প্রথম পর্বে বাংলা টাইপিং ও ফন্টের কারনে কিছু বানান ভুল পরিলক্ষিত হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। ২য় পর্বে এই সমস্যা আশা করি সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আপনাদের মন্তব্য, সাজেশন, পরামর্শ আমাকে লেখাটা শেষ করার প্রেরণা যুগিয়েছে। আশা করি ২য় পর্বটা পড়বেন এবং মূল্যবান মন্তব্য প্রদান করবেন।
পর্ব-২
রাত ১২টা নিঝুম চারিপাশ। গ্রামের শান্ত পরিবেশ। দূর থেকে শিয়ালের হাক শুনা যাচ্ছে। রাহি অনেক দিন পর রাতে শিয়ালের হাক শুনতে পেলো। একটা ব্যাপার রাহি লক্ষ্য করছে, একটা শিয়াল হাক দেয়ার সাথে সাথে শিয়ালের হাকের কোরাস শুরু হয়ে যায়। পূর্নিমার শেষের দিক, ক্ষয়িষ্ণু চাদের ম্রিয়মান আলোয় গ্রামের এই পরিবেশ রাহি এর আগে কখনো দেখেনি। জেনারেটরের বিকট শব্দ কিছুক্ষণ আগে বন্ধ হয়েছে। বিদ্যুতের আলোয় বাড়ীটা মোটামুটি আলোকিত। বাড়ীর নিরাপত্তার জন্য যেখানে যেখানে লাইটের প্রয়োজন সব জায়গায় পর্যাপ্ত আছে। তারপরও যেহেতু গাছ গাছালিতে ভরা বাড়ী সেহেতু অন্ধকারেরও আলোর সাথে সহবাস দেখা যায়। বাড়ীর পূর্ব-উত্তর কোণটা একটু বেশী অন্ধকার। রাহি কালো ট্রাউজার, কালো ক্যাপ, পাতলা কালো একটা জ্যাকেট টাইপের পরেছে। পায়ে কালো কেডস। পিস্তলটা কোমরে খুঁজে নিলো, একটা টর্চ পকেটে নিয়ে রাতে বাড়ী পরিদর্শনে বের হলো। যেনো ট্রিপিক্যাল গোয়েন্দা। অনেকটা ছোট বেলায় পড়া মাসুদ রানা সিরিজের নায়ক। ঘরের লাইট গুলো বন্ধ করে, আস্তে করে বাহির থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে বের হয়ে এলো। উদ্দেশ্য রাতে কারো উপস্থিতি পাওয়া যায় কিনা। প্রথম থেকেই রাহির সন্দেহটা গিয়ে পরেছে কামরানের উপর। তার ভাব-ভঙ্গী তাকে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে রেখেছে। দ্বিতীয় নম্বরে আছে সুশীল, সিরাজুল হক সাহেবের মেয়ে দানাও সন্দেহের বাইরে নয়। একেবারে শেষের দিয়ে আছে কামরানের ভাইয়েরা।
রাহি আস্তে আস্তে পুকুরের পার দিয়ে হেটে হেটে চলে এলেন বাড়ীর পূর্ব- উত্তর কোণায়। এই দিকটায় রয়েছে পেয়ারা বাগান, আপেল কূল ও সবেদার বাগান। আর এই দিকটায় থাকে কামরান আর সুশীল। মূল বাড়ীর লাগোয়া উত্তর পাশটায় থাকে কাজের মহিলা দুজন। রাহি মূল বাড়ীটা অতিক্রম করার সময় খেয়াল করলো দানার রুমের আলো জ্বলছে। জানালাও হালকা খোলা। গোয়েন্দাদের মাছির মত মাথার চতুর দিকে চোখ। কোন কিছু তাদের দৃষ্টি থেকে রেহাই পায়না। বাড়ীর ঠিক উত্তর কোণায় সবেদা বাগানের কাছাকাছি দুটি মানুষের ছায়া দেখতে পেলেন চাদেঁর ক্ষীণ আলোয়। রাহি নিজের জরতা কাটিয়ে পজিশন নিলো। নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারটা নিশ্চিত করার জন্য পিস্তলটা হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে কাছা কাছি এলো। সে স্পষ্ট লক্ষ্য করলো একজন ছেলে মানুষ ও একজন মেয়ে মানুষ। প্রথমে একটু লজ্জা পেলো। যাবে কি যাবে না ভাবলো দ্রুত গতিতে। সিদ্ধান্ত নিলো ওদের ধরার কারন এই থেকে মূল অপরাধীর কোন তথ্য পাওয়া যেতে পারে। পকেট থেকে টর্চটা বের করলো, বিড়ালের মত বিনা শব্দে কাছকাছি এসে টর্চ মারলো। দেখে কামরান আর কাজের মেয়ে শেফালী আপত্তিকর অবস্থায়। টর্চের আলো দেখা মাত্র দুজনে চটপট নিজেদের সরিয়ে নিয়ে শরীরের কাপড় ঠিকঠাক করলো। কামরান দৌড় দেবার জন্য প্রস্তুতি নিতেই রাহি টর্চটা কামরানের উপর ধরে বললো-“কামরান দৌড় দিবেন না, দৌড় দিলে আমি গুলি করতে বাধ্য হবো।” গুলির কথা শুনে কামরান ভয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। শেফালী কাপড় ঠিক করতে করতে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো। কামরান আস্তে আস্তে মাথা নিচু করে রাহির সামনে এসে দাড়ালো। রাহি নিজের রাগ সংবরণ করে ঠান্ডা মাথায় বললো-“ছি কামরান, ছি, সবার অগোচরে এই রকম অন্যায় কাজ করে বেড়াও? শারীরিক চাহিদা পূরনের এতো আগ্রহ থাকলে আঙ্কেল কে বলে শেফালীকে বিয়ে করে নিলেই তো হয়?’ কামরান কোন কথা না বলে অপরাধীর মত মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে রাহির সামনে। রাহি কি করবে বুঝতে পারছিলো না। পেছনে আরেকটি মানুষের পায়ের আওয়াজ পেলো। রাহি নিজেকে স্রেফ পজিশনে নিয়ে পিস্তলটা তাক করে টর্চ মারলো। দেখে মেরুন নাইটি পড়া এলো চুলে দানা এগিয়ে আসছে। রাহি একটু অবাক হলো। পিস্তলটা পকেটে রেখে দিলো। দানা সামনে আসতেই রাহি বললো-“আরে আপনি? এখনো ঘুমান নি?” দানা একটু ভাব নিয়ে বললো-“আমি শহরের মেয়ে, এতো তারাতারি ঘুমানোর আমার অভ্যাস নেই। কিন্ত আপনারা এখানে কি করছেন?” রাহি কি বলবে চিন্তা করলো। ঘটনাটা বলবে কিনা ভাবলো। একজন অবিবাহিত সুন্দরী মহিলা ব্যাপারটা শোভনীয় ভাবে নিবেন কিনা সেটা ভেবে কথা পরিবর্তন করলো। রাহি বললো-“ রাতে বাড়ী দেখার জন্য বের হয়েছিলাম, কেউ আসে কিনা সেটা লক্ষ্য করারও একটা উদ্দেশ্য ছিলো, দেখলাম কামরান সাহেব হাটাহাটি করছে, তাই ওনার সাথে একটু কথা বলছিলাম।” ভয়ে সংকুচিত হয়ে যাওয়া কামরান হাফ ছেড়ে যেনো বাচঁলো। মনে মনে রাহিকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিলো। দানার দিকে তাকিয়ে-“আপা আপনার সাথে কথা বলে যাওয়ার সময় ওনার সাথে দেখা, তাই পুকুরের বিষ মেশানোর ব্যাপার নিয়ে কথা বলছিলাম।” রাহি একটা পয়েন্ট পেলো। এতো রাতে কামরান দানার সাথে দেখা করতে কেনো গিয়েছিলো, প্রশ্নটা মাথায় গেথে গেলো। নোট করে নিলো মনের খাতায়। দানা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। নিজেকে স্বাভাবিক করে রাহির দিকে তাকিয়ে-“রাত অনেক হয়েছে, তাছাড়া রাতের বেলা সাপ-টাপ থাকতে পারে হাটা হাটি না করে ঘরে গিয়ে ঘুমান, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে, দিনে অনেক সময় পাবেন আপনার অহেতুক পর্যবেক্ষনের। (কামরানের দিকে তাকিয়ে) আপনি এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো, যান গিয়ে ঘুমিয়ে পরুন।” রাহি মনে মনে বললো-“অহেতুক পর্যবেক্ষণ।” তারপর দানার দিকে তাকিয়ে-“রাতে সাপ-টাপের মধ্যে আপনি কেনো শুধু স্লিপার পরে বের হয়ে এসেছেন? হাতে কোন টর্চও নেই, এটা মোটেও নিরাপদ না। আপনিও রুমে গিয়ে শুয়ে পরুন, তানাহলে হাল্কা শিশিরে ঠান্ডা লেগে যাবে। শরীর খারাপ করবে।” দানা কথা গুলো সহজ ভাবে নিতে পারলো না। কথা গুলোর মধ্যে সন্দেহ খুঁজে পেলো, কিন্ত মুখ ফুঁটে কিছু বলতে পারলো না। রাগে টগবগ করে বললো-“আমাকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না, যে কাজে এসেছেন, সেটা নিয়ে ভাবুন, (ঘুরে যাওয়ার সময়, মাথার চুল গুলো একটু ঝাকি দিয়ে) যত্তসব ঝামেলা নিয়ে আসছে বাবা, কাজের কাজ কিছু হবে না, শুধু টাকা খরচ আর মানুষ সম্পর্কে মনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি।” কথা গুলো বলতে বলতে চপলে তাল তুলে, মৃদু হাওয়ায় চুল উড়িয়ে দানা চলে গেলো। কামরান দানার কথায় আগেই নিজের রুমে চলে গেছে। তাই কামরানকে আর কিছু জিজ্ঞাস করা হলো না।
রাহি রুমে এসে একটা বিষয় নিয়ে ভাবলো, দানা প্রথম থেকেই তার উপস্থিতি সয্য করতে পারছে না, তার কাজের প্রতি দানার কোন প্রকার সম্মানবোধও নাই। কথায় কথায় খোচা মারার চেষ্টা। মেয়েটা দেখতে বেশ, এই গ্রাম্য পরিবেশে তাকে ব্যতিক্রম লাগছে, চোখে-মুখে তারুন্যের উচ্ছ্বলতা খেলে যায় সারাক্ষন। কথাও বলে গুছিয়ে। জ্ঞানও রাখে প্রচুর। একটা ব্যাপার খেয়াল করলো, এই সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না, কোন রাজনৈতিক দ্বন্ধে ক্লাস সাসপেন্ডও হয়নি, তাহলে দানা কেনো বাড়ীতে? সব সময় কি মাছ ছাড়ার পরের সময়টা সে বাড়ীতে থাকে? ব্যাপারটা পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। বিষয়টা নিয়ে রাহি একটু চিন্তায় পরে গেলো। আসার আগে ব্যাপারটা যত সহজ ভেবেছিলো এখন দেখছে বিষয়টা তত সহজ না। অনেকটা দূর্ভেদ্য মনে হচ্ছে। ভাবতে ভাবতে রাহি ঘুমিয়ে গেলো।
সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গলো, সময় তখন ৯টা। অথচ কি চকেচকে রোদ। সকাল ৯টায় ঢাকা শহরের দিন শুরু হয় আর এইখানে সকাল ৯টাকে মনে হচ্ছে ভর দুপুর। সূর্য যেনো ঠিক মাথার উপরে। ঝটপট প্রাতের কাজ সেরে উত্তর পাশের বারান্দায় এসে দাড়ালো। বাহিরে তাকাতেই দেখে কামরান মাছের খাবার দিচ্ছে, সুশীল তাকে সাহায্য করছে, তীরে পাঞ্জাবী আর টুপি মাথায় সিরাজুল হক সাহেব দাঁড়িয়ে আছে। কামরান আর সুশীলকে কাজের নির্দেশনা দিচ্ছে। রাহি বের হয়ে এসে সিরাজুল হক সাহের পাশে এসে দাড়ালো। সিরাজুল হক সাহেব দেখেই-“বাবা তোমার ঘুম ভাঙ্গলো? “ রাহি স্মিত হাসি হেসে বললো-“জ্বি আঙ্কেল । এমন সুন্দর পরিবেশে, আগে কখনো ঘুমাইনিতো, তাই একটু বিলম্ব।" সিরাজুল হক সাহেব কামরান আর সুশীল কে ডেকে বললো-“এই তোরা ঠিক মত খাবার দে, আমি আসছি। (রাহির দিকে তাকিয়ে) চলো বাবা নাস্তাটা করে নাও।” রাহি মাথা দিয়ে সম্মতি জানিয়ে সিরাজুল হক সাহেবের পিছে পিছে হাটতে লাগলো। রুমে ঢুকতেই দানার সাথে দেখা। স্বভাব গত কারনে রাহি দানাকে “সুপ্রভাত” বলে ডাইনিং এ এসে বসলো। সিরাজুল হক সাহেব কিসের জন্য যেনো বের হয়ে গেলেন। দানা বিপরীত একটা চেয়ারে বসলো। রাহির দিকে তাকিয়ে-“নতুন জায়গায় ঘুম কেমন হলো আপনার?” রাহি অপ্রত্যাশিত প্রশ্নে থতমত খেয় গেলো। প্লেটে বাজি নিতে গিয়ে থেমে গেলো, দানার দিকে তাকিয়ে-“ভালো, অনেকদিন পর ঠান্ডা পরিবেশে মনের মত করে ঘুমাতে পেরেছি।” দানা একটু হাসি হাসি মুখে-“হুম তাইতো দেখলাম, কিছুটা নাক ডাকারও অভ্যাস আছে।” রাহির মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পরলো। লজ্জায় মাথা নত করে বললো-“একটু সাইনাসের সমস্যা আছে তো তাই একটু আওয়াজ হয়।” ডিমের মামলেট নিয়ে শেফালী হাজির হলো। মাথায় বড় করে কাপড় টানা। চোখে রাজ্যের লজ্জা। রাহি শেফালীর দিকে একবারের বেশী তাকালো না। শেফালীর থেকে ডিমের মামলেট টা রাহির দিকে এগিয়ে দিতে দিতে দানা বললো-“আপনাকে যে বিয়ে করবে, তার খবর আছে? বাই দ্যা ওয়ে , আমি কিন্ত জানি না আপনি বিবাহিত না অবিবাহিত।” রাহি ডিমের মামলেট টা নিয়ে বললো-“ আমি এখনো স্বাধীন আছি, পরাধীনতার শৃঙ্গল এখনো কেউ পরাতে পারেনি। সবে মাত্র ডিটেকটিভ এর উপর লেখা পড়া শেষ করে জবে ঢুকেছি, এখনো এই বিষয় নিয়ে ভাবছিনা।” রাহি নাস্তা খেতে লাগলো। তিনটা রুটি খেয়ে পানি খেলো। দানা চায়ের কাপ এগিয়ে দিতে দিতে -“কিছু কি পেলেন? “ রাহি অন্যমনস্ক ছিলো। প্রশ্নটা শুনে দানার দিকে তাকিয়ে-“সরি বুঝতে পারিনি?” দানা বললো-“যে কাজ নিয়ে এসেছেন তার কোন ক্লু কি বের করতে পারলেন?” রাহি চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে -“রহস্য এত তারিতারি বের করে ফেললেতো মজা থাকে না, তাই একটু সময় নিচ্ছি। তাছাড়া পৃথিবীর অনেক ভালো মানুষের মুখোশের আড়ালেও অনেক রহস্য লুকায়িত থাকে। সেই রহস্য গুলা বের করতে হলে একটু সময়তো লাগে।”
নাস্তার পর্ব শেষ করে রাহি নিজের রুমে চলে এলো। দক্ষিন বারান্দায় একটা চেয়ার টেনে একটা গোয়েন্দা গল্পের বই নিয়ে বসলো। বইয়ে মনোনিবেস করতে পারলো না। দানার কথা বার্তা, আচরন তার কাছে সন্দেহের উদ্বেক ঘটালো। মাথার মাঝে একটা প্রশ্ন বার বার আসতে লাগলো রাতে কেনো কামরান দানার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো। দানা কেনো বিশ্ববিদ্যালয় রেখে এখানে এসেছে। নানান ভাবনার মাঝে যখন ডুবে যাচ্ছিলো তখন সিরাজুল হক সাহেব এসে হাজির। হক সাহেবকে দেখে রাহি একটু খুশী হলো। কিছু আলাপ সারা জন্য মনে মনে তাকেই খুঁজছিলো রাহি। হক সাহেব একটা চেয়ার টেনে রাহির পাশে বসলো। তাদের মধ্যে কথোপকথনঃ
রাহিঃ চাচা আপনারা কি কামরানকে ফের বিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছেন কখনো?
সিরাজুল হকঃ না, এই ব্যাপারটা নিয়েতো কখনো ভাবিনি। কেনো বাবা?
রাহিঃ না তেমন কিছুনা। ওনার বয়সের ছেলে মানুষের একা একা থাকাটা যে কোন ধরনের অপরাধের কারন হতে পারে। ওনাকে দেখে শুনে একটা বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন।
সিরাজুল হকঃ ঠিক আছে বাবা দেখবো, কিন্ত মেয়ে যে কই পাই।
রাহিঃ (সুযোগটার অপেক্ষায় ছিলো) কেনো আমি যতদূর জানি আপনার শেফালীও স্বামী পরিত্যাক্তা। ওনাদের মধ্যে একটা বিয়ের ব্যবস্থা করে দিলে আপনার সুবিধা হবে। দুজনকেই সব সময়ের জন্য পেয়ে যাবেন।
সিরাজুল হকঃ ঠিক বলেছো বাবা। আমিতো ব্যাপারটা ভাবিনি। দেখি ওদের সাথে কথা বলে বিয়ের ব্যবস্থাটা করে ফেলা যায় কিনা?
রাহিঃ (কথার গতিপথ পরিবর্তন করলো) আঙ্কেল একটা বিষয় কি আমাকে বলবেন?
সিরাজুল হকঃ কি বিষয় বলো।
রাহিঃ আপনার মেয়ে দানা, আপনাদের গ্রামের থাকার ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখে?
সিরাজুল হকঃ ওতো চায়না আমরা গ্রামে থাকি। ও এটা একে বারেই চায় না। ওর হোস্টেলে থাকতে নাকি ভালো লাগে না, আমাদের প্রায়ই বলে চলো ঢাকা ফিরে যাই।(এক ধমে কথা গুলো শেষ করে রাহির দিকে তাকিয়ে) কিন্ত এই কথা কেনো বাবা?
রাহিঃ না তেমন কিছু না। আচ্ছা আরেকটা বিষয় বলুনতো-আপনি প্রথম দুই বছর ভালো মাছ বিক্রি করেছেন, তার পরের দুই বছর মাছ মরে সাফ হয়ে গেছে, এই বার ছেড়েছেন, এখনো মাছের পোনা সব ঠিক আছে। তাই তো?
সিরাজুল হকঃ হ্যা, তাই বাবা।
রাহিঃ মাছের পোনা ছাড়ার পরপর এই সময়টা দানা কি প্রতিবারি এখানে ছিলো?
সিরাজুল হকঃ না, প্রথম দুই বছর লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারনে আসতে পারেনি, গত তিন বছর ধরেই মাছের পোনা ছারার ১৫-২০ দিন পর আসে ১০-১২ দিন থেকে চলে যায়।
রাহিঃ (চিন্তিত হয়ে) হুম।
সিরাজুল হকঃ বাবা তুমি কি আমার মেয়েকে সন্দেহ করতাছো? এটা কিন্ত তুমি ঠিক করতাছো না।
রাহিঃ আঙ্কেল গোয়েন্দাদের চোখে সবাই সন্দেহভাজন। তাছাড়া এমনওতো হতে পারে আপনার মেয়ে চাচ্ছে না আপনারা গ্রামে থাকেন, তাই কাউকে দিয়ে এই কাজটা করাচ্ছে, যাতে আপনারা বিরক্ত হয়ে ঢাকা চলে যান। আবার এইও হতে পারে যে কামরান এটা করতেছে যাতে আপনারা বিরক্ত হয়ে ঢাকা চলে যান, ও ওর ভাইদের নিয়ে দেখা শুনার নামে কিছু উপরি টাকা কামাতে পারে চুরি চামারি করে। আবার হতে পারে বাহিরের তৃতীয় পক্ষ এসে এটা করতে পারে যাতে আপনারা ঢাকা চলে যান, তারা ইচ্ছেমত গ্রামটা নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
সিরাজুল হকঃ (মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিলো, রাহির বলার শেষ হবার পর বললো) তোমার প্রত্যেকটা কথায় যুক্তি আছে, আমি কিছুই ভাবতে পারছি না। আমি এখন যাই, তুমি তোমার চিন্তা করো। সিরাজুল হক সাহেব উঠে চলে গেলেন। রাহি আবার বইয়ে মনোনিবেশ করলো।
সিরাজুল হক সাহেব দুপুরের খাবার খেয়ে খাটে শুয়ে আছেন। স্ত্রী শায়লা বেগম পাশে এসে বসলেন। সিরাজুল হক সাহেব স্ত্রীকে দেখে উঠে বসলেন। স্ত্রীকে বললেন-“আমার মাথায় একটা বিষয় এসেছে, (একটু থেমে) আসলে বুদ্ধিটা আমার না, ঐ রাহি ছেলেটার। আমার কাছেও ভালো লেগেছে---- (কথা শেষ করতে পারলো না। স্ত্রী অনেকটা অধৈয্যের মত বললেন-“কার সেটা পরে শুনবো, আগে বিষয়টা খুলে বলেন?” সিরাজুল হক সাহেব স্ত্রীর কাছে এসে আস্তে আস্তে বললেন-“আমাদের কামরান আর শেফালীর বিয়ে নিয়ে। রাহি সাহেব বলছিলো, এই বয়সে স্ত্রী ছারা পুরুষ মানুষরা নাকি যেকোন অপরাধের সাথে জরিয়ে যেতে পারে। ওদের সন্ধানী চোখ, নিশ্চয়ই কিছু দেখেছে, তানা হলে আমাকে এই কথা বলতোনা।” শায়লা বেগম যেনো কথা বলার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে গেলেন। মেয়ে মানুষের স্বভাব যা, কারো কোন দোষ পেলে সেটা কে বানিয়ে বাড়িয়ে বলতে হবে, তানা হলে নিজের মুন্সীয়ানা থাকে না। স্বামীর খুব কাছে এসে বললো-“ আমিও দেখেছি, ওরা সুযোগ পেলেই ফিসফাস করে। শেফালী মেয়েটা প্রায়ই রাতের বেলা বাইরে যায়, এইবার ব্যাপারটা বুঝবার পারলাম। ছেলেটাতো আসলেই ভালো বুদ্ধি রাখে, এসেই একদিনেই ধরে ফেলেছে।ঠিক আছে ওদের ডেকে কথা বলেন। রাজী থাকলে রাতেই হুজুর কে ডেকে বিয়েটা সেরে ফেলেন।” স্ত্রীর কথায় সম্মতি প্রদান করলেও সিরাজুল হক সাহেব ভাবলেন। তারপর স্ত্রীকে বললেন-“রেষ্ট নাও। বিকালে দেখা যাবে।”
রাহি বিকালে ঘুম থেকে উঠে একটু বেরুনোর জন্য একটা জিন্স আর কালো রাউন্ড কলারের টি-শার্ট পরেছে। চিরুনী দিয়ে মাথা আচরাতে গিয়ে আয়নায় দেখে পেছনে দানা দাঁড়িয়ে। রাহি দেখেও না দেখার বান করে মাথার চুল পরিপাটি করতে লাগলো। দানা কিছুক্ষন দেখে দরজায় নক করলো। রাহি আয়নায় তাকিয়ে থেকেই বললো-“এই নকটা আরো আগেই কর উচিত ছিলো। কোন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে বা মেয়ের রুমে প্রবেশের আগেই নক করা বাঞ্চনীয়।” বলেই দানার দিকে ঘুরে দারালো। দানা আজও জিন্স আর ফতোয়া পরেছে। আজকের ফতোয়াটা নীল রঙ্গের উপর সাদা সুতায় হাতের কারুকাজ। কাধঁ পর্যন্ত চুল গুলো আজ স্কুল বালিকার মত করে দুই বেণী করেছে। দেখতে খুব সুন্দর এবং বাচ্চা বাচ্চা লাগছে। দানা তখনও দরজায় দাড়িয়ে ছিলো। রাহি লক্ষ্য করে বললো-“কি ব্যাপার আপনি এখনো ওখানে দাঁড়িয়ে, আসুন, (চেয়ার দেখিয়ে দিয়ে) বসুন।” দানা স্বভাব সুলভ নেতিবাচক আচরন করে বললো-“এই শেষ বিকালে আপনার ঘরে বসার জন্য আসেনি।” রাহি ঝটপট উত্তর দিলো-“তাহলে আগমনের হেতু জানতে পারি কি?” দানা কোন প্রকার বনিতা না করে বললো-“চলুন বাহির থেকে বেড়িয়ে আসি। পাশেই ছোট একটা নদী আছে, বিকালে ওখানে হাটতে খারাপ লাগে না। আমি ঢাকা থেকে এলেই ওদিকে হেটে বেড়াই।”
গ্রামের জমির আইল ধরে দুজনে হেটে যাচ্ছে ছোট নদীটার দিকে। তাদের মাঝে টুকটাক কথোপকথনঃ
রাহিঃ আপনার গ্রাম ভালো লাগে?
দানাঃ বেড়ানর জন্য গ্রাম ভালো, তবে দীর্ঘদিন বসবাসের জন্য বোরিং।
রাহিঃ আপনি কি ছুটি পেলেই বাড়ী চলে আসেন?
দানাঃ হুম, হোস্টেলে ভাল লাগে না। খাওয়া -দাওয়া কষ্ট, পার্সোনাল বলে খুব বেশী কিছু থাকে না। সব কিছু শেয়ার করতে হয়।
রাহিঃ আপনার কোন বয় ফ্রেন্ড নেই? বলেই সাথে জুরিয়ে দিলো, সরি ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করার জন্য।
দানাঃ ইটস ওকে। না। সরাসরি উত্তর দিলো। এবং পাল্টা প্রশ্ন করলো, আপনার?
রাহিঃ আপনার মত আমিও অভাগা, এখনো কোন নারীর ভালোবসায় সিক্ত হতে পারিনি।
দুজনে হাটতে হাটতে নদীর পারে চলে এসেছে। এমনি ছোট নদী তার উপর শুষ্ক মৌসুম। নদী তো নয় যেনো খাল। সেই ছোট বেলায় পড়া কবিতার কথা মনে পরে গেলো রাহির। আবৃত্তি করতে লাগলো-“আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে,
পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাড়ী
দুই ধার উঁচু তার ঢালু তার পাড়ি।” এইটুকু পড়েই রাহি থামলো।
দানাঃ আপনি বেশ ভালো আবৃত্তি করেন তো!
রাহিঃ মোটেও না। ছোট বেলায় পড়া কবিতাটা মনে হলো। মনে হলো এখানেই এটা পাঠ করার পারফেক্ট জায়গা, তাই একটু চেষ্টা করলাম। কবি হয়তো এমনি একটি নদী দেখে এই কবিতাটি লিখেছিলেন।
দানাঃ আপনার অনুসন্ধান কতো দূর? আমার মনে হয় আপনি শুধু শুধু পন্ড শ্রম করছেন, এর চেয়ে ভালো ঢাকা ফিরে গিয়ে অন্য কোন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করুন, লাভ হবে।
রাহিঃ লাভ লোকসান তো পরে, আগে রহস্যটা ভেদ করাই টার্গেট।
দানাঃ রহস্য! রহস্যতো তখনি উদঘাটন হবে যখন রহস্য উপস্থিত থাকবে। এটা মামুলি একটা ব্যাপার । হয়তো পুকুরের তলানীতে অ্যামোনিয়া ও কার্বন ডাই অক্সাইড সহ জৈব তলানীর পরিমাণ বেশি জমেছে, তাই ঠিক মত মাছ জীবন ধারন করতে পারছেনা, মারা যাচ্ছে।
রাহিঃ গুড। আপনিতো বিবিএ পড়েও মাছ সম্পর্কে বেশ জ্ঞান রাখেন। আপনার বাবা কে কি একথা বলেছেন? এর কি প্রতিকার সেটা কি বলেছেন? পরপর দুইবার ওনি ক্ষতির সম্মুখীন হলেন, আপনিতো প্রতিবারই বাড়ীতেই ছিলেন?
দানাঃ (কিছুটা বিস্বয় নিয়ে) আপনিতো দেখছি আমার সম্পর্কে অনেক খবরই রাখেন। আপনার উদ্দেশ্য কি? সন্দেহ না প্রেম?
রাহিঃ প্রেম! সেতো মরুভুমির মরিচীকা। আর সন্দেহ! বলতে পারেন সেটা আমার পেশার ধরন।
দানাঃ আপনি শুধু গোয়েন্দা গিরিই করেন নাকি সাহিত্য চর্চাও আছে?
রাহিঃ কেনো?
দানাঃ না যে ভাবে গুছিয়ে, কথার পৃষ্ঠে কথা বলছেন তাতে আমি মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি। বলতে পারেন আপনার প্রেমে পরে যাচ্ছি।
রাহিঃ মাফ করবেন, ভুলেও একাজটি করবেন না। তাহলে জীবনে ঠকতে হবে।
দানাঃ কেনো, ঠকতে হবে কেনো?
রাহিঃ আমরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে থাকি, কখন আমাদের জীবন ক্রশ ফায়ারে মারা যাওয়া মানুষের মত বিনাবিচারে মারা যাবে তার কোন গ্যারান্টি নাই। তখন অল্প বয়সে বিধবা হতে হবে।
দানাঃ বাজে বকবেন না তো। বাঝে কথা আমার একদম ভালো লাগে না। চলুন সন্ধ্যা হয়ে আসছে, বাড়ী ফিরে যাই।
রাহিঃ ভালোই তো লাগছে, আরেকটু থাকিনা?
দানাঃ এটা আপনার শহর না। এটা গ্রাম, এখানে রাতে আপনাকে আমাকে দেখলে গ্রামে কিচ্ছা কাহিনীর হয়ে যাবে।
রাহি আর কিছু বলতে পারলো না। অগ্যতা দানার পিছে পিছে বাধ্য বালকের মত হেটে বাড়ীর ফিরতি পথ ধরলো। কিছুক্ষন দুজনে চুপচাপ হাটার পর রাহি মুখ খুললো।
রাহিঃ আচ্ছা আপনার তো এখন বিশ্ববিদ্যালয় খোলা , এই সময় এখানে এসে বসে আছেন?
দানাঃ সেটা কি আপনার কোন বিষয়?
রাহিঃ না। আপনার পড়া-লেখার ক্ষতি হচ্ছে না।
দানাঃ আমার ব্যাপারটা আমাকে ভাবতে দিন। আপনি আপনার ব্যাপার নিয়ে ভাবুন।
রাহিঃ আপনি বললেন আপনার হোস্টেল ভালো লাগে না, তাহলে আঙ্কেল- আন্টি কে তো ঢাকা নিয়ে যেতে পারেন?
দানাঃ ওনাদের ঢাকা ভালো লাগেনা। অনেক চেষ্ট করেছি। যাবে না। তারা বলে দুনিয়ার আর মেয়েরা কি হোস্টেলে থেকে লেখা পড়া করে না। তাই তো............ বলেই দানা থেমে গেলেন।
রাহিঃ তাইতো কি থামলেন কেনো? বলুন...
দানাঃ (দানা নিজের কথায় নিজেই চমকে গেলো সে ভুলে গিয়েছিলো যে একজন গোয়েন্দার সাথে কথা বলছে।)না কিছু না। এমনি বললাম
রাহিঃ আপনি কি যেনো একটা বলতে গিয়ে থেমে গেলেন। আমিতো জানতাম মেয়েদের পেটে কথা থাকেনা, এখন দেখছি উল্টোটা।
দানাঃ আপনি ঠিকি জানেন, মেয়েদের মুখে কথা থাকে না। (চলবে)
মন্তব্য
ঘটনার 'আচমকা মোড়' এর অপেক্ষায় থাকলাম।
/রেশনুভা
প্রহরী ও নজরুলভাইয়ের মন্তব্যের পর এবার দেখা যাক বানানের কী দশা। রূঢ় শোনালে মাফ করবেন, তবে সুগার-কোটিং করছি না।
প্রথম প্যারাটুকুই শুধু নেওয়া যাক।
রাত ১২টা (বারোটা বললে ভালো হতো, তাছাড়া একটা কমা দরকার এখানে) নিঝুম চারিপাশ। গ্রামের শান্ত পরিবেশ। দূর থেকে শিযা়লের হাক শুনা যাচ্ছে। রাহি অনেক দিন পর রাতে শিযা়লের হাক শুনতে পেলো। একটা ব্যাপার রাহি লক্ষ্য করছে (করেছে?), একটা শিযা়ল হাক দেযা়র সাথে সাথে শিযা়লের হাকের কোরাস শুরু হযে় যায়। পূর্নিমার শেষের দিক, ক্ষযি়ষ্ণু চাদের ম্রিয়মান আলোয় গ্রামের এই পরিবেশ রাহি এর আগে কখনো দেখেনি। জেনারেটরের বিকট শব্দ কিছুক্ষণ আগে বন্ধ হযে়ছে। বিদ্যুতের আলোয় বাডী়টা মোটামুটি আলোকিত। বাডী়র নিরাপত্তার জন্য যেখানে যেখানে লাইটের প্রযো়জন সব জায়গায় পর্যাপ্ত আছে। তারপরও যেহেতু গাছ গাছালিতে ভরা বাডী় সেহেতু অন্ধকারেরও (এই "ও"টা কেন? আর কার কার সাথে আলোর সহবাস দেখা যাচ্ছে?) আলোর সাথে সহবাস দেখা যায়। বাডী়র পূর্ব-উত্তর কোণটা একটু বেশী অন্ধকার। রাহি কালো ট্রাউজার, কালো ক্যাপ, পাতলা কালো একটা জ্যাকেট টাইপের পরেছে। পায়ে কালো কেডস। পিস্তলটা কোমরে খুঁজে (গুঁজে?) নিলো, একটা টর্চ পকেটে নিয়ে রাতে বাডী় পরিদর্শনে বের হলো। যেনো (যেন?) ট্রিপিক্যাল গোযে়ন্দা। অনেকটা ছোট বেলায় পডা় মাসুদ রানা সিরিজের নায়ক। ঘরের লাইট গুলো (লাইটগুলো: একসাথে) বন্ধ করে, আস্তে করে বাহির (চলিতে লেখা, মাঝে সাধু রূপ কেন?) থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে বের হযে় এলো। উদ্দেশ্য রাতে কারো উপস্থিতি পাওযা় (টের পাওয়া/দেখতে পাওয়া?) যায় কিনা। প্রথম থেকেই রাহির সন্দেহটা গিযে় পরেছে কামরানের উপর। তার ভাব-ভঙ্গী তাকে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে রেখেছে। দ্বিতীয় নম্বরে আছে সুশীল, সিরাজুল হক সাহেবের মেযে় দানাও সন্দেহের বাইরে নয়। একেবারে শেষের দিয়ে আছে কামরানের ভাইযে়রা।
তাছাড়া শিরোনামেও বানান ভুল! দূর থেকে ভেদ করতে চাইছেন কি? নাকি দুঃ ভেদ্য?
এর পরে আর এগোই নি। আশা করছি কিছু পাঠক আমার তুলনায় অনেকে কম উন্নাসিক হবেন বানানের ব্যাপারে, তাঁরা পড়বেন। লেখা থামাবেন না, তবে পোস্ট করার আগে যত্ন দরকারি এমনটাই মনে হয়।
ধন্যবাদ, আপনার সুন্দর মতামতের জন্য। ভাই ওয়ার্ডে অভ্র আর সচলায়তনে ফোনেটিক এই সমস্যায় জরজরিত। তাই কিছু শব্দের বানান ঠিক রাখতে পারছিনা। কিছু শব্দের ভুল প্রয়োগ থাকতে পারে, এখানেতো আর প্রুফ রিডার নাই, তাই নিজে অনেক সময় ধরতে পারি না।
অসংখ্য বানান ভুল... পড়তে পড়তে ধম বের হয়ে গেছে। তবু পুরোটা পড়লাম। এখনো গল্পটা খুব সবল লাগছে না। দান দান তিন দান... তৃতীয় পর্বটার অপেক্ষায় রইলাম... সেখানেও এরকম দেখলে খুদা হাফিজ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বানানের আরো যত্ন নিন। অসংখ্য ভুলে ভরা লেখা পড়তে সত্যিই কষ্ট হয়।
দু'এক জায়গা একটু অতি নাটুকে মনে হলো। মূল রহস্যে আরেকটু তাড়াতাড়ি ডুব দিন, ভালো লাগবে পড়তে। আপনার লেখার হাত বেশ ভালো।
আরেকটা কথা। কথোপকথন শুরুর আগে ওভাবে "তাদের মাঝে টুকটাক কথোপকথনঃ" না লিখে, পুরো কথোপকথনের অংশটা বর্ণনার ঢঙে লিখতে পারতেন। নইলে মনে হয় যেন কোনো সাক্ষাৎকার।
যাই হোক, ভালো থাকবেন। লিখুন নিয়মিত।
খুব সুন্দর।
জুহের,ঢাকা
নতুন মন্তব্য করুন