লেখালেখি জিনিসটা আমার খুব একটা আসে না। আমি মূলত পড়তেই বেশী পছন্দ করি। সচলায়তন পড়ি অনেক দিন হল। এই সচলায়তনে কিছু বিষয় নিয়ে লেখা দেখলেই কেন যেন আমার হাত নিশপিশ করা শুরু করে। লেখা দিলামও বেশ কয়েকটা। কয়েকদিন আগে রেনেট ভাই লিখলেন নটরডেম নিয়ে। লেখাটা দেখেই কেন যেন খুব লিখতে ইচ্ছা করছে আমার স্কুল কলেজ নিয়ে।
“আমি ছোটবেলায় খুব বান্দর ছিলাম।”-অনেককেই খুব গর্বের সাথে এই দাবীটা করতে দেখি। আপসুস আমি এই দাবীটা করতে পারছি না। আমি যে আবার খুব শান্তশিষ্ট ছিলাম তাও না। বান্দর পুলাপানদের সাথে থাকলে কেমনে কেমনে জানি আমার পিছন দিয়াও একটা লেজ গজায়ে যাইত। আমার স্কুলের নাম ছিল মতিঝিল সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়। আমার স্কুল্টা ছিল অনেকটা বান্দরদের অভয়ারণ্যের মত। সারাদিন ঘুরাঘুরি, বান্দরামির পরে যদি মনে চাইত পড়াশুনা করতাম। আমাদের স্কুলের শিক্ষকদের ভূমিকা ছিল অনেকটা সাফারি পার্কের গার্ডদের মত। আমাদের উৎপাত খুব বেড়ে গেলে উনারা এসে আমাদের বেত দিয়ে ডলা দিয়ে যেতেন। এহেন স্কুলে পড়ি বলে আমাকে নিয়ে আমার বাপমার চিন্তার অন্ত ছিল না। যাই হোক দেখতে দেখতে মেট্রিক পরীক্ষা চলে আসল। আমারে নিয়ে আমার বাপমার খুব একটা আশা নাই। রেসাল্ট বের হওয়ার পরতো আমার বাপমা, শিক্ষকদের থেকে আমি বেশী অবাক হই। খুশী হয়ে আমি আবিষ্কার করলাম শুধু আমি না আমার সব দোস্তরাই কেমনে কেমঅনে জানি অবাক হোয়ার মত রেসাল্টই করসে।
রেসাল্ট বের হওয়ার পর আমিসহ আমার সব দোস্তরা রুদ্ধ দরজা বৈঠকে বসি কোন কলেজে ভর্তি হওয়া যায় এইটা নিয়ে আলোচনা করার জন্য। বৈঠকের মাঝে আমাদের এক দুস্ত তার লুকায়ে কিনা মোবাইল দিয়ে এক বড় ভাই এক্স নটরডেমিয়ানকে ফোন দিল। ফোনে ঐ বড়ভাই বললেন নটরডেম নাকি মেয়েদের এমনভাবে কাছে টানে যেমনে চুম্বক লোহারে কাছে টানে। কসম বড়ভাই ঠিক এই কথাটাই কইসিল।(এইখানে দাত কেলায়ে হাসার ইমো হবে।) তো বড়ভাইয়ের কথা শুইনা আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে এই কলেজেই আমাদের পড়তে হবে। দল বেধে গিয়ে কলেজের ফর্ম কিনলাম। ভাইবা দিয়ে কেমনে কেমনে জানি টিকেও গেলাম। বাসায় গিয়ে আমার বাপরে এই খবর দিলাম। নিরাসক্তভাবে হাই তুলতে চুলতে আমার বাপে কইল, ”নটরডেমেতো ভাল ছাত্ররা পড়ে বইলাই জানতাম।”
প্রথমদিনে ক্লাস করতে যেয়ে দেখি আমার গ্রুপ হইল ৩। গ্রুপ ৩ হইতেসে নটরডেমে সব থেকে মেন্দা গ্রুপ। কোন গ্রুপ কেমন এই খবর আমরা আগেই নিসিলাম। আমার যেসব দোস্তরা গ্রুপ ৭ এ তারা তো খুশীতে আত্মহারা। সবথেকে বান্দর গ্রুপে পড়সে বইলা তাদের খুশীর সীমা নাই। আর যারা গ্রুপ ১ এ গেসে তারা তো ভাবে বাচে না। আমি পড়লাম মাঝামাঝি অবস্থায়। প্রথম দিন ক্লাস করতে যেয়েই বুঝলাম ঠেলা কাকে বলে। বান্দরদের অভয়ারণ্য থেকে আমরা সবাই পড়লাম একেবারে চিড়িখানার খাঁচায়। তাও আবার এমন এক খাঁচা যেইখানে বাইরে থেকে বান্দরদের বাদাম ছুড়ে মারা একেবারে নিষিদ্ধ। সেই বড় ভাইয়ের কথার বিন্দুমাত্র সত্যতা পাইলাম না । আমরা সকাল বিকাল ক্লাস করে দল বেধে বাসায় ফেরার সময় সেই বড়ভাই আর তার চৌদ্দ পুরুষরে গালিগালাজ করি। তবে মজাটা পাওয়া শুরু করি কয়েকদিন পরে। আমরা কয়েক দিন পরে আবিষ্কার করলাম নটরডেমের সবথেকে বড় কমেডিয়ান আসলে আমরা না আমাদের শিক্ষকেরা। আজকে তাহলে বাংলা দিয়েই শুরু করি।
আমাদের বাংলা পড়াতেন অমর এঞ্জেলো রোজারিও। আমরা ডাকতাম অমর গ্যাঞ্জালো গাঞ্জারিও। কেন সেটা আজকে না আরেকদিন বলব। যাই হোক উনি আমাদের নিয়মিত বাংলার ক্লাস নেন। একদিন উনি আসলেন না। উনার জায়গায় আসলেন চশমা পড়া ভারিক্কী চেহারার একজন। হাটা চলা দেখে বুঝতে কষ্ট হল না যে উনি অসুস্থ। বসার পর ভারিক্কী গলায় বলে উঠলেন, “আমার নাম মুখতার আহমেদ।”
আমি দিব্য চোখে এক্স নটরডেমিয়ানদের মুখ হাসি দেখতে পাচ্ছি। উনি পড়ানো শুরু করলেন বানান বিভ্রাট দিয়ে। আস্তে আস্তে উনার জোস বাড়তে থাকে। এখন উনার জবানীতেই বলি না হয়,
“আমি জানি নীল জামার প্রতি তোমাদের একটা আকর্ষণ আছে।”
এটা বলার সাথে সাথে সারা ক্লাসে নটরডেমের ট্রেডমার্ক হো হো শুরু হয়ে যায়। পাঠক উনি কি বলতে চাচ্ছেন বুঝতে নিশ্চই কষ্ট হচ্ছে না। হাত নাড়িয়ে আমাদের শান্ত করলেন তিনি।
“তো এক নীল জামা পরিহিতা ললনা মাইকেল মধুসূদন লিখতে গিয়ে লিখেছে মধুছূদন।”
আমরা মুখ চাপা দিয়ে হাসা শুরু করলাম। এবং বানানটা একটু এদিক সেদিক হলে কি ভয়াবহ ব্যাপার হতে পারত সেটা একজন আরেকজনকে বলতে লাগলাম। একটু পরে আমরা আবিষ্কার করলাম স্যার কোন কথা না বলে আমাদের লক্ষ্য করছেন। একটু পরে সারা ক্লাস নীরব হয়ে গেল। আমরা চুপচাপ বসে আছি। আচমকা তিনি নীরবতা ভেঙ্গে গমগমে কণ্ঠে বলে উঠলেন, “আমি কিন্তু ছ বলেছিলাম চ বলি নাই।”
মুখতার স্যারের যে জিনিসটা খারাপ লাগত তা হল উনি খুচিয়ে খুচিয়ে একটা নির্দোষ গল্প কিংবা কবিতাকে আদি রসের দিকে নিয়ে যেতেন। মনে পড়ে “পদ্মা নদীর মাঝি” কিংবা “বিলাসী” পড়ানোর সময় তার হুশ থাকত না । আর ক্লাসে এসে প্রায়ই তিনি দাবী করতেন জনৈক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর সাথে নাকি তার প্রণয় ছিল। তার সাথে নাকি উনার বিয়ের কথাবার্তাও হয়েছিল।(এই জায়গায় চোখ কপালে উঠে যাওয়ার ইমো হবে।)
চলবে?
তার্কিক
মন্তব্য
ভাই শুরু করার আগেই চলবে বলে ছেড়ে দিলেন? কেম্নে কি? তবে আপনি ভালই গুড বয় ছিলেন মনে হয় হে হে...
আচ্ছা, মুখতার স্যারের সেই ফার্সি কবিতাটা কারো মুখস্থ আছে নাকি কইলেন নাতো...
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আসলে স্মৃতিকথা টাইপ লেখা আগে কখন ও লিখি নাই। এই জন্য ভয়ে ছিলাম যে আপনারা পছন্দ করবেন কিনা। পরের বার থেকে পূর্ণাঙ্গ পোস্ট হবে।
ইয়ে মুখতার স্যারের ক্লাস আমরা তেমন একটা পাই নাই। তাই উনাকে নিয়ে বেশী লিখতে পারলাম না। আর উনার ফার্সী কবিতা সম্পর্কে ব্যাপক উৎসাহ বোধ করছি। মন্তব্যের ঘরে কেউ বলবেন আশা করি। সামেন জে.কে. স্যারকে নিয়ে লিখবার ইচ্ছা আছে।
তার্কিক
কঃ
অবশ্যই চলবে। খুব মজা পেলাম পড়ে।
বিশেষ করে "তাও আবার এমন এক খাঁচা যেইখানে বাইরে থেকে বান্দরদের বাদাম ছুড়ে মারা একেবারে নিষিদ্ধ।" পড়ে তো
খঃ
বানানে ভুল একটাঃ রেসাল্ট > রেজাল্ট
টাইপো আছে বেশ কিছু। আপনার প্রথম লেখা বলেই।
কেমঅনে > কেমনে, হোয়ার > হওয়ার, চুলতে > তুলতে, জোস > জোশ, নিশ্চই > নিশ্চয়ই, দাবী > দাবি
দাঁত, বেঁধে, হাঁটা, খুঁচিয়ে, হুঁশ – একটাতেও চন্দ্রবিন্দু দেননি। বুঝতে পারছি কীবোর্ডে চন্দ্রবিন্দু খুঁজে পাচ্ছেন না।
SHIFT+^ = ঁ
যেয়ে > গিয়ে
কিছু গুরুচন্ডালী দোষঃ
রুদ্ধ দরজা > রুদ্ধ দুয়ার
দিব্য চোখে > দিব্য দৃষ্টিতে
গঃ
সচলে স্বাগতম। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ধন্যবাদ বুনোহাঁস আপু পড়ার জন্য।(আমি চন্দ্রবিন্দু দিতে পারসি ।) ঠিকই বলেছেন প্রথম প্রথম বাংলা টাইপ করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। তবে এটা আমার প্রথম লেখা না। এর আগেও দুইটা লেখা দিয়েছি। আর যেসব গুরুচন্ডালীর কথা বললেন সেগুলো মাথায় ছিল। কিন্তু ঐযে টাইপিং। আচ্ছা দ এর উপর ব কেম্নে লিখে এইটা কি একটু বলতে পারবেন?
তার্কিক।
দ এর উপর ব কেম্নে দেয় এবং কেন দেয় জানি না।
তবে দ এর নিচে ব কেম্নে দেয় জানি।
দ্ব = dw
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হায়রে আপ্নে দেখি কিছুই ছাড়েন না ()। আবারো ধন্যবাদ।
তার্কিক
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আরে! তাই তো!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মুখতার বছরের পর বছর একই পুরনো চোথা দিয়ে ব্যাচের পর ব্যাচকে আমোদিত করার চেষ্টা করে আসছেন। আমার চেয়ে কয়েক বছরের সিনিয়র যারা ছিলেন, তাঁদের অভিজ্ঞতার সাথে আমার অভিজ্ঞতা যেমন মিলেছে, আমার চেয়ে অনেক বছর জুনিয়রদের সাথেও মিলেছে। প্রথম ক্লাসে আমিও টেবিল চাপড়ে হেসেছিলাম তার এসব কৌতুকে, কিন্তু দেখেছি, এই রাইবল্ড্রি বাদে তাঁর ভাঁড়ারে খুব বেশি কিছু নেই। কিছু ব্যক্তিগত গল্প বলতেন, সেগুলি হজম করা দুঃসাধ্য ছিলো। সব অশ্লীল কৌতুক উপভোগ্য হয় না সবসময়, পরিমিতিবোধের অভাবে মুখতারের অনেক কিছুই তাই বিখাউজ মনে হয়েছে। ছাত্রদের ডেকে পাছার নিচে গদি গুঁজে দিতে বলা, আর মধ্যমা উঁচিয়ে চশমা ঠিক করা ... এসব সস্তা ভাঁড়ামো একদিন দু'দিন ভালো লাগে, এরপর পানসে হয়ে যায়।
ধন্যবাদ হিমু ভাই পড়ার জন্য। উনি আসলেই বছর বছর একই চোথা দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন। আমার অভিজ্ঞতাও পুরাপুরি মিলে যায় জুনিয়রদের সাথে। তবে আমার ক্লাসের অনেককেই সব সময়ই দেখতাম তাঁর এইসব ভাড়ামো উপভোগ করতে ।
তার্কিক
- শুধু মুখতার স্যার কেনো, আমার ধারণা প্রতিটা শিক্ষকই একই চোথা দিয়ে বছরের পর বছর পোলাপানদেরকে বিনোদিত করে যান, ঘঁষে যান, মেজে যান, শাসন করে যান।
সিনিয়র মুখে শুনেছি সুশীল স্যার তাঁর ম্যাজিস্ট্রেট ছোট ভাইয়ের গল্প বলেছেন। এই গল্প আমরাও শুনেছি। এক ব্যাচ জুনিয়রও শুনেছে। ভাগ্যক্রমে একবার সেই ম্যাজিস্ট্রেট ভাইয়ের সাথে দেখাও হয়ে গিয়েছিলো আমার এক যুগ্ম সচিবের অফিসে। এবং তিনিও আমাকে জানালেন যে সুশীল স্যারের ঐ গল্প তিনিও শুনেছেন!
সুতরাং, মুখতারের একলাই দোষ খুঁজলে হবে না। সর্বস্যার মুখতার, আখতার, গাজী, পাজী, সর্ব ম্যাডাম রাশেদা, ফরিদা, হামিদা, মৃধা, শারমিন, মারলিন, কণিকা, চয়নিকা, প্রমিলা, জমিলা— সবাই-ই একই দোষে দুষ্ট। বছর বছর তো আর তাঁদের ভাণ্ডার আপগ্রেড করার সিস্টেম নাই। টাইম মেশিন আবিষ্কৃত হওয়ার আগ পর্যন্ত এইসব পৌনপুনিক কাহিনী আমাদের হজম করে যেতেই হবে! কোনো ছাড়ন নাই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পৌনপুনিক কাহিনী দুষ্পাচ্য হইতে পারে, কিন্তু মুখতার স্যারের আদিরসাত্মক পৌনপুনিক কাহিনী একসময় অপাচ্য হয়ে যায়। বমি আসত আমার টার্মের শেষের দিকে। বাং মারার অত সাহস ছিল না বলে ক্লাসেই বসে সহ্য করার চেষ্টা করতাম।
আচ্ছা, কেউ আবু বকর সিদ্দিকী স্যারকে পায়নাই?
===========
আশাহত
- কী জানি। দ্বিতীয় বছরে মোটামুটি একটা লম্বা সময়ের জন্যই মুখতার স্যারকে পেয়েছিলাম। আমার কাছে খারাপ লাগে নাই। কে জানে, হয়তো আমার মতো "দিলে ময়লাঅলা" পাব্লিকের উৎসাহের কারণেই তিনি এইসব অপাচ্য গেলানোর চেষ্টা করতেন কীনা!
আবু বকর সিদ্দিকের নাম কি দেখেছিলাম আমাদের সময়, মনে পড়ছে না!
তবে ক্লাস পাইনি, এই ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত।
আমাদের সময়ে ছিলেন, মানিক গোমেজ, প্রমীলা ভট্টাচার্য, মুখতার আহমেদ, মারলিন ক্লারা— তাঁরা সবসময় ক্লাস নিতেন। একজনকে কেবল নামেই দেখেছি, সশরীরে দেখিনি, দেখলেও চিনিনি। তিনিই খুব সম্ভবত সিদ্দিক।
দ্বিতীয় বর্ষের (প্রথম!) দিকে মিলটন (বিশ্বাস!) বলে একজন টিংটিং-এ স্যার জয়েন করেছিলেন মনে আছে। নামটা হুবহু মনে নেই। তিনিও মনেহয় খুব বেশি দিন টেকেননি।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
মিল্টন স্যারকে পাইসিলাম। কি পড়াইত মনে নাই। ডায়াসে বসে ঘুমজড়ানো গলায় কি যেন বলত, কেউ শুনত, যারা শুনত, তারা চিল্লাপাল্লা করত। ল্যাবরিপোর্ট লেখার জন্য সবচেয়ে ভাল। স্যার ডায়াস থেকে নামতও না
==========
আশাহত
আররে! ঘুরতে ঘুরতে দুইজন পাইলাম যারা আমার মতই মুখতারের "কৌতুকে" হাসির কিছু তেমন খুঁজে পায়না পেয়ে ভাল লাগলো। আমরা পুরা এক টার্ম পেয়েছিলাম এই মুখতারকে।
প্রতি ক্লাসে একঘেয়ে আদিরসাত্মক কৌতুক তাও সহ্য করা যায়। কিন্তু একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রকে বাপমা তুলে গালি দেওয়াটা কোনমতেই সহ্য করা যায়না। একজন ছাত্র যতই বেয়াদব এবং/অথবা খারাপ হোক, "তোর বাপ-মা ঠিক আছে তো?!" বলার মানে কি? মুখতার সাহেব এই কাজটিই করতেন।
=============
আশাহত
আমাদের সময় প্রমীলা ভট্টাচার্য্য আর গিয়াস শামীম চৌধুরী বাংলা পড়িয়েছেন, চমৎকার ব্যক্তিত্ব ছিলো তাঁদের। গ্রুপ সেভেনের মান আমরা রক্ষা করে চলতাম, কিন্তু তাঁদের কখনো অসহিষ্ণু হয়ে মাত্রা অতিক্রম করতে দেখিনি। গিয়াস শামীম চৌধুরী একবার শুধু অধৈর্য হয়ে একটা বাজে কথা বলেছিলেন ক্লাসকে উদ্দেশ করে, কিন্তু সেটা বোধহয় ক্লাসের পাওনাই ছিলো, আর একবার এক ছেলেকে চড় মেরে প্রায় অজ্ঞান করে ফেলেছিলেন, কিন্তু বিদায়ী ক্লাসে তিনি তালিকা করে তাঁর উগ্র আচরণের উদাহরণ দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, আমরা স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিয়েছিলাম উত্তরে। তবে সেদিনও পোংটামি করতে ছাড়েনি পোলাপান।
মুখতার আহমেদ নিজেই সমস্যা তৈরি করতেন। বিদঘুটে অঙ্গভঙ্গি করে আর আদিরসাত্মক কথাবার্তা বলে আসর জমানোর একটা চেষ্টা করতেন, পোলাপান আরো বেশি মাথায় চড়তো, তখন তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে মারপিট আর গালাগালির আশ্রয় নিতেন। মুখতারকে গ্রুপ সেভেন প্রবল হুজ্জতের ওপরই রাখতো সবসময়।
হ্যাঁ এটা ঠিক। আমরা মুখতারকে পেয়েছি মাত্র সপ্তাখানেকের মত। তাতেই বিরক্তি ধরে গেছে, কারণ আমরা আগে থেকেই জানি সে কোন জায়গায় কি বলবে। আমরা বাংলা ক্লাসে যাওয়া ছেড়েই দিচ্ছিলাম, এসময় মারলিন ম্যাডাম ক্যু করে বাঁচিয়ে দিলেন।
আপনাদের মুখতার স্যারের বর্ণনা পড়ে গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরির রাজ্জাক স্যারের কথা মনে পড়লো। এস এস সি'র জন্য কিছুদিন উনার কাছে বাংলা পড়েছিলাম আমরা। "হাজার বছর ধরে"র নোট পড়ানোর সময় আম্বিয়ার দেহসৌষ্ঠব আর তার প্রতি মন্তুর আবেগের রগরগে বর্ণনা দিতে দিতে মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতেন উনি। আমরা আশানুরূপ মাত্রায় হাসতাম না বলে যথেষ্ট আশাহতও হতেন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ইইইইইয়ায়ায়খ!!
==========
আশাহত
কেনু? "আশাহত" হতেন বলে?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ওই রাজ্জাক স্যারের কাজকারবার দেখে ইয়াখ কইলাম। বুয়েটে থাকতে কিসু "লুই" টাইপ "টিচারের" কাজকারবার দেইখা খুব মেজাজ খারাপ হইত। এই রাজ্জাক স্যারের কথা শুইনা মনে হইল ওইগুলা তো আন্ডাবাচ্চা এর তুলনায়।
আমার নামটা পাল্টাইতে চাইতেসি। যেই সময় রেজি করসি, তখন এই নামের কারণ ছিল, এখন আর নাই। আমার নাম পল্লব। কিন্তু এই নাম দিয়ে কমেন্টাবো, না আগের নামেই করবো হাচল হওয়ার আগে পর্যন্ত বুঝতেসি না। সচলে "যোগাযোগ"এ জিগাইলাম, উত্তর পাইনাই এখনো।
================
আশাহত/ পল্লব
"আশাহত" এর চেয়ে "পল্লব" ভালো।
রাজ্জাক স্যারের কথা আর কী বলবো? ছাত্রীদের মাথায় যখন হাত বুলিয়ে দিতেন, ভাবতাম "আহা! কী স্নেহপ্রবণ!"
পরে কলেজে উঠে যখন শুনলাম উনি আমাদেরই ব্যাচের এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিবি হিসেবে গ্রহণ করেছেন তখন আমার মুখেও ঐ "ইয়াখ" ই এসেছিলো। ঘেন্নাটা কেবল ঐ লোকের উপর না, নিজের উপরও।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এইখানে বমির ইমো নাই? মুশকিল!
=========
আশাহত/পল্লব
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
কঠিন তো! এইগুলা পান কই? আমারে দেইন!
========
আশাহত
নেইন!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মুখতারের ক্লাসে একেকজন একেক গবেষনা করত। এক বন্ধু ঠিক করলো, উনি এক ক্লাস পিরিয়ডে কতবার চশমা নাকের ডগা থেকে ঠেলে উপরে উঠান তা গুনবে। এক ক্লাশে সেঞ্চুরি হয়েছিল বোধহয়।
আবার আরেক ছেলে (ফর্সা মত) ছিল খুব লাজুক। স্যারের বিভিন্ন ইয়ে কথা বার্তা শুনে সেই ছেলের কান, মুখ লাল হওয়া শুরু করত। কেউ কেউ ঐ ছেলেকে চোখে চোখে রাখত...ঠিক কোন পর্যায়ে গিয়ে তার বদন লাল হওয়া শুরু করে।
আর স্যার নোট দেয়া শুরু করলে প্রায় কেউই লিখতো না। স্যারের নোটের সাথে নাকি পাঞ্জেরী গাইডের অনেক মিল ছিল
সচলে স্বাগতম।
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
ধন্যবাদ রেনেট ভাই। আসলে মুখতার স্যাররে নিয়া অনেক কিছুই লিখবার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু মডুদের ঘ্যাচাং এর ভয়ে লিখি নাই।
আর সচলায়তনে আমারে আর কয়বার যে স্বাগত জানানো হইব তা উপরওয়ালাই জানে। আমি এর আগেও তো ২ টা লেখা দিসিলাম ()।
তার্কিক
সরি...আপনার আগের লেখা চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। যাহোক, আমার পক্ষ থেকে তো স্বাগতম জানানো হয়নি
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
অরে অলম্বুষ, লিক্লিই যখন - তখন মুখতার নিয়ে লিক্তে গেলি কেনো, সুহেল ছিলো না বুঝি ??? তুই আবার ডিবেটের লোক, এইজন্যে ছাড় দিলি নাকি ??
মুখতার স্যার নিয়ে হিমু ভাইয়ের সাথে একমত। একই ধরণের রসিকতা দিনের পর দিন ভালো লাগে না। এরচেয়ে বরং সুহেল ভালো ছিলো, বাংলার মত একটা নীরস ক্লাসও তার কারণে পুরা সার্কাসে পরিণত হৈতো...
পিপিদার একটা কলেজ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ই-বুক বের হবার কথা। ঠিক করে রেখেছি সেখানে জওহরলাল সরকার স্যারকে নিয়ে লেখবো...
_________________________________________
সেরিওজা
ইয়ে দোস্ত রেনেট ভাইয়ের লেখাটা ছিল আমাদের প্রিয় সুহেল স্যারকে নিয়ে। তাই উনাকে নিয়ে আর লিখলাম না। আর জওয়হরলাল স্যারের থেকে বিদ্যূৎ স্যারকে আমার বেশী এন্টারটেইনিং মনে হইসে। উনারে নিয়াও লেখতে পারিস।
তার্কিক
"কেন কি করি জানতে চাই!"
=========
আশাহত
মজাইলাম... অবশ্যই চলবে...
বুনোপাঃ তোমাকে লাল সেলাম... ম্যাগ্নিফাইং গ্লাস নিয়ে পোস্ট পড়তে বসার জন্য! [Y]
-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
অপ্রাসঙ্গিক একটা গল্প মনে পড়ল। গ্রুপ ৩ এ আমার এক বন্ধু ছিল, ওর কাছে শুনেছি। ওদের ক্লাসে, সম্ভবত ফিজিক্স পড়াতে এক নতুন স্যার আসলেন। স্যারের নাম আগেই গ্রুপের সবাই জানত - ব্রায়ান গোমেজ ফিউজ (নামের প্রথম অংশটা ভুল হতে পারে)। স্যার এসে নিজের পরিচয় দেওয়ার সময় বোর্ডে কেবল লিখলেন "ব্রায়ান গোমেজ", ছেলেপেলে ১ সেকেন্ড অপেক্ষা করে তারপর চিল্লানো শুরু করল, "ফিউজ! ফিউজ! ফিউজ!"
যদ্দুর জানি, ওই স্যার খুব বেশিদিন টিকেনাই গ্রুপ ৩ এ।
==========
আশাহত
একটা কথা বলতে... না থাক, বলব কি? নটরডেমের কথাবার্তা পড়তেই থাকি বরং, মন্দ লাগছেনা..
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
নটরডেমে আমরা যখন পড়ি, তখন পুরনো স্যাররা বিদায় নিয়েছেন বা নিচ্ছেন। অসিত স্যার চলে গেলেন, কার্তিক স্যার মারা গেলেন ট্রাকচাপা পড়ে, হিউম্যানিটিজের ফাদার গিলেস্পি মারা গেলেন বার্ধক্যে।
আমরা ইংরেজি বিভাগের প্রায় সব শিক্ষককে ক্লাসে পেয়েছিলাম। টেরেন্স এসেছিলেন মোটে এক দিনের জন্যে, আর ওয়ালি একবার বা দু'বার। অসিত স্যার পড়িয়েছিলেন রাইম অব এইনশেন্ট মেরিনার, ফাদার বেনাস পড়িয়েছিলেন লাঞ্চন, সুশীল স্যার পড়িয়েছিলেন গিফট অব দ্য ম্যাজাই, আর বোরমাস্টার জাহাঙ্গীর স্যার মাদার ইন ম্যানভিল [আমরা তাকে ডাকতাম মাদার×× ইন ম্যানভিল]। সেকেন্ড ইয়ারে টেরেন্সের বাল্যবন্ধু আবিদ স্যার এলেন লিবিয়া থেকে, নাভি পর্যন্ত লম্বা দাড়ি, তাতে বিকট গন্ধ। আমরা তাঁকে নাম দিয়েছিলাম গন্ধরাজ। তবে তিনি খুব অমায়িক ছিলেন। তাঁর ছেলেও আমাদের ব্যাচমেট ছিলো, পরে সবাই তাকে গন্ধরাজের পোলা বলে ডাকা শুরু করে। ইংরেজির সবচে বোরিং শিক্ষক ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির, অসহ্য সব ট্র্যান্সলেশন করাতেন। একদিন ১০৯ টা ট্র্যান্সলেশন ডিকটেট করেছিলেন।
বাংলাও কমবেশি অসহ্য ছিলো। প্রমীলা ম্যাডাম ভালো পড়াতেন, কিন্তু রবীন্দ্রভক্তির পাত্র উছলে পড়তো প্রায়ই, কিন্তু তিনি হৈমন্তী পড়িয়েছিলেন দারুণ। মারলিন ক্লারা পিনেরো ক্লাসে বসে গল্পগুজব করতেন বেশি। বিলাসী পড়িয়েছিলেন মিলটন বিশ্বাস। তিনি "বিলাসী একজন পতিতা" "বিলাসী একজন পতিতা" "বিলাসী একজন পতিতা" করে করে কানের খৈল নড়িয়ে ফেলতেন। আমরা তার নাম দিয়েছিলাম পতিতাবিলাসী। পদ্মা নদীর মাঝি পড়িয়েছিলেন মুখতার, তিনি কুবেরের পুরুষাঙ্গ নিয়ে রসিকতা করতেন। লালসালু পড়াতেন গিয়াস শামীম চৌধুরী, তিনি আবার নোয়াখাইল্যা ছিলেন, এক ছেলে কুইজে লিখেছিলো মজিদ নোয়াখালি থেকে আগত, তিনি সেটা পড়ে খুব চটেছিলেন।
গণিত প্রায় পুরোটাই নিয়েছিলেন নিমাই চন্দ্র দাস, নীরদবরণ রায় নামে এক চ্যাংড়া মাঝে একদিন ক্লাস নিতে এসে আধঘন্টার মাথায় কাঁদতে কাঁদতে ডায়াস ত্যাগ করেন। পরিসংখ্যান নিয়েছিলেন খান মোহাম্মদ শরীফ ওরফে খামোশ স্যার। রসায়ন নিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর স্যার, এসি স্যার আর সঞ্জীবকুমার গুহ। তিনজনই চমৎকার পড়াতেন, এসি স্যার সবচে বোরিং ছিলেন যদিও। তিনি সিলিঙের দিকে তাকিয়ে পড়াতে পড়াতে আচমকা এর ওর দিকে চক ছুঁড়ে মারতেন। ফিজিক্সে ছিলেন সুশান্ত স্যার, ইউনুস স্যার আর বদরুল স্যার। ইউনুস স্যার একটা বটতলার উপন্যাস লিখেছিলেন, ওনার ক্লাসে সেটা আবৃত্তি করা হতো মাঝে মাঝে। আমরা হলুদ মার্কার দিয়ে চুম্বক অংশ দাগানো শুরু করেছিলাম, কয়েক পৃষ্ঠা যাবার পর হলুদ মার্কার দিয়ে সেটার অচুম্বক অংশ দাগানো শুরু হলো, নাহলে মার্কার অবশ্যই ফুরিয়ে যেতো।
ভাইয়া আপনার এইচএসসি ব্যাচ কোনটা ছিল?
মনে পড়ল, মিল্টন আমাদেরও বিলাসী পড়িয়েছিল। তার "সাপের লগে সোহাগ" কথাটা মাথায় ঢুকে গিয়েছিল শুনতে শুনতে
বিরক্তিকর!
===========
আশাহত
নটরমডেম এতোই চমৎকার একটা স্মৃতি যে এই প্রসঙ্গে মনে হয় নটরডেমিয়ানদের বলা কখনোই শেষ হবে না, কিংবা বলতেও বিরক্ত লাগবে না।
মুখতারের বিষয়ে মোটামুটি একমত। প্রচণ্ড বিরক্ত লাগতো। আদিরসাত্মক কথা তাও মানতে পারতাম, কিন্তু তার পড়ানোর স্টাইল এতোই বিরক্তিকর ছিলো যে মাঝে মাঝে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়তে ইচ্ছা করতো। তার আরেকটা হাস্যকর জিনিস হলো, সে নিজেই ক্লাসে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর মুখে মুখে বলতো, নোট করতে হতো। এরপর একদিন হঠাৎ বলতো অমুক প্রশ্নের উত্তরটা যে লিখে দিয়েছিলাম, ওটা বলো তো। তারই লেখার উত্তর তাকে পড়ে শোনানো হলে একদম উচ্ছ্বসিত হয়ে বলতেন, "খুব ভালো হয়েছে- অমনভাবে লিখলে একদম ফুল মার্কস পাবে"
!
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
মোক্তার স্যার এর ক্লাশ সবার কাছে এত জঘন্য লাগত শুনে অবাক হচ্ছি। বাংলা ক্লাশগুলা এম্নিতেই নিরামিষ ধরনের। কিন্তু আমার তো মনে হয় ক্লারা কিংবা প্রমিলা ম্যাডাম এর নিরাশক্ত একঘেয়ে আবৃত্তির চাইতে মোক্তার স্যার এর কদাচিত আদিরস ওই বয়সে খারাপ লাগত না। যদিও একসময় একঘেয়েমি আসতই।
মোক্তার স্যার এর নোট এর সাথে একজন পাঞ্জেরীর নোট এর মিল পেয়েছেন শুনে অবাক হলাম, আমাদের সময়ে এরকম কিছু শুনেছি বলে মনে পড়ে না। সবচেয়ে মজা লাগল যে, এত খারাপ খারাপ বললেও, প্রথম স্মৃতিটাই লেখকের মোক্তার স্যারকে নিয়ে এবং সবার বেলাতেই বোধ হয় তাই হবে।
যাই হোক লিখতে থাকেন, সময় পেলে কিছু স্মৃতি নাহয় ভাগ করব।
পোস্ট এ প্লাস কিন্তু অনেক কমেন্ট এ মাইনাস।
মুখতার স্যারের আদিরস প্রথম প্রথম কারোরই খারাপ লেগেছিল বলে মনে হয়না। কিন্তু একই ভাড়ামি সারা টার্ম ধরে করে ছাত্রদের কাছে নিজের ওজন কমিয়ে আবার সেই ছাত্রদেরই মা-বাপ তুলে গালি দেওয়াটা খারাপ লেগেছে।
এবং পাঞ্জেরীর নোটের কথাটা সত্য।
বাংলা সাহিত্য জানা শিক্ষক যদি বাংলা পড়ান, তাহলে বাংলা ক্লাস সবচে "আমিষ"ওয়ালা হতে পারে। এটার প্রমাণ পেয়েছি আমার স্কুলের এক স্যারের কাছে।
=========
আশাহত
ধন্যবাদ। আসলে ঠিক এই কথাটাই আমি বলতে চাইছি।
তার্কিক
"বাংলা সাহিত্য জানা শিক্ষক যদি বাংলা পড়ান, তাহলে বাংলা ক্লাস সবচে "আমিষ"ওয়ালা হতে পারে" ... সহমত।
কিন্তু পাঞ্জেরীর ব্যাপার আমি মোটেও মেনে নিতে পারলামনা। হতে পারে ব্যাপারটা উল্টোটাই হয়েছে। পাঞ্জেরীর পক্ষে মোক্তার স্যার এর নোট যোগাড় করা খুব একটা কষ্টকর কিছু না। মোক্তার স্যার ক্লাশে মুখে মুখেও অনেক নোট দিতেন, তার মানে কি উনি পাঞ্জেরী'র নোট মুখস্ত করে আসতেন?
যাই হোক অহেতুক তর্ক করবনা, আপনার পরবর্তি লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ওনার নাম মুখতার, মোক্তার না।
আগেই বলেছি, মুখতারের সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হচ্ছে সেই বাঁজখাই গলায় বিরক্তিকরভাবে কথা বলে যাওয়া। কোথাও কোন উত্থান পতন নেই সুরে। আমার সত্যি সত্যি জানালা দিয়ে লাফ দিতে ইচ্ছা করতো। সপ্তাহে কী দুই সপ্তাহে যখন দেখতো পোলাপান বিরক্তির চূড়ান্তে, তখন একদিন আদিরসাত্মক কথা বার্তা দিয়ে লাইনে রাখার চেষ্টা করতো।
তবে আমি সত্যি সত্যি ভেবে পাই না কীভাবে একজন বাংলার শিক্ষক ক্লাসে চেয়ারে বসে নেচে দেখান, "প্রতি অঙ্গ লাগে কাঁদি প্রতি অঙ্গ মোর"- এর সাথে !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ইয়াখ! ভুলেই গেছিলাম এইটা, আবার মনে করায়ে দিলেন!
==========
আশাহত
নতুন মন্তব্য করুন