-রেনেসাঁ
আমার পাঁচ বছরের ছেলে গত কয়েকদিন যাবত বায়না ধরেছে কমপ্ল্যান খাবে। টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখে ওর বদ্ধমুল ধারণা হয়েছে কমপ্ল্যান খেলেই রাতারাতি বড় হয়ে যাবে। ওর ব্যক্তিগত চিকিৎসকের পরামর্শেই আমরা কখনই কমপ্ল্যান বা হরলিক্সের মত খাবারগুলো দিইনা। তাই প্রথমে দুই একদিন আবদারটা কানে না নিলেও একসময় একমাত্র পুত্রের আবদারের কাছে নতি স্বীকার করলাম। কমপ্ল্যান এর ডিব্বা হাতে পেয়েই খুললো ঢাকনা, রাতেই খেল কয়েকবার এবং সঙ্গে সঙ্গে নিজের উচ্চতা বেড়েছে কিনা তা যাচাই করতে লাগলো। রাতে আর সে ঘুমাবে না। ঘুরে ফিরে উচ্চতা মাপছে। তার মাকে বারবার বলছে-আমি কমপ্ল্যান খেয়েছি, এখনই বাবার সমান হয়ে যাব তারপর ঘুমাবো।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই আবার উচ্চতা মাপা শুরু করলো। উচ্চতা কত মিটার বাড়লো জানিনা তবে পেটটা একটু নরম হল। শুরু করতে হল কাঁচা কলা থেরাপি। কমপ্ল্যানের এই উদ্ভট বিজ্ঞাপনের একটা গল্প মনে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে প্রচন্ড ভিড়। বাসের হাতল ধরে ঝুলছে কয়েকজন । হঠাৎ একটা ছেলে বলল-ভাইয়া আমি ঝুলছি, প্লিজ একটু ভিতরে চাপুন, আমি ঝুলছি, প্লিজ একটু চাপুন..। বাসের ভিতর থেকে একজন রসিকতা করে বলে উঠলো-শুধু ঝুলে থাকলেই চলবে, মামনি কে বল কমপ্ল্যান খাওয়াতে!
একটি বিজ্ঞাপনের ছবি ও ভাষা শিশু মনের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। একসময় আমার ছেলের মাথা আওলাইছিলো ইভা রহমান। এই ভুত নামাতে সময় লেগেছিল দুই বছর । এই সময় সে যতক্ষন জেগে থাকতো ততক্ষনই ইভা রহমানের গান দেখতো। বাসায় এটিএন বাংলা ছাড়া অন্যকোন টিভি চ্যানেল দেখতে পারতাম না। বাজারে ইভা রহমানের সিডি আদৌ বিক্রি হয় কি না জানিনা, তবে ছেলের কারণে তার তিনটা কিনতে বাধ্য হয়েছিলাম।
এদেশে বিজ্ঞাপন প্রচারের সুনিদিষ্ট কোন নীতিমালা নেই। বিশেষকরে বিজ্ঞাপনে নারী ও শিশুদের ব্যবহার, জেন্ডার সংবেদনশীল ও সাম্প্রদায়িক শব্দের ব্যবহার এবং সর্বোপরি এর সামাজিক প্রভাব নিয়ে কোন নীতিমালা নেই। ফলে শিশু, কিশোর ও যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়ে এর বিরুপ প্রভাব। নারী অবমূল্যায়িত হয় সমাজের চোখে। শিশুর মেধা বিকাশের ক্ষেত্রে গনমাধ্যম একটা বড় ভুমিকা পালন করে। একবার দুইবার কোন জিনিস তেমন কোন প্রভাব না ফেললেও ক্রমাগত একটি জিনিস দেখার ফলে ঐ জিনিস সম্পর্কে তার মনের মধ্যে একটি স্থায়ী বিশ্বাসের জন্ম হয় যা পরবর্তীতে তার ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। শিশু বেড়ে উঠবে মুক্ত মনের অধিকারী হয়ে। আরোপিত কোন কোন ভ্রান্ত বিষয় যদি শিশু কিশোরদের একবার বিশ্বাসে পরিণত হয় সেই ভুল ভাঙ্গাতে অনেক সময় লেগে যায় আবার কখনও কখনও আদৌ সম্ভব হয়না। গনমাধ্যমগুলোও এব্যাপারে উদাসিন, অন্নদাতা বলে কথা। ফলে কোম্পানীগুলো সস্তায় বাজার ধরার জন্য বিভিন্ন রকম কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে । আর বহুজাতিক কোম্পানী হলে তো কথাই নেই। তাদের অবস্থা দেখলে মনে হয় এদেশে ব্যবসা করতে এসে তারা আমাদের ধন্য করেছেন। মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলো আরও এককাঠি সরস। এখন তাদের বিজ্ঞাপনের একটাই ভাষা, কিভাবে মানুষকে অকারণে বেশী কথা বলানো যায়।
গ্রামীণ ফোন মুখে সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা বললেও বাস্তবে এর তেমন প্রমান মেলেনা। অনেক আপত্তিকর বিজ্ঞাপনের মাঝে একটি বিজ্ঞাপন যতবার দেখি ততবারই হতবাক হয়ে যাই। বিজ্ঞাপনের ভাষা বন্ধু, আড্ডা গান- এখানেই হারিয়ে যাও। ডিজুসের এই বিজ্ঞাপনের টার্গেট গ্রুপ কিশোর এবং যুব সম্প্রদায়। এদেরকে গ্রামীণ ফোন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম লোভনীয় অফার দিয়ে ফোন আড্ডায় ব্যস্ত রাখতে চায়। চিন্তা করতে পারেন, একজন মানূষ রাত বারটা পর্যন্ত জেগে থাকে শুধু কমরেটে ফোনে কথা বলার জন্য। এই আলাপচারিতা বেশীরভাগক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় এবং অনুৎপাদনশীল। তার মাথার একটি অংশ ব্যস্ত থাকে রাত বারোটা বাজার চিন্তায়। আর রাত বারোটা বাজার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই তার বারোটা বাজাচ্ছে।
বন্ধু, আড্ডা গান- এখানেই হারিয়ে যাও, এই শ্লোগান দিয়ে গ্রামীণ ফোন জাতির সবচেয়ে সম্ভাবনাময় অংশের মাঝে বপন করছে অনুর্বর চিন্তার বীজ। জাতির ভবিষ্যত নষ্ট করবার জন্য এর চেয়ে আর কি মহত উদ্যোগ হতে পারে!
রেনেসাঁ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯
মন্তব্য
সাম্প্রতিক এ্যাডটা দেখেছেন? কী সুন্দর মাস্তানীর ট্রেনিং দিচ্ছে? খেলার মাঠ দখলের মাস্তানী।
কে যে এদের আইডিয়া দেয় আর কেনই বা কোম্পানী এই ধরনের তৈরী করে আমার কাছে মোটেও বোধগম্য নয়।
আড্ডা গানে হারিয়ে যাওয়ার আহবানটা আমারো একেবারেই পছন্দ না । কিন্তু কিশোর বয়সে কি রাত বারোটা পর্যন্ত আপনি জেগে থাকতেন না ?
আমি কিন্তু অনেক দিনই জেগে থাকতাম । লুকিয়ে লুকিয়ে কিশোরপত্রিকা, তিনগোয়েন্দা, সত্যজিৎ রায় এসব পড়তাম । এর আগে পড়তে গেলে বাবা মা লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে মনে করে বকা দিতেন । আর আরো বড় হয়ে রাত জাগাটা রীতিমত ধর্মে পরিনত করে ফেললাম । কলেজ পাস করার পর খুব কম দিনই রাত দুইটার আগে ঘুমান হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ দিকে তো চারটার আগে ঘুমাতামই না । আমার কাছা কাছি আরো সব বন্ধুদেরও দেখেছি মোটামুটি একই অবস্থা । মনে হয় এইরকম বয়সে এরকম নিয়ম ভাঙ্গাই নিয়ম । কেউ নিয়ম ভাঙ্গবে গল্পের বই পড়ে, কেউ খেলা দেখে, কেউ মোবাইল ফোনে ।
আমার মনে হয় সচেতন "মুরব্বী" দের উচিৎ কিশোর এবং তরুনদের সামনে এমন কিছু দেয়া, নিয়ম ভাঙ্গার বয়সে যেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করলে ভবিষ্যতে মঙ্গল হতে পারে । এই কাজটা না করতে পারলে, বাজে প্রলোভনে সব ডুবে গেল বলে খুব একটা লাভ হবেনা । প্রলোভন থাকবেই ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আমি বন্ধু, আড্ডা, গান কোনটারই বিপক্ষে নয় তবে সবকিছুর একটা সীমা পরিসীমা থাকা দরকার। আমি বন্ধু, আড্ডা, গান এর মাঝে হারিয়ে যেতে হবে কেন, জাতির আর কোন কাজ নেই?
এখনকার গুলোরে জিগানতো সত্যজিৎ রায় এর নাম শুনেছে নাকি? সত্যজিৎ রায় কে জিগাইলে কইবো, বোধহয় অন্য ডিপার্টমেন্টের টিচার, আমাদের কোন ক্লাস নেয়না।
আমাদের একটা দুরন্ত কৈশোর ছিল, যেটা নির্মম বাস্তবতার কারণে এরা বঞ্চিত হচ্ছে। আবার তাদের যদি কিশোর বয়সে ঘিলুটার পিন্ডি করা হয় তাহলে আগামীতে হতাশা ছাড়া জাতি আর কিছুই পাবেনা।
এটার দায়ভার কিন্তু বন্ধুদের না, পরিবার ও বিদ্যালয়ের।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
চমৎকার বলেছেন।
--------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
এক লেখা দুইবার আসলো নাকি?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ধন্যবাদ নজমুল আলবাব |
খুব সত্য কথা। এটাই বাস্তব। কিন্তু যার যে পণ্য, তাই তো সে অন্যকে গছাতে চাইবে ! ব্যবসার কৌশলটাই তো তাই ! সমস্যা হচ্ছে, তাদের এই ব্যবসা-কৌশলের কাছে আমরা না বুঝেই গলা বাড়িয়ে মার খেয়ে যাচ্ছি।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সহমত। বিজ্ঞাপনের কাজ বিজ্ঞাপন করেছে, কামড় দিয়েছে পায়ে ...
: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: ::: :
'Cinema is over' - Master Godard
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ। সন্দেহ নেই কিছু মানসম্পন্ন বিজ্ঞাপন তৈরী হচ্ছে কিন্তু সার্বিক বিচারে বেশীরভাগ বিজ্ঞাপনেই সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি উপেক্ষিত। এগুলোর ব্যপারে আমাদের সকলেরই সোচ্চার হওয়া দরকার।
কোনভাবেই কোন কোম্পানী তার পণ্যকে "বেষ্ট" বলতে পারেনা, কিন্তু এদেশে অহরহ বলা হয়।
মোবাইল ফোন যোগাযোগের মাধ্যম কোনভাবেই এটা "কত কথা বলে রে' হতে পরেনা।
কোন পরিতাজ্য আর কোনটা দরকারী এ বিষয়ে আমাদের বোধের ঘাড়তি আছে।
কেন 'বেস্ট' বলতে পারবে না? সত্যি যদি বাকিদের চেয়ে 'বেটার' হয় তো বলতে বাধা কোথায়?
আইনি বাধার কথা হলে বলি, আমেরিকায় এমনকি অন্য ব্রান্ডের নামোল্লেখ করেও বলা যায়, কমপ্লানে হরলিক্সের চেয়ে পুষ্টিগুণ কতো বেশি ইত্যাদি।
মোবাইল নেটওয়ার্ক মানুষকে বক্তিয়ার খিলজি বানাতে চাইবে এতে এতো আশ্চর্য হচ্ছেন কেন। এটাই স্বাভাবিক নয় কি?
পৃথিবীর অনেক দেশেই আইন আছে কোন পণ্যকে বেষ্ট বলা যাবেনা। আপনি কোনভাবেই নিশ্চিত হতে পারেননা যে আপনার পণ্যটিই সেরা। কোন কোন ক্ষেত্রে এই মুহুর্তে সেরা হওয়া সম্ভব কিন্তু একটু পরেই তার চেয়ে ভাল পন্য বাজারে আসতে পারে।
যে কোন পণ্যের তুলনামুলক বিশ্লেষন দেয়া যেতে পারে কিন্তু এককথায় আমার পণ্যই সেরা বলা মানে গ্রাহককে প্রতারিত করা।
মোবাইল ফোনের অপব্যবহার বোধহয় শুধু বাংলাদেশেই হয় আর কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই। জানলে তথ্যটা জানাবেন।
আমি যখন বাজারে কোনো পণ্য কিনতে যাই, তখন বাজার ঘুরে সেরা পণ্যটাই কিনতে চেষ্টা করি। তাই কোনো উৎপাদক প্রতিষ্ঠান যদি তাদের পণ্য সেরা বলে দাবি না করে, তাহলে আমি গাঁটের পয়সা খরচ করে সেই পণ্য কিনবো কেন?
.....................................................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
ঠিকই বলছেন 'এদেশে বিজ্ঞাপন প্রচারের সুনিদিষ্ট কোন নীতিমালা নেই।'
ভালো লাগলো।
রেনেসাঁ, আপনার লেখা সবসময়ই নতুন মাত্রা পাই।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ধন্যবাদ ফিরোজ জামান চৌধুরী। আপনাদের উৎসাহে অনুপ্রানিত হই। । ভালো থাকবেন।
ডিজুসের এডটা আমার ততো আপত্তিকর মনে হচ্ছে না। কারণ এখানে প্রলোভন আছে, কিন্তু প্রতারণা নেই। হরলিকস কিংবা কম্পল্যান যেইটাইপ বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তা মিথ্যে প্রলোভন, প্রতারণা! সাম্প্রতিক কোনো এক সময়ে শুনেছিলাম হরলিক্সের (সম্ভবত) একটা বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য লন্ডনে জরিমানা হয়েছিল, যেই বিজ্ঞাপন ভারত-বাংলাদেশে বিনা জবাব্দিহিতায় চালানো হয়। শক্তিশালী ভোক্তা ফোরামের মাধ্যমে এসব বুজরুকি ঠেকানো সম্ভব।
যে প্রসংগ আপনার লেখায় খুব একটা উঠে আসেনি, কিন্তু উঠে আসতে পারতো সেটা হলো অশ্লীলতা। ইদানীংকার কিছু বিজ্ঞাপনে অশ্লীলতা আর সুড়সুড়িমূলক চিত্র দেখা যাচ্ছে।
ধন্যবাদ সূর্যবন্দী মেঘ। আমি এই পোষ্টে অশ্লীলতার দিক নিয়ে এই পোষ্টে লিখতে চাইনি। যেটা লিখেছি সাধারণ অর্থে বিজ্ঞাপনের সামাজিক প্রভাব । অশ্লীলতা আর সুড়সুড়িমূলক বিজ্ঞাপন নিয়ে কয়েকদিন পরে আর একটা পোষ্ট দেব।
পইড়া গেলাম... আপনার বক্তব্যের সাথে অনেকাংশে সহমত- কিন্তু এনকিদু ভাইয়ের কথায়ও যুক্তি আছে। কিশোরদের প্রলোভন থেকে বাঁচাতে ওদের দেয়ার মত উপাদানের অভাব আছে।
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
এনকিদু চমৎকার কথা বলেছে- কিশোরদের প্রলোভন থেকে বাঁচাতে ওদের দেয়ার মত উপাদানের অভাব আছে।
আমার কথা হল এমনিতেই ভালো কিছু দিতে পারছি না সেখানে খারাপ কিছুর প্রলোভন দেখানো উচিৎ নয়।
আপনি, আমি, আমরা চাইলেই কি গ্রামীন ফোন বা অন্য যারা নিজ নিজ পণ্য নিয়ে ব্যবসায় নেমেছে তারা অগ্রহনযোগ্য বিজ্ঞাপণ গুলো তুলে নিয়ে সে জায়গায় ভাল ভাল বিজ্ঞাপন বসিয়ে দিবে ? দিবে না । বরং ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন চটকদার ফালতু বিজ্ঞাপণ আসতেই থাকবে ।
কিশোর তরুনদের সামনে ভাল কিছু দেয়া দরকার, এই বিষয়টা যারা অনুধাবন করছেন ভাল জিনিস গুলো সামনে দেয়ার দায়িত্বও কিন্তু তাদেরই । আমরা প্রত্যেকে যদি নিজের বাড়ির ছোট ভাই-বোনদের কে একটা করে ভাল অভ্যাস ধরিয়ে দিতে পারি, তাহলেও কিন্তু কম হয়না ।
এই কাজে সফল হলে, মানে নিজের ভাই-বোনদের পর, চাচাত-খালাত-মামাত-ফুফাত দের পিছে লাগা যায় । তার পর আছে পাড়ার ছোট ভাই-বোনের দল, বন্ধুদের ভাই-বোন, স্কুল কলেজের ছোট ভাই-বোন । অবদান রাখার মত জায়গার অভাব নেই ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
সহমত
ধন্যবাদ মৃত্তিকা।
রেনেসাঁ
আমি আপনের সঙ্গে দ্বিমত। বিজ্ঞাপনের ধর্মই প্রলোভন। এইটা ছাড়া বিজ্ঞাপন হবে না। সূফী বিজ্ঞাপন নিশ্চিতভাবেই অখাদ্য হইতে বাধ্য।
কেবল বিজ্ঞাপন না, পৃথিবীতেই অনেক প্রলোভন আছে। সেগুলোর মধ্য দিয়েই সন্তানদের বেড়ে উঠতে হবে। এইটাই চ্যালেঞ্জ। আমরা কিন্তু ১ টিকিটে ২ ছবির প্রলোভন দেখতে দেখতেই বড় হইছি। ছোটো হই নাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
১ টিকিটে ২ ছবি দেখে যতজন বড় হইছি তার চেয়ে এর প্রলোভনে ঝরে গেছে অনেক বেশী। প্রাইমারীতে কত শিশু পড়ছে, এসএসসি, এইচএসসি পাশ করে উচ্চশিক্ষা শেষ করছে কতজন তার একটা তুলনামুলক বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে পাবে।
প্রাইমারি>এসএসসি>এইচএসসি... এই পরিসংখ্যানে ১ টিকিটে ২ ছবির ঘটনা কতটুকু সম্ভব? আপনি কীভাবে বললেন এতে এই সিনেমাগুলোর প্রভাব আছে? দারিদ্র একটা ফ্যাক্টর এখানে। আমি অন্তত তাই জানি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পড়ালেখার জন্য দারিদ্র একটা ফ্যাক্টর কিন্তু খুব বড় ফ্যাক্টর নয় । এদেশের অনেক গুনী মানুষ দারিদ্রের মধ্যে বড় হয়েছেন। এবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ছেলে ভর্তি হয়েছে যে এসেছিল সার্টিফিকেট আর শুধু পরনের কাপড় নিয়ে। বাবা মায়ের কোন স্মৃতিই সে মনে করতে পারেনা। পুরো জীরনটাই কেটেছে এর দুয়ারে ওর দুয়ারে। তারপরেও সে খুব ভাল রেজাল্ট করেছে।
দারিদ্রের কারণে শিক্ষা যদি খুব ব্যাহত হত তাহলে মঙ্গাপীড়িত অঞ্চলে শিক্ষার হার কম হবার কথা কিন্তু বাস্তবে তা নয়। সুনামগঞ্জ জেলায় ছেলেমেয়েরা এখন সবচেয়ে বেশী ঝরে পড়ছে।
নজরুল ইসলাম বিজ্ঞাপন নিয়ে আপনার ধারণা ভুল। বিজ্ঞাপনের ধর্ম কখনই প্রলোভন নয়।
আমার ধারণা ভুল এটা মানতে আমার কোনোই আপত্তি নাই। কিন্তু আমার ধারণা ভুল এটা বলে দিলেই আমি মানবো না। কেন ভুল, বিজ্ঞাপনের ধর্ম তাইলে কী এইটা আমারে বলতে হবে...
বলেন... শুনি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সঠিক বাংলা জানানাই ইংরেজীতে লিখলাম। ক্ষমা করবেন।
Functions - To inform
- To persuade
- To remind
- To change
Objectives
• Awareness
• Interest
• Evaluation
• Trial
• Adoption
• Confirmation
অফটপিক: আপনার মেয়ে এখন কেমন আছে?
আমি মূর্খ হইলেও এট্টুক ইংরেজী পড়তে পারি।
পড়লাম কিন্তু বুঝলাম না। এই কথাগুলা আপনে কইত্থে নিছেন? এটা কেন বাইবেল হবে? এটা কি আপনের কথা না কারো কাছ থেকে ধার নিছেন?
আমি নিজে আমার এই ছোট্ট জীবনে অন্তত গোটা ত্রিশেক বিজ্ঞাপন নিজে হাতে বানাইছি। আমি কিন্তু মাঠে খাড়ায়া কইতেছি। মাইন্ড ইট।
বিজ্ঞাপন বলতে আমি যেটা বুঝি সেটা হইলো "আমিই সেরা, আমারে কিনো" বিজ্ঞাপন মানেই নিজের কথা বলা। মিছা হইলেও বলা যে আমিই সেরা।
আপনের কথা পইড়া বুঝি নাই। আমি এখনো মনে করতেছি যে বিজ্ঞাপন হইলো প্রলোভন।
বুঝায়া বলেন
আরেকটা কথা বলি... পুঁথিগতত বিদ্যা মাঠে কাজ করে কম। আমি বিজ্ঞাপন বানানেওলা লোক, সাইফুল মিয়া বিজ্ঞাপন এজেন্সির লোক... আর এই বিষয়ে সচলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ লোকটা আনিস ভাই।
আমরা কেউ ঘাস খায়া বড় হই নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ইসলাম মাইন্ড খাইয়েন না। সচল এ ইংরেজী লেখা নিরুৎসাহিত করে সেই দৃষ্টিকোন থেকে ইংরেজী লেখার জন্য ক্ষমা চেয়েছি। আশাকরি এখন সেটা পরিষ্কার।
পৃথিবীর অনেক দেশেই আইন আছে, নিজের পণ্যকে সেরা বলা যাবেনা।
এমনকি হতে পরেনা আমিও মাঠে কাজ করেছি।
না ভাই নিজে তত্ব দেবার মত বিদ্যান এখনও হইনাই। সবই ধার করা কথা।
রেনেসাঁ, আপনার আলোচনার বিষয়টা চমৎকার। বেশ সুন্দর একটা বিতর্ক হতে পারে এটা নিয়ে।
বিজ্ঞাপন হচ্ছে এমন এক জিনিস, যার ধর্ম হচ্ছে প্রলোভন। উদ্দেশ্য হচ্ছে বিক্রি-ব্যবহার বাড়ানো।
এখানে আর কিছু ভাবার সুযোগ নেই। ঔচিত্যবোধ ও আশা করিনা।
ডিজুসের মাস্তানি পাড়ার ছেলেদের মাস্তানিকে উৎসাহিত যদি করে, তাহলে আমাদেরকে ঘনাদা চরম মিথ্যুক বানাতো, আমরা গানফাইটার হতাম অথবা মিশা সওদাগর/ডিপজলের মত রেপিস্ট হতাম।
বিজ্ঞাপনের ৩০ সে. তারপরেও মাথানষ্ট করে দিতে পারে। কিন্তু সেগুলো অনুর্ধ ১০ বছর বয়সী এবং তাদের জন্য তৈরীকৃত প্রোডাক্টের জন্যেই কী বেশি প্রযোজ্য নয়?
সাইফুলাক্বর্খান্ভাই আর নজরুল ভাই এ ব্যাপারে আলোকপাত করলে ভালো হয়।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
বিজ্ঞাপন কালারফুল ও গতিময় তাই বাচ্চারা বিজ্ঞাপন দেখতে পছন্দ করে। একটা বিজ্ঞাপন যেহেতু ঘুরেফিরে অনেকবার প্রচার করা হয় তাই শিশুদের ওপর এর প্রভাব অনেক বেশী।
রেনেসাঁ,
তেমন সহমত হ'তে পারলাম না আপনার কোনো বক্তব্যেই।
বড় সমস্যা হচ্ছে- বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানে কাজ করি ব'লে, আমি যা-ই বলি, আমার নলেজে যতো যৌক্তিক কথাই বলি, আপনার বা আরো কারো কারো মনে হবেই, যে- নিজের সেক্টরের সাফাই গেয়ে ভুল বা দুরভিসন্ধিমূলক জিনিসপত্রকে প্রোমোট করছি!
তবু, কিছু কথা তো না-বললেই না। কারণ, একটা ইন্টেলেকচুয়াল ও'নারশিপ নিয়ে যদি সর্ট অব প্যাশনেট হয়ে একটা ক্যারিয়ার আপনি চুজ করেন, সেই ডিসিপ্লিন-টাতে বিলং করেন, তখন আপনার আশেপাশে সেই ডিসিপ্লিন-টার গায়ে যদি ধরা-প'ড়ে-যাওয়া পকেটমারের সমান গণ্য ক'রে সমানে ইট-পাটকেল মারতে থাকে কেউ, তো আপনি কতোক্ষণ আর আপনার বিশ্বাস আর বোধটাও প্রচার না-ক'রে থাকবেন, বলেন তো?
[বিজ্ঞাপনের কিছু মৌল বিষয়-আশয় নিয়ে ধারাবাহিক পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে আমার কিছুদিন আগেই হয়েছে এই আয়তনের আরো কারো কারো ভুল-ধারণা-চালিত লেখাপত্র দেখে। কিন্তু সময় গুছিয়ে উঠতে পারছি না। অবশ্য, এমনও আশা করি না, যে আমি সেটা প্রিচ করলেই আপনি বা আরো কেউ বাংলা সিনেমা'র শেষ-দৃশ্যের মতো ক'রে সব বুঝে গিয়ে বিজ্ঞাপনকে শ্রদ্ধার চোখে দেখতে শুরু করবেন! তবু, সামহাও আই ফিল আই নিড টু মেক মাই পয়েন্টস অ্যাজ ওয়েল]
আমি তো দেখতেছি, 'আমাদের' (আসোলে কে যে প্রতারণাযোগ্য জনগণ/সমাজ, আর কে যে বাই-ডিফল্ট প্রতারক মাদারফাকার, সেটা নিয়েই তো সংশয়ের শেষ নেই, তো এই সমাজ যে আসোলে কাদের?!) সমাজে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ দাঁড়ায় বিজ্ঞাপনশিল্প (আর্ট না-ই বলেন, ইন্ডাস্ট্রি হিসেবেই এটাকে 'শিল্প' ব'লে নিশ্চয়ই আপনিও মানবেন) নামক শত্রুতন্ত্রটির বিরুদ্ধে! একমাত্র এই বিষয়টির বিপক্ষে কথা বলতে গেলেই বিষয়টি সম্পর্কে কোনো পড়াশোনা করতে হয় না। বুঝে-না-বুঝে, খালি প্রটাগনিস্টিক দেখতে একটা সুপারফিশিয়াল কমনসেন্স থেকেই সমানে গালিগালাজ করা হয় এই একটাই নন্দঘোষকে। ভাবটা এমন যে, এই সমাজের সব অধঃপতনের দায় আর দোষ পুরোপুরিই একা বিজ্ঞাপনশিল্পের। অথচ, বিজ্ঞাপন কিন্তু এমনি এমনি কোনো ধরনের গবেষণা পড়াশোনা ছাড়া হয় না। এটার পিছনেও যুগে যুগে অনেক মাথা কাজ ক'রে আসছে, প'ড়ে আসছে, লিখে আসছে, শিখে আসছে। পৃথিবীতে আপনাদের পছন্দের অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বইপত্রও কিন্তু কিছু কম নেই। এ কথাগুলো এভাবে বলছি এ-কারণেই, যে- যে-কথাগুলোকে অ্যাড্রেস করার জন্য লিখতে বসলাম এখন সেগুলো শুনলে মনে হয়, বিজ্ঞাপন করা একটা শুভবোধের কাজ, আর কিচ্ছু এর পিছনে লাগে না, যে-কেউ বিজ্ঞাপন বানাতে পারবেন, শর্ত শুধু একটাই- সমাজের 'মূল্যবোধ' আর 'আদর্শ'গুলোকে তার বুঝতে হবে। (তারপরে পণ্য বাজারজাতকারী সবাই দেশপ্রেমী মানবহিতৈষী কথা ব'লে, বা পারলে কিচ্ছুটি না ব'লে, শুধু একটা দোকান খুলে ব'সে থাকো, পাবলিক এমনি এমনিই শুভ ঈশ্বরের আদেশে তোমার পণ্য কিনে নিয়ে যাবে। যারটা নিলো, সে যেন স্বর্গ পেলো, আর যার-টা নিলো না, সে সেটাকে ঈশ্বরের ইশারা ভেবে মুড়ি খাবে ব'সে ব'সে!)
মার্কেট বা অ্যাডভার্টাইজিং যে আমাদের ফিজিক্যাল ইকোলজি'র একটা অপরিহার্য রিয়্যালিটি (এটা তেমন আর্টিফিশিয়াল না, এমনকি ইভল্ভড-ও না, বরং মানব সমাজসত্ত্বার একেবারেই মৌল মিথস্ক্রিয়ার আদি এবং মৌলতম সংগঠন), সেটা মানতে এত কষ্ট কোথায় হয়, তা-ই বুঝি না! আর বুঝি না- এত কিছু এই সমাজে থাকতে এক বিজ্ঞাপনের ওপরই সমাজের দর্পণ (এমনকি শিক্ষকও) হবার এই আশ্চর্য দায়িত্বটা কে চাপালো, কবে কীভাবে চাপালো! আমার স্টাডি বলে- আমরাই সেই বিরল জাতিগুলোর একটা, যারা এভাবে দেখি। বাইরের যে-দেশের কথাই বলেন টলেন, সেগুলোতে এমন সমাজ-বিবেকরা ব'সে ব'সে বিজ্ঞাপনের পাপ-পূণ্য যাচাই করতে বসে না!
নীতিমালা আছে কি নেই, সেটা আমরা এখানে ব'সে দেখতে পাচ্ছি। বেসরকারী মিডিয়ার ওপর কোনো দেশেই ক্যাটেগরিক্যাল কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কেউ কোনোকিছুতে সংক্ষুব্ধ হয়ে আইনি নালিশ করলে তবে তার ব্যবস্থা তো নেয়াই যাবে, সে কথা আলাদা। তবে, বিটিভি'র নিয়ন্ত্রণের চোটে আমাদের সব রক্ত মাথায় উঠে যায়! প্রত্যেকটা শব্দ নিয়েও অনেক সময়ই অনেক ফালতু পর্যায় পর্যন্ত নাক গলায় আর আমাদের ঘুম হারাম করে। সেই হিসাবে ভদ্র করতে করতে ওই জেন্ডার আর আরো আরো সংবেদনশীলতার বাহার দেখতে দেখতে শেষে দেখা যায়- স্যানিটারি ন্যাপকিনের অ্যাড, অথচ 'পিরিয়ড' শব্দটাও বলা যাচ্ছে না! অফেন্ডেড যেন ফিল না করে আমার টার্গেট অডিয়েন্স, সে-কারণে সেন্সর ক'রে এমন বিজ্ঞাপন বানালাম আমি, যে আমার সেই অডিয়্যান্সের একটা ম্যাস পোরশন আদৌ বুঝলোই না- এটা আদৌ কোন্ ক্যাটেগরির পণ্যের অ্যাড! তো, তার চেয়ে এই বেয়াদব বেধাতী 'শিল্প'টাকে ফতোয়া দিয়ে নিষিদ্ধই ক'রে দিন না হয়!
ইভা রহমানরা-ও থাকবে মাহফুজুর রহমানদের প্রয়োজনে, কিন্তু এইসবের ছায়াকে আপনি যদি অপচ্ছায়া মনে করেন বা বুঝতে পারেন, তবে সেই অপ থেকে ছোট্ট শিশুকে দূরে রাখা কিন্তু অভিভাবকের দায়িত্ব। এটা বরঞ্চ টিভি-ডিভিডি জাতীয় মিডিয়ার এক্সপোজারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পর্যায়ে প্যারেন্টাল গাইডেন্স-এর ইস্যু।
বিজ্ঞাপনের জন্য পণ্যকে (ইন ফ্যাক্ট, 'ব্র্যান্ড'কে) অন্যগুলোর থেকে একটা কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ ক্লেইম এবং ডেলিভার করতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। একটা মার্কেট খুঁজে বের ক'রে সেখানকার জন্য বিক্রয়-উপযোগী নিড প্রোমোট করতে হবে আর ফিটিং অ্যাডভান্টেজ ডেলিভার করতে হবে। সব ব্র্যান্ড যদি আপনার সমাজের সেম সেট অব ভ্যাল্যুজ মেনে সাচ্চা ঈমানদার পুলিশ অফিসার হয়ে ব'সে থাকে, তাহ'লে কোনো ব্র্যান্ড হবে না। যে এটা স্টাডি করেনি তার কাছে এটা শুনতে বাতুলতা লাগলেও কিছু করার নেই, যে- পণ্যের এবং ব্র্যান্ডের সেই বিক্রয়যোগ্য আইডিয়া অনুসন্ধান এবং যাচাই, এমনকি কোন ধরনের ব্র্যান্ডের দাম কেমন হওয়া উচিত- এগুলোরও তো ব্যাকরণ আছে, না? মার্কেটিং-কে তো পড়ার সাবজেক্ট হিসেবে সবাই চেনেন জানেন, অ্যাডভার্টাইজিং-ও কিন্তু তার মধ্যকার (এবং বাইরেরও) ওইরকম কিছু প্রিন্সিপল-এর মধ্যই কাজ করবে। এটা কোনো পাগলমেলার স্বপ্নদোষের ব্যাপার না। এবং, মোর ইম্পর্ট্যান্টলি- অ্যাডভার্টাইজিং কোনো সমাজরক্ষক সংগঠন না, সে-দায়িত্ব নিয়ে জন্ম হয়নি তার, আর ব্যবসাবাণিজ্যে মানুষ টাকাপয়সা খরচ করবে টাকা উঠিয়ে লাভ করবার জন্যই, কোনো দেশোদ্ধারমূলক চ্যারিটি করার জন্য না।
একইসাথে হাস্যকর এবং হতাশাজনক ব্যাপার হ'লো- এইসব সামাজিক বিবেক-বক্তব্যগুলোতে এমন সব দায়দায়িত্ব চাপানোর চেষ্টা করা হয় বিজ্ঞাপনশিল্পের উপরে, যেগুলো বিজ্ঞাপন নামক মৌল ধারণাটিকেই নাকচ করে দেয়, স্টুপিডলি!
কোনো নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গে আমি এই বক্তব্যে কিছু পাল্টাপাল্টি করতে চাচ্ছি না। এটাও বলছি না- গ্রামার, কোয়ালিটি আর এফিকেসি'র হিসেবে সব এজেন্সি-ই ভালো কাজ করছে এবং এই দেশে মানোত্তীর্ণ বিজ্ঞাপনের বন্যা বয়ে যাচ্ছে! হয়তো (/ আশা করি) বুঝতে পারছেন, আমার পয়েন্ট-গুলো মূল দৃষ্টিভঙ্গির জায়গাটায়।
আমার মনে হয় (সবিনয়ে), ওই কথাগুলো তুলবার আগে বিজ্ঞাপন ব্যাপারটাকে একটু বুঝে নেয়া উচিত, অন্তত এমন একটা নৈর্ব্যক্তিক জায়গা থেকে আসা উচিত পয়েন্ট-গুলো, যেখানে কি না অন্তত যে-জিনিসটা নিয়ে বলছি সে-জিনিসটার বেসিক এবং আইডিয়াল স্টেট-টা আমি কী চাইতে পারতাম, আর আদৌ ওই ডিসিপ্লিন-টার বা ওই সিস্টেমটার বা ওই বাতাসা(যা-কিছু অর্থে)-টার প্রকৃত জন্মোদ্দেশ্য বা দায়িত্ব আসোলে কী ছিল!
ধন্যবাদ।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
তাইলে বলছেন, বিজ্ঞাপন সমাজ বদলের হাতিয়ার না!
....................................................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
হৈমিয়া!
মাইর চিনো?!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
অনেক ক্ষেত্রেই দারুণ কথা বলেছেন, বিশেষ করে কিছু কিছু বিষয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড নলেজের গুরুত্বটা উঠে এসেছে। শিক্ষা নিয়ে কিছু লেখার সময় এই বিষয়টা আমিও ফিল করি যে, বুঝে হোক বা না বুঝে হোক, এক ধরনের কমনসেন্স থেকে অনেকেই শিক্ষা বিষয়ে অনেক কথা বলে ফেলেন- এমনকি তিনি হয়তো এই ফিল্ড সম্পর্কে তেমন কিছু আদপেই জানেন না। অথচ প্রচলিত কমনসেন্স অনেক সময় ভুল বার্তা দিতে পারে।
তারপরও এসব লেখার, বিশেষ করে সুপারফিশিয়াল কমনসেন্স থেকে যারা মন্তব্য করেন, তাদের লেখাগুলোর একটা অন্য গুরুত্ব আছে। সেটা হলো অ্যাকাডেমিক বা ব্যবহারিক- যে কোনো ভাবনা থেকে হোক না কেন- সেটাকে জনমানসে যাচাই করে নেওয়া যায়। যেহেতু (সংখ্যায় কম হলেও) এই ধরনের মানুষদের কাছে পণ্য বা ধারণা নিয়ে যেতেই হয় এবং পণ্যের একটা লক্ষ থাকে এদেরকে সন্তুষ্ট করার, সুতরাং তাদের কথা থেকে একই বিষয়ে হয়তো নতুনভাবে ভাবা যেতে পারে, তা সেটা বিজ্ঞাপন নিয়েই হোক, কিংবা শিক্ষা নিয়ে।
তবে বিজ্ঞাপনের মৌল বিষয়গুলো নিয়ে আপনার লেখা পড়ার আগ্রহ জেগেছে, কবে সেই আগ্রহ মেটাবেন বলুন। না হলে আপনাকে চা-সিগ্রেট জরিমানা করা ছাড়া আর তো কোনো উপায় দেখছি না
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
কী দ্রুত কী বস্তুনিষ্ঠ ফিডব্যাক দিলেন আপনি! এই না হ'লে শিক্ষাগবেষক?!
আমি আপনার উপনয়নে সহমত।
আর, সময় যেমন দিনদিন আরো ক'মে আসছে, কবে যে সেভাবে গুছিয়ে ওই ভ্যাস্ট লেখাটা ক'রে উঠতে পারবো, দেখি! (তার মধ্যে আবার চিন্তা করতেছি- নজু ভাইয়ের আদর্শে শিক্ষিত হইয়া নিজের একটা বড় নির্ধারিত কাজের লেইগ্যা মাস-খানেক সচল থেইক্যা ছুটি নিয়া থাকমু! কী জানি, পারমু না মনে হয়!) আর, চা-সিগ্রেট খাওয়াইয়া সিক্রেট আপোস যদি করতে পারি আপনার লগে, তাইলে তো আবার ভুইলাই যামু আরাম্ সে!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
মানে আমিও ভুল কইনাই
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
বিশেষ ক'রে, শাহেনশাহ সিমন বলেছেন-
এইটাতে আমি একটা ব্যক্তিগত উত্তম জাঝা দিলাম।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
সাইফুল আকবর খান আপনি ঢালাওভাবে দেশের সব মানুষকে বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে মূর্খ বলেছেন কোন আইডিয়া থেকে বুজলাম না। বাংলাদেশের অনেকেই দেশে এবং দেশের বাইরে এই বিষয়ে পড়ালেখা করেছে। এই অধম তাদের একজন। হতে পারে কিছু শিখতে পারিনি।
আমি বিনয়ের সাথে বলতে চাই সনাতন ধারনা নিয়ে আসর গরম না করে এই বিষয়ে পড়ালেখা করুন। নিচের কয়েকটা লাইন আপনার জন্য উপকারী হতে পারে।
Marketing-What is not?
- not selling & advertising
- not telling and selling
- not fishing and hunting
- these are like tip of iceberg
What is?
- sensing and responding
- gardening & nursing
হ্যাঁ ভাই রেনেসাঁ, আপনি প্রমাণ করলেন খুব সহজেই, যে আপনি আমার স্ট্যান্স-টা বুঝতে পারেন নাই। কিংবা আমারই হয়তো ব্যর্থতা। বুঝাতে পারিনি এত সাতকাহন পেড়েও।
মনটাই খারাপ হয়ে গ্যালো। না, অসুবিধা নাই। আপনার মতামতও আপনি তো বলবেনই।
জানি না, আপনি পার্টিকুলারলি কোন্ ধরনের কম্যুনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন আর আপনার ক্যারিয়ার-ও বা কী (আলাপ এগুলে তা-ও জানা হবে আশা করি)! আমরা পড়ার সাথে সাথে কাজেও অ্যাপ্লাই করতে গিয়ে কেস হিস্ট্রি আর ট্যাকটিকস-সহ যেরকম দেখি বুঝি চর্চা করি, সে আলোকে বলেছি আমার কথা। আমিও যে সব জানি তা তো নয়, দাবিও করিনি সেরকম। ঢালাওভাবে সবাইকে তো দূরের কথা, কাউকেই আমি মূর্খ বলিনি। মূর্খ আবাল তো আমি নিজে।
আর হ্যাঁ, খেয়াল করুন আবারও, আমি কিন্তু সামগ্রিক প্রতিদ্বন্দ্বী মনোভাবটা নিয়েই এতগুলো কথা বলেছি মূলত (কারণ এরকম অহরহই ফেস করছি তো), টেকনিক্যাল পার্টিকুলারস-এ বেশি একটা ঢুকিনি। সেটা এ পর্যায়ে অ্যালাউ-ও করেনি এই পোস্টের পারভিউ বা মন্তব্যের কলেবর।
তবে ভাই, আপনি নজরুল ভাইয়ের প্রশ্নের জবাবে যে অ্যাটভার্টাইজিংয়ের ফাংশন আর অবজেক্টিভ লিখে দিলেন, আর আমাকেও এই উপরের মন্তব্যে মার্কেটিংয়ের হোয়াট আর হোয়াট-নট বুঝালেন, এই কোনোখানেই কিন্তু কোনো হাও-টু নাই। ওই পরের লেভেল-টা কিন্তু ক্রুশ্যাল, না?
আর, সিমনের কথার জবাবে আবার শিশুর ওপর প্রভাব বেশি'র কথা বললেন, তো, এইজন্যে কি সব ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন শিশু-উপযোগী করলে পোষাবে? আপনার পড়াশোনা কি তা-ই বলে!
থাক, আমার কথার জবাব দেয়ার কোনো অবলিগেশন ফিল করবেন না। আসোলে, স্যরি, আপনি যেমন শক্ত হয়ে গ্যালেন, তাতে আমার মধ্যে অলরেডি একটা উইথড্রয়াল চ'লে এসেছে, বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
অবশ্যই নয়, বিজ্ঞাপন কথা বলবে তার পণ্য/সেবা অনুযায়ী। একটা বাস্তব সমস্যা হচ্ছে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে আমাদের শিশুরা এখন অনেক বেশী টেলিভিশন মুখী। দোষটা পুরোটাই আমাদের। কোন কোন ক্ষেত্রে সব বুঝেও করার কিছু নেই। দুইজন যখন অফিসে চলে যাই তখন শিশুটি থাকে আরেকজনের কাছে। ফাঁকা ঘরে ঐ মেয়েটার একটাই কাজ টিভি দেখা। আর বাব-মা যখন টিভি দেখছে স্বভাবতই ছোট বাচ্চাটা পাশে থাকে। ফলে এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব শিশুর ওপরে পড়ে।
আমার ক্ষোভটা এ্যাড মেকারের ওপর নয় মার্কেটারের ওপর। মেকাররা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কোম্পানীর লোকদের মতকে প্রাধান্য দিতে বাধ্য হয়। ফলে শিব গড়তে অনেক সময় বানর হয়।
এই আলাপচারিতা বেশীরভাগক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় এবং অনুৎপাদনশীল।
এইসব কথা শুনতে ভাল লাগে না রে ভাই। বড্ড সুশীল লাগে। আপনি কী আপনার ছেলে আর বউ এর সাথে সারাটা দিনই প্রয়োজনীয় আর উৎপাদনশীল কথা বলেন???
এভাবেই আমরা হয়ে উঠব আমাদের যা হবার কথা তাই। একসময় মানুষ বলত যে মোবাইল নাকি চরিত্র খারাপ করে দেয়। যারা বুয়েটে চান্স পায়, কারও কী মোবাইল নেই? একজনও কী প্রেম করে নাই? তাহলে?
সুশীলিও কথা বাদ দ্যান। ডিজুস আমারও ভাল্লাগে না। কিন্তু সারাটা জীবন মানুষের সাথে প্রয়োজনীয় আর উৎপাদনশীল কথা বলে কাটাতে চাই না। বরং এসব বললে বিরক্ত লাগে, তখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা মেরে গান গেয়ে হালকা হই।
মেনে নিলাম।
আমি দীর্ঘদিন ধরে টেলিকম সেক্টরে কাজ করছি। যে কারণে অনেক উদ্ভট ঘটনার জ্বলন্ত স্বাক্ষী।
আপনি পুত্রের আবদারের কাছে এত সহজে নতি স্বীকার করবেন না। ছোটো বাচ্চারা অনেক কিছুর জন্যেই আবদার করে, সবকিছু পাত্তা দিতে হয় না, বরং বুঝিয়ে বলতে হয়। দুইদিন ঘ্যানঘ্যান করলো আর আপনি কমপ্লান এনে দিলেন? সিডি কিনে দিলেন? আপনার ছেলের মাথা তো আপনি খাচ্ছেন।
ঠিকই কইছেন একটু টাইট দেয়া দরকার, নইলে কোনদিন ইভা রহমানরে ঘরে উঠাইবো।
বিজ্ঞাপন নিয়ে এই তর্ক-বিতর্কের সুযোগে অনেক কিছু জানলাম। উপকৃত হলাম।
আমি বিজ্ঞাপনের লোক নই। কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পণ্য 'সেরা'- এই কথা বলতে কোনো সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু বিজ্ঞাপনের কখনই মিথ্যা বা অসত্য কথা বলা যাবে না, যেটা আমাদের দেশে করা হয়।
দুটি উদাহরণ:
১. 'ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি' রং ফর্সা করে, এটা মিথ্যা প্রচারণা।
২. হরলিক্স খেলে শিশুরা লম্বায় বড় হয়, এটা মিথ্যা প্রচারণা। (তাহলে দেশের সবাই ছয় ফুট লম্বা হয়ে যেত)
সঠিক নীতিমালা না থাকায় বাংলাদেশ সহ উপমহাদেশে এ ধরনের বিজ্ঞাপন হরহামেশা প্রচার হচ্ছে।
গত বছরের শেষের দিকে (সম্ভবত অক্টাবর-নভেম্বর) ইউকে তে হরলিক্স-এর মিথ্যা বিজ্ঞাপন সম্প্রচারের কারণে তাদের আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আদালতে তারা বলেছে, এটা ভুলক্রমে সেখানে প্রদর্শিত হয়েছে, বিজ্ঞাপনটি আসলে তৈরি করা হয়েছিল বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য। এর চেয়ে নির্মম রসিকতা আর কী হতে পারে!
আমি তখন এবিসি রেডিও খবর পড়তাম। এই কপিটি আমার হাতে পড়েছিল। এবং টেস্ট ট্রান্সমিশনে প্রচারও হয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্য এটা বাংলাদেশের কোনো খবরের কাগজে আসেনি। প্রথম আলোতেও না। কোনো টিভি-রেডিওতে প্রচারিত হয়নি।
এই হচ্ছে বিজ্ঞাপনের শক্তি!! আমি নিশ্চিত, এবিসি রেডিও অন-এয়ারে থাকলে এটা প্রচার করত না।
ঝিনুক নীরবে সহো, নীরবে সয়ে যাও
ঝিনুক নীরবে সহো, মুখ বুঁজে মুক্তো ফলাও।
ধন্যবাদ ফিরোজ হরলিক্সের বিষয়টি তুলে ধরবার জন্য।
বিজ্ঞাপন যে কত শক্তিশালী তা অন্যদের চেয়ে আমরা সাংবাদিকরা বেশী টের পাই।
নতুন মন্তব্য করুন