত্রী'র আরেকজনের বৌ হয়ে যাওয়ার পুরুষতান্ত্রিক মর্ষকামীতা ছাড়া?
তবু যদি আপনার মনে হয়
আমার কাছে এটাকে নারীদের অপমান করার জন্য আর সব ধর্মীয় বিধানের মতোই একটি বলে মনে হয়, এর বেশী কিছু নয় ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
X মিয়া Y কে বুঝেশুনে তালাক দিলে Y-এর আবার X-এর কাছে ফিরে যাবার কী প্রয়োজন থাকতে পারে আমি তো সেটাই বুঝতে পারছি না। তালাক দিয়ে পুরুষটি তো নারীটিকে অপমানই করল (যদি না মেয়েটি তালাক চেয়ে থাকে)। যে তাকে তালাক দিয়ে সমাজে অপমান করল, তার কাছে সে আবার ফিরে যেতে চাইবে কেন? উত্তরটা অবশ্য আপনিই দিয়েছেন-
X মিয়ার কোন সাফারিং নাই দেখেই তো আমি Y-এর আবার X-এর কাছে যাওয়ার কোন প্রয়োজন দেখছি না। X- Y কে তালাকই দিয়েছে হয়তো W-কে বিয়ে করার জন্য। তখন Y, Z-কেই বিয়ে করতে চাইবে বা কখনো বিয়ে নাও করতে পারে। আর X মিয়ার যদি সত্যিই Y-এর জন্য কোন ফিলিংস থাকে, তবে তার সুযোগও ছিল নির্দিষ্ট সময়ে Y-কে ফিরিয়ে আনার।
তবে আসল কথা হল হিল্লা বিয়ে 'ইসলাম বিরোধী'। ওটাই তো মূল প্রশ্ন ছিল নাকি? আর ইসলাম হল মধ্যপন্থী ধর্ম। আইনে থাকতে পারে অনেক কিছুই, কিন্তু মানুষের জন্যই তো আইন। কারো কোন 'হক' যদি নষ্ট না হয়, তবে তালাকের পর যদি আবার কোন দম্পতি সংসার করতে চায় আমি তো কোন ক্ষতি দেখি না। বলা হয়- 'অযৌক্তিক কারণে যদি তালাক হয়, তবে তাতে খোদার আরশ কেঁপে ওঠে'। একটা সংসার ভাঙ্গার জন্যই তো তা হয়। সংসার যেন সহযে না ভাঙে সেজন্যই তো ঐ বিধান কোরানে রাখা হয়েছে। এখন কেউ যদি ভাঙা সংসার আবার জোড়া লাগাতে চায়, তাতে স্রষ্টার বেজার হওয়ার কোন কারণ দেখি না।
কেউ যদি ভাঙ্গা সংসার আবার জোড়া লাগাতে চায় স্রষ্টার বেজার হওয়ার কোন কারন তো আমি ও দেখিনা আপনার মতোই ।
মানুষ তো প্রোগ্রাম করা রোবট নয় যে তার ভুল হবেনা কিংবা একবার নেয়া সিদ্ধান্ত পরে তার কাছে জরুরী মনে হবেনা । বিষয়টা যাতে ডালভাত না হয়ে যায় তারজন্য সতর্কতামুলক বিধান থাকাটা ও অযৌক্তিক নয় কিন্তু আগের স্বামীর কাছে ফিরে আসতে হলে অন্য আরেকজনের কাছে বিয়ে বসতে হবে- এই বিধান তো স্রেফ বর্বরতা ।
ক্ষতি তো আমি ও দেখিনা । কিন্তু কোরানের ঐ আয়াত? আপনি আমি ক্ষতি না দেখে এরকম কোন দম্পত্তিকে কি ঐ আয়াতে বর্নিত বিধান-
অমান্য করে আবার সংসার করতে বলতে পারি?
এরকম বলা কি 'ইসলাম বিরোধী' হবেনা ?
আমার সহজ কথা- শিক্ষিত মুসলমানরা কেনো কাঠমোল্লাদের উপর কেবল দোষ চাপাচ্ছেন? যেখানে কোরানে এই বিধান স্পষ্ট উল্লেখ আছে , সাহস থাকলে এই বিধানের বিরোধীতা করেন । বলেন যে- কোরানে থাকলে ও এই বিধান গ্রহনযোগ্য নয় । খামোখা সিনেমাটিনেমা বানিয়ে কাঠমোল্লাদের স্কেপগোট বানানো কেনো?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
একটু ভুল শোধরাতে চাই... খ্রীষ্ট ধর্মে কেউ তালাক চালু করে নাই.. বাইবেলে স্পষ্ট বলা আছে তালাক বলে কোন "ধারনা" গ্রহণযোগ্য নয় যদিনা কেউ ব্যাভিচারী হয়...
সামাজিকভাবে হয়তো গ্রহণযোগ্য করে তোলা হয়েছে, কিন্তু প্রটেস্টেন্টরা যে বাইবেল অনুসরণ করে তাতেও বলা আছে,-
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় হাসান ভাইয়ের (হাসান মাহমুদ ওরফে ফতেমোল্লা ) ইসলাম ও শরিয়া বই থেকে হিলা ও তালাক অধ্যায় তুলে দিলাম -
হিলা বিয়ে ও তাৎক্ষণিক তালাক
(“একসাথে তিন-তালাক বা রাগের মাথায় তালাক বৈধ নয়”− বাংলাদেশের
শারিয়া-তত্ত্বগুরু শাহ্ আব্দুল হান্নান - খবর আলোচনা ফোরাম -০৮ ও ১০ জ ুলাই,
৩৮ মুক্তিসন (২০০৮)।
হিলা বিয়ে জানেন না এমন বাংলাদেশী হয়ত একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বাংলায় এটা কোনকালেই ছিল না কিন্তু এখন গত পনেরো বিশ বছর ধরে এটা খবরের
কাগজে প্রায়ই ওঠে। গ্রাম-গঞ্জের মুরুব্বীরা মিলে ফতোয়ার তাৎক্ষণিক আদালতে বিভিন্ন
মামলার শারিয়া-মাফিক বিচার করে রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রীয় বৈধতা না থাকলেও সে-রায়
প্রচণ্ড সামাজিক শক্তিতে অপরাধীর ওপরে প্রয়োগ করা হয়। হিলা হল এরই একধরনের
শারিয়া-মামলা যাতে কোন কারণে শারিয়া-আদালত কোন দম্পতির বিয়ে বাতিল ঘোষণা
করেন। তারপর তাদের আবার বিয়ে দেবার শর্ত হিসেবে স্ত্রীকে অন্য লোকের সাথে বিয়ে ও
সহবাসে বাধ্য করেন। দ্বিতীয় স্বামী স্বেচ্ছায় তালাক দিলে তবে সে আবার আগের স্বামীকে
বিয়ে করতে পারে। এটা ঘটে প্রধানত স্বামী রাগের মাথায় স্ত্রীকে একসাথে তিনবার তালাক
বলে ফেলেছে বলে, তার কথা শোনার সাক্ষী কখনো থাকে, কখনো থাকে না।
কয়েকমাস আগে ভারতে খুব হৈহল্লর হয়েছিল কারণ এক স্বামী ঘুমের ঘোরে
তিনবার তালাক বলে ফেলেছিল। এ-খবর চাউর হলে স্থানীয় মওলানারা তাদের
বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন। বাংলাদেশে এমনও হয়েছে যে, কোন নারী প্রথম
স্বামী থেকে তালাক হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে কয়েকবছর ঘর-সংসার করার পর হঠাৎ
মুরুব্বীরা ঘোষণা দিয়েছেন, কোন কারণে আগের তালাক বৈধ নয়। সুতরাং দ্বিতীয়
স্বামীর সাথে স্ত্রীর বিয়েও অবৈধ বলে তারা দৈহিক সংসর্গের অপরাধে অপরাধী। অনেক
ঘটনার এ-সব দলিল ধরা আছে 'শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র'-এর বইতে 'ফতোয়া
১৯৯১-১৯৯৫'। এ অপরাধে শারিয়া আইন হল বিবাহিত / বিবাহিতাদের জন্য
জনসমক্ষে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড, অবিবাহিতা / অবিবাহিতাদের জন্য চাবুক।
অবৈধ সম্পর্কের শাস্তির আইনটা কোরাণ-মাফিক কিনা তা অন্য নিবন্ধে
দেখিয়েছি।
এবারে তাৎক্ষণিক তালাকের কথায় আসা যাক। সুরা বাকারা আয়াত
১২৯ মাফিক তালাক দিতে চাইলে স্বামীকে অন্তত দু'বার 'তালাক' উচ্চারণ করতে
হয়, তারপর ইদ্দত পার হলে আর উচ্চারণ না করলেও তৃতীয় তালাক প্রয়োগ হয়ে
বিয়ে বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু সে উচ্চারণ একসাথে তিনবার করলে তালাক পুরো
হয় কিনা সেটাই প্রশড়ব। কারণ হিলা বিয়ের শুরুটাই সাধারণত হয় সেটা দিয়ে। তাই
চলুন আমরা দেখি এ-ব্যাপারে শারিয়া, রসুল ও কোরাণ কি বলে।“স্বামী তাহার স্ত্রীকে একই সময়ে একই বাক্যে অথবা পৃথক পৃথক সময় ও বাক্যে তিন-তালাক দিলে তৎক্ষণাৎ বিবাহবন্ধন ছিনড়ব হইয়া যায় এবং স্বামী তাহাকে ফিরাইয়া লইতে পারে না ... স্বামীর সুস্পষ্ট বাক্যে অথবা পরোক্ষ বক্তব্যে অথবা ইশারা-ইঙ্গিতে অথবা লিখিতভাবে প্রদত্ত তালাক সঙ্ঘটিত হইবে ... তালাক বলার সময় স্বামীর মনের সংখ্যা বা দেখানো আঙুল দিয়া তালাকের সংখ্যা ধরা যায় ...
যদি স্বামী বলে তোমাকে তালাক দিলাম, তবে বলিবার সময় স্বামীর মনে যে সংখ্যা
থাকে তাহাই বলবৎ হইবে” সূত্র ১।
অর্থাৎ শারিয়া আইনে স্বামী তার স্ত্রীকে তাৎক্ষণিক পুরো তালাক দিতে পারে। কিন্তু রসুলের কিছু হাদিসে আমরা দেখতে পাই উল্টোটা, যেমন ঃ
(ক) “এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন-তালাক একসাথে দিয়েছে শুনে রসুল (দঃ) রাগে
দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, তোমরা কি আল−াহর কিতাবের প্রতি ঠাট্টা করছ?
অথচ আমি এখনও তোমাদের মধ্যেই রয়েছি ! ... (অনেক ইমামের নাম) এহাদি
সকে মুসলিম শরিফের সূত্রে সঠিক বলেছেন” − সূত্র ২।
(খ) “এক সাহাবি তার স্ত্রীকে একসাথে তিন-তালাক বলেছে শুনে রসুল (দঃ)
বললেন − ‘এই তিন তালাক মিলে হল এক-তালাক। ইচ্ছে হলে এই তালাক
বাতিল করতে পার।’ − সূত্র ৩।
এ-ব্যাপারে বিপরীত হাদিসও আছে, যেমন, “একই সঙ্গে তিন-তালাক দিয়ে নিষ্কৃতি
লাভ করা যদিও রসুল (সঃ)-এর অসন্তুষ্টির কারণ, যা পূর্ববর্তী বর্ণনায় উলে−খ করা
হয়েছে, এ-জন্য সমগ্র উম্মত একবাক্যে একে নিকৃষ্ট পন্থা বলে উলে−খ করেছে এবং
কেউ কেউ নাজায়েযও বলেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যদি কেউ এ পদক্ষেপ নেয়, তবে
এর ফলাফলও তাই হবে বৈধ পথে অগ্রসর হলে যা হয়। অর্থাৎ তিন-তালাক হয়ে
যাবে, এবং শুধু প্রত্যাহার নয়, বিবাহবন্ধন নবায়নের সুযোগও আর থাকবে না...
হুজুর (সঃ)-এর মীমাংসাই এ-ব্যাপারে বড় প্রমাণ যে, তিনি অসন্তুষ্ট হয়েও তিন-তালাক
কার্যকরী করেছেন। হাদিস গ্রন্থে অনুরূপ বহু ঘটনার বর্ণনা রয়েছে” − সূত্র ৪।
অর্থাৎ, হাদিসে আমরা একই ব্যাপারে বিপরীত কথা পাচ্ছি, শারিয়া-সমর্থকদের
মধ্যেই এ-ব্যাপারে মতভেদ আছে। এটা নূতন কিছু নয়, হাদিসে এ-রকম বহু স্ব-
বিরোধীতা আছে। কিন্তু তালাকের মত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বিপরীত সুনড়বত আমাদের
জন্য যতটা লজ্জার কথা তার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক। ভারতের মুসলিম ল’ বোর্ডও
২৬শে ডিসেম্বর ২০০৫ তারিখে বলেছে, “এই হঠাৎ-তালাক হল গুনাহ্।” তাঁরা এও
বলেছেন, গুনাহ্ হলেও তাৎক্ষণিক তালাক বৈধ। এইসব উল্টোপাল্টা কথার জন্য
সেখানে নারীরা উইমেন মুসলিম ল’ বোর্ড বানিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি যে-কর্ম
গুনাহ্, তার ফলাফল বৈধ হতে পারে না।
কখনো কখনো স্বামী পরে দাবি করে যে, আসলে তালাক দেবার নিয়ত তার ছিল
না, ওটা রাগের মাথায় মুখ দিয়ে বের হয়ে গেছে। কিন্তু তাতে ফল হয় না, কারণ
হিসেবে বলা আছে − “রসুল (সঃ) এরশাদ করেছেন তিনটি বিষয় এমন রয়েছে যে,
হাসি-তামাশার মাধ্যমে করা ও বাস্তবে করা দুই-ই সমান। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে
তালাক...হাসি-ঠাট্টার ছলে হলেও এবং অন্তরে বিয়ে, তালাক ও তালাক-প্রত্যাহারের
ইচ্ছা না থাকলেও মুখের কথা দ্বারা বিয়ে, তালাক এবং প্রত্যাহার বাস্তবায়িত হয়ে
যাবে...জবরদস্তি অবস্থায় যদিও সে তালাক দিতে আন্তরিকভাবে সম্মত ছিল না,
অক্ষম হয়ে তালাক শব্দ বলে দিয়েছে, তবুও তালাক হয়ে যাবে” − সূত্র ৫।
আমরা এটা মানি না। এ-আইনও আছে যে, স্বামী যদি অত্যাচারের চাপে, বা নেশার
ঘোরে, বা রোগের কষ্টে অধীর হয়ে, বা হাসি-ঠাট্টায়, নোট লিখে বা টেলিফোনের
অ্যান্সারিং মেশিনেও তালাক বলে রাখে তবু তালাক পুরো হয়ে যায় − সূত্র ৬।
আমরা এটাও মানি না। ভারতের ও মালয়েশিয়ার শারিয়া আইনে এটা চালু আছে,
এ-মামলার দলিলও আমাদের কাছে আছে। এতে বহু নারীর জীবন ধ্বংস হয়।
কিন্তু মুসলিম নারীর জীবন ও সন্তান-সংসার এতটুকু সুতোর ওপর ঝুলে থাকতে
পারে না এবং মাতৃজাতিকে এ-ভাবে অপমান পঙ্গু করে কোন জাতি উনড়বতি করতে
পারে না। মানুষ তো মানুষ-ই, নবী-রসুল তো নয়। মানুষ রাগের মাথায় ভুল
করতেই পারে, তাকে সে ভুল সংশোধনের সুযোগ দিয়ে ভালমানুষ বানানোই
ইসলাম। অনেক কঠিন অপরাধের তওবার সুযোগ দিয়েছে ইসলাম, দিয়েছেন রসুল
(সঃ)। তাই, মুখ ফস্কে দু’টো কথা বের হয়ে গেলে তার আর মাপ নেই, এটা হতে পারে
না। নিরপরাধ নারীর জীবন ধ্বংস করে কিতাবের অক্ষর বাঁচানোটা ইসলাম-বিরোধী।
দু’পক্ষের আইনই দেখলাম আমরা। এবার মূল দলিলে আসি। আসলে শারিয়ার
এ-আইন বানানো হয়েছে নবীজীর অনেক পরে। এ-কথা বলেছেন কিছু বিশ্ব-
বিখ্যাত শারিয়া-সমর্থকরাই। যেমন, “নবীজীর মৃত্যুর বহু পরে তালাকের এক নূতন
নিয়ম দেখা যায়। স্বামী একসাথে তিন-তালাক উচ্চারণ করে বা লিখিয়া দেয়। এই
তালাকে অনুতাপ বা পুনর্বিবেচনার সুযোগ নাই। অজ্ঞ মুসলমানেরা এইভাবে গুনাহ্
করে। নবীজী তীব্রভাবে ইহাতে বাধা দিয়াছেন” − সূত্র ৭। আরও দেখুন −
“নবীজীর সময় থেকে শুরু করে হজরত আবু বকর ও হজরত ওমরের সময় পর্যন্ত
একসাথে তিন-তালাক উচ্চারণকে এক-তালাক ধরা হত। কিন্তু যেহেতু লোকে
তাড়াতাড়ি ব্যাপারটার ফয়সালা চাইত তাই হজরত ওমর একসাথে তিন-তালাককে
বৈধ করেন এবং এই আইন চালু করেন” − সূত্র ৮।
এই একই কথা বলেছেন অন্যান্য বহু ইসলামি বিশেষজ্ঞও। ইতিহাসে পাওয়া যায় কেউ তিন-তালাকএকসাথে দিলে হজরত ওমর সেই স্বামীকে শাস্তিও দিয়েছেন। কিন্তু তিন-তালাক দেনেওয়ালা স্বামীর কোন শাস্তির আইন কোন শারিয়া কেতাবেই নেই। কারণ
আাইনটা পুরুষের পক্ষে পুরুষেরই বানানো।
তাৎক্ষণিক-তালাকে বিপরীত দু’ধরনের হাদিস থাকায় সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ব-মুসলিমের অসুবিধে হয়েছে। হবারই কথা। সহি হাদিসে এমন বৈপরীত্য আছে শত শত। এ-ক্ষেত্রে কি করতে হবে তা ইমাম শাফি’ বলেছেন ঃ “পরস্পর-বিরোধী দুইটি হাদিসের মধ্যে কোন্টি বেশি নির্ভরযোগ্য তাহার বিচার অন্য সুনড়বত দ্বারা বা কোরাণ দ্বারা হইবে” − সূত্র ৯।
এবার তাহলে কোরাণ
এ-কথা সবাই স্বীকার করবেন যে, অপরাধ হোক বা না-হোক, সেটা করেছে স্বামী।
অথচ হঠাৎ-তালাক হলে নিরপরাধ স্ত্রীর জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। সে হারায় তার
স্বামী-সংসার ও সন্তান যদি ছেলের বয়স ৭-বছর ও মেয়ের ৯-বছরের নীচে হয়।
কিন্তু একজনের অপরাধে অন্যের শাস্তি হওয়া চরম অন্যায়। সে-জন্যই কোরাণ কি
চমৎকার বলেছে − “কেউ, অন্য কাহারো দোষের ভাগী হইবে না” − বাকারা ২৩৪ ;
“তাহাদের কর্ম সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হইবে না” − বাকারা ১৪১ ;
এবং “একে অপরের কৃতকর্মের জন্য দায়ী হইবে না” − নজম ৩৮। অর্থাৎ স্বামীর
অপকর্মের জন্য স্ত্রীকে শাস্তি দেয়া যায় না। হঠাৎ-তালাক যে কতটাই কোরাণবিে
রাধী তা প্রমাণ হয় পদে পদে। নাসুজ অর্থাৎ প্রকাশ্য অশ−ীল কর্ম (অর্থাৎ
পরকীয়া) না করা পর্যন্ত স্ত্রীকে অন্য কোন-কারণেই তালাক দেয়া যাবে না এটা
কোরাণেরই সুস্পষ্ট নির্দেশ ঃ “যদি তারা কোন সুস্পষ্ট নির্লজ্জ কাজে লিপ্ত না হয়
তবে তাদেরকে তাদের গৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়,
− এগুলো আল−াহ’র নির্ধারিত সীমা”− (সুরা ত্বালাক ১)। গৃহ থেকে বহিষ্কার করো
না মানে তালাক দিও না − এছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।
এবারে তালাকের সাক্ষী।
সাধারণত গ্রামগঞ্জের ফতোয়া-আদালত হিলা বিয়েতে স্বামীর তালাক উচ্চারণের
সময় কোন সাক্ষী আছে কিনা তার ধার ধারা হয় না। কারণ শারিয়ার আইনটা হল,
“বিয়ে ব্যতীত অন্য সব-ব্যাপারে সমাধা করার জন্য সাক্ষী শর্ত নয়” − সূত্র ১০।
আরও দেখুন ঃ “তালাক সঙ্ঘটিত হওয়ার জন্য সাক্ষী শর্ত নহে” − সূত্র ১১।
এ-সব আইন কোরাণ শরীফের ঘোর বিরোধী। দেখুন আল্ কোরাণ সুরা ত্বালাক
আয়াত ১ ও ২, আর সুরা বাকারা ২২৯ ও ২২৮ ঃ “তোমরা যখন স্ত্রীদিগকে তালাক দিতে চাও তখন ইদ্দত গণনা করিও। অতঃপর তাহার যখন ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন
তাহাদিগকে উপযুক্ত পন্থায় ছাড়িয়া দিবে বা রাখিয়া দিবে এবং তোমাদের মধ্য হইতে
দুইজন সাক্ষী রাখিবে...তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখিবে তিন হায়েজ পর্যন্ত।”
তাই তাৎক্ষণিক-তালাক এবং তাৎক্ষণিক-দ্বিতীয় বিয়ে সম্পূর্ণ কোরাণ-বিরোধী।
কোরাণ মোতাবেক কোন নারীকে বিয়েতে বাধ্য করার অধিকার কারো নেই, সেই
সময়ে নারীকে এ-অসাধারণ অধিকার দিয়েছে কোরাণ। সে-জন্যই মরক্কো,
সিনেগাল, তিউনিসিয়া প্রভৃতি বহু মুসলিম দেশ আইন করে তাৎক্ষণিক-তালাক
বেআইনি করেছে − সূত্র ১২। আমাদের মুসলিম আইনের ৭ নম্বর ধারা মোতাবেকও
এটা বেআইনি (বিচারপতি গোলাম রব্বানী)। তফাৎটা হল ঐসব দেশে আইন
ভাঙলে তার “খবর আছে,” আর আমাদের দেশে মা-বোনদের জীবন ইসলামের
নামে যে ধ্বংস হয় কোন ইসলামি দলের কানে সে আর্তনাদ সে কানড়বা পৌঁছে বলে
মনে হয় না। আমরা এমনই বিবেকহীন হয়ে গেছি। যে স্ত্রীকে তাৎক্ষণিক-তালাকের মধ্যে পড়তে হয় তার অপমান-অসম্মান, তার ক্ষোভ-দুঃখ, তার মনের অবস্থা কবে আমরা বুঝব ? এ-কোন্ ইসলাম যে নিরপরাধের জীবন এত নিষ্ঠুরভাবে ধ্বংস করে ? মায়ের জাতিকে এ-ভাবে অসম্মান ক’রে আমরা কোনদিনই উনড়বতি করতে পারব না। কবে সরকার আইন প্রয়োগ করার মত শক্তিশালী হবে, কবে আমাদের ইসলামি দলগুলো এ-অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে, কবে গ্রামেগঞ্জের ইমাম-চেয়ারম্যানেরা এর বিরুদ্ধে শক্ত হয়ে দাঁড়াবে, কবে মাদ্রাসাশিক্ষকেরা এ-সব তত্ত্ব-তথ্য সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করবেন জানি না। তবে যতদিন তা না হবে ততদিনই আমাদের মা-বোনেরা জাতির চোখের সামনে নিপীড়িতা হতে থাকবেন এবং ততদিনই আমরা পিছিয়ে থাকব।
আমি ইসলামি দলগুলোকে আহ্বান করছি এখনই এই নিষ্ঠুর অনৈসলামিক প্রথা
বন্ধ করতে। আর মা-বোনদের আহ্বান জানাচ্ছি প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে,
আমরা সাথে আছি।
সূত্র ১। বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড, পৃঃ ১৫৭, ধারা ৩৫১; পৃঃ ৪৮৩ ধারা ৩৫১;
পৃঃ ৪৭৮ ধারা ৩৪৩; হানাফি আইন পৃঃ ৮১; শাফি’ই আইন পৃঃ ৫৬০ আইন
নং এন.৩.৫; মওলানা মুহিউদ্দীনের বাংলা-কোরাণের তফসির পৃঃ ১২৮;
মওলানা আশরাফ আলী থানভী’র “দ্বীন কি বাঁতে” পৃঃ ২৫৪ আইন #১৫৩৭,
১৫৩৮, ১৫৪৬ ও ২৫৫৫; ইউরোপিয়ান ফতোয়া কাউন্সিল ও ক্যানাডার মওলানার
ফতোয়ায় ((United Muslims) ওয়েব সাইট Sunnipath.com ইত্যাদি।
সূত্র ২। মওলানা মুহিউদ্দিনের অনুদিত বাংলা-কোরাণের তফসির পৃঃ ১২৭।
সূত্র ৩। বিশ্ব-বিখ্যাত শারিয়া-সমর্থক মওলানা ওয়াহিদুদ্দিনের “Women in Islami
Sharia”-তে ফতহুল বারী’র সূত্রে - পৃঃ ১০৮ ও ১০৯।
সূত্র ৪। মওলানা মুহিউদ্দিনের অনুদিত বাংলা-কোরাণের তফসির পৃঃ ১২৭-১২৯।
সূত্র ৫। মওলানা মুহিউদ্দিনের অনুদিত বাংলা-কোরাণের পৃঃ ১২৮ ও ৭৫৮।
সূত্র ৬। বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড ধারা ৩৪৭, ৩৪৯; হানাফি আইন, মওলানা আশরাফ থানভি’র বেহেশতি জেওর থেকে শুরু করে মকসুদুল মু’মেনিন পর্যন্ত বহু কেতাব।
সূত্র ৭। বিশ্ব-বিখ্যাত শারিয়াবিদ ডঃ আবদুর রহমান ডোই-এর “শারিয়া দি ইসলামিক
ল’ ” − পৃঃ ১৭৯।
সূত্র ৮। বিশ্ব-বিখ্যাত মওলানা ওয়াহিদুদ্দিনের “Women in Islami Sharia” পৃঃ ১১০।
সূত্র ৯। ইমাম শাফি’র বিখ্যাত কেতাব “রিসালা” পৃঃ ১৮২। এটিকে সমস্ত শারিয়াবিজ্ঞানের মূল কেতাব বলে ধরা হয়।
সূত্র ১০। মওলানা মুহিউদ্দিনের অনুদিত বাংলা-কোরাণের তফসির পৃঃ ১২৪।
সূত্র ১১। বিধিবদ্ধ ইসলামি আইন ১ম খণ্ড ধারা ৩৪৪ পৃঃ ৪৭৮।
সূত্র ১২। “Documenting Women’s Right Violations by Non-State Actors” by WLUML পৃঃ ৭০।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
কথাট খুব হাস্যকর, তাইনা মানিক ভাই? বাঙ্গালী মুসলমান সমাজে হিল্লা বিয়ে হঠাৎ গজিয়ে উঠা কোন ঘটনা নয় ।
আর দীর্ঘ বিশ্লেষনে প্রমান করার চেষ্টা হয়েছে- মুখে তিনবার তালাক বললেই তালাক হয়না কিংবা ইসলাম কিভাবে তালাককে নিরুৎসাহিত করেছে । কিন্তু মুল আলোচনা তো তালাক নিয়ে নয়, বরং তালাকের পর উক্ত যুগল যদি পুনঃ বিবাহের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে কি হবে সেটা নিয়ে ।
আমি তো জানি ইসলামী জীবন বিধানে কোরানের নির্দেশ হচ্ছে প্রধান । কোন বিষয়ে কোরানের স্পষ্ট নির্দেশ থাকলে সে ক্ষেত্রে আর হাদীস কিংবা অন্যান্য ব্যাখ্যা বিশ্লেষনের দরকার পড়েনা ।
সূরা বাকারার ২৩০ নং আয়াতকে কি আপনার কাছে অস্পষ্ট মনে হয়?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আরে বস , আমি ত' হাসান মাহমুদের রচনা তুলে দিয়েছি মাত্র , আমার নিজের কোন মত বা তার সাথে একমত বা আপনার সাথে দ্বিমত তা তো বলিনি ।
আপনার জরুরি প্রশ্নের জবাব দেবার জন্য হাসান মাহমুদ ভাইকে বলেছি ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
অনেক ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ এ বিষয়ে এমন চিন্তা উদ্দীপক আলোচনার অবতারনা করার জন্য। তানভীর, অবাঞ্চিত এবং নুরুজ্জামান মানিক সবার অংশগ্রহণ থেকে না জানা তথ্য জানলাম।
নুরুজ্জামান মানিক সম্ভবত সরাসরি হাসান মাহমুদের কাছ থেকে এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাকে আলাদা পোষ্ট দিতে উতসাহিত করেছি। শীঘ্রই হয়ত উনি সচলায়তনে লিখবেন। আপাতত আমাকে ই- মেইল এ তার জবাব টি পাঠিয়েছেন।
----------
হাসান মোরশেদ,
আপনার মন্তব্যে যুক্তি আছে, ধন্যবাদ। কোরাণের কিছু অত্যাচারী ব্যাখ্যাকে ওই কোরাণ দিয়েই অবৈধ প্রমাণ করা যায়, যেমন তাৎক্ষণিক তালাক। এটাই হল হিলা বিয়ের শেকড়। তাই সিনেমাতে তাৎক্ষণিক তালাকই অবেধ প্রমাণ করা হয়েছে যাতে এটা উচ্ছেদে প্রথম পদক্ষেপটা নেয়া যায়। নাম দেয়া হয়েছে হিলা যাতে মানুষ সহজে বুঝতে পারে - কিন্তু হিলা-র ব্যবচ্ছেদ করতে গেলে তিন ঘÏটার সিনেমা দাঁড়াত।
এবারে বাকারা ২৩০ অনুযায়ী হিলা বিয়ে। পুরুষতন্ত্রের শতাব্দী-প্রাচীন নারী-বিরোধী ঐতিহ্য হিসেবে পুরুষ নারীকে যতবার ইচ্ছে তাৎক্ষণিক তালাক ও পুনর্বিবাহের যাঁতাকলে পিষ্ট করত। হাজার বছর ধরে চলে আসা প্রথার অসম্ভব সামাজিক-সাংস্কৃতিক শক্তি থাকে, কোরাণ প্রথম আঘাতটা হেনেছে সেখানেই। বাকারা ২৩০-এর পর তিন ধাপে পুরো তালাক দেবার পর স্বামীর খেলা শেষ, তার আর কোন অধিকার নেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার। আয়াতটার প্রথম সামাজিক ইমপ্যাক্ট এটাই। এর পরে স্ত্রী ইচ্ছে হলে অন্য কাউকে বিয়ে করবে, না হলে করবে না। এ তার একচ্ছত্র অধিকার; তার অমতে কেউ তাকে জোর করে কোন রকম বিয়ে করতে বা দিতে পারবে না (আয়াতটা ভুলে গেছি), এটা শারিয়ারও একটা কঠিন আইন। সেই যুগে অন্ধকার সমাজে হাজার বছরের বস্তুসমান পশুসমান নারীকে এ অধিকার দেয়াকে প্রসংশা না করে পারা যায় না। আজ যেভাবে হিলা হয় তা অবশ্যই কোরাণের বাণীর ঘোর বিরোধী।
ইচ্ছেমাফিক বিয়ে-তালাকের খেলাকে কোরাণ তিনবারে সীমাবদ্ধ করেছে প্রাথমিকভাবে (বাকারা ২৩০) এবং অনেক পরে উচ্ছেদ করেছে চুড়ান্তভাবে এই নির্দেশেঃ- পরকীয়া না করা পর্য্যন্ত স্ত্রীকে তালাক দেয়া নিষিদ্ধ করা হল (ত্বালাক ১)। অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমরা দেখি কোরাণ নারী-অধিকারের ব্যাপারে, এমনকি মদ্যপান বা দাসপ্রথার ব্যাপারেও তাৎক্ষণিক সামাজিক বিপ্লবের চেয়ে ধীর বিবর্তনকেই বেছে নিয়েছে। এটাই ভাল, কারণ জনগণের মন-মানস তৈরী না করে জোর করে চাপিয়ে দিলে ভাল পরিবর্তনও ব্যাকফায়ার করতে বাধ্য। ইতিহাসে এর অনেক প্রমাণ আছে। কোরাণের এই সামাজিক বিবর্তনের মেকানিজ্মটা এখানে দেখাবার সুযোগ নেই, এটা দেয়া আছে আমার বই ‘‘ইসলাম ও শারিয়া’’-র ‘‘ইসলামে নারী অধকার ও ‘সুস্পষ্ট নির্দেশ’ অধ্যায়ে। দেখুন, বাকারা ২৩০ কিন্তু এ কথা বলেনি স্বামী তালাক দেবার পরে স্ত্রীকে জোর করে অন্যের সাথে কলমা পড়িয়ে ধর্ষণ করাও। কিছু মুসলিম দেশে যেভাবে হিলা হয় তা আমাদের মা-বোনের ধর্ষণকে ইসলামের নামে বৈধ করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিশ্ব-মুসলিমের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রন না থাকায় আমাদের পুরো অধিকার আছে যে ব্যাখ্যা মানবাধিকার রক্ষা করে তাকেই বেছে নিয়ে প্রয়োগ করা।
সবাইকে আমি আমাদের এই প্রাকৃতিক ও স্বভাবজ অধিকার প্রয়োগ করতে উৎসাহিত করি।
ধন্যবাদ
হাসান মাহমুদ
২৬ এপ্রিল ৩৯ মুক্তিসন (২০০৯)
অনেক ধন্যবাদ। বস লোক থাকতে আমি হুদাই প্যাচাল পাড়লাম
নাহার আপা আপনাকে ও ধন্যবাদ। আপনার মাধ্যমে হাসান ভাইকে ও ধন্যবাদ । উনি সচলায়তনে লিখলে নিশ্চয়ই আমরা ঋদ্ধ হবো ।
তার আগ পর্যন্ত আপনাকে মাধ্যম ধরেই কিছু কথাবার্তা চালিয়ে নেয়া যাক
------------------
হাসান ভাই,
আপনার এই স্বীকার্য ভালো লাগলো যে সিনেমার নাম 'হিল্লা' হলে ও আপনি আসলে আলোকপাত করেছেন তালাক নিয়ে । আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই যে- বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে যে তালাক প্রক্রিয়া চালু আছে ( বিশেষ করে নিম্নবিত্তদের মধ্যে) সেটা ইসলামের বলে দেয়া তালাক প্রক্রিয়ার মতো নয় । এ ক্ষেত্রে প্রচলিত প্রক্রিয়াকে অবশ্যই 'ইসলাম বিরোধী' বলা যায় ।
কিন্তু এই পোষ্ট এবং আপনার সিনেমার সুত্রে আমি তালাক নয় বরং তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দম্পত্তির পুনঃ বিবাহের ইসলামী প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইছি ।
আপনি বলেছেন- ইসলামী আইনের যে ব্যাখ্যা মানবাধিকার রক্ষা করে তাই গ্রহনযোগ্য হবে । ভালো কথা, এমন অনেক ইসলামী আইন কি নেই যেগুলো ১৪০০ বছর আগের বাস্তবতায় বেশ মানবিক মনে হলে ও আজকের বাস্তবতায় ভিন্ন রকম? সে ক্ষেত্রে আজকের মুসলমানের ভূমিকা কি হবে? কোরানের আইন ও মানবাধিকার যদি সাংঘর্ষিক হয় তাহলে কি মুসলমানদের সুযোগ আছে কোরানকে অস্বীকার করার?
দাসপ্রথা,দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, চার বিয়ে, অবাধ্য স্ত্রীকে শারীরিক শাস্তি প্রদান এরকম বেশ কিছু বিষয় যেগুলো নিয়ে আপনার সাথে পরে এক সমোয় আলোচনার আশা রাখি ।
এই মুহুর্তে আমি আলোচ্য বিষয়েই লেগে থাকছি ।
তানভীরের মন্তব্যের জবাবে যে উদাহরন দিয়েছিলাম- সেই উদাহরন ধরেই যদি আপনি আলোচনা করেন ভালো হয় ।
X এর সাথে Y এর ইসলামী বিধিবিধান মেনেই তালাক হলো । তালাকের পর Y অন্য কারো সাথে বিবাহ সম্পর্কে জড়ালো না, ফলতঃ অন্য কারো তাকে তালাক দেওয়ার ও সুযোগ হলোনা ।
এবার কিছুদিন পর যে কোন কারনেই হোক X,Y সিদ্ধান্ত নিলো দাম্পত্য সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ।
আমার বিবেক বলে- তাদের এর সে সুযোগ থাকা উচিত । তানভীরের বিবেক ও তাই বলছে । সম্ভবতঃ আপনার বিবেক ও তাই বলে । এখন প্রশ্ন হলো বিবেকের চর্চা করতে গিয়ে ধর্মগ্রন্থের বিধান অমান্য করার কোন সুযোগ ধর্ম বিশ্বাসীদের আছে কিনা?
কোরানে যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে, সেই বিয়ে থেকে তালাক প্রাপ্ত হলেই কেবল সে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে- তাহলে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে, সেই বিয়ে থেকে তালাক না ঘটিয়ে আপনি কিভাবে X,Y এর পুনঃ দাম্পত্য'র সমাধান দেবেন?
কোরানের এই বিধানকে কি 'ইসলাম বিরোধী' বলবেন হাসান ভাই?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
Dear হাসান মোরশেদ,
Salam. I’m away from home and no Bangla in this computer. My response:-
1. বাঙ্গালী মুসলমান সমাজে হিল্লা বিয়ে হঠাৎ গজিয়ে উঠা কোন ঘটনা নয় । It is only few decades old. In history we do not find a single Hilla, nor in my entire childhood.
2. এ ক্ষেত্রে প্রচলিত প্রক্রিয়াকে অবশ্যই 'ইসলাম বিরোধী' বলা যায় ।……..কোরানের এই বিধানকে কি 'ইসলাম বিরোধী' বলবেন হাসান ভাই? No, I won’t. While we historically failed to define Islam, - the terms “UnIslamic” or “Islamic” (civilization, banking, architecture, painting, calligraphy, heritage or anything) are illegitimate. These terms are established by corrupt regimes.
3. এমন অনেক ইসলামী আইন কি নেই যেগুলো ১৪০০ বছর আগের বাস্তবতায় বেশ মানবিক মনে হলে ও আজকের বাস্তবতায় ভিন্ন রকম? সে ক্ষেত্রে আজকের মুসলমানের ভূমিকা কি হবে? কোরানের আইন ও মানবাধিকার যদি সাংঘর্ষিক হয় তাহলে কি মুসলমানদের সুযোগ আছে কোরানকে অস্বীকার করার? Yes, there is. Right from Bukhari, Malik, and Taymiyah to today’s progressive Muslim scholars (such as Md. Abduh the late Grand Mufti of Egypt, Mahmoud Taha of Sudan and many others) claimed that there is no eternal social, familial and administrative law in Quran. Those were only the first step (১৪০০ বছর আগের বাস্তবতায় বেশ মানবিক) and are not eternal.
4. কোরানে যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে, সেই বিয়ে থেকে তালাক প্রাপ্ত হলেই কেবল সে প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে- তাহলে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে, সেই বিয়ে থেকে তালাক না ঘটিয়ে আপনি কিভাবে X,Y এর পুনঃ দাম্পত্য'র সমাধান দেবেন? It is not only possible but inevitable in future because the basic purpose and essence of Bakara 230 is long achieved. With social progress the Quran itself, Prophet himself, early and later Caliphs and today many Muslim countries already updated many Quranic dictums. My whole book is written to write the last chapter to show this mechanism.
5. দাসপ্রথা,দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, চার বিয়ে, অবাধ্য স্ত্রীকে শারীরিক শাস্তি প্রদান এরকম বেশ কিছু বিষয় যেগুলো নিয়ে আপনার সাথে পরে এক সমোয় আলোচনার আশা রাখি । Those are discussed in details in separate chapters with hundreds of references –you can download the book for free from http://www.tritiomatra.com/woaz.html (the original Amarblog link is not working).
6. আমার বিবেক বলে- তাদের এর সে সুযোগ থাকা উচিত । তানভীরের বিবেক ও তাই বলছে । সম্ভবতঃ আপনার বিবেক ও তাই বলে । এখন প্রশ্ন হলো বিবেকের চর্চা করতে গিয়ে ধর্মগ্রন্থের বিধান অমান্য করার কোন সুযোগ ধর্ম বিশ্বাসীদের আছে কিনা? Human Rights are self-validating; they don’t have to pass the test of religion. It is religion that has to pass the litmus test of Human Rights. Our future generations will be smarter, more enlightened and more analytical. They will not swallow folk stories and oppressive conspiracies in the name of religion. If a religion fails to protect Human Rights then they will throw it to the dustbin of history So, cheers !
।
Sorry - there is a mistekein the post above - as:-
""মুসলমানদের সুযোগ আছে কোরানকে অস্বীকার করার? Yes, there is....."".
Actually it should be:-
""মুসলমানদের সুযোগ আছে কোরানকে অস্বীকার করার? Quran defines itself in about 6 verses but never as a law book. Right from Bukhari....."
ভাই, এই মন্তব্যটা অভূতপুর্ব । বুখারী'র ভরসায় আপনি বলছেন-কোরান মুসলমানদের জন্য আইনগ্রন্থ নয়!
আমি জানতাম- কোরানই হচ্ছে ইসলামী আইনের মুল ভিত্তি । যেসব বিষয়ে কোরানে স্পষ্ট নির্দেশ আছে সেসব ক্ষেত্রে হাদীস বা ফিকাহ'র উপর নির্ভর করার দরকার নেই , কোরানের বানীই যথেষ্ট ।
যে ক্ষেত্রে কোরানের নির্দেশ দ্ব্যর্থবোধক সে ক্ষেত্রে হাদীস এবং তৎপরবর্তী ধাপগুলো অনুসরন করতে হবে ।
তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দম্পত্তির পুনঃ বিবাহের যেহেতু কোরানের আয়াত একেবারেই স্পষ্ট সে ক্ষেত্রে এটাই মুসলমানরা মানতে বাধ্য- বিবেক ও মানবতার বিচারে সেটা যেমনই হোক ।
কিন্তু আপনার কথামতো কোরান যদি আইনগ্রন্থ নাই হয় তাহলে তো ইসলামী আইন বিষয়টাই খেলো হয়ে যায় ।
আমি জানতাম- কোরানের নির্দেশ মুসলমানদের জন্য প্রশ্নাতীত ভাবে পালনীয়
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান মোরশেদ,
আপনার কথায় ব্যঙ্গ আছে, ফাঁক আছে এবং ফাঁকিও আছে। মনে ব্যঙ্গ নিয়ে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ মেরুকরণ বোঝা যাবে না। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে আপনি যা জানেন তা জেনে আপনি জন্মান নি, ওটা আপনাকে জানানো হয়েছে।
এই হল ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃণ্য অপসাংস্কৃতিক ষড়যন্ত্র।
আমার বইটা পড়ার কষ্ট করুন, তারপর প্রশ্ন করুন ভাই। ইসলাম আর সিরাতুল মুস্তাকিম (সহজ সরল পথ) নাই, ওটাকে সিরাতুল জিলাপি বানানো হয়েছে।
হাসান মাহমুদ,
এতক্ষণ আপনাদের লেখা পড়ে আমার একবারও মনে হয়নি হাসান মোরশেদ কোন ব্যঙ্গ করছেন। কথায়-লেথায়-যুক্তিতে ফাক থাকতে পারে। সেটা থাকে বলেই তর্কের প্রয়োজন পরে। নইলে সব এককথায় শুদ্ধ সত্য হয়ে পরত।
মনে ব্যঙ্গ না নিয়েও আমার কাছে আপনার বত্তব্য স্পষ্ট হচ্ছেনা। দয়া করে স্পষ্ট করুন (বিচারা হাসান মোরশেদ একটা নির্দিস্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, তবু তাকে বারবার বুঝিয়ে দিতে হয়েছে যে তিনি কোন জায়গায় আছেন। আশা করি আমাকে আবার সেটা বুঝাতে হবেনা)।
মোরশেদ ভাই একটা প্রশ্ন নিয়ে বারবার উত্তর চাইছেন। উত্তর হলো, যদি তালাক দেয়া বউকে ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে কোরানে নির্দেশিত পথেই এগুতে হবে। সেটা আপনার কাছে বর্বর মনে হলেও হতে পারে, সেটাই বিধান। এখানে ভুল ব্যাখ্যার সুযোগ নাই। প্রথম কথা হলো নিয়মটা কঠিন করা হয়েছে যেন তালাকের মত বিষয় নিয়ে ছেলেখেলা না করা হয়। তেমনটাই বুঝি।
একটা উদাহরণ দেই-- গুগল এ্যডসেন্সের টার্মস ভায়োলেট করলে সেই পাবলিশারকে আর কখনোই এ্যাড প্রকাশ করতে দেয়া হয়না। এখন যদি প্রশ্ন করেন সেই পাবলিশার যদি আবারো এ্যড প্রকাশ করতে চায় তাহলে গুগল তা দেবেনা কেন? বলা যাবে এটা গুগলের পলিসি। আপনি যেনে বুঝে সতর্কতা উপেক্ষা করে যদি আবারো এ্যাড চান সেটা গুগল দিতে বাধ্য নয়, গুগল দেবেনা। ইসলামের ব্যাপারটা এভাবেই সরলীকরণ করে দেখতে পারেন। ইসলামে তো একেবারে না করে নাই, আপনি তালাকদেয়া স্তীকে আবারো ফেরত আনতে পারেন কিন্তু বিষয়টা অসম্ভবের কাছাকাছি। অতএব আগে থাকতেই সাবধান।
মানুষ,
আমার কথা তো সেটাই রে ভাই, যা আপনি বললেন ।
তালাক দেওয়া বউকে ফিরিয়ে আনার কোরান নির্দেশিত পন্থা ঐ একটাই- বউ আরেক বিয়ে হবে, সেই বিয়ে থেকে তালাক পাবে । এখন এই পন্থার হিল্লা হলেই কি আর অন্য কিছু হলেই বা কি ।
আপনি যদি মুসলমান হন তাহলে এই পন্থা আপনার অমানবিক লাগলে ও কিছু করার নাই, আপনে মানতে বাধ্য । মুসলমান হতে হলে তো নিঃশর্ত ভাবে কোরান আপনাকে মানতেই হবে, তাইনা? কিছু মানলাম আর কিছু মানলাম না- এদেরকে কিন্তু কোরানেই মুনাফেক বলা হয়েছে ।
আমার প্রশ্ন হলো- যে পন্থা কোরানে বলে দেয়া, সেই পন্থা যতোই অমানবিক হোক, তাকে 'ইসলাম বিরোধী' বলে এর দায় গ্রাম্য মোল্লাদের ঘাড়ে চাপান কি করে শহুরে সুশীল মুসলিমরা?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান মাহমুদ ভাই,
আমি খুবই দুঃখিত আমার লেখায় ব্যঙ্গ, ফাক এবং ফাঁকি থাকার জন্য । সেই সাথে অস্বস্তি ও কাটছেনা কথিত ব্যঙ্গ, ফাক এবং ফাঁকি খুঁজে পাচ্ছিনা বলে ।
আপনারা সুশীল মুসলমানরা হিল্লা বিয়েকে 'ইসলামী বিরোধী' বলে গ্রাম্য মোল্লাদের দায়ী করছেন- এরাই ইসলামকে ডুবালো । আমি কোরানের একটা আয়াত মাত্র উল্লেখ করলাম যেখান থেকে ঐ গ্রাম্য মোল্লারা এইসবের রসদ পায় ।
আপনি ইসলামকে মানবিক দেখাতে গিয়ে এ সংক্রান্ত কোরানের নির্দেশকেই ( যা আসলেই অমানবিক) তামাদী ঘোষনা করলেন ।
আমার জানতে চাওয়াটা অস্পষ্ট ছিলোনা । তবু যদি সময় করে কখনো জানান- আমার লেখার কোন অংশে আপনি ব্যঙ্গ, ফাক এবং ফাঁকি খুঁজে পেলেন- খুশী হতাম ।
ভালো থাকুন ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান মোরশেদ,
দেশী-বিদেশী শারিয়াপন্থীদের অহোরাত্র গালাগালির ব্যাপারে আমার চামড়া যতটা পুরু, বুদ্ধিদীপ্ত সহমর্মীদের শব্দপ্রয়োগের ক্ষেত্রে ততটাই আমি স্পর্শকাতর নাবালক। একেই বোধহয় বলে নেচার’স ব্যালান্স। আপনি তাদের একজন, আপনার কাছ থেকে পুষ্পাঘাতও আমার জন্য সঘন খর শরাঘাত। অফিসে ভয়াবহ ছোটলোক বস্-এর সাথে ব্যাপক ঝগড়ার পরে ভুল বাজার করে বৌ-এর বকা খাবার পর আপনার কাছে থেকে - আমার কথা ‘‘হাস্যকর’’ এবং আমি বলেছি ‘‘বুখারী’র ভরসায় কোরাণ আইন-গ্রন্থ নয়’’ দেখেই আমার চান্দি গরম! আশা করি এই শক্তিশালী পটভুমির প্রেক্ষাপটে এ অধম ক্ষমার যোগ্য।
বাংলাদেশটা আমি দেখছি গত ষাট বছর ধরে, হাজার বছরের ইতিহাসটাও ফাঁকিঝুঁকি দিয়ে মোটামূটি পড়েছি । এখানে হিলা বিয়ে সত্যিই নুতন আমদানি, - প্রবল স্বর্গান্নেষী সেই আমদানিকারকদেরও আমরা হাড্ডি অবধি চিনি।
তাবারি-বুখারি-তাইমিয়া-আবদুহ-এর ভরসায় নয়, স্বয়ং কোরাণের ভরসাতেই আমি দাবী করেছি কোরাণ আইনের গ্রন্থ নয়। বিশাল বিপুল কারণ ছাড়া বিশাল বিপুল ইমাম বুখারির মত হিমালয়ের গায়ে হাত তোলা অসম্ভব। কিন্তু ওকথা বলার সাথে সাথে (এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা ১৯৮৩) খলিফা ব্যতিব্যস্ত হয়ে জনগণের কাছ থেকে তাঁকে সরিয়ে নির্বাসনে পাঠান, - ওখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কোরাণ নিজেকে নিজেই সংজ্ঞায়িত করেছে। এ হিসেবের কড়ি এতটাই দড় যে তা মওদুদি’র বাঘেও খেতে পারে নি, তাঁর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দিয়েছে অথবা তার কাছ থেকেও সমর্থন আদায় করে ছেড়েছে। প্রমাণ? দেখুনঃ-
সুরা ছোয়াদ ৬৭ এবং ৮৭ “বলুন, এটি এক মহা সুসংবাদ এটা তো বিশ্ববাসীর জন্য এক উপদেশ মাত্র।” মওলানা মওদুদি কোন মন্তব্য না করে নিঃশব্দে পরের আয়াতে চলে গেছেন।
মুজাম্মিল ১৯ “এটা উপদেশ। অতএব যার ইচ্ছা সে তার পালনকর্তার দিকে পথ অবলম্বন করুক।” মওলানা মওদুদি কোন মন্তব্য না করে নিঃশব্দে পরের আয়াতে চলে গেছেন।
মুদাস্সির ৫৪ “এটা তো উপদেশ মাত্র।” মওলানা মওদুদি কোন মন্তব্য না করে নিঃশব্দে পরের আয়াতে চলে গেছেন।
আশ শুরা ৫২ “আপনি জানতেন না কোরাণ কি ও ইমান কি। কিন্তু আমি একে করেছি নূর।” মওলানা মওদুদি কোন মন্তব্য না করে নিঃশব্দে পরের আয়াতে চলে গেছেন।
সুরা ইমরাণ ১৮৪ কোরাণ হল “মুনীর” অর্থাৎ “আলোকিত কিতাব।” মওলানা মওদুদি কোন মন্তব্য না করে নিঃশব্দে পরের আয়াতে চলে গেছেন।
সুরা আনাম ৯০ “এটি বিশ্বের জন্য উপদেশ মাত্র।” মওলানা মওদুদি কোন মন্তব্য না করে নিঃশব্দে পরের আয়াতে চলে গেছেন।
সুরা আল্ ফুরকান ১ “পরম করুণাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন।” মওদুদি বলেছেন আল্লাহ কোরাণ নাজিল করেছেন যাতে পয়গম্বর মানবজাতিকে উপদেশ দিতে পারেন ((so that he may admonish all mankind)|। অর্থাৎতাঁর মতেও কোরাণ হল উপদেশেরই কেতাব।
সুরা হিজর ৯ “আমি এই উপদেশগ্রন্থ নাজিল করেছি।” মওদুদি এখানে বলেছেন কোরাণ হল আল্লাহ’র “বাণী” (ওয়ার্ড)।
সুরা হজ্ব ৮ কোরাণ হল “আলোকিত কিতাব।” মওদুদি এখানে বলেছেন আলোকিত কেতাব হল বেহেশতি উৎস থেকে পাওয়া তথ্য। তথ্য কখনোই আইন বা রাষ্ট্র হতে পারে না - তাই কোরাণ আইন বা রাষ্ট্রের কেতাব হতে পারে না।
আল্ যুমার ২৩ “আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাজিল করেছেন যা সামঞ্জস্যপূর্ণ।” মওদুদি নিজেও ইংরেজি তরজমা করেছেন This is Allah’s guidance“নৈতিক পথনির্দেশ।”
সুরা আবাসা ১১ “এটা উপদেশবাণী”। মওদুদি বলেছেন “ইহা কোরাণ সম্বন্ধেই বলা হইয়াছে।” অর্থাৎ তিনি স্বীকার করেছেন কোরাণ হলো উপদেশবাণী।
অর্থাৎ মওদুদির মত নেতাও এই অতি গুরুত্বপূর্ণ আয়াতগুলোকে হয় নিঃশব্দে পাশ কাটিয়ে চলে গেছেন, অথবা সমর্থন করতে বাধ্য হয়েছেন, নয়ত এমন ব্যাখ্যা করেছেন যা বিষয়ের সাথে মেলে না কিন্তু বিরোধীতা কোথাও করতে পারেননি। এর বিপরীতে সারা কোরাণে এ-রকম সুস্পষ্ট কোনই আয়াতে নেই কোরাণ সামাজিক আইন বা রাষ্ট্র বানানোর কেতাব ! উপদেশ বা সুসংবাদ জোর করে চাপানোর জিনিস নয়। সামাজিক সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক সামরিক ইত্যাদি বিষয়ে রাষ্ট্র তার আইন জোর করে নাগরিকদের ওপরে চাপায় বলে সেটা আর লা ইকরাহা ফিদ্বীন (ধর্মে জোর জবরদস্তি নেই) থাকে না।
কোরাণ যদি রাষ্ট্রীয় আইনের বই হত তবে এতে হাজার হাজার আইন থাকত যা জীবনে দরকার। অথচ কোরাণে সামাজিক আইন আছে মাত্র পাঁচ-সাতটা। এ পাঁচ-সাতটা ঘটনা বাস্তবে ঘটেছিল বলেই আইনগুলো এসেছিল। যে অপরাধ তখন ঘটেনি অথচ পরে ঘটেছে সে সম্বন্ধে কোরাণ নীরব। এমনকি কোরাণের শেষ আয়াতগুলো যেখানে কোরাণ বলেছে ইসলামই হল আল্লাহ্’র মনোনীত ধর্ম, সে আয়াতগুলোতেও কোন রাষ্ট্রীয় আইনের কথা নেই, আছে শুধু উপদেশ আর মূল্যবোধের নির্দেশ।
আপনি বলছেন -"কোরানই হচ্ছে ইসলামী আইনের মুল ভিত্তি "। আমিও বহুদিন তাই বিশ্বাস করতাম। পরে খুঁজে পেতে দেখি ঘোড়ার ডিম মূল ভিত্তি। শারিয়া আইনের জিরো জিরো জিরো জিরো জিরো জিরো পয়েÏট ওয়ান পার্সেÏট এসেছে কোরাণ থেকে। বিশাল দীঘিতে কেউ এক ফোঁটা দুধ ফেলে দাবী করবে এটা দুধের পুকুর আর আমরা তা বিশ্বাস করব? আমাদের ধর্মীয় অনুভুতি নিয়ে হীন ষড়যন্ত্র নয় এটা? ইমাম শাফি’র শারিয়া-কেতাব “উমদাত আল্ সালিক”-এ আইন আছে ছয় হাজারের বেশি। ইমাম আবু হানিফার কেতাব হেদায়া-তেও তাই। আমাদের ইসলামি ফাউণ্ডেশনের প্রকাশিত তেইশশো’ পৃষ্ঠার বিধিবদ্ধ ইসলামি আইনে ৩ খণ্ড মিলে আইন আছে প্রায় দেড় হাজার। অথচ কোরাণে আইন আছে মাত্র কয়েকটা, এবং হাদিসে আছে আরো কিছু, ব্যস্। বিধিবদ্ধ ইসলামি আইনের ৩য় খণ্ডের ৫১ অধ্যায়ে আইনে আছে ১৮৬টা। কিন্তু তার ৩৪৪টা সূত্রের মধ্যে কোরাণ মাত্র ১টা আর সহি হাদিস ১৮১টা। বাকি ১৬২টা সূত্রই কোন না কোন মানুষের কোরাণ-হাদিসের ব্যাখ্যানির্ভর। আসলে শারিয়ার আইনগুলো এসেছে প্রায় ১১টা উৎস থেকে।
আপনি বলছেন - ‘‘আপনার কথামতো কোরান যদি আইনগ্রন্থ নাই হয় তাহলে তো ইসলামী আইন বিষয়টাই খেলো হয়ে যায় ।"
যায় ! অবশ্যই যায়। শুধু যায়-ই নয়, ভয়াবহ নারী-বিরোধী, অমুসলিম-বিরোধী ও ন্যায়বিচার-বিরোধী কালনাগিনী হয়ে দাঁড়ায়। ইসলামি দলিল ও অতিত-বর্তমানের বাস্তবতা থেকে এ সত্য নিঃসন্দেহে প্রমাণিত, বিশ্ব-মুসলিম এটা বুঝতে শুরু করেছে।
আমাদের নব নব প্রজন্ম হবে বেশী বেশী আলোকিত, বিশ্লেষণপ্রবণ এবং মানবাধিকারবাদী। ধর্মের নামে রূপকথার অশ্বডিম্ব, অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা আর মা-বোনের অপমান গিলবে না তারা। জীবনে জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা কাকে বলে তারা তা বাস্তবে প্রমাণ করে ছাড়বে।
কারণ - জীবনযাপনে আজ যত ক্লান্িত থাক, বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু, তাই না?
ধন্যবাদ।
হাসান ভাই,
ক্ষমা টমা এইসব বলে আবার লজ্জা দিচ্ছেন কেনো? বাদ দেন তো:) । আপনার আমার অবস্থান একবিন্দুতে না হলে ও বিপরীতমুখি নয়- সেটা আমি জানি, হয়তো আপনি ও জানেন ।
আমি শুধু ফোকাস পয়েন্টটার সমালোচনা করছিলাম । কোরান যদি মুসলমানদের অলংঘনীয় না হয় তাহলে সেটা মুসলমানদের জন্যই কল্যানকর । তাহলে ধর্মচর্চায় কিছুটা ব্যাত্যায় ঘটলে ও অন্ততঃ বিবেক চর্চায় অসুবিধা হবেনা ।
আমরা যে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করছিলাম সেটা সহ এমন আরো কিছু বিষয় আছে কোরানে( আপনি ভালোই জানেন) যেগুলো ১৪০০ বছর আগের বাস্তবতায় বরং মানবিক ছিলো কিন্ত আজকের বাস্তবতায় চুড়ান্তরকম অমানবিক ।
কিন্তু যেহেতু এই মানবতাবিরোধী বিষয়গুলো কোরানে আছে এবং কোরান মুসলমানদের কাছে অলংঘনীয় ও অপরিবর্তনীয় বলেই স্বীকৃত সেহেতু এই বিষয়গুলো ইসলামিকই বটে- 'ইসলাম বিরোধী' নয় ।
যেমন আপনার সিনেমার প্রচারনায় হিল্লা বিয়েকে বলছেন 'ইসলাম বিরোধী' যেমন অনেক মডারেট মুসলিম প্রচার করেন জেহাদ 'ইসলাম বিরোধী' অথচ হিল্লা বিয়ে কিংবা জেহাদের রসদ কোরান থেকেই আসে । এটা কেবল কাঠমোল্লাদের প্রচারনা নয় ।
আপনারা যারা ইসলামকে একটা মানবিক চেহারায় প্রচার করতে চান- তাদের আরেকটু স্পষ্ট হওয়া জরুরী, অমানবিক বিষয় আশয় কোরানে যথেষ্টই আছে এটা স্বীকার করে নিয়ে এগুলোকে তামাদী করার ব্যবস্থা করতে হবে । অশিক্ষিত গ্রাম্য মোল্লাদের উপর সব দায় চাপিয়ে দিয়ে আখেরে কোন ফায়দা হবেনা ।
মুখে যতোই ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলে প্রচার করেন- জেহাদ আর আত্নঘাতি বোমার রসদ কেউ না কেউ কোরান থেকেই খুঁজে নেবে ।
ভালো থাকেন । শুভেচ্ছা থাকলো । পরে হয়তো অন্য কোন পোষ্টে কথা হবে ।
আপাততঃ এই
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান মোরশেদের অত্যন্ত স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে হাসান মাহমুদের জবাব বরং ফাক ও ফাঁকিময় মনে হলো । মুল বিষয়ে অনেকেই সাহস করে কথা বলেননা ।
OK, trying to clarify again. As a non-Hero I don't need to show my courage to anyone. Hasan Morshed's 2 main Qs were:-
1. Can a couple be allowed to marry and divorce infinitely? If they can, will it not be anti-Islamic?
Answer already given, repeating here. As for my personal opinion, YES, THAY ARE ALLOWED. For Muslim societies, NOT YET. But a day will surely come when it will be allowed. Many such clear Quranic dictums are already updated by Muslims themselves.
Will it be anti-Islamic? No. When islam cannot be defined, - Anti-Islamic cannot be defined also. Plus, Quran is more about values than prtactice and rituals. The purpose of Bakara 230 is already achieved and its context does not exist anymore. Explanation of the referenced mechanism is long - and given in last chapter of my book but I can't force anyone to read.
2. Why not to accept that some parts of the Quran are against humanity.
ANS - What I say openly in conferences I repeat here - it is undeniable that there are verses of violence, about 42. And there are also verses of peace and values , about 1 1 2. The mechanism of overcoming violent verses is also given in the same Quran. Muslims must use it for their own benefit and benefit of all humankind. It is another issue that Political Islam cash on verses of violence.
ENDNOTE - I am a Human Right activist, not a theologian. As nobody can answer all questions of any religion, we should stop bugging as long Human rights are protected. Good scholars have detected the mechanism of violence in the name of Islam in Muslim societies. From the same sources they also proposed excellent counter - mechanism to defeat all kinds of violence. All I did is compile that in my book with my 2 two cents added.
Regards
(English here breaks horribly!)
মডারেশন নোটঃ কন্ট্রোল + অল্ট + পি বা কন্ট্রোল + অল্ট + ইউ চাপলে বাংলা লেখার সুবিধা পাবেন। রোমান হরফে লেখা মন্তব্য আর প্রকাশিত হবে না। ধন্যবাদ।
"""মডারেশন নোটঃ কন্ট্রোল + অল্ট + পি বা কন্ট্রোল + অল্ট + ইউ চাপলে বাংলা লেখার সুবিধা পাবেন। রোমান হরফে লেখা মন্তব্য আর প্রকাশিত হবে না। ধন্যবাদ"""।
বাহ ! এই তো পারছি !
ঢোননোভাট মোডারেটোর - উপস !!
ডঃনয়োবাড - উপস !!
ধন্যবাদ মডারেটর - বাহ ! এই তো পারছি !!
থ্যাংকস ! শিখে গেছি !!!!
@ Hasan Mahmud
৪২ বনাম ১১২। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, শান্তিরই জয় হলো। কিন্তু শান্তির আয়াত থাকলেই কি ভায়োলেন্সের আয়াত নিউট্রালাইজড হয়ে যায়?
নিজেদের স্বার্থে অন্য জাতি বা অবিশ্বাসীদের খতম করে দেয়াটা (কোরানের অনেক আয়াতেই এই আহ্বান আছে) কতোটা মানবিক ? আর তা করলে মানবজাতির কল্যাণ হবে, আপনি সেটা বিশ্বাস করেন?
ভেবে পাই না, কোরানের বক্তব্যের ভেতরে এতো দ্বন্দ্ব ও পরস্পর-বিরোধিতা কেন?
হাসান মোরশেদের সরল প্রশ্নগুলোর সরল উত্তরই আশা করেছিলাম। আশা পূরণ হয়নি, বলতে বাধ্য হচ্ছি।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
অনেক কিছু জানলাম।
হাসান মাহমুদ, হাসান মোরশেদ এবং অন্যান্য সবাইকে বলছি- এই রকম জট ছাড়ানো, সুস্থ্য আলোচনা আরো চাই।
হালাকার কথা আমিও দেশে থাকতে শুনিনি।
আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতে - ধর্ম নামক সামাজিক প্রতিষ্টানটির, দু একটা সামাজিক প্রথা আর উতসব (খন্ড- ত খুঁজে পাচ্ছিনা) বাদে উপযোগিতা কমে আসা দরকার।কারণ এটি মানুষে মানুষে শুধুই বিভেদ বাড়ায়। কিন্তু এটাতো চাইলেই হয়না, সামাজিক পরিবর্তন বলে একটি কথা আছে। আর একজন মানুষ ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাসী হলে, ধর্মাশ্রিত হলে কোন ক্ষতি নাই। কিন্ত তা যখন আমার প্রথম ও প্রধান পরিচয় - 'সংস্কৃতি' তে থাবা দিতে আসে, আমি জানি না কি করা উচিত। মানতে পারি না।
হালাকা গ্রুপের সংখ্যা বেশী কিন্তু তার বিপরীত স্রোতটি ও কম বড় না। আমার তো মনে হয় ওরা যেভাবে 'ব্রেইন ওয়াশ' করতে চায়, আমাদের ও একই পন্থায় তাদের প্রতিরোধ করা উচিত। আমাদের সাহিত্য, সংগীত, শিল্পের দর্শনের ভিত্তি, আমি মনে করি অনেক শক্ত। তা নইলে সংখ্যা লঘুর সংখ্যা লঘু হওয়া ছাড়া উপায় নাই। আমার সাত বছরের দুই কন্যা আর আপনাদের (অনাগত) সন্তানেরা বড় হয়ে দেখবে ওদের নিজের পরিচয়টি - ধার করা।
অনেক ধন্যবাদ রাগীব ।
পোস্টটা পড়ে অনেক কিছু জানলাম। তানভীর ভাই, মোরশেদ ভাই, হাসান মাহমুদ এবং লেখিকা-- সবাইকে অনেক ধনবাদ। সচলায়তনের সুন্দর পরিবেশের জন্যই এধরনের আলোচনা সম্ভব হয়েছে।
নাহার মনিকা, আমার একটা ভ্যাবলা মতো দৃষ্টি আছে, সেই তাকানোর সাথে সাথে এত্তো নিষ্পাপ ভাবে আমি এসব ক্ষেত্রে পালটা প্রশ্ন করি - যে হতাশ এবং বিরক্ত প্রতিপক্ষ কেমন যেন মুষড়ে পড়ে আসলে, আমাকে এই ধরনের সমস্যা বেশী একটা ফেইস করতে হয় না। কারণটা বোধহয় এটাই হবে যে, ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষ ছাড়া আমার খুব বড় বাঙ্গালী সার্কেলে মেলামেশাই নেই। খুব ভদ্রভাবে আমি প্রথমেই জানিয়ে দেই আমি যা মানি বা মানি না, তারপর যার ইচ্ছে হবে আমার সাথে মিশবে অথবা আমাকে সানন্দে ত্যাগ করবে - আমি এই নীতি মেনে চলি।
আমার আম্মা অনেক প্রবাদ বলতেন, যেগুলো আম্মা বিশ্বাসও করতেন। তার মধ্যে একটা আমিও মেনে চলি - "আগে তিতা, পরে মিঠা" ভালো
ভালো থাকবেন, আরো লিখবেন!
আপনার থেকে একটু ভ্যবলা দৃষ্টি বানানোর ট্রেনিং নিতে হবে স্নিগ্ধা!
আমি একটু দিন কানা! আপনার মন্তব্যটা চোখে পড়লো এই এখন! আমার ধারনা ছিলো কোন পোষ্ট প্রথম পাতা থেকে দ্বিতীয় পাতায় গেলে ওটা তেমন কেউ পড়ে না!
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য।
যুক্তি-তর্ক চলতে থাকুক। ধর্মকে গোঁড়াদের খপ্পড় থেকে বের করে আনার প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাই। এই পোস্টের খুঁটিনাটি দেখতে, বুঝতে আরও কয়েকবার সানন্দে ঢুঁ মেরে যেতে হবে।:P
এটা কি আপনার নিজের কথা? যদি হয় তাহলে আপনি একটা কথা মনে রাখবেন আরবী যখন আপনাকে ধর্মীয় কারণে টানে না বা ভাষা হিসেবে টানে না, এই আরবী-ই কিন্তু আপনাকে একজন মুসলমান হিসেবে দাবি রাখে? নাকি ??
মুসলমানের পরকালে ভাষা আরবী। কোরআন আরবীতে তিলাওয়াতের মাধ্যমে যে শান্তি আনে মনে, বাংলা বা ইংরেজীতে পড়লে সেরকম উপলব্ধি আসা কোনদিন সম্ভব না। আপনার লিখায় "হালাকা" বা "হিল্লা বিয়ে" বিষয়ে আমার খুব একটা ধারণা নেই, আর আপাতত থাকাটাও জরুরী মনে করছি না।
আমাদের দেশের ভুজুং-ভাজুং মোল্লারা ইসলামের যে ভুল ব্যাখ্যায় সমাজে কিছু কুসংস্কার তুলে এনেছে, আমি কিংবা আপনারা কিন্তু এটাকে 'কুসংস্কার' হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছি; এটাই কি যথেষ্ট নয়? অপছন্দ এক জিনিস পরিহার করা অন্য জিনিস। সবাইকে মনে রাখতে হবে 'অপছন্দ' থেকে যেন সেই বিষয়ে ঘৃণাবোধ না জন্মায়। আর যদি তাই হয়, তবে তার মত হতভাগা/হতভাগিনী পৃথিবীতে আর কেউ নেই।
মুসলমানের পরকালের ভাষা আরবী, এই তথ্য আপনি কোথায় পেলেন?
আরবী ভাষা না জেনে আরবীতে কোরআন তেলাওয়াত করে কেউ যদি শান্তি পায় সেটা তার নিজস্ব মোহগ্রস্ততার ফল। কী পড়ে যাচ্ছে সেটা না বুঝেই যদি শান্তি পাওয়া যায়, তাহলে তো কোন কথাই নাই।
হিমু ভাই,
আমি তথ্য সংগ্রহ করে মন্তব্যটা করি নাই। মুসলমানের পরকালের ভাষা আরবী এ বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই।
আল্লাহ-তায়ালা কোরআন আরবীতে নাযিল করেছে কাজেই এটাই যথেষ্ট তথ্য।
-আপনার এই কথাটার উত্তর আমি কিছুসময় পরে দিচ্ছি।
আপনার জন্য একটা প্রশ্ন রেখে যাই, আর তা হচ্ছে- "মুসলমানের পরকালের ভাষা আরবী; নয়তো কী?"
ভাই গালিব,
কাকতালীয় হলে ও সত্য গতকাল ঠিক একই বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল একজনের সাথে । আপনার মতোই তিনি বলছিলেন- আরবী হলো পরকালের ভাষা, রোজ কেয়ামতে আরবী ভাষায় ছওয়াল জবাব হবে, যারা পূন্যবান তারা অটোমেটিক আরবীতে কথা বলতে সক্ষম হবে ।
আপনি ও নিশ্চয় এই কথাগুলো বলবেন । যেহেতু তিনি এবং আপনি দুজনেই বিশ্বাসী এবং বিশ্বাসীদের কাছে যুক্তিটা মুখ্য নয় সেহেতু আপনার ধর্মীয় বিশ্বাসের উপাদান দিয়েই আপনার জানা ভুল প্রমান করা যায় ।
আমি ওকে প্রশ্ন করেছিলাম, আপনাকে ও করছি- কোরানের কোন সূরায়, কোন আয়াতে এই কথা বলে দেয়া হয়েছে যে পরকালের ভাষা আরবী, ছওয়াল জবাব আরবীতে হবে?
যদি থাকে বলেন, মুসলমান মাত্র কোরানের আয়াত মানতে বাধ্য সেটা যৌক্তিক হোক বা অযৌক্তিক । আর যদি না থাকে- ভেজাল হাদিস কিংবা
অমুক তমুক হুজুরের রেফারেন্সে ধর্মীয় সিদ্ধান্ত টানবেন না ।
আল্লাহ যা বলেননি নিজ দায়িত্বে সেটা বলে বেড়ানো কিন্তু বেদাতী । সুতরাং কিছু বলার আগে কোরান দেখে নিন এবং এটাও আল্লাহর নির্দেশ, কোরানকে তিনি মুসলমানদের জন্য নিদর্শন রূপে পাঠিয়েছেন ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কোরআন আরবীতে নাজিল হয়েছে এর অডিয়েন্স আরব ছিলো বলে। এর সাথে পরকালের ভাষার সম্পর্ক কী? আপনি পরকাল সম্পর্কে যেভাবে নিঃসন্দেহ হয়ে বসে আছেন, দেখে ভয়ই লাগছে। দুয়েকবার হয়ে এসেছিলেন নাকি?
মুসলমানের পরকালের ভাষা কি, এটা কি ইহকালে বসে জানা কোনভাবে সম্ভব? পরকালে তো জনে জনে গুফতাগু করতে হবে না, কথাবার্তা সওয়ালজওয়াব চলবে আল্লাহ বা আল্লাহর ফেরেস্তার সাথে। আল্লাহ বা আল্লাহর ফেরেস্তারা যদি আরবী ছাড়া অন্য জবানে কথা বলতে না পারেন, তাহলে তো মহা মুশকিল। কারো নাম যদি হয় চান মিয়া, তারা সেই নাম উচ্চারণই করতে পারবেন না, কারণ আরবীতে চ নাই। নাকি?
আপনার ঠাট্টাটা ভীষণ মজার ছিল। জনৈক চাঁন মিয়া সত্যি বড় অভাগা।
আর একটা কথা আছে- 'অভাগা যেদিকে যায়, সাগর শুকিয়ে যায়।'
আমি ভাই ধর্ম-কর্মে হাতুরে ডাক্তারদের মত; কিছু জানি আবার কিছুই জানি না। যাক সে কথা, আপনারা ভাল থাকপেন।
যার যার ধর্ম-কর্ম-বিশ্বাস তার তার কাছে। আর কোন যুক্তি-তর্কে গেলাম না।
ভাই রে, রাগ কইরেন না, একটা কথা কই: আসলে ধর্মবিশ্বাস আর যুক্তির সহাবস্থান একেবারেই অসম্ভব।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আমি তো হালায় আরবি লিখতে/পড়তে/বলতে/বুঝতে পারি না। আমার কী হইবো পরকালে?
দোভাষী থাকবো নাকি?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আরবী ভাষা সংক্রান্ত গালিবের প্রশ্নে হিমু, হাসান মোরশেদ, সংসারে এক সন্ন্যাসী আর রাগীব সবাই প্রায় আমার মনের কথাগুলি বলে দিলেন! নিজেকে আর অত সংখ্যা লঘু মনে হচ্ছে না।
ভালো থাকবেন সবাই।
শেষ পোষ্ট
সবাইকে অজস্র ধন্যবাদ, বিশেষ করে হাসান মোরশেদ-কে। কোরাণ সম্বন্ধে হাজারো প্রশ্নের জবাব আমি জানি না। অতিত-বর্তমানের মওলানার যেসব ব্যাখ্যা দিয়েছেন তার অনেকটাই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। অভাষী স্রষ্টার বাণী মানুষের সীমাবদ্ধ ভাষায় প্রকাশ করতে হয়েছে, এবং আমাদের উপলব্ধিও বহুমাত্রিক ও সীমাবদ্ধ তাই মানুষের ধর্মতাত্ত্বিক উপলব্ধির ঘাটতি থাকবেই এটা ধরে নিয়ে ক্ষ্যান্ত দিয়েছি। জীবন হল শত শত পরষ্পর-বিরোধী বাস্তব ও সত্যের সমাহার। কোরাণ মানুষের জীবনের বিভিন্ন সংঘাত নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে ডিল করেছে তাই জীবনের সেই পরষ্পরবিরোধীতা কোরাণে প্রতিফলিত হবেই এটা ধরে নিয়ে ক্ষ্যান্ত দিয়েছি। লড়াই ঝগড়ায় কোরাণ মুসলমানদেরকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে উৎসাহিত করবে এটা স্বাভাবিক ধরে নিয়ে ক্ষ্যান্ত দিয়েছি।
আমি ইসলামের ধর্মতাত্ত্বিক নই, ইসলামের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার মাঠকর্মী মাত্র। হাজার বছর আগের ঘটনার পেছনে ছুটবার চেয়ে এখন, এই হিংস্র বর্তমানে অন্ততঃ ইসলামের নামে মানুষের ওপরে মানুষের অত্যাচারটা বন্ধ হলেই অনেক পাওয়া। ‘‘হিল্লা’’ সিনেমা, আমার শারিয়া-নাটক ‘‘বিবিধ বিধান’’, শারিয়া বই ‘‘ইসলাম ও শারিয়া’’ সেই চেষ্টা মাত্র। রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াই ও পুরুষতন্ত্র ইসলাম নিয়ে ১৩০০ বছর ধরে যে ষড়যন্ত্র করে এই অত্যাচারী আইন প্রতিষ্ঠা করেছে তাকে চিহি¡ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই ষড়যন্ত্রকে পরাজিত করার মেকানিজম-ও কোরাণ-রসুল থেকেই তাঁরা তুলে এনেছেন যাতে মুসলমানদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। তার একটা তো ‘‘হিল্লা’’ সিনেমায় দেখলেনই। মুখে যাই বলুন ধীরে ধীরে একের পর এক শারিয়া আইন আপডেট করছেন শারিয়া-নেতারা।
সময় লাগবে, কিন্তু দিগন্েত আলোর চিহ¡ স্পষ্ট। মুসলমান একদিন বুঝবে যে স্বামী যদি বৌকে না-ও পেটায় কিংবা ইচ্ছেমত বিয়ে-তালাক না-ও করে (ইত্যাদি ইত্যাদি) তবু তার সেই অধিকারগুলোই স্ত্রীর অপমান।
এ নিয়ে এখানেই শেষ করছি, পরে অন্যান্য বিষয়ে পোষ্ট করব।
মানুষের ভাষার সীমাবদ্ধতা বিষয়ে সৃষ্টিকর্তা অবগত ছিলেন না? মানুষের উপলব্ধিও বহুমাত্রিক ও সীমাবদ্ধ - তাও তিনি জানতেন না? জানলে সর্বজনগ্রাহ্য ও সর্বজনবোধ্য কিছু রচনার ক্ষমতা তাঁর ছিলো না? পদে পদে কেন শুনতে হবে "ঠিকমতো বোঝোনি", "এটার ভিন্ন অর্থ আছে, যা বিশ্লেষণ প্রয়োজন", "এটির অনুবাদ আলাদা হবে"। অবাক হয়ে ভাবি, নিউটনের সূত্র বিষয়ে এমন কথা ওঠে না কেন? সীমাবদ্ধ ক্ষমতার মানুষের রচিত আরও অজস্র বাক্যও একটি, শুধু একটিই, স্থির বক্তব্য প্রকাশ করে। তাহলে কি ধরে নেবো, সৃষ্টিকর্তার যথাযথ প্রকাশক্ষমতা ছিলো না?
কোরানের একটি-দু'টি বাক্য বা আয়াত নিয়ে এই "কনফিউশন" হলে তবু মেনে নেয়া যেতো। কিন্তু আপনি তো ভালো করেই জানেন, বিতর্কিত শব্দ/বাক্য/আয়াতের সংখ্যা অগণ্য।
কোরানে বহু পরস্পরবিরোধিতা আছে বলেই তো হাসান মোরশেদ প্রশ্ন তুলেছিলেন: "কোরানের নির্দেশ মুসলমানদের জন্য প্রশ্নাতীত ভাবে পালনীয়" কি না। তার উত্তর কিন্তু আসেনি এখনও। পরস্পরবিরোধিতাপূর্ণ কোরান কি মুসলমানদের জন্য আইন-গ্রন্থ কি না, পাওয়া গেল না সেই প্রশ্নের তর্কাতীত উত্তরও।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
এই কথাটা মজার। এর অর্থ দাঁড়ায় এমন, মানুষের পেজোমির পাল্লায় পড়ে খোদ আল্লাহও পরস্পরবিরোধিতামুক্ত কোন কিছু নামাতে পাল্লেন্না। বেচারার জন্য দুঃখ লাগে। পরস্পরবিরোধিতাপূর্ণ ইনসানের জন্য গাইড হিসাবে পরস্পরবিরোধিতায় বোঝাই আসমানী পুস্তক পাঠাতে হলো উনাকে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম, ছাত্র দীর্ঘ ঊকার লিখতে পারে না বলে মাস্টার তার জন্যে বই লিখলেন হ্রস্ব উকারে ভর্তি করে। তাই না?
তবে আপনার ক্ষ্যান্ত দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এসব নিয়ে বহুত ক্যাচাল হয়ে গেছে বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারে। বিশেষ করে সচলে এই গোছের কথাবার্তা অনেকটা প্রীচিং টু দ্য কনভার্টেড এর মতো হয়ে যায়। অন্য বিষয়ে আপনার কাছ থেকে লেখার আশায় থাকবো। ধর্মের লেবু চিপতে চিপতে তিতা হতে দেখেই আমরা অতিষ্ঠ হয়ে সচলে একটা ধারাই যোগ করে দিয়েছি, ধর্মপ্রচার জোরালোভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। নীতিমালায় সময় পেলে একবার উঁকি দেবেন অনুগ্রহ করে। ধন্যবাদ।
ধর্ম নিয়ে যেকোন আলোচনা, বিশেষত মুক্ত আলোচনার ক্ষেত্রে খুব প্রধান একটা সমস্যা হচ্ছে বিশ্বাসীদের পক্ষে যেকোন ধর্মমতকে দেশকালের সীমাবদ্ধতার বাইরে চিন্তা করতে পারার দার্শনিক অক্ষমতা। সুস্থ আলোচনা শুধুমাত্র সেই বিষয় নিয়েই হতে পারে যা বিবদমান পক্ষসমুহে একটি অভিন্ন মেথাডে বিশ্লেষিত হতে পারে। আলোচনা-সমালোচনা-বাহাস যাই হোক, কোন বস্তুগত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হলে আলোচনার উপাত্তসমূহের ইহজাগতিক বা বস্তুরূপ আবশ্যক। যে বিষয় ইহজাগতিক নয়, তাঁর ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। বিশ্বাসকে বস্তুরূপ দিয়ে বা তথ্য হিসেবে দেখা হয়ে থাকে দর্শনে, সমাজতত্ত্বে এবং সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানে। সেখানে বিশ্বাস একটি সামাজিক ক্রিয়া, যা দেশকাল সাপেক্ষে সীমাবদ্ধ অভিজ্ঞতা বিশ্লেষন সমুহের রসায়নের প্রতিফলন। অর্থাৎ বিশ্লেষনের ভিত্তি সেখানে বিশ্বাস নয়; বিশ্বাস সেখানে ইহজাগতিক অভিজ্ঞতা বিশ্লেষনজাত ইহজাগতিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষিত হবার বস্তু। বিশ্বাসীর অবস্থান থেকে দেখলে বিশ্বাস একটি অনপেক্ষ (absolute) ক্রিয়া। সুতরাং বিশ্বাসের বস্তু বিষয়ক আলোচনায় বিশ্বাসীর পক্ষে বিশ্বাসকে ইহজাগতিকতার ছাঁকুনিতে ফেলা অসম্ভব। আবার ইহজাগতিক যৌক্তিকতার মেথাডে সমাজ বা সামাজিক ক্রিয়া বিশ্লেষনকারীর পক্ষে অনপেক্ষ ক্রিয়ার অস্তিত্ব স্বীকার অসম্ভব। সুতরাং বিশ্বাসের বস্তু নিয়ে যখন কোন আলোচনায় বা বাহাসে ইহজাগতিক এবং আধিবিদ্যিক মেথাড মুখোমুখি হয় তখন মৌলিক পরস্পরবিরোধীতার কারণে সেখানে আলোচনা বা বাহাসের পরিবর্তে ক্যাওসের সুচনা হয়। এই ক্যাওসের রাজনৈতিক সুবিধা ভোগ করে থাকেন বিশ্বাসকে ইহজাগতিক দেনাপাওনায় ব্যবহারকারীগণ, যাদেরকে সহজ কথায় আমরা ধর্ম ব্যবসায়ী বলে থাকি। সুতরাং ধর্ম ব্যবসায় বা ধর্ম ব্যবসায়ীরা যখন আলোচনার বা বাহাসের উপাত্ত, মেথাড সেখানে ইহজাগতিক হতেই হবে। এই ইহজাগতিকতায় কোনপক্ষের আপত্তি থাকলে আলোচনা-সমালোচনা বা বাহাস সেখানে অর্থহীন।
বাংলা ব্লগোস্ফীয়ারে রিলিজিওন অর্থে ধর্মালোচনাগুলি এই পর্যন্ত বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এরকম অর্থহীন ক্যাওসে পরিণত হয়েছে, যার জন্য আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে, আলোচনার পদ্ধতি হিসেবে এক পক্ষের ইহজাগতিকতাকে মেনে নেবার অক্ষমতা দায়ী।
নিরপেক্ষ অবস্থান বলে কিছু নেই। সচলায়তনও কোন নিরপেক্ষ প্রপঞ্চ নয়। সচলায়তনে ইহজাগতিকতাই যৌক্তিকতার মানদন্ড হিসেবে স্বীকৃত। সুতরাং অধিবিদ্যাকে পরমার্থ জেনে যাঁরা তর্ক-বিতর্কে আগ্রহী সচলায়তনে তাঁদের বিশেষ সুবিধা হবে না। নীতিমালার নিরুৎসাহকরণের তালিকায় প্রথম এবং চতুর্থ পয়েন্টগুলি যোগ করার এই প্রেক্ষিতকে, ধর্ম বা ধর্ম ব্যবসায় বিষয়ক আলোচনায় ভবিষ্যতে আমলে নেবার অনুরোধ থাকলো।
ধন্যবাদ।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
সমস্যা:- নুতন পোষটের জন্য লগ ইন করতে পারছি না। কেন ?
২০ | সুমন চৌধুরী - ঠিক বলেছেন।
১৯.২ | হিমু - "আপনার ক্ষ্যান্ত দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই........ধর্মপ্রচার
জোরালোভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়।"
সঠিক সিদধানত, খামাখা ফালতু প্যাচাল। তবে ধর্মের
নামে মানবাধিকার লংঘন হলে আঘাত করতেই হবে।
নতুন মন্তব্য করুন