বেশ কিছুদিন আগে এক সন্ধ্যায় আমার মোবাইলে একটা মিস কল আসে। আমার চাকুরীর বদৌলতে মোবাইল বিল নিয়ে কখনোই ভাবতে হয় না, তাই কোন প্রকার সাত-পাঁচ না ভেবে কল ব্যাক করি। অপর প্রান্ত থেকে একটা সুরেলা মেয়েলি কন্ঠ হ্যালো বলে, আমি যেহেতু অবিবাহিত এবং ছেলে মানুষ সেহেতু স্বাভাবিক কারণেই পুলকিত হই এবং কথা বলতে নিজ থেকেই আগ্রহী হয়ে উঠি। আমার আগ্রহকে সে অবজ্ঞা না করে বরং উৎসাহিত করে। আমাদের মাঝে অনেক ক্ষণ কথা হয়, নিজেদের পরিচয় পর্ব শেষ হয়, আমরা বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই। সেই থেকে সে আমার ভালো মোবাইল বন্ধু হয়ে যায়। আমরা নিয়মিত কথা বলি, একে অন্যের খোঁজ নেই, অনেক কিছু শেয়ার করি। একদিন সন্ধ্যায় তাঁর সাথে কথা বলতে গিয়ে কিছুটা অবাক হই, তাঁর মহানুভবতা দেখে পুলকিত হই, আর এতোটাই বিমোহিত হই যে সচলের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার লোভটা সংবরণ করতে পারলাম না।
আমার সেই মোবাইল বন্ধুটির নাম ইরিন, অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী, ইরিনরা দুই বোন, কোন ভাই নেই। খুলনার মেয়ে কিন্তু বাবার চাকুরীর কারণে চট্টগ্রামে বসবাস করে। বাসায় বাবা মা ছাড়া তাদের সংগী ১০/১২ বছরের কাজের মেয়ে।
আমাদের বাংলাদেশের বেশীর ভাগ বাসার কাজের মেয়ের জন্য থাকার কোনো বিশেষ জায়গা থাকে না। তাঁরা যে মানুষ এই কথাটাও মনে হয় আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যাই। আমরা মনে করি তাদের ভাল খাবাবের অধিকার নেই, ভাল পোষাক পরিধান করার ভাসনা থাকতে নেই, পরিপাটি করে চুল বাধঁতে নেই, সাজুগুজু করতে নেই, গোসলে সাবান মাখতে নেই, চুলে তেল দিতে নেই, সবার সাথে বসে খাবারের অধিকার নেই। হাজার নাই নাই এর মাঝে জন্মদিন পালন, সেটাতো স্বপ্নেও থাকতে নেই। গরীব তারপর কাজের মেয়ে তার আবার জন্মদিন। ঠিক যেন কানার আবার দেখার ইচ্ছা। কিন্তু এই নাই নাই এর মাঝেও যে কেউ আছে, যারা এদের জন্য একটু হলেও ভাবে, একটু হলে তাদের জীবনে আনন্দ দিতে চায়, একটু হলেও তাদের মনে করিয়ে দিতে চায়, তোমরাও মানুষ, তোমাদেরও এই পৃথীবিতে আসার একটা দিন আছে যাকে আমরা বলি "জন্মদিন"।
এক সন্ধ্যায় কাজ শেষ করে ইরিনকে ফোন করি, রিং হয় ইরিন ধরে না। আবার ডায়াল করি ধরে না। ৩য় বার ডায়াল করার পর ইরিন ফোনটা রিসিভ করে। আমাদের মাঝে যে কথা হয় তা নিম্মরুপ:
ইরিনঃ হ্যালো
আমিঃ ওহ্ যাক তোমার সময় হলো ফোন ধরার! (অভিযোগের সুরে কথাটা বললাম।)
ইরিন কিছু না বলে চুপচাপ থাকল। রুমে অনেক বাচ্চাদের কথার আওয়াজ শুনলাম। আমার কাছে মনে হল ইরিন কোন মাছের বাজার থেকে কথা বলছে।
আমিঃ তুমি কোথায়? তোমার ওখানে এতো বাচ্চাদের শব্দ কেন? (জানতে চাইলাম)
ইরিনঃ আছে একটা ব্যাপার, তোমাকে বলা যাবে না।
আমিঃ কেন? আমাকে বলা যাবে না কেন?(আমি কিছুটা অভিমান নিয়ে বললাম।)
ইরিনঃ না তেমন কিছু না, ব্যাপারটা আমার শেয়ার করতে ইচ্ছে করছে না। (কিছুটা নরম স্বরে এবং ইতস্ত হয়ে কথাটা বললো।)
আমিঃ একজন ভাল বন্ধুর কাছে সবকিছুই শেয়ার করা যায়। যদি সেটা না হয় একান্ত ব্যাক্তিগত।
ইরিনঃ না তেমন ব্যাক্তিগত না, তুমি কি ভাবে নিবে তাই ভাবছি?
আমিঃ আ-রে, বণিতা না করে বলে ফেলোতো।
ইরিনঃ (কোনো রকমের ভুমিকা ছাড়া) আজ আমাদের কাজের মেয়ে টার জন্মদিন। আমি আর আপু পরিকল্পনা করেছি ওকে একটা সারপ্রাইজ দিব। তাই আমাদের ফ্ল্যাটের সব বাচ্চাদের আমার রুমে এনে রেখেছি , আপু অফিস থেকে আসার সময় কেক নিয়ে আসবে। তারপর আমরা সব বাচ্চাদের নিয়ে ওর জন্মদিনের কেক কাটবো। ওর জন্য কালকে একটা নতুন পোষাক কেনা হয়েছে, আমি এখন ওকে সেটা পড়াবো, ওর চুলে বেণী করে দিচ্ছিলাম আর অমন সময় তুমি ফোন দিলে, তাই ধরতে দেরী হচ্ছিলো। (এক ধমে কথা গুলো বলে ইরিন থামলো)
কিছুটা বিস্ময় আর মন্ত্র মুগ্ধের মত কথা গুলো শুনলাম। ঘটনাটা শুনার পর আবেগে চোখে জল এসে গেল। কি বলব বুঝতে পারলাম না। আমার নীরবতা দেখে আবারও ইরিন কথা বলল।
ইরিনঃ কি হলো, চুপ যে?
আমিঃ ইরিন তুমি যখন ফোন ধরছিলে না তখন ভীষন রাগ হয়েছিল, তোমার মুখে কারণটা শুনার পর নিজেকে খুব অপরাধী মনে হল। মনে হল একটা গরীব বাচ্চা মেয়ের আনন্দের মাঝ খানে আমি কাটা হয়ে গেলেম।
ইরিনঃ এইভাবে ভাবছো কেন? তুমিতো আর জানতেনা।
আমিঃ ইরিন তোমাকে আমি দেখিনি, তুমি সুন্দর না কালো আমি জানি না। কিন্তু তোমার মন যে পৃথীবির সব মনের চেয়ে সুন্দর তা আমি বুঝে গেছি। আর এমন সুন্দর মনের মানুষের বাহ্যিক দর্শনটাও সুন্দর হওয়াই স্বাভাবিক।
ইরিনঃ হয়েছে আমাকে তেল মারতে হবে না।
আমিঃ এটা তেল না। আমি জানি না কেন বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরের মেয়েরা তোমাদের দুই বোনের মত করে ভাবে না। যদি এই ভাবে ভাবত তাহলে খবরের কাগজে কোন দিন কাজের মেয়েকে অত্যচার করেছে এই ধরনের খবর পড়ে আমাদের শিহরিত হতে হত না। কোন কাজের মেয়ে নিজেকে অসহায় ভাবতো না। তাদের মনে বিষন্নতা বাসা বাঁধতে পারত না। তারা খুশী মনে আরো দ্বি-গুন উৎসাহে কাজ করতো। আমরা সারাদিন ওদের ধমকের ওপর রাখি, ওদের স্বাভাবিক বিকাশটাকে আমরা অস্বাভাবিক করে দেই।
ইরিনঃ বন্ধু, আমি বাহবা পাবার জন্য এটা করিনা। আমরা দুইবোন সব সময় ওকে আমাদের বাসার একজন মনে করি, আমাদের ছোট বোন হয়তো ভাবি না, কিন্তু তার চেয়ে কম করিনা। আমরা মনে করি এটা আমাদের সবার দায়িত্ব।
আমিঃ ইরিন সবায় যদি তোমাদের মত ভাবতো, এই পৃথীবিটা অনেক সুন্দর হয়ে যেতো।
ইরিনঃ দেখ বন্ধু, যার কাজের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়, তাকে যদি আমরা না দেখি, তার যত্ন যদি আমরা না নেই, সে কি করে আমাদের যত্ন নিবে? সে নিজে যদি ভাল না থাকে আমাদের কি করে ভাল রাখবে? সে যদি পেট ভরে খেতে না পায়, আমাদের খাবার কি করে তৈরী করবে? স্বাধীন সেতো একজন মানুষ। তারতো একটা মন আছে, ইচ্ছা আছে, সেওতো ভাল কাপড় পড়তে চায়, ভাল বিছানায় ঘুমাতে চায়, সাবান দিয়ে গোসল করতে চায়, শ্যাম্পু দিতে চায়। বিকালে আয়না-চিরুনী নিয়ে তারওতো বসতে ইচ্ছে করে। এর জন্যতো অনেক টাকা লাগে না, শুধু ভাল কিছু মন হলেই হল। তার জন্য একটা ছোট রুম দিতে না পারি, ভালো একটা বিছানাতো দিতে পারি। ভাল খাবারতো খাওয়াতে পারি। সে যে মানুষ, এই উপলদ্ধিটা তো দিতে পারি। আমরা যারা একটু অবস্থাপন্ন, ভুলে যাই গরীবরাও মানুষ। টাকা দিয়ে সব করতে চাই। নিজের জন্য প্রতি মাসে একটা করে ড্রেস কিনি, বাসার কাজের মেয়ের জন্য বা কাজের ছেলের জন্য বছরে একবার, তাও আবার যাকাতের টাকা থেকে আলাদা করে কিনি। আমরা ভদ্রতার মুখোশে কত যে অমানুষ সেটা কখনো ভাবি না। (দড়জায় কলিং বেল বেজে উঠলো।) স্বাধীন আপু এসে গেছে, এখন রাখি পরে কথা হবে।
জন্মদিনের উৎসবটা কিভাবে উদযাপিত হল সেটা আমি পরে ফোনে শেয়ার করেছিলাম। মেয়েটার অনাবিল আনন্দ আর বাঁধ ভাঙ্গা খুশী দেখে ওরা দুই বোন বিমুগ্ধ হয়েছিল। তৃপ্তির হাসি দিয়েছিল মনের অজানতে। ওদের বাবা-মা ওদের বাহবা দিয়েছিল, দোয়া করেছিল মন থেকে। ওরা দুই বোন এর আগেও ওদের বাসার কাজের মেয়েদের নিয়ে এই রকম জন্মদিন পালন করেছে। এই মেয়েটি ওদের বাসায় আসার পর এটাই ছিল প্রথম জন্মদিন। মেয়েটা আনন্দে কেঁদে ফেলেছিল। এর আগে যে বাসায় কাজ করত, তাঁরা নাকি কথায় কথায় মারতো, ঠিক মত খাবার দিত না। একটা বন্দী জীবন কাঁটাত। এই বাসায় এসে সে নাকি অনকে সুখী।
কিন্তু ইরিনের মনের কথা গুলোতো আমরা সবায় জানি, তাহলে কেন সবাই পালন করিনা। অনেক ক্ষণ ভাবলাম, কেন ইরিনের মতো আগে কোনোদিন ভাবেনি। আমিওতো প্রায় কারণে-অকারণে বাসার কাজের মেয়েকে ধমকাই। ইরিনের মত ভেবেতো আমাদের বাসার কাজের মেয়েকে রাখা হয় না। কেন ভাবী- মা কাজের মেয়েকে কিচেনে বসায় খাওয়ায়? কেন বাসার সবার খাওয়া হলে তাকে খাবার দেয়া হয়? কেন ওর জন্য ঈদ ছাড়া নতুন জামা কিনে দেয়া হয় না। কেন ওকে আপুদের ফেলে দেয়া পুরাতন কাপড় পড়তে হয় ? কেন ওর জন্য বরাদ্দ কিচেনের ছোট শ্যাতশ্যাতে জায়গা? কেনো ওর জন্য কোনো তোষক নেই, শুধু একটা ছেড়া কাঁথা আর ময়লা পাটি? ভাবতে ভাবতে আমি কোন উত্তর খোঁজে পাই না।
আমাদের যা অনিয়ম তাই যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আমি জানি আমি যদি মাকে, বোনকে বা ভাবীকে এই গল্পের কথা বলে তাহলে তারা হেসে উড়িয়ে দেবে। আমাকে বলবে তুইকি পাগল হয়ে গেছিস, কাজের মেয়ের আবার জন্মদিন?
একটা জন্মদিন আমরা কাজের মেয়ের জন্য করতে না পারি, ভাল ব্যবহারতো করতে পারি? ওদেরকে তো মানুষ হিসাবে মূল্যায়ন করতে পারি? ওদের ইচ্ছার কিছুটাতো দাম দিতে পারি? ওদের জন্য আলাদা করে সাবান, শ্যাম্পু, ভাল বিছানার তো ব্যবস্থা করতে পারি? আসুন না বন্ধুরা, ইরিনের মত করে ভাবি। জন্মদিন পালন না করতে পারি, ওদেরকে মানুষের মত বাচাঁর পরিবেশ করে দেই। ওদের জন্য একটু ভাল ব্যবহার নিজের মনের মধ্যে লালন করি।
*******************************************************
কামরুজ্জামান স্বাধীন
মন্তব্য
ধন্যবাদ...............
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
ধন্যবাদ ভাই কামরুজ্জামান স্বাধীন।
লেখাটা পড়ে একটা ভাল লাগা মনের মাঝে ছুঁয়ে গেল। কিছু বানান বিভ্রাট আছে, তবুও বলব, অসাধারণ একটা লেখা।
ভাল থাকুন ভাই।
শেখ আমিনুল ইসলাম
ধন্যবাদ আপনাকেও মন দিয়ে পড়ার জন্য। বানান ভুলের জন্য দুঃখিত। শত চেষ্টাতেও এই জায়গাটাতে ধরা খেয়ে যাচ্ছি বারবার। আরো সচেতন হতে হবে বানানের ব্যপারে। ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
ধন্যবাদ আপনার মানসিকতাকে।
ইবরাহিম যুন
ধন্যবাদ আপনাকে। এটা মনে হয় আমাদের সবার মনের মধ্যেই ঘুমন্ত ভাবে লুকিয়ে আছে। শুধু জাগাতে হবে, আর কিছু না। সবাই যেন এটাকে লালন করি।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
ভালো। খুব ভালো লেখা।
আলগীর ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
ভালো লাগলো লেখা
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
নজরুল ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
-এমন ভাবাটাই স্বাভাবিক। আপনি তাদের থাকার জায়গার কথাও বললেন। কিন্তু অনেক পরিবারে এরা গরম ভাত গরম তরকারি চোখেই দেখে কেবল। কখনো ঘ্রাণ পেলেও খেতে পায় না।
-লেখাটি খুব ভালো লাগলো।
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
ধন্যবাদ আপনার মতামত ও অনুভূতির জন্য। আমরা যদি একটু মানবিক দিক থেকে চিন্তা করি তাহলে কী স্বাভাবিক আচরন করতে পারি না? আমিও অনেক ভাবি। এখন আমাদের বাসায় কাজের মেয়ে নেই, একটা ছুটা বুয়া কাজ করে, থাকলে কী আমি পারতাম ইরিনের মত ভাবতে? হয়তো না। কিন্তু এইটুকু করতাম খারাপ ব্যবহার করতাম না। ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
আপনার লেখাটা ঘুমাতে যাবার আগে একবার ভাবাল। সত্যিই যদি আমরা সবাই এমন করে উপলদ্ধি করতে পারতাম।
আমার লেখাটা আপনাকে ঘুমানোর আগে ভাবিয়েছে, এতেই আমি পুলকিত। এই ভাবনা থেকে আপনি যদি একটু বেশী ভালো ব্যবহার করতে শুরু করেন (আমি জানি করেন), তাহলেই আমার শেয়ারিং টা স্বার্থক হবে। ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
স্বাধীন,
চমৎকার একটা লেখার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
এইটা আমার পড়া আপনার প্রথম লেখা। খুব সাদাসিধে কথায় একটা মর্মস্পর্শী ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। লেখাটা পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, কাজের মেয়েটার জন্মদিনের কথা পড়ে আমরা অনেকেই হয়ত আবেগাকুল হয়ে পড়ছি, অনেকের হয়ত চোখের কোনে জমেছে বর্ষার জল।
কিন্তু এমনটিই তো হওয়া উচিত ছিল, তাই না?
মানুষ হিসেবে আমরা বাকী সকলকে একভাবে না হোক, অন্তত ন্যূনতম মর্যাদা আর ভালবাসা দেখাতেই পারি।
পারি, কিন্তু কখনোই করা হয় না, হয়ে ওঠে না----
আমাদের সারাটা সমাজ যা দেখতে অভ্যস্ত নয়, ঠিক তেমন একটা চমৎকার মানবিক ঘটনার সার্থক রূপায়নের জন্যে আপনার বান্ধবীকে আমাদের সকলের তরফ থেকে সাধুবাদ জানাবেন।
বর্বরতা আর অমানবিকতা যে সমাজের ভূষণ, সেখানে এ রকম মানুষের বড্ড দরকার---!!
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
ধন্যবাদ অনিকেত ভাই।
আমি জানি আমাকে নিয়ে আপনাদের, এমনি কী মডুদেরও একটা নেগেটিভ মনোভাব আছে। আমার লেখা ভালো না, বানান ভুল, গল্পের প্লট ভালো না, ভাষার ব্যবহার ভালো না। আপনিতো পড়েন না, আমার নাম দেখে অনেক সময় মডুরা আমার লেখা প্রকাশ করে না। নাম ছাড়া দিলে লেখা প্রকাশিত হয় কিন্তু আমার নাম দিলে লেখা প্রকাশিত হয় না। এমন অনেক লেখা আমি নাম ছাড়া প্রকাশ করেছি।
যাক আমার লেখা প্রথম বার পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগল। আমি স্বার্থক যে একটা লেখা আপনাদের ভালো লাগাতে পারলাম।
এখানে অনেক সিনিয়র সচল ভাই আছে যারা আমার লেখা পড়া বন্ধ করে দিয়েছে, আমার লেখায় মন্তব্য করা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তাদের পরামর্শ, উপদেশ, মন্তব্য, অবহেলা আমাকে হয়তো এই লেখাটা লিখতে সাহায্য করেছে। তাদের জন্যই আমি উন্নতি করতে পারছি, বা উন্নতি করার চেষ্টা করছি।
আপনার কথা গুলো ভালো লাগল। আমরা যদি নূন্যতম মানবতাবোধ নিয়ে কাজের মেয়েদের প্রতি আচরন করি তাহলে অন্তত পক্ষে খারাপ ব্যবহার করতে পারবো না। মানুষ হিসেবে ভাবাটাই মানবিক হওয়া উচিত। আমাদের সমাজের অনেকে আছেন যারা সমাজ সেবা নামে সেমিনার করে থাকেন আর বাসায় কাজের মেয়েকে মানুষ হিসেবে ভাবেন না।
আমরা যদি তাদেরকে মানুষ হিসেবে ভাবতে পারি তাহলেই মানবতার জয় হবে।
ইরিনকে আপনার শুভেচ্ছা পাঠিয়ে দিলাম। ও জেনে অনেক খুশী হয়েছে। ওর বাসায় নেট নাই তাই পড়তে পারছে না। আমরা কেউ যদি একজন কাজের মেয়ের প্রতি এই লেখাটা পড়ে ভালো ব্যবহার করি, তাহলেই ওর প্রয়াস স্বার্থক হবে বলে জানিয়েছে। আমাদের সবার মনে মানবতা জাগ্রত হোক সেই শুভ কামনায়।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
ইরিনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে আমাদের বাসায় যতজন কাজ করেছে তাদের কেউই নিজের জন্মদিন জানত না। হতদরিদ্র যে পরিবারে বছর বছর সন্তান জন্মায় তাদের মধ্যে জন্মদিন মনে রাখার রেওয়াজ সম্ভবত অপ্রতুল। কবে জন্ম হয়েছে? শ্রাবণ মাসে, বন্যার সময় এধরনের উত্তর শোনা যায়। কন্যা সন্তান হলে তো কথাই নেই। বয়সের হিসেব করতে হয় ঋতুচক্রের মানদন্ডে।
ইরিন কোন দিনটিকে জন্মদিন হিসেবে পালন করল জানতে ইচ্ছে করে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সচলে স্বাগতম স্বাধীন ভাই!!!
নতুন মন্তব্য করুন