যাক,বাড়িটা হচ্ছে শেষপর্যন্ত... রায়হানসাহেব খুব তৃপ্তমনে ভাবেন, একটা সন্তুষ্টির আভা তাঁর চোখেমুখে ছড়িয়ে পড়ে!সারাজীবনের কষ্টের ধন এই বাড়ি,নিজে সরকারী চাকরি করেছেন মাঝারি গোছের.. কখনো বাম হাতে রোজগারের কথা ভাবেননি, আয়েশা খাতুনও সেটা নিয়ে অনুযোগ করেননি...জীবনে তাঁর ইচ্ছে ছিলো একটাই,একদিন না একদিন নিজেদের মাথা গোঁজার একটুখানি ঠাঁই হবে.. তা প্র/ফান্ডের টাকা কড়িগুলোই তো সম্বল,তাও আর কতোই বা! ভাগ্যিস,জমিটুকু আয়েশার মা একমাত্র মেয়ের নামে লিখেপড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন.. তা কাজও তো হলো অনেকটুকুন, আগামীমাসে হয়তো ছাদ ঢালাই হয়ে যাবে...ছাতা নিয়ে সকালের নাস্তা সেরেই রায়হানসাহেব এদিকটাতে চলে আসেন, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তদারকি করেন যদ্দুর পারা যায়,রক্ত পানি করে রোজগার করা পয়সা...এবয়সে কি আর এতো পরিশ্রম শরীরে পোষায়!ছেলে ছিলো একটাই, সে তো...রায়হানসাহেব দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন,,রাহুলটা ছোটবেলা থেকেই ছিলো ছন্নছাড়া...মা-বাবার প্রতিও কোন টান ছিলো না,এমএ টা না দিয়েই হুজুগ ধরলো বাইরে যাবার--কিভাবে কিভাবে যেন এক বন্ধুর সাথে সব ব্যবস্হাও করলো, লাভ হবে না জেনে রায়হানসাহেব বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেননি... যদি থিতু হয় দেশ ছেড়ে গিয়ে, তা হোক,লোনটোন নিয়ে টিকেট কেটে দিয়েছিলেন কোনমতে! সেই ছেলের কোন পাত্তা নেই আজ তিনবছর, ফোন টোন করতো শুরুর দিকটায়,,ছমাসে/নমাসে একবার! উড়ো খবর শুনেছিলেন,জার্মান এক মেয়েকে বিয়ে করেছে সেও তো বছর দেড়েক আগের কথা...নাহ্, ও হতভাগার কখা ভুলেও মনে করতে চান না..আয়েশা বেগমকেও রাতবিরেতে এ প্রসন্গ টেনে আনলে,তিনি চুপ করিয়ে দেন| যে ছেলে বুড়ো মা-বাবার একটু খোঁজ রাখারও দরকার মনে করেনা,তাকে নিয়ে কান্নাকাটির কোন মানে হয় না...সুপ্তি তো আছে,তার বড় আদরের মেয়ে! শেষবয়সের সন্তান বলে একটু বেশিই আদরের! মেয়েরা একটু বাপঘেঁষা হয়--এই মেয়েটা তারো বেশি, এই চার কামরার বাড়ি নিয়েও তার কত প্ল্যান... ছেলেমানুষি দেখে আয়েশা বেগম ধমকে ওঠেন,কেবল তিনিই বাধা দেননা,,কিইবা বোঝে মেয়েটা? বাস্তব কতটা কঠিন তা ওইটুকু মাথায় ঠেসে ঢুকিয়ে কি লাভ?? মাঝে মাঝে সুপ্তির দিকে তাকিয়ে রায়হানসাহেবের মন হা হা করে ওঠে... এতো মায়াকাড়া চেহারা হয়েছে মেয়েটার,এই মেয়েও একদিন পরের ঘরে চলে যাবে! হায়রে,তাইতো দুনিয়ার নিয়ম...যাক, এত তাড়াতাড়ি ওসব ভাবনা ভেবে কি হবে! সবে তো ইন্টারে পড়ছে...তাঁর বড় শখ, ওকে ডাক্তারি পড়ানোর.. কলেজে যাওয়ার সময় এপ্রন পরা মেয়েকে দেখলে মনটা ভরে যায়! বড়বুবুর ছেলেটা গতমাসে এফসিপিএস করতে গেলো,দু ভাই- বোন ছোটবেলা থেকে মনে মনে একই কথা ভেবে এসেছেন! ইদানিং অবশ্য সুপ্তির হাবভাব একটু বদলেছে,খুব আনমনা খাকে মেয়েটা...বাপের ওষুধ টষুধের দিকেও অতো মনোযোগ নেই! খায়ও তো না ঠিকমতো...কি জানি,এবয়সি ছেলেমেয়েরা... মোবাইলটা রায়হানসাহেব নিজেই কিনে দিয়েছিলেন,কোচিংএ যায়-- দেরি হচ্ছে কেন?জানতেও তো সুবিধা...আয়েশা বেগম মানা করেছিলেন যদিও|চা দেবে নাকি এককাপ?দুঃভাবনা লুকোতে তিনি প্রশ্নটা খুব শান্ত ভন্গিতে করে ওঠেন...(ক্রমশ)
মন্তব্য
এতোটুক লিখেই ক্রমশ? হলো কী দেশের!
লেখকের নাম নাই, দাঁড়িকমার পরে স্পেস নাই, বানান ভুলও অবশ্য বিশেষ নাই
জানতাম আপনার মন্তব্য খাকবেই...অনেক ধন্যবাদ!
ভাই আপনার নামটা তো জানতে পারলাম না
স্পার্টাকাস
ডরাই...
পরের অংশটুকু পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ধন্যবাদ আপুনি! আলসে মানুষ কিনা....
যাহ। চায়ের তেষ্টা তো রায়হান সাহেবের চেয়ে লেখিকারই (!!!) বেশি পেয়েছিল মনে হয়।
অপেক্ষায় রইলাম; সারাজীবন ধরে কিন্তু থাকতে পারবো না। তাড়াতাড়ি বলে ফেলুন।
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
অনেক ধনেপাতা রেজওয়ান ভাই! ধরেই নিচ্ছেন যে আমি লেখিকা??? হাঃহাঃহাঃ...
পরের পর্বের অপেক্ষায়!
রেশনুভা'র মতো আমিও আপনাকে লেখিকা ঠাহর করলাম!
..................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
ভালু ভালু...."ভাঙ্গা মন" নিয়েও যে কষ্ট করে পড়লেন, তার জন্য স্পেশাল খ্যাংকুশ!
..................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
পরের অংশের অপেক্ষায় রইলাম লেখিকা হা হা!
সর্বনাশ,., বুঝলি কি করে??
নতুন মন্তব্য করুন