অতীত - ১

রেশনুভা এর ছবি
লিখেছেন রেশনুভা (তারিখ: বুধ, ১৯/০৮/২০০৯ - ৪:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আলমারির এই ড্রয়ারটা শুধু হাবিজাবি কাগজে ভরা। চিরুনি অভিযান চালানো দরকার। অভিযানের শেষ পর্যায়ে বিপত্তি ঘটল। হাতে ঠেকল বেশ কিছু পুরোনো ছবি ঠাসা এক অ্যালবাম। বিপত্তি বললাম এই কারণে যে এখন এইটার পিছনে আমার কিছু সময় নষ্ট হবে। পাতা উল্টালাম। জানতাম তোমার ছবি চোখে পড়বেই। হয়তবা তোমাকে দেখার জন্যই পাতা উল্টাচ্ছিলাম।

সেদিন তোমার কলেজের পুনর্মিলনী ছিল। দিন দশেক আগেই চিঠি লিখে জানিয়েছিলে আমায়; ঢাকায় আসতে পারব কি না? তখন ইন্টারের রেজাল্ট দেয়া হয়ে গেছে। বুয়েট, ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্টও দিয়ে দিয়েছে। আব্বাকে কি বলে ঢাকায় যাব চিন্তা করছিলাম। শেষে মনে হয় ঢাবির চয়েস ফর্ম তোলার উছিলাতেই এসেছিলাম।

তোমার কলেজের কাছাকাছিই দাঁড়িয়েছিলাম। শাড়ী পড়েছিলে। রঙটা ভুলে গিয়েছিলাম। ছবিটা দেখেই মনে পড়ল। মেরুনে তোমাকে সবসময়ই মানাতো। রোমান্টিক ভাষাজ্ঞান এখনও কম; তখনও এর চেয়ে ভাল কিছু ছিল না। কিছু কি বলেছিলাম তোমাকে সেদিন? না বলে থাকলে আজ বলি। সুন্দর লাগছিল তোমাকে। অনেক ঘুরেছিলাম সেদিন রিকশায়। ঘুরতে ঘুরতেই কলেজগেটের হানিফের কাউন্টার থেকে আমার রাতের ফিরতি বাসের টিকেট কিনেছিলাম। কাউন্টারের লোকটা দু’টা টিকেট কেঁটে ফেলেছিল প্রায়। তুমি করুণ মুখে বলেছিলে, “শুধু সে যাবে”। পৌঁছে দিয়ে এসেছিলাম তোমাকে কলেজের কাছে। আমাকে একটু দাঁড়াতে বলে, এক বান্ধবীকে সাথে নিয়ে এলে ক্যামেরা সহ। তোমার ঐ বান্ধবীটিই এই ছবিটা তুলে দিয়েছিল। বিদায় নিয়ে চলে গেলে ভিতরে। আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে এসেছিলাম।

ছবিটা দেখে অনেক স্মৃতি ভেসে উঠল এক নিমেষে। কাগজের খড়খড় শব্দে পলকেই তা মিলিয়ে গেল। লোডশেডিং শেষ; ফ্যান ঘুরছে; অ্যালবামের নিচে পড়ে থাকা কাগজ়গুলো উড়ে পালানোর চেষ্টা করছে। একটা কাগজ দেখার জন্য হাতে নিতেই পুরোপুরি তোমার ঘোর থেকে বের হয়ে আসলাম আমি।

তোমার পাঠানো ডিভোর্স নোটিশ ছিল ওটা।

/
রেশনুভা


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

পড়লাম ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঁচাইলা তুমি...:)। ঘন্টাখানেকের বেশি সময় ধইরা বইসা ছিলাম; একটা মন্তব্য দেইখা ঘুমাইতে যাব এই চিন্তায়। শুভ রাত্রি।

/
রেশনুভা

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

তাই নাকি? তাহলে তো আরো তাড়াতাড়ি কমেন্ট দিতাম দেঁতো হাসি

আসলে আজকেই খুব কাছের একটা মানুষের এইরকম একটা ঘটনা শুনলাম, তারপর দেখলাম এই পোস্ট ... কি কমেন্ট দিব বুঝতেসিলাম না ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

শাহান এর ছবি

আর আমি দিবানিদ্রা দিয়ে উঠে পড়লাম ...

ভাল, কিন্তু তাড়াহুড়া করে লেখা মনে হচ্ছে?

অতিথি লেখক এর ছবি

আস্তে ধীরে লিখতে পারি না শাহান। কথা হারায় যায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সুন্দর। চালিয়ে যান।

একটা পরামর্শ। গল্প চিরায়ত জিনিষ, তাই পার্টিকুলার ইনফরমেশন না দিয়ে জেনারেলাইজড ইনফরমেশন দিলে মনে হয় যেকোন পাঠকের পক্ষে তার স্থান-কাল-পাত্রে চিন্তা করতে সুবিধা হয়। ব্যাপারটা একটু ভেবে দেখবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। পরামর্শটা আসলেই অনেক কাজে দেবে। এই জন্য 'ধন্যবাদ' এর শক্তির সূচক অসীমতক করে দিলাম। হাসি

/
রেশনুভা

অমিত আহমেদ এর ছবি

মোটামুটি লেগেছে।

কাহিনী তেমন কিছু নয়। শুরু আর বর্ণনা থেকে শেষটাও যেনো অনুমান করা যায়। অনেকটা জীবনমুখী গানের মতো।

লেখার হাত মন্দ নয়। আরো লেখা আসুক।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

অতিথি লেখক এর ছবি

আরো লেখা পড়তে চাইছেন এই খুশিতে ডগমগ অবস্থা। ভালো থাইকেন।

/
রেশনুভা

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

চলুক

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

চলুক

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ফারুক হাসান এর ছবি

আমার কাছে খুব ভাল লাগল লেখাটা। শেষ লাইনটায় চমক আনার চেষ্ঠা ছাড়া পুরো লেখাটায় এক ধরনের বিষন্নতা আছে, যেটাই মূলত ভাল লাগার কারণ। অনেকদিন পর পুরনো জিনিস ঘাটতে গিয়ে ভাল লাগা কিছু হাতে পড়ে গেলে ভীড় করা স্মৃতির সুন্দর একটা গল্পই হতে পারে এটা। চমকটা একটু খাপছাড়া।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমার কাছেও খুবই ভালো লাগল লেখাটা। দারুণ! চলুক

সমুদ্র এর ছবি

ভালো লাগলো; বিষণ্ণতাটা ছুঁয়ে গেলো, ফারুক হাসান যেমন বললেন।
আরো বড় লেখা চাই।

"Life happens while we are busy planning it"

তানভীর [অতিথি] এর ছবি

ভাইয়া,
আপনার কাছ থেকে মন খারাপ করা লেখা র দেক্তে চাই না... ঃ(
এত ভাল একটা জাইগাই গেছেন একটা মাস্তি টাইপ লেখা দেন মিয়া... চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

'মন খারাপ করা টাইপ লেখা' লিখা সহজ মনে হয় ... হাসি

/
রেশনুভা

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

চলুক...

---------------------
নামে কি'বা আসে যায়...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

পুরনো সময়ের বিষন্ন স্মৃতিচারণটাই ভালো লেগেছে। ডিভোর্সলেটারের ট্যুইস্ট খুব আনএক্সপেক্টেড ছিলনা।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটা ব্যাপার আমার কাছে সবসময় রহস্য হয়েই থাকে। বিষণ্ণতা আমরা পছন্দ করিনা, কিন্তু বিষণ্ণতার কথা শুনতে আমাদের ভালো লাগে কেনো?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধুগোদা ঠিক বলছেন। আমিও বুঝি না।
আর উপরের বস/বসি যাঁরা কষ্ট কইরা পড়ে এই আবজাব লেখকরে উৎসাহ দিলেন ... ধন্যবাদ ^ অসীমতক

/
রেশনুভা

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ে মন খারাপ হয়ে যায়।

সাজিয়া
shazia[dot]shahnaz[at]gmail[dot]com

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ হইছে তো সত্যি সত্যি? হাহাহা। আমি তো তাইলে সফল। মন ভালো করন টাইপ একটা লেখা দেখি লেখন যায় কিনা ...

/
রেশনুভা

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চমকের প্রত্যাশী ছিলাম। মিটিয়েছেন...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনি মিয়া হুদাই মন খ্রাপ কইরা থাইকেন না... সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি কিন্তু আপনার কলেজমেট। আজকে টের পেলাম, আপনিই এসিস্টেন্ট হাউস লিডার রেজওয়ান ভাই দেঁতো হাসি


পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা

রেশনুভা এর ছবি

আরে তাইতো...আমি তো হাউস সহ-অধিনায়ক ছিলাম। দেঁতো হাসি
তোমাদের তো পিচ্চি অবস্থায় পাইছিলাম। আহ...ভালো লাগল খুবই।

রায়হান আবীর এর ছবি

তখন বুঝি আপনি বুড়া ছিলেন? দেঁতো হাসি


পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা

কৃতী [অতিথি] এর ছবি

বেশ হয়েছে..দুঃখ জাগানিয়া ভাব মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগলো ।।।।।।।।।।।।।।।

*তিথীডোর

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।