"কিছু টুকরো স্মৃতি-যা কখনো ভুলা যায় না।" (প্রথম পর্ব)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০২/০২/২০১০ - ২:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ কিছু টুকরো স্মৃতি নিয়ে লিখবো বলে কীবোর্ডে হাত রাখলাম। জীবনের বয়স যা হয়েছে সেটাকে যদি ঘণ্টায় রুপান্তরিত করা হয়, আমার মনে হয় স্মৃতির অণুক্ষণ তার চেয়েও বেশী হবে। এটা আমার ধারনা, কমও হতে পারে। কেউ কেউ এটাকে চাপাও ভাবতে পারেন। ভাবুন, ভাবতে তো আর টাকা পয়সা লাগে না। সুতরাং ভাবনায় ফেলে দিয়ে মজা করা যায় অনায়াসে।

জীবনের অনেক কাল তো পেরিয়ে এলাম। শৈশব, দুরন্ত কৈশর, অবাধ্য তারুণ্য, শ্রেষ্ঠ সময় যৌবনে যাপাযাপি করছি। দেখতে দেখতে এই মধুর যৌবনও একদিন শেষ হয়ে যাবে। জীবনের মজুদ ঘরে অনেক স্মৃতি জমা হয়েছে, জানি আরো হবে। জীবন চলার পথে স্মৃতি জমতে থাকবে। এখন কোনটা নিয়ে লিখবো সেটা নির্বাচন করতেই এতো প্যাচাল পারলাম, আসলে প্যাচালের এখনো শেষ হয় নাই, মাত্রতো শুরু। তার উপর আমার বিরক্তিকর বানান ভুলতো আছেই। যারা ধৈর্য ধরে এবং সহনশীল হয়ে আমার লেখাটা পড়বেন তাদেরকে লেখার মাঝ খানে ধন্যবাদ দিয়ে গেলাম।

কোন কালটা মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধ থাকতে পারে, কিন্তু আমার কাছে মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনটা শ্রেষ্ঠ। আমি জানি এখানে সর্বাধিক বন্ধুরাই আমার সাথে একমত পোষন করবেন। আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কিছু টুকরো স্মৃতি নিয়ে আজ আপানদের সাথে শেয়ার করার জন্য চেষ্টা করছি। জানি না আপনাদের ভালো লগাবে কিনা?

আমার বাড়ি ঢাকার খুব কাছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায়। ঢাকা থেকে দূরত্ব মাত্র ১৯ কিলোমিটার। সময় লাগে গুলিস্তান থেকে সর্বোচ্চ ঘণ্টাখানেক (যদি ট্রাফিক জ্যাম না থাকে)। একবার আমার বন্ধুরা বায়না ধরল আমার গ্রামের বাড়ি যাবে। তখন মা-বাবা গ্রামের বাড়ি থাকত (এখন ঢাকায়), মা কে ফোন দিয়ে বন্ধুদের ইচ্ছার কথা জানালাম, মা কোন রকমের দ্বিমত না করে রাজী হয়ে গেলেন। মা কে বললাম মা আমরা প্রায় ছেলে মেয়ে মিলে ১৭জন আসব, মা বলল কবে আসবি, কী খাবি সেটা বল। আমি মা কে বললাম, মা ওরা তোমার হাতে হরেক রকমের পিঠা খেতে চায়। বলা সারা মা রাজী হয়ে গেলেন। আমরা দিনক্ষণ ঠিক করে মাকে জানিয়ে দিলাম। সময়টা ডিসেম্বরের ৩১তারিখ ছিলো। আমাদের তখন ট্রাকের ব্যবসা ছিলো। আমার বন্ধুরা বায়না ধরল ট্রাকে করে যাবে। তাদের কথা হলো, জীবনে সব যানবাহনে উঠেছি কিন্তু ট্রাকে উঠা হয় নাই। সুতরাং সবার এক দফা এক দাবী, ট্রাকে করে বিক্রমপুর যাবে। বন্ধুদের সখ এং স্বপ্ন পূরণের জন্য ভাইয়া কে ট্রাকের কথা বলতেই ভাইয়া ক্ষেপে গেলেন। তিনি বললেন-"টাকা দিচ্ছি মাইক্রো নিয়ে যা, কিন্তু ট্রাক পাবি না।" আমি অনেক সময় নিয়ে বন্ধুদের মনের গোপন খায়েশের কথা বুঝিয়ে বলাতে রাজী হলেন, তবে একটা শর্ত দিলেন। আমাদের গ্রামের বাড়ির ঠিক আগেই ধলেশ্বরী দুইভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি ফেরী পারাপারের ব্যবস্থা করেছিল। সেটা এখন আর নেই। এখন সেখানে দুইটা ব্রীজ হয়ে গেছে। ভাইয়ার শর্ত ছিলো প্রথম ফেরী ঘাটে গিয়ে ট্রাক ছেড়ে দিতে হবে এবং ওখান থেকে রিকসায় বাড়ি যেতে হবে। আমি তাতেই রাজী হয়ে গেলাম। রাজী হওয়ার পেছনে আরেকটা কারণ ছিলো ফেরীর টোল। সবাইকে ট্রাক পেয়েছি মানে ভাইয়া দিতে রাজী হয়েছে জানাতেই যেন সবার চোখে মুখে খুশীর হিল্লোল ভয়ে গেলো।

আমরা ৩১শে ডিসেম্বর সকাল ৮টায় যাত্রা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম। জেনী নামে আমাদের এক বান্ধবী ছিলো (ও এখন সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার) ওরতখন জ্বর ছিল। ওর মা কিছুতেই যেতে দিবে না। আর আমাদের উদ্দেশ্য ওকে ছাড়া যাব না। আন্টিকে রাজী করানোর জন্য আমরা সবাই ওর বাসায় গেলাম, উঠে পড়ে লাগলাম। আন্টির এক কথা ছিল-"মাত্র জ্বর থেকে উঠছে এখন কোথাও যাওয়া যাবে না।" আমি আর জিয়া দুজনে আন্টিকে রাজী করানোর প্রজেক্ট হাতে নিলাম। প্রতিদিন ক্লাস শেষ করে জেনীর বাসায় গিয়ে জেনীকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা করলাম, আর আন্টিকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম। এখানে বলে রাখি জিয়া জেনীকে মনে মনে পছন্দ করত, যেটা জেনী আবার জানত। যাক আমাদের নিরন্তর পীড়াপিরিতে আন্টি রাজী হলো। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলে ১৭ জনের মধ্যে ১৩ জন রাজী হলাম, যার মধ্যে ৭জন ছেলে আর ৬ জন মেয়ে ছিল। বান্ধবী রীমা ধনীর দুলালী অনেক ইচ্ছা পোষন করেছিলো কিন্তু ওর মা যেতে দেয় নি। আর ওর বাসায় আমাদের তেমন অনুপ্রবেশ ছিলো না, তাই জেনীর মা কে যে ভাবে রাজী করিয়েছিলাম, রীমার মা কে সেই ভাবে রাজী করাতে পারিনি। তাছাড়া আমাদের মাঝে কেউ রীমা কে বিশেষভাবে পছন্দ করত না, যার জন্য ওর অনুপস্থিতি আমাদের বিশেষ করে ছেলেদের কষ্ট দেয় নি।

৩০তারিখ সন্ধ্যায় আমি আর জিয়া ঢাকা থেকে মায়ের দেয়া বাজার তালিকা অনুযায়ী বাজার করে রওনা দিলাম। তখন ছিল অন্ধকার রাত। আমাদের বাড়ির ১কিলোমিটার আগে রিকসা ছেড়ে দিতে হত, তারপর পায়ে হেটে বাড়ি পৌছতে হত। এখন আমাদের ঘরের সামনে রিকসা দাঁড়ায়। আমরা অন্ধকারে গল্প করছি আর হাঁটছি, হাতে বাজারের ব্যাগ, অচেনা মেঠো পথ। কথার মূল বিষয় ছিলো জেনী আর বনি। জেনীকে জিয়া আর বনিকে আমি পছন্দ করতাম। আমি গল্প করছি আর বনির নাম নিতেই হোঁচট খেয়ে পড়ছি। ব্যাপারটা জিয়া খুব উপভোগ করছিলো। আমি যতবার বনির নাম উচ্চারণ করেছিলাম, ততবার হোঁচট খেয়ে পড়েছিলাম। জিয়া ব্যাপারটা বুঝতে পারে আমাকে বলল -"দোস্ত বনি তোর জন্য কুফা, বনির নাম আর উচ্চারণ করিস না,"- বলতে বলতে জিয়াও হোঁচট খেয়ে খাদে পড়ে গেল। আমি বাজারের ব্যাগ রেখে ওকে টেনে তুললাম। জিয়া উঠে ময়লা পরিষ্কার করে রেগে বলল-"মাইয়াটা আসলেই কুফা।" যাক সেইদিন আমাদের ১কিলোমিটারকে ১০০ কিলোমিটার মনে হয়েছিল। রাত ৯টায় বাড়ি পৌছালাম। মা কি যে খুশী দেখেছিলাম বুঝাতে পারবো না। জিয়াতো মার আয়োজন দেখে হতভম্ব হয়ে অনেকক্ষণ চুপ করেছিলো। মা হরেক রকমের পিঠা তৈরীর জন্য চালের গুড়া তৈরী করছিলো, মাকে সাহায্য করার জন্য পাড়া প্রতিবেশী সবাই ছিলো। সবাই ঢেকী আর কাহাইল ছিয়া দিয়ে চাল গুড়া করতে মগ্ন। জিয়া প্যান্ট শার্ট পরিবর্তন না করেই সবার সাথে চাল গুড়া করার কাজে লেগে পড়লো। সেই কথা আজো জিয়া ভুলতে পারে না।

খুব ভোরে উঠে আমি আর জিয়া মার হাতের গরম গরম ভাঁপা পিঠে খেয়ে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ওদের নিয়ে আসার জন্য । সকাল আটটায় আমাদের ট্রাক কার্জন হলের সামনে দাঁড়াল। একে একে সবাই এলো। এইবার বিড়ম্বনা হলো মেয়েদের ট্রাকে উঠি নিয়ে। যাক আমার আর জিয়ার প্রচেষ্টায় সবাইকে ট্রাকে উঠানো হলো। পিয়াল নামে আমাদের আরেক ধনীর দুলাল ছিল, সেও আমাদের সাথে এলো। কিন্তু তাঁর মন পড়ে রইলো ক্যাম্পাসে। কারণ তার প্রেমিকা দোলা আমাদের সাথে আসতে পারেনি। দোলা ছিলো আমাদের জুনিয়র এবং অন্য বিভাগের ছাত্রী। তাই তাকে সফর সঙ্গী করা যায় নি। গাড়ি ধলেশ্বরী সেতু পার হতেই সবাই আনন্দে উল্লসিত। দুই দিকে শুধু হুলুদ। মানে যেদিকে চোখ যায় শুধু সরিষা ফুল। মাঘী সরিষার পসরা সাজিয়ে প্রকৃতি যেন আমাদের অভ্যর্থনা জানাতে ব্যস্ত ছিল। খোলা ট্রাকে সবাই দাঁড়িয়ে চারিদিকে হুলুদের মেলা দেখতে দেখতে প্রকৃত প্রকৃতি উপভোগ করেছিলাম পরম আনন্দে।

ভাইয়ার শর্ত মোতাবেক ট্রাক ফেরী ঘাটে এসে ছেড়ে দিলাম। তারপর একটা ট্রলার করে নদী পার হলাম। সবার চোখে মুখে সে কি আনন্দ, বলে বুঝনো যাবে না, বা এখানে লিখে প্রকাশ করার ভাষা জ্ঞান আমার নেই। নদী পার হতেই সরিষা ক্ষেত, সবাই ছবি তোলায় মগ্ন হয়ে গেলাম। সেখান থেকে দুই কিলোমিটার হেঁটে সরিষার সাথে বন্ধুত্ব করতে করতে বাড়ি পৌছলাম। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো আরেক বিস্ময়। মা সবার জন্য ভাপা, পাটি শাপটা, বিবিখানা, সেমাই পিঠা বানিয়ে টেবিলে সাজিয়ে রেখেছিলো সাথে গরুর মাংস ভুনা আর ভুনা খিচুরী। সবাই পিঠা দেখে খিচুরীর কথা ভুলে গেল। পিঠা খেয়ে এইবার শুরু হলো গ্রাম জুরে ঘুরে বেড়ানো। আমি একা আর ওরা ১২জন। একেক জন একেক দিকে যায়। তখন ডিসেম্বর মাস, পুকুর ভরা পানি, রাস্তা ঘাটে কাদা, কে শুনে কার কথা। এক দল উত্তরে গেলে আরেক দল দক্ষিণে, যে যার মত পারে ঘুরে বেড়ায়। এ যেন সবাই মুক্ত হরিণ, এক ঝাক প্রজাপতি। গ্রামের সবাই ওদের দেখে আর অবাক হয়। জেনী তো উত্তেজনায় কাদা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে পানিতে ডুবে যাচ্ছিলো, ভাগ্যিস আমি ছিলাম, হাত দিয়ে টেনে তুলে এনেছিলাম। এটা নিয়ে পরে সে কী হাসাহাসি। বাসায় এসে ছোট বোনের জামা পড়তে বলেছিলাম, কিন্তু রাজী হয়নি। আমার ছোট বোন ছিলো ঢাকায়, ওর কিছু জামা -কাপড় গ্রামের বাড়ি থাকত। জেনী যেন ভেজা কাপড়েই বেশী স্বাচ্ছ্বন্দ অনুভব করছিল।

দুপুরে খাবার খেতে বসলাম বিকাল চারটায়। পুকুরের কই মাছ, ইলিশ ভাজা, টাকি মাছের ভর্তা, মুরগীর রোস্ট আর গরুর ভুনা। সবাই ভীষন উৎসাহ নিয়ে খাওয়া শুরু করল। সবাই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী খেয়ে আর নরতে পারে না। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে এবার ফেরার পালা। আগে থেকে পরিকল্পনা ছিলো ছেলেরা থেকে যাবে, মেয়েরা চলে আসবে। আমরা বাস স্ট্যান্ডে এসে মেয়েদের স্কুটার করে দিলাম, সাথেপিয়াল চলে গেল। পিয়াল থাকলো না, কারণ পরের দিন ওর প্রেমিকার জন্মদিন ছিল। আমরাও আর খুব একটা জোড় করিনি। আসার সময় সবার চোখে বিষণ্ণতা, গ্রাম ছেড়ে যাবার কষ্টে সবাই যেন কান্নায় ভেঙ্গে পড়বে। আমরাও মেয়ে বন্ধুদের বিদায় দিতে এসে বিষণ্ণ হয়েছিলাম। নির্যাস আনন্দ থেকে ওদের বঞ্চিত করার কোন অভিপ্রায় আমাদেরও ছিলো না।

ওদের বিদায় দিয়ে নৌকা ভাড়া করে আমরা ধলেশ্বরীর বুকে ঘুরে বেরালাম রাত আট টা পর্যন্ত। নৌকার মাঝি অনেক গান আর অদ্ভুত ভূতের গল্প শুনালো। এক জায়গায় নদীটা বাঁক নিয়েছে, এবং সেখানে নদী একটু প্রশস্ত ও গভীর। নৌকার মাঝি সেখানে এসে বলল-"এখানে নদীর মালিক থাকে, মাঝে মাঝে নৌকা ডুবে যায় আর খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রতিবছর এখানে দুই একজন মারা যায়, এটা নাকি নদীর মালিকের সারা বছরের খাবার।" আমি ব্যতিত বাকী সব শহরের ছেলে, সংগত কারণেই ভয়ে কাঁপা শুরু করল, মাঝিকে নৌকা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে সবাই কোরাস বলে উঠল। আমি খুব মজা পেয়েছিলাম, কারণ স্কুল জীবনে আমি ঐ নদী সাঁতার কেটে পার হয়েছি বহুবার।

রাতে খাবার খেয়ে সবাই আমাদের পুকুর পারে বসলাম। অনেক গল্প, সবাই জানতে চায় ভূত আছে কিনা। রিয়াজতো আমাকে ছাড়া কোথাও যেতে চায় না। আমরা রাত ১টা পর্যন্ত পুকুর পারে বসে ছিলাম। আমাদের গ্রামের বাড়িতে আধা পাকা তিনটা টিনের ঘর। মা বাবা একটাতে থাকতো, বাকী ২টা খালি থাকত। আমি রিয়াজকে নিয়ে আমাদের বাংলো ঘরে ঘুমালাম, জাকির, বাবু, জিয়া ঘুমালো আরেক ঘরে। রাতে ঘরের টিনের চালে কিসের একটা শব্দ হতেই রিয়াজ আমাকে জরিয়ে ধরলো। আমি শান্ত করে বললাম এটা কিছুনা, গাছ থেকে মরা ডালপালা পড়েছে। যাক রাত কেটে গেল। সকালে মা ছিট রুটি আর মুরগীর মাংস করেছিলো। খেয়েতো সবাই মুগ্ধ। ছিট রুটি বানানো প্রক্রিয়া বলো চাল বেটে গুড়া করে গলানো হয়, তারপর লোহার তাওয়ার উপর আঙ্গুল দিয়ে গলানো চালের গুড়ার তরল জিনিসটা ছিটিয়ে রুটির মত করা হয়, মাংস দিয়ে খেতে অপূর্ব লাগে। যে না খেয়েছে তাকে এর অমৃত স্বাদ বুঝানো যাবে না।

সেই দিন বিকালে চলে এলাম ঢাকায়। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে আড্ডা মেরে রাতে বাসায় ফিরলাম। সবাই ঠিকঠাক মত বাসায় গেলাম কিন্তু জাকিরের বাবা জাকির কে বাসায় ঢুকতে দিলো না। কারণ জাকির ওর বাবা কে না বলে গিয়েছিলো এবং আসল ঘটনাটা ঘটিয়েছে পিয়াল। পিয়াল যখন আগের দিন চলে আসে আমরা পিয়ালকে বলেছিলাম যেন জাকিরের বাসায় গেয়ে বলে জাকির আসবে না। পিয়াল জাকিরের বাসায় গিয়ে বলেছিলো ঠিক কিন্তু ঘটনা ঘটেছিলো অন্য। জাকিরের আব্বা পিয়ালের কাছে জানতে চাইলো, তুমি যাওনি স্বাধীনের গ্রামের বাড়ি? পিয়াল এমনি লেখাপড়ার নামে নাই, লুইচ্চামী করে বেড়ায়, কিন্তু মরুব্বীদের সামনে তার মত ভালো ছেলে দ্বিতীয়টা নাই। সে পড়ুয়া ছেলের মত জাকিরের আব্বাকে বলেছিলো- আঙ্কেল আমার তো কাল পরীক্ষা আছে তাই চলে এসেছি। জাকিরের আব্বা জানতে চেয়েছিলো কিসের পরীক্ষা? জাকিরের নাই? পিয়াল একটা মিথ্যা ঢাকতে গিয়ে আরেকটা মিথ্যা বলল-"না আঙ্কেল আমার "জিমেট আর টোফেল" পরীক্ষা। কাজ সারা, জাকিরের আব্বাতো পিয়ালের অধ্যবসায় দেখে মুগ্ধ আর জাকিরের উপর ক্রুদ্ধ। সেই দিন জাকির কে রাত ২টা পর্যন্ত বাইরে কাটাতে হয়েছিলো। আজ এই পর্যন্ত, আরো লিখবো যদি আপনাদের ভালো লাগে।
(চলবে।)
==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন


মন্তব্য

Shafqat এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে আপনি ডায়রি লিখেন? অনেক বর্ণনামূলক লেখা। ভালো লেগেছে। আমার আবার লেখার কলেবর বৃদ্ধিতে এলার্জি। নিজে বেশি বড় লিখতে পারিনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

শাফকাত ভাই, ধন্যবাদ পড়া এবং মন্তব্যের জন্য। আমি জীবনেও ডায়েরী লিখি নাই। সেটা আমাকে দিয়ে কোন দিন হবেও না। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি দিনের কথা মনে আছে, এবং আশা করি আজীবন থাকবে।
আপনাদের ভালো লাগলে আরো কিছু স্মৃতি শেয়ার করার আশা রাখি। ধন্যবাদ।

কামরুজ্জামান স্বাধীন।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ইয়ে, মানে স্বাধীন ভাই, এইটা শাফক্বাত ভাই না, আপা! গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

আমার দুস্তের দুস্ত লাগে, চোখ টিপি হো হো হো হো হো হো

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত বুঝতে পারি নাই। আসলে নামটাই একটু কনফিউজিং। সাফাক্কাত আপু দুঃখিত।

==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আপনে কি রাতের বেলায় কালো চশমা পরে থাকেন নাকি ভাই? কইলাম শাফক্বাত আপনে লেখলেন সাফাক্কাত । দন্ত'স' ও না, সাফাও না, কি সাফ করতে চান? আর যুক্ত 'ক' ও না, আমার আর আপনার বানান ভুলের লেভেল এক না, তারপরেও ভুল আমি করলেও ভুল, আপনে করলেও ভুল সেইটা মাথায় রাইখেন, আর আমি এমন বড় কেউ না যে, আমার ভুলের কারনে আপনার ভুল যায়েজ হয়ে যায়।

আপনারে কামরূপজামান বলে ডাকলে আপনার কেমন লাগবে, তাই ভবিষ্যতে সহব্লগারদের নামের বানান খুব খিয়াল কইরা, না পারলে কপি পেস্ট মারেন, কিন্তু ভুল বানানে কারো নাম লেইখেন না।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তাহসিন আহমেদ গালিব এর ছবি

হুমমম!
লেখা ভাল লেগেছে।
পুরোটা পড়তে পারি নাই যদিও, তথাপি ভাল লেগেছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ গালিব ভাই।
==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ওস্তাদ। দোয়া করবেন যেন ভালি লিখতে পারি।

==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন

তাসনীম এর ছবি

পার্টগুলো আরেকটু ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন। যেমন এই লেখাটাতে প্রায় দুই পর্বের মত উপকরন আছে।

লেখা চলুক, ভালো লেগেছে।

--------------------------------------
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে
সে কথা আজি যেন বলা যায়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনার কথা মাথায় রেখে চেষ্টা করবো। আসলে পরিকল্পণা ছিলো এক পর্বে শেষ করব। পরে দেখলাম তা সম্ভব না, তাই একটু বড় হয়ে গেছে। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

কামরুজ্জামান স্বাধীন

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হ, চলুক
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম সাইফ ভাই, আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই চলবে। আপনদের ভালো লাগার বহিঃপ্রকাশটাই যে লেখার প্রেরণা যোগায়। ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।