বই নিয়ে হাবিজাবি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৫/০২/২০১০ - ১০:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মেলায় যাবো। আমি বইমেলায় যেতে চাই। কেন? জানিনা।
মেলা আসলে মনে হয় যেন বইগুলো এইভাবেই আমাদেরকে ডাকে। বলে "আমি আছি!!" নইলে সারাবছর কয়টা বই কিনি? কে মনে রাখে বইয়ের কথা? কতকিছু কেনাকাটা করার জন্যে পুরান ঢাকার হকার মার্কেট থেকে গুলশানের হোল-সেইলের দোকান পর্যন্ত ঘুরে বেড়াই সারাবছর। কিন্তু বই??
এবার শীতে গেলাম বাপের বাড়ি, একমাস থাকলাম। আমার বাবার বাড়িতে দুই আলমারি ভর্তি বই। সেই ছোটবেলার মত বইয়ের ভেতর নাক মুখ গুঁজে পড়ে থাকা, রাত জেগে বই পড়ে সকালে দেরীতে ঘুম ভাঙ্গা। ছোটবেলার সাথে তফাৎ একটাই, তখন আম্মু একাই আমাকে সকালে ডেকে ডেকে ঘুম ভাঙ্গাতো, এখন যোগ হয়েছে আমার মেয়েরাও। যদিও ধুলো পড়ে গিয়েছে, তেলাপোকার বাসা হয়েছে, তবুও সেই বইগুলো যেন একেকটা ফেলে আসা রঙীন মুহূর্ত। কোন্ বই পড়ে কেঁদেছিলাম, কোনটা পড়ে প্রেম-প্রেম ভাব নিয়ে সারাদিন এঘর ওঘর করতাম, কোন বই পড়তে পড়তে মুখস্ত করে ফেলেছিলাম---সব মিলিয়ে আমাদের সেই চিটাগাং এর বাসায় দুটো আলমারি এখনও দাঁড়িয়ে আছে দুটো ট্রেজার চেস্টের মত।
কোনও বই কি একবার পড়েই ফেলে দেওয়া যায়? প্রতিবার বাসা চেন্জ করার সময় "বই গুলো কী করবো" এই নিয়ে বিশাআআআল সমস্যা হয়। বুকশেল্ফে কি আমার কোটি কোটি গল্পের বই রাখবো, নাকি ওনার দূর্বোধ্য সব চিকন-মোটা হাবিজাবি ইংরেজী জার্নাল থাকবে, নাকি মেয়ের ফেইরী টেইলস অথবা ছড়ার বই থাকবে? আজকাল বাসাগুলোতে জায়গাও এত কম, নতুন আরেকটা শেল্ফ ফার্নিচারের ভীড়ে যোগ করার কথা ভাবাই যায়না।
-ফেলো, ফেলো, এত কাগজপত্তর মানেই তেলাপোকার বাসা। এত বই "পালা" মানা তো তেলাপোকাদের দাওয়াত দিয়ে আনা।
বই-কে আবার "পালে" কেউ? বই কি শুধুই পড়ার জিনিস? তবে আমাদের ছোটবেলার সেই বইগুলো কেন ঐ বাসায় এখনও আছে? -সেজন্যই তো তোমার বাপের বাড়ী ভর্তি তেলাপোকার ঘর-সংসার।
তাহলে চলো বইমেলা ঘুরে আসি।
-পাগল? গাড়ী পার্ক করা যায়না, হেঁটে হেঁটে ধূলাবালি আর ভীড়ের মধ্যে গিয়ে কয়েকটা বই কেনার জন্য যুদ্ধ করার তো মানে হয়না।
তবে কি বইমেলায় গিয়ে বই কিনবোনা?
-বই কেনার জন্য মেলায় যেতে হবে কেন? দোকানে পাওয়া যায়না?
মেলায় গেলে বইগুলো যে আমাকে ডাকে। ষ্টলগুলোতে এত মানুষের ভীড়ে দেখা যায় বইগুলো খুব দামী পসরার মত জ্বলজ্বল করে। মেলায় গেলে বই কিনার যে লোভটা হয় সেটা কি আর ঘরে বসে হয়?
অনলাইনে সার্চ দিয়ে মাঝে মাঝে বই খুঁজি। পড়া শেষ তো খোদাহাফেয, ঘরে আর জঞ্জাল (!?) বাড়েনা। ব্লগে ব্লগে ঘুরি, পড়ার তৃষ্ণা মেটাই ভার্চুয়াল লেখায়। ভালই তো।
বই তবে আর কী দরকার? সব বইয়ের লিংক যদি অনলাইনে পাওয়া যেত, একটা ভার্চুয়াল বইমেলা করে সেখানে যদি লিংক দেওয়া থাকতো, তবে সেখানেই ঘুরে আসতাম! ঘরে বসে ডাউনলোড করে পড়তাম। রাস্তার ট্রাফিক জ্যাম ঠেলে বাংলা একাডেমী পর্যন্ত গিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে হতোনা।
আমরা ছোটবেলায় গল্পের বই চালাচালি করতাম বন্ন্ধুদের সাথে। এখন তাহলে লিংক শেয়ার করি ফেইসবুকে।
ধুর, ভাল্লাগেনা। মেলায় যাওয়ার কথা লিখতে গিয়ে ম্যালা হাবিজাবি লিখে ফেল্লাম। বই মনে হয় দিল্লী কা লাড্ডু...না কী?


মন্তব্য

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

নাম কই?

বই পুস্ট ভালা পাই! দেঁতো হাসি

-------------------------
ওলো সুজন আমার ঘরে তবু আইলোনা
এ পোড়া মনের জ্বলন কেন বুঝলোনা!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

Shafqat এর ছবি

উপ্স!! ভুলে গিয়েছিলাম নাম দিতে খাইছে

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আরেকটু লিখলে ভালো হত। আপনার লেখা এমনিতে ভালো লেগেছে। তবে কিছু ব্যপার মনেহয় পাঠকের কাছে অস্পষ্ট লাগবে। যেমন আমার লেগেছে।

আর হ্যাঁ, নাম কই?

ভালো থাকবেন। হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

শাফ্ক্বাত এর ছবি

আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি আসলে ঠিক ঝানু-লেখকের ক্যাটাগরিতে পড়িনা; তাই কাঁচা লেখা কষ্ট করে বুঝে নিতে হবে চোখ টিপি
নাম দিতে ভুলে গিয়েছিলাম ভাই, দুঃখিত।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

সব বইয়ের লিংক যদি অনলাইনে পাওয়া যেত, একটা ভার্চুয়াল বইমেলা করে সেখানে যদি লিংক দেওয়া থাকতো,...

-আগামীদিনগুলো এমনই হতে যাচ্ছে হয়তো।

___________________________________________
ভাগ্যিস, আমার মনের ব্যাপারগুলো কেউ দেখতে পায় না!

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

অতিথি লেখক এর ছবি

হাবিজাবি পড়তে খ্রাপ লাগল না তো!
নাম ধাম কুতায়?

বোহেমিয়ান

শাফ্ক্বাত এর ছবি

খারাপ লাগেনি? আশ্বস্ত হলাম।
নাম দিতে ভুলে গিয়েছি, ভুলেই গিয়েছি!!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার হাজার দুয়েক বই আমার মায়ের দায়িত্বে সিলেটে
সম্ভবত দিন দশেকের মধ্যে তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন
ওই বাড়িতে বইগুলো ছাড়া আমার আর কিছুই নেই
বলে দিয়েছেন বইগুলোর একটা ব্যবস্থা করতে

আমি ভাবছি পড়া বই আর কাঠের আলমারি গাড়িভাড়া দিয়ে ঢাকার ভাড়া বাসায় তুলে যন্ত্রণা বাড়াবো না
ওখানেই দিয়ে দেবো কাউকে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ঠিক একই অবস্থায় পড়ে আমার সারাজীবনের সংগ্রহের হাজারের উপর বই নষ্ট হয়েছে। আপনার তো সিলেট থেকে আনা, আমার মিরপুর থেকে উত্তরা পর্যন্ত আনার আলসেমিতেই সব শেষ। মন খারাপ
এখন একথা মনে হতেই নিজেকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করে। আমি যে ভুল করছি আপনে সেইটা কইরেন না। আর যদি করতেই চান তাইলে আমারে দান করে দেন, আমি নিজ দায়িত্বে গিয়া নিয়া আসবো, আপনার কষ্ট করতে হবে না চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্নিগ্ধা এর ছবি

নইজ্যা - লাইনে আমিও আছিইইইই (চিৎকার করে বলতেসি কিন্তু!) .........

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বস, নজু ভাই তো মাগনা আপনার বই নিয়া পালাবে। আমি বিনিময়ে আপনারে এক প্যাকেট নাসির গোল্ড সিগারেট গিফট করুম, তাও বই গুলা যত্রতত্র দিয়া দিয়েন না। কয়েকটা দিন হোল্ড করেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

স্নিগ্ধা এর ছবি

রাগিবের মতো আমিও লেখা পড়েই বুঝেছি যে আপনার লেখা, এবং এটাও বুঝেছি আপনি আবারও নাম দিতে ভুলে গেছেন চোখ টিপি

আর, বন্ধুবান্ধবের সাথে বই মেলায় যাচ্ছেন না কেন?! ছোট দুটোকে শ্বাশুড়ির (প্রমাণ সাইজের) বাচ্চাটার হাতে সোপর্দ করে চলে যান। তারপর এসে পোস্ট দিয়ে আমাদের জানান কেমন লাগলো হাসি

তিথীডোর এর ছবি

খানিকটা পড়েই মনে হচ্ছিলো এটা আপনার লেখা দেঁতো হাসি
আপু ,
বইগুলো কাকে দেবেন ভেবে দেখুন... আমিও কিন্তু চাঁটগাঁর মেয়ে!

--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তৌফিক হাসান [অতিথি] এর ছবি

নতুন বইয়ের গন্ধ আপনি ভার্চুয়াল বইয়ে পাইবেন কেমনে?
যত যা'ই বলেন, কাগজের বই আমার কাছে এখনও অন্য রকম জিনিস।

লেখা ভাল হইসে।

পৃথিবী [অতিথি] এর ছবি

আমি ডিজিটাল প্রজন্মের লোক বিধায় ডিজিটাল বইই ভাল লাগে,।আমি যেসব বই পড়ি এগুলা দোকানে পাওয়া যায় না, ইবুক রীডার ছাড়া কোন গতি নেই। তবে কাগুজে বই সবসময়ই একটু আলাদা, পছন্দমত একটা বই কিনতে পারলে বাকি দিনটা ভালই কাটে। আমি মনে করি একটা বাসার বুকশেলফই সেই বাসাটির সবচেয়ে সুন্দর আসবাব(এবং রুচির প্রতিনিধিও বটে), অথচ আমার বাসাতেই বুকশেলফ রাখার জায়গা নাই!

সব বইয়ের লিংক যদি অনলাইনে পাওয়া যেত, একটা ভার্চুয়াল বইমেলা করে সেখানে যদি লিংক দেওয়া থাকতো, তবে সেখানেই ঘুরে আসতাম!

দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে চাইলে এই সাইটে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে। নতুন বইয়ের গন্ধের মজাই আলাদা।
কিন্তু কয়েকদিন আগে একটা প্রামাণ্যচিত্র দেখে কাগজ বাচাঁনোর কথা মাথায় খালি ঘুরতেছে। এক হাজার বই ছাপাতে নাকি প্রায় দু'টা গাছ কাটতে হয়। তাই বলছিলেম কি, ই-বুক জিনিসটা খুব একটা খারাপ না। শুধু একটা নস্টালজিয়া বিসর্জন দিয়ে যদি একটা গাছ বাঁচানো যায় মন্দ কি ?

---নীল ভূত।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।