সকালে যে সূর্যটা কোমল আলোর স্ফীত হাসি ছড়িয়ে প্রকৃতিকে অপরুপা করে পৃথিবীর বুকে আবির্ভূত হয়, সেই সূর্যটাই ভর দুপুরে তীর্যক আলো দিয়ে এই পৃথিবীটাকে উত্তপ্ত করে, মাঝে মাঝে অসহনীয় করে তুলে। আবার সময়ের ঘূর্ণিপাকে ঘুরতে ঘুরতে সাঝের বেলা আধারে হারিয়ে যায় কোন প্রকার বিয়োগ ব্যাথ্যা ছাড়া। এরপরও আমরা প্রতিদিন মুখিয়ে থাকি সকালের নতুন সূর্যের আশায়। সূর্যের অনপুস্থিতি আমাদের কাছে এক সেকেন্ডের ১০০০ভাগের এক ভাগও কাম্য নয়। সূর্যকে আবর্তিত হয়ে পৃথিবী ঘুরে , সূর্যমুখী সূর্যপানে চেয়ে থাকে নিজের পরিপূর্ণতার আশায়।
সূপর্ণার জীবনে ভালবাসার সূর্য হয়ে এসেছিলো সোহান। ভালবাসার কোমলতায় ভাসিয়ে ছিলো সূপর্ণাকে সোহানের মিষ্টি আলো। বিমুগদ্ধ ছিলো দুজন অনাবিল আবেগের ঝিরঝির বৃষ্টি স্নানে। দুপুরের রোদ তখনো তাদের জীবনে আসেনি। সোনালী রোদে শিশির যেমন সুন্দর্য্য ছড়ায় অকৃপণ ভাবে, ভালোবাসা তেমনি দ্যুতি ছরাচ্ছিলো দুটি হৃদয়ের সবুজ দূর্বা ঘাসে শিশিরের স্বচ্ছ্বতা নিয়ে। চলন্ত সময়ের ট্রেনে চরে তারা দুজন কখন যে দুপুরে এসে গেছে বুঝতে পারেনি । ভালোবাসার কোমলতা তখন মিলিয়ে গেছে বাস্তবতার তীর্যক আলোর অসহনীয় উত্তাপে। দুজনকে করেছে দ্বিধাবিভক্ত। পারস্পারিক সামাজিক চাহিদার লোভে তাদের প্রেমের পুস্প কলি তিরোহিত হয়েছে বিনা নোটিশে। অহমিকা আর দম্ভের কাছে তারা হয়েছে বিচ্ছিন্ন। কিন্ত প্রেমতো সূর্যের মত আধারে হারালেও আবার সকালে হাসি মুখে পাশে এসে আলো দেয়। সূর্য যেমন পৃথিবীর সাথে অলিখিত চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে প্রতি সকালে হাজির হয় পৃথিবীর কোলে, তেমনি এক অলিখিত চুক্তিতে সরে গিয়েছিলো সূপর্ণা আর সোহান আগামী কোন এক সকালে মিলনের প্রত্যাশায়। সূর্য উঠবে এটা চিরন্তন, কিন্ত প্রেমের সূর্য মাঝে মাঝে হারিয়ে যায় সাহারার মরুভূমিতে, আর পিপাসার্ত প্রেমিকেরা দেবদাস হয় বিরহ ব্যাথায়। কেউ তাজমহল গড়ে হৃদয় যমুনার তীরে। নেশার পেয়ালা উঠে শুষ্ক খসখসে ঠোটে।
সূপর্ণার দুচোখে দূর আকাশের ধ্রুব তারার মত স্থির হয়ে আছে সোহানের শেষ যাবার দৃশ্য। সোহান ছিলো মধ্যবিত্ত পরিবারের ছোট ছেলে। সবে মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হয়েছে। চাকুরীর জন্য চলছে আপ্রান চেষ্টা। সূপর্ণা বিশ্ববিদ্যাল্যের ২য় বর্ষের ছাত্রী। সূপর্নার বিত্তশালী বাবা কিছুতেই তাদের সম্পর্কটাকে মানতে রাজী হয়নি। সূপর্ণা যে সোহানের হাত ধরে সংসার সাগর পারি দিবে সেই রকম কোন পরিবেশও ছিলো না। কারন তখনো সোহানের বড় দুইভাই ছিলো অবিবাহিত। আর সোহানও ছিলো বেকার। সোহান কি করবে ভাবতে ভাবতে যখন ক্লান্ত শরীরে সূপর্ণার কাছে আসতো, সূপর্ণা তখন অনেক স্বপ্নের পসরা নিয়ে বসতো। চলতো স্বপ্নের সওদা। আশ্বাসের অমৃত সেরাব পান করাতো সোহানা। মিলনের মধুর মালা গাথতো অনাগত স্বপ্নের বাগিচায়।
সূপর্ণার বাবা-মা সোহানের সাথে সম্পর্কটা আগাতে দিতে চাইলেন না। তারা সূপুর্ণাকে বললো-“দেখো সূপর্ণা আমাদের একটা সামাজিক মর্যাদা আছে, আমরা যে সোসাইটিতে বড় হয়েছি বা তুমি বড় হচ্ছো সেই সোসাইটিতে সোহান অচল।” কথাটা শুনে সূপর্ণা অনেক কষ্ট পেয়েছিলো, কিন্ত বাবা মার মুখের সামনে কিছু বলতে পারেনি। সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলো সোহানকে এই সমাজের একজন সে করবেই। তাইতো সোহানকে বলেছিলো-“ সোহান তোমার আমার সম্পর্কটা বাবা মা ভাল ভাবে নিচ্ছে না, আমি যদি তোমার কাছে বারবার ছুটে আসি, তাহলে হয়তো ওনারা আমাকে বিয়ে দিয়ে দেবে। তারচেয়ে তুমি একটা কাজ কর, একটা ভালো চাকুরী যোগার কর, নিজেকে গোছাও, আমিও সুন্দর ভাবে লেখাপড়া শেষ করি , তখন আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে। বাবা মাও বুঝবে এবং মানবে। আমাদের ফোনে কথা হবে। “ কথা গুলো বলার সময় সূপর্ণার দুচোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছিলো শ্রাবণ ধারার মত অঝরে । সোহান কি বলবে বুঝতে পারছিলো না। সূপর্নার মতের সাথে একমত পোষন করে সেই যে বিদায় নিলো আর তাদের দেখা হয়নি অনেক দিন। মোবাইল ফোনে কথা হতো। প্রথম প্রথম অনেক কথা হতো। সোহানের ব্যস্ততা, সূপর্ণার পরীক্ষা আস্তে আস্তে কথা বলা কমে গেলো।
সোহান একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে ভালো বেতন ও পজিশনে চাকুরী পেলো। নিজের ক্যারীয়ার আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে ভাবতে অনেকটা যান্ত্রিক হয়ে গেলো। সূপর্ণাকে দিনে একবারের বেশী ফোন দিতোনা। ফোনে তাদের কথা হতো ভবিষ্যত নিয়ে। কিভাবে বাবা মাকে ম্যানেজ করবে সেই নিয়েই চলতো বিস্তর আলাপ। যেদিন সোহান চাকুরীটা পেলো সূপর্না অনেক খুশী হয়েছিলো। সূপর্ণা সেদিন বলেছিলো-“আমরা আমাদের স্বপ্নের সিড়ির প্রথম ধাপে পা দিলাম, ইনশাল্লাহ আমরা স্বপ্নের চূড়ায় উঠবোই।” সোহান প্রতি উত্তরে বলেছিলো-“আমার ভয় হয়, যদি পা পিছলে মাঝ সিড়ি থেকে পরে যাই?” সূপর্ণা ফোনের ওপাশ থেকে ধমকের স্বরে বললো-“তোমাকে না কতবার বলেছি, নিরাশবাদীদের মত কথা বলবেনা, নিরাশাবাদীদের আল্লাহও পছন্দ করেন না। আমরা ইনশাল্লাহ সফল হবো। তোমার এতো সুন্দর চাকুরীর পর বাবা না করতে পারবে না।” সেই দিন দুইজন অনেক রাত পর্যন্ত অনেক কথার জাল বুনেছিলো। পরের দিন দুজন প্রায়ই ৮মাস পর একত্রিত হয়েছিলো। সারাদিন ঘুরে ছিলো ঢাকার রাজপথ। খেয়েছিলো আলো-আধারে চাইনীজ। সেটাই যে সূপর্নার সাথে সোহানের শেষ অভিসার সেটা কল্পনায়ও অবাঞ্চিত ছিলো।
কাজের চাপ আর ভবিষ্যত ক্যারিয়ার দুজনের কাজ থেকে সময় কেড়ে নিলো। নিয়মিত কথার জায়গায় খরা দেখা দিলো। দুজনের প্রেমালাপ হয়ে গেলো মৌসুমী বায়ুর মত। আষাঢ়ের আকাশের মত কালো কালো মেঘ ডেকে দিলো তাদের ভাবনা। সপ্তাহের ছুটির দিনে দেখা হওয়ার পরিবর্তে প্রেম সীমাবদ্ধ হলো টুকটাক ফোনালাপে। মাঝে মাঝে ১৫/২০ দিন পরপর কথা হতো সেটাও আবার সীমিত ছিলো কুশল বিনিময়ে। মাঝ খানে একমাস দুজনের কোন কথা হলোনা। সোহানের সেদিন অফিস ছুটি ছিলো, সূপর্ণাকে খুব মিস করছিলো। ফোনটা নিয়ে সূপর্ণার নম্বরে ডায়াল করে দেখে নম্বর বন্ধ। বেশ কয়েক বার চেষ্টা করলো পেলো না। কয়েকদিন পর আবার দিলো একি উত্তর-“আপনি যে নম্বরে ফোন করেছেন, সেই নম্বরটি এই মুহুর্তে বন্ধ আছে , অনুগ্রহ করে একটু পরে আবার ডায়াল করুন।” তারপর বেশ কয়েদিন চেষ্টা করলো, পেলো না। মোবাইল যোগাযোগের কারনে বাসার টেলিফোন নম্বরটা আর কোনদিন নেয়া হয়নি। তাই আর যোগাযোগ করতে পারলো না। সোহান সূপর্ণার বান্ধবীদেরও কম চিনতো বা জানত। তাই খুব একটা সুবিধা করতে পারলো না। ভেবেছিলো ওদের বাসায় যাবে সেটাও সময় হয়নি ভেবে আর গেলো না।
সোহান এক বছরের মধ্যে প্রোমশন পেলো অফিস থেকে গাড়ী পেলো। খবরটা সূপর্নাকে দিতে পারলো না। একদিন গাড়ী নিয়ে সূপর্ণার বাসার গেট থেকে ফিরে এসেছে, বাসায় যেতে সাহস পায়নি। কিছুটা ভয় আর শংকা নিয়ে ফিরে এসেছিলো স্বপ্নের দুয়ার থেকে।
অনেক দিন পর সোহানের সাথে একদিন সূপর্নার বান্ধবী “মৌমিতার” দেখা হয়েছিলো একটা শপিং মলে । তার মাধ্যমে জানতে পেরেছিলো, সামনে ফাইনাল পরীক্ষা তাই অনেক ব্যস্ত। কিন্ত কথা বলেই বিদায় নিয়েছিলো, সূপর্ণার নম্বরটা নেয়া হয়নি। একবার ভেবেছিলো চাইবে, পরক্ষনেই ভাবলো, যদি চাই তাহলে মেয়েটা ভাববে আমাদের মাঝে সম্পর্ক নেই, সেটা হতো সূপর্ণার জন্য ভালো হবে না, তাছাড়া মেয়েটা কি ভাববে, তাই শেষে আর নেয়া হয়নি। বছর তিনের মধ্যেই সোহান ভালো একটা পজিশনে চলে গেলো এবং নিজে একটা ব্যাংক লোনের মাধ্যমে এপার্টমেন্ট কিনে ফেললো। বড় দুই ভাইয়েরা বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেলো। বাবা-মা নিয়ে সোহান বেশ ভালো আছে। অফিস বাসা আর সূপর্নার ভাবনা এইভাবেই দিন যেতে লাগলো। যখনি মনে পরে মোবাইল নিয়ে চলে সূপর্নাকে পাবার ব্যার্থ চেষ্টা।
বয়স ২৮, প্রায়ই দেখে বাবা-মা নিরবে তার বিয়ে নিয়ে কথা বলে। দু-একটা মেয়ের ছবিও তারা যে দেখে সেটা সোহান বুঝতে পারে। একদিন দেখে তার বিছানায় বেশ কিছু সুন্দরী মেয়ের নয়নাভিরাম ছবি। নিশ্চয়ই বিয়ের জন্য এরা মোটা অংকের টাকা দিয়ে প্রোফেশনাল ফটোগ্রাফার দিয়ে ভালো ছবি তোলার চেষ্টা করেছে। ভারী মেকাপে মেয়ে গুলার আসল চেহারাটাই বুঝা যায়না। এরা মনে হয় ভেবে নিয়েছে ফর্সা মানেই সুন্দর। তাই মেকাপে নিজেকে ফর্সার করার প্রানান্তর চেষ্টা। সোহান খাবার টেবিলে ছবি গুলো মাকে ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলো -“মা মেয়ে দেখার জন্য তোমাদের কষ্ট করতে হবেনা, আমিই তোমাদের নিয়ে এসে দেখাবো।” তার অর্ধশিক্ষিত মা বলেছিলো-“সেটা আমাকে আগে বললেই আমি চিন্তামুক্ত হতে পারতাম।” সোহান লজ্জায় আর বেশী কিছু সেদিন বলে নি। চুপচাপ খেয়ে উঠে গিয়েছিলো।
বৃহস্পতিবার, একটু বেলা থাকতে অফিস থেকে বের হলো সোহান। কোথায় যাবে ভাবতে ভাবতে গাড়ী ধানমন্ডির দিকে চালালো। এর মধ্যে নিজে ড্রাইভিং রপ্ত করে নিয়েছে সহজেই। গাড়ীর সিডি প্ল্যায়ারে বাপ্পা মজুমদারের “পরী” গানটা ছেরে শুনতে লাগলো। অসয্য যন্ত্রনা আর চরম বিরক্তি নিয়ে জ্যামের সাগর পারি দিয়ে গাড়ী যখন ধানমন্ডির ৮ নম্বরে ঢুকলো তখন রাত প্রায় ৮টা। সূপর্ণাদের বাড়ীর রাস্তায় প্রবেশ করে দূরে নিয়ন আলোর সাজসজ্জা দেখে একটা ধাক্কা খেলো। প্রথমে মনে হলো সূপর্ণাদের বাসা, আবার ভাবলো না পরের বাসায় হবে। কাছে আসতেই দেখে সূপর্নাদের দোতলা বাড়ী সম্পূর্ণাটা নিয়ন আলোয় সজ্জিত। সোহান জোরে ব্রেক চাপলো। বাসার গেটে গাড়ী থেমে গেলো। তার বুঝতে অসুবিধা হলোনা যে এটা সূপর্ণার জন্য সাজানো। কারন সে জানে সূপর্ণার কোন বড় ভাই বা বোন নাই। নিজেকে সামলে নিলো। দাড়োয়ান এগিয়ে এসে বললো-"স্যার ভিতরেও পার্ক করতে পারেন আবার বাইরেও করতে পারেন।” সোহান গাড়ীতে বসে থেকেই ভাবলো কি করবে, চলে যাবে, না কি সূপর্ণাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে যাবে। ভাবতে ভাবতে দাড়োয়ান বেটা আরেকবার তাগাদা দিলো। সোহান দাড়ায়ানকে বললো- "আমি বেশীক্ষণ থাকবোনা, তাই বাহিরেই পার্ক করতে চাই।" দাড়োয়ানের দেখানো জায়গায় পার্ক করে এলো।
কিছুটা অপ্রস্তুত ও কিছুটা বিষন্ন বোধনে বাড়ীর ভেতর প্রবেশ করলো। কাউকে কিছু না বলে সোজা চলে গেলো বাড়ীর ছাদে, যেখানে সূপর্ণার গায়ে হলুদের মঞ্চ করা হয়েছে। অনেক লোকের ভীর। এক কোনে গানের শিল্পীরা ভীষন শব্দ দোষন করে গান গেয়ে যাচ্ছে, যার অর্ধেকি বুঝ যাচ্ছেনা। ছোট-বড় সব বয়সের মেয়েরা সুন্দর কলাপাতা রঙের শাড়ী পরেছে। ছেলেরা মেরুন রঙয়ের পাঞ্জাবী পরেছে। দেখতে বেশ ভালো লাগছে। কে কোন পক্ষের সেটা সোহানের পক্ষে বুঝা অসম্ভব। তাই কাউকে কিছু না বলে সোজা সূপর্ণার মঞ্চে। সোজা সূপর্ণার সামনে। সূপর্ণা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। বুকটা ধক ধক করে উঠে। উঠতে যাবে এমন সময় সোহান ইশারায় -“বসে থাকতে বলে।” সূপর্নাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। হলুদ শাড়ী আর হলুদ গাদার ফুলে সূপর্ণা যেনো হলুদ পরী। মন খারাপ করে বসে আছে সুখের বাগিচায় প্রবেশের অপেক্ষায়। চারিপাশের নিয়ন আলোয় সুন্দরী সূপর্না যেনো আরো সুন্দরী হয়ে উঠেছে, যাকে বলে অপ্সরা। সোহান বেশীক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলোনা। তার হাত--পা যেনো অবস হয়ে আসছিলো। কি করবে ভেবে কুল কিনারা পাচ্ছিলো না। সে চারিদিকে কয়েকবার চাইলো। দেখলো বেশ কয়েক জন তাকে লক্ষ করছে। সে কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা স্টেজে চলে গেলো হলুদ মাখার জন্য। আস্তে করে গিয়ে সূপর্ণার ডান পাশে বসে হাতে হলুদ নিলো। সন্তপনে হাত দিয়ে হলুদ নিয়ে গেলো সূপর্ণার গালে। হলুদ ছোয়ানোর ফাকে আস্তে করে বললো-“সুখী হও।” সূপর্না শত চেষ্টায়ও চোখের জল আটকাতে পারলো না। টপটপ করে কোপল বেয়ে গড়িয়ে পরলো। সোহান নিজেকে আর ওখানে আটকিয়ে রাখা সমিচীন মনে করলো না, বাম হাত দিয়ে একটা টিস্যু নিয়ে বড় বড় পায়ে চলে এলো। পেছন থেকে কয়েক জন বলতে ছিলো কে? ছেলেটা কে? আবার মুহুর্তেই থেমে গেলো।
সোহান টিস্যু দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বাড়ী থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাড়ালো। আরেকবার বাড়ীটার দিকে অশ্রুসিক্ত নয়নে দেখে নিলো। তারপর হনহন করে চলে এলো নিজের গাড়ীর কাছে। কাপাঁ কাপাঁ হাতে গাড়ীর ডোর খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো। খুব জোরে ডোরটা বন্ধ করলো। সিডি ব্যাগ থেকে একটা সিডি নিয়ে সিডি প্ল্যায়ের দিয়ে অন করে গান বাজাতে লাগলো-“যে ছিলো দৃষ্টির সীমানায়, যে ছিলো হৃদয়ের আঙ্গিনায়, সে হারালো কোথায় কোন দূর অজানায়, সেই চেনা মুখ কতো দিন দেখিনি, তার চোখে চেয়ে স্বপ্ন আকিনি।” নিজের অজান্তেই চোখ বিয়ে থর থর করে অশ্রু ঝরে পরলো নিরবে, গাড়ী ছুটে চললো নিজের আবাস স্থলের দিকে ।
মন্তব্য
এত রোমান্টিক গল্পে একটা মন্তব্যও নেই!
নাআআআআ, এ হতে পারেনাআআআআ!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন