ঢাকা চিড়িয়াখানায় মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে মারা গেছে ৫টি মুল্যবান প্রাণী। এত অল্প সময়ে এতগুলো দূর্লভ প্রানীর মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন জনমনে। চিড়িয়াখানার চিড়িয়াদের ভাষ্যমতে, গর্জন নামের রয়েল বেঙ্গল টাইগার নাকি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে। তাহলে অন্য চারটি প্রানীর মৃত্যুর কারণ কি? আর একসঙ্গে এই মহামুল্যবান প্রাণীগুলো মরছে কেন? প্রাণীগুলির প্রতি অবহেলা, অযত্ন, বিনা চিকিৎসা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ? আসলে পশু মৃত্যুর ঘটনা নতুন না, চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাঝে মাঝেই ঘটে এই ধরনের ঘটনা।
নতুন করে পশু কেনার জন্যই অযত্ন-অবহলোয় কৌশলে মেরে ফেলা হয় এই মুল্যবান প্রানীদের। নতুন সরকার ক্ষমতায় এলেই ক্ষমতাসীন দলের লোকজন এবং অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিকল্পিতভাবেই এই কাজটি করে। জামাত-বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই একসাথে কয়েকটি পশু মরেছিল। দিন বদলের সরকার আসার পর দিন বদলের যোদ্ধারাও একই খেলায় মেতেছে। টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজি আর দলখদারিত্বের পর এবার তারা শুরু করেছে পশুবাজী। দিন বদলের কি অভিনব কৌশল!
পশুরা তো আর কথা বলতে পারেনা তাই তাদের খাবারের টাকার বড় অংশ চলে যায় সেখানকার নরপশুদের পকেটে। ভিতরে গেলে দেখা যায় চিড়িয়াখানার নোংড়া ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। আর সবচেয়ে নোংড়া হল সেখানে কাজ করা মানুষ নামের পশুগুলো। মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ার কারণে ঢাকা চিড়িয়াখানায় কোন শুকর নেই তাই বুঝি দিনে দিনে এরা পরিণত হয় শুকরের বাচ্চায়। কিছুদিন আগে ছেলেকে নিয়ে গেলাম চিড়িয়াখানা দেখাতে। ঘুরতে ঘুরতে একসময় সেখানে কর্তব্যরত একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম-ভাই উল্লুকের খাঁচাটা কোন দিকে। উনি হাত-চোখ কিছু না ঘুরিয়েই বললেন- ঐ দিকে। দিকটা কিছুই বুঝলাম না। এবার ব্যাঘ্রের মত গর্জন করে বললেন- আরে মিয়া কইলাম না ঐ দিকে।
আসলে ভাই আপনি তো হাত-চোখ কিছুই নাড়ছেন না, আমি বুঝবো কিভাবে ঐদিক টা কোন দিক?
আওে মিয়া আপনারে খাঁচা দেখানো আমার কাজ না, পারলে খুইজা লন। যান, ঝামেলা বাদ দিয়া ভাগেন। একেই বুঝি বলে ’ আপন বনে কুত্তা সিংহ।”
কি আর করা উনার দিকে আঙ্গুল দিয়ে ছেলেকে বললাম- বাবা এই দেখ উল্লুক।
কি আপনে আমারে উল্লুক কইলেন?
না মানে আপনে যে সিংহ, এটা আমার আগে জানা ছিলনা।
ঔ মিয়া বহুত ফাজলামো করতাছেন, আপনার কপালে কইলাম দুঃখ আছে।
দুঃখিত ভাই কিছু মনে করবেন না, আমি আপনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। কিছুটা হেঁটে গিয়ে উল্লুক দেখতে হত, আপনার কল্যানে সেটা এখানেই দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
রেনেসাঁ
মন্তব্য
দারুণ!
ধন্যবাদ মূলত পাঠক।
দিন বদলাচ্ছে। দিন বদলের সব খবর প্রথম আলোতেই মোটামুটি আসছে, প্রথম সারির পত্রিকা হিসেবে এটা একটু ব্যতিক্রমই বলতে হয়। এই মুহূর্তে মূর্তালা রামাতের চিড়িয়াখানা বিষয়ক কবিতাটি মনে পড়ছে।
প্রথম আলো সরকারের বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা করছে তবে সরকারী দলের লোকেরা পিঠে বেঁধেছি তুলো আর.................এই নীতিতে চলছে।
খুব দুঃখজনক ঘটনা, কিন্তু দারুণ লিখেছেন! ভালো লাগলো।
খুব ছোটবেলায় শুক্রবারগুলোতে বাবা মা আমাদেরকে বেড়াতে নিয়ে যেতেন শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, বোটানিকাল গার্ডেন এগুলোতে। উত্তেজনায় ভরপুর থাকতো সেসব দিন! বড় হয়ে শেষবার যেবার চিড়িয়াখানা গেলাম, খুব নোংরা, অগোছালো পরিবেশ আর পশুবিহীন কিছু খাঁচা দেখে মর্মাহত হয়েছিলাম খুব। এগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ খুব জরুরী।
ধন্যবাদ মৃত্তিকা। এককথায় বলতে গেলে পুরো দেশটার অবস্থাই দুই টাকার নোটের মত।
দুচোখ আজও খুঁজে ফিরে ফেলে আসা,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
দারুণ লিখেছেন।
উল্লুকীয় ধন্যবাদ!!
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ধন্যবাদ ফিরোজ জামান চৌধুরী । আপনার উল্লুকীয় ধন্যবাদ পেয়ে বান্দরবেলার কথা মনে পড়ছে।
ধারুণ লিখেছেন। এই সব মানুষরূপী উল্লুক গুলো যতদিন ঠিক না হবে ততদিন আমাদের জীবনে শান্তি আসবে না।
দলছুট।
============
বন্ধু হব যদি হাত বাড়াও।
ধন্যবাদ দলছুট।
রেনেসাঁ
শুধু চিড়িয়াখানা নয় সরকারী যে কোন অফিসে গেলেই এই ধরনের ব্যবহার পাওয়া যায়।
আপনার বর্ণনাটি খুব ভাল লেগেছে সেই সাথে কষ্টও হচ্ছে ঐ বোবা প্রাণীগুলোর জন্য।
অপূর্ব রায়
ধন্যবাদ অপূর্ব রায়, আপনার অপূর্ব বর্ণনার জন্য।
রেনেসাঁ
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
ধন্যবাদ শাহেনশাহ সিমন।
রেনেসাঁ
শুধু চিড়িয়াখানা না, যে কোনো সরকারি এরিয়ায় গেলে মোটামুটি একই ধরনের ব্যবহার পাওয়া যায় (ব্যতিক্রমকে গোণায় ধরছি না)। বেসরকারি সেক্টরের মানুষদের ব্যবহার যে খুব বেশি ভালো তা নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে 'মন্দের ভালো', কোথাও কোথাও অবশ্য বেশ ভালো। কাস্টমার বা সেবাগ্রহীতার সাথে কীরকম ব্যবহার করা উচিত, সে সম্পর্কে কোনো ধারণাই আমাদের এখনও গড়ে উঠে নি।
শেষ পর্যন্ত উল্লুক দেখতে পেয়েছেন, এজন্য চরম হিংসা।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ গৌতম। আসলে আমার দেশে পুলিশ আর পাবলিকের চরিত্রে কোন পার্থক্য নেই। মুড়ি-মিশ্রি একদর।
শেষ পর্যন্ত উল্লুক দেখতে পেয়েছেন, এজন্য চরম হিংসা।...... হিংসা যদি হয়েই থাকে তাহলে আমাকে দেখে যান উল্লুক না হোক গাধা দেখতে পাবেন।
রেনেসাঁ
উল্লুকগুলো যদি তাও শুধু চিড়িয়াখানাতেই থাকতো!
---------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
দুষ্ট তো তাই !
এই অংশটা পড়ে মজা পেলাম ভাই।
... আর পশু টেন্ডারবাজীর এই পেছনের কাহিনীটা আগে ভাবি নাই। হুঁম...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
ধন্যবাদ সুহান রিজওয়ান । দিন যত যাবে ততই নতুন নতুন খবর জানতে পারবেন।
নতুন মন্তব্য করুন