গ্রাস
খিদা নাগে বাহে, বড্ড খিদা
দিমিতরের শোকের শোধ জন্ম-জন্মান্তরে আমরা চুকাই
ভুগে, ধুকে, মরে হেজে ভস্ম সকল
শস্য নেই? আয়রে সবাই, মাটি কেটে খাই-
ওই মাটিতে সকল ফলে, দে উদরে, দলা দলা ফেল।
ভীষণ হাসে মনাটা, খিদে পেলে বুঝি আরো হাসে
দেখ না, ছোট বোনটাও যমের দুয়ারে
তবু অকাতরে হেসেই যাচ্ছে। খিদা লাগে মনা খিদা?
অই পিছনপাকের পুকুরে পানি আছে, খাগে যা।
হিহিহি...
কিংবা শস্য আছে
আছে লক্ষ সোনালী শিষ, থরে থরে শুয়ে ঘুমাচ্ছে তারা
অসভ্য সুখে। মালিকের গুদামে, মহাজনের গোলায়।
মহাজনের ছেলে বড় ফুটফুটে, নাগো? কি সুন্দর নাদুসনুদুস পা-হাত
দেখে মনে চায় কামড়ে কামড়ে খাই।
পারসিফোনের ফুলেল পদক্ষেপ-
ওই আসে ন্যাংটা বসন্ত আবার, ঝরা পাতার কাফন বিছিয়ে
মৃত্যুকামিনী রুপপোজীবিনী, তোর মরণ হয় না ক্যান?
এখানে তো দেদার মরে, খেয়ে, না-খেয়ে, আধপেটা খেয়ে-
জন্মে-মরে সব হাড়হাভাতে পঙ্গপাল, মাছিটাও বসে না দেখে।
ধুধু উঠান, এক কোনে কাকের কুড়িয়ে আনা হাড়,
খোকা হামা দিয়ে যায়, কাকের ছায়াটা বেড়া থেকে ক্রমশ বিস্তৃত-
উল্লম্ব খুঁটিতে বসা দাঁড়কাকের কৌতুকদৃষ্টি,
মস্তক-হেলনে আত্মিয়তার আভাস।
খোকার কষ বেয়ে অনর্গল লালা গড়ায়।
পেটে গ্রেলিনের লাভা।
ফেন-ফেন করে মুখে থুতু ফেনিয়ে ওঠে,
ফেনিয়ে ওঠে বিষ, পাত্রের কানায় কানায়-
দেখতে দেখতে চোখের মণিগুলো ছোট হয়ে আসে,
বিন্দুর মত নিবদ্ধ মোক্ষম, থালভর্তি ভাত-
তার উপরে উপুর শুয়ে মণিগুলো, আর প্রশ্বস্ত ধবল চোখ।
শুধু মণি, শুধু জিভ, শুধু শুভ্র অনন্তর জ্বালা।
কপাটহীন দরজার মত মুখগুলো খুলে যায়,
এক হয়ে আরেক মহাশূণ্য, দন্ত-জিহ্বাবিহীন বিবরবিশেষ-
অপরিমেয় ময়ালগ্রাসে গিলে খায় পৃথিবীকে।
ফারাবী
৬।৩।'১০
মন্তব্য
কোবতে ভালো লাগলো।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য বুনোহাঁস। অনেক দিন পর একটা কোবতে লিখে ভাল লাগল। তাই ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করি। আপনাদের মন্তব্যই আমার প্রেরণা। ভাল থাকবেন।
চমৎকার!!!
দীর্ঘ কবিতাটা পড়তে সময় নেবার জন্য ব্যাপক ধন্যবাদ মজনুভাই। এসবের মধ্যেই বেঁচে থাকার সার্থকতা খুঁজে পাই।
ফারাবী
কবিতা ভালো লাগলো।
এম এস আর শাহিদ
একেকটা মন্তব্য যেন নতুন করে লেখার শক্তি যোগাচ্ছে। শুকনো ধন্যবাদ জানাতে সবাইকে খারাপ লাগছে। তবুও- অন্তরের অন্তরতম ধন্যবাদ পাঠকদের।
ফারাবী
----------------------------------
হে মহামানব, এখানে শুকনো পাতায় আগুন জ্বালো!
ফারাবী, "কবিতা"কে "কোবতে" বলার কারণটা কি একটু বুঝিয়ে বলবেন?
"কোবতে" শব্দটার কোন অর্থ নেই। এমনকি "কবিতা" শব্দটার উচ্চারণও "কোবতে" নয়। কথ্যভাষায় কেউ কেউ যদি "কোবতে" বলেও থাকেন তাহলে সেটাকে ক্যাটেগরী ট্যাগ হিসাবে ব্যবহার করাটা কি যৌক্তিক?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অবশ্যই বুঝিয়ে বলব। আমার কবিতাগুলো কখনও সেই অর্থে কবিতা হয়ে ওঠে না, কেমন যেন 'কোবতে' হয়ে যায়। অর্থাৎ কবিতার অপূর্ণাঙ্গ অতৃপ্তিকর কোন সংস্করণ। তাই নিজেকেই ব্যঙ্গ করে বলা, অবশ্যই কবিতাকে নয়।
ফারাবী
বেশ ভালো লিখেছেন
আরো লিখুন
------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
আপনাদের উতসাহ পেলে হাজারবার লিখব (না পেলেও না লিখে উপায় নেই যদিও )। আপনার ভাল লেগেছে বলে আমিও আনন্দিত।
ফারাবী
--------------------------------
হে মহামানব, এখানে শুকনো পাতায় আগুন জ্বালো!
নতুন মন্তব্য করুন