আমি জানি না লেখাটি এইখানে দেয়া উচিৎ হচ্ছে কি না, কিন্তু আমি আর কোন রাস্তাও দেখতে পারছি না।
আমার একটা ছাত্র আছে, অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে, ইংরেজী মাধ্যমে। আমি তাকে একমাস ধরে পড়াচ্ছি। একদিন ওকে কিছু একটা লিখতে দিয়ে একটা গল্পের বই দিতে বলি। ও আমাকে যেই বইটা এনে দেয়, সেটা দেখে আমার চক্ষু বাহির হইয়া যাবার মতো অবস্থা হয়। কারণ বইটার নাম ছিলো , সৃষ্টি করেছেন যিনি শাসন কর্তাও তিনি(এই ধরণের নাম, ছন্দ মেলানো ছিলো) এবং ভেতরে 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির' ক্যালেন্ডার। আমি প্রথমে একটু ভয় পাইসিলাম শেষ পর্যন্ত আমার মতো একজন বেনামাজী মুসলমান, আর হিন্দু নামধারী (আমার বাপ আনকমন নাম রাখতে গিয়া বাংলা থিকা এমনি এক নাম রাখছে, যে প্রায় সময়ই আমাকে ব্যাখা করতে হয় যে,'বিজন' শব্দটা বাংলা, হিন্দু/হিন্দি না। ) সাদাসিধা বালককে(!) শিবির পড়াইতে হবে। তারপরে একটু সাহস সঞ্চয় করে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি শিবিরের এক্টিভ মেম্বার ? আমার ছাত্রটা বলে, যে ওরা তো শিবির না। ওরা শুধু নামায পড়তে বলে।আমি মনে মনে বলি পোলাটাতো ভালো মতোই ফাঁসছে মনে হচ্ছে।
ওইদিন আর বেশীক্ষণ পড়াই নাই। চলে আসি, মনে মনে ঠিক করছি, যে আমার ছাত্ররে শিবির হইতে দিমু না। তাই ওইদিন রাতেই বিভিন্ন পরিকল্পনা করলাম কিভাবে ওরে আটকানো যায়। এর মধ্যে অভিভাবকের সাথে যে কথা বলবো সেটাও পারতেসি না, যদি আমারে উলটা ঝাড়ি মারে। পরেরদিন পড়াইতে যাওয়ার পর ও আমারে আরেকটা টাশকি দিলো, আমারে একটা ম্যাগাজিন সাধে, নাম 'কিশোর কন্ঠ'। আমি মনে মনে কই, আমার ছাত্র দেখি আমার চেয়েও বাড়া, উলটা আমারে রিক্রুট করার চেষ্টা করতাসে। পরে আস্তে আস্তে ওর সাথে কথা বলে যেটা বুঝলাম সেটা হচ্ছে ও এখনো বলি হয় নাই, তবে বেশ ভালোভাবে টার্গেটেড হইছে। তখন আস্তে আস্তে ওরা বুঝাইলাম দেখো ইসলাম পালন করার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানের সদস্য হওয়া লাগে না। তুমি নিজের মতো নামায রোযা পড়লেই হইলো।
কিন্তু আমার মনে একটা সন্দেহ আছে, আমি কি শিবিরের ট্রেইনিং দেয়া বয়ানের সাথে পারুম ? আর বুঝতেছি না অন্য কোন ভাবে ওকে ফিরিয়ে আনা যায়। আমি এর মধ্যে বাসায় হালকা ইংগীত দিয়ে আসছি। আর ও যদি ওর শিবিরের কোন বড় ভাইরে আমার কথা কয় তাহলে মনে হয় আমি শেষ। কিন্তু তারপরো একটা শেষ চেষ্টা চালায় দেখতে চাই।
এখন আমারে কিছু টিপস বলেন, যাতে আমি এই ছেলেটারে ফিরিয়ে আনতে পারি। এমন কিছু উপায় বলেন যাতে ওর কোন ক্ষতি না হয়। আর এই প্রথম বারের মতো আমি শিবিরের সংস্পর্শে আসছি, এখন কিভাবে হ্যান্ডেল করবো দয়া করে সাহায্য করেন।
---একজন নীল ভুত।
মন্তব্য
প্রতিরোধটা পরিবারের তরফ থেকে আসা উচিত। আপনার ছাত্র যদি তার কন্ট্যাক্টদের জানায়, যে তার গৃহশিক্ষক তাকে নিষেধ করেছেন, তাহলে সম্ভাবনা আছে যে তারা অন্তত একবার আপনার মুখোমুখি হবে এবং আপনাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে।
প্রথমত বোঝার চেষ্টা করুন, পরিবারের মনোভাব কী। তারাও কি জামাতশিবিরমনোভাবাপন্ন কি না। যদি তারাও জামাতি হয়, তাহলে আপনার কাজ অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। যদি না হয়, তাহলে আপনি ছেলেটির মায়ের সাথে কথা বলুন, শিবিরের কর্মকাণ্ডের আভাস দিন। বোঝান যে ছেলেটির মধ্যে অনেক সম্ভাবনা আছে, এবং শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্টতা তার ব্যক্তি- ও সামষ্টিক জীবনের জন্যে হানিকর হবে।
ছেলেটিকে বোঝান, নামাজ পড়ার জন্যে এই লোকদের সাথে মেলামেশার প্রয়োজন নেই, ঘরে এবং যখন সুযোগ হয় তখন মসজিদে গিয়ে সে নামাজ পড়ে আসতে পারে। তাকে আপনি এ-ও জানান, যে এরা নামাজ পড়ার কথা বলে তাকে এমন একটি দলের সাথে ভেড়াতে চাইছে, যারা ১৯৫৩ সাল থেকে পাকিস্তানে এবং ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশে নিরীহ মানুষ হত্যার সাথে জড়িত। কীভাবে ইসলামি ছাত্র সঙ্ঘের আলবদর বাহিনী ঘর থেকে নিরীহ মানুষ তুলে নিয়ে হত্যা করেছে, সে কাহিনী বলুন, এবং এরাই যে পরে নাম পাল্টে ছাত্রশিবির হয়েছে, সেটা জানান।
ছেলেটিকে সাধারণ গল্পের বই মাঝে মাঝে পড়তে দিন। কিশোর ক্লাসিকস, ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু, জাফর ইকবালের সফদর আলির মহা মহা আবিষ্কার। এই বয়সে সবার মধ্যেই একটা জোশ থাকে, সেটিকে ইতিবাচক দিকে পরিচালিত করুন। প্রয়োজনে সচলে কোনো গল্প আপনার কিশোরোপযোগী মনে হলে প্রিন্ট করে তাকে পড়তে দিতে পারেন। ছেলেটি পড়ুয়া হলে সে শিবিরের পথে যাবে না।
শিবির ক্লাস এইটের পোলাপানকে স্তবক দিচ্ছে শুনে অবাক হলাম। এরপর ওদের সুদূরপ্রসারী প্ল্যান তো কোলের শিশু পর্যন্ত যাবে।
আমাদের ক্লাস সেভেন থেকে ক্লাস নাইন পর্যন্ত চেষ্টা করে গিয়েছিলো। যিনি এই চেষ্টা করতেন, তিনি সিলেট মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিলেন, অত্যন্ত অমায়িক, চমৎকার কার্টুন আঁকতেন। রমজানে ইফতারের দাওয়াত দিতেন দুইদিন পর পর, যাইনি।
শিবির যেখানে জিতে গেছে, সেটা হচ্ছে, এদের বর্বর চেহারাটা ভদ্র সমাজে চোখে পড়ে কম। ভদ্র সমাজে তাদের ভদ্র ছেলেমেয়েরা আসে, যারা মেধাবী, মিষ্টভাষী এবং বেজায় পরোপকারী। পক্ষান্তরে লোকজন অন্য রাজনৈতিক দলগুলির ছাত্র সংগঠনের গাজোয়ারিটাই বেশি দেখতে পায়।
মেডিক্যালের সেই গ্রুপে কি কালো খাটো একজন ছিলো হিমু? যদি থেকে থাকে তো তার বিষয়ে আছে নিশ্চিত সুখবর।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ভাইয়া, কোথায় যেনো একবার পড়ছিলাম (বোধকরি সচলেই, আমার দুর্বল স্মরণশক্তির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী) শিবির আজ থেকে ৪০ - ৫০ বছর পরের বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে এগুচ্ছে, যেই জেনারেশনে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন পরিষ্কার ধারণা থাকবে না।
একটা ব্যক্তিগত নোট, আপনার নামটা "একজন নীল ভুত" এর চেয়ে যেকোনো বিচারে উত্তম। আপনি এই নামেই লিখুন না কেন? আর নীল ভূত রয়ে যেতে চাইলে দীর্ঘ ঊ দিয়ে ভূত হোন ।
ধন্যবাদ হিমু ভাই, আমার নামের প্রসংশা করার জন্য। নীল ভুত নামটা আমার প্রিয়, কারণ আমার একজন খুউউউউউউউউব প্রিয় মানুষ আমাকে এই নামে ডাকে। আর নীল ভুতটা লেখার সময় এমন হয়ে গেছিলো VUT লিখছিলাম, রেজিস্ট্রেসন তো করে ফেলছি, বদলানো যাবে না মনে হয়।
প্রসংশা > প্রশংসা
রেজিস্ট্রেশন করার পরও বদলানো যায়। আপনি এখন থেকে ভূত লিখতে থাকেন, হ্রস্ব থেকে দীর্ঘ হন, তাহলেই হবে।
ঠিক আছে। আর ধন্যবাদ, ভুল গুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
নীল ভূত।
২ টা উপায়ে করা যায়, হয় শক থেরাপি অথবা ধীরে ধীরে একটু একটু করে তাকে বোঝানো যেতে পারে, ঠিক কোথায় তাকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। যেহেতু আমি তাকে চিনি না, তাই কোনটা বেশি কার্যকরি হবে, ঠিক বুঝতে পারছি না। আমি নিজে শক থেরাপির ভক্ত।
তবে ধীরে ধীরে তার আস্থা অর্জন করে তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ঠিক রাস্তায় ফেরৎ আনতে পারেন, যেমন প্রথমে হালকা লেভেলের গল্পের বই দিয়ে শুরু করতে পারেন, যেখানে জাত ধর্ম বিষয়ক কিছু নেই, মু জা ইকবালের বই দিয়ে শুরু করেন, একসময় সে স্যারের লেখার মাঝে ঢুকে যাবে, তখন তাকে দিবেন ওজনদার বইগুলো, মুক্তযুধের পটভূমিতে লেখা বইগুলো। এগুলো ছাড়াও তাকে একই ফর্মূলায় সিনেমা সাপ্লাই করতে পারেন, আপনার ৮০০ জিবি সিনেমা কোন সৎকাজে লাগুক। একটা ভিডিডিতে ৬ টা সিনেমা আটে (ডিভিডি রিপ), তাকে প্রথমে একটু সহজ হতে দিন, তারপর একটু একটু করে ডোজ বাড়ান।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
একটা সহজ স্বীকারোক্তি দেই, আমার কাছে বই প্রায় নেই বললেই চলে। আমি যেসব বই পড়ছি সব ধার করা ছিলো। মু জা ইকবাল স্যারের বইগুলোর সফট কপি আছে, তবে ই-বুক পড়ে মজা পাবে বলে মনে হয় না।
আর মুভি দেয়াটা আমি অনেক আগেই শুরু করছি, সত্যি কথা বলতে আমি একমাত্র এই পদ্ধতিটার কথাই চিন্তা করতে পারছিলাম। ওরে ঈদের বন্ধের মধ্যে বাড়ির কাজ দিয়া আসছি ৬টা মুভি : chronicles of narnia,finding nemo, charlie and the chocolate factory, a series of unfortunate events, ratatoulie, nanny mcphee দেখি কি হয়।
আস্তে আস্তে মুভির ডেপথ বাড়াবো।
Life is Beautiful দিয়েন। ধর্ম এবং অন্ধ বিদ্বেষ মানুষকে দিয়ে অবলীলায় কত ঘৃণ্য কাজ করায়, তা দেখতে দিন।
ওরে কি এখনই life is beautiful দেয়াটা ঠিক হবে ?
আমার জীবনে দেখা অন্যতম সেরা মুভি। আমি জীবনে কোন মুভি দেখে কান্না করি নাই (the pianist দেখেও না)। কিন্তু এই মুভিটার শেষের দৃশ্য দেখে আর আটকাতে পারি নাই।
আমি সম্ভবত ক্লাস ১০-এ থাকতে দেখেছিলাম। কেঁদেছিলাম আমিও খুব। ইংরেজি মাধ্যমের পোলাপান একটু ইঁচড়ে পাকা হয়। বয়স কম থাকতেই দেখুক, মনে দাগ কাটবে। একাধারে জামাতী এবং Anime-ভক্ত হওয়া যায়, কিন্তু একাধারে জামাতী এবং Life is Beautiful-ভক্ত হওয়া যায় না।
দেখে ভালো লাগলে অবধারিত ভাবেই কিছু প্রশ্ন আসবে আপনার কাছে। তখন ধর্মান্ধতা, চিরায়ত আবেগ, উদারতা, এবং নাৎসি-জামাত সমান্তরালগুলো যত্ন করে বুঝিয়ে দিয়েন।
ঠিক আছে, আমি ঈদের পরেই তাকে এটা দেখতে দিবো। আর ফলাফল কি হয় জানাবো।
সেইটাই, 'আমার বন্ধু রাশেদ'/ 'দুষ্টু ছেলের দল'- এই জাতীয় বইগুলোও পড়তে দিতে পারেন।
______________________________________________________
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাস সমগ্রের প্রথম খণ্ডটা কিনে দেয়ার জন্যে ছোকরাকে বলবেন তার মায়ের কাছে আবদার করতে। বলবেন ওর মতো মজার বই হয় না।
ইংরেজি মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের জন্যে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের একটা সহজ ইংরেজি সংস্করণ বের করা দেখি জরুরি হয়ে পড়ছে!
একটা ছোট্ট ব্যাপার- আপনি যদি সত্যি সত্যিই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে থাকেন, তবে মনে হয় আপনার নাম তুলে ফেলাই উত্তম হবে। কারণ আমার জানামতে শিবিরের পোলাপান যথেষ্ট মনোযোগের সাথে এই পোস্টগুলি পড়ে- কাজেই নিজের নাম জানানোর ব্যাপারটা ভেবে দেখতে পারেন।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ভাই আমি নিরাপত্তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত না, থাকলে এখানে এই পোস্ট করতাম না। আর আমার লেখায় যখন বলেছি 'আমার খবর আছে', ওইটা বিদ্রুপ ছিলো। নিরাপত্তা নিয়ে ভাব্লে কখনই কাজটা করা হবে না। আর নিজের কাছে অপরাধী হয়ে থাকবো। আর পারলে বলতে পারব, একজন হইলেও তো শিবির হইতে দেই নাই।
তাকে একটা বাংলা/ইংরেজি অর্থসহ (ব্যাখ্যা বাদে) কোরআন শরীফ গিফট দেন। বলেন, আল্লাহ তাকে কি নির্দেশ দিয়েছে, সেইটা কারো ভায়া না হয়ে সে নিজেই পড়ে দেখুক।
পালটা প্রশ্ন আসবে, সে কোরআন পড়ে বোঝার মতো ম্যাচিউরড হয় নাই। (শিবিরের বই পড়ানোর আগে কাউকে কোরআন ধরতে দেয়া হয় না এই কথা বলে।) তাকে বলেন, আল্লাহ অনেক রহমতের মালিক। তিনি কারো ওপর এমন কোনো বোঝা চাপিয়ে দেন না, যেটা তার পক্ষে বয়ে নেয়া সম্ভব না। যেহেতু তার ওপরে নামায ফরজ হয়েছে, সেহেতু আল্লাহর নির্দেশ বোঝার মতো যথেষ্ট বুদ্ধি তার আছে। অন্যের কথা না শোনার চেয়ে আল্লাহ তাকে কি বলেছে, সে নিজেই পড়ে দেখুক না।
তাকে সেলফ-রেসপেক্ট জিনিসটা শেখান, তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেন, দেখবেন বাকিটা সহজ হয়ে যাবে।
এরপরে কাজ না হলে তার পরিবারে রিপোর্ট করে আপনি কেটে পড়াই ভালো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ঠিক আছে আগামী মাসের বেতন পেলে আমি কিনে দেবো। (দাম কতো হবে বলতে পারেন ?)
অসহায়ের মতো রাগ হচ্ছে।
ছাত্রের পরিবারকে জানানোই মনে হয় প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে ভালো। এর পাশে আছে আবার আপনার নিরাপত্তা। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি আপাতত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। এটা মাথায় আনলেই আপনি আর এগুতে পারবেন না এক্ষেত্রে। পরিবারের সঙ্গে কথা বলুন প্লিজ। আর ওই একই পাড়ার কারো সাথে আপনার সখ্য থাকলে তার সঙ্গেও আলাপ করুন পথ খুজে বের করার জন্য।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
ভাই এইখানেই তো সমস্যাটা। আমি ওই এলাকায় শুধু পড়াইতেই যাই। অন্যকোন জানাশোনা নাই। আমাদের এলাকায় হলেতো কথাই ছিলো না।
অফ টপিকে একটা ঘটনা মনে পইড়া গেলো :
আমি তখন S.S.C পাশ করছি মাত্র, ফলাফল দিছে। কেমনে কেমনে জানি গোল্ডেন A+ পেয়ে গেছি। দুইতিন দিন পড়ে এক লোক আসছিলো আমাদের বাসায়, তারা নাকি মেধাবী ছাত্রদের সম্বর্ধনা দেবে। আম্মু জিজ্ঞেস করে আপ্নারা কারা? তারপর ওই লোকটা বলে 'বাংলাদেশ ছাত্র শিবির'। এটা শুনে আম্মু বলছিলো, 'তুই (হ্যাঁ তুই বলছিলো আমার স্পষ্ট খেয়াল আছে) যদি জুতার বাড়ি খাইতে না চাস তাহলে এখনি আমার বাড়ি থিকা বাইর হ।' ওই লোকের চেহারা দেখার মতো হইছিলো। তখন অবশ্য বুঝি নাই আম্মু হুদাই আমার সম্বর্ধনা (!) মাটি করলো কেন। পরে বুঝছি, আম্মুই বুঝাইছে। যদিও আমার মার একাডেমিক যোগ্যতা খুবই নগন্য কিন্তু আমাকে বলছিলো শিবিরে যাইতে নাই, ওরা রগ কাটে।
টু থাউজ্যান্ডে আমার বাসাতেও দুই ছাগু আসছিল, এস এস সি রেজাল্ট দেয়ার কয়েক মাস পর ... ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাসায়, সাথে আমাদেরই এক সহপাঠী [বন্ধু না, জাস্ট সহপাঠী], সে বাসা চিনায়ে নিয়ে আসছিল ... তো এসে বললো যে তারা সংবর্ধনা দিবে, অমুক জায়গায় অমুক তারিখে গেলে তারা খুব খুশি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি ... কারা সংবর্ধনা দিচ্ছে জিজ্ঞেস করায় জানা গেলে ইসলামী ছাত্র শিবির, প্রধান অতিথি মৌলানা নিজামী ... আমি তখনই বুঝলাম এদের থেকে দূরে থাকা লাগবে; তো সামনাসামনি ভেজালে যেতে চাচ্ছিলাম না তাই বল্লাম, আচ্ছা দেখি, ভেবে দেখবো ... তারা তখন উৎসাহ নিয়ে কোথায়, কেমনে যেতে হবে এইসব বোঝানো শুরু করলো ... আমি কোনরকমে থামায়ে আচ্ছা দেখি ইত্যাদি বলে ভাগাতে চাচ্ছিলাম, এক গাধা বলে বসলো, তোমার বাবা আছেন? উনাকেও বলে যাই ... এখন সাইধা ঝাড়ি খাইতে চাইলে আমি কি করতে পারি? দিলাম বাপরে ডাইকা ... বেচারারা বিশাল ঝাড়ি খায়ে বিরস বদনে বিদায় নিল
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
আর একটা কাজ করতে পারেন। -এ একটা মেইল করুন। জালাল ভাইয়ের সংগ্রহ করা নিজামির ৭১-এর কাযর্ক্রমের সেই সময়কার পেপারকাটিং আপনাকে মেইল করে দিতে পারবো তাহলে। আপনি প্রয়োজনীয় অংশগুলো কষ্ট করে প্রিন্ট নিয়ে ছেলেটাকে দেখান। অষ্টম শ্রেণী মানে তো অবুঝ নয়; অন্তত আমরা যতোটা অবুঝ ওই বয়সীদের ভাবি ততোটা নয়।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
সামনেই তো ১৪ ই ডিসেম্বর আসছে । বিশেষ করে ওইদিন কী হয়েছিল এইটা ওকে বলতে পারেন । সম্ভব হলে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যেতে পারেন। ওইদিনের টিভির প্রোগ্রামগুলো দেখতে বলতে পারেন। আমার মনে আছে গত বছর ১৪ ই ডিসেম্বর টিভির প্রোগ্রাম দেখতে দেখতে রাগে-দু:খে আমার তখনকার কলিগ মুজাহিদের ছেলেকে এসএমএস করে বলেছিলাম আমার হৃদয় নিংড়ানো ঘৃণা তার বাবাকে পৌঁছে দিতে।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের " আমার বন্ধু রাশেদ" আর শহীদ জননী জাহানারা ইমামের " একাত্তরের দিনগুলি" পড়তে দিতে পারেন।
আচ্ছা, জাফর ইকবাল স্যার বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের যে সংক্ষিপ্ত ইতিহাসটা লিখেছেন, সেটা স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে ইংরেজি করা যায় না? পিডিয়েফ করে ছড়িয়ে দেয়া যায়। ইংরেজি মাধ্যমে জামাতমনস্কতা ছড়িয়ে পড়ছে কারণ বাংলা ভাষা থেকে একটু তফাতে থাকলে বাংলায় লেখা উপকরণ থেকেও দূরে থাকা হয়।
ভাইয়া সচলেতো বেশ ক্ষমতাবান ভাইয়ারা আছেন, আর প্রতিভাবান ভাইয়ারাও আছেন, আসেন না একটা নাটক বা চলচ্চিত্র বানাই সবাই মিলে শিবিরের বিরুদ্ধে। (যদিও মাইর খাওয়ার সম্ভবনা আসে, কিন্তু বাংলাদেশে কি একজন মাইকেল মুর হতে পারে না ?)
হিমু ভাই,
আমি যতটুকু জানি এটা স্যারের মেয়ে ইয়েশিম ইকবালের অনুবাদ করে ফেলার কথা এবং এটা এতদিনে বই আকারেও বের হয়ে যাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে এটাও একই ওয়েব সাইটে আপলোড করে দেয়া যায়। দেখি ওয়েবসাইটের সাথে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সাথে যোগাযোগ করে।
আর যদি অনুবাদ কোনো কারণে না হয়ে থাকে তাহলে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে অনুবাদ করা তো যায়ই । আমার এখন অনেক ফ্রি টাইম, তাই শ্রম দিতে কোনো সমস্যা নেই। শুধু বইলেন।
ইয়েশিম ইকবাল যদি করে থাকেন তাহলে নতুন করে অনুবাদের কাজে হাত দেয়ার আর দরকার নাই। আপনি একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন।
কেউ কি জানেন, "একাত্তরের দিনগুলি" ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে কি না? বইটির স্বত্ব এখন কে সংরক্ষণ করেন জানি না, তাঁর সাথে আলাপ করা যায় এ ব্যাপারে। আমার মনে হয় এই বইগুলি এখন ইংরেজিসহ আরো কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হবার সময় চলে এসেছে। প্রয়োজনে সচলে অনুচ্ছেদ ভাগ করে নিয়ে আমরা শুরু করে দিতে পারি, একজন সম্পাদকের তত্ত্বাবধানে। সচল শোহেইল মতাহির চৌধুরী আর s-s সম্পাদনার কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবেন বলে মনে করি।
একাত্তরের দিনগুলির একটি ইরেজি সংস্করণ বেরিয়ে ছিলো বেশ ক'বছর আগেই, তার নাম খুব সম্ভবত ছিলো Of Blood And Fire। দেশে যারা আছেন একটু খোঁজ করে দেখবেন কি? আমিও চেষ্টা করছি।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
http://www.liberationwarbd.org/ এখান থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবালের “মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস” বইটির বাংলা ও ইংরেজী ভার্সন ডাইনলোল করা যাবে।
লেখককে বলি, সাইফ ভাইয়ের এই লেখাটা প্রিন্ট করে পড়তে দিন http://www.sachalayatan.com/801146835/26467
অনেক ধন্যবাদ।
সজীব ভাই,
সাইফ ভাইয়ের লেখাটা পড়েতো গা শির শির করতেছে। (একটু ভয়ও পাইছি।) আচ্ছা এদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় না কেন?
- উপায় তো অনেকগুলোই বের হইছে এর মধ্যে। আমি একটা যোগ করি।
আপনি খুব ঠাণ্ডা স্বরে তারে বলেন যে যারা তাকে নামাজ পড়তে বলতেছে তাদের এটা বলায় আসলে কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু তারা আসলে একটা রাজনৈতিক দল। এরা যে রাজনৈতিক দল সেটার প্রমাণ আপনার ছাত্রকে দেখাতে পারবেন খুব সহজেই, কারণ বইয়ের পেছনেই তাদের নাম আছে। এখন বলুন যে ভালো হোক খারাপ হোক অন্তত এইচএসসি (এ লেভেল) পাশ করার আগে কোনো রাজনৈতিক দলের সংস্পর্শে আসা তার জন্য ক্ষতিকর হবে। নিজের উদাহরণ দিন। বলুন যে গোল্ডেন জিপিএ পেতে হলে তার এই কষ্টটুকু করতেই হবে। তাকে আত্মবিশ্বাস দিন যে দেশের তাকে প্রয়োজন কিন্তু এখনই না। যখন সময় হবে তখন সে নিজেই বুঝতে পারবে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি ঝুঁকে যাওয়ার বয়স এটাই নয়। দেখে শুনে বুঝে, তারপর।
আর উপরে যে পথগুলো বলা হলো, ধাপে ধাপে সেগুলো করে যান। ধৈর্য্যহারা হলে চলবে না।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধূগোদা,
আমি যে আশংকাটা করছি তা হচ্ছে, ওকে পড়াই সপ্তাহে তিন দিন। আমি ওকে সার্বক্ষণিক গাইড করতে পারবো, আর কোন ভাবে এই তথ্যটা যদি শিবির জানতে পারে যে ওকে কোয়ারেন্টাইন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাহলে ওরাও ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করবে। আর আমি ধৈর্য ধরেই কাজটা করছি। এটা শিবিরের সাথে আমার লড়াই না, এটা আমার দেশের স্বাধীনতার সাথে একদল জানোয়ারের লড়াই, এখানে হেরে গেলে চলবে না।
--নীল ভূত।
- আপনি তো তাকে সরাসরি শিবির করতে বারণ করছেন না। যেটা করছেন, সেটা হলো তাকে আপাতত যেকোনো রাজনৈতিক দলের সংস্পর্শে আসতে মানা করছেন। যেটা তার ভালো রেজাল্টের জন্য সহায়ক হবে। আর এর উদাহরণ স্বয়ং আপনি। আপনি ভালো রেজাল্ট করেছেন কারণ আপনি কোনো রাজনৈতিক দলের সংস্পর্শে আসেন নি।
এটা হবে আপনার প্রথম কাজ। শিবির আপনাকে চার্ড করলেও তেমন কিছু আপাতত বলতে পারবে না। কারণ সেক্ষেত্রে আপনার কথা হবে। ও বড় হোক, তারপর আপনাদের মিটিং-এ গেলেও সমস্যা আমার কোনো সমস্যা নাই। আপাতত আমি কেবল ও কেবলমাত্র ওর পড়াশুনা নিয়েও কনসার্নড, ওর পরিবারও তাই। এটা ওর পরিবারের সিদ্ধান্ত, এসেছে আমার মাধ্যমে। অবশ্য আমার মনেহয় না শিবির এতোদূর আগানোর সাহস পাবে!
যাইহোক, ছাত্রকে যদি রাজনৈতিক দলের ব্যাপারটা বুঝাতে সক্ষম হোন তাহলে হাতে অনেক লম্বা না হলেও মোটামুটি বেশ বড় একটা সময় পাবেন। এই সময়টায় তাকে কাঁদামাটির পুতুলের মতো গড়ে তুলুন উপরের পন্থাগুলো প্রয়োগ করে। ওকে নামাজ-রোজা করার কথা আপনি নিজেও বলুন। পাশাপাশি মাথা পরিষ্কার করার থেরাপী চালিয়ে যান।
শিবির তো তাকে কেবল নামাজ পড়ার কথা বলেই এগুতে চায়! তো সেই কথা যদি আপনিও তাকে বলেন তাইলে অন্তত ও আপনাকে খারাপ(!) লোক ভাববে না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
--এইটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা। মাথা ঠান্ডা রেখে ধাপে ধাপে ছেলেটাকে এই অশুভচক্রের আওতা থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। ছেলেটার পরিবার , পারিপার্শ্বিকতার মনোভাব বোঝাও দরকার। শিবির ভাও বুঝে রঙ বদলায়। খুব সাবধানে না আগালে এদের ভূত সরল মনের ছেলেদের মাথা থেকে নামানো কঠিন হয়ে যেতে পারে।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলি। পাড়ার এক বড়ো ভাইয়ের সাথে খুব খাতির ছিল, একসাথে ক্রিকেট খেলতাম, একুশে ফেব্রুয়ারীতে শহীদ মিনার বানাতাম, দেয়াল পত্রিকার অলংকরণ নিয়ে রাত জাগতাম। সেই বড়ো ভাই কলেজে উঠে শিবিরের খপ্পরে গিয়ে পড়লো। আর খেলতেও আসেনা, একুশে ফেব্রুয়ারী বা বিজয় দিবসেও তারে পাইনা। একদিন আমাদের সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতার কথা বলে একবার মসজিদে নিয়ে গেল (তাও আবার বিকেলে খেলার সময়)। বই পুরস্কার নিয়ে বাড়ী ফিরে দেখি বইয়ের পেছনে ছাত্র শিবির লেখা। আমি তখন ক্লাস সিক্সে। জামাত-শিবির নিয়ে তেমন সচেতন ছিলাম না। আমার বাবা বইটা দেখে ভয়ানক ক্ষেপে গেলেন, যদ্দুর মনে পড়ে ঈশপের গল্পের একটা জামাতি সংস্করণ ছিল সেটা। বাবা নিজেই আমাদের বইমেলায় নিয়ে গিয়ে বই কিনে দিতেন, খুব ছোটবেলা থেকেই। বললেন বইয়ের লোভে শিবিরের কোন আড্ডায় যেন আর না যাই। কেন যাওয়া উচিত না সেটাও বুঝিয়ে বললেন,জামাতিদের বর্বরতার ইতিহাস সহ। এর পর থেকে জীবনে আর কোনদিন শিবিরের খপ্পরে পড়ি নাই। যদিও তারা নানাভাবে চেষ্টা করে গেছে।
পারিবারিক পরিবেশ এবং সচেতনতা শিবিরের রাহুগ্রাস হতে মুক্ত থকতে অনেকটা সাহায্য করে।
আমাদের স্কুলেও একজন সহজ-সরল, অমায়িক, ভদ্র, আধুনিক 'বাপ্পী ভাই' ছিলেন। তার প্রথম কাজ ছিল ক্লাস সেভেন এর ছেলেদের নিয়ে রাস্তার ধারে আড্ডা দেওয়া আর ডলারের ছাপ মারা সুগন্ধী কলম গিফট করা (আমিও পেয়েছিলাম হে হে)। তারপর কুইজ কম্পিটিশন, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, তার মেসে দাওয়াত, কৃতি ছাত্র সংবর্ধনা, শেষ পর্যন্ত ফুলকুড়িতে রিক্রুটমেন্ট। এক বছরের মধ্যেই আমার বন্ধু-বন্ধবেরা বলতে শুরু করল, "২৫ বছর পর রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা বলে কিছু থাকেনা!" তবে 'বাপ্পী ভাই'য়ের অকাল(!) গ্রাজুয়েশনের পর যাদেরকে ঐ ছেলেভুলানো পোস্টে নিয়োগ করা হয়েছিল তারা ছিল রীতিমত অপদার্থ। অন্যদিকে প্রগতিশীল সংগঠন অনিরুদ্ধের তখন জয়-জয়কার। ওরাও পাল্ট্টাপাল্টি আরেকটা সাংস্ক্রৃতিক সংগঠন বানানোর চেষ্টা চালিয়েছিলো, কিন্তু ওরা ভাত পায় নাই হে হে। আর আমার যে বন্ধু উপরের ডায়ালগটা ছেড়েছিল, সে এখন একজন মুক্তমনা মানুষ ও নিবেদিত সংস্ক্রৃতি কর্মী!
আমিও ক্লাস সেভেন এ ওদের দাওয়াত পেয়েছিলাম। এখনতো দেখতেসি ওরা প্রায় সবার কাছেই পৌছে গেছে। কে ওদের দাওয়াত পায়নি সেটাই খুজতে হবে। তাও আমাদের ভাগ্য ভাল যে আব্দুল্লাহ আবু সাইদ স্যারের "বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র" অনেককে ওদের হাত থেকে বাচিয়ে রাখছে। আমার মনে হয় এই রকম আরো কার্য্যক্রম দরকার।
শিবির যে ক্লাস ৭/৮ এর ছাত্রদের এইভাবে "মগজ ধোলাই" করছে এটা আইনের চোখে কতটুকু গ্রহনযোগ্য ? এমন আইন কি আমরা করতে পারিনা যেনো আমাদের কচি প্রানগুলো মুক্তভাবে বেড়ে উঠবে? এখন নাকি আমাদের "স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি" ক্ষমতায়! আমারা সবাই জানি শিবির কি করছে, ওরা কি জানে না?
জাফর ইকবালের সফদর আলীর বই যে না পড়ছে তার কৈশর মিছা। নাম-- বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিস্কার। সৌভাগ্যবশত এই বইটি দিয়েই তাঁর লেখা পড়া শুরু করেছিলাম। আর 'আমার বন্ধু রাশেদ', 'একজন দূর্বল মানুষ' পড়ে শুধু কেঁদেছি। এসব বই পারলে উপহার দেন। ই-বই না, জেনুইন বই।
সর্বশেষ আপডেট :
১। আমি ছেলেটির মার সাথে কথা বলেছি, তিনি ব্যাপারটি জানতেন না। আর উনাদের যৌথ পরিবার, তাই খুব একটা সময় ও বোধ হয় দিতে পারেন না। আর আমি বলে দিয়েছি যাতে বকাঝকা না করে ঠান্ডা ভাবে ওর সাথে কথা বলে। সরাসরি চার্জ না করে, আস্তে আস্তে সরিয়ে আনতে বলেছি।
২। আমি একটা প্রস্তাবনা দিতে চাই, আপনাদের উপদেশ জানাবেন :
ওর বাসায় ইন্টারনেট লাইন নেই। আমি ওর বাবা-মায়ের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করে দিতে পারবো। কিন্তু একটা সমস্যা আছে, সেটা হচ্ছে ও ইন্টারনেট থেকে শিবির-পক্ষীয় তথ্যাদি পেতে পারে। সেটা বন্ধ ও আমি করতে পারবো। যেমন আমি ওর হিস্ট্রি পেজ দেখে দেখে ওই সাইট গুলো দেখতে পারবো। এইক্ষেত্রে আমাকে যে সাহায্যটা করতে হবে সেটা হচ্ছে কোন একটা নির্দিষ্ট সাইট কিভাবে ব্লক করে আমি জানি না। আপনারা যদি কেউ জানেন, বলে দিতে পারেন। আর আমি সচেতন ভাবে তো ওকে কিছু ওয়েবসাইটের নাম দিবো, সাথে সাথে অন্যান্য কাজ (মুভি, গান, ব্লগ,গেমস) -এর ব্যপারেও উৎসাহিত করতে পারবো।
আপনারা কি বলেন? জানাবেন।
-- একজন নীল ভূত।
ইন্টারনেটের ভালো খারাপ দুইদিকই আছে। ছোটবেলা থেকেই নেট ব্যবহারের অভ্যেস কাজের; কিন্তু একবার ফেসবুকের সন্ধান পেয়ে গেলে অনেক সময় নষ্ট হবে। ইন্টারনেট দিলে সাইট ব্লক করার দরকার নেই। কাজের সাইটগুলোর লিংক দিয়েন। তাইলে শিবিরের সাইটে ঢুকলেও ভুল ধরতে পারবে না। নেটে ঢুকলে অবশ্য রাজনীতির মারপ্যাচের চেয়ে বেশি মজার জিনিস পাবে সময় কাটাতে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আজকে হোক কালকে হোক ফেসবুক চিনবেই । বাসায় নেট আসা মাত্রই হয়ত ফোন করে ক্লাসের বন্ধুদের কাছ থেকে সবার ফেসবুক আইডি বের করে সবাইকে অ্যাড করবে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
যেটা ব্লক করবেন সেটার দিকে টান থাকবে বেশী। নিষিদ্ধ জিনিস থেকে দূরে রাখতে গিয়ে সেটার কবলেই না পড়ে যায়!
১
খুব অল্প বয়সী একটা ছেলেকে নিয়ে কথা হচ্ছে । উপরের মন্তব্য গুলোতেই অনেকেই অনেক ভাল ভাল বই পত্র সিনেমা ইত্যাদির নাম বলেছেন দেখলাম । কিন্তু এইসব ভাল জিনিস ধুম করে একবারে তার সামনে ফেলে দিলে আদৌ খুশি হবে বলে মনে হয়না । তার উপর যখন সেগুলো আসছে গৃহশিক্ষকের হাত দিয়ে । আপনাকেও খুব সূক্ষ্ম মগজ ধোলাইয়ের অভিযানে নামা লাগবে, এছাড়া হবেনা । ছেলেটির মনে ইতোমধ্যেই শিবির সম্পর্কে সুন্দর ধারনা তৈরী হয়েছে । চট করে তার সামনে "শিবির খারাপ" বললে ফল ভাল নাও হতে পারে । সে ভেবে বসতে পারে, "আমার স্যার খারাপ, শিবির কে খারাপ বলে" । আপনাকে সর্বাগ্রে প্রমান করতে হবে আপনি "সুপার ডুপার কুল ভাল" । ছাত্র যখন দেখবে তার "সুপার ডুপার কুল ভাল স্যার" বলেছেন শিবিরে কিছু গ্যাঞ্জাম আছে, তখন বিশ্বাস করবে যে শিবিরে আসলেই হয়ত কিছু গ্যাঞ্জাম আছে ।
২
জ্বীনে ধরা মানুষকে ওঝার কাছে নিয়ে গেলে মারপিট থেকে শুরু করে তন্ত্র মন্ত্র ইত্যাদি অনেক রকম আজগুবি কাজ করে । কিন্তু একজন মনোচিকিৎসক (সাইক্রিয়াট্রিস্ট) কিভাবে জ্বীন ছাড়ায় কখনো দেখেছেন বা শুনেছেন ? মনোচিকিৎসায় সেই পদ্ধতিটিকে বলা হয় কাউন্সেলিং থেরাপি । কাউন্সেলিং এর প্রথম ধাপ থাকে রোগীর আস্থা অর্জন । আপনি যেই কাজটা করতে চাচ্ছেন, তাতে আপনাকেও আগে ছাত্রের আস্থা অর্জন করতে হবে । ছাত্রের আস্থা অর্জন করার আগেই বিভিন্ন রকমশিক্ষামূলক জিনিস তার সামনে দিলে খুব একটা লাভ হবে না । উলটা আপনি "বোরিং" হিসেবে মার্কামারা হয়ে যেতে পারেন । এর ফলে আপনি ভবিষ্যতে যাকিছু বলবেন সবকিছু "বোরিং" মনে হবে ।
৩
নিজেকে ছাত্রের সামনে বুদ্ধিদীপ্ত এবং মজার মানুষ (কিন্তু জোকার না) হিসেবে তুলে ধরুন । ছাত্রের সামনে হয়ে উঠুন একজন আদর্শ বড় ভাই । প্রমান করে দিন ছাগু গুলোর চেয়ে আপনি দশগুন বেশি "কুল" । একসময় নিজেকে ছাগু গুলোর চাইতে বেশি "কুল" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে দেখবেন ছাত্র এমনিতেই আপনার সমস্ত কথা গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে । নিজেই মনে করে দেখুন, স্কুল এবং কলেজে থাকতে কোন কোন শিক্ষককে বেশি পছন্দ করতেন এবং কেন করতেন । তাদের কথা গুলো বেশ ভাল লাগত কিনা ।
৪
একবার ছাত্রের আস্থা অর্জন করে ফেলতে পারলে শুধু শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান না, আরো অনেক কিছুই সহজে করে ফেলা যাবে । তার মধ্যে একটা হল ভাল করে লেখা পড়া । অচিরেই ছাত্র তার বাবা মায়ের কাছে জানিয়ে দেবে, "নীল ভূত" স্যার ছাড়া অন্য কারো কাছে পড়ার দরকার নাই । আপনার দিক থেকে একই সমান শ্রমে ছাত্রের পরীক্ষার ফলাফলেও বেশ উন্নতী ঘটবে । আপনার গুরুদক্ষিনাও বাড়তে পারে
৫
আশা করি আপনার এই অভিযানটি সফল হবে । আপনার মত আর সমস্ত গৃহশিক্ষকেরা যদি এভাবে নিজের নিজের ছাত্রগুলোর দিকে নজর দিত তাহলেও বাংলাদেশে ছাগুদের অগ্রগতী কিছুটা থামিয়ে দেয়া যেত ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
উপরের মন্তব্যটি আপনার সর্বশেষ আপডেট জানার আগে লিখতে বসেছিলাম । মন্তব্য পোস্ট করে দেখি আপডেট এসে গেছে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এনকিদু ভাইয়া,
আমি কিন্তু ইন্টারনেট দিয়ে দেই নাই, আমি জিজ্ঞেস করলাম দেওয়াবো কিনা।
কুল, ব্যপারটা একটু বিশদে বলেন... 'প্রাইভেট ভার্সিটির' 'কুল দুউদ' হইতে পারুম না কিন্তু :P।
আর ধন্যবাদ, আমার চেষ্টাটাকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য।
নীল ভূত।
ছাত্রের আস্থা অর্জন করতে পারলেই আপনি কুল, না পারলে বোরিং । এর চেয়ে সহজ ব্যাখ্যা এখন মাথায় আসছেনা । আপনি ভাল ক্রিকেট খেলেও ছাত্রের চোখে কুল হয়ে উঠতে পারেন, ভাল কবিতা লিখেও হয়ে উঠতে পারেন, বিরাট বৈজ্ঞানিক প্রতিভা (জাফর ইকবালের ক্যাপ্টেন ডাবলুর মত) দেখিয়েও কুল হয়ে উঠতে পারেন, ভাল ভাল গাল গল্প ফেঁদেও কুল হয়ে উঠতে পারেন, অন্য কোন উপায়েও হতে পারেন । আপনার শক্তিশালী দিক কোনটা, সেটা কাজে লাগিয়ে কিভাবে কুল হবেন সেটা আপনিই ভাল বুঝবেন ।
পুনশ্চ: "কুল দুউদ" না হতে পারলেও এমন কোন ক্ষতি হবে বলে মনে হয়না ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
শিবির থেকে ফেরানোর চেষ্টা করবার দরকার নাই।
ওকে মানুষ বানানোর চেষ্টা করুন।
ওদের সামাজিক অবস্থান কেমন খেয়াল করুন, ঐ পরিবারের সাথে সামাজিক ভাবে মেশার চেষ্টা করুন। একদিন হয়তো ছেলেটাকে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর থেকে ঘুরিয়ে আনলেন। আরেকদিন সাভারের স্মৃতি সৌধ বা রায়েরবাজারে।
ছেলেটা আস্তে আস্তে মানুষ হবে। মনে রাখবেন একজন ধার্মিক আর জামাতীর মধ্যে পার্থক্য অনেক, আমরা অনেক্সময় তা গুলিয়ে ফেলি।
.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজদা,
আপনি যথার্থই বলেছেন। আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালাবো।
আর দয়া করে আমাকে 'আপনি' বলে ডেকে লজ্জা দিবেন না। (এটা সচলের সব বড় ভাইদের বলছি, আমি আপনাদের অধিকাংশেরই জুনিয়র। আমাকে ছোট ভাই বলে ডাকলে খুশি হবো, আরো আপন মনে হবে।)
মুহাম্মদ জাফর ইকবালের প্রিন্টেড বইগুলো (ই-বুক নয়) ধরিয়ে দিতে পারলে খুবই উপকারে আসবে মনে হয়। দেখুন চেষ্টা করে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আপনার সাফল্য কামনা করছি।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এই বয়েসের বাচ্চাদের একটা আইডল থাকে। ওরা আইডলদের কথাবার্তা ধর্মের মতন করে মানে। ওর কোন আইডল আছে কি না বোঝার চেষ্টা করো।
ওর আইডলদের তালিকায় মোহাম্মদ আছেন এতে কোন সন্দেহ নাই। তুমি মোহাম্মদের দুই একটা কথাবার্তা যেগুলা মানুষ-হত্যার বিরুদ্ধে যায় সেগুলা গল্পচ্ছলে বলতে পার। ৭১ এর ঘটনা তার রেশ ধরে টানতে হবে। এছাড়া তো আর উপায় দেখি না।
সবচেয়ে বড় কথা, এই বয়সে বাচ্চারা ভালো মানুষ হওয়া আর ধার্মিক হওয়াটাকে এক করে দেখে। সে'দুটো যে আলাদা সেটা বোঝাতে পারাই হবে তোমার বড় চ্যালেঞ্জ।
আরেকটু বড় হলে কোরানের রেফারেন্স দেওয়া যেত। জামাতীরা যে কোরানের কথা বলে না, সেটা তথ্যসহ বোঝানো যেত।
!!তবে যেটাই করো, পরিবার বিষয়ে হিমুর সতর্কতা স্মর্তব্য!!
চেষ্টা করতে থাকো, সাফল্য কামনা করছি।
বস, ওই পোলাতো বুঝেইনা যে তেনারা শিবির... ওইটা আগে বোঝানো দরকার...
নতুন মন্তব্য করুন