“.........বুকে ভর দিয়ে এগোই, কালো প্রেমে মৃত্তিকার আলিঙ্গনে। এইখানে কাদায় কাদায় দশটি পায়ের ছাপ দিগন্তে দেখায় সূর্যাস্তের পথ। দুপাশে যন্ত্রমূখী মানুষের ভীড়ে আমি পাগল বৃক্ষ আর সবুজের কথা চেঁচাই আপনমনে। কিন্তু কেউ শোনে না, কেউ বোঝে না। রক্তে শীর্ণ প্রলয় আর নখে উদ্ভ্রান্ত আঁচড় তুলে কেউ দ্যাখে না। চোখে পেরেক আঁটে দু-তিন জনে, অল্পদরে বেচে হর্ষ আর তা কিনে গোগ্রাসে গিলতে থাকে বিষন্নদৃষ্টির ভূত আর ছায়ারা। পেটের আগুন মিটিয়ে ওরা বাতাসে ওড়ায় শাদা পালক, তাতে আঙ্গুল বোলায় নকশা কাটা শপথের ভাষা। আমি গভীর অনুযোগে মাটি কামড়িয়ে পড়ে থাকি, রাস্তাটা না দেখবার প্রতিজ্ঞায়; তবু অত্যুৎসাহী ক’জন আমাকে টেনে হিঁচড়ে এগিয়ে নেয়, প্রবল আশা তাদের আমাকে দেখাবে আলোকিত পথ; একশ কদম এগোলে যদি ফোটে মাথায় কিছু বুদবুদের গান।
শীতল ক্রোধে চেঁচাচ্ছিলাম, এখন হতাশায় ছেড়ে দিচ্ছি ইউক্যালিপটাসের স্বপ্ন। আমার চুল ধরে টেনে তুলবার চেষ্টা করে একজন, কিন্তু আমার মাথায় জমছে প্রাচীন পাথর। ওরা হাল ছেড়ে দিতে চায় ক্লান্তিতে, হঠাৎ ওদের উসকে দ্যায় একটা পেটুক ছায়া। ওরা নতুন উদ্যোমে আবার শুরু করে আর আমি ভাগ্যদেবীর হাজার কয়েক জারজ সন্তানের জন্ম নিশ্চিত করি সুশীল অনুরাগে।
আলোকিত পথের ওলট-পালট মসৃণতায় এই শতকের পরবর্তী মূহুর্তগুলো কাটে আমার একইরকম; যদিও আমি অবশেষে উচ্চস্বরে কাঁদতে থাকি আমার শুভাকাংক্ষী ছায়ার পা ধরে, ছাড়া পাবার আশায়। লাভ হয় না, তাই অর্ধমৃত আমি হাল ছেড়ে দেই। ছায়ারা আমায় টেনে হিঁচড়ে পৌছে দ্যায় একটা নদীর ধারে, এবং আমায় গভীর অনুরাগে শোনায় কোন একটা অদৃশ্য আলোর গল্প। আমি দেখতে পাই না, কিন্তু ওরা দ্যাখে সেই ভুতুড়ে আলো , গন্ধ শুঁকে নেয় সে আলোর। এরপর তারা সেই আলোর প্রাবল্যে চোখে বাঁধে একটুকরো কালো কাপড়, পূজো দেয় সে আলোর, হাঁটু গেড়ে বসে মাটিতে, রক্তাক্ত আমাকে নৈবেদ্য দেয়, ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদে, মগজে ফোটায় কালো ফুল আর স্বপ্ন বোনে দশ আঙ্গুলে।
আমি দেখি সন্ধ্যে পেরিয়ে নামছে রাত।
আমি দেখি রক্তলাল দুঃস্বপ্ন।
আমি দেখি অন্ধকার।”
-------------------------------------------------------------------------------
ইকারুসের আকাশ
মন্তব্য
অসাধারণ!!! খুব ভালো লাগলো। ধর্মজ বিষবৃক্ষের মূল বড্ড গভীরে!
আমার পোষ্টে মন্তব্য দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ এবং স্বাগতম। "ধর্মজ বিষবৃক্ষের মূল বড্ড গভীরে!"-চমৎকার বলেছেন! তবে ইদানীং বেশি গভীরে মনে হচ্ছে এই বিষবৃক্ষের মূল; দুঃস্বপ্নেও গেঁড়ে বসেছে আমার।
- বাহ্, বেশ লিখেছেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ...!!!!
-স্নিগ্ধা করবী
খুবই ভালো লাগলো শুনে।
নতুন মন্তব্য করুন