(ফিরোজ জামান চৌধুরী’র “বাংলাদেশের জনসংখ্যা সম্পদ নাকি বোঝা” - লেখায় মন্তব্য করতে গিয়ে এটি লেখা । )
১৪৪,০০০ ব.কি.মি.’র এই দেশটার সর্বোচ্চ লোকসংখ্যা ধারণক্ষমতা হল ১৮ কোটি । বছরে বাংলাদেশের লোকসংখ্যা বাড়ছে প্রায় ২০ লক্ষ করে । জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে গিয়ে ফল দেয়, অথচ আমাদের এটা নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না । আমাদের দেশের কোন কিছুর ক্ষেত্রেই দীর্ঘমেয়াদী কোন পরিকল্পনা নেই, জনসংখ্যার ক্ষেত্রও ব্যতিক্রম নয় ।
“বহু সন্তান” থেকে কমিয়ে আনার জন্য “দুই সন্তান”-নীতি একটা ধাপ হয়ে হয়তো কাজে দিয়েছে । কিন্তু “দুই সন্তান”-নীতি দীর্ঘমেয়াদী বড়জোর জনসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখতে পারে, জনসংখ্যা কমাতে পারে না – যেটা আমাদের দরকার । এই ব্যাপারে চীনের মত “এক সন্তান”-নীতি কাজ দিতে পারে । কিন্তু, শিক্ষার আলো না পাওয়া দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে এই ব্যাপারে রাজি করানোর মত (দুঃ)সাহস আমাদের বর্তমান বা ভবিষ্যত কোন সরকার করবে বলে মনে হয় না ।
লোকসংখ্যার অতিরীক্ত চাপ কমাতে অনেক বছর ধরেই সরকার চুপিচুপি একটা কাজ করে আসছে – সেটি হচ্ছে কম জনবসতিপূর্ণ পাহাড়ী এলাকাগুলোতে ক্রমান্বয়ে বাঙ্গালীদের অভিবাসন ! এক সময় এই প্রচেষ্টা(!) ও যথেষ্ঠ হবে না । সমাধান মনে হয় অন্য কোন পথে খুঁজতে হবে । একটি হতে পারে, সমুদ্র থেকে ভূমি উদ্ধার । নিঃসন্দেহে বেশ ব্যয়বহূল এটি, তবে আমাদের তরুন প্রযুক্তিবিদরা এই ক্ষেত্রে সুলভ কোন সমাধান বের করতে সচেস্ট হতে পারেন, যাতে আমরা ক্রমান্বয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমি উদ্ধার করে দেশের আকার বাড়াতে পারি ।
আরেকটি হতে পারে, “দেশকে ভালবাসুন, বিদেশে থাকুন আর দেশে টাকা পাঠান” – এই নীতিতে যত বেশি সংখ্যক লোককে বিদেশে পাঠানো । বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো টিকে আছে প্রায় ৮০ লক্ষ অনাবাসীদের জন্য । একদিকে তাঁরা দেশে থেকে জনসংখ্যার ভার বাড়াচ্ছেন না, অন্যদিকে দেশে টাকা পাঠিয়ে দেশ বাঁচাচ্ছেন । এই অনাবাসীদের সংখ্যাটা যত বেশী করে বাড়বে, জনসংখ্যার ভার ততটাই কমবে, আর বাড়তি পাওনা হিসেবে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় হবে !
শেষে পাগলা বু্দ্ধি দেই । শার্ট বানানোর দুটি পদ্ধতি হতে পারে, একটি সনাতন পদ্ধতি – যতটুকু কাপড় আছে সেই পরিমাপে শার্ট বানানো, আরেকটি – শার্ট বানাতে যতটুকু কাপড় দরকার সেই পরিমাপে থান থেকে কাপড় কেটে নেয়া ! পৃথিবীটা যদি হয় কাপড়ের থান আর আমাদের দেশটা যদি হয় শার্ট, তাহলে কাপড়টা একটু বড় করে কাটতে হবে । সেক্ষেত্রে, বর্মীদের অনেক খালি জায়গা পড়ে আছে [;)], প্রতিবেশী সাত-বোনও আছে হাতের কাছেই [;)] দাদারা মনে কিছু নিয়েন্না, আমরা চাই বা না চাই, দেশের সীমানাগুলো বদলায়, বারবার, বহুবার .....
পরিশেষে, অনভ্যস্ত বাংলা লিখতে গিয়ে একটা জিনিষ খেয়াল করলাম, “বসতি” লিখতে গিয়ে অক্ষরগুলির ঘনবসতিতে সেটি “বস্তি” হয়ে যায়, বাংলাদেশের যাতে সে অবস্থা না হয় !
>>>
ফুট্টুস
মন্তব্য
অল্প একটু জায়গায় যখন অনেক মানুষ বাস করতে বাধ্য হয়, তখন এক পর্যায়ে সম্পদের বণ্টন পুনর্বিন্যাসের জন্যে তারা সংঘাতে যেতে বাধ্য হয়। এই সংঘাতের অভিমুখ নির্ধারণ করে ঐ সমাজের "ফল্ট লাইন"গুলি। বাংলাদেশে এমন বেশ কিছু ফল্ট লাইন আছে, মুসলিম-অমুসলিম, পাহাড়ি-বাঙালি, আওয়ামী-ননআওয়ামী, ইত্যাদি। জনসংখ্যা বাড়লে তাদেরই লাভ, যারা সংঘাত উসকে দিয়ে নিজের পাতে ঝোল টানতে চায়।
জনসংখ্যা একটা টিপিং পয়েন্টে পৌঁছে গেলে রাজধানী ঢাকাতেই দাঙ্গাহাঙ্গামার আশঙ্কা আছে। এই শহরের মানুষ ক্রমশ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে নগরজীবনের অব্যবস্থাপনার কারণে। সম্ভাবনা আছে, ঢাকা থেকেই এই সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার।
এরকম একটা স্কুল অব থট গোপনে গোপনে বিস্তৃত হচ্ছে বলে শুনেছিলাম গত জোট-সরকারের আমলে। খাম্বারাজ টেলিভিশনে এসে বগল উচা করে বলেছিলো, বাংলাদেশকে বিস্তৃত করা হবে। বহু আগে হিটলারও এই আশ্বাস দিয়েছিলো জার্মানদের।
গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। পরিস্থিতি এর মধ্যেই অনেক ভয়াবহ। কেবল অসহিষ্ণুতাই নয়। ঢাকার বেশিরভাগ বহুতল ভবনই এখন উচ্চমূল্যের বস্তিতে পরিনত হয়েছে। বাসে টেম্পোতে ধাক্কাধাক্কি, রাস্তায় গায়ে গায়ে হাটা, অহেতুক ঝগড়া ঝাটি এগুলো হর হামেশাই ঘটছে। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা আর শহরের বাইরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি নীতিনির্ধারকদের মনযোগের অভাব এরকম পরিনতির অন্যতম কারন।
'লোকসংখ্যার অতিরীক্ত চাপ কমাতে অনেক বছর ধরেই সরকার চুপিচুপি একটা কাজ করে আসছে – সেটি হচ্ছে কম জনবসতিপূর্ণ পাহাড়ী এলাকাগুলোতে ক্রমান্বয়ে বাঙ্গালীদের অভিবাসন !'
ফুট্টুস, আপনার এই বক্তব্য খুবই আপত্তিকর।
সরকার মোটেও 'চুপিচুপি' 'পাহাড়ী এলাকাগুলোতে বাঙ্গালীদের অভিবাসন' করছে না। ১৯৭৮ থেকে এটা করা হয়েছে অত্যন্ত অন্যায়ভাবে, অন্যায্যভাবে এবং বলপূর্বক। তার খেসারত এখনও দেশকে দিতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
'জনসংখ্যা সমস্যা' আর 'পার্বত্য ইস্যু'কে এক করে দেখা ঠিক নয়। সেটা অন্য প্রসঙ্গ। তা অন্যখানেই আলোচিত হওয়া উচিত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
জনসংখ্যা কমাতে “এক সন্তান”-নীতি দরকার, কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধঁবে কে?
ঢাকা সেই টিপিং পয়েন্টে পৌঁছে গেছে ইতিমধ্যে, রোজা আসার আগেই চলাফেরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে । তারপরেও প্রতি বছর কয়েক লক্ষ (সংখ্যাটা কারো মতে, ১০ লক্ষের কাছে) নতুন লোক যোগ হচ্ছে । ধারণা করা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ থেকে ২০৩০ এর মধ্যে ঢাকার জনসংখ্যা ২.৫ থেকে ৩.০ কোটি হবে । ওদিকে, ওয়াসা বলেছে, ১০ বছর পরে ঢাকায় উত্তোলনযোগ্য কোন পানি থাকবে না , মেঘনা বা অন্য কোথাও থেকে পানি আনতে হবে ঃ)
>>>
ফুট্টুস
"লোকসংখ্যার অতিরীক্ত চাপ কমাতে অনেক বছর ধরেই সরকার চুপিচুপি একটা কাজ করে আসছে – সেটি হচ্ছে কম জনবসতিপূর্ণ পাহাড়ী এলাকাগুলোতে ক্রমান্বয়ে বাঙ্গালীদের অভিবাসন !" - এই ব্যাপারটি আমার কাছেও খুবই আপত্তিকর, অন্যায় এবং অন্যায্য । এর খেসারত দেশকে দিতে হচ্ছে, হবে । কিন্তু আমার আপত্তি শুনছে কে?
পাহাড়ী এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবেই বাঙ্গালীদের অভিবাসন করানো হয়েছে, ওখানকার বিভিন্ন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পদে বাঙ্গালীদের ক্রমান্বয়ে ঢোকানো হয়েছে এলাকাগুলো দখল করার জন্য, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটাই বাস্তবতা ।
>>>
ফুট্টুস
সম্প্রতি ক্ষুদে শহর নামে একটি ধারনার ওপর একজন বাংলাদেশী অধ্যাপকের একটি নীতিপ্রস্তাবের সারসংক্ষেপ বাংলা অনুবাদ করে সচলায়তনে পোস্ট করেছিলাম। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও হয়েছে। তবে আমার মতে সমস্যা নিয়ে ভাবার সময় সমস্যার ব্যপ্তি মাথায় রেখেই সমাধান কল্পনা করা উচিত। তাছাড়া সমাধান বাস্তবসম্মত হওয়াও জরুরী। যেমন হঠাৎ করে যদি ভেবে বসি সবাইকে চাঁদে পাঠিয়ে দেয়া যাক তবে সেটা ভাত নেই তাই কেক খাই এর মত হবে।
জনসংখ্যা নিয়ে এক-সন্তান নীতির বিরোধিতা করব। এ বিষয়ে একটা প্রমানিত ধারনা হচ্ছে উন্নয়নই সবচেয়ে বড় জন্মনিরোধক। অর্থাৎ যারা অর্থনৈতিক ভাবে ভাল অবস্থানে তারা সাধারনত কম সন্তান নিয়ে থাকেন। যেহেতু দরিদ্র পিতামাতার তুলনায় অবস্থা সম্পন্ন পিতামাতা সন্তানকে ভাল চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার আশা বেশি করতে পারে। কাজেই মাসিক আয় ভিত্তিতে সন্তানের সংখ্যার বিচার করলে হয়ত এরকম একটা প্যটার্ণ লক্ষ্য করা যাবে। সেক্ষেত্রে বলা দরকার যে এক বা দুই সন্তন নীতি পরোক্ষভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে রিপ্রডাকশনের অধিকার থেকেই বঞ্চিতই করবে। সেক্ষেত্রে গনতান্ত্রিক পরিবেশে এটা বাস্তবায়ন কঠিন হবে বৈকি।
অমর্ত্য সেনের রেফারেন্স টানা দরকার মনে করছি এই ক্ষেত্রে। চীনের এক সন্তান নীতির বিরোধীতা করেছেন তিনি এই নিবন্ধে। এছাড়া Development as Freedom বইতে আরো বিশদ ভাবে তিনি তার অবস্থান ব্যখ্যা করেছেন। তবে সম্পদ সীমিত হলে যদি জনসংখ্যা বাড়তে থাকে সেটা একটা বড় সমস্যা বটে। সেক্ষেত্রে মানব উন্নয়নের স্বার্থে সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনাই জরুরী। জোর করে কিছু চাপিয়ে দিলেই যে কাজ নাও হতে পারে।
হাতে পয়সা থাকলে ছোটখাট একটা পরিকল্পিত শহর বানাতে লেগে পড়তাম...দারূন সম্ভাবনাময় ব্যবসা !
“এক সন্তান”-নীতির বেশ কিছু খারাপ দিক আছে, যেটা চীন অদূরেই ভোগ করবে । এটা সত্য যে, উন্নয়ন আর শিক্ষা সবচেয়ে কার্যকর জন্মনিরোধক। কিন্তু আমাদের জনসংখ্যা সমস্যা এমন এক পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, দেশের সব মানুষের কাছে উন্নয়ন আর শিক্ষা পৌছতে পৌছতে “জনসংখ্যার বোমা” বিষ্ফোরিত হয়ে যাবে ।
কোন সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে মোকাবেলা করলে এক পথে এগোতে হয়, আর দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা হটাৎ মোকাবেলা করতে আকস্মিক ও কঠোর পথটাই বেছে নিতে হয় । এখানে মনে রাখা দরকার, চীন আর ভারতে ১০০ কোটিরও বেশি লোক থাকলেও, চীনে প্রতি ব.কি.মি.তে লোক থাকে ১৪০ জন, ভারতে ৩৫০ জন । পক্ষান্তরে, বাংলাদেশে থাকে ১০৭০ জন, যেটা আর বাড়তে দেয়ার সুযোগ নেই ।
তাই জোর করে হলেও অন্তত এক দশকের জন্য বাংলাদেশে “এক সন্তান”-নীতির প্রবর্তন করা দরকার । কিন্তু, এই জোর করার মত মানসিক জোর আমাদের কোন রাজনৈতিক সরকারের হবে না ।ঃ(
>>>
ফুট্টুস
ব্যবসাকে ক্ষতিকর মনে করছেন নাতো? চাল ব্যবসায়িরা যদি চালের ব্যবসা না করত যারা কৃষক নয় তারা চাল পেত কোথায় বলুন? ক্ষুদে শহর নির্মানে যদি কেউ ব্যবসা করতে পারে তার মানে হচ্ছে এখানে থাকতে লোকজন আগ্রহী হবে। টেকের পয়সা খরচ করে তারা উন্নত চিকিৎসা, শিক্ষা এগুলো নিয়ে মানব উন্নয়নের পথে আগাতে পারবে। তখন জন্মনিয়ন্ত্রন এমনিতেই তো হতে থাকবে। কি বলেন?
গনতন্ত্রের গুরুত্ব তাহলে কোথায়? জোর করার উদ্দেশ্য অবশ্যই মানুষের উন্নয়ন। কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব করে সেটা করা কি ঠিক? দেশের দরিদ্র লোকেদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা না দিয়েই জোর করে বাচ্চার ওপর ট্যক্স বসালেই কি উন্নয়ন হয়ে যাবে? গনতান্ত্রিক সরকারের মানসিক জোর কম থাকে সত্য কিন্তু গনতন্ত্রের সুবিধাও অনেকটা সেখানেই।
জনসংখ্যা একটা বড় সমস্যা কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু সমস্যার কারন দূর না করে জোর খাটিয়ে সমস্যা দূর করলে অসন্তোষ বেড়ে যেতে পারে হয়ত।
প্রিয় ফুট্টুস, সমস্যার টেকনিক্যাল সমাধান করার যে প্রস্তাবগুলো করেছেন সেগুলো ভাবনার দাবী রাখে। এমনকি অভিবাসনেরও। কিন্তু পাহাড়-মায়ানমার-উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে যা বলেছেন তা আমার কাছে আপত্তিকর ও উস্কানীমূলক মনে হয়েছে। কেউ কেউ যে এমন ভাবনা ভাবা শুরু করেছেন সেটা ভয়ের ব্যাপারই বটে। সবাই মিলে বাঁচার চেষ্টা করার ভাবনাটাই র্যাশনাল, কাউকে মেরে-ধরে-তাড়িয়ে জবর দখলের চিন্তাকে সমর্থন করা বা তা নিয়ে আলোচনা করা আমার কাছে নীতিবিরুদ্ধ মনে হয়। এক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা আশা করছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১। দুই স ন্তানের ধারণাটা আইন করে বাসবায়ন করা দরকার।
২। ক্ষুদে শহরের কন্সেপ্টটা বাস্তব সম্মত এবং কার্যকরী বলেই মনে করি, সরকারী উদ্যোগ প্রয়োজন
৩। যত সম্ভব দেশের লোকজনকে বিদেশে পাঠানো দরকার। তবে বেছে বেছে, সব মেধা পাচার করে দিলে সেটা দেশের জন্য ভালো হবেন।
আফ্রিকার হাজার হাজার মাইল আবাদযোগ্য জমি খালি পড়ে আছে। সরকারের উচিৎ ঐসব দেশের সাথে চুক্তিতে এসে এক দেড়কোটি ভূমিহীন কৃষকদের স্থানান্তরিত করা।
- আমার মনে হয়, দেশ যত সংখ্যক মেধাবী ব্যবহার করতে পারে, তার চেয়ে বেশী সংখ্যক মেধাবী এখানে তৈরী হয়, সেক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত মেধাবীরা দেশে বসে হতাস হওয়ার চেয়ে বিদেশে যাওয়াই ভাল ।
- ভাল প্রস্তাব...সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়াও ভাল গন্তব্য হতে পারে ঃ)
>>>
ফুট্টুস
সাধারণত অবস্থাপন্নদের (দেশে ও বিদেশে) সন্তান নেয়ার হার কম আর গরীবদের বেশি কেন? -- এখানেই সমস্যার সমাধান আছে বলে মনে হয়।
কোনো এক সময়ে চাকুরীজীবনে একজন সহকর্মীর কাছ থেকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু শুনেছিলাম। সংক্ষেপে: অনুন্নত জায়গায় চাকুরী/কাজ কম; বিনোদনের সুযোগও কম। একমাত্র বিনোদন হল সেক্স - ফলাফল সন্তান। উন্নত জীবনের চাহিদা বেশি ... তাই কাজও করতে হয় প্রচুর। এ্যাত কাজের পর সেক্স করার মত শক্তি/উৎসাহ অনেক কমে আসে। এছাড়া বিনোদিত হওয়ার জন্য আরও নানারকম উপাদান (সিনেমা/চ্যানেলের ছড়াছড়ি/নাইট ক্লাব/খেলাধুলা/কম্পিউটার) বিদ্যমান। সচেতনতার পাশাপাশি এসব কারণেও শহরে/উন্নত বিশ্বে সন্তানের সংখ্যা কম হয়।
===
BTW: পোস্টে দেশে সর্বোচ্চ ১৮ কোটি লোক ধারণ করতে পারে বলে একটা সিদ্ধান্ত টেনেছেন। সেটার ভিত্তি কী? এ বিষয়ে আলোচনাটাও আকর্ষনীয় হতে পারে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বিষয়টা আসলে সাংস্কৃতিক ।
অনুন্নত জায়গায় চাকুরি/কাজ কম এভাবে বলার চেয়ে বলা উচিত স্বামী স্ত্রী দু'জনের জন্যই কাজ আছে কিনা ।
বাংলাদেশে একটা শিক্ষিত পরিবার - যেখানে পরিবারের স্বামী স্ত্রী দু'জনেই কাজ পাবার ও করার যোগ্যতা রাখে সেখানে দেখা যাবে সন্তান প্রতিপালন প্রশ্নে মায়েরা অনেক বেশী রকমের ছাড় দিতে রাজী । এরা দরকার হলে নিজের ক্যারিয়ার চুলোয় তুলে সন্তান পরিপালনে নিজের সব সময় দিতে রাজী ।
কিন্তু উন্নত বিশ্বে বিষয়টা সেরকম না । জার্মানিতে এরা এই ব্যাপারটাকে একটা এদের ইউরোপের সর্বনিম্ম জন্মহারের একটা বড় কারন মনে করে । এরা খুব বেশী রকমের ক্যারিয়ারিস্ট এবং ইনডিভিজুয়ালিস্টিক সংস্কৃতির জন্য এরা নিজের পরিবারের জন্য কালেকটিভিস্ট সংস্কৃতির কারো মতো এতো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত না । পারিবারিক বন্ধন আলগা হবার এটা একটা কারন ।
বিনোদিত কি করে হতে হবে সেই চিন্তায় বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে । এশিয়ান দেশগুলোতে দেখবেন সামাজিক যোগাযোগ ইত্যাদির জন্য সপ্তাহের একটা বড় সময় ব্যয় হয় । ব্যাচেলরদের জন্য আড্ডা একটা বড় বিনোদন । এই কারনে দেখবেন (জাপানেও সেরকমটা হবার কথা) গড়পড়তা বাঙালি বিদেশে গেলেও উইকেন্ডের সন্ধ্যাগুলো নাইটক্লাবে যাবার বদলে কারো বাসায় আড্ডা রান্না করে সময় কাটাতে বেশী পছন্দ করে । এটাই তার জন্য বিনোদন । অতএব অনুন্নত দেশে বিনোদন নাই এটা মনে হয় ঠিক কথা না । একেকটা সংস্কৃতি একেকভাবে তার বিনোদনের মাধ্যম তৈরী করে নেয় ।
অনুন্নত অর্থনীতির জীবনে কাজ কম নাকি ? একদম ভুল ধারনা । আমার তো ধারনা অনুন্নত অর্থনীতিতে নিজেদের টিকে থাকতে উন্নত দেশ থেকে বেশী কষ্ট করতে হয় । আমি এখানে ৮ ঘন্টা কাজ করি । এর বেশী কাজ করার জন্য বাধ্য না । এর বাইরে আছে ঘর পরিস্কার, রান্না, বাজার ইত্যাদির কাজ । অন্যদিকে দেশে এই সবগুলোর সাথে আছে নানারকম বিল দেয়া, পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে তারে নিয়ে হসপিটালে হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি করা, বৃতত্তর পরিবারের বিভিন্ন কাজে লাগা, সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করা । আমি এখানে রাত আটটার মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারি । দেশে রাত বারোটা পর্যন্ত এটা সেটা করেও অনেক কাজ বাকি থাকতো ।
আরেকটা বিষয় হলো অনুন্নত দেশে কায়িক পরিশ্রম করা লোকের সংখ্যা বেশী । এর মানে হলো রিক্সা ওয়ালা কুলি মজুর এদের সংখ্যা বেশী । এরা দৈনিক ১০-১২ ঘন্টা খাটে । আমার নিজের এই ধরনের কায়িক পরিশ্রমের অভিজ্ঞতা আছে । সত্যি কথা হলো বাসায় ফিরে ঘুমানো ছাড়া আর কিছুর কথা মাথায় থাকে না । কিন্তু এসব সত্ত্বেও দেখবেন এই শ্রেনীটার মধ্যে জন্মহার তুলনামূলক বেশী । তাহলে বোঝা যাচ্ছে কাজ বেশী কম এটা আসলে জন্মহারে প্রভাব ফেলছে না ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
-
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিকাছে । কিন্তু শামীম যেই সংস্কৃতির যেই ভ্যারিয়েবলগুলার কথা উল্লেখ করেছেন আমি সেইটাতে একমত হই নাই ।
চিপা কমেন্ট : ছিঙ্গেল লোকজনদের কিন্তুক জনসংখ্যা পরিবার কল্পনা নিয়া চিন্তা করা নিষেধ
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
- চিপা জবাবঃ ছিঙ্গেল লুকজন বাস্তবে পারে না বইলা তাই মনে মনেও পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ানোর অধিকার রাখে না?
ডাবল চিপা কমেন্টঃ চিন্তার এই লাইন যদি সমান্তরাল বিশ্বে যোগ হয় তাইলে সমান্তরাল বিশ্বের জনসংখ্যার কী অবস্থা হৈছে ইতোমধ্যে চিন্তা করছেন?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনি কিন্তু নিজেকে অনুন্নত এলাকার প্রতিনিধিত্বকারী নমুনা ভাবতে পারেন না - কাজের উদাহরণ দিলেন বলে এটা বলা।
আমি যখন কুড়িগ্রামে আমার দাদাবাড়িতে যাই অথবা ফিল্ডওয়র্কে নোয়াখালি বা যশোরের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরি ওখানে দেখা যায় সন্ধা হলেই বাজারে চায়ের দোকানে আড্ডা বসে, একটা প্রধান আকর্ষণ হল দোকানের টিভিতে চলা সিনেমা (ভিডিও ক্যাসেট) - হাতে কাজ থাকলে নিশ্চয়ই এঁরা এভাবে সময় (এবং চা/পান/বিড়ি'র টাকা) অপচয় করতো না। ঢাকায় রাত ১০টায় আমি যখন বাসায় ফিরি/ বা সন্ধ্যায় যখন বের হই তখন প্রান্তিক লোকজন কিন্তু বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান/শোরুমের সামনে দাঁড়িয়ে টিভি দেখছে। এই ধরণের লোকজনের কাজ কিন্তু সূর্যাস্তের প্রায় সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায়। আমার/আপনার মত লোকজন কিন্তু দাঁড়াবে না ... কারণ তখনও বিভিন্ন রকম কাজ মাথার উপরে ঝুলে আছে।
এমনকি রাস্তায় একটা দূর্ঘটনা ঘটলেও দেখবেন চারপাশে লোকজন জমে গেছে .... খেয়াল করলে দেখবেন, এই জমা লোকগুলো কোন শ্রেণীর? (শ্রেণীবিন্যাস করতে হচ্ছে বলে দূঃখিত) আমি/আপনি দাঁড়াচ্ছি না কেন? ... আমাদের ব্যস্ততা বেশি বলেই। অথচ, একজন সি.এন.জি. চালকও গাড়ি ব্রেক করে মাথা বের করে তামাশা দেখবে (আহতকে সাহায্য করবে না) .... .... কারণ এই ধরণের ঘটনাগুলোই তাঁদের বিনোদন।
একই ধরণের তুলণা যে কোন দেশেই উন্নত এবং পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠির মধ্যে করা সম্ভব বলে আমার মনে হয়।
আবার দৈনিক ১০/১২ ঘন্টা বা তারও বেশি কায়িক শ্রম করে এমন লোকও প্রান্তিক জনগণের মধ্যে কম না। আমার পর্যবেক্ষণ বলে যে, এই ধরণের পরিশ্রমী লোকগুলোর সংসারও ছোট থাকে।
অপর যে বিষয়টাতে আমি একটু মতামত দিতে চাই সেটা হল, কায়িক আর মানসিক শ্রমের ব্যাপারটা। আপনার মতামতে কায়িক শ্রমটাকে অনেক বেশি ক্লান্তিকর মনে হয়েছে ... ... কিন্তু আমি মনে করি, দুই ধরণের শ্রমেই অবসাদ আসে একই রকম। বরঞ্চ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানসিক শ্রমের ক্লান্তি বেশি মনে করি। এই ধরণের অবসাদ কাটাতে এবং শরীরটাকে ঠিক রাখতে কেউ কেউ টেনিস খেলে, আমি স্টেপারে ঘাম ঝরাই।
বিনোদনের ব্যাপারে সংস্কৃতিগত দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারটা ঠিক আছে ... কিন্তু এই ব্যাপারগুলোও অর্থনৈতীক গতিশীলতার উপর নির্ভরশীল বলে মনে করি। (এখন দেখা করার চেয়ে এস.এম.এস দিয়ে বা ফেসবুকে মেসেজ দেয়ার বা ফোন করে কথা বলার সংস্কৃতি তৈরী হয়ে গেছে।)
(দৌড়ের উপর আছি তাই গুছিয়ে লেখা গেল না ... ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
রিপোস্ট
দুই-বার ক্লিক পড়ে গিয়েছিলো।
এই অনর্থক মন্তব্যটি মুছে দেয়ার অনুরোধ থাকলো।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
[quote'পাহাড়-মায়ানমার-উত্তরপূর্ব ভারত নিয়ে যা বলেছেন তা আমার কাছে আপত্তিকর ও উস্কানীমূলক মনে হয়েছে। কেউ কেউ যে এমন ভাবনা ভাবা শুরু করেছেন সেটা ভয়ের ব্যাপারই বটে। সবাই মিলে বাঁচার চেষ্টা করার ভাবনাটাই র্যাশনাল, কাউকে মেরে-ধরে-তাড়িয়ে জবর দখলের চিন্তাকে সমর্থন করা বা তা নিয়ে আলোচনা করা আমার কাছে নীতিবিরুদ্ধ মনে হয়।'
ষষ্ঠ পাণ্ডব-এর এই বক্তব্যের সাথে একমত।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।