একাত্তর থেকে দুই হাজার নয়। এর মাঝে কেটে গেছে আটত্রিশ বছর। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার করতে পারিনি। এটা জাতি হিসেবে যেমন লজ্জার তেমন ব্যার্থতারও বটে। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে যে বিচার হওয়াটা কতটা জরুরী ছিল তা আমরা এই বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া দেখে স্পষ্টত বুঝতে পারি। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা সময়ের কাজ সময়ে না করার বহু আলামত আছে। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ কাজ যে আমরা দেরিতে শুরু করব সেটা অতি স্বাভাবিক এবং দেরিতে সম্পাদন করার যে মাশুল তা তো আমাদের দিতে হবে। আজ যারা প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী তারা শুধু প্রচলিত রাজনীতির মধ্যেই নয়, তারা এখন ক্ষমতার অংশ। তারা বাংলাদেশের জন্মকে রোধ করতে নৃশংস, নির্দয়, নির্লজ্জ মধ্যযুগীয় কান্ড কায়দায় এ দেশের মা, বোনদেরকে তারা শত্রুদের হাতে তুলে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি বরং তারা বাঙালী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে পাকসেনাদের হত্যাপ্রকল্পকে সহজতর করেছিল। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন নিশ্চিত পরাজয়ের সম্মুখীন তখন তারা এই সকল রাজাকারদের সহায়তা নিয়েই নতুন জন্ম নিতে যাওয়া দেশকে মেধাশূন্য করতে দেশের সেরা সন্তানদের হত্যা করেছিল। সে সকল ইতিহাস তারা প্রতিনিয়ত অস্বীকার করে চলেছে। আমরা যারা যুদ্ধ দেখিনি, যারা যুদ্ধটাকে বুঝবার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস পাঠ করি কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চিঠি পড়ি আর বোঝার চেষ্টা করি যুদ্ধকালীন অরাজক পরিস্থিতি। আমরা যারা নতুন প্রজন্ম তারা চিঠিগুলো পড়ে চোখের জল সংবরণ করতে পারিনা। এই রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসগোষ্ঠী কি নারকীয় কান্ড সেদিন ঘটিয়েছিল । বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর ওয়েবসাইটে পাকবাহীনির নির্যাতনের সচিত্র প্রতিবেদন দেখলে যে কারো চোখে জল আসতে বাধ্য। এ পর্যন্ত অনেক পরিকল্পনা সরকার ও সাধারন জনগণ গ্রহন করেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে কিন্ত সব ব্যর্থ। এ সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে তাদের বিচার করবার প্রতিশ্রুতি অনুসারে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলছে। এবারও যে এ বিচার বাধাগ্রস্ত হবেনা সে বিশ্বাস আমরা সরকারের উপর রাখতে পারছি না। সরকারকেই প্রমাণ করতে হবে যে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রাখবে এবং তার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা দ্রুত করা । কারন অধিক দেরী জনগণে ধৈর্যচ্যুতি হতে বাধ্য। আমরা সরকারের কাছে এ আবেদনও জানয় যে দ্রুত করতে গিয়ে যেন আবার এই বিচারের মান নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠে । বিচারের মান দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত যা অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় হবে। এই বিচারের মান নিয়ে যদি কোন প্রশ্ন উঠে তা নিয়ে রাজনীতি হওয়াটা অতি স্বাভাবিক এবং রাজনীতি হওয়া অর্থ আবার গণজোয়ারের দীর্ঘ প্রতীক্ষা। এ ধরনের জাতীয় ইস্যু নিয়ে বিভক্তি নয় কিভাবে একসাথে কাজ করা যায় সরকারকে সে দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।
শাহিদুর রহমান MfiMMmmশাহিদ
মন্তব্য
লেখায় প্যারাগ্রাফ বিভাজন করুন প্লিজ।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
পরামর্শ সাদরে গ্রহন করলাম এবং আগামীতে প্যারা করব।
শেষ লাইনটা বুঝলাম না, বাকিটা একমত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একটি জাতীয় ইস্যু। আর তাই এ ইস্যু নিয়ে কোন রাজনীতি নয়। সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
শাহিদুর রহমান শাহিদ
নতুন মন্তব্য করুন