এমন করে এক বছর পেরিয়ে গেল। মাধবী খুব খুশি, ওর মামাতো বোনের বিয়ে। বাড়ি যাবে। কিন্তু ছুটি পায়না আমাদের কাছ থেকে। কেন এ বছর বাড়ি যেতে পারবেনা তার এতরকম কারণ বলা হয় বেচারা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। কি হবে বাড়ি গিয়ে? রোদে রোদে ঘুরবে, কাল হবে, মাথায় আবার উকুন হবে। অপ্রকাশ্য কারণ হল, এক বছরের মাথায় বাড়ি গেলে এখানে মন বসবেনা। যদি আর না ফেরে! তেল-সাবান, ফ্যানের বাতাস, ভাত যদি হেরে যায় শিম ফুল, ক্ষিদা আর ঘুঁটের কাছে! মাধবী কিছুদিন খুনখুনে মনখারাপ করে, বারান্দায় যাওয়া বেড়ে যায়, ছাদে কাপড় তুলতে গেলে দেরি করে ফেরে, তারপর ঠিক হয়ে যায়। আবার একদিন সিরিয়াল দেখতে গিয়ে খিলখিল হেসে ওঠে।
আমরা দুবোন একদিন গান করছিলাম। মাধবী হঠাৎ কোথা হতে এল, ফাগুন দিনের স্রোতে এসে, হেসেই বলে যাই, যাই, যাই।গানটা শুনে ও খুব অবাক হয়। আমরা বলি দেখ তোমাকে নিয়ে গান লেখা হয়েছে, অনেক বড় এক কবি লিখেছেন। পাতারা ঘিরে দলে দলে তারে কানে কানে বলে, না না না, নাচে তাই তাই তাই। ও গাইতে থাকে, যাই, যাই, যাই। আমরা গাইতে থাকি না, না, না।
এর কিছুদিন পর ওর দাদা আসে। এতদিনের কাজের জমান টাকা নিতে। বাড়িতে ঘর তুলবে। মা ওকে বলে, সব টাকা দিসনা, তোরও তো একটা ভবিষ্যত আছে। মাধবী অবলীলায় দিয়ে দেয়। স্বপ্ন দেখে নতুন ঘর উঠবে। গান গায়
ফুলের দোলায় দোলে শ্যাম
সখী তোরা দেখে যা
মেঘে আর জ্যোৎস্নায় রূপ যেন উথলায়
অপরূপ নয়নাভিরাম
নতুন ঘরের টিনের চালে জ্যোৎস্না আর মেঘের মাখামাখি চোখে রেখে ঘুমিয়ে পরে। বিকালে আমাদের ছবি এঁকে বোঝায় ওর বাড়ি যাওয়ার নিখুঁত রাস্তা। গুগল ম্যাপ ও হার মানবে। বাস থেকে নামলেই একটা লম্বা কালো পিচের রাস্তা। রাস্তার দুপাশে প্রকল্পের লাগানো গাছ আর গাছ। কিছু ভ্যান, কিছু রিকশার টুংটাং। যেতে থাক, যেতে থাক। চোখেমুখে এসে লাগবে সর্ষে ফুলের গন্ধ। যেতে থাক, যেতে থাক। কিছু বাচ্চাকাচ্চা হাঁ করে দেখবে তোমাকে, সিকনি টানতে ভুলে যাবে। যেতে থাক, যেতে থাক। এবার রিকশা থামাতে হবে। হ্যাঁ, এবার হাঁটা পথ। সাবধানে। এবড়োথেবড়ো মাটির রাস্তায় তোমার পেডিকিউর পা হোঁচট খাবে। হাঁটতে থাক, হাঁটতে থাক। দেখবে তোমার চোখ নাক মুখ ঠেসে ঢুকতে থাকবে নীল আর সবুজ। ওই দেখ দূরে মাধবীর মা-ঠাকুমাকে দেখা যাচ্ছে। খবর পেয়ে দুজনেই আসছে হাঁফাতে হাঁফাতে। মাধবীর ব্যাগে ওদের দুজনের জন্য সরু পেড়ে সাদা শাড়ি। আর ঐ যে নতুন ঘরের টিনের চালের ঠিকরানো রোদ তোমার চোখে ধাঁধা লাগায়। ঝলমল করছে মাধবী। সাথে আমরাও। কিন্তু এসব কিছুই হয় না।
খবর আসে মাধবীর টাকাটা স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে ওর দাদা। আবার কিছুদিন পর টাকা চেয়ে চিঠি লেখে দাদা। এবার এখান থেকে মা না করে দেয়, মাধবী আর ওর দাদাকে টাকা দেবে না। দ্বিতীয় বছর ঠাকুমা মারা যায় মাধবীর। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে, বাড়ি যাবে। ওর দাদাকে বারবার জানানো হয় মাধবীকে এসে নিয়ে যেতে। দাদা আসে না। মাধবী বলতে থাকে, দাদা রাগ করেছে। টাকা দেব না বলে রাগ করেছে। মাসিমা আমার সব টাকা দিয়ে দেন দাদাকে, বলেন আমি সব টাকা দেব, আমাকে যেন নিয়ে যায়। দাদা আসে না। মাধবী আবার কিছুদিন খুনখুনে মন খারাপ করে, গুনগুন করে কাঁদে, তরকারিতে লবণ বেশি দিয়ে ফেলে। তারপর আবার সব ঠিক হয়ে যায়। আবার একদিন সিরিয়াল দেখতে গিয়ে খিলখিল হেসে ওঠে।
পরের বছর। গোটা বছরটা দাদা কোন খোঁজ নেয় না মাধবীর। এসব নিয়ে আর তেমন মন খারাপ করে না ও। পায়ে স্যাণ্ডেল ছাড়া খালি পায়ে হাঁটতেই পারে না। ফ্রিজের জল ছাড়া খেতে পারে না। ফোনে চমৎকার করে হ্যালো বলে। নতুন আরেকটা মেয়ে এসেছে। মাকে বলল, মাধবীর সাবান যেন ওই মেয়ে গায়ে না দেয়, ওই মেয়ের গায়ে নাকি গন্ধ। আমরা বুঝি মন বসে গেছে। মাধবী আর যাই যাই করে না। হঠাৎ খবর আসে ওর মা মারা গেছেন। আবার ওর দাদাকে আসতে বলা হয়। দাদা আসে না। এবার মা খুঁজে পেতে একজন লোক ঠিক করে মাধবীকে বাড়ি নিয়ে যাবার। ততদিনে দাহ হয়ে যায়। মাধবী বলে, আর বাড়ি যাবে না। কেন যাবে বাড়ি? বাড়িতে খাওয়ার কষ্ট, মা নেই, ঠাকুমা নেই, ফ্যানের বাতাস নেই, কেন যাবে বাড়িতে? আমরা বুঝি মন খুব বসে গেছে। শ্যামের গান আর গায় না।শ্যাম এখন ক্যামেরনের।
এখন আমি অনেক দূরে। বাড়ি থেকে। গত তিন বছর যাই নি। এখানে কল খুললে গরম জল বেরোয়, এখানে ঝকঝকে রাস্তা, এখানে থ্রিডি সিনেমা। শুধু মাঝরাতে, হঠাৎ হঠাৎ একটা কুটকুটে ভয়ে ঘুম ভেঙ্গে যায়, বাড়ি ফেরা হবে তো?
______
আনন্দী কল্যাণ
মন্তব্য
খুব ভালো লাগল কল্যাণীদি। আপনার আরো লেখা পড়তে চাই।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ :)।
মাহবুব ভাই, দিদি বলেন না। অনেক জুনিয়র আপনার
আচ্ছা আর দিদি বলব না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আসুক আরো।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
ঠিক আছে
আরেকটি দারুণ গল্প পড়তে দিলেন বলে ধন্যবাদ!
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপু, আপনার লেখাটা কি যে ভালো লাগলো!! আমিও দেশছাড়া গত এক বছর। দেশে আমাদের বাসাতে গ্রাম থেকে এসে যে মেয়েগুলো থাকতো, তাদের গল্পগুলোও একদম মাধবীর মত। ওরা গ্রাম থেকে আসতো। প্রথমে কিছুদিন মন প্রচন্ড উদাস করে বসে থাকতো। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে মুখের ভাষা বদলে যেত। টিভির অ্যাড দেখে নতুন ব্র্যান্ডের সাবানের বায়না করতো। ওদের এই ট্রানজিশানের প্রসেসটা নিজে বাইরে আসার আগে কোনদিন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি। কিন্তু এখন বুঝি - অক্ষরে অক্ষরে বুঝি ওদের মনের গহীন কোণের প্রত্যেকটা সুক্ষাতিসুক্ষ অনুভুতি!!
ধন্যবাদ এমন চমৎকার একটা লেখার জন্য!
ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যর জন্য।
খুব ভালো লাগলো।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
- ঠাস বুনটের লেখা, বরাবরই ভালো লাগে। কিন্তু ট্যাগে যে বললেন অণুগল্প! এটা অণুগল্প হলে পরে ছোট গল্পেরা রাগ করবে না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অণু আর ছোট ঝামেলায় আছি , বুঝতে পারছিনা।
দারুণ একটি গল্প।
আরও যেন আসে এমন গল্পগুলো।
ধন্যবাদ আপনাকে।
-----------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
অদ্ভুত !!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ভীষণ ভালো লাগলো!
ধন্যবাদ পাঠকদা
চমতকার গল্প!
আপনার প্রতিটি গল্পই কম বেশী গল্প হয়ে ওঠে। শুভকামনা জানবেন।
থামবেন না, একজন নিয়মিত পাঠক পাবেন।
একটা প্রশ্ন (অফটপিকে) সবার কাছেঃ
"তেলেনাপোতা......" এরকম কিছু একটা। কার লেখা? মার্জিনে মন্তব্যে শামসুল হক এ গল্পটি নিয়ে লিখেছেন।
"তেলেনাপোতা আবিষ্কার" বলে গল্পটার কথা বলছেন কি?
ওটি প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা এক বিখ্যাত গল্প, সেযুগে নতুন এক্সপেরিমেন্টাল গঠনশৈলীতে লেখা।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
- গল্পটার লিংক থাকলে দিয়েন তাল্লারেখা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হুম থামব না হয়ত। ধন্যবাদ পড়ার জন্য
দারুণ লাগলো!
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
খুব ভালো লাগলো আনন্দী কল্যাণ।
আমরা সবাইই বোধহয় এক একজন "মাধবী", জীবনের দাবীতে সময়ের স্রোতে ভেসে চলেছি কেবলই দূর থেকে দূরে, ফিরে আসার চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা বুকের ভিতরে সূর্যতারাহীন হিরণ্ময় অন্ধকারে লুকিয়ে নিয়ে।
শুভেচ্ছা রইলো, আরো লিখুন, অনেক লিখুন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। ভাল থাকুন
আপনার এই লেখাটিও চমৎকার হয়েছে ।
আরো চাই ।
আমরা দেই অবিশ্বাস, ও দেয় নিঃস্বার্থ
শ্যাম এখন ক্যামেরনের। পর্যবেক্ষণ ভাল লেগেছে ।
সবচেয়ে ভাল লেগেছে নিজেকে মাধবীর জায়গায় আবিষ্কার করে ।
বোহেমিয়ান
অসম্ভব ভাল লাগল আনন্দী৷ ভীষণ ভাল৷ একেবারে নিজের একটা গল্প বলে মনে হল৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
এইটা মনে হয় গ্রাম আসা কোনো মেয়ের গল্প নয়। আমরা ক্রমশ যে বনসাইয়ে রূপান্তরিত হচ্ছি, পরিমিত আলো-হাওয়ায় আমাদের বড়ো করা হচ্ছে, তারই বৃত্তান্ত যেন। এ আমার নিজস্ব অনুধাবন।
ভালো লাগলো।
..................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
বনসাই হয়ে যাই, কিন্তু নিজেরা বুঝতে পারিনা। যখন বুঝি ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
সাম্প্রতিক কালে ব্লগে এতো সুন্দর গল্প আর পড়েছি বলে মনে পড়ছে না...
খুব ভালো লাগলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হ
চমৎকার!
অনেক ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ
লাউগাছটার জন্ম হয়েছিলো মাটিতে,
সূর্যকে ভালোবেসেছিল সে-
খানিকটা সময় ফণা তুলেই ক্ষান্ত দিয়েছিল
ব্যর্থ সাপিনীর মতোই বুকে হেঁটে শুরু করেছিল
অনন্তযাত্রা।
অতঃপর লুব্ধদৃষ্টির কল্যাণে
কোন হোমোসেপিয়ান তাকে সন্ধান দেয় শুঁকনো বাঁশের।
লাউগাছ আশা পায়
শুকনো বাঁশটাকে জড়িয়ে উঠতে থাকে সূর্য ছোঁয়ার ইচ্ছায়...
বাঁশেরটুকরোর শেষে মাচানের শুরু,
লাউডগা ছড়িয়ে দেয় নিজেকে
হাত বাড়ায়
বারবার
হেরে যায়
আবার...
লাউডগা আজো আছে অপেক্ষায়;
অনন্তের আশায়।
---- মনজুর এলাহী ----
অনেক ধন্যবাদ ।
খুব, খুবই ভাল লাগল গল্পটি। মন হু হু করে উঠল মাধবীর জন্য, এবং যিনি গল্পটি বলছেন তার জন্য। এবং সবশেষে যার মন হু হু করে উঠল তার জন্যও!
ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
ধন্যবাদ পড়বার জন্য।
অপুর্ব অপূর্ব অপূর্ব
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
আপনার লেখাটা পড়ে কিছুক্ষনের জন্য থমকে গিয়েছিলাম..
কত সুন্দর করেইনা বাস্তবকে ফুটিয়ে তুললেন....
(জয়িতা)
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
বেশ কিছুদিন সচলে একটু আরাম করে, সময় নিয়ে লেখা পড়া হয়নি। আপনার এই দারুণ, দারুণ লেখাটা প্রায় মিস্ করে ফেলেছিলাম। ভীষণ ভালো লাগলো, ভীষণ। আপনার কলম-নামটাও (নাকি আসল?) খুব ভালো লাগলো।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
-----------------------------------------------------
আর কিছু না চাই
যেন আকাশখানা পাই
আর পালিয়ে যাবার মাঠ।
দুঃখিত এই মন্তব্যটি খেয়াল করিনি আগে। অনেক অনেক ধন্যবাদ পড়বার জন্য এটা আমার আসল নাম, বাবার রাখা।
আপনার নামটিতেও তো সুর
শেষের অনুচ্ছেদটা ছাড়া গোটা গল্পটা চমৎকার। তবে এটা মাধবীদের শহরবাসের একটা দিক। এর একটা কুৎসিত দিকও আছে যার বিস্তারিত আমরা জানি। গল্পটা বাড়ির মেয়ের কনটেক্সট থেকে দেখা বলে গৃহকর্মীর বেদনাগুলোর বেশিরভাগই আসতে পারেনি।
শেষের অনুচ্ছেদে প্রবাসী মেয়ের (সাবেক বাড়ির মেয়ে) দীর্ঘশ্বাসকে কোন বিচারেই মাধবীর দীর্ঘশ্বাসের সাথে মেলানো যায়না। এই মেলানোর চেষ্টা না করলেই ভালো হত।
গল্পের ভাষা, বর্ণনার ভঙ্গী ভালো লেগেছে। কিছু কিছু রূপকল্পতো অসাধারণ কাব্যিক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মাধবীদের শহরবাসের অনেকগুলো দিকের মাঝে আমি শুধু একটা দিকেই মনোযোগ দিতে চেয়েছি এই গল্পে। সেটা হল কিভাবে নানান ম্যানুপুলেশনে পড়ে ওরা থেকে যায় একটু ভাল থাকার জন্য, খাওয়ার জন্য।
কুৎসিত অনেক দিক আছে জানি, সেগুলোকে এড়িয়ে গেছি ইচ্ছা করেই গল্পের ফোকাস ঠিক রাখার জন্য।
আমরা যে বাইরে পড়তে আসি, কাজ করতে আসি সেটাও তো সেই একটু ভাল খাওয়া-পরার জন্যই, না? আমাদের সুপারভাইজার, বসেরা আমাদের ম্যানুপূলেট করে, বছরে একবার ছুটি দেয় বাড়ি যাবার জন্য, দেশে না গিয়ে এখানে থেকে কাজ করলে তারা খুশি হয়। বাড়ির জন্য মন কেমন করা, দেশে যাওয়ার টিকিটের টাকা জমানো, গোছগাছ--- একইরকম নয় কী মাধবীর মত? তারপর একসময় এই পরদেশে অভি্যোজিত হয়ে যাই, ব্যস।
তারপরও, নিশ্চই মাধবীর দীর্ঘশ্বাস আরও দীর্ঘ, যা আমি আমার জায়গা থেকে ওর মত করে কখনোই বুঝতে পারব না।
অনেক, অনেক ধন্যবাদ পাণ্ডবদা আপনার এই মন্তব্যটির জন্য
অসাধারণ লাগল।।
নতুন মন্তব্য করুন