এখানে আলো, ঐ আঁধার
কাঁটার ঝোপ, বহু বাধার
এইসব কাঁটার ঝোপ একদিন পেরিয়ে যেতে শিখে যায় সবাই।
এক কিশোর সন্ধেবেলায় হাতছানি দিয়ে ডাকা কিশোরীর প্রেমে উথাল-পাতাল হয়। বুকে পাড় ভাঙ্গার শব্দ বুঝি বা বাইরে থেকেও ওই শোনা যায়। কী দ্রুততার সাথে আলপথ একদৌড়ে পার করে এসে সন্ধ্যের অন্ধকারে কিশোরীর আধখানা মুখ দেখার সাধ জাগে। কিশোরের হঠাৎ কি সাধ জাগে, কিশোরী প্রিয়ার হাতে হাত রাখতে ইচ্ছে করে, কিশোরীকে বলতেই সে নদীর ওপারের মাঠে যেতে রাজী হয়ে যায়।
কিশোরী তুমিও বোঝ ভালবাসা কারে কয়?
কিশোরী ভালবাসা বোঝে, শুধু জানেনা কাঁটার সেই ঝোপের কথা। সে নদীর ওপারে যায়, সে কিশোরের হাতে রাখে হাত। হায়না ছিল সেখানে,ছিল বুঝি? কিশোরের সাধ্য কি তায় কিশোরীর প্রেম বাঁচাতে জীবন দিতে পারে! দৌড়াতে থাকে সে,পার হয় একা আলপথ, পিছনে তাকাতে বড় ভয় হয়। তাড়া করে যদি সেই হায়নারা!
পরদিন সকালে ছিন্নভিন্ন শরীর ফিরে আসে মৃত এক কিশোরীর।
---------------------
দেখা হয়, কথা হয়, তবু বিচ্ছেদের কথা মনে পড়ে
খুড়েঁ তোলা মাটি থেকে জমে ওঠে নিকৃষ্ট পাহাড়
চোখের সন্মুখে তুমি দাঁড়ালেও স্বচ্ছ বাতাসের ব্যবধান
আমার এমনই রাগ, আমি সেই স্বচ্ছতাকে শত্রু বলে ভাবি!
যুবকের বুক ভেঙ্গে যায়, রাস্তায় ঘুরপাক খায় রাতভর। বিষাদগ্রস্ত যুবক তার প্রিয়াকে পাবে না কখনও, দৃষ্টিসীমার বাইরে নয়,অহর্নিশ তাকে দেখে দেখে কেটে যায় দিন। এ কেমন যন্ত্রণা দিলে তুমি, তুমি হারাবে বলেই যদি এলে, তবে এলেই কেন? কাছেই যদি বসবে তবে কেন বাধার দেওয়াল তুলে দাও, শরীরের এত কাছে থেকেও তার ওম্ দিতে পারলে না, এ কেমন ভালবাসা দিলে তবে প্রিয়া!
একাকিত্ব গাঢ় হলে আমি অন্ধকার দিয়ে
গড়ে নিই
তোমার আদল
সে আদল বুকে নেওয়া কত সোজা,
কত তীব্র আলিঙ্গন
তুমি চলে গেলে পিছে ফেলে সমস্ত সুঘ্রাণ। সেই সৌরভে যুবকের দিন যায়, রাত কাটে প্রিয় সে মুখকে সঙ্গী করে। খুব একা সে বোধ করে না, যে সৌরভ তার নিত্য সঙ্গী তাকে ঘিরেই কাটে দিন রাত। কেবল জ্যোৎস্না এলেই নিঃসঙ্গতা ভর করে বসে। তখন সে একা, তখন যুবকের ঘোর একাকিত্বে তার অনুপস্থিতি প্রবল।
কখনও যুবক এমনও ভাবে,সে যদি চলে না যেত, তবে কখনও জানা হত না ভালবাসার সঠিক সংজ্ঞা কি। হয়ত তার মসৃণ করতলে ঠোঁট ছুঁতে গিয়ে সে ভুলে যেত প্রেম আর ভালবাসার মধ্যে কোন সঠিক অর্থে তেমন কোন পার্থক্য আছে কি না। সে চলে গেছে, কিন্তু শিখিয়ে গেছে কি করে ভালবাসতে হয়,সে শক্তিতে ভর করে যুবক একদিন শিখে যায় পৃথিবীতে সম্মান জানানো যায় যাকে, সে কেবল নারী।
সেই পথ দিয়ে ফিরে যাওয়া
পড়ে আছে মিহিন কাঁচের মতো জ্যোৎস্না
শুকনো পাতার শব্দে এমন নিঃসঙ্গ
সেই সব পাতা ভেঙ্গে
ভেঙ্গে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ভেঙ্গে চলে যেতে
যেতে যেতে যেতে যেতে
বাতাসের স্পর্শ যেন কার যেন কার যেন কার
যেন কার?
তারপর কি হয়! সে তার প্রিয়াকে একসময় ভুলতে শুরু করে। পরে আরও ধীরে ধীরে সে বিস্মরিত হতে থাকে, ভুলে যায় সেই নারীর নাম কি ছিলো,ভুলে যায় সে নারীর প্রিয় রঙ, চোখ,চুল পা এর পাতার লালচে আভা ক্রমশঃ সব ভুলে যেতে থাকে। শুধু কখনও বড় একা থাকার মুহুর্তে মনে পড়ে, কি যেন নেই তার, কে যেন হারিয়ে গেছে তার জীবন থেকে। কে যেন সে..কে, কে, কে?
-----------------------------------
তোমার গলার মুক্তোমালা ছিঁড়ে পড়লো
এখন আমি খুঁজে চলেছি
একটা একটা মুক্তো যাদের
হারিয়ে যাবার প্রবণতা!
এখানে আলো, ঐ আঁধার
কাঁটার ঝোপ, বহু বাধার।
এ অবেলায় কে এল আবার, সে তো এতদিন ভুলে ছিলো সব। আনন্দ বেদনার সকল কাব্য তুলে রেখেছিলো আলমারী তে। ধূলো জমে জমে সেখানে আজ আর হাত দেওয়া যায় না। এই অবেলায় কেন সে? যুবক কি আর বলা যায় তাকে! সে তো প্রৌঢ়ই, এখন কেন সেই প্রথম যৌবনের তীব্রতা নিয়ে এলো এই নারী। এবার সে আর কোন বাধাই মানবে না।
‘দূর থেকে আমাকে কাঁপাও কেন, সামনে এসে দাঁড়াও দেখি। কৈশোরে আমি পালিয়েছিলাম বড় ভয় ছিলো জানো,যদি ওরা আমাকে মেরে ফেলে! যৌবনে তাকে কাছে পেয়েও পারিনি ধরে রাখতে, অন্যের বাগদত্তাকে আমি কোন ভালবাসার জোরে বাঁধি বল? শুধু ভালবাসা নয়, তখন যে ছিল নৈতিকতা নিয়ে বড্ড বাড়াবাড়ি। এবারে যদি প্রশ্রয় দাও নারী, ভালবাসা দেব সাথে দেব আজন্ম লালিত প্রেম,শরীরময় তার উত্তাপে গলে যাবে তুমি। তোমার উষ্ণ শ্বাস বয়ে যাবে আমার হৃদয়ের সমস্ত অলি-গলিতে। আমি তৃষ্ণার্ত, নারী’।
সকাল নয়, তবু আমার
প্রথম দেখার ছটফটানি
দুপুর নয়, তবু আমার
দুপুরবেলার প্রিয় তামাশা
বিকেল নয়, তবু আমার
বিকেলবেলার ক্ষুৎপিপাসা..
[পংক্তিগুলো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘হঠাৎ নীরার জন্য’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া ]
মধুবন্তী [অতিথি লেখক]
মন্তব্য
মধুবন্তীর প্রথম লেখা।
তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে প্রথমেই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
কৈশোর থেকে প্রৌঢ়ে হবে।
মধুবন্তী
লেখা খুব ভাল হয়েছে । ফেভারিটে রাখলাম ।
নির্ভানা
মধুবন্তী রাগের মত হয়েছে লেখা।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
নির্ভানা ও পুতুলকে ধন্যবাদ।
মধুবন্তী
লেখাটি পড়তে ভালো লাগলো।
মউ আপনাকেও ধন্যবাদ।
মধুবন্তী
কবিতা ও গদ্যের যুগলবন্দীর মধুমন্তী রাগ আর বিষন্নতার ছোঁয়া। হৃদয় ছুঁয়ে গেল ।
মধুবন্তী চমৎকার লিখেছেন। সচলে নিয়মিত লিখুন।
..........................................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
পান্থ, মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সচলদের কাছ থেকে একটু উৎসাহ পেলে লেখার সাহস আর ইচ্ছে দুইই বাড়ে।
মধুবন্তী
আপনি কি মৌ মধুবন্তী ?
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
না ভাই, আমি মৌ নই, আমি মধুবন্তী মেঘ।
ভালো থাকবেন।
মধুবন্তী
নতুন মন্তব্য করুন