মুক্ত বিহঙ্গ
[২য় পর্বের শুরুতে কিছু কথাঃ ১ম পর্ব লেখা শুরু করবার আগে ভেবেছিলাম, সিরিজটা হয়তো এগোবে না। কিন্তু ‘সচলায়তন’-এ এই প্রথম ‘গুঁতুগুতির শীর্ষে’ এবং ‘পাঠকের ৭ পছন্দ ৪৮ ঘন্টায়’-এর তালিকায় আমার লেখা দেখে অধিক আনন্দের চোটে বিষম খেলাম! এই আনন্দের ঘোরে আর কিছুই লিখতে পারলাম না বেশ কিছু সময়! ঘোর কাটতে চব্বিশ ঘন্টা সময় লাগলো।
১ম পর্ব লিখবার সময় যতটা নিশ্চিন্ত ছিলাম, এখন ঠিক ততটাই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ! পাঠকদের চাহিদা এবং আশা অনেক বেড়ে গেছে! ‘শিশু’ এবং ‘পাঠক’-এই দুই শ্রেণীর মনের সাধ কখনোই সম্পূর্ণভাবে মেটানো সম্ভব নয়! তাই আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি!
প্রথমে ভেবেছিলাম, শিরোনাম যেহেতু ‘দিনলিপি’, তাই এই প্রবাস জীবনের ঘটনাগুলো তারিখ অনুসারে বর্ণনা করবো। কিন্তু লেখা শুরু করে দেখলাম, সেটা সম্ভব হচ্ছেনা। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা মনের মধ্যে এসে যাচ্ছে; যেগুলোর কোন ধারাবাহিকতা নেই তারিখ অনুসারে। বিখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ‘বলপয়েন্ট’ বইতে (পৃষ্ঠাঃ৬৩) লিখেছেন, “লেখালেখির পুরোটা লেখকের হাতে থাকেনা। তার পেছনে অন্যকেউ থাকে। মূল সুতা যার হাতে।” আমার সুতা কার হাতে জানিনা, কারণ সেই সুতা আসলেই আমার হাতে নেই!
শিরোনামে “এক প্রবাসী বাংলাদেশীর দিনলিপি” কথাটা থাকলেও, বারবার ফ্লাশব্যাকে হয়তো বাংলাদেশ-এই ফিরে যাবো। কয়েকজন পাঠক-এরও দেখলাম এমন-ই ইচ্ছা!]
২য় পর্বঃ
আমার স্কুলের একজন শিক্ষক আমার সম্পর্কে বলেছিলেন, আমি নাকি ‘ভেড়ার পালে বাছুর প্রামাণিক!!’। কথাটার অর্থ আশা করি সবাই জানেন। সামান্য বাছুর গরুর পালে থাকবার সময় কোন বিশেষত্ব না পেলেও, ভেড়ার পালের মধ্যে গেলে অনন্য এবং বিশেষ কেউ একজন হয়ে যায়! স্কুলে কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও এখন ভাবতে অবাক লাগে, আমার জীবনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটেছে!
কানাডার ‘ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টা’-তে আসবার পর এখানকার ‘ইন্টারনেশনাল সেন্টারে’ যাতায়াত করা শুরু করলাম। সেখানে আমিই একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাক্তি যে ঘন-ঘন কারণে-অকারণে যাতায়াত করে। বরাবরের মত আমি আবার ‘বাছুর প্রামাণিক’। খুব ভালো লাগে বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে কথা বলতে। বিশেষ করে ভালো লাগে কর্তাশ্রেণীয় মানুষগুলোর আন্তরিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ। একদিন শুনলাম এই ইন্টারনেশনাল সেন্টারে ‘পটলাক পার্টি’ হবে। শব্দটা প্রথম শুনলাম। জানতে পারলাম এর অর্থ হলো, এই পার্টিতে সবাই নিজ থেকে কিছু না কিছু খাবার (কমপক্ষে পাঁচজন খেতে পারে এমন পরিমাণ) নিয়ে আসতে হবে। এবং খাবার অবশ্যই হতে হবে নিজস্ব দেশীয়।
চিন্তায় পড়ে গেলাম, কী নিয়ে যাওয়া যায়! সবচেয়ে বড় চিন্তা, এই মশলাযুক্ত বাংলাদেশী খাবার বিভিন্ন দেশের মানুষ খেতে পারবে তো? শেষে কারো পেটের অসুখ হলে, আমি পড়বো বিপাকে! অবেশেষে ‘চিকেন বিরিয়ানি’ আর ‘চিংড়ি’ রান্না করবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
নির্ধারিত দিনে দুইটা পাত্রে রান্না করা দুইটা আইটেম নিয়ে হাজির হলাম। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকম খাবার। ইরানি এক দম্পতি এক বিশেষ ধরণের কেক বানিয়ে এনেছেন, যেই কেক-এর উপর আবার বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিলো কানাডার এক পত্রিকায়। কেক-এর সাথে সেই পত্রিকার একটা কপি। আমি দুশ্চিন্তায় আমার দুইটা আইটেমে ট্যাগ করবোনা-করবোনা করেও লিখলাম, ‘চিকেন বিরিয়ানি-বাংলাদেশ’ এবং ‘স্পাইসি শ্রিম্প-বাংলাদেশ’।
খাওয়া শুরু হলো। আমি আমার দুই আইটেমের চিন্তায় কিছু খেতে পারিনা। কয়েকজন আরব দেশীয় কে জিজ্ঞেস করলাম, “এই চিকেন বিরিয়ানি নিচ্ছো না কেন?” তারা বললো, “এই চিকেন টা কি হালাল?” আমি বললাম, “হ্যা, নিশ্চিন্তে খেতে পারো।”
অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, টেবিলে রাখা অসংখ্য খাবারের মধ্যে ইরানি দম্পতির সেই বিখ্যাত কেক, আর আমার চিংড়ি- এই দুইটা আইটেম কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে গেলো। এই চিংড়ি নিয়ে কয়েকজনের সাথে আমার কথপোকথন এখানে উল্লেখ করলাম।
১ম কথপোকথনঃ (ইন্টারনেশনাল সেন্টারের এক কর্মকর্তার স্ত্রী’র সাথে)
ভদ্রমহিলাঃ এই রান্না করা চিংড়ি টা কোন রেস্টুরেন্ট থেকে নিয়ে এসেছো?
আমিঃ এই এডমন্টন শহরে কোন বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট নেই। আমি নিজে রান্না করেছি।
ভদ্রমহিলাঃ (বিস্ময় নিয়ে) তুমি নিজে রান্না করেছো?
আমিঃ (লজ্জিত হাসি নিয়ে) জ্বি!
ভদ্রমহিলাঃ এতো সুন্দর গন্ধ হলো কীভাবে?
আমিঃ এটা আমাদের দেশের মশলা দিয়ে রান্না করা তাই।
ভদ্রমহিলাঃ আর এই সবুজ পাতাগুলো কি?
আমিঃ ধনিয়া পাতা।
ভদ্রমহিলাঃ তোমাদের সব রান্নাই কী এমন মজার?
আমিঃ (প্রসারিত হাসি) আমি ভালো রান্না করতে পারিনা। আমাদের দেশের মেয়েদের রান্না অনেক বেশি ভালো। এইটা সেই তুলনায় কিছুই না!
ভদ্রমহিলাঃ (সঙ্গে সঙ্গে একটা কাগজে কিছু লিখে আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে) এটা আমার ই-মেইল এড্রেস। তুমি কি একটু কষ্ট করে আমাকে এই রেসিপিটা পাঠিয়ে দিতে পারবে? খুব খুশি হবো।
আমিঃ (বিস্ময়ে হতবাক!)
২য় কথপোকথনঃ (একজন স্টুডেন্টের বাবা, যিনি তিউনিশিয়া থেকে ছেলের সাথে দেখা করতে এক সপ্তাহের জন্য কানাডা এসেছেন। ভদ্রলোক ভালোভাবে ইংরেজি বলতে পারেননা, তাঁর বলা আরবি কথাগুলো তাঁর ছেলে আমার জন্য ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিচ্ছিলো।)
ভদ্রলোকঃ আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার; তিউনিশিয়া তে সরকারি চাকরি করি।
আমিঃ শুনে খুশি হলাম।
ভদ্রলোকঃ আমাদের দেশে অনেক সামুদ্রিক মাছ/চিংড়ি আছে; কিন্তু সেগুলো খেতে এতো মজার হয় না।
আমিঃ (নীরব হাসি)
ভদ্রলোকঃ আমার একটা প্রস্তাব আছে। আমি একটা রেস্টুরেন্ট দেবো। সব খরচ আমার, তুমি থাকবে রান্নার দায়িত্বে। আমার দেশের সামুদ্রিক মাছ/চিংড়ি গুলো তুমি তোমার দেশের মশলা দিয়ে রান্না করবে। এই এডমন্টনে প্রথমে রেস্টুরেন্ট শুরু হবে, পরে আমার দেশেও একটা শাখা খুলবো। রেস্টুরেন্টের নাম হবে আমাদের দু’জনের নামে। তুমি কি রাজি? আমি কিন্তু সিরিয়াস!
আমিঃ (আবারো বিস্ময়ে হতবাক!)
৩য় কথপোকথনঃ (ইন্টারনেশনাল সেন্টারের একজন কর্মকর্তা)
ভদ্রমহিলাঃ তুমি কোন দেশ থেকে এসেছো?
আমিঃ বাংলাদেশ থেকে।
ভদ্রমহিলাঃ বাংলাদেশের রান্না তো খুউব মজার! আমি অনেকগুলো চিংড়ি খেয়েছি! আর একটা কী যেন এনেছো?
আমিঃ চিকেন বিরিয়ানি।
ভদ্রমহিলাঃ হুম! অসাধারণ। আমাদের কানাডিয়ান রান্না তো এতো মজা লাগেনা! আমি নিজেও চিংড়ি এবং চিকেন রান্না করি; চিজ দিয়ে। কিন্তু তোমার দেশের মশলা দিয়ে রান্না তো অ’সাম (awesome)!!
আমিঃ (বিমলিন হাসি)
ভদ্রমহিলাঃ এই শহরে কোথায় আছে বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট? আমি যাবো!
আমিঃ এই শহরে নেই।
ভদ্রমহিলাঃ মন খারাপ করে দিলে! তাহলে বলো, তুমি আবার কবে খাওয়াবে এমন মজার বাংলাদেশী খাবার?
আমিঃ (প্রসারিত হাসি)
আমার মনে হয়, আর ঘটনা বাড়িয়ে পাঠকদের বিরক্ত করবার কোন মানে হয় না! তবে সেদিনের পর থেকে ইন্টারনেশনাল সেন্টারে গেলেই একটা কথা শুনতে হয়, “এই যে মিঃ ….., আমাদের পরবর্তী পটলাক পার্টিতে বাংলাদেশী ডিলিশিয়াস স্পাইসি শ্রিম্প আনবে তো??”
এডমন্টন সিটি
এপ্রিল ৪, ২০১০
দুপুর দুইটা।
মন্তব্য
ভাগ্য ভালো আমার রান্না খায় নাই
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
রেনেট,
আমার তো মনে হয়, ওরা যেকোন বাংলাদেশীর রান্না খেলেই একই রকম মন্তব্য করতো।
মুক্ত বিহঙ্গ
১) কথোপকথন
গুঁতোগুঁতি
ইন্টারন্যাশনাল
হ্যাঁ
বাংলাদেশী
২) আমি কোন রান্নাই জানি না!
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথীডোর,
১) আমি কৃতজ্ঞ
২) ব্যাপার না! বাংলাদেশের ছেলেরা প্রবাসে দেড় বছরে যে রান্না শিখে, বাংলাদেশের একেবারেই রান্না না জানা যে কোন মেয়ে দেড় সপ্তাহে তার চাইতে ভালো রান্না করতে পারে। তাই চিন্তা করবেন না; হয়ে যাবে
মুক্ত বিহঙ্গ
মজার অভিজ্ঞতা তো! আরো পর্ব দিয়েন।
প্রকৃ্তিপ্রেমিক,
এইরকম মজার অভিজ্ঞতা অনেক আছে; ভবিষ্যতে আরো বলবো ইনশা-আল্লাহ
মুক্ত বিহঙ্গ
আপনার রেস্টুরেন্ট এর অফারটা তো ভালোই ছিল। একটু গুতোগুতী করলে অর্ধেক মালিকানা মনে দিয়ে দিত
রেসিপি টা কি একটু পাঠানো যায় গুতো মেরে?
-----
রাসেল
রাসেল,
তা যা বলেছেন!!
"রেসিপি টা কি একটু পাঠানো যায় গুতো মেরে?" - আমি তো আবার বিস্ময়ে হতবাক !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
মুক্ত বিহঙ্গ
এখন তো চিকেন বিরিয়ানি খাইতে ইচ্ছা করতেছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ইসলাম,
এডমন্টন-এ আসলে আমাকে আগে থেকে জানিয়েন; চিকেন বিরিয়ানি আমিও অনেক দিন বানাই নি
তবে ওই বিদেশীদের মত অতটা ভালো হয়তো লাগবেনা; কারণ আপনি তো বাংলাদেশী
মুক্ত বিহঙ্গ
কঃ
লেখা উপাদেয় হয়েছে।
খঃ
চিকেন বিরিয়ানি আর চিংড়ি খেতে ইচ্ছে করছে।
গঃ
অ’সাম এর পাশে ব্র্যাকেটে awesome লিখে দিলে নিজেকে একটু মূর্খ মূর্খ লাগে।
ঘঃ
গুঁতুগুতি > গুঁতোগুতি (টাইপো, ব্যাপার না )
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
নিচের দিকে নামতে থাকুন...
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
রাস্তায় বসে মোবাইলে মন্তব্যবাজির ফল!!
তবে চারবার পোস্টিং এর রেকর্ড আছে এক হাচলের!
সেটাও হয়তো আমার হাতেই ভাঙ্গবে..
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ইয়ে, গুঁতোগুঁতি/ গুঁতাগুঁতি মানে দুটো চন্দ্রবিন্দু সহকারেই আছে অভিধানে!
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হা হা হা ! নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙ্গলেন ! তিন বার !
অভিধানমতে গুঁতোগুঁতিই হয়। কিন্তু নীড়পাতায় দ্বিতীয় চন্দ্রবিন্দু নেই। তাই নীড়পাতার সংবিধান সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত "গুঁতোগুতির শীর্ষে " থাকতে হবে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
কঃ
শুনে পেট+মন, দুটোই ভরে গেলো
খঃ
এডমন্টন-এ আসলে মিস হবে না ইনশা-আল্লাহ! এই বান্দা কথা দিলো
গঃ
ইয়ে.... না মানে......
ঘঃ
মুক্ত বিহঙ্গ
আপনার 'শুরুর কথা' পড়ে ব্লগার দলছুটের কথা মনে পড়ল। উনার স্মৃতিখণ্ড আবার পড়ে আসলাম।
শুভাশীষ দাশ,
অনেক ধন্যবাদ আমার লেখাটা পড়বার জন্য
মুক্ত বিহঙ্গ
ভাইয়া,
অনেক অনেক ধন্যবাদ এত্তো তাড়াতাড়ি অপেক্ষার অবসান ঘটানোর জন্য।
একটা জিনিস দ্বিধাহীনভাবে বলতে পারি---" যে লিখতে পারে, সে রাঁধতেও পারে"; এটা অন্তত আপনার বেলায় applicable। আশা করি আপনার আরো অনেক গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা আগামী লেখাগুলোর মাধ্যমে আরো বেশি ওয়াকিবহাল হতে পারব, ইনশাল্লাহ।
আশা করি ১ম কথপোকথনের সেই "ইন্টারনেশনাল সেন্টারের এক কর্মকর্তার স্ত্রী"’র অনুরোধ আপনি রেখেছিলেন।
আর ২য় কথপোকথনের তিউনিসিয়ান ভদ্রলোক যেভাবে আপনাকে "ভবিতব্য-হেড-শেফ" উপাধি দিয়ে দিচ্ছিলেন, তা মর্মান্তিক পরিমাণের হাস্যকর ছিল। তিনি সম্ভবত মাত্রাতিরিক্ত ভোজন-রসিক একজন মানুষ। খোদা করুন, ওনার খাদ্য-রুচিতে যেন কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
আর ৩য় কথপোকথনের ভদ্রমহিলার "তুমি আবার কবে খাওয়াবে এমন মজার বাংলাদেশী খাবার?" এই উক্তিটি আমাদের সবার মনেই হয়ত উঁকি দিচ্ছে। আমাদের প্রশ্নে, এখানে "আবার" শব্দটি উহ্য থাকবে।
আপনাকে সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের এত্তো সুন্দর একটা প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার জন্য।
আশা করি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার আবারো ভরে উঠুক আপনার রান্না করা কোন না কোন খাবারের সুঘ্রানে আর এই সচলায়তন ভরে উঠুক আপনার অজস্র সুন্দর-সুন্দর লেখায়।
ভালো থাকবেন। ^_^
চেনা পথিক,
শুরুতেই ধন্যবাদ জানাই অত্যন্ত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য
"আশা করি আপনার আরো অনেক গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা আগামী লেখাগুলোর মাধ্যমে আরো বেশি ওয়াকিবহাল হতে পারব" - কোন পাঠক যদি আমার এই লেখা টা পড়ে মনে করেন যে, আমি এখানে আমার গুণাগুণ [এখানে রান্না] প্রকাশ করতে চেয়েছি, তাহলে আমি এইক্ষেত্রে লেখক হিসেবে একশো ভাগ ব্যার্থ
আমার এই লেখার উদ্দেশ্য ছিল, বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশী খাবারের জনপ্রিয়তা তুলে ধরা। আমি ছাড়া যেকোন বাংলাদেশী এই পার্টি তে খাবার নিয়ে গেলেও ওই ব্যক্তি গুলো নিশ্চয় একই রকম মন্তব্য করতেন।
১ম কথপোকথনের সেই "ইন্টারনেশনাল সেন্টারের এক কর্মকর্তার স্ত্রী"’র অনুরোধ আমি রেখেছিলাম
"খোদা করুন, ওনার খাদ্য-রুচিতে যেন কোন ব্যাঘাত না ঘটে।" - আমীন
"আমাদের প্রশ্নে, এখানে "আবার" শব্দটি উহ্য থাকবে।" - এখানে আমি নীরব
আপনাকে আবারো ধন্যবাদ
মুক্ত বিহঙ্গ
ভাইয়া,
আমি কিন্তু শেষে বলেছিলাম - "আপনাকে সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের এত্তো সুন্দর একটা প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার জন্য।"
প্রিয় লেখকদের সম্পর্কে জানার আগ্রহ যে কোন পাঠকেরই হয়, আমিও তার ব্যাতিক্রম নই। সুতরাং, please আমাকে ভুল বুঝবেন না।
ভাল্লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায়
অতন্দ্র প্রহরী,
শুনে খুশি হলাম
আপনাদের আগ্রহ আমার প্রেরণা
মুক্ত বিহঙ্গ
এ লেখাটা আপনার বউকে (যদি থাকে; না থাকলে, যখন হবে তখন) অবশ্যই দেখাবেন, খুশী হবে
(চোখ টিপি দেয়ার ইচ্ছা ছিলো, দিতে জানিনা!)
আমি চিংড়ি খাইনা।
লেখার পাশাপাশি মুখবন্ধটুকুও ভালো লাগছে।
কীবোর্ডে ঝড় ওঠুক।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
মর্ম,
"এ লেখাটা আপনার বউকে (যদি থাকে; না থাকলে, যখন হবে তখন) অবশ্যই দেখাবেন, খুশী হবে" - পাগল হয়েছেন!! এই লেখা বউকে (এখন পর্যন্ত নেই) দেখাবো!! (চোখ টিপি আমারো দেয়ার ইচ্ছা ছিলো, আমিও দিতে জানিনা!)
চিংড়ি আমার অন্যতম পছন্দ
অনেক ধন্যবাদ
মুক্ত বিহঙ্গ
বাংলাদেশ থেকে এসেই তুমি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে চলে গেলে?এর আগে কানাডায় তোমার জীবন যাপন,একাডেমিক বিষয় গুলো আলোচনা করলে হইতো একটা ধারাবাহিকতা থাকতো।এছাড়া লেখা খুব ভাল লেগেছে।আগামী লেখার অপেক্ষাতে
মিতু
রিফাত জাহান মিতু
মিতু,
"প্রথমে ভেবেছিলাম, শিরোনাম যেহেতু ‘দিনলিপি’, তাই এই প্রবাস জীবনের ঘটনাগুলো তারিখ অনুসারে বর্ণনা করবো। কিন্তু লেখা শুরু করে দেখলাম, সেটা সম্ভব হচ্ছেনা। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা মনের মধ্যে এসে যাচ্ছে; যেগুলোর কোন ধারাবাহিকতা নেই তারিখ অনুসারে।"- এই পর্বের শুরুতে বলা আমার এই কথায় আশা করি আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন
লেখা খুব ভাল লেগেছে শুনে খুব খুশি হলাম
অনেক ধন্যবাদ
মুক্ত বিহঙ্গ
বাংলাদেশি খাবার বলে কথা!
চলুক ।
তবে আমি রাঁধলে সেটা আমিও খেতে পারতাম না! অন্যরা তো দূরে থাক! আমার ছোট বোন মাঝে মাঝে রাঁধত,খাওয়ার পর আমরা বলতাম অত খারাপ হয় নি আর ও বলত, কৈ আমার তো ভালই লাগছে!!
(ইয়ে একটা কথা ছিলো এত বড় ভূমিকা কেন যেন ভালো লাগল না । মানে লেখার বিশাল অংশ জুড়ে ভূমিকা! ব্যাপারটার পেছনে বোধহয় অনভ্যস্ততা কাজ করছে, কারণ আমরা/আমি এত বড় ভূমিকায় অভস্ত না, সচলে তো নয়ই অন্য ব্লগেও নয়। )
_________________________________________
বোহেমিয়ান কথকতা
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
বোহেমিয়ান,
"বাংলাদেশি খাবার বলে কথা!" - সহমত
ছোট বোনটা কত ভালোবাসা নিয়ে ভাইয়ের জন্য রান্না করেছে; তাকে খুশি করতে মাঝে মাঝে একটু মিথ্যা বললে পাপ হবেনা
হুমমম...... ভূমিকা-র বিষয়টা নিয়ে তাহলে ভাবতে হবে......
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
মুক্ত বিহঙ্গ
নতুন মন্তব্য করুন