যারা বদলে দিলেন ভালোবাসার কনসেপ্ট (পর্ব ২)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২৫/০৭/২০০৯ - ১১:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রেম নয় ভালোবাসা নয় কোন এক বোধ কাজ করে

জ়ীবনানন্দ দাশ

পূর্ববর্তি পর্বের রিক্যাপ ও প্রাসঙ্গিক আলোচনাঃ

পূর্ববর্তি আলোচনায় আলসেবিয়াডস ও সক্রেটিসে মধ্য যে অন্তরঙ্গতা লক্ষ্য করা যায় তা অনেকের ধারনা মতে জ্ঞান পিপাসু ভালোবাসা বা অযৌন প্লেটোনিক ভালবাসা হলেও বেশ কিছু মতবাদ এটাকে ভিন্নভাবে দেখেছেন। তবে গ্রহনযোগ্য মতবাদ হল জ্ঞান লাভের যে কামনা তা স্বয়ং একটি ইরোটিক লাভ। এটা ইন্টার পার্সনাল এট্রাকশন থেকে কিছুমাত্র কম নয়। আলসেবিয়াডস সক্রেটিস সম্পর্কে বলেছিলেন-

Whenever i listen to him speak, i get more ecstatic than the Corybantes! My heart pounds and tears flood my eyes ender the spell of his words.

তিনি সক্রেটিসের সাথে একসাথে রাতে ঘুমিয়েছেন, সক্রেটিসকে বাহুতে জড়িয়ে ঘুমিয়েছিলেন। ফিলসফি এন্ড লাভ - বইটাতে লেখক লিখেছেন, এই ভালোবাসাটার অভিজ্ঞতা জ্ঞান অন্বেষনের সন্ধানী তাড়না ছিলনা, বরং এটা ছিল তার ভেতর রোপিত ইন্দ্রের যন্ত্রনা নিবারক একটা প্রচেষ্টা। লেখক এই ভালোবাসাটাকে বলেছেন- "লাভ অফ নলেজ"। প্লেটোর সিম্পোসিয়ামে আলসেবিয়াডসের ভাষন "tears flood my eyes" এ দেখা যায় ডায়োটিমা-সক্রেটিস দর্শনের প্রতি তার এক নিদারুন আগ্রহ এক দুর্বোধ্য তীব্র ভালোবাসা!!
সিলভিয়া প্ল্যাথের প্রচন্ড প্রফেশনাল মনোভাব তার মনে শংকা তৈরী করেছিল যে টেডের সাথে ঘনিষ্ঠতা তার লেখক প্রতিভাকে প্রভাবিত করবে। তিনি ধারনা করেছিলে যে টেড দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তার লেখা স্বকীয়তা হারাবে। একদিকে লেখা লিখির প্রতি প্রবল দূর্বলতা আরেক দিকে টেডের প্রতি তার দূরন্ত আকর্ষনের দোটানায় পরে তিনি টেডকে ত্যাগ করেন। যদিও তিনি পরে বুঝতে পেরেছিলেন কোনটা ছাড়াই তিনি বেচে থাকতে পারবেন না।তিনি তার লেখার প্রতি এতই সচেতন ছিলেন যে তিনি জন্মদানকেও তার ক্যারিয়ারের পথে একটা হুমকি স্বরুপ দেখেছেন। তার মতে,

I hate a child that substitutes itself for my own purpose.

একই ভাবে ভার্জিনিয়া উ’লফ তার ‘ওরলেন্ডো’ বইটির মাধ্যমে তিনি নতুন এক মতবাদ দিয়েছিলেন তা তদকালীন সমাজে খুব সাদরে গ্রহন করা হয়নি। তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, একজন নারী/পুরুষ অপর নারী বা পুরুষকে সমান ভাবে ভালোবাসতে পারে, এটা মানুষের ভেতর গেথে থাকা একটা বৈশিষ্ট্য। তিনি আরো বলতে চেয়েছেন ভালোবাসা যৌনতার উর্ধে। তাই ভিটার প্রতি তার ভালোবাসা সম্পর্কে বলেছেন,

“Our relation is so fresh, so intellectual, so unphysical.”

তিনি ভিটাসহ সমসাময়িক আরো যত নারীর প্রতি তার দূর্বলতা ছিল তা সম্পর্কে বলেছেন,

“We are streaked, variegated (চিত্রবিচিত্র), all of a mixture; the colors have run.”

তিনি তার নিজ অভিজ্ঞতা থেকে তুলে এনেছেন এক নবজাত ধারনা। এক অযৌন সমকামীতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যেটা তাদের অন্যান্য ভালোবাসাকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল। ভার্জিনিয়ার আকর্ষন; ভিটাকে প্রেমিকা হিসেবে নয় বরং একটি চমকপ্রদ ঘটনা হিসেবে গ্রহন করে গড়ে উঠেছিল। ভিটা দ্বারা প্রভাবিত তার লেখা ‘আ রুম অফ ওয়ান’স ওউন’ সত্তুরের দশকে নারীবাদের একটি অন্যতম চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।

খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে আরো কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হল এই পর্বে-

ভিটা স্যাকভিল-ওয়েস্টঃ

auto
বিংশ সতাব্দির একজন অনন্য ব্রিটিশ কবি ও লেখিকা। তিনি তার জীবনে নারীর সাথে তার নানাবিধ সম্পর্কের জন্য সমালোচিত হলেও তিনি তার সাহসী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মধ্য দিয়ে সব কিছুকে প্রতিহত করেছেন। তিনি হ্যারল্ডেকে বিয়ে করলেও পরবর্তিতে বুঝতে পেরেছিলেন নারীর প্রতি যে তার আদি কৌতুহল ও আকর্ষন তা তার পক্ষে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি তাই বিবাহের পর বিভিন্না নারীর সাথে সম্পর্কের জড়িয়ে পড়েছিলন। বর্তমানে এরুপ সম্পর্ককে বলা হয় ‘অপেন রিলেশন’ যার মূল ভাবগত অর্থ হল বৈবাহিক সম্পর্কের পাশাপাশি তার বাইরেও যে সম্পর্ক। ভার্জিনিয়ার সাথে তার সম্পর্কের এক পর্যায়ে তাকে লেখা ভার্জিনিয়ার একটি চিঠি সম্পর্কে তিনি বলেছেন,

“How your letter touched me this morning. I nearly dropped a tear into my poached egg.”

তিনি বলিষ্ঠ স্বরে বলেছেন, সমকামী নারীরা অপর নারীকে যতটা ভালোবাসে তার চেয়ে অধিকত্র কেউ ভালোবাসতে পারেনা। তবে তার জীবনের উল্লেখযোগ্য দিক হল, তিনি একি সাথে তার স্বামীর সাথে সংসার করেছেন এবং সুখী ছিলেন। তার স্বামী সম্পর্কে তিনি বলেছেন,

“I know it would survive any passing linking I might have for anyone else…. You see, I don’t think a love like ours often happens. Passion happens, and habit happens, but the knowledge that one is linked and welded (ঝালাইকৃত) and soldered (ঢালাই) by a mixture of passion and habit and tenderness and friendship and circumstance and memories and, above all, by the thing one calls loves ….. I don’t think that often happens.”

ক্যাথরিন ম্যান্সফিল্ডঃ

autoআঠারোশো সতাব্দিতে নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহনকারী একজন মর্ডানিস্ট লেখিকা। তিনি বহুল সমালোচিত ছিলেন নানাবিধ অপবাদ ও তাকে নিয়ে গড়ে ওঠা মুখোরোচক ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এটা সূত্রপাত অবশ্য তার হাত ধরেই।তার ধারনা মতে যেকোন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা আবশ্যক। বৈবাহিক সম্পর্কেও তিনি ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তাই তিনি ‘স্ত্রী’ উপাধী ত্যাগ করে নিজেকে ‘গৃহকর্তী’ আকারে প্রকাশ করেছেন। তিনি বৈবাহিক সম্পর্ককে আইনগত বন্ধন বা অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা হিসেবে দেখেননি বরং তিনি একে দেখেছেন একটি সম্পর্কের ভেতর ব্যাক্তিগত স্বাধীনতাভোগী দুইটি স্বত্তার বন্ধনরূপে। ১৯১৩-র দিকে তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা হয় আরেক সমালোচিত ঔপন্যাসিক হেইচ. ডি. লরেনের সাথে। লরেন নিজেকে ‘ভালোবাসার প্রিস্ট’ বলে দাবি করেন। তবে তিনি সমালোচিত হন যখন তিনি প্রকাশ করেন সবচেয়ে বতর্কিত তত্ত্ব, “যৌনতাই ভালোবাসা”। ক্যাথরিনের সাথে ভার্জিনিয়া উ’ফেরও ঘনিষ্ঠতা ছিল।

প্যারাডক্সিয়াল প্যাশন-

ম্যারী শেলীঃ

autoএকজন অন্যতম গল্পকার, ঔপন্যাসিক, ভ্রমনকাহিনী লেখিকা ও নাট্যকার ছিলেন। তার অনবদ্য সৃষ্টি ‘ফ্রাংকেনস্টাইন’। তার লেখা সর্বপ্রথম দৃঢ়তার সাথে প্যারাডক্সিয়াল প্যাশন বা লাভ’এর ধারনা তুলে এনেছেন। ফ্রাংকেনস্টাইনকে তদকালীন হোমোফোবিক সমাজের প্রতি আক্রোশের একটি দানবিক রূপ হিসেবে দেখানো হয়েছে। গল্পটিতে মানুষের ভালোবাসা-ঘৃণা, জন্ম-মৃত্যু ও আকর্ষন-বিদ্বেষের সমন্বয় দেখানো হয়েছে। নারী পুরুষের ইগোইজম এবং ভালোবাসার দ্বিমুখী রুপকে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে যদিও নারী ও পুরুষকে পুরোপুরি শত্রু হিসেবে দেখানো হয়নি, তবে এটা পুরুষ জাতির বৈচিত্রতা আর জন্মদানকে তুলে ধরা হয়েছে ফিকশনাল উপস্থাপনায়। ল্যাবরিটরিতে পুরুষের গোপন জন্মদানকে কেন্দ্র করে তুলে ধরা হয়েছে পুরুষের দানবিক রুপ। চরিত্র হিসেবে ফ্রাকঙ্গেনস্টাইন ছিল নারীবিদ্বেষী এবং সে নার্বিচারে নারীকে হত্যা করত। কিন্তু এলিজাবেথের সাথে অন্তরঙ্গতা বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের মধ্যে মানবিক আবেগ ও অনুভূতি জন্ম নেয়। এখানে মূলত মানুষের ভালোবাসার দানবিক ও সুন্দর উভয় বৈশিষ্ট্যের সহবস্থান তুলে ধরা হয়েছে।কিং কং মুভিটিও প্যারাডক্সিয়াল লাভের একটি অনবদ্য দৃষ্টান্ত।

ফেড্রিক নিয়েতস্কিঃ

autoউনবিংশ সতাব্দির এক অন্যতম ফিলোসফার। আত্ববিরোধী ভালোবাসার দ্বিজাতি তত্ত্ব নিয়ে তিনি চমকপ্রদ কিছু মতবাদ দিয়েছেন। তার একটি লেখায় তিনি লিখেছেনঃ

I fear when you are near, I love you when you are far; your fleeing allures me, your seeking secures me: I suffer, but for you what would I nor gladly endure (দুঃখ ভোগ করা)!

তার মতে ভালোবাসা হল অধিকার লাভের জন্য একটা লোভ এবং এটা ইগোইজমের একটা সরল অভিব্যাক্তি। তিনি বিয়েকে বলেছেন আত্মার একটি দরিদ্র বন্ধন। তার মতবাদের আরেকটি লক্ষণীয় দিক হল তিনি ভালোবাসার ধারনার খুব গভীরে গিয়ে তাকে বিশ্লেষন করেছেন। তার মতবাদে উঠে এসেছে মানুষের লোভ আর পরিবর্তনশীল কৌতুহল, তিনি বলেছে মানুষ ক্রমাগত বুড়ো হয়, সে তার সমসাময়িকতায় কিছুটা হতাশ হয়ে পড়ে, পুরাতন আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তখন সে আবার হাত বাড়ায়, নতুন অধিকার সংগ্রহের খোজে। তিনি আরো বলেছেন আকাঙ্ক্ষা আর অধিকার আদায়ের দাবি অনেক সময় একটি নীতিগত তৃষ্ণায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে যেটা দীর্ঘস্থায়ী, এটাকে তিনি বলেছেন ‘বন্ধুত্ব’।তার মতে ভালোবাসা ঘৃণা একি সাথে বাস করে। তাই তার ভাষায়,

If you want a friend, you must be willing to wage war on him.

তিনি মানুষের সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরেছেন এবং তার ভাষ্যমতে মানুষ ঈশ্বরের মত নিখুত বা সম্পূর্ণ নয়। তাই নিকট বন্ধুর কাছেও সব প্রকাশ করা উচিৎ নয়। মানুষে দূর্বলতাগুলো তার কাছের মানুষের কাছে প্রকাশ করা উচিৎ নয় তার মতে একমাত্র ঈশ্বরই বিবস্ত্র হতে পারেন কারন তিনি পরিপূর্ণ। তার ধারনায় আরো উঠে এসেছে অনিশ্চয়তা। মানুষ কখনই অতিমানব বা ‘সুপারম্যান’ নয়। তাই সত্যিকারের বন্ধু বলে কিছু নেই। মানুষের ভেতর দুটি বিপরীধ বোধ কাজ করে। তার ধারনা মতে,

In a woman a slave and a tyrant have long been concealed. For that reason, woman is not yet capable of friendship: she only knows love. In a women’s love is injustice and blindness towards what she doesn’t love…..

তবে তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন তার বেশ কিছু তত্ত্বের জন্য, তার ধারনা ছিল নারী বন্ধুত্বের অযোগ্য। নারীবাদীদের মতে তিনি নারীর ভেতরের গভীর ভালোবাসাকে উপেক্ষা করেছেন। তবে নিয়েতস্কির শেষ জীবনের লেখায় ভালোবাসার ধারনা আরো দৃঢতা এবং গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে। তিনি ভালোবাসাকে ‘স্পিরিচুয়ালাইজেশন’ করেছেন।

ডাটম্যানঃ

ডাটম্যানের প্যারাডক্সিয়াল প্যাসন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি খবই তাদপর্যপূর্ণ। তার মতে,

ভালোবাসা যদি আরো ভালোবাসা প্রত্যাশা করে তবে তাতে ঘাটতি আছে। কারন ঘাটতি ব্যাতীত আকাঙ্ক্ষার অস্তিত্ব নেই। ভালোবাসার এই ঘাটতি অতি আবশ্যক এবং এটার অতি প্রাচুর্য নিজেকে বিলায় বিরামহীন।

তার ধারনামতে ভালোবাসা হল পরিপূর্ণতা লাভের জন্য একটি অভাব। যেটার মাধ্যমে মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করতে চেষ্টা করে। তার মতে একজন ব্যক্তি মানুষ যখন কোন বিশেষ মূহুর্তে বলে, “আমি তোমাকে ভালোবাসি”- এটা খুব স্বাভাবিক যে এটা অনুভব করার মত করে সে প্রস্তুত নয় অথবা ঘটনার আকৎসিকতায় তার ভুল অর্থ হতে পারে। এটা ভালোবাসা বা বন্ধুত্বের কাছাকাছিও কিছু নয়, এটা শুধু মাত্র একটা তাদক্ষনিক প্রতিকৃয়া। তিনি এলিজাবেথ ও ফ্রাক্সেস্টাইনের ভালোবাসার উদাহরন দিয়ে বলেছেন ভালোবাসা হল দূর্লভ সুন্দর ও রাক্ষুসে।

(চলবে)

কাজী আফসিন শিরাজী


মন্তব্য

ঋদ্ধ [অতিথি] এর ছবি

ভালোবাসার ব্যবচ্ছেদ খুবই জটিল একটা কাজ। লেখা পড়ে ক্রমশই অবাক হচ্ছি। খুবই তথ্যবহুল লেখা। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

আর আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে ভালোবাসার সাথে দেহতাত্ত্বিক সম্পর্কের খুব বেশী গুরুত্ব দেই না। আমার মনে হয় ভালোবাসতে চাইলে দূরে থেকেও করা অসম্ভব না।

আপনি ব্যবচ্ছেদ করতে থাকুন। সিরিজ শেষ হলে আপনার লেখার ব্যবচ্ছেদ করবো আশা রাখি। দেঁতো হাসি

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

আপনিও দেখি প্লেটোনিক ভালোবাসার অনুসারী! আমার লেখার ব্যাবচ্ছেদ! আহেম আহেম!! ইয়ে, কিছুটা ভয় পাইয়ে দিলেন... লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

হুমমম... কঠিন বিষয় ভালবাসা! দুটি রুম, একটি বাথরুম, খুব বেশি কি আশা?

ব্যবচ্ছেদ চলুক!

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

হুম... এর মেকানিজম বড়ই আজব। সবাই বাড়িটাকে দাড় করাতে পারেনা। দুটি রুম, একটা বাথরুম আর একটা বারান্দা হবার পর কেউ ভাবে আরো দুএকটা রুম বানালে ভালো হয়, কেউ ভাবে বিল্ডারের কাছে দিয়ে দিবে, কেউ ভাবে বেচে দেবে, কেউবা আবার কিছুই ভাবে না- আমার মত 'ভাবনাহীন'!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

হুমমম... কঠিন বিষয় ভালবাসা! দুটি রুম, একটি বাথরুম, খুব বেশি কি আশা?

ব্যবচ্ছেদ চলুক!

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

(!)... হাসি

অনিকেত এর ছবি

চমৎকার হচ্ছে লেখাটা--
মুগ্ধ হয়ে পড়ছি--

একটা জিজ্ঞাস্য ছিল---- Nitetzsche- এর উচ্চারন বোধহয় নিৎসে হবে, তাই না?

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

সত্যি বলতে দ্বিধা নেই, আমি নিজেও খুবই কনফিউসড। জার্মান ভাষা উচ্চারন বরাবরই কঠিন, কারন তারা পর পর অনেক কনসোনেন্ট ব্যবহার করেন। ' Nitetzsche' তে লক্ষ্য করুন পর পর পাঁচটি কনসোনেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। তাই বিভ্রান্তি কিছুটা থেকেই যাচ্ছে। তবে আমার কিছু জার্মান ও রাশিয়ান সহপাঠি আছে যাদের নামের শেষে 'তস্কি' আছে। সহপাঠিদের সাথে দেখা হলে নিশ্চয়ই এর উচ্চারন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ব্যাপারটা উল্লেখ করার জন্য।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

আমার ভুল হতে পারে, তবে যতদূর মনে হইলো, আমার জার্মান বন্ধুটা নামটাকে "নিত্সা / নিত্জা" এর মাঝামাঝি কিছু উচ্চারণ করে। লেখা ভালো হচ্ছে।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

হতে পারে, আপনারটা বেশ সঠিক মনে হল, তবে আমি অতিথি, এডিটের সুযোগ নেই।

স্বপ্নহারা এর ছবি

মারাত্মক লেখা...জটিল হচ্ছে! যে যেই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে! তবে নিয়েতস্কিরে পছন্দ হয় নাই...খাইছে

হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

সে ভালোবাসার চেয়ে বন্ধুত্বকে বড় করে দেখেছে! এটার তার দৃষ্টিভঙ্গি, আমার এই ব্যাপারে কোন অভিযোগ নাই, এত অদ্ভূত সব দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আমি দৃষ্টিবন্দী হয়ে যাচ্ছি।

মাহবুবুল হক এর ছবি

ভালোবাসা নিয়ে আপনার লেখাটি চমৎকার হচ্ছে। চালিয়ে যান। তবে ‌‌'ভালোবাসা হইল শরমের কতা'-এই ব্যাপরটা অবজ্ঞা কইরেন না। আফটার অল, পৃথিবীর মানুষের একটা বিরাট অংশ যেহেতু ভালোবাসাকে নিষিদ্ধ, গোপনীয়, অশোভন কিছু একটা মনে করে।

[/i]দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা
আমি তো বেকার পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা
[i]

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

ভালো বলেছেন। ভালোবাসাকে এদিকটায় অগ্রহনযোগ্য মনে করা হয়, তাই উপমহাদেশে মানুষ পালিয়ে প্রেম করে। ভালোবাসবে তা লুকানোর কী আছে! এটা তো তার দোষ না, এটা তার ভেতর ইনবিল্ড একটা কম্পন! কত কিছুই তো বুঝিনা!

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

ক এর ছবি

In a women’s love is injustice and blindness towards what she doesn’t love…..

ভাল কথা লিখছেতো ভদ্রলোক!!!!!!!!!!

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

জী জনাব!!

লীন এর ছবি

কে কিভাবে ভালোবাসবে তার গন্ডী করে দেওয়ার অধিকার অপরের নেই বলেই আমি মনে করি। এই সিরিজে অনেক ব্যতিক্রমী ও চিত্তাকর্ষক প্রসঙ্গ উঠে আসছে। পড়তে ভালো লাগছে।

আমার বন্ধুমহলে অনেককেই বলতে শুনি "সমকামীরা মানসিকভাবে অসুস্থ"। আমি এ প্রসঙ্গে তাদের সাথে একমত হতে পারি না। প্রত্যেকের নিজ নিজ জীবনদর্শন থাকে। আমরা "নিজের চিন্তাধারার বাইরে কিছু দেখলেই সেটা খারাপ হবে" এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে থাকলে চলবে কি করে?

আর ভালোবাসার সাথে লোভের সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু পরিপূর্ণতার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক থাকবেই।

______________________________________
তুমি আমাকে চিনোই বা কতটুকু?

______________________________________
লীন

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম... ভালোবাসার কোন নির্দিষ্ট ফরমেট নাই, যেমন ইচ্ছে আমার লেখার খাতা- টাইপের...

নুহিন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।