শত্রুর সঙ্গে বসবাস

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৩/০৯/২০০৯ - ১:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের সমসাময়িক অস্থির সমাজে উল্কার মতো আবির্ভাব যে রমণীর ,
সে বিদিশা।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক রহস্যময় অবস্থানে থেকে স্বল্প সময়ে প্রভাব-প্রতিপত্তি অর্জন করার পরও নানাবিধ কারনে তার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে। পেশায় ব্যবসায়ী এই রমণীর রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ব্যর্থ হওয়ার পর নারী অধিকারের মুখোশ নিয়ে সে নতুনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে সাত কোটি রমনীর এই বিশাল বাজারে... বইটির সমাজতত্ত্ব বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা চমকপ্রদ ও নতুনত্বে ঠাঁসা ।

শত্রুর সঙ্গে বসবাস বইটির ভূমিকাতে লেখক বিদিশা বারবার এটিকে আত্মজীবনী বলে অভিহিত করেছে। লেখক তার বাল্যকাল থেকে শুরু করে তারুণ্য ও যৌবনে দুই স্বামীর সংসার এবং সেই সাথে কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্ণনা করেছে। দীনা নামের মেয়েটি স্কুলগামী সময়েই নিজের নাম পরিবর্তন করে জীবনানন্দের নায়িকা বিদিশা নাম ধারণ করার মাধ্যমে তার সেয়ানাপনার পরিচয় দেয়। সে বাল্যকালে খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করেছে সংসারের নানা অসঙ্গতি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরএকজন শিক্ষকের ঘরে জন্ম নিয়েও লেখক তার পরিবার সম্পর্কে যে সব কথা বর্ণনা করেছে তা মানুষকে অবাক না করে দিয়ে পারে না। সে ছিলো তার বাবার আদরের সন্তান , অপরদিকে মায়ের চক্ষুশূল। মা যে সন্তানের রক্ত দেখে স্বামীর প্রতি ক্ষোভের তৃষ্ণা মেটাতে পারে তা এই বই না পড়লে অকল্পনীয় মনে হতো। ছোট বেলায় ছেলেদের পোশাক পরেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ প্রকাশ করার মাধ্যমেই লেখক ছেলে হতে পারার মধ্যেই বীরত্ব খুঁজে পেয়েছে। মেয়েরাও যে ছেলেদের চেয়ে ভালো অবস্থানে যেতে পারে তা এখানে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। যদিও তখন লেখকের বয়স অনেক কম। তারপরও যে মানুষটি নিজেই স্কুলে গিয়ে ভর্তি হতে পারে, জীবনানন্দের মোহনীয় নায়িকার নাম যাকে অতো অল্প বয়সেই মুগ্ধ করে তার কাছে এটা বেমানান। তৎকালীন অবহেলিত নারীদের অবস্থা ও মুক্তি নিয়ে নয় বরং নারীত্বকে অস্বীকার করার জন্যই লেখক ছেলে সাজার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে দুরন্তপনার মধ্য দিয়ে।
১৯৮৫ সালে নবম শেণীতে অধ্যয়ণ করা অবস্থায় যখন তার সাথে বিয়ে দেওয়া হয় ১৪ বছরের বড় পিটারের সাথে তখনও সে তা অকপটে মেনে নেয়। যদিও তৎকালীন সময়ে বিয়ে মানেই নারীর বাধ ভাঙ্গা কান্না....কিন্তু বিদিশাকে সেসব আবেগ কখনও ছুঁয়ে যায়নি। কারণ হয়তোবা সে নারীত্বকেই অস্বীকার করেছে নতুবা পিটারের সাথে বিদেশে গিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের পায়তারা করেছে। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো বিদিশার যে দুটো বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছে দুটোই উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। নারীর পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্কের পর্যায়ে পড়ে না। প্রথমটি পিটারকে বিয়ে করে নিজেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে একজন আধুনিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে। দ্বিতীয়টি হলো এরশাদের লাম্পট্যের কথার জানার পরও একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের সাথে নিজেকে জড়িয়ে নিজের খ্যাতি ও উচ্চাশা পূরণের নিগূড় উদ্দেশ্য। প্রথম বিয়ের সময় ভীতির পরিবর্তে বিদিশার মনে পরিত্রাণের আনন্দ খেলে যায়। এক অধ্যাপকের সংসারে মায়ের দ্বারা মেয়ে অত্যাচারিত হওয়া কিংবা স্বামী দ্বারা স্ত্রীর প্রতি নিদারুণ অবহেলা ঐ পরিবারের সামাজিকতার ধারণা ও শিক্ষা সম্পর্কে মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কালো ও অসুন্দর মেয়েকে বিয়ে দিয়ে কণ্যা দায়গ্রস্থার হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার মতো নিচু চিন্তা তৎকালীন শিক্ষিত সমাজের মানুষের নিচু মানসিকতাই প্রকাশ করে।বিদিশার ছেলে হলে হয়তো এই দু:চিন্তা বিদায় করার চিন্তা তার অধ্যাপক বাবার ঘুম কেড়ে নিত না। বিয়ের পর বিদেশে টয়লেট পরিস্কার করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে বিদিশাই তার পরিবারের দ্বায়িত্ব গ্রহন করে। বিয়ে নামক সামাজিকতার শৃংখলে আবদ্ধ করে বিদিশাকে দেশ থেকে একরকম তাড়িয়ে দেওয়ার পর সেই সন্তানের অর্থ গ্রহন করতেও তার পরিবারের দ্বিধা হয়নি। হয়তো বা হয়েছে! তবে বিদিশা এক্ষেত্রে একজন দ্বায়িত্ববান মানুষের মতো দ্বায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রে নারী হয়ে জন্মে সে যে অচল হয়ে যায়নি তার প্রমাণ করার কোন সুপ্ত বাসনাও হয়েতো বা লুপ্ত ছিল মনে।আবার বিদিশা যে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য ও কেনাকাটা যাবতীয় কাজ করে যাচ্ছে তা কিন্তু প্রথম স্বামী পিটারের সূত্রে পাওয়া। এ ক্ষেত্রেও নিজেকে আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বি করার জন্য মূলত পিটারের অর্থকেই মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পিটারের সাথে বসবাস করার পরও পিটারের সহজাত স্বভাবকে মেনে নিতে না পারার মধ্যেই উঠে এসেছে বিদিশার মনের সংকীর্ণতা। ইংল্যান্ডের মানুষের বাঙ্গালির মতো আবেগ নেই। বাস্তবতাই তাদের কাছে চরম বাস্তব। এটা বংশ পরস্পরায় রপ্ত করেছে পিটার অথচ সেটা নিয়েও বিদিশার মনে রয়েছে আপত্তি। বিদিশার মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে সেক্রিফাইজ জিনিসটার ঘাটতি। এটাও হয়তো সামাজিকীকরণের অভাব। আদর সোহাগ সর্বোপুরি যৌনতার নেশায় আচ্ছন্ন বিদিশা এক পর্যায়ে বাবা মতান্তরে দাদার বয়সি এরশাদের সাথে নিজেকে জড়ায়। যদিও এরশাদের লালসার দৃষ্টি তাকে অনুসরণ করেছে অনেক দিন ধরে তারপরও বিদিশা তো ধরা দিয়েছে। এরশাদের সাথে প্রথম যৌন সম্পর্কের পর বিদিশার মন্তব্যই প্রমাণ করে যে, এরশাদের যৌন ক্ষমতাই বিদিশাকে চকমপ্রদ করে। একদিকে আবেগ ও অন্যদিকে স্বাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী...... এ দুই লাভ থেকেই বিদিশা এরশাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। অতপর, এরশাদের অবৈধ নারী সম্পর্ক স্থাপনের বাধা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসা যাওয়া শুরু। তারপরও ক্রমেই জড়িয়ে পড়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে। খুবই অল্প সময়ে পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার হয়। অত্যন্ত চাতুরতার সাথে রাজনীতি মঞ্চে এরশাদের মতো ধূর্ত ব্যক্তির ছায়া থেকে বের হয়ে এসে নিজের সমর্থিত একটি শ্রেণী তৈরী করতে সমর্থ হয় সে। যার কারণে এরশাদের বহু বিশ্বস্ত ও পুরানো কর্মচারীরাও তাকে এরশাদ সম্পর্কে তথ্য দিতো। সহজ ও অবোধ নারীর পক্ষে এত অল্প সময়ে বাজিমাত করা অসম্ভব। অতপর: বিদিশার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের হঠাৎ পতন হয়। কারণটা স্পষ্ট করে বলা নেই এবং হয়তো বা এই কারণটাও রাজনৈতিক কিংবা স্পর্শ কাতর । নিজের বাসার গহনা ও মোবাইল চুরির অপরাধে বিদিশা গ্রেফতার হয় ও তার উপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। এটা কোন স্বামীর দ্বারা ষড়যন্ত্র করে স্ত্রী নির্যাতন নয়। এটা হলো দুইজন ধূর্ত মানুষের একজনের জয় আরেকজনের পরাজয়। এই পরাজয়ের পর বিদিশা অনুভব করে যে সে নারী। সুতরাং নারীর উপর নির্যাতন হলে মানবাধিকার সহ হাজার প্রতিষ্ঠান পাশে দাড়াবে এটাই স্বাভাবিক এবং বাস্তবেও তা হয়েছে। মানুষ ভুলে গিয়েছে দুই কুকুরের লড়াইয়ে যে পরাজিত হয়েছে সে বিজয়ের জন্য বেছে নিয়েছে নতুন পন্থা। এটাও বিদিশার এক ধরনের রাজনীতি।

সামগ্রিক আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বিদিশা কখানোই এদেশের বা এ সমাজের নারী আন্দোলন বা নারী অধিকারের আদর্শ হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষ মানুষের পতন ডেকে আনে। বিদিশার পতন হয়েছে মানুষ হিসেবেই এবং তারপর সে নারী শব্দটাকে নিজের সাথে লাগিয়ে নিয়েছে পরাজয়ে মধ্যেও বিজয়ের আনন্দ খুঁজে পাবার আশায়। বিয়ের ব্যাপারেও বিদিশা কখনোই নি:স্বার্থ নারী ছিল না। সে ছিল প্রথমত স্বার্থপর দ্বিতীয়ত কামুক ও উচ্চাভিলাষী। সমাজ ব্যবস্থার কথা বললেও বলতে হয় বিদিশা ছিল বিদেশী সমাজ ব্যবস্থায় অভ্যস্থ ও পরে বহু পুরুষ বেষ্টিত সমাজের একটি নারী। সাধারণ ও স্বাভাবিক সমাজকে সে গ্রহন করেনি। তার সমাজটা সে তৈরী করেছিল সে তার নিজের জন্য। সুতরাং সমাজ ব্যবস্থা নারীর অবস্থান প্রভৃতি ব্যাখ্যার করার জন্য বিদিশা কোন ভাবেই আদর্শ নারী নয়। তবে বিদিশার বিয়ের আগ পর্যন্ত সে সমাজের বর্ণনা দিয়েছে, নারী প্রতি অবহেলা ও সমাজ ব্যবস্থার কথা বলেছে তা ছিলো তৎকালীন সমাজের প্রতিচিত্র।

সাবরিনা


মন্তব্য

বালক [অতিথি] এর ছবি

পড়লাম। আপনার লেখার ভাষা ভালো লাগলো।

তানবীরা এর ছবি

সাবরিনা সচলে স্বাগতম। আপনার আলোচনাটা খুব উপভোগ করে পড়েছি কারন বিদিশার বইগুলো আমি পড়েছি আর নিজস্ব আগ্রহের কারণে।

আপনাকে ছোট একটা কথা বলতে চাই, যদি দুই আর দুই চার এটা ধরে নিয়েই কিছু লিখেন তাহলে এতে নিরপেক্ষতা কম থাকে। তিন আর এক কিংবা চার বার এক যোগ করলেও চার হতে পারে। পৃথিবীটা শুধু ভালো - আর মন্দ কিংবা সাদা আর কালো দিয়ে তৈরী হয়তো নয়। এর মাঝেও অনেক কিছু থেকে যায়। এই জন্যই হয়তো কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় তার শূন্য নয় কবিতায় বলেছেন, "পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড়, ঢের ঢের বড়।

আমি খুব পজিটিভ মন থেকে আপনাকে লিখলাম আশাকরি আমাকে ভুল বুঝবেন না। ভালো থাকুন।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

হিমু এর ছবি

বাংলাদেশের সমসাময়িক অস্থির সমাজে উল্কার মতো আবির্ভাব যে রমণীর, সে বিদিশা।

আপনার সন্দর্ভটি কি কয়েক বছর আগে লেখা? আমার তো ধারণা ছিলো বিদিশাকে বাংলাদেশের অস্থির সমাজ বেশ কয়েক বছর আগেই টয়লেট পেপারের মতো ব্যবহার করে মহাকালের কমোডে ফেলে ফ্লাশ করে দিয়েছে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

তানবীরা আর হিমুর মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সবজান্তা এর ছবি

আমার তো ধারণা ছিলো বিদিশাকে বাংলাদেশের অস্থির সমাজ বেশ কয়েক বছর আগেই টয়লেট পেপারের মতো ব্যবহার করে মহাকালের কমোডে ফেলে ফ্লাশ করে দিয়েছে।

হো হো হো


অলমিতি বিস্তারেণ

শঙ্খচিল [অতিথি] এর ছবি

আদর সোহাগ সর্বোপুরি যৌনতার নেশায় আচ্ছন্ন বিদিশা এক পর্যায়ে বাবা মতান্তরে দাদার বয়সি এরশাদের সাথে নিজেকে জড়ায়।

তাই নাকি? এই নেশার আচ্ছন্ন মহিলারা দাদার বয়সির কাছে যায় নাকি? ব্যাপারটা উলটা করে চিন্তাকরুন, একজন সমনেশায় আসক্ত পুরুষ দাদির কাছে যাচ্ছে! পূরো লেখাটিতে কোন ভাল কিছু বিশ্লেষন পেলামনা। লেখাটি বিদিশার মতই মামুলি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লিখেছেন। স্বাগতম।

দলছুট।
===============
বন্ধু হব যদি হাত বাড়াও।

ফিরোজ জামান চৌধুরী এর ছবি

সাবরিনা, আপনার লেখা ভালো লাগলো।

সচলে স্বাগতম।

ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।

প্রবাসিনী এর ছবি

আপনার লেখার হাত ভাল। আরও লিখবেন। বইটা আমি পড়েছি। বেশ কিছু জায়গায় খটকা লেগেছে, যেমন পিটারের সাথে বিয়ে ক্লাস নাইনে থাকা অবস্থায়।

তবে

বিয়ের ব্যাপারেও বিদিশা কখনোই নি:স্বার্থ নারী ছিল না।

কোন বিয়েই কিন্ত নি:স্বার্থ না!
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আপনার লেখাটা খুব ভাবালো। প্রথমেই যেটা চোখে পড়ে তাহলো, লেখায় টপ টু বটম অসঙ্গতি। ক্লাস নাইনে বিয়ে হয়ে যাওয়া একটা মেয়ের পক্ষে বিয়ের সিদ্ধান্ত (নিজের সিদ্ধান্ত) কতোটা উচ্চাভিলাসের পরিচায়ক তা ভাবতেই হিমশিম খাচ্ছি। তারপরে স্বার্থপর ট্যাগিংটা ... স্বার্থপর হওয়ায় দোষটা কোথায়, যদি আরেকজনের মাথায় বাড়ি না দেয়া হয়। তার স্বামীর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলেই বা দোষটা কোথায়? কেউ কামুক হলে সমস্যা কোথায়? দাদার বয়সী কাউকে বিয়ে করলে অন্যদের প্রবলেম কি? উচ্চাভিলাসেই বা আপত্তি কেনো?

বিদেশী সমাজ ব্যবস্থায় অভ্যস্ত হওয়া কি খুব খারাপ এবং বিদেশে কি পুরা 'অস্বাভাবিক' সমাজ ব্যবস্থা?

নাহ! লেখাটাকে খুবই দুর্বল মনে হলো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ফজলুল কাদের এর ছবি

খুবই যুক্তিময় কমেন্ট। দারুণ, অছ্যুৎ বলাই।

দময়ন্তী এর ছবি

সচলে আপনার প্রথম লেখার জন্য অভিনন্দন৷

অচ্ছ্যুত্ বলাইয়ের সাথে একমত৷ লেখাটা আমারও খুব দুর্বল মনে হল৷
আর ট্যাগ-এ "গ্রন্থালোচনা' দেখেই আমি পড়তে ঢুকলাম৷ কিন্তু বইয়ের নামটা/গুলি কোথায়ও পেলাম না৷ বইয়ের নাম এবং লেখকের নাম, সম্ভব হলে প্রকাশকের নামও দিলে ভাল হয়৷ নাহলে বই ট্র্যাক করা খুব মুশকিল৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমি মন্তব্য করার মতো যোগ্য কেউ নই। তাই আপনার লেখায় নিজের মতামত দিচ্ছি কেবল। অবশ্য সেটা না দিলেও চলত কারন আমি যা বলে চাই তার সবটুকুই অছ্যুৎ বালাই বলে দিয়েছেন। উচ্চাভিলাসি আর স্বার্থপর তো সবাই। আর বিদিশা সম্পর্কে আপনার 'কামুক' শব্দটির ব্যবহার ভাল লাগলোনা। আপনার কথায় মনে হল নারী'র যৌনতৃষ্ণা থাকা উচিত নয়। অথবা নারীকে তার পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নেয়ার অধিকার দেয়া হয়নি! ধরে নেই প্রথম স্বামীর কাছে বিদিশা অতৃপ্ত ছিল। ধরি সেই অতৃপ্ততার জন্যেই সে অন্য কাউকে বিয়ে করেছে। এজন্য কি আপনি তাকে কামুক বলবেন!? (মাফ করবেন, কামুক শব্দটি আমার কাছে নারীকে ছোট করার জন্য ব্যবহৃত শব্দগুলোর একটি মনে হয়)

আমাদের মনে হয় আরেকটু উদার এবং মুক্ত হওয়া উচিত।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সোয়াদ [অতিথি] এর ছবি

বিদিশা জীবনানন্দ দাশ এর কবিতার নায়িকার নাম কী? মনে তো হয় না।

রণদীপম বসু এর ছবি

কিছু মনে করবেন না, একটা কথা বলি-

যৌন চাহিতা বা আসক্তি বেশি থাকাকে আপনি যদি কামুক বলে অভিহিত করে থাকেন, তাহলে আপনি এখনো কমপক্ষে একশ বছর পেছনে থেকে কথা বলছেন বলে ধরে নিতে হবে। যৌবনের শক্তিই তার শক্তিশালী যৌন আসক্তির মধ্যে। শতকরা একশ ভাগ লোকই (নারী বা পুরুষ যেই হোক) এই ক্ষমতা নিজের মধ্যে ধারণ করতে চায়। সেক্ষেত্রে বিদিশাকে পারফেক্ট যুবতিই তো মনে হচ্ছে ! এটা তার ক্রেডিট, দোষ নয়। এজন্য অনেককে তো শুনি ভায়াগ্রা খেতে হয়। আর দাদু বয়সে যদি এরশাদ কোন সক্ষম পুরুষত্ব দেখিয়ে থাকেন, এটা এরশাদেরই ক্রেডিট। কিন্তু আমি বুঝলাম না স্বাভাবিক নারী পুরুষের যে সামর্থটুকু থাকা কৃতিত্বের বিষয়, সেগুলো নিয়ে কেন আপনি অযথা টানা হেচড়া করলেন ! বইটার কোন্ বিষয়টাকে আসলে আপনি হাইলাইট করতে চেয়েছেন, তা যে বুঝতে পারলাম না, এটা হয়তো আমার ব্যর্থতা। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

তবে সচলে স্বাগতম আপনাকে। আমাদের এসব আলোচনায় আবার কষ্ট পাবেন না। লিখবেন নিয়মিত। সচলে আমরা এরকম খোলাখুলি আলোচনার মধ্যে আমাদের বক্তব্যটা প্রকাশের চেষ্টা করে থাকি। কোনভাবেই যেন এই সচল পরিবার থেকে নিজেকে ভিন্ন ভাববেন না। শুভ কামনা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অমিত এর ছবি

"যৌন চাহিতা বা আসক্তি বেশি থাকাকে আপনি যদি কামুক বলে অভিহিত করে থাকেন, তাহলে আপনি এখনো কমপক্ষে একশ বছর পেছনে থেকে কথা বলছেন বলে ধরে নিতে হবে।"

আইচ্ছা লজ্জা যার বেশি সে যদি লাজুক হয়, ভাবে যে বেশি সে যদি ভাবুক হয়, পেটে খিদা যার অনেক সে যদি পেটুক হয়, কামুক শব্দের তাইলে অর্থটা কি ?

"যৌবনের শক্তিই তার শক্তিশালী যৌন আসক্তির মধ্যে।"
এটা সেইরম

আরিফ জেবতিক এর ছবি

অফটপিক মন্তব্য : মাঝে মাঝে সচলের মডুদের প্রতি আমার বড্ড মায়া হয়। হুদাই।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

লেখাটার ভাষা ভাল হলেও লেখক কেবল তার দৃষ্টিকোণ থেকেই বিষয়টি দেখার চেষ্টা করেছেন বলে মনে হচ্ছে...।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

সাবরিনা এর ছবি

মতামতের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।