জীবনের খুব কাছ থেকে দেখা -১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৪/০৪/২০১০ - ১:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার স্বল্প পেশাজীবনে চোখের সামনে ঘটে গিয়েছে বেশ কিছু ঘটনা, এর কিছু আমাকে অপার আনন্দ দিয়েছে আর কিছু দিয়েছে অপরিসীম কষ্ট। সেই সব অভিজ্ঞতা নিয়েই আমার এই সিরিজ ‘জীবনের খুব কাছ থেকে দেখা’।আমার এই অভিজ্ঞতাগুলো যদি পাঠকদের হৃদয়কে সামান্যও নাড়া দিতে পাবে তা হবে আমার সার্থকতা।
পর্ব-১

‘মেডিসিন মহিলা বিভাগে’ সেদিন আমার দুপুর দু’টো থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ডিউটি ছিল। ঠিক তিনটার সময় সিড়িতে প্রচন্ড কোলাহলের আওয়াজ শোনা যায়, কর্তব্যরত নার্স এসে খবর দেয় একজন মূমুর্ষু রোগী এসেছেন। একটু পড়ে স্ট্রেচারে করে রোগীকে নিয়ে আসা হয় ওয়ার্ডে। রোগীর কাছে এগিয়ে গিয়ে কি হয়েছে জানতে চাই। রোগীর সাথে আসা তার শ্বশুড় জানায় নতুন বউ, বিয়ে হয়েছে মাত্র দু’দিন, আজ সকাল থেকে হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে গেছে। নতুন বউয়ের উপর নাকি খারাপ জিনিসের কুনজর বেশি পড়ে তাই জীন পরীর আছর পড়েছে ভেবে তিনি এর মধ্যে গ্রামের ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করিয়েছেন। এই পর্যন্ত বলেই বয়স্ক লোকটি শান্তির নিঃশ্বাষ ফেলেলেন, যেন খুব দ্বায়িত্ত্বের কাজ করেছেন।

নতুন বউ বলাতে মেয়েটির দিকে নতুন ভাবে খেয়াল করি, লাল শাড়ি, গায়ে গয়না পড়া, দু’হাতের মেহেদি রঙ এখনো হালকা হয়নি। কত আর বয়স হবে বড়জোর বাইশ বা তেইশ, ফর্সা গায়ের রঙ, দীঘল কালো চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে। আমি তার স্বামীকে ঝগড়া করেছেন কিনা বা রোগী কিছু খেয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে সে মাথা নেড়ে না করে। আমি মেয়েটির পূর্ব অসুখের ইতিহাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন এবিষয়ে কিছুই জানেননা। রোগীর শারিরীক পরীক্ষা করার ফাঁকে তাদের সাথে এইসব নিয়ে কথা হচ্ছিল। রোগীর মুখের গন্ধ ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ভঙ্গিটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। যাই হোক কিছু জরুরী পরীক্ষার নির্দেশ দেই এবং তাৎক্ষণিক প্রাথমিক জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি, সেই সাথে আমার ওয়ার্ডে কর্তব্যরত উর্দ্ধতন ডাক্তারকে রোগী সম্পর্কে সবকিছু জানাই। আমার লেখা রোগীর রোগের বিবরন দেখে তিনি আমাকে জরুরী পরীক্ষার ফলাফল তাকে জানাতে বলেন।

কিছুক্ষণ পর জরুরী ভিত্তিতে পাঠানো পরীক্ষার ফলাফল আসে, সেখানে তার রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের থেকে কয়েকগুন বেশী দেখতে পাই এবং তার সেরাম ইলেক্টোলাইটসের অস্বাভাবাবিকতা (রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও বাইকার্বনেটের স্বাভাবিক মাত্রা থেকে কমে বা বেড়ে যাওয়া) ধরা পড়ে। আমরা নিশ্চিত হই যে রোগী ‘ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস’ রোগে আক্রান্ত। এই রোগে ‘কিটোনবডি’ নামক একটি উপাদান সার্বক্ষনিক ( ২৪ ঘন্টা) পরিমাপ করতে হয় যার ব্যবস্থা আমাদের হাসপাতালে ছিলনা, ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাকে অতিসত্তর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য বলি। তার শ্বশুড় এতে অসম্মতি জানায়, এবং এখানে যা সম্ভব তাই দিয়ে চিকিৎসা করাতে বলে। তার ভাষ্যমতে তার ছেলের বিয়েতে যথেষ্ট পরিমান অর্থের শ্রাদ্ধ হয়েছে এবং সে আর অনর্থক(!) খরচ করতে চাচ্ছেনা।এই সময় তার স্বামীকে নির্বাক দেখি। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল একজন রোগীর কোথায় চিকিৎসা হবে তার সিদ্ধান্ত একান্তই তার অভিভাবকের এবং রোগী যেহেতু বিবাহিত এবং তার স্বামী সেখানে উপস্থিত ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পূর্ন ওয়াকেবহাল সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা। যাই হোক আমার ডিউটির সময় শেষ হয়ে আসছিল, আমি ওয়ার্ডের পরবর্তী দ্বায়িত্ত্ব পালনকারী ইন্টার্নী ডাক্তারকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসি। চলে যাবার সময় মেয়েটির দিকে একবার তাকালাম তখনও সে অচেতন। সিড়ি দিয়ে নামার সময় মেয়েটির সুচিকিৎসা হচ্ছেনা ব্যাপারটা ভাবতেই খুব খারাপ লাগছিল, বিশেষ করে এরকম পরিস্থিতিতে রোগীর স্বামীর নির্লিপ্ততা আমাকে খুবই আহত করেছিল।

সকালে ওয়ার্ডে এসে দেখি রোগীর বেডের কাছে একজন মাঝবয়সী পুরুষ দাড়িয়ে পাশে একজন মহিলা কান্নাকাটি করছেন, জিজ্ঞেস করে জানলান তারা রোগীর বাবা মা। তাদের কাছে বিস্তারিত শুনলাম যার সারমর্ম কিছুটা এরকম,

মেয়েটি দু’বছর যাবৎ ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিল, প্রতিদিন ইনসুলিনের বেশ পরিমান টাকাপয়সা খরচ করতে হতো যা তাদের মত নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য খুবই কষ্টকর ছিল। এরমধ্যেই ডায়াবেটিসের কারনে মেয়েটির চোখের ছানির অপারেশন করাতে হয়েছে। গ্রাম বাংলার আর দশটি মেয়ের বাবা মায়ের মত তারাও শ্বশুড়বাড়ির কাছে মেয়ের রোগকে গোপন রেখেছিল। বিয়ের এই কয়েকদিনে ব্যস্ততার কারনে তার ইনসুলিন নেয়া হয়নি, সেই সাথে বিয়েবাড়ির স্বাভাবিক আচারে প্রচুর পরিমানে মিষ্টিজাতীয় খাবার দাবার তাকে খেতে হয়েছে কারন নতুন বউ হিসেবে তার করার কিছুই ছিলনা। একে ইনসুলিন না নেয়াতে তার শরীরে গ্লুকোজের পরিমান বেড়ে যাচ্ছিল সেই সাথে অধিক মিষ্টিজাতীয় খাবার তার এই প্রক্রিয়াকে আরো তড়ান্বিত করছিল, যা তাকে এই ভয়াবহ পরিনতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

আমি তার বাবা মাকে অনুরোধ করি তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে, কিন্তু নিম্নবিত্ত এই পরিবারটির সেই সাধ্য ছিলনা। এভাবে আরো একদিন কেটে যায়, এই সময়ের মধ্যে আমি কখনই মেয়েটিকে সজাগ দেখিনি অবশ্য সেই আশা করাটাও অমূলক ছিল এই অবস্থায়। পরদিন সকালে নিজের পরিবার, স্বামী-সংসার সবাইকে পরিত্রান দিয়ে, নিজের দুর্ভাগ্যকে মেনে নিয়ে মেয়েটি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় নিজের অজান্তেই। আমরা সবাই ছিলাম সেসময়, কিন্তু এই মৃত্যুকে মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিলনা। কর্তব্যরত ইন্টার্নী ডাক্তার হিসেবে মেয়েটির ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ লেখার দ্বায়িত্ত্ব আমারই ছিল এবং তা করতে যেয়ে যেটি মেনে নিতে পারছিলামনা তা হচ্ছে মেয়েটির স্বামীর আর্থিক সংগতি থাকা স্বত্ত্বেও শুধুমাত্র এ সমাজের নিছক বউ বলে হয়ত তাকে সুচিকিৎসার অভাবেই অকালে চলে যেতে হলো।

==================
মিতু

রিফাত জাহান মিতু


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এমন সব ব্যাপারে আমাকে একটা প্রশ্ন তাড়িত করে। মেয়ের জীবনের চেয়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়াটা কি বেশি জরুরী? রোগ গোপন করে বিয়ে দিলে মেয়েকে বাপের বাড়িতে ফেরত পাঠানো, শ্বশুর বাড়িতে তাকে অত্যাচার করা ইত্যাদি যে ঘটতে পারে সেটাওতো বাবা-মা জানেন। তবু তাকে যে কোন প্রকারে বিয়ে দিতেই হবে কেন?

লেখা ভালো হচ্ছে মিতু, ক্যারি অন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাবা মার এই কাজটি কখনও করা উচিৎ না।হয়তো পরিবার ,সমাজের চাপে মানুষ অনেক কিছু করতে বাধ্য হয়।ধন্যবাদ ভাইয়া।

মিতু

রেনেট এর ছবি

আপনার অসহায়ত্ব আন্দাজ করতে পারলাম। দুঃখজনক।
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার মনে হয় আমার চেয়েও রোগীটি বেশী অসহায় ছিল।ধন্যবাদ।

মিতু

নাশতারান এর ছবি

ঐ মেয়ের স্বামী আর শশুরবাড়ির লোকজনকে চাবকাতে ইচ্ছে হচ্ছে।
আমাদের সমাজে এখনো মেয়েদের জীবনের চেয়ে সামাজিক প্রথাগুলোই বোধহয় বেশি মূল্যবান। তা না হলে মেয়ের বাবা-মা মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য এতোখানি উতলা হতেন না আর মেয়ের শ্বশুরপক্ষ এতোখানি উদাসীনতাও দেখাতে পারত না।

আপনার লেখার ধরন আর পর্যবেক্ষণগুলো ভালো লেগেছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

[ বানানঃ মুমূর্ষু, একটু পরে, কী হয়েছে, শ্বশুর, জ্বীন, নিঃশ্বাস, কীনা, শারীরিক, ঊর্ধ্বতন, বিবরণ, ইলেক্ট্রোলাইটস, অতিসত্বর, সিঁড়ি, কারণে, গোপণ, ত্বরান্বিত, পরিণতি ]

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ বুনোহাঁস,পরের লেখা লিখার সময় বানানের দিকটা খেয়াল করবো।

মিতু

ওডিন এর ছবি

আমি যেখানে কাজ করি সেখানে এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা আছেন।পা ভেঙ্গেছিলো - অপারেশনের পরে তাকে ছুটি দেয়া হয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে- কিন্তু এখনো তিনি যাচ্ছেন না। তার ছেলের বাসায় থাকতেন- এখন ফিরে যেতে খুব একটা আগ্রহী নন- কারণ - হাসপাতালে থাকলে তাকে অন্ততপক্ষে দুইবেলা কেউ না কেউ খোজখবর নেয়!

গত তিন বছরে এইরকম মন খারাপ করা ঘটনা অনেক দেখলাম। কে বলে মানুষ জাতটার ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ?
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।

মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাকর ঘটনা, আমার শুনেই লজ্জা লাগছে বাঙ্গালি হিসেবে। আমি জানি মেয়েটির বাবা-মা দরিদ্রতার চাপেই এভাবে বিয়ে দিয়েছেন। শ্বশুর পরিবারের সামর্থ্য জানি না, কিন্তু তাঁদের চেষ্টার অভাব ছিল বলে মনে হচ্ছে। আমি জানি এসব বদলাবে, একদিন বাঙ্গালি বলে আমাকে মাথা নিচু করতে হবে না। খালি দোয়া করি যেন বেঁচে থাকতেই দেখে যেতে পারি।

-আতিউর

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আতিউর।সেই প্রত্যাশায়...............।।

মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

জীবনের চরম কষ্টের কিছু ছবি ডাক্তারদের দেখতে হয়।
পড়ে কষ্ট না লাগা অস্বাভাবিক।
তবুও, নিজেরা কত ভালো আছি তা নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দেয়ার জন্য আপনার এ লেখাটার মতো লেখা দরকার।

মর্ম

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ।

মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

মেয়ের জীবনের চেয়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়াটা কি বেশি জরুরী? রোগ গোপন করে বিয়ে দিলে মেয়েকে বাপের বাড়িতে ফেরত পাঠানো, শ্বশুর বাড়িতে তাকে অত্যাচার করা ইত্যাদি যে ঘটতে পারে সেটাওতো বাবা-মা জানেন। তবু তাকে যে কোন প্রকারে বিয়ে দিতেই হবে কেন?

আমারও একই প্রশ্ন, জীবনের চেয়ে কি বিয়ে বড় হয়ে গেল? এইরকম ঘটনা বাংলাদেশে অহরহ ঘটছে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে যে আমরা "পাছে লোকে কিছু বলে" এই রোগে আক্রান্ত।

রেজওয়ান২২

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।সহমত প্রকাশ করছি।

মিতু

তৌফিক হাসান [অতিথি] এর ছবি

দারুন লিখেছেন। কষ্টটা আমাকেও ছুঁয়ে গেল।
একটা মানুষের জীবনের চলে গেল আর্থিক আর মানসিক দারিদ্রের কারনে। এমন কত জীবনই যে আমাদের অজান্তে যাচ্ছে কে জানে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।আসলেই তাই............

মিতু

বাউলিয়ানা এর ছবি

হুম, মেডিক্যালের অভিজ্ঞতা। খুবই বিচিত্র।

সচলে আরেকজন লিখতে শুরু করেছিলেন-সফদর ডাক্তার।

আপনিও উনার মত হারায়ে যায়েন না। আশা করি আরও পর্ব লিখবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।আমার মাথায় টাক নেই,তা হলে কি লিখতে পারবো না!!!!

আশা করি হারিয়ে যাব না।

মিতু

সচল জাহিদ এর ছবি

বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ঘটে যাচ্ছে এরকম অসংখ্য ঘটনা, বিনা চিকিৎসায় কিংবা সুচিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে অগণিত নারী, হয়ত সংবাদ মাধ্যম বা ব্লগের সুবাদে কিছু কিছু মৃত্যুর খবর আমরা জানতে পারি, বাকীরা থেকে যায় সবার অন্তরালে। এই মেয়েটিকেতো তাও হাসপাতালে আনা হয়েছিল বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাও করা হয়না। আমি আমার গ্রামের একজনকে চিনতাম যে তার বউ মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন হয়েছিল হলে মাঘ মাসের শীতে নদীতে নিয়ে যেয়ে বউকে মাথায় ধরে পানিতে চুবাতো কারন কোন এক কবিরাজ বলেছে যে ঠান্ডা লাগলে পাগল ভাল হয় !!

একসময় ভাবি শিক্ষার অভাবই কি এই সমস্যার মূলে, পরক্ষণে চিন্তা করি যে শ্বশুর টাকা বাঁচাতে তার ছেলের বউকে সুচিকিৎসা করাচ্ছেনা সে কি নিজের মেয়ের ক্ষেত্রে একই কাজ করতে পারত ? নিঃসন্দেহে পারতনা, তাহলে সবকিছুর মূলে কি আমাদের মানসিকতা ?

এটা হয় ঠিক যে ডায়াবেটিস যে এতটা ভয়াবহ হতে পারে সেকথা বোধকরি মেয়েটির বাবা মা জানতনা কিন্তু বিয়ের আগে মেয়ের এই রোগটি গোপন করারও কিছু ছিলনা। আজকে যদি মেয়েটির শ্বশুর বাড়ি এই রোগের কথা জানত আর মেয়েটিও যদি এই রোগটির ভয়াবহতা সম্পর্কে আরেকটু সচেতন হত তাহলে হয়ত তার জীবনে এই পরিণতি আসতনা। একটি বিষয়ে তাই প্রশ্ন জাগে আমাদের দেশে এই ডায়াবেটিস নিয়ে আমরা আমজনতা কতটা সচেতন। আমি প্রায়শই মজা করে বলতে দেখতাম 'ডায়াবেটিস হইলো ধনী মাইসের অসুখ'। এই রোগের সচেতনটা বৃদ্ধির জন্য হলেও এরকম কাহিনীগুলো সাধারন মানুষদের আরো জানা উচিৎ।

চমৎকার একটি সিরিজ শুরু করার জন্য ধন্যবাদ রইল মিতু। তোমার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে আরো কিছু পাবার আশা ব্যক্ত করছি।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ।

তাসনীম এর ছবি

আপনার আগের লেখাও পড়েছি, এটাও পড়লাম। লেখা ভালো হচ্ছে।

বিষয়বস্তু অন্তত দুঃখজনক, আমাদের দরিদ্র দেশের মেয়েরা মনে আরো দরিদ্র আর অবহেলার পাত্র। ঘটনাগুলো পীড়াদায়ক।

আপনার আনন্দময় ঘটনাগুলোরও অপেক্ষায় আছি। লেখা চলুক।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া । আনন্দের স্মৃতিগুলোও লিখব আশা রাখি।

মিতু

কাকুল কায়েশ এর ছবি

ঘটনাটা খুব দুঃখজনক! আমাদের দেশের মেয়েদের জীবনের এসব ঘটনা শুনলে মেজাজটা আসলেই খারাপ হয়ে যায়।

যাই হোক, আপনার লেখা খুব সুন্দর হচ্ছে! বর্ননাভঙ্গি খুব চমৎকার! সিরিজের পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় থাকছি!
ভাল থাকুন।

=========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ কাকুল।

মিতু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ডেথ সার্টিফিকেটটা হাতে ধরিয়ে দেয়ার সময় মেয়েটির স্বামীকে কানসা পাতালি কষে একটা চটকানা দিলেন না কেনো?

তার বউকে আর্থিক সঙ্গতি থাকা সত্বেও চিকিৎসা না করানোটা যদি তার "ইচ্ছা" হয়ে থাকে তাহলে আপনার হাতে চর খাওয়াটাও তার "অদৃষ্ট"ই ছিলো।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইরে আমি তো কেরাতি কুমফু কিছুই শিখিনি।তাহলে আপনার কথা মত একটা ঝুকি নিতে পারতাম।

মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ করে দিল লেখাটা!

সাথে কিছুটা লজ্জ্বা এবং রাগ-ও হলো!

লজ্জ্বা এই কারণে যে মৃত মেয়েটার স্বামী একজন পুরুষ, আমিও একজন পুরুষ!
[তবে ওই কুলাঙ্গার টার মত পুরুষ হবার কোন ইচ্ছা আমার নেই!]

রাগটা কমতো, যদি ওই কুলাঙ্গার স্বামীটাকে আচ্ছামতো পিটাতে পারতাম!!

এরপর একটা মন ভালো করে দেয়া লেখা দিয়েন প্লীইজ!!!
[এই যেমন, আপনার সামনে ঘটা প্রথম মা/বাবা হবার কোন ঘটনা। আমার মনে হয় এটা পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি দৃশ্য- বাবার কোলে সদ্যপ্রসুত সন্তান]

শুভকামনা রইলো হাসি

মুক্ত বিহঙ্গ

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে,আশা করি লিখবো।

মিতু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

...

অতিথি লেখক এর ছবি

...

মিতু

naina এর ছবি

গরীব আর মেয়ে হয়ে জন্ম নেবার এত বড় শাস্তি পেতে হল বেচারীকে।
অসুখ-বিসুখ তো সবার ই হতে পারে,ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে।আজব।

অতিথি লেখক এর ছবি

সব কিছুতেই ছেলে-মেয়ের বৈষম্য আমরাই তৈরী করেছি।

ধন্যবাদ

মিতু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।