ফুন্সুখের লগে খ্যাচর ম্যাচর

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৫/০৩/২০১০ - ১০:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই লেখার কিছু অংশ স্পয়লারের মতন লাগতে পারে কিন্তুক যা বুঝি পাঠকদের শতকরা দু-পাঁচজন বাদে বাকি সব্বারেই দেখা শেষ তাই হু কেয়ারস

মনে করেন এক ব্যাটা দুপুরবেলা শান্তিমত রমনা পার্কে বসে কান চুলকাচ্ছে। শান্তিমত কিছুক্ষণ কান চুলকিয়ে পরে আরো মিনিটদুয়েক নাসিকারন্ধ্রে খোঁচাখুচি করে পার্কের বেঞ্চিতে মিনিটদশেক ভাতঘুম দিয়ে উঠে আস্তে হাঁটা দিয়ে উঠে চলে গেল। এখন পর্যন্ত তেমন মহা আপত্তিকর কিছু ঘটেনি। কিন্তু এইটুকু অংশ যদি আপনার ক্যামেরায় রেকর্ড করে আপনি ইউটিউবে দিলেন আর সেটা এক সপ্তাহে পাঁচ কোটি হিট হয়ে ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করে ফেলল। তাহলে তাহলে আমার হিসেবে কিছু হিংসুক নিন্দুক বলবে যে, এইটা এমন হিট হবার মত কি হল? আর যদি হিট হবিই তাহলে এইরকম নাক আর কান চুলকানোর জিনিষ ছাড়া কি হিট করার কোনো রাস্তা ছিলোনা? ইত্যাদি ইত্যাদি…

তিন বান্দরের কাজকারবার নিয়ে করা সুপারহিট মুভিটি আমাকে কদিন আগে দেখা লাগলো। ছবি শেষ হবার পরে প্রথম আমার মাথায় ছবিটা বানালো কৈ। কারণ নায়িকার এক টাকডুম টাকডুম নাচের জন্য হাফ দুনিয়া ঘুরে আসার অভ্যাস তো বহুবছর ধরেই আছে। একটু ঘাঁটাঘাটি করে দেখলাম ছবি করা হয়েছে আই আই এম ব্যাঙ্গালোরের ক্যাম্পাসে। এই প্রথম কিঞ্চিত আফসোস হল, গ্র্যাজুয়েশনের জন্য তিন বছর ইন্ডিয়ার ঘানি টানলামই যখন আরেকটু খানদানী যায়গাতেই পড়তাম। আসলেই ভারতের প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবীর যেকোন স্থানের শিক্ষার্থীদেরই কাছে টানার মত। নজরকাড়া শুটিং এর জন্য স্যুজারল্যান্ড দরকার নেই। তবে আমার পড়ার সময় আমাদের ক্যাম্পাসে ভগৎ সিং নিয়ে একটা মুভি হয়েছিল অজয় দেভগান ভাই নায়কের রোলে ছিলেন। দেখি দেখি করেও এখনো ছবিখান দেখা হয় নাই। ব্যাঙ্গালোরের প্রশাসন বিদ্যায়তনের ভেতর বাহির বেশ ভালই লাগলো। তার তুলনায় দেশের হল,ক্যাম্পাস একটু ম্যাদামারাই লাগলো।

এই তিন ঘন্টার ছবিখান নিয়ে আমার এতো আইঢাইয়ের কারণ হল। এই ছবিখান শুধু যেনোতেনো ছবি না বরং প্রথমত আমির খান ছবি যেটা শুনলেই মোটামুটি সবাইই ধরে নেয় ভাল ছবি, তার সাথে হল আমির খান কমেডী সিনেমা অর্থাৎ অফিশিয়ালি ইউনিভার্সার রেটিং সব্বাই দেখতে পারবে তার সাথে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল শোলের পয়ত্রিশ বছরের রেকর্ড ভাঙ্গা বক্স অফিস সেরা হিট ভারতীয় ছবি। ফলাফল হলঃ ভারতীয় প্লাস উপমহাদেশীয় জনগণ এইবস্তু খাচ্ছে, খাবে এবং খাইতেই থাকবে। যেমন আমার এক মামা এখনো মাসে রুটিন করে কমপক্ষে একবার শোলে দেখেন (পাগল যে কতরকম আছে দুনিয়ায়)।

তাই দেখলাম ভূলে গেলাম ছবির চেয়ে এই ছবির প্রভাব অনেক গভীর আর দীর্ঘস্থায়ী হবে আর এইখানে মহা আপত্তিকর বেশকিছু থীমকে মোটামুটি উৎসাহই দেয়া হয়েছে। এই যেমন ধরুন, রাজুর অসুস্থ বাবা, মা আর বোনকে নিয়ে দিব্যি বেশকিছু রূঢ কথাবার্তা বলে পার পেয়ে গেছে রাঞ্চো। যেগুলো সামাজিক মাপকাঠিতে অত্নত আমি কখনোই গ্রহণযোগ্য বলব না। পরে রাজুর বাপকে হসপিটাল রাইড দিলেও তা মাফ হয়না।

এই সিনেমা দেখে বাড়ির পিচ্চিরা মহা উৎসাহে ফার্ট আর রেপ জুক্স নিয়ে রিহার্সেল দিচ্ছে, আমার হিসেবে তেমন উৎসাহদায়ক সীন না। আর কথা বাড়ালাম না।

মদিরাচ্ছন্ন অবস্থায় ঢুলতে ঢুলতে গিয়ে প্রস্তাব দিল আর লাড়কী এক্কারে আই ডু বলে লাফিয়ে উঠল। ভাল্লাগেনাই!

পরীক্ষার প্রশ্ন চুরি রাঞ্চোর এথিকসের সাথে মিলে নাই।

সব মিলিয়ে ভালমন্দের পাল্লায় ফেলার পরে মনে হয়েছে এইমাপের ছবিতে মন্দগুলো যেনো আরো বড় আকারে ফুলে ফেঁপে ওঠে। তার তুলনেয় লাগে রহো মুন্নাভাই অনেক ভারসাম্যপূর্ণ ছিল।

আর ফুন্সুখ? ঐ ব্যাটা এক তিব্বতী বিপ্লবী [টেররিস্ট?] ভিক্ষু। চীনেপটকার সাথে টেক্কা দিতে গিয়ে আজকাল জেলহাজতে আছেন। তারে ঠ্যাক দিতে গিয়ে চীনেমামারা আবার আমির সাহেবের ব্লগে হানা দিয়েছিলেন। তাই নিয়ে কত কি।


মন্তব্য

ফরিদ এর ছবি

ধুরু সাইন কর্তে ভূলে গেছিলাম

হরফ এর ছবি

কি মুশ্কিল কেউ রিভিউ-এর রিভিউ দেয় না ক্যান!!!! বেশ চমৎকার হয়েছে এই রিভিউ-না-রিভিউ লেখাটা। আপনি ভাল/ ভেবেচিন্তে লেখেন। ছবিটা দেখিনি ভাই, তাই রিভিউ-এর মান নিয়ে মন্তব্য কল্লাম না।
____________________________
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

তাহসিন আহমেদ গালিব এর ছবি

পড়ার মত কিছুই নাই...তার আগেই শেষ
বেশ! বেশ!

নাশতারান এর ছবি

পাঠকদের শতকরা দু-পাঁচজন বাদে বাকি সব্বারেই দেখা শেষ তাই হু কেয়ারস

সব্বারেই নাকি সব্বারই? খেয়াল করে দেখুন। একটা এ-কারের জোরে কিন্তু পুরো ভাব বদলে যাচ্ছে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

শুরুটা ভালই হয়েছিল.. পরে গিয়ে কি রিভিউ করলেন ঠিক বুঝি নাই.. এত কমের মধ্যে ছাইড়া দিলে কেমনে হবে খাইছে
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

ফরিদ এর ছবি

প্রথম তিন প্যারা ড্রাফট করা ছিল সপ্তাহদুয়েক ধরে। পরে শেষ করতে গিয়ে দেখি মাইনষের বদনামী করতে আর ভাল্লাগছে না। তাই যেটুকু ছিল তাইই ছাপিয়ে দিলাম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।