গল্পের জন্য আসেন ওদের নামধাম দেই কিছু। ডাকাডাকির বেশ সুবিধা হবে তাতে। ছেলেটি ধরেন আশিক আর মেয়েটি রিমিনা। বেশ আধুনিক নাম। রহিম আর রহিমার চেয়ে শ্রুতিমধুর, তাই না? আমাদের গল্পটাও আধুনিক; মানিয়ে যাবে।
তাঁদের ঘোরাঘুরি আর দেখাদেখির সূচনা এর পরেই। না; এত সহজে কি আর সশরীরে দেখা করতে দিতে পারি না কি? ঘোরাঘুরিটা ঐ ফেসবুকের একে অন্যের পাতায়ই সীমাবদ্ধ। অল্প সল্প মন্তব্য, খোঁচাখুঁচি আর ‘পছন্দ’ করা। দিন যায়; মেসেজ চালাচালি শুরু হয় ফেসবুকেই। রিমিনা সদ্য বিবাহিত বলেই হয়ত আশিক কিছুটা ওর জামাইয়ের কথা ভেবেই আর কিছুটা গোপনীয়তা রক্ষার খাতিরে এই তরিকা অবলম্বন করে। ৪/৫ লাইনের বার্তায় পুরোটাই ভরা থাকে ডি-জুস যুগের ‘আজাইরা’ প্যাঁচালে।
রিয়াদ সাহেবের ব্যাপারটা ভাল লাগে না। উনি রিমিনার জামাই। যদিও রিমিনার ছেলে বন্ধু নেই তা নয় এবং রিয়াদ সাহেব এদের অনেককেই চেনেন তবুও আশিকের নির্দোষ রসিকতা ও হাসি-ঠাট্টা রিমিনার ছবিতে এবং স্ট্যাটাসে তাঁর ঠিক সহ্য হয় না। জিজ্ঞেস করেছেন। রিমিনা বলেছে বন্ধু। ব্যস ওটুকুই। সুন্দরী বউকে বেশি ঘাঁটাতে ইচ্ছা হয় না।
আমাদের সম্পর্কগুলো সবসময়ই রঙ বদলায় সময়ের সাথে সাথে। আপন পর হয়ে যায় আর হয়ত অল্প ক’দিনের পরিচয়ে অনেকে হয়ে যায় অনেক কাছের। পরেরটি ঘটে আশিক-রিমিনা’র ক্ষেত্রে। বেশ ভাব দু’জনের মধ্যে। এবার মনে হয় ওদেরকে দেখা করিয়ে দেয়া যেতে পারে।
ক্রীসমাসের ছুটিতে আশিক দেশে আসে। বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম, বছর খানেক আগে আশিক দেশের বাইরে যায় পড়াশোনার জন্য। ঢাকায় এসেই আশিক যোগাযোগ করে রিমিনার সাথে। না, মুঠোফোনে নয়; ফেসবুকেই। আশিক কখনো রিমিনা নম্বর চায়নি। প্রয়োজন পড়েনি তাই হয়ত। রিমিনা অবশ্য আশিকের নম্বর জানে; তবে এদেশেরটা নয়, আশিকের ফেসবুকের পাতায় দেয়া বাইরের নম্বরটা। যাই হোক। এতদিনের পরিচয়, কিছুটা বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের দাবিতেই আশিক দেখা করতে চায় রিমিনার সাথে। সায় দেয় মেয়েটিও।
রিয়াদ সাহেব তখন দেশের বাইরে। সুন্দরী বউকে একা রেখে এই বিদেশ-বিভূঁইয়ে জীবন কারই বা ভাল লাগে? এখানকার কিছু বন্ধু অবশ্য জোর করেই মাঝে মধ্যে ক্যাফে পাবে নিয়ে যায় তাঁকে। সেখানেই পরিচয় প্রিয়াংকার সাথে। ভারতের অন্ধ প্রদেশের মেয়ে। সঙ্গী কিংবা বন্ধু হিসেবে চমৎকার। এখানের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট করছে। প্রিয়াংকার সপ্রতিভ ও সাবলীল উপস্থিতি কিছুটা হলেও তাঁর অস্থিরতাকে কমিয়ে দেয় দেশের জন্য, রিমিনার জন্য।
এখন সেই সকালটার কথা বলি, যেদিন ওদের মানে আশিক-রিমিনার দেখা করার কথা। দু’জনের একত্রে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা। আশিকের আবার আজকে একটু ব্যস্ততা আছে অন্য কাজের জন্য। তাই কোনভাবেই দেরি করতে চায় না ও। বের হওয়ার ঠিক আগেই দেখে ফেসবুকে রিমিনার নতুন একটা ছবি। মেয়েটা সুন্দর। ছবি তুললেই ভাল হয়। এক চিলতে হেসে ‘লাইক’ বাটনটা চেপে বেরিয়ে পড়ে ও। হাতে একটা প্যাকেট থাকে ওর।
রিমিনার আজকের সকালটা বেশ ফুরফুরে লাগে। জামাইয়ের সাথে কথা হল একটু আগে। বেচারা কি খায়, কি করে একা একা তাই ভেবে ভেবে আকুল হয়। ও বলেছে রিয়াদকে আজ একটু বাইরে যাবে দুপুরবেলা। পুরোটা অবশ্য ভেঙ্গে বলেনি। হঠাৎ কি ভেবেই ফেসবুকের ছবিটা পরিবর্তন করে দেয় ও। রিয়াদের খুব পছন্দের ছবি এটা। ঘড়ি দেখে চঞ্চল হয়ে ওঠে। এইরে, দেরি করে ফেলছে ও। দৌড় দেয় বাথরুমের দিকে।
রিমিনা চলে যাওয়ার পরও বেশ খানিকক্ষণ বসে ছিল রিয়াদ সাহেব অন্তর্জালে। এদিক-সেদিক, এটা-সেটা করছিল। ফেসবুকে ঢুকেই দেখে রিমিনার ঐ ছবিটা। মুখটা ঝলমল করে ওঠার আগেই চোয়ালটা শক্ত হয়ে যায় তাঁর। ঐ ছেলেটা; আবার। ভাবে এই পোলার কি আমার বউয়ের ছবি পছন্দ করা ছাড়া আর কোন কাম-কাজ নাই। মেজাজটা আসলেই গরম হয় তাঁর। ছবিটার নিচে ছোট্ট একটা মন্তব্য লেখে সে। তাও মেজাজটা ঠান্ডা হতে চায় না। মুঠোফোনটা তুলে নিয়ে ফোন করে সে তখনই।
বেশ খানিকটা আগেই পৌঁছে যায় আশিক রেস্টুরেন্টটায়। বেশ চমৎকার ভিতরটা। এই জায়গাটা ওর খুব পছন্দের। আগেও এসেছিল এখানে। শেষবারেরটা বন্ধুদের খাওয়াতে, ওর বিদেশে বৃত্তি আর একই সাথে বিদায় উপলক্ষে। সময় কাটানোর জন্যই কোকের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে আবার অন্তর্জালে ঢোকে মুঠোফোন দিয়েই। আজ সকালেই অতিথি লেখক হিসেবে একটা লেখা দিয়েছিল এক ব্লগে। হতাশ হতে হয়। এখনও মডুদের পড়া শেষ হয়নি বলে অন্য কেউ আর পড়তে পারছে না বলে। ঠোঁটদুটো মনে হয় বিড়বিড় করে উঠল আশিকের। ফেসবুকে ঢুঁ দেয়। বেশ কয়েকটা ‘নোটিফিকেশন’। কোন একটাতে ক্লিক করতেই খুব অবাক হয় ও। পরক্ষণেই কষ্ট আর ক্ষোভ মিশ্রিত অনুভূতি। কি করবে ঠিক বুঝে পায় না। ভাল-মন্দ দু’টা চিন্তাই হয়। একবার ভাবে প্রতিশোধ নেবে। উঠে দাঁড়িয়ে কাকে যেন ডাকে ও।
রিমিনা গাড়ীতে। দেরি করে ফেলেছে ও। প্রায় পৌঁছে গেছে, এমন সময় তারস্বরে মুঠোফোনটা বেঁজে ওঠে। বিরক্তি নিয়ে ধরতে না ধরতেই বন্ধ হয়ে যায়। কেউ ওকে নিশ্চয়ই অনেক মিস করছে। এর ফাঁকেই গাড়ী থেমে যায়। অবশেষে পৌঁছল ও। আবার মিস কল। মেজাজটা খারাপ হয়ে যায় ওর। বন্ধ করে দেয় ফোনটা। এই ঝামেলায় রিমিনা আর খেয়াল করে না যে একটা সিএনজি বেরিয়ে যায় পাশ দিয়েই।
রিয়াদ সাহেবের মেজাজটা আরো বিগড়ে যায়। কোনভাবেই লাইনটা ঠিক মতন পাওয়া যায় না। কি করবেন চিন্তা করতে না করতেই তাঁর মুঠোফোনটা বেঁজে ওঠে। ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি।
রিমিনা ভেতরে যায়। নাহ, তাঁর পরিচিত মানুষটার খোঁজ মেলে না। একটু অবাকই হয় ও। অসহায় ও বোধ করে। নম্বরও তো নেই লোকটার ওর কাছে। এই ভাবতে ভাবতেই দেখে কেউ একজন এগিয়ে আসছে ওর দিকে। লোকটা এগিয়ে এসে জানতে চায় রিমিনার কাছে যে ও আশিক সাহেবকে চেনে কি না। মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিতে না দিতেই লোকটা একটা প্যাকেট বাড়িয়ে দেয় ওর দিকে। রিমিনা পুরো বোকা হয়ে যায় তখন। প্রচন্ড অপমানিত বোধ করে। প্যাকেটটা না নিয়েই চলে আসে হনহন করে।
আশিক সিএনজিতে উঠেই একটা সিগারেট ধরায়। ভাবছে, কাজ়টা ঠিক করল কিনা। মেয়েটা ওকে নির্ঘাত ভুল বুঝবে। থাক, বুঝলেই বা কি? ক’জনই বা ওকে ঠিকঠাক মতন বুঝতে পারে। কি যেন একটা লেখে আশিক মুঠোফোনে। বাইরে বৃষ্টিও শুরু হয় তখন, ঝমঝম বৃষ্টি।
রিমিনা চুপচাপ বসে থাকে গাড়ীর ভেতর। এখনও বুঝে উঠতে পারে না আশিক এমন কেন করল? ভাবে ফেসবুকে একটা মেসেজ পাঠাবে, শেষবারের মতন। আরো অবাক হয়ে যায় ও, যখন ফেসবুকে ঢুকে দেখে আশিকের মেসেজ। ইংরেজী হরফে লেখা বাংলা মেসেজটা ছিল এরকম।
“আমার সাথে তোর ফেসবুকে যোগাযোগ এইটা তোর জামাই মনে হয় ঠিক পছন্দ করছে না; সেখানে দেখা করলে তোর আরো ঝামেলা বাড়তে পারে। ঐ প্যাকেটের ভিতর তোর জন্য নিয়ে আসা টিউলিপের চারা ছিল টিনের মধ্যে। তুই ভালো থাকিস।”
ঝমঝমে বৃষ্টিতে জানালার কাঁচটা ঝাপসা হয়ে যায়; ঠিক রিমিনার চোখ দু’টোর মত।
ভৌগলিক দূরত্বের কারণে ওখানে তখন রাত। রিয়াদ সাহেব আগেই ক্যাফেতে বসেছিলেন। কাঁচের দরজা খুলে দেখা যায় এক দক্ষিণ ভারতীয় রমণীকে ঢুকতে।
আশিকের সিএনজিটা এসে দাঁড়ায় এক মিষ্টির দোকানের সামনে। ওদের বাসায় আজ বাদ আছর মিলাদ। আশিকের ছোট বোনটার মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
/
রেশনুভা
md.rezwan.huq at gmail.com
মন্তব্য
আশিককে রিয়াদের বন্ধু করে দেয়া যায় না?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
হাহাহা ... হবে কোন একদিন সেটাও হবে। যদিও তুমি আমার ছোট অ-নে-ক ... ব্লগার হিসেবে তো আমি নাদান তোমার কাছে; অ-নে-ক ধন্যবাদ আমার এই সব আবজাব পড়ার জন্য ...
বাস্তুভিটার সমাধান হইছে?
/
রেশনুভা
না না, আমি বলতেসিলাম আশিক আর রিয়াদ শুরুতে বন্ধু থাকবে, রিয়াদই ওকে বউয়ের সাথে পরিচয় করায় দিবে, তারপরে ঈর্ষান্বিত হয়ে যাবে ... সেটা কেমন হয়? ... আমি হইলে ওমনে লিখতাম ...
বাস্তুভিটার সমস্যার সমাধান আপাতত হইসে ... কেমনে হইসে সে এক বিশাল ইতিহাস, পরে কমু
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
জব্বর হয়। লিখা ফালাও না কেন? বেশিদিন অপেক্ষায় রাইখো না ...
রেশনুভা,
আপনার লেখাগুলা পড়ার পর কেমন একটা দুঃখের রেশ রয়ে যায়। আরও লিখবেন, পড়তে ভাল লাগে।
সাজিয়া
shazia[dot]shahnaz@gmail[dot]com
একটা কৌতুক বলি সাজিয়া। অনেকেই জানেন অবশ্য।
"এক পাগল সাঁকোর উপর বসে আছে। ঐ সময় গ্রামের এক লোক সাঁকো পার হচ্ছিল। পাগলের কাছে এসে সে বলল, পাগল সাঁকো নড়াইস না। পাগল বলল, ভালো কথা মনে করছ ... "
আমি কিন্তু ঐ পাগলের মতনই; বুইঝেন ...
/
রেশনুভা
সম্পর্কের দ্বিধা দ্বন্দগুলা আরো একটু বেশি জটিল মনেহয়।আপনার শেষটুকু পড়ে মনে হল আশিক রিমিনাকে ছোট বোনের মত দেখেছে এটা বোঝাতে চেয়েছেন।এটা এতটা সরলরৈখিক নাও হতে পারে।মানে আসলেই অতটা ছিলনা নিশ্চয়ই।
কোন কোন ক্ষেত্রে তো হতেও পারে ...
পড়েছেন জেনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ।
/
রেশনুভা
দক্ষিণ ভারতীয় রমণীর বিশদ বিবরণ দিলে আরো ভালো লাগতো
"Life happens while we are busy planning it"
অনেক আগে, 'গানে গানে ভালবাসা' নামক সেই গীত নাট্যের একটি বাক্য খুব-ই আমোদ দিতো আমাদের, 'সব সম্পর্ক এক রকম হয় না অর্ণব!'
এই তিনজনের কেউ মনে হয় ঐটা শুনে নাই।
ছোট বোনের মত দেখলে ইনবক্সে মেসেজ পাঠাতে হবে ক্যান বস ?? যাই হোক, শেষটা আরো জব্বর হবে এই আশায় ছিলুম ...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লেখাটা ভাল্লাগ, বেশ বাস্তবানুগ, তাই।
আমার কাছাকাছি একটা অভিজ্ঞতা আছে। মানে এই ফেসবুক পর্যন্তই। নোটিফিকেশন, মেসেজ, কমেন্ট, এইসবই। বাকিটাতে কিন্তু মিল নাই
মজার কথা জানেন, প্রিভিউতে এই লেখা দেখার পরই মনে হচ্ছিল এইটা আপনার লেখা। ভেতরে ঢুকে দেখি আসলেই তাই।
আরো লেখেন।
ছি ছি ... পুরা এত বড় একটা জায়গারে অন্ধ বালায় দিছি আমি ...
বাকিটা শোনার অপেক্ষায় থাকলাম ...
প্রিভিউ দেইখা বুইঝা ফেললা আমার লেখা! প্রশংসা হিসেবে নিলাম কিন্তু ...
খুবি আধুনিক গল্প। ফেইসবুক তো এখন হিট যোগাযোগের মাধ্যম। ধন্যবাদ সুন্দর গল্পের জন্য।
শেষ লাইনটা দিয়ে কি বোঝাইতে চাইলেন যে ছোটবোনের মত দেখতো? তাহলে হতাশ হইলাম [যদিও আমার সেটা মনে হয় নাই প্রথমবার পড়ে] ... বোন আর প্রেমিকার বাইরেও বোধহয় সম্পর্ক চিন্তা করা যায় ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
আমাদের যে কোন সম্পর্ককে কি আমরা বাইনারী ০ আর ১ এর মতন শ্রেণীভেদ করতে পারি? আমার কাছে তো মনে হয় "মানব-মানবীর সম্পর্ক মাত্রই জটিলতা"। পরিস্থিতি জটিলতা বাড়ায় আবার কখনও কখনও সম্পর্কের সীমারেখাও টেনে দেয়। এই গল্পে দ্বিতীয়টাই ধরে নেই না কেন?
/
রেশনুভা
তেমন সুবিধার লাগলো না।
টিউলিপ থেকে আফিম হয়
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
- আফিম থেকে নেশা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নেশা থেকে ধ্বংস।
ধ্বংস থেকেই আবার কবিতা! আবার আফিম!
আপনার এই গল্প এখনকার সময়প্রেক্ষিতে খুবি বাস্তব গল্প।আমার পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে আপনি কোন দেখা ঘটনা অবলম্বনে নিজের মত করে লিখেছেন। কিংবা এরকম আমি দেখেছি।
মানব মানবীর সম্পর্ক পৃথিবীর অন্যতম জটিল ধাঁধা বলে মনে হয়।
http://news.cnet.com/8301-17852_3-10307638-71.htmlএই লিঙ্কটা ঘুরে দেখতে পারেন।
বোন কিংবা প্রেমিকার বাইরে অন্য একটা রিলেশনশিপ হতে পারে বলে আমিও বিশ্বাস করি, তাই এই গল্পে সম্পর্কের সীমারেখা তৈরি করা আমারো ভালো লাগেনি।
রিমিনাকে সদ্য বিবাহিত হতে হয় না হয়তো, ছেলেবন্ধু থাকাও অনেক ক্ষেত্রে যথেষ্ট। রিমিনার বর/ছেলেবন্ধু সুন্দরী বউ বলে যতটা না ঘাঁটাতে না চান, তার চেয়ে হয়তো নিজের 'আপাত'উদারমনা ব্যক্তিত্ব বউ/মেয়েবন্ধুর কাছে উঁচিয়ে রাখাই শ্রেয় মনে করেন । এবং নিজেকে হিপোক্রেট প্রমান না করতে চেয়ে তিনি এমন কিছু করে বসেন যা স্বাভাবিকতা ছাড়িয়ে যায়। রিয়াদ হয়তো রিমিনা দেখার আগেই কমেন্ট মুছে দেন। যে কারনে রিমিনার কখনোই জানা হয় না রিয়াদের মনের কি ধরনের জটিলতা কাজ করতো রিমিনার ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলি নিয়ে।
কিংবা আরো দুঃখজনক কিছু । অন্ধ্র প্রেদেশের মেয়েটি, ফেসবুক কমেন্ট-মেসেজসংক্রান্ত জটিলতা, কিংবা আরো গাঢ় এবং অন্য কোন কেটে যাওয়া সুর, যা শুধুমাত্র রিয়াদ সাহেব ই জানেন, এবং নিজের প্রবল ব্যাক্তিত্ববোধের জন্য প্রকাশ করতে পারেন না। শুধু জানেন (এবং জানান)রিমিনাকে তার আর নিজের মনে হয় না। এবং রিমিনার দিশেহারা হয়ে অসংখ্য অজস্র প্রশ্নের অতলে হারিয়ে যায় আর ধুসর ঝাপ্সা চোখে সমস্ত দিন একটা কারন খুঁজে বেড়ায়, এবং কিছুই পায় না।
ভাই অথবা বোন (সীমারেখা কি টানব এখানে? ) যেই হন না কেন, আপনার মন্তব্য পইড়া আমি তো টাসকি খাইলাম। আপনার মন্তব্যটা জোস।
আমিও বিশ্বাস করি, বোন বা প্রেমিকার বাইরে সম্পর্ক হতে পারে, যেইটার কোন নাম থাকে না বা আমরা নাম দিতে পারি না। আসলে, আপন বোন ছাড়া বোন সম্পর্কের অন্য কোথাও আর কোন অস্তিত্ব আছে বলে আমার মনে হয় না। গল্পটাতে যেহেতু আশিকের বোন নিয়ে একটু দুর্বলতা ছিল আগে থেকেই, ঐ সুযোগটা নিয়েই একটু নাটকীয়তা আনার চেষ্টা।
আচ্ছা, কিছু কিছু সম্পর্কের ক্ষেত্রে কি আমরা নিজেরাই সীমারেখা টেনে নেই না, আমাদের অক্ষমতা অথবা অপ্রাপ্তির বেদনাকে প্রশমিত করার জন্য?
/
রেশনুভা
ধ্বংস থেকে আবার সৃষ্টি ...
গল্প ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদের অন্য কোন সমার্থক শব্দ জানা নাই যেইটা দিয়ে আমি একই অনুভূতি চরম মাত্রায় প্রকাশ করতে পারি।
আমার মত নাদানের জন্য এই উৎসাহটুকু বিশাল প্রাপ্তি।
/
রেশনুভা
রেজওয়ান ভাইয়ের মনে এতো দুঃখ কেনু কেনু কেনু?
পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা
জানো না, কেনু?
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
বেশি চমত্কার!সম্পর্কের সমীকরণ বুঝা বড় দায় !
বেশি চমত্কার!সম্পর্কের সমীকরণ বুঝা বড় দায় !
ভালো লাগলো দোস্ত। রবিন
নতুন মন্তব্য করুন