সমাজতন্ত্র বলতে আমি বুঝি যেখানে সবার সমান অধিকার- জাতি,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে। আর ধর্ম সেটাই যা শেখায় পরমত সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা। এই সংজ্ঞায় তন্ত্র আর ধর্মকে আমি এক কাতারে দেখি।তবে কেনো আমাদের অঞ্চলে সমাজতন্ত্রের এই দুরাবস্থা? আসলে আমাদের অঞ্চলে সমাজতন্ত্রের একটা স্বকীয় রূপ দরকার ছিলো। কিন্তু তার পরিবর্তে আমাদের তন্ত্রীরা ছিলো সোভিয়েত আর চীনপন্থী। যার প্রভাব মুক্তিযুদ্ধের সময়েও ছিলো। এমনও শোনা যায়, এদেশীয় কম্যুনিস্টরা দুদিকেই গুলি ছুঁড়েছে।
হিযবুত তাহরীর এর ওয়েব-পেইজে দেখা যায়,ওরা খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়।আর তাদের সদস্যরা হবে মুসলিম।তাহলে সেই পরিবর্তিত পৃথিবীতে অমুসলিমদের অবস্থান কি হবে? তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক?কেননা কনভার্টেট মুসলিমরা আছে না দ্বিতীয় কাতারে? এরা আসলে সাম্রাজ্যবাদী বলতে বোঝে ইসরাইলের এয়াহুদী আর পুঁজিবাদী বলতে কেরেস্তান এর আমেরিকা। একটা ধর্মভিত্তিক দেশ/পৃথিবী গড়ে তোলার পুরানো নগ্ন খেলা-ই এদের উদ্দেশ্য।
কাজেই হিযবুত তাহরীর আর সমাজতন্ত্রী- এদের দুজনের আক্রমণের বিষয়বস্তু এক হলেও পরিত্রাণ এর উপায়টা ভিন্ন। হিযবুত মুলতঃ সমাধানটাকে সামনে রেখে সমস্যাকে চিনহিত করেছে। শুধুমাত্র তরুণদের দৃষ্টি আকর্ষণ এর জন্যই বেছে নিয়েছে গাল ভরা বুলি “পুঁজিবাদ,সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক”।
বাকি থাকলো গণতন্ত্র-গণের তন্ত্র। যে ব্যবস্থায় প্রতিটি মানুষ- নারী,পুরুষ,ধর্ম,বর্ণ,আচার নির্বিশেষে তার অধিকার ভোগ করার স্বাধীনতা পাবে। যেখানে সে তার বাক,পোশাক সবকিছুর স্বাধীনতা পাবে। সে দাঁড়ি,টুপি,পৈতে,টিকি,হিযাব,নিকাব,ধুতি,পাঞ্জাবি যা-ই পরুক রাষ্ট্রের তাতে বারণ করার অবকাশ নাই। একজন ব্যক্তি চাইলে পোশাক না ও পরতে পারে যদি তার আঞ্চলিক সংস্কৃতি তাতে বাধা না দেয়। কিন্তু একজনকে নিয়ে তো আর রাষ্ট্র নয়,কাজেই রাষ্ট্রের দ্বিতীয় ব্যক্তিটিও অধিকার রাখে প্রথমজনের সমপরিমাণ। আমার অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে যদি তোমার অধিকার ক্ষুণ্ণ করি,তবে তা গণতন্ত্র নয়।কাজেই নিজের অধিকারের পাশাপাশি অন্যের অধিকারের ব্যাপারটিও গণকে মাথায় রাখতে হয়।
এতো কিছু কেনো লিখছি? ইদানীং খুব দেখি,একটা পরাশ্রয়ী বাংলা সংস্কৃতি গড়ে তোলার খুব চেষ্টা করছেন কিছু কিছু জ্ঞানী,সংস্কৃত ব্যক্তি যাদেরকে তাহরীর এর জ্ঞান ভান্ড ও বলা চলে। ঢালাওভাবে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে হিন্দুয়ানি বলে সঙ্গায়িত করা এদের একটা পুরানো বদভ্যেস।এদের তরে শুধু এতটুকুই যোগ করি-আমাদের মতো পলায়নপর মধ্যবিত্ত যা-ই বলুক আর করুক না কেনো বাঙ্গালি অগ্রহায়ণেই ধান কাটবে,শাওয়ালেই চাঁদ দেখবে,আশ্বিনেই পুজার ঢোল পিটাবে আর বৈশাখেই মেলায় যাবে। আমরা সামারের ভ্যাকেশন এর অপেক্ষায় থাকলেও বাংগালি জৈষ্ঠ্যের রোদে পুড়ে রাজশাহীর আমের সুখ নেবে। আসলে যা কিছু আমাদের নিজস্ব,আমাদের ভূমিজ সেইসব কিছু নিয়েই আমাদের বাঁচার চেষ্টা করা উচিত। না মার্কিনী, না রুশীয়,না চৈনিক,না ভারতীয়, না আরবীয়,না পাকি- আমরা হবো বাঙ্গালি,বাংলাদেশী বাংগালি।
দ্রোহী-স্বপ্নেরা।
মন্তব্য
হিযবুত তাহরীর নামটা দেখেই পোস্টে ঢুকলাম। এদের ভন্ডামি ঢের জানা আছে। আধুনিকার মোড়কে মধ্যযুগীয় পণ্য বিপণনের কৌশল এদের।
সচলে কি এটাই আপনার প্রথম লেখা? সচলায়তনে একজন সর্বজনবিদিত "দ্রোহী" আছেন কিন্তু !
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হ্যাঁ,এটাই প্রথম। আর সেকারণে এতোদিন খুঁজেই পাচ্ছিলাম না লেখাটা।
আর আমি হলাম দ্রোহী-স্বপ্নেরা
এই 'এক' হয়ে যাওয়া বিষয়বস্তুটা কী? সাম্রাজ্যবাদ/পূঁজিবাদ? হিযবুত তাহরী 'সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক' বলে শ্লোগান দেয় বলেই কি এই দুইকে একদলে ফেলা যায়?!
এটা আপনি জানতেন না??!!
তাহলে তো এই যুক্তি অনুযায়ী অবশ্যই হিযবুত তাহরীর অধিকারও সংরক্ষণ করতে হবে। আজকে আমি যদি একটা ধর্মভিত্তিক দেশ, মানে শরিয়া আইন মেনে চলা বাংলাদেশ 'প্রতিষ্ঠা' করতে চাই, আমার সেই অধিকার ক্ষুন্ন করাটা অগণতান্ত্রিক হবে না? তাহলে?
একটু খেয়াল করুন,আমি কিন্তু বলেছিঃ
"আমার অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে যদি তোমার অধিকার ক্ষুণ্ণ করি,তবে তা গণতন্ত্র নয়।কাজেই নিজের অধিকারের পাশাপাশি অন্যের অধিকারের ব্যাপারটিও গণকে মাথায় রাখতে হয়"
কাজেই আপনার চাওয়ার শরীয়া আইন যদি আমার অধিকার ক্ষুণ্ণ করে তবে আমার দৃষ্টিতে তাকে আর গণতন্ত্র বলতে পারছিনা
আরে দারুণ লেখা লিখছেন তো ভাই !
আপনি তো দেখি পুরাই বস্ !
সবাই জোরে তালি দিন।
শেষের প্যারাটা দারুণ লেগেছে। তবে লেখার মূলবিষয় একটু "এ তো সবাই জানে" লেগেছে। মানে পুরান কথা আর কি। তবে পুরান কথা হলেও এ ধরণের লেখার দরকার আছে, চালিয়ে যান। চেষ্টা করবেন বক্তব্যগুলো আরেকটু গুছিয়ে পরিবেশন করতে। উপরে স্নিগ্ধা আপুর মন্তব্যটা খেয়াল করবেন।
সচলে স্বাগতম।
---------------------------------------------------
ইটের পরে ইট সাজিয়ে বানাই প্রাণের কবিতা ...
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
ঠিক বলেছেন,পুরান মদ ই ঢেলেছি নতুন বোতলে।আর সেজন্য ১০+ ক্যাটাগরিতে ফেলেছি-নতুন মাতালদের জন্য
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ার এবং উৎসাহ দেবার জন্য।
ভালো থাকবেন।
ধর্মীয় উদারতার কোন বেইল নাই। অতিধার্মিকদের মাইরের উপ্রে রাখতে হয়। ওদের মানসিকতাই ওরকম। ওরা মাইর ছাড়া ধর্মও বুঝে না। আমাদের জন্য মানানসই ধর্মনিরপেক্ষতা হচ্ছে সকল ধর্মের অতিধার্মিকদের সমান মাইরের উপর রাখা।
কিন্তু আমাদের দেশে কেউ বাঙ্গালি হতে চায় না। আপ্নে মাইনোরিটি, রাস্তা ছাড়েন
অফ-টপিকঃ 'হিজবুত তাহরীর' কথাটার অর্থ কি?
ভাই সাবিহ, আপনার কাণ্ডজ্ঞান দেখে বড়ই মোহিত হলাম। মন্তব্যের আগে একটু ভাবনা চিন্তা করে নিলে ভালো ।
মূল পচাতো, কাণ্ড থেকেও গন্ধ ছড়ায়...
যাই হোক, আমার মতে ধর্মনিরপেক্ষতা দু'ধরণের হতে পারে। এক, আমরা যেভাবে করি বা করার ভান করি। রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুষ্ঠান শুরুর আগে পবিত্র কোরান, (লোক পাওয়া গেলে) পবিত্র গীতা, পবিত্র বাইবেল, পবিত্র ত্রিপিটক পাঠ, তারপর জাতীয় সঙ্গীত। এটাকে বোধহয় ইনক্লুশনিসম বলে।
দুই নাম্বার উপায়, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সকল সেকুলার কাজ থেকে ধর্মকে আলাদা রাখা, পারলে একেবারে ব্যক্তিগত চর্চার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমাদের দেশের মানুষজনের একটা বড় (এবং প্রভাবশালী) অংশ ভালই ধার্মিক, বা অন্তত ধর্মভীরু। শুধুমাত্র পরকালীন শাস্তির ভয় তাদের সোজা রাখে, বিবেক-টিবেক পরের (সেকেন্ডারি) ব্যাপার। এই ডগমেটিক ধার্মিকেরাই দুই নাম্বার ধর্মনিরপেক্ষতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। এদের জন্যই মাইর।
আমরাই তো পাকি হতে চেয়েছিলাম, তাই না? মাইরের চোটে টিকতে না পেরে, যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেল, তখনি আমরা জিকির তুললাম, "বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ...আমরা সবাই বাঙ্গালি"। তারপর দেশ স্বাধীন করেটরে আবার উলটা মাইরে একেবারে সংবিধানে 'বিসমিল্লাহ..."। কে বলে আমরা বাঙ্গালি?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ভাল বলেছেন!!!
-স্নিগ্ধা করবী
আপনার এই মন্তব্যটা কিন্তু আগেরটার--ধর্মীয় উদারতার কোন বেইল নাই। অতিধার্মিকদের মাইরের উপ্রে রাখতে হয়। ওদের মানসিকতাই ওরকম। ওরা মাইর ছাড়া ধর্মও বুঝে না। আমাদের জন্য মানানসই ধর্মনিরপেক্ষতা হচ্ছে সকল ধর্মের অতিধার্মিকদের সমান মাইরের উপর রাখা। সাথে যায়না।
যাক তবুও আরেকবার মোহিত করার জন্য ধন্যবাদ। একদিনে দুইবার জাংকফুডে অন্তত জান যাওয়ার ভয় নাই। উত্তরাধুনিক কালের এই এক সমস্যা, যে যার মতো হুট করে উপসংহারে পৌছে তাল গাছ জড়িয়ে ছায়ার সাথে কুস্তি লড়ে, দুই ইঞ্চি পানিতে নাক ডুবিয়েই মণিমুক্তা খোঁজায় ব্যস্ত হয়ে যায়।
আমার বাপ-মাও অতি ধার্মিক, পরকালের ভয়ে দফায় দফায় হজ্ব করে, পর্দা-পুশিদা মেনে চলে, সুদ-ঘুষ থিকা দূরে থাকে, গরীব মানুষের উপকার করে। আপনার কথামতো এখন থিকা তাগোরেও মাইরের উপ্রে রাখতে হইব দেখছি।
মামুন ভাইয়ের এই মন্তব্যে
ধর্মভীরুতা এই অঞ্চলের মানুষের বৈশিষ্ট্য, যে বৈশিষ্ট্য নিয়েই হাজার বছর ধরে নানান ধর্মের লোকেরা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে এসেছে। পরবর্তীকালে ধর্মীয় মৌলবাদের যে প্রসার ঘটেছে এখানে, তার পেছনে কখনোই ধর্মভীরুতা দায়ী নয়, এর পেছনে দায়ী অন্যান্য আরো অনেক ফ্যাক্টর, দেশী ও বিদেশী নানান রাজনৈতিক কূটচাল। কিন্তু এর জন্যে ধর্মভীরু বা ধার্মিক জনগোষ্ঠীকে 'মাইরের' উপর রাখার কথা বলাটা এক ধরণের অহেতুক, বিবেকহীন, নোংরা, শিষ্টাচার বহির্ভূত, অযৌক্তিক এবং জ্ঞানের সাথে ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা বহির্ভূত গুরুতর অসদাচরণ হিসেবে দেখছি।
মনে রাখবেন, অতিধার্মিক বা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা লোকেরা কখনোই ধার্মিক বা ধর্মভীরু নয়। সেটা হলে জামাতীদেরকেও ধার্মিক বলতে হয়। আশা করি বুঝতে পারছেন।
---------------------------------------------------
ইটের পরে ইট সাজিয়ে বানাই প্রাণের কবিতা ...
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
'মাইরের উপ্রে' রাখা কথাটা অশালীন, রূঢ় এবং বেহুদা প্যাচাল উদ্রেককারী। ওটার জন্য দুঃখিত। ওটার বদলে 'নিয়ন্ত্রণে রাখা' কথাটা কেমন শোনায়? ধর্ম একটা আবেগসর্বস্ব ব্যাপার এবং মানুষের মনকে এটা কতদূর টলাতে পারে, তার উদাহরণ সুইসাইড বোম্বিং। এরকম সাংঘাতিক একটা জিনিসকে আমজনতার হাতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছেড়ে দিলে তো মহাবিপদ। বাংলা ভাই বাঘমারা কত সহজে দখলে নিয়ে নিয়েছিল দেখেন নাই? যদি সরকার দেশি-বিদেশি চাপের অপেক্ষা না করে শুরুতেই ওদের বিরোধিতা করত (মাইর), তাহলে তো এটা হত না। বাঙ্গালি জাতির ধর্মপরায়ণতা এবং শক্তিপূজাকে আমি ভয় পাই।
মত প্রকাশের নামে যখন মানুষ মাতলামো করে তখন দেখে হাসি পায়। এদের জন্য করুণা হয়।
আপনি পাকি হতে চেয়েছিলেন নাকি? বলেন "আমি" পাকি হতে চেয়েছিলাম, "আমরা" বলছেন কেন? পাকি হতে চাইলে এখানে পড়ে রয়েছেন কেন?
মামুন ভাই এবং পিপিদা, আমার বোঝার ভুল হতে পারে কিন্তু সাবিহ ওমরের মন্তব্যে আমার যা মনে হলো তা হচ্ছে সাতচল্লিশে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত হওয়ার পেছনে যে বিষয়টি বাঙ্গালিকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে তা হল তাদের ধর্মভীরুতা। সকল মুসলমান ভাই ভাই এই অর্থে। ধর্ম আর রাজনীতি গুলিয়ে ফেলার প্রবণতার কারণেই এদেশে এখনো ধর্মকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ব্যবসা চলে। ধর্ম একান্তই ব্যক্তিগত একটি ব্যাপার। রাজনীতির বীজ যখন এতে প্রবেশ করে দূষণ শুরু হয় তখনই।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এই কথাগুলোর সাথে দ্বিমত করার তো কোন অবকাশ নেই। কিন্তু ওমর সাহেব যেভাবে কোমর বেঁধে ধর্মের কান্ধে বন্দুক রেখে সমাজের সর্বরোগের মহৌষধের গোমর ফাঁস করতে লাগলেন সেই ভঙ্গীটা অতি সরলীকৃত জাঁহাবাজি মনে হলো।
মামুন বাহি আমার কাছে কেন যেন সাবিহ ওমর এর মন্তব্য আয়রনিক মনে হয়েছে। আমরা খোঁচা মেরে মাঝে মাঝে উলটা কথা বলিনা, সেরকম। কি জানি ভুলও হতে পারে।
দেখুন, আমি এসব নিয়ে খুব একটা ঘাটাইনা। কারণ এর ফলাফল ভালো হয়না। মনোমালিন্য বাড়ে, ব্লগের পরিবেশ নষ্ট হয়। চারপাশে তাকালেই বুঝবেন কি বলতে চাইছি।
ব্যক্তিগত ভাবে কেউ মন খারাপ করতে পারে এমন মন্তব্য আমি দেইনা, দিতে চাইনা। তবুও উপরে যেটা বলেছি সেটা হয়তো সাবিহ-র খারাপ লাগতে পারে। উনি প্রথম মন্তব্যে যা বলেছেন তা কি ভেবে চিন্তে বলেছেন বলে মনে হয়? আমার তা মনে হয়না। আর ৪৭এ বিভক্তির সময় বাঙ্গালীদের আসলে কোন say ছিল কিনা তাতে আমার সন্দেহ আছে।
সমাজ, রাষ্ট্র এসব নিয়ে মানুষ পড়াশুনা করে, চিন্তাভাবনা করে, তারপর লেখালেখি করে। আজকাল এমন হয়েছে যে যারা চিন্তা করাও শেখেনি তারাও হুটহাট বালখিল্য মন্তব্য করে ফেলে।
না আমি মন খারাপ করি নাই। আমার পড়ালেখা আসলেই কম। কাণ্ডজ্ঞান তার চেয়েও কম। এক কথা বলতে গিয়ে অন্যটা বলে ফেলি।
পিপিদা, '৪৭ এ বাঙ্গালিদের মনোভাব কি ছিল, তা নিয়ে যা জানি (খুব কম জানি) তা সম্বল করেই বলেছি। আমার যট্টুকু মনে হয়েছে, বাঙ্গালি মুসলমানেরা পাকিস্তানকে একটা মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে সাদরেই বরণ করেছিল। সিলেটের মানুষ তো পাকিস্তানের পক্ষে রীতিমতো ভোট দিয়েছে। পাকি নেতারা নাক-উঁচু ভাব না দেখালে, লাথি-গুঁতো না মারলে তাদের সুপ্ত বাঙ্গালিত্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠত এমন তো মনে হয় না। শওকত ওসমান বলেছিলেন, "নৈতিকতার মাজা ধর্মের নামে ভাঙ্গা।" বাঙ্গালিত্বেরো কি একই অবস্থা ছিল না?
পিপিদা, আমাকে '৪৭ এর সিচুয়েশন সঙ্ক্রান্ত কিছু বই বা লেখা প্রেস্ক্রাইব করতে পারেন? হয়তো আমার জানায় ভুল/ফাঁক আছে।
মূল লেখায় সেকুলার বাঙ্গালিত্ব রক্ষার যে আহবান জানানো হয়েছে, তার প্রতিক্রিয়াতেই বলতে চেয়েছিলাম যে, ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীলেরা (এবার আশা করি ভুল করিনি) কখনোই সেটা করতে দিবেনা, যদি না তাদের 'বলপ্রয়োগ' করে দমানো হয়। আর দেশের সাধারণ ধর্মীয় অনুভূতিপ্রবণ মানুষ এদের প্রতি অনেক দুর্বল এবং এদের বিরুদ্ধে যেকোন একশন তাদের জন্য খুবই স্পর্শকাতর হতে পারে। না, ভালবাসাটা প্রতিক্রিয়াশীলদের জন্য নয়, বরং বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি যেগুলোকে এরা রক্ষাবরণ হিসেবে ব্যবহার করে। কোল্যাটারাল ড্যামেজের ব্যাপার আরকি। (আমি নিজেই তো মনে হচ্ছে তাই করে দিলাম এখানে)
মামুন ভাই, ধর্মের ঘাড় বন্দুক রাখার জন্য বড়ই সুবিধার। আমি তাই বলছিলাম ওটাকে সাধ্যমত ঢেকেঢুকে, চেপেচুপে রাখতে। কোন ভণিতা করি নাই, ওটাই ভুল ছিল বোধহয়। যাই হোক, আমার কাছে মামুন হকের আশির্বাদ ও সুদৃষ্টি আর সব কিছুর চেয়ে বড়। আপনার অনুভূতিতে আঘাত দেবার জন্য দুঃখিত, মামুন ভাই। মামুন ভাই ১০০, সাবিহ ওমর ০
আমি আমার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত। সেটা স্বীকার করতেও আমার বাধে না। হঠাৎ আবেগের বশে আপনাকে ওভাবে বলে ফেলেছি। সেজন্য দু:খ প্রকাশ করছি। সবসময় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন, তবে যে সেটা করতে পারে সে-ই সবচেয়ে শক্তিশালী।
আপনি পাল্টা মন্তব্যগুলোতে যেভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন তার কাছে আমি পরাজয় স্বীকার করলাম।
৪৭ এর দেশবিভাগ সম্পর্কে জানতে চাইলে খুব ভালো একটা বই হচ্ছে শংকর ঘোষের তিন খণ্ড "হস্তান্তর" এর প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড।
সাবিহ-এর অভিযোগটাতে অসত্য কিছু নেই। একটু চাঁছাছোলা কেবল। আমরা আয়নায় তাকালে এক একজন নিরীহ ধার্মিকের চেহারা দেখবো। কিন্তু সামষ্টিক চেহারা সেটা নয়। আমাদের বাপ মা ধার্মিক তার মানে এই নয় যে আমাদের সমাজের সবাই আমাদের বাপ মায়ের মতো। সেরকম হলে কোনো দেশেই ধর্মীয় দাঙ্গা হতো না।
এরপর থেকে আপনাকে দিয়ে কমেন্ট লিখাবো হাহাহা...নিজে লিখতে গেলে কেম্নে জানি সবকিছু প্যাঁচায় যায়
আপনার আর হিটলারের মনোভাবে কোন পার্থক্য দেখছিনা। ধর্ম থেকে যেমন সাবধানে থাকি, আপনার থেকেও তেমন সাবধানে থাকবো।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
যখন ওরা ভাস্কর্য ভাঙ্গে, তখন কেউ বাধা দেয় না। শুধু প্রতিবাদ করে। একশন মানেই তো গিয়াঞ্জাম। ভাল ছেলেরা গিয়াঞ্জাম করে না। ভাল সরকারও গিয়াঞ্জাম করে না।
হিটলারের মনোভাব/মতাদর্শ(?!) খুবই নিচুস্তরের কতগুলো প্রবৃত্তি দিয়ে তৈরি। আপনি অনেক কিছুকেই এর সাথে মেলাতে পারবেন। তবে ব্যক্তিজীবনে আমিও লক্ষী ছেলেটি হয়ে থাকব বলে পণ করেছি। মাভৈ!
লেখাটা খুবই অগোছালো।
ধর্ম সেটাই যা শেখায় পরমত সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা। - তাই? ধর্ম বিষয়ে আপনার ধারণা এরকম হতে পারে; কিন্তু ধর্ম কি এটা শেখায় ! কোন্ ধর্ম? কোন্ কোন্ ধর্ম?
কাজেই হিযবুত তাহরীর আর সমাজতন্ত্রী- এদের দুজনের আক্রমণের বিষয়বস্তু এক হলেও পরিত্রাণ এর উপায়টা ভিন্ন।
এই বাক্যে দুজনের আক্রমণের বিষয়বস্তু এক মন্তব্য করে আপনি তো এই দুই পক্ষকে এক কাতারে নিয়ে এসে আলোচনা টানতে পারেন না।
এদের আক্রমণের বিষয়বস্তু এক- এটা আপনার চোখে পড়লো কে কেনো আক্রমণ করতে চায় সেটা বলেন? তাহলে বুঝতাম এই দুই পক্ষকে এক কাতারে রেখে এভাবে আলোচনা টানা যায় কি না।
ধন্যবাদ।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
ঠিক দাদা। এমন ধর্ম কি আদৌ আছে !!!!?? সহমত।
-স্নিগ্ধা করবী
আপনার বক্তব্য খুবই আকস্মিক মনে হচ্ছে এখানে। মনে হচ্ছে হুড়ুমুড়িয়ে অনেকগুলো ভাবনা জড় হয়েছে মাথায়, সেগুলো উগরে দিয়েছেন মাত্র। বেশ কিছুদিন হল হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে বাংলাদেশে। এরা কারা, কী চায় এর একটা ভূমিকা ছাড়াই বক্তব্য শুরু করলে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে। আপনার আলোচনার বিষয়টি আরো বিস্তৃতি এবং বস্তুনিষ্ঠতা দাবি করে। এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করবেন আশা করি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হুম্ ...
---------------------------------------------------
ইটের পরে ইট সাজিয়ে বানাই প্রাণের কবিতা ...
------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।
দ্রোহী-স্বপ্নেরা,
হিযবুত তাহরীর নাম দেখে কৌতুহলী হয়ে লেখাটি পড়লাম। আমি বাংলাদেশের হিযবুত তাহরীর-এর কথা জানিনা, তবে কর্মসূত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার কারণে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার হিযবুত তাহরীর দেখার কিছুটা সুযোগ হয়েছে। এ দুই দেশেই এরা বেশ অ্যাকটিভ । ৯/১১ পর এরা বিভিন্ন আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে, মাঝে মাঝে ঝড়ের মুখে পড়েছে। সময় সময় প্রো-ইসরায়েলী গ্রুপ ব্রিটিশ সরকারকে শক্ত চাপপ্রয়োগ করেছে এদের নিষিদ্ধ করার জন্য, কিন্তু কোন অনুসন্ধানে এদের "ব্যান" করার মতো কিছু পাওয়া যায়নি । বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও পত্র-পত্রিকায় পড়েছি এদের উপর, টেলিভিশনে ইন্টারভিউয়ে দেখেছি তাদের। বাংলাদেশের কথা জানি না, তবে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার হিযবুত তাহরীরকে যতদূর দেখেছি একই রকম লেগেছে।
সেই ভিত্তিতে বলছি, এই লেখার কিছু বক্তব্য অতি সরলীকৃত বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। ১৯২২ সালে Ottoman Empire(উসমানীয় খিলাফত)-এর ভাঙ্গন, তার থেকে চল্লিশটি রাস্ট্রের জন্ম, এর ঐতিহাসিক পটভূমি (এর ভিতর একে রক্ষা করার জন্য উপমহাদেশের "খিলাফত আন্দোলন"ও আসে, যাতে গান্ধীজিও অংশগ্রহন করেছিলেন), এই ভাঙ্গনে British Empire- এর ভূমিকা, তারপর প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলের উত্পত্তি, আরব জাতীয়তাবাদের জন্ম, এসবের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ফলাফল আর সেই পটভূমিতে হিযবুত তাহরীর-এর জন্ম ও বিকাশ -- এসবের কিছুই লেখার মাঝে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উঠে আসেনি। হ্যাঁ, হিযবুত তাহরীরের প্রস্তাবিত রাস্ট্রে অমুসলিমদের ভূমিকা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন, তবে সেক্ষেত্রেও এ লেখাতে কিছুটা সরলীকরণ চলে এসেছে বলে মনে হয়। Ottoman Empire-এর বিশাল অংশ অমুসলিম ছিল, কিন্তু revolt-টা এসেছিল কিছু আরব মুসলিমদের কাছ থেকে। প্যালেস্টাইন, যা কিনা হিযবুত তাহরীরের চিন্তার কেন্দ্রে, তার এক বিশাল অংশ অমুসলিম। (তবে হিযবুত তাহরীরের সাথে Ottoman Empire-এর কিছু কিছু পার্থক্যতো আছেই; যেমন, হিযবুত তাহরীরের বক্তব্য অনুযায়ী খলীফা নির্বাচনের মাধ্যমে আসতে হবে, বংশানুক্রমিকভাবে না।)
যাই হোক, আমার মন্তব্য বোধহয় এটাই, যেকোন বিষয় যা পাঠকদের অপেক্ষকৃতভাবে কম জানা তা একটু "হোম ওয়ার্ক" করে, একটু বিশদে লেখা দরকার -- সে বিষয় পছন্দ করি বা নাই করি। ভবিষ্যতে আশা করি আরো বিশদে লেখা দিবে । গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। লেখা চালিয়ে যাও।
আপনার লেখাটার সমস্যা হচ্ছে এটা সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ না হিজবুত তাহরীর ঠিক কোন প্রসঙ্গে আলোচনা হচ্ছে সেটা বোঝা যায় না। প্রসঙ্গ হিসাবে তিনটার গুরুত্ব তিনরকম।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
ঠা ঠা ঠা ঠা ...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
অনেকেই মতামত জানালেন, আলোচনা-সমালোচনা করলেন। দ্রোহী-স্বপ্নেরা'র কাছ থেকে কিছু প্রতিক্রিয়া আশা করছি।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আমিও।
ভাই, হাসি চাইপা রাখা কঠিন হইল। উদাহরণ দ্যান ধর্মীয় কিতাব থেকে। আমিও পাল্টা উদাহরণ দিব। আপনের কিতাব থেকেই।
আসলে সচলায়তনে আমি খুবই নতুন,নিজের লেখাটাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাই মন্তব্যে দেরী হলো।
এটা ঠিক আমার লেখাটা খুব ই অগোছালো। এটা লিখেছিলাম প্রায় বছর খানেক আগে,তখনো বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ হয়নি। ফেইসবুক এর স্ট্যাটাস এ মন্তব্যের মারামারির উত্তেজনার ফলস্বরূপ এটি লেখা।
আমি খুব সরলভাবে তিন মেরুর তিন বিষয়কে টেনে এনেছি।যদিও মূল আক্রমণ করতে চেয়েছিলাম হীযবুতকে। ধর্ম আর সমাজতন্ত্রকে টেনে এনেছিলাম কারণ আমার মনে হয়েছে এই দু'টো বিষয়ের ই মৌলিক কিছু আকর্ষক আছে আর হীযবুত তাহরীর এই আকর্ষকগুলো তার আংগিকে ব্যবহার করছে সম্পূর্ণ অনৈতিক ঊদ্দেশ্যে।
সমাজতন্ত্র আর ধর্ম এই দু'টো বিষয়ের কোনটিতেই আমার গভীর জ্ঞান নেই।আমি আসলে দেশের তরুণ-যুবাদের সেই অংশের প্রতিনিধি যারা খুব সহজে অন্যের বুলিতে মাথা ঝাঁকায়,আর আমার কথাগুলোও সেই তাদেরই ঊদ্দেশ্যে।
নতুন মন্তব্য করুন