আমি যা লিখতে বসেছি আজকে সেটা অনেকে অনেক ভাবে নিতে পারেন । আমদের দেশের মানুষ রাজনীতিক ভাবে অনেক সচেতন হলেও অর্থের লোভে সবায় সবকিছু বিসর্জন দেবার জন্য হুরোহুরি দেখে মনটা দমে উঠে । দক্ষিন কোরিয়াতে আছি আজ প্রায় দুই বছর হতে চললো , ঘরকুনো মানুষ আমি তার উপর ভাষাগত পার্থক্যতো আছেই, তাই কোরিয়ার মানুষের জীবন সম্পর্কে একটা অসচ্ছ ধারনা নিয়েই চলে যেতে হবে। উল্লেখ যোগ্য তেমন কিছু ঘটে নাই এখানে আমি আসবার পর তাও নয়, কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে আর সেই জন্য লিখছি। এখন না লিখলে আর হয়ত সময় পাবনা কোনদিন।
উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিন কোরিয়া বরাবর আমাদের দেশের পত্রিকাতে একটা খবর হয়ে বেচেঁ থাকে কারনটা ও জানা। আনবিক শক্তিধর একদেশ আর একটা আমেরিকার মদদ পুষ্ট হয়ে পৃথিবীর অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তির একজন। দুই কোরিয়ার সৃষ্টি কিভাবে সেটাতে যাচ্ছিনা কারন তাহলে অনেকেরই পড়ার উৎসাহ থাকবে না। ৭৫% অংশ পাহাড় এবং ২৫% সমতল ভূমি দক্ষিন কোরিয়াতে। যেটুকু সমতল মাটি তার ও বেশির ভাগ অংশ আগ্নেয় শিলাতে ভর্তি, চাষযোগ্য জমি অনেক কম তাই ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালাইজেশনের আগে এবং তার সমসাময়িক সময়ে এখানে অনেক মানুষ অনাহারে দিন কাটিয়েছে এবং সেই ছাপ এখন ও দেখা যায়। আমি সেই সমসাময়িকের খুব কম মানুষকে দেখেছি যাদের শারিরীক উচ্চতা অনেক বেশি। আমি নিজে খাটো মানুষ কিন্তু তারা আমার চেয়ে ও অনেক খাটো, কিন্তু এখনকার ছেলেমেয়ে অধিকাংশ আমার চেয়ে অনেক লম্বা। সে সময়কার কিছু মানুষ এখান থেকে চায়নাতে গিয়ে (জায়গার নাম মনে নেই) আশ্রয় নেয় এবং চায়নার সেই অংশে এখন ও কোরিয়ান ভাষাতে কথা বলা হয় এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরিয়ান ভাষাতে শিক্ষা দেওয়া হয়।
প্রফুল্ল চাকীর এলাকার মানুষ তাই এখানে এসে ও নতুন দেশের মানুষের প্রতিবাদের ধরন এবং তাদের রাজনীতি সম্পর্কে জানার খুব ইচ্ছে হয়। আমি যখন এখানে আসি তখন এদের জাতীয় নির্বাচন হয় এবং ভোটের দিনে ছুটি থাকলে ও আমি ভোটের কোন আমেজ দেখতে পেলাম না। ভাবলাম এরা মনে হয় অনেকেই ভোট দেয় না এবং তা সত্য। সেদিন অনেক পরিচিত মানুষকে জিজ্ঞেস করলাম ভোট দেন নাই ...নানা বাহানা করে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলো অনেকে , অনেকে আবার বললো সময় পায় নাই।
নতুন দেশ নতুন সরকার কিছুদিন সমস্যা থাকার কথা নয় কিন্তু ভুল , কিছুদিনের ভেতর অনেক ঝামেলা শুরু হয়ে গেলো, আমারিকা থেকে গরুর গোশত আমদানী নিয়ে। তিন বছরের বেশি বয়সের গরুর ম্যাড কাউ রোগ নাকি হয় আর সেই গরুর গোশত বর্তমান সরকারকে আমদানী করতে আমারিকা চাপ দিলে ঝামেলা বেধেঁ যায়। গোটা কোরিয়াতে আন্দোলন শুরু হয়। আমারিকাতে এই বয়সী গরুর গোশত শূয়োরের খাবার হিসাবে ব্যবহার করা হত। আমিতো আমেরিকাতে থাকি নাই শূয়োরের খোয়ারেও যাই নাই তাই ব্যাপারটা শোনা ছাড়া আর কিছু করার ছিলনা। রাজধানী প্রায় বন্ধ করে দেয়, পুলিশের লাঠি চার্জ, রক্তাত্ব মানুষ আবার সেই আন্দোলনের দেখা পেলাম। ভাবলাম সত্যিতো শুয়োরের খাবার আমি খাব কেন? তাও আবার টাকা দিয়ে কিনে, এখানে কোরিয়ান গরুর ১ কেজি গোশতের দাম প্রায় ১০০ ডলার। আমি তো শুনে আধামরা হয়ে গেছিলাম শুরুতে। অস্ট্রেলিয়ান গরুর আমদানী থাকায় এ দফায় টিকে গেলাম, না হলে বাধ্য হয়ে সবজী খেতে হত।
দক্ষিন কোরিয়াতে আর একটা ইস্যুতে লেখা লেখি হয় আর সেটা হল উত্তর কোরিয়া। প্রকাশ্যে আন্দোলন হয়না কিন্তু কিছু কট্টরপন্থী ছাড়া আমার মনে হয়েছে সবায় শান্তি পূর্ণ সহ অবস্থানে ইচ্ছুক। ভয়ে না শ্রদ্ধায় সেটা বলা অনেক বড় সমস্যা। অনেকেই হয়ত একটা ব্যাপার ভেবে দেখেন নাই জাপান এত লাফা লাফি করে কেনো? জাপানের কাছে থেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোরিয়া স্বাধীনতা লাভ করে এবং এর আগে কোরিয়া প্রায় ৪০ বছরের মতো জাপানের কলোনী ছিল, সেই দিক থেকে জাপানকে দুই কোরিয়ার মানুষই দেখতে পারেনা। পাশেই চীন পরাশক্তি কিন্তু জাপান চীনকে নিয়ে কোন কথা বলেনা, চীনের আন্তঃমহাদশীয় ক্ষেপনাস্ত্র ও আছে কিন্তু জাপান শুধু উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে ব্যাস্ত। আমার এখানে থেকে যে অনুভূতি হয়েছে তা হল এই, জাপান ও চায়না (দেশ নয়) দুই কোরিয়া এক হয়ে যাক, তাহলে জাপান নিজে এক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যাবে নিজের বাড়ির কাছে।
বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির একটা বিশাল আখড়া আছে। আখড়া বললাম এই কারনে যে এই সংগঠন গুলো তাদের তথা কথিত রাজনৈতিক দল গুলোর মতামতে চলে। অনেকটা কলুর বলদের মত। নেতারা যা বলে ছাত্র সংগঠন গুলো তাই মেনে চলে। নেতাদের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে ছাত্র সংগঠন গুলোর নিজস্ব মতামত এবং তা প্রকাশের সম্ভবনা এখন শুধু আমি কল্পনাতেই পাই। এক এক দলের এক এক ধরনের মতামত থাকলে ও কোন রাজনৈতিক দলের ভেতরে এই ধরনের মন ভাব নেই যে তারা ছাত্রদের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশ গ্রহন চায় না। অথবা চায় না দিন দিন রুগ্ন হয়ে উঠা এই অসুস্থ রাজনীতি থেকে মুক্তি পাক আমাদের শিক্ষা চর্চার জায়গা গুলো। চাইলে আমাদের দেশের মেধাবী অনেক মুখ অকালে ঝরে যেতনা।
কোরিয়ার রাজনীতিতে ছাত্রদের অংশগ্রহন আছে তবে তা দলীয় ভাবে নয়। দল গুলোর কোন ছাত্র সংগঠন নেই, কিন্তু তাতে এই সব ছাত্রদের অন্যায়ের প্রতিবাদে কোন সমস্যা নয় বরং আরো সুবিধা, কারন তাদের বাবা মা সবাই এসে যোগ দেয় তাদের সাথে। এ ব্যাপারটি আমি দেখেছিলাম বুয়েটে ২০০২ সালে, যখন ছাত্ররা সনি আপা হত্যা বিচারের জন্য আমরণ অনশন করছিলেন। বাবা মা ছেলে মেয়েদের অনশন ভাংতে এসে নিজেরায় অনশন শুরু করেছিল এবং সাধারন ছাত্রদের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করেন। একটা দিক দিয়ে সে আন্দোলন ছিল অনেক কিছু পাবার , ক্রম বর্ধ্মান অস্ত্রের রাজনীতিকে সেই সময় রুখে দেওয়া গিয়েছিল ক্যাম্পাসে। না আটকানো গেলে তা হয়ত আজ অন্য রকম রূপ ধারন করতে পারত। যাই হোক , কোরিয়াতে ৬৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে একটা সংগঠন আছে যাকে বলা হয় General Student Council(GSC). এদের ও প্রেসিডেন্ট আছে এবং এরা ও অনেক ধরনের প্রতিবাদ এবং দেশের স্বার্থ বিরোধী কাজের প্রতিবাদ করে। ম্যাড কাউ এর প্রতিবাদের বিষয় আগেই বলেছি, সেই সময় ক্যাম্পাসে যে কি পরিমান সরকার বিরোধী পোস্টারিং হয়েছে তা বর্ননা করা সহজ নয়। তবে প্রতিবাদ কেমন কোথা হচ্ছে তা শুধু ছবি দেখলেই বুঝতাম ভাষাগত দূর্বলতা সেখানে কোন বাধাঁ হয়ে দড়াঁতে পারে নাই। আমি আমার ল্যাব মেম্বার কে বললাম আমেরিকারে আর একটু হুজুর হুজুর কর তাইলে এর পর তোদের কি খাইতে বলবে চিন্তাও করতে পারবি না। সে বলে আমি আমেরিকারে ঘৃনা করি, আমি বলি সাধু সাধু। GSC এর কিছু কর্মকান্ডের একটা উল্লেখ করতে পারি আর সেটা হল ২২-২৪ শে সেপ্টেম্বার পর্যন্ত একটা ভোটের আয়োজন করে আমাদের ক্যাম্পাসে এবং সেটা বর্তমান প্রেসিডেন্টের উপর অনস্থা বিষয়ক। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০ হাজারের উপর ছাত্র ছাত্রীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চাইলে তারা বলে “এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়”। সেই আম্লাতান্ত্রিক জটিলতা। বিপরীতে যা হয় , বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় পত্র থাকলেই সে ভোট দিতে পারবে এবং অনেক গুলো বুথ খোলা হল ভোটের জন্য। আমাদের দেশে সাধারন ছাত্রছাত্রীরা এমন করলে সরকার দলের পেটোয়া বাহিনীর মারে কি হত আমি জানি আপনি শুধু একবার চিন্তা করেন।
ক্যাম্পাসে কিছু আন্দোলনের চিত্র (কৃতজ্ঞতা, Herald)
আমার ক্যাম্পাসে গেট বন্ধ করে বসে আছে ছাত্র/ছাত্রীরা(নিজের তোলা)
ভোটের ফলাফলঃ
অনাস্থা জানিয়েছেন ৭৫ শতাংশ, আস্থা জানিয়েছেন ১৬ শতাংশ, নিরপেক্ষ ৮ শতাংশ এবং নষ্ট ভোট ১ শতাংশ। সবচেয়ে মজার যেটা সেটা হল এই ফলাফল ছাপানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিত পত্রিকাতে। আমাদের দেশে এমন হলে পরের দিন ভিসিকে পদত্যাগ করতে হইত এটা আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করে বলতে পারি।
GSC অনেক বড় ছাত্র সংগঠন এবার আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আন্দোলনের কথা বলা যাক। কিছুদিন আগে কোরিয়ার দুইজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মারা যান। তাদের একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু এবং আর একজন আত্মহত্যা করেছেন নিজের ছেলের অপকর্মের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল সেই লজ্জায়। এই প্রেসিডেন্টের নাম Roh Moo-Hyun। অত্যন্ত মার্জিত ভদ্রলোক হিসাবে তার সুনাম অনেক এবং দক্ষিন কোরিয়ার মাহাথির তিনি। আজকের কোরিয়ার যে অবস্থান তার পেছনে এই প্রেসিডেন্টের অবদান অনেক বেশি। তিনি আধুনিক কোরিয়ার রূপকার হিসাবে পরিচিত, এবং আগেই যেহেতু বলেছি উত্তর কোরিয়ার মানুষের সাথে দক্ষিন কোরিয়ার মানুষ সহবস্থানে থাকতেই ভালবাসে এবং সেই অবস্থাকে অনেকটা ত্বরান্বিত করতে পেরেছিলেন এই প্রেসিডেন্ট।
উত্তর কোরিয়ার সাথে দক্ষিন কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট (কৃতজ্ঞতা অন্তর্জাল)।
এই ভদ্রলোক মারা যাবার পর আমি আসলে একটা বিষয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম, আমাদের দেশের গুলো একটা আর একটার চেয়ে বড় চোর, মরলে চোখের পানি কেন আমি মনে হয় শান্তি পাবো এই ভেবে, একটা চোর কমলো । সারা কোরিয়াতে শোকের মাতম আর সেই সাথে বর্তমান প্রেসিডেন্ট Lee Myung Bak (MB) দোষারোপ করা শুরু হয়ে গেল যে, সে প্রোরোচিত করেছে আত্মহত্যা করতে তদন্তের নামে। জীবনে প্রথম দেখলাম একজন দেশের প্রেসিডেন্টকে এতটা সন্মানিত হতে দেখতে। আমার দেশের নেতাদের সন্মানীত হতে দেখলেই মনে হয় তেলানো হইতেছে কিন্তু এদের ভালবাসা প্রকাশ দেখে মনে হয়েছে নিখাদ, হৃদয়ের এক বিশাল জায়গায় তার অবস্থান। ক্যাম্পাসে মাঝে মাঝে শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীরা আন্দোলন করেন। Roh Moo-Hyun এর জন্মদিন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিতে গেলে ঐ একই কথা “এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়”, ব্যাস প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন শুরু হয়ে গেলে, শিক্ষকদের দুই গ্রুপের ভেতর ঠেলাঠেলি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পক্ষের সাথে ছাত্ররা একাত্ম থাকায় বিপরীত পক্ষ হার মেনে নেয়। তিন দিন দুই রাত গেট বন্ধ করে সব আয়োজন সম্পন্ন করে ছাত্ররা। পুলিশের আনাগোনা কর্তৃপক্ষের রক্ত চক্ষু কিছুই দমন করতে পারে নাই। ছেলেমেয়েদের সাথে বাবা মায়েরা এসে যোগ দেন। আমি ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে ছবি তুলে আনি অনেকদিন পর বুয়েটের ধর্মঘটের চিত্র উঠে আসে মনে। আবার দেখলাম খন্ডকালীন শিক্ষকদের আন্দোলন। সব কিছুই শান্তি পুর্ণ ভাবে। মনে মনে একটা কথা চিন্তা করলাম, ভদ্রতা এবং দৃঢ় চিত্ত অনেক কিছুই জয় করতে পারে। আমরা আমাদেরকে অনেক সচেতন দাবী করি কিন্তু সচেতনতা এখানে অন্যরকম একটা মর্যাদার আসনে আসীন। এখানে মানুষ নিজের অধিকার আদায়ের জন্য নয় শুধু তার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক বেশি উদবিগ্ন, তাই নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে সবার চোখের সামনে তার পর চিৎকার করে বলে উঠে “আমার কথা কি এখন শুনতে পাচ্ছো তোমারা”।
প্রতিবাদী মানুষ নিজের শরীরে আগুন দিয়ে শয্যাশায়ী, দুই সপ্তাহ পর মারা গেছেন এই ব্যক্তি এবং গরুর গোশত আমদানী ঠেকাতে গিয়ে তিনি এই আত্মহুতি দিয়েছেন (কৃতজ্ঞতা, www.bilaterals.org )
এরা অনেক আগে স্বাধীন হয়েছে আমাদের কিন্তু গনতন্ত্রের মুক্তি আশির দশকের শেষের দিকে , কিন্তু তার পর ও এরা রক্ষা করতে জানে গনতন্ত্রের মর্যাদা। জানে একজনের প্রতি আর একজনের শ্রদ্ধাবোধ, মনুষত্ব এবং নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা। আমি ভাবি আমার দেশের মানুষের সমস্যা কোথায়, কিসের অভাব , আমরা কেনো পাইনা Roh Moo-Hyun এর মতো একজন শাসক, আমি ও আমার দেশের কোন নেতার মৃত্যুতে কাঁদতে চাই। কিন্তু পারিনা আমার জাগে ক্রোধ আমার বুকে হয় জ্বালা। ঐ সব মুন্ডক বিহীন নেতাদের কলিজা ছিড়ঁতে ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বন্ধ করে দেই অসুস্থ হয়ে পড়া ছাত্র রাজনীতি, ফুটুক ক্যাম্পাসে রক্ত জবা। কিন্তু এ শধু বলায় থেকে গেল এবং এভাবেই থেকে যাবে হয়ত।
প্রতিবাদের ভাষা এখনে যেমন আমার দেশে ও তেমন, নীপিড়ন যেমন আমার দেশে ও তেমন কিন্তু আমার দেশে এ নীপিড়ন সহ্য করে কিছু করতে পারিনা এখানে পারে কিছুটা। ঐ যে ম্যাড কাউ এর কথা বলেছিলাম , গরুর গোশত এরা আমদানী বন্ধ করতে পারে নাই কিন্তু এরা একটা টেস্ট সেন্টার বসিয়েছে ম্যাড কাউ চেক করার জন্য, কতোটা করছে সেটা জানি না। এই যে এত কিছু করা হয় আমারা সাধারন মানুষ বুঝি নেতারা বোঝেনা কেন? তারা কি অন্য জগতের মানুষ? ক্ষুদ্র কিছু মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য এক বিশাল জনগোষ্ঠিকে মরণের দিকে ঠেলে দেওয়া এ কোন সমাজ আমাদের। মুক্তির কথা জানা , পথটুকু মসৃন নয় শুধু, তাই আমাদের প্রতিবাদের ভাষা ও পরিবর্তন হয়না, তাদের অত্যাচারের ভাষা ও না। এখানকার মানুষদের উপর ও দেখলাম লাঠি চার্জ, মাথা ফেটে রক্তে গড়াগড়ি রাজপথ। আমার দেশের মাটিতে আমার উপর অন্যায় হয়, আমাকে মারে, আমার দেওয়া ভোটে পাশ করে আমাকে করা হয় পংগু। মুক্তি তাহলে মানব জাতির কতদিনে? মনে হয় অন্যায়ের ভাষা সব যায়গাতেই এক, নিপীড়নের ভাষা ও অভিন্ন। শাসক গোষ্ঠির শাসন এবং শোসন কোনটাই আমি মেনে নিতে পারি না। কিন্তু পাব্লিকের জন্মই যেনো শাসিত ও শোসিত হবার জন্য।
গরীব
দক্ষিন কোরিয়া
মন্তব্য
তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। এরকম লেখাই আপনার কাছ থেকে চাচ্ছিলাম। ভাল লাগল।
বানানের বিষয়টা একটু খেয়াল রাখলে আরও ভাল লাগত।
......................................................
পতিত হাওয়া
ধন্যবাদ কায়েস!
গরীব
দক্ষিন কোরিয়া
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
কথা সত্য। খুব ভাল লেখা, বেশ লাগলো।
- অনুপম ত্রিবেদি।
তোমার লেখায় অনেক কিছু জানতে পারছি! চমৎকার সব আইডিয়া আর লেখা দিয়ে যাচ্ছ একের পর এক! কিন্তু নিবন্ধন করছোনা কেন?
অফটপিকঃ সনি হত্যার আন্দোলনে তুমি সক্রিয় ছিলে... সবাইকেই আমার মোটামুটি চেনার কথা! কিন্তু তোমার আসল নামটা এখানে জানিনা... তাহলে আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ের কিছু স্মৃতিচারণ করা যেত!
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
আমাকে তেমন চেনার কথা নয় , কারন আমি তখন ০১ ব্যাচের এবং ক্যাম্পাসের সবচেয়ে জুনিওর ১-১ এ পড়তাম। আমি নিবন্ধন করেছি, কিন্তু সচল হতে পারি নাই তাই অতিথি হিসাবে লিখছি ।
অফটপিকঃ আমার নাম মোঃ গোলাম মোস্তফা, সবাই মোস্তফা নামেই চিনতেন, থাকতাম সোহরাওয়ার্দী হলে, ৪০০৪ নম্বর রুমে।
গরীব
সাউথ কোরিয়া
নতুন মন্তব্য করুন