• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

একটা অপ্রয়োজনীয় মানুষ

বইখাতা এর ছবি
লিখেছেন বইখাতা (তারিখ: শনি, ২৭/০৬/২০০৯ - ৪:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা অপ্রয়োজনীয় মানুষ

মানুষটা এই তিরিশের কোঠায় এসে আচমকা একটা হিসাব কষতে বসল।

মানুষটা এমনিতে ভালই। অন্তত লোকে তাই বলে। মোটামুটি ধরণের স্টুডেন্ট ছিল, মোটামুটি ধরণের একটা চাকরি করে, একটু অমিশুক, কারো সাতে-পাঁচে নাই।

মানুষটা ভবে, ছোটবেলা থেকেই তার সাথে এটা হয়ে আসছে। তাকে কেউ কেন জানি তেমন একটা পছন্দ করে না। অথচ সে তো কখনো কারো কোনো অপকার করে না, বরং উপকারই করে সুযোগ পেলে। সে ভাবে আর মন খারাপ করে। দেখতে তো সে খারাপ না, তাহলে ? প্রশ্ন করে নিজেকে। বড় করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে সে।

যখন সে স্কুলে পড়ত, তার খুব ভালো একটা বন্ধু ছিল। বন্ধু না বান্ধবী! ভুরু কুঁচকে ভাবে একটু। একই কথা, সে সিদ্ধান্ত নেয়। তো দেখা গেল, শহরে যখন নতুন এক পরিবার এলো, ওর সেই বন্ধু একজন নতুন বন্ধু পেয়ে গেল। ধীরে ধীরে দূরত্ব বেড়েই গেল শুধু ওদের মাঝে। খুব কষ্ট পেয়েছিল সে। অনেক রাগ-অভিমান করেছে, প্রকাশও করেছে বন্ধুর কাছে ওর অভিমান। লাভ হয়নি কোনো। যে যায়, সে চলেই যায়। কিছুতেই ধরে রাখা যায় না। দুঃখ পেয়েছে খুব। ওই প্রথমবার তো। অবশ্য এর পরের বার, বারবার, তার কি কষ্ট একটুও কম হয়েছে! নাহ্ । ভাবতে ভাবতে এবার একটু হাসিই পায় তার।

এরপর ওই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। অনেকবার। সবাই শুধু দূরে সরে গেল।

কলেজে যখন পড়ত, ১ জন না, সমমনা ৩ জন বন্ধু পেয়ে গেল সে। আহ্ ... ওই দিনগুলি বড় ভাল কেটেছে। অনেক ছোটোখাট দুঃখ-কষ্ট, সমস্যা একসাথে মিলেমিশে সয়েছে। তারপর একদিন....যা হবার হলো। ওই দিনটার কথা সে মনে করতে চায় না। তারপরও মনে পড়ে। অসহায় লাগে তার। ছোট একটা ব্যাপার নিয়ে তারা ওকে ভুল বুঝলো। ভেঙ্গেঁ গেল বন্ধুত্ব। সে অবশ্য তার বন্ধুদের বোঝাতে চেষ্টা করেছে প্রাণপন। লাভ হয়নি। অনেক দিন পরে অবশ্য একজন স্বীকার করেছে যে তার ওপর অবিচার হয়েছে, আসলে তার কোনো দোষ ছিল না, কিন্তু একবার সুর কেটে গেলে কী আর আগের মত কেউ হতে পারে!

কত কথাই তার মনে পড়ে।

ভার্সিটিতে তার একজন ভাল বন্ধু হয়েছিল। কিন্তু সেও একসময় তার থেকে দূরে সরে গেছে। অবশ্য ততদিনে সে বুঝে গেছে যে, কিছু একটা তার মধ্যে আছে যেটার জন্য কেউ তার কাছ আসতে চায় না, কাছে থাকতে চায় না। কিন্তু সেটা কী ? সে এতদিনেও তা আবিষ্কার করতে পারলো না।

এমনকি সে বিয়ে পর্যন্ত করতে পারলো না! অপমানবোধে তার মুখের ভিতরটা তিতা হয়ে যায়। তার কী যোগ্যতা কারো থেকে কম ছিল!

মানুষটা অনেক গবেষণা করেছে ব্যাপারটা নিয়ে, মনে মনে। কেন তাকে কেউ পছন্দ করবে না ! তার চেহারা, পড়াশোনা, চাকরি, আচার-ব্যবহার সবই তো সবাই ভাল বলে। তাহলে! শীতের ভোরের গাঢ় কুয়াশার মত গাঢ় বিষন্নতায় ডুবে যায় সে। তার আশংকা হয়, সে হয়তো অসুস্থ হয়ে যাবে, মানসিকভাবে, খুব তাড়াতাড়ি।

সে ভাবে, তার সাথে কারো ঘনিষ্ঠতা হলেই সে ভয পায়, কখন তাদের মধ্যে আবার দূরত্ব এসে যায়। একসময় না একসময় ঠিকই তার ভয়টা সত্যি হয়ে যায়। সে বিপন্ন বোধ করে। সে কি কোনদিনই এমন কাউকে পাবে না যার কাছে সে তার মনটা খুলে ধরতে পারে খোলা বইয়ের মত?

সে হিসাব শুরু করে আর মেলাতে পারে না। বন্ধুরা তো আগেই বাদ। কিন্তু পরিবারের লোকজনেরা। ? মানুষটা অবাক হয়ে লক্ষ্য করে যে তার পরিবারের লোকেরাও তার কথা খুব একটা ভাবে না। ভাই-বোনরা নিজেদের সংসার গোছাতে ব্যস্ত। তার কথা, তার সুবিধা-অসুবিধার কথা ভাবার সময় কারো নাই। সেটাই তো স্বাভাবিক। সে ভাবে। নাকি স্বাভাবিক না, সে বুঝতে পারে না।

বাবা তো অনেক দূরের মানুষ চিরকালই। তাদের ভাইবোনদের কাছে আসেননি কখনো। আর মা। এইথানে তার সবচেয়ে বড় কষ্ট। মা কেন তার কষ্ট, তার মনের কথা বুঝতে চাইবে না! তার খুব অভিমান হয়। তাহলে! আর কেউই তো রইল না তার জন্য।

সে বসে আছে তার বিছানায়। তার পাশে পড়ে থাকা ম্যাগজিনগুলো এলোমেলো। ম্যগাজিনগুলির মনোচিকিৎসা বিভাগটা সে পড়ে, বোঝার জন্য যে সে অসুস্থ কিনা। কিন্তু কোনো সিম্পটমই তার সাথে মেলে না। ভাবতে ভাবতে তার আবার খুব অসহায় লাগতে থাকে।

সে ভাবে, সবাই কী তার মত একা ? কিন্তু বুঝতে পারে না যে তারা একা ? নাকি শুধু সেই এত একা ! ছোটোবেলা থেকে এই সময়টা পর্যন্ত অনেক ঘটনা, কথা সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাকের মত তার মনের চোখে ভেসে যায় কয়েক সেকেন্ডের জন্য। আর সে হতাশ হয়ে অনুভব করে, কোনো জিনিস পছন্দ না হলে যেমন কিছুদিন পর সবাই বাতিল করে দেয়, সে তেমনি ওইরকম একটা বাতিল জিনিসের মত। পছন্দ হয় না বলে অবহেলায় দূরে ঠেলে দেয়। একটা বাতিল মাল।

বাতিল মালের জায়গা কোথায় ? বাতিল মালপত্রের গুদামে। তাহলে আমি এখানে আছি কেন? সবার মাঝে ? আমাকে তো কারো প্রয়োজন নাই। সে ভাবে। তহলে আমি কী চলে যাবো ? সে একটা আদ্ভূত উত্তেজনা বোধ করে। রুমের চারদিকে সে তাকিয়ে দেখলো। চেয়ারটা যদি খাটের ওপরে আনা যায়...সে হিসাব করে। খাটটা ঘরের মাঝ বরাবর আছে। চেয়ারটা খাটের ওপরে ফ্যানের ঠিক নিচে রাখলেই সে ফ্যনের নাগাল পেয়ে যাবে। বিছানার চাদরটা ছিঁড়লেই কাজ চলে যাবে। শক্ত চাদর।

এতক্ষণ পর সে আড়মোড়া ভেঙ্গেঁ উঠে দাঁড়ায়। এইবার কাজে লেগে পড়তে হবে। এক পা এগোতেই জানালা দিয়ে দৃষ্টি বাইরে গিয়ে পড়ে, আর সাথে সাথে তার সমস্ত মন হাহাকার করে ওঠে, আপাতদৃষ্টিতে কী সুখী অথচ কী অসুখী একটা জীবন। কিন্তু আকাশটা কী সুন্দর। গাছগুলো কী জীবন্ত সবুজ!

এইরকমভাবেই কি তার সবকিছূ শেষ হয়ে যওয়ার কথা ছিল ? সে কি শেষ করবে ? নাকি করবে না ?

তারপর হঠাৎই সে একটা শূন্যতাবোধে আক্রান্ত হয়। মনে হয় সবকিছু আসলে অর্থহীন। মানুষগুলি সব রংমাখা পুতুল। কারো মুখে রং বেশী আবার কারো এত কম যে দেখাই যায় না। একটা প্রবল একাকীত্ববোধ চেপে ধরে তাকে। কোনাে কিছুতেই কী কারো কিছু এসে যায় ? তার মনে হয় কোনো কিছুতেই তার আর কিছু আসে যায় না।

এবার সে নির্বিকারভাবে এগিয়ে যায় টেবিলের সামনে রাখা চেয়ারটার দিকে।


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

গাঢ় অন্ধকারের মত হতাশা!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কারো কারো সাথে জানি না কেন, এরকম হয়। কষ্ট লাগে।
তবে মাননীয় অতিথি
আপনি আপনার নাম লিখতে ভুলে গেছেন।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ভালো লাগল

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

বইখাতা [অতিথি] এর ছবি

দুঃখিত, আমি নিয়মাবলী অনুযায়ী নাম লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম।
নাম আমার বইখাতা।
আমি একজন হতাশাগ্রস্ত মানুষের ছবি এঁকে দেখতে চেয়েছিলাম, তাই এই লেখার চেষ্টা।

নিবিড় এর ছবি

আপনার গল্পটা ভাল লাগল (চলুক)
নামটা জানতে পারলে আর ভাল লাগত।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

বইখাতা থেকে লাফিয়ে নামুক আরো আরো হতাশার চিত্র, প্রত্যাশার চলচ্চিত্র।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

বইখাতা [অতিথি] এর ছবি

আমি অবশ্যই চেষ্টা করবো।

বইখাতা [অতিথি] এর ছবি

সবাইকে প্রতিক্রিয়া প্রকাশের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

নিবিড় ও সাইফ তাহসিন, আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে সত্যি খুব খুশি হয়েছি ।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আমি নিজেই আসলে বিষন্ন আজকে জনাব বইখাতা, নাহলে ২ শব্দে আপনার লেখায় মন্তব্য করাটা রীতিমত অবিচার বলতে হবে, আরেকটা লেখা দিন, আশা করি তার মধ্যে মন ভালো হয়ে যাবে, তখন আপনার লেখার যথাযথ সম্মান করার চেষ্টা করব

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বইখাতা, সুন্দর নিক...

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌কী সুন্দর করে হতাশার ছবি আঁকলেন, অসাধারন!!!

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

দ্রোহী এর ছবি

জীবনতো এমনিতেই যথেষ্ট হতাশায় ঘেরা। কিছু আনন্দের ছবি আঁকুন না।

আপনার গল্পটা ভালো লেগেছে।

অবনীল এর ছবি

(Y) (Y)
___________________________________
স্বপ্ন নয়, - শান্তি নয়, - কোন এক বোধ কাজ করে মাথার ভিতরে!

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

বইখাতা [অতিথি] এর ছবি

সাইফ তাহসিন, আপনাকে আবারো অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ শিমুল।
নীড় সন্ধানী, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দ্রোহী, ধন্যবাদ। সত্যিই জীবনে এমনিতেই অনেক হতাশা থাকে। আমি চেষ্টা করবো আনন্দের ছবি আঁকতে।
অনেক ধন্যবাদ অবনীল।

তিথীডোর এর ছবি

এতো দেখি আমার নিজের গল্প। :(

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কালো কাক এর ছবি

"ঘরের কথা পরে জানলো ক্যাম্নে !" আমার গল্প একদম !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।