বড় দেশে ফিরতে ইচ্ছা করে।
আত্মীয়স্বজন ছেড়ে প্রবাসে আছি বেশ কিছু দিন হল। বাড়ি ফিরতে মন চায়ই। কিন্তু সে কথা বলছি না। বলছি দ্যাশের কথা। কখনও তাকে দেখি নি। বড় দেখতে ইচ্ছা করে।
আমি বাঙাল।
এই কথাটা যখন বাঙলা-ভাষী কেউ বিশেষ করে বলতে যায়, তখনই বোঝা যায়, তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে। বাংলাদেশের লোকেদের এই ট্যাগ-এর দরকার পড়ে না। আমাদের এখনো পড়ে। যখন য-এর টানে সহপাঠীরা হাসে, চ-এর টানে ব্যঙ্গ করে। সবাই করে না। কেউ কেউ করে। কেউ কেউ এখনো মনে রাখে, বাঙালরা উদ্বাস্তু হয়ে এসেছিল এদেশে। তারা বস্তি বানাত। চাকরি নিয়ে নিত। কৃপণ ছিল। দ্যাশের ক্ষেতভরা মাছ আর ধানে ভরা পুকুরের খোঁয়াড়ি যাদের এখনো কাটেনি। এদের তখন মনে করাতে হয়, পূর্ববাঙলা থেকে যাদের আসতে হয়েছিল তাদের কিভাবে আসতে হয়েছিল। কি অবস্থায় আসতে হয়েছিল। কি সম্বল করে নতুন জীবন শুরু করতে হয়েছিল। তবু, উপলব্ধি করানো যায় না। আর তারা এও মনে করে, এদের মত বাংলাদেশিরাও কৃপণ। ওদের গল্প সব ঝুটো, বাংলাদেশে আসলে দারিদ্র আর সিডার বই বেশি কিছু নেই।
অনেকেই এমন নয়। বহু লোকেই ঘটি-বাঙালে তফাত করে না। অনেকে জানেও না তারা ঘটি না বাঙাল। বলে, এখন তোমরাও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি। ব্যস। তোমরা ভারতীয়। এটাই তোমাদের পরিচয়। আগে কি ছিল তা ভুলে যাও।
ভুলে যাই। আজকে আমেরিকায় পড়াশোনা করছি, আরামে। উচ্চশিক্ষা পাচ্ছি। আর দাদু বরিশাল ছেড়ে এসে কলকাতায় থাকতেন পুকুরধারে দরমার একটা ছোট ঘরে। ঘড়ির কথা স্বপ্নেও আনা যেত না, কারখানার ভোঁ শুনে পরীক্ষা দিতে যেতে হত। একদিন তাদের বাঁশি খারাপ ছিল বলে অঙ্ক পরীক্ষায় যেতে বড় দেরি হয়ে যায়। শেষ করা যায়নি। বৃত্তি পাননি। কলেজে অঙ্ক নিয়ে পড়া যায় নি। সাহিত্যের এক দয়ালু অধ্যাপক সেখানে অঙ্কের নম্বর কম হলেও চলবে বলে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন। শেষে সংস্কৃতর প্রফেসর হয়েছিলেন; অঙ্ক পড়তে না পারার আক্ষেপ জীবনে যায়নি। আমি অঙ্ক পড়তে ঢুকেছিলাম বলে বড় খুশি হয়েছিলেন। আজ কি হবে সে কথা মনে করে।
পশ্চিমবঙ্গের কিছু কিছু মানুষের বাংলাদেশ সম্বন্ধে খারাপ ধারণা হবার নানা কারণের মধ্যে বড় কারণ দুটো। এক, যারা এসেছিল ওখান থেকে তারা কি অবস্থায় এসেছিল। আর, যারা গেছিল তারা কেমন ছিল। সেদিনের লোকেদের সবার মনেই এখনো জ্বলজ্বলে দাঙ্গার স্মৃতি। আমাকে ইংরাজি পড়াতেন এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক। দেশভাগের সময় থাকতেন মুসলমান পাড়ায়। মাত্র কয়েক ঘর হিন্দু। এক রাত্রে পাড়ার সব মুসলমান অন্য কোন পাড়ার হিন্দুদের পাপের বদলা নিতে এল। সবাই একটা বড় দোতলা বাড়িতে গিয়ে লুকোনো গেল। ওরা জানলার গ্রিল বেয়ে ওঠার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে একজন ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এনে জানলা আর দরজার গ্রিলে লাগিয়ে দিলেন।এবার গ্রিল ধরতে গিয়ে কয়েকজন মরে ওখানেই আটকে রইল। বাকিরা বাড়ি ঘিরে রইলেও ভয়ে আর কিছু করল না। সকালে সুরাবর্দি সাহেবের পুলিশ এল। ওদের বাঁচাতে তেমন গরজ নেই, মুসলমানের দেহগুলো সরাতে এল। তবুও তাদের সাহায্যে হিন্দু পাড়ায় পালানো গেছিল। এই গল্পটা বলার সময় সেই শান্ত সৌম্য বৃদ্ধ কেমন উত্তেজিত হয়ে পড়তেন। চোখগুলো জ্বলজ্বল করত। অবাক লাগত, একটা মানুষ এত বদলে যায় কি করে। কিন্তু দোষই বা দেব কি। প্রাণের দায় বড় দায়।
আমার দিদা তখন কিশোরী। কলকাতায় থাকতেন। হিন্দু পাড়ায়। তাঁর বাবা তাঁদের বাড়িতে এক মুসলমান দর্জিকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। রাত্রিবেলা তাকে কাটতে লোক এসেছিল। খুঁজে না পেলেও সন্দেহটা যায়নি। বাড়ির মালিককেই পাড়ার কলঙ্ক বলে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। নেহাত পাড়ায় অনেক দিনের বাসিন্দা, চেনা বামুন বলে বেঁচে যান। দিদার ধারণা হয়েছিল, এমনই হয়ত সব কিছুরও শেষ ভালই হবে। দাঙ্গা শেষের পর এক সপ্তাহ বাবা বাড়ি থেকে বেরোতে দেন নি। তারপরও বেরোলে রাস্তায় এদিক ওদিক কত লাশ পড়ে থাকত। চেনা লোক। অচেনা লোক। পাশের এক পাড়ায়, এক বাড়ির বারান্দায় দেখা গেল, সারি সারি লোক ঝুলছে। আর তাদের চামড়াটা ছাড়ানো। যেমন করে মাংসের দোকানে ছাগল ছাড়ায়। কোন ধর্মের মানুষ সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। দিদা অজ্ঞান হয়ে যান।
এই রকম পরস্পর পরিচিতি দিয়ে শুরু হলে সম্পর্ক ঠিক হতে যে বড় সময় লাগে। এই সেদিন কলকাতা থেকে প্লেনে ফিরছি আমেরিকায়। প্লেনে এক স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হল। দুজনেই গবেষক। প্রৌঢ়ত্বের দিকে। খুব সৌম্য ব্যবহার। বহু দেশ ঘুরেছেন। দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে কথা হচ্ছিল। আমি দুঃখ করে বলছিলাম, এখানে আমার সহপাঠীর কথা। বাসে কি মেট্রোয় পেছনের দরজা দিয়ে ওঠে, যাতে সামনের দরজায় ভাড়া না দিতে হয়। এখন বেশিরভাগ বাসে ড্রাইভার আর পেছনের দরজা খোলে না। তাই সে সেয়ানা ধূর্ত শয়তান ইত্যাদি বলে ড্রাইভারকে গালি দেয়। সে বেচারা অবশ্য হিন্দি বোঝে না। এমন লোকেদের জন্যই ভারতীয়দের বদনাম হয়, বলছিলাম। বললেন, তা ঠিক, এমন কিছু আছে বটে। তারপর বললেন, এসব সবথেকে বেশি বাংলাদেশীদের মধ্যে। লোয়ার ক্লাস কাজ করে ওরাই সবথেকে বেশি। উদাহরণ দিলেন, জাপানে নাকি অনেক দিন ছিলেন। সততার জন্য ওদের সুনাম আছে। তাই সতর্কতা, কড়াকড়িও কম। একদিন এক সুপারমার্কেটে বড় চুরি হল। দেখা গেল, ওখানকার দুই বাংলাদেশী কর্মচারীরই কাজ। খারাপ লাগল শুনতে। জেনারেলাইজ করছেন, বললাম। উনি বললেন, তোমার কম বয়স, তুমি কি জান। আর বেশি কিছু বলতে পারলাম না।
আবার উল্টো দিকটাও দেখেছি। বরিশালে আমাদের প্রতিবেশী ছিলেন, দেশভাগের সময় এদিকে চলে আসেন, এমন একজনের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ আছে। আমি আমেরিকা আসব শুনে বলেছিলেন, কখনও পাকিস্তানিদের সঙ্গে মিশো না। ওদের বিশ্বাস করো না। ধূর্ত, ছোটলোক, শয়তান। আমাদের সঙ্গে কি করেছিল দেখেছ তো। একেও কিছু বলতে পারিনি। জীবনের পথই বদলে দেয় যে ঘটনা, তার প্রভাব কি আর জীবনে যায়।
বাংলাদেশ সম্বন্ধে সমব্যথী এটা বলে নাহয় সচলায়তনে ঢোকার পারমিশন পেতে চেষ্টা করছি। জিজ্ঞেস করতে পারেন, সচলায়তনই কেন। স্বীকারোক্তি দিই। এর খোঁজ পেয়েছিলাম প্রায় দুই বছর আগে। গুগলে বাংলা হরফে কিছু সার্চ দিতে গিয়ে। সেটা ছিল সন্ন্যাসীদা’র লেখা। পড়েছিলাম। তারপর সচলের ভান্ডারে বিবিধ রতন দেখে অ্যাডিক্টেড হয়ে পড়তে লেগে গেছিলাম। এই দুই বছরে প্রথম পাতায় এমন খুব বেশি লেখা বেরোয়নি যা আমি দেখিনি। তখন কিছু অন্যরকম ছিল। লোকজন আরো কম ছিল। তখন লিখতেন এমন লেখেন কিছু লোক এখন আর দেখি না। আবার এখন পুরো সচল এমন অনেকের তখনও অতিথি-জন্মও হয়নি। মাঝে মাঝে কিছু লিখতে হাত নিশপিশ করত। অন্তত অসাধারণ সব লেখায় প্রশংসাটুকু জানিয়ে আসতে। কিন্তু ভাবতাম, এখানে আমি কি অধিকারে লিখব। নীরব পাঠক হয়েই থেকে যেতাম। কিন্তু কদিন আগেই যখন একদল নতুন সচল হলেন, তখন নিজেকে খুব বোকা মনে হল। ভাবলাম, সেদিন থেকে লিখতে শুরু করলে এতদিনে হয়ত সচলই হয়ে যেতাম। তাই আজ সাহস করে কিছু লিখে ফেললাম।
দু’কলম বাংলা পড়ার সুযোগ পাই, এখানে এলে। যাঁরা খোঁজখবর রাখেন তাঁরা সবাই মানেন, বাংলা ভাষাকে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবার জন্য পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা প্রায় কিছুই করেনি। তারা চ্যাটে বাংলা লেখে ইংরিজি হরফে, ওয়েবসাইট লেখে ইংরিজিতে, কখনও বাংলা উইকিতে যায় না। কন্ট্রিবিউট করা তো পরের ব্যাপার। বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাল-বাসী করে তোলার সিংহভাগ কাজই হয় ওপার বাংলা থেকে। তাই বাংলায় গুগল সার্চে যা আসে প্রায় সবই বাংলাদেশি। এইভাবেই কখনও খুঁজে পেয়েছিলাম সচলায়তন।
শুধু যে লেখা পড়তে সচলে আসি, তা নয়। আমার জীবনে দুটো জিনিসের জন্য গর্ব হয়। এক, আমি বাঙাল বলে। ভানুবাবু স্মরণীয়। আর দুই, সেই বিষয়ে আমি সচেতন বলে। ডিজ্যুস জেনারেশনের সঙ্গে ঠিক মানিয়ে নিতে পারি না, যাদের শিকড় কেন বাবা-মার প্রতিই টান নেই। আমার পরিবার আমাদের শিকড়ের কথা ভোলে নি। তাই আমিও। ছোটবেলা থেকেই গল্প শুনতাম। আমার দাদু বরিশালের গ্রামের বাড়ির গল্প বলতেন। যেখানে এক কিলোমিটার হাঁটলে তিনটে খাল পড়বে। সেই সব খাল দিয়ে নারকেল-চোরের সঙ্গে নৌকায় চেজ-এর গল্প শুনতাম। কোনো থ্রিলারের চেয়ে কম ছিল না। সেখানের ভূমিরূপ পুরো মুখস্থ হয়ে গেছিল। ঠাকুমা গল্প বলতেন। ফরিদপুরে বাপের বাড়ির গল্প। নোয়াখালির গল্প। তাঁর মামারা নোয়াখালির জমিদার ছিলেন। নোয়াখালির দাঙ্গা থামাতে গান্ধীজি গিয়ে সেখানে ছিলেন। সেই গল্প। বাড়িতে সাদা পাথরের একটা গোল ফোয়ারা ছিল। তাতে পূর্ণিমার চাঁদের আলো পড়ে মায়াময় লাগত। সেই গল্প। দাঙ্গার সময় সবাইকে সব ফেলে পালাতে হয়েছিল। বহু বছর পর ঠাকুমা সেখানে গিয়ে দেখেছিলেন সেই ফোয়ারা ভাঙাচোরা। এখানে ছোটবেলায় খেলার কথা মনে করতে অদ্ভূত লাগত। সেই গল্প। আজ আর সেসব গল্প শোনা হয় না। আজ এখানে আসি। গল্প শুনি। আজকের বাংলাদেশের গল্প। ছবি দেখি। আজকের বাংলাদেশের ছবি। মনে আঁকা ছবির সঙ্গে মেলাই।
দাদু খুব বাগান করতে ভালোবাসতেন। দেশে নাকি গ্রামের বাড়িতে চারদিকেই অঢেল ফুলের গাছ ছিল। ভোরে ঘুম ভাঙলেই পাখির ডাক শোনা যেত, লেবু আর শিউলি ফুলের গন্ধ পাওয়া যেত। কলকাতায় আমার ছোটবেলাকেও সেই সুযোগটুকু দেবার দাদু আর বাবা অনেক চেষ্টা করতেন। কোনোদিন ফ্ল্যাটে থাকি নি আমরা। নিজেদের ছোট বাড়িটার ধারে একফোঁটা জায়গাতেও য’টা সম্ভব গাছ লাগাতেন। সেই গাছে পাখি বসলে চেনাতেন। ডাক নকল করতে শেখাতেন। সকালে গন্ধটুকু আসত। গন্ধ থেকে গাছ চিনতে বলতেন। আজ আমেরিকায় আছি। দরজা খুললে হয়তো পাই অ্যাপার্টমেন্টের অন্য কারুর আনানো পিজার গন্ধ। দেশের সেই গন্ধটুকু পেতে আসি এখানে।
এখানে এলে আমিও বাকি সবার সঙ্গে মিলে নীরবে আনন্দ করে যাই, যখন ওই পাঁচজনকে লটকানোর খবর আসে। মনটা ভাল হয়ে যায়, যখন দুটো পূরণ-পীড়ন ছড়া আমিও মেলাতে পারি। ওদের অপকর্মের কাহিনীও তো কম শুনি নি। ছোটবেলায় শোনা সে প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ মনে গভীর দাগ কেটে যায়। একদিন দুনিয়াটা ওদের থেকে মুক্তি পাবে, সকলের সঙ্গে এই স্বপ্নটুকু দেখে যাই সচলে এসে।
মাটি থেকে একটা গাছের শিকড় উপড়ে গেলে সেখানে আবার একটা গাছ হয়। কিন্তু শিকড়ের যে থাকা মুশকিল, মাটিটুকু ছাড়া।
--------------
কৌস্তুভ
মন্তব্য
খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা। সাবলীলতার সাথে একটা সারল্য আছে, যেমনটা থাকলে অচেনা মানুষের গল্পও আপন লাগে। নিয়মিত লেখা চাই।
আপনি যে অনেক দিন পড়ার পর লিখতে শুরু করলেন, এ নিয়ে ভাববেন না। আমি মনে করি এইটাই পদ্ধতি হওয়া উচিত, সচলায়তনের রীতিনীতি ও আদর্শগুলো জানা যায় ভালো করে।
ভালো থাকুন।
ঘ্যাজম্যাজ করে লিখে যান। সচলায়তনে স্বাগতম।
আরো অনেক লিখুন। আপনার কথা জানতে ভালো লাগবে।
........................................................................................................
জগতে সকলই মিথ্যা, সব মায়াময়,
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয় ।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
চমৎকার লাগল লেখাটা---
সচলায়তনে স্বাগতম!
বাহ! ভালো লাগলো। দুটি বছর চুপচাপ কেন যে থাকলেন! আরও লিখুন। স্বাগতম!
লেখাটা মন ছুঁয়ে গেলো। মন খারাপও করে দিলো। হাত-পা ঝেড়ে লিখতে থাকুন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
স্বাগতম, লেখাটা খুব ভালো লাগলো, আরও লিখুন, জলদিই!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
প্রথম পোস্টেই পাঠকহৃদয় ছোঁয়া দারুণ একটা ব্যাপার...
সুলেখককে স্বাগতম!
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এই যে শুরু করলেন, এখন থেকে লিখে যাবেন তাতেই হবে
ঝরঝরে লেখনীর জন্য বেশ ভাল্লাগলো লেখাটি,
পড়তে পড়তে দারুণ একটি লেখার কথাও মনে পড়ে গেল।
জানাই সুস্বাগতম,
ভালো থাকুন....
--------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
পাঁচাইলাম - আর দুই বছর নীরব থাকার জন্য ডেফিনিট মাইনাস! লেখে যান অবিরাম।
আর বরিশাল একদিন যাবেন অবশ্যই। সেই আমল থেকে অনেক অদল-বদল হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু পুরো শহরটাই এখনো অদ্ভূত সুন্দর রয়ে গেছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
হিমালয়ের দিকে ইতস্ততঃ ঘুরে বেড়ানোর সময় এক বাঙ্গালী ভদ্রলোকের সাথে পরিচয় হয়েছিলো, জামশেদপুরে থাকেন বহু বছর ধরে। জন্ম নারায়নগঞ্জে।ছেচল্লিশের দাঙ্গার সময় তার বয়স ছিলো বারো, পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য ছিলেন তিনি। একা একা গিয়েছিলেল দর্শণা। বুঝতেই পারছেন বাংলাদেশ সম্বন্ধে তার ধারণা কিরকম। আমি অমুসলিম আর তাও আবার বাংলাদেশের শুনে তার প্রতিক্রিয়াও সেইরকম হয়েছিলো। তাকে বিশ্বাসই করানো যাচ্ছিলো না এখনকার বাংলাদেশ আর আগের মত নেই। অনেকক্ষন লেগেছিলো বাংলাদেশ সম্পর্কে তাকে এখনকার ধারণা দিতে। দেশে আসার নিমন্ত্রণ করেছিলাম।
...পহেলা বৈশাখের সময়।
আর উনি বাষট্টি বছর পরে বাংলাদেশে ফিরে এসে যদ্দুর মনে হয় ভালো কিছু স্মৃতি নিয়েই ফেরত গেছেন।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
লিখতে থাকুন। আপনার ভান্ডারে অনেক গল্প আছে, বোঝা যায়। আর বাংলাদেশে এসে বেড়িয়ে যান একবার। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আসলে পয়লা ফাল্গুন, ভ্যালেন্টাইন, একুশে সবই পাবেন
কৌস্তুভ,
সচলায়তনে স্বাগতম।
আপনার লেখা খুব ভালো লেগেছে, লেখা চালায়ে যান।
আমি নিজেও কম্পিউটারে বাংলা লেখার ভয়ে বহুদিন শুধু পড়েই গেছি। অভ্র ডাউনলোড করে চেষ্টা করে দেখলাম যে খুব জটিল না ব্যাপারটা। অনেকদিনের অনভ্যাসে বানানের গন্ডগোল হয় কিছু কিন্তু সেটাও ঠিক দেওয়ার লোক আছেন এখানে অনেক। প্রবাসে বসে দেশের মাটির গন্ধ পাওয়ার সু্যোগ কয়জন পায় বলুন?
বাংলাদেশ নিয়ে আপনার মমতা ভালো লেগেছে, যদিও বাংলাদেশের পশ্চাৎগমন হয়েছে প্রচুর গত চার দশকে তবুও দেশকে ভালোবাসি শর্তহীন ভাবে, আমারও ফিরতে ইচ্ছে করে স্মৃতির শহরে।
যদি পারেন ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে বেড়াতে যান, ভালো লাগবে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
পুরো লেখাটা তন্ময় হয়ে পড়লাম। স্রেফ অসাধারণ। আশা করি দু'বছরের অনুপস্থিতি শীঘ্রই মিটিয়ে দিবেন ভালো ভালো লেখা দিয়ে।
সচলে অনেক বেশি স্বাগতম।
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
উৎসাহ দেবার জন্য সবাইরে ধনেপাতা। সত্যি বলতে কি, লেখাটা মডুবৈতরণী পার হবে কিনা সেটাই ভাবনা ছিল। বেনিআসহকলা-র যে মডু পার করে দিয়েছেন তাঁরে ধনেপাতার চাটনি।
জুয়েইরিযাহ মউ, লিঙ্কটি দেখলাম, ভাল লাগল। এধরণের সকলের অভিজ্ঞতায়ই অনেক মিল পাওয়া যায়, আর ইনি তো আবার বরিশালের - ঝালকাঠি, আমরা রায়েরকাঠি।
কৌস্তুভ
অসাধারণ লাগলো লেখাটা!
নীড়পাতায় নিয়মিত আপনার লেখা দেখতে পাব বলে আশা রাখছি। মডুবৈতরণী নিয়ে বেশি মাথা ঘামায়েন না।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
আপনার লেখার হাত খুব ভাল। সচল থাকুন।
সচলে এই অচলের পক্ষ হতে স্বাগতম কৌস্তুভদা। আপনার লেখার ভংগী সুন্দর। আনন্দ নিয়ে লিখতে থাকুন আবেগের উচ্ছলতায়।
সচলে আমার আগমন ঘটেছে কৈশরের এক বন্ধুর দেয়া লিঙ্ক ধরে। তারপর আর নেশা কাটেনি। কাটবে বলে আশাও করি না কোনদিন। ভালো লিখতে পারি না বলে স্রেফ পড়ে যাই আর মন্তব্য করে যাই। নিজেকে এখানকার একজন মনে করেও মনের ভেতর সুক্ষ্ম একটা গর্বের স্পর্শ অনুভব করি। এটাই বা কম কিসে!
---- মনজুর এলাহী ----
ধইন্যবাদ, ধইন্যবাদ...
তাহলে, রাহিন ভাই, মডুবৈতরণী পারের ব্যাপারটা আপনি দেখছেন ধরে নিলাম...
মনজুর ভাই, আপনে তো মাঙ্কি কিং নিয়ে বেশ সুন্দর লিখলেন, কতজনের ছোটবেলার কথা মনে পড়ায়ে দিলেন, আবার লিখতে পারি না বলছেন কেন?
কৌস্তুভ
ভাষায় এমন আবেগের প্রকাশ সবাই পারে না। অসাধারণ।
জয়
জয়,
শর্মিলা বসুকে নিয়ে লেখাটি দিয়েই আপনাকে চেনা। আপনার লেখা চোখে পড়লেই ক্লিক করি। ভাবলাম আপনার প্রথম লেখাটি দেখি। ভাগ্যিস কাজটা করেছিলাম। তা না হলে এমন হৃদয় আর্দ্র করা লেখা অপঠিতই থেকে যেত। আমরা এমন আত্মঘাতী কেন; কেন নিজেদের বুকে ছুরি চালিয়ে টুকরো হয়ে গেলাম?
কেবল ধন্যবাদই জানিয়ে ছোট করছি আপনাকে, দাদা, মাইন্ড করবেন না
নতুন মন্তব্য করুন