অন্ধকার রাত, অমাবস্যা রাতের এই ঘুটঘুটে কালো অন্ধকারেই একাকী হেঁটে যাচ্ছে বিপুল। তার হাতে কোন আলো নেই এমনকি আলো জ্বালাবার কোন উপকরণও নেই। তবুও সে হাঁটছে নির্ভীক নিশাচরের মত। মধ্যরাতের এই নিঃস্তব্ধতাকে ভেদ করে কেবল তার হেঁটে চলার শব্দ ভেসে আসছে। গাছের ঝরা শুকনো পাতা মাড়িয়ে যাওয়ার শব্দ অন্ধকারটাকে যেন আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। অথচ তার আচরণে ভয়ের বিন্দুমাত্র চিহ্নটি নেই। সে এগিয়ে যাচ্ছে গোরস্থানের দিকে, তার হাতে একটি মরা বেড়াল। তার সম্মুখে ঘন গাছের সারি, তার পরে আরও আধ মাইলের মত রাস্তা, তারপর গোরস্থান।
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ থেমে পড়ে বিপুল। তার পাতা মাড়ানোর শব্দ থেমে গেল কিন্তু আরও একটা প্রাণীর হেঁটে আসার শব্দ তখনও স্পষ্ট। পিছন ফিরে তাকালো বিপুল, ঘুটঘুটে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না তার, তবে শব্দটা থেমে যায়। পৃথিবী এখন নীরব, নিজের শ্বাস প্রশ্বাস এমনকি চোখের পলক ফেলার শব্দটুকুও বুঝি শোনা যাবে কান পাতলেই। কিছুটা সময় তাকিয়ে থেকে ফের চলতে শুরু করে বিপুল, তার হাতে ঝুলছে মরা বেড়ালটা। ঘন গাছের সারি পার হয়ে খোলা মাঠে হাঁটছে বিপুল। এমন খোলা মাঠেও আকাশে ফুটে থাকা তারা ব্যতিত আর কোন আলো চোখে পড়ে না। শ্মশানের মত নীরব মাঠে একাকী হেঁটে যায় বিপুল গোরস্থানের উদ্দেশ্যে।
অবশেষে এসে পৌঁছায় গোরস্থানে। ছুঁড়ে ফেলে দেয় নিজের হাতে করে বয়ে আনা বেড়ালটা। দূরে বেড়ালটার পতনের শব্দ হয় ঝপাৎ করে, সাথে যোগ হয় আরো কতগুলো শব্দ। একদল ভক্ষকের মাংস ছিড়ে খাওয়ার শব্দ। বেড়ালটা পড়ার সাথে সাথে যেন কারা তাকে ছিঁড়ে খুড়ে খেয়ে ফেলে। অন্ধকারে সে দৃশ্য দেখা যায় না, কিন্তু একদল মাংসাশীর খাদ্য গ্রহণের শব্দগুলো পরিষ্কার ফুটে উঠে নিঃশব্দ অন্ধকারকে ভেদ করে। এবার বিপুল ভীত হয়, দ্রুত পদে পিছিয়ে আসতে চায়। অন্ধকারের বুকে নিজের পথটা খুঁজে নিতে পিছন ফিরে সে। কিন্তু পথ খুঁজে পায়না, কেমন যেন ভ্যাবাচ্যাকা লাগে। পিছন হতে কারো পদধ্বনি শুনতে পায়, যেন সদলবলে কারা এগিয়ে আসছে তার দিকে বিপুল বেগে। শব্দেরা ক্রমশ নিকটবর্তী হতে থাকে, একসময় বিপুলের কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ অনুভূত হয়, ফিরে তাকায় বিপুল.... । বিদ্যুৎটা চলে গেল, ভূতের যে নাটকটা উৎসাহ নিয়ে দেখছিলাম কিন্তু সেটি আর শেষ করা হলো না।
সালাহউদদীন তপু
মন্তব্য
হুমম
ধাক্কাটা পেয়েছেন তাহলে?
ধুরো মশাই, এই ছিলো আপনের মনে?
আপনি কি বিপুলকে আরো বিপদে ফেলতে চেয়েছিলেন? যদি তাই হয়, তাহলে তো আপনি লোক ভালো না, মানুষকে বিপদে ফেলে ভুতের জয় দেখতে চান।
আমার মনে তো মানুষ উপরে তাই অন্তত বিদ্যুৎটা নিয়ে তাকে বাঁচানো গেল।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
সালাহউদদীন তপু
আইপিএস নাই?
আইপিএস থাকলে কি আর এই গল্প লিখতে বসি? তখন লিখতাম হিন্দি সিরিয়ালের কাহিনী, শুরু আছে কিন্তু শেষ আছে কিনা সেটা জানার জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে।
ধন্যবাদ মন্তব্য প্রদানের জন্য।
সালাহউদদীন তপু
যাক...।
শুরুতে তো ভয়ে আমার হাত পা...
মাঝামাঝি এসে আমার নিজের হাত পাও আপনার মত.........
তাই আর এগোলাম না.......।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
সালাহউদদীন তপু
- আচ্ছা, বিপুলকে ঐ মধ্য রাতেই কেনো এতো দূরের গোরস্থানে যেতে হলো তাও একটা বেড়ালের জন্য! সকাল বেলা খাতিরজমা ঘুম থেকে উঠে, গরম ভাত, চ্যাপা শুটকীর ভর্তা দিয়ে ভরপেট খেয়ে, ট্যাক থেকে একটা আকিজ বিড়ি ধরিয়ে, সেটা টানতে টানতে রওনা দিলে হতো না?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাইরে......... যদি মধ্য রাতেই না যায় তাহলে ভূত পাবে কোথায়? সকাল বেলা খাতিরজমা রওনা দিলে তো আর ভূতে পেতো না, আর আপনেও এই গল্পটা পেতেন না।
কতজনেই তো সকাল বেলা গোরস্থানের আশপাশ দিয়ে যায়, শুনেছেন কি তাদের নিয়ে কোন ভূতের কাহিনী?
সালাহউদদীন তপু
বাঘই যদি না থাকলো তো গোলপাতা নড়লো কী করে?
হাহাহাহাহা।।। খুব ভালো লাগলো।
ভালোই ঘুরাইলেন
শ্রীতন্ময়
ভাল লেগে থাকলে আমার লেখা সার্থক। আর ঐ ঘুরানোর কথা কি যেন বললেন না? আসলে আমি ঘুরাই নাই, ঘুরাইছে বিদ্যুৎ। জানেনই তো বাংলাদেশের লোডশেডিং এর অবস্থা।
সালাহউদদীন তপু
আমারো একই দশা। একটা গা ছমছমে ভুতের গল্প পড়তে বসলাম, পড়া হলো না
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
কেন পড়া হলো না? ভয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন নাকি?
সালাহউদদীন তপু
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
Acha rate jodi beral ta marao gai take ratei fele aste hobe keno sokale geto na ar ato dure gorasthane hotath rate chele tike jete holo.chele tir sahosh ache.
নতুন মন্তব্য করুন