আমি ভীষণ বেখেয়ালি। দিন দিন বাড়ছে এ রোগ। আজকাল প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু হারিয়ে ফেলছি আমি। মনে হয়, আমার সব কিছু আমায় ছেড়ে চলে যাবার পণ করেছে, কোনভাবেই তাদের ঠেকানো যাবে না। স্বপ্নগুলো হারিয়েছি বহুদিন হল, কল্পনার রংগুলো প্রতিদিন আরও ফ্যাকাসে হয়, প্রিয় খেলনাগুলো দিয়ে আর কোনদিন খেলা হবেনা। সায়ানের সাথে গাইতে ইচ্ছা করছে, '♪♫.......কেন হারাচ্ছে সব বাড়াচ্ছে ভিড় হারানোর তালিকায়?...... ♫♪' না এটা শোনা যাবেনা, গত বছরে করা হারানোর তালিকাটাও হারিয়ে গেছে। বরং অর্থহীনের গান শুনি ' ♪♫.......যাচ্ছে আমার সব হারিয়ে একটু একটু করে, পলক ফেলতে ভয় লাগে আজ আমার এ দু'চোখে.....♫♪'।
আবার মুঠোফোন হারিয়েছি, এ নিয়ে মোট ৫টা হল। আম্মু রাগ করে আনেকক্ষণ বকাঝকা করেছে, তারপর অন্য ফোনটাও নিয়ে গেছে। বলেছে আর কোনদিন ফেরত দেবেনা, আমার নাকি মুঠোফোন ব্যবহারের যোগ্যতা নেই। সত্যিই তো, আমি আসলেই এ সবের উপযুক্ত নই। এভাবেই যে সব খোঁয়া যায় আমার, আর ফিরে পাইনা।
স্যারদের বেতনের জন্য নেওয়া টাকা হারানোর ভয়ে তালা মেরে রেখেছিলাম। চাবিটাই এখন খুঁজে পাচ্ছিনা। ৫ তারিখ পার হয়ে গেছে, স্যাররা গলা খাঁকারি দেওয়া শুরু করেছেন, আমি কানে তালা দিয়ে ক্লাস করে যাচ্ছি। জানি, বাসায় বললেই চাবিটা খুঁজে দেবে। তবে চাবির সাথে যে কথাগুলোও জুটবে তা শুনতে একদম ইচ্ছে করছে না। লাল খাতাটাও হারিয়ে গেছে। ডায়রিতে লিখলে আশেপাশের মানুষ গুলোর নাক হঠাৎ অনেক লম্বা হয়ে যায়। তাই এ বছর একটা রুল টানা খাতায় লিখছিলাম। খাতাটা রেখেছিলাম পড়ার টেবিলে, যাতে কেউ বুঝতে না পারে। অন্য সব বই খাতা গুলো জায়গা মতই আছে, শুধু লাল খাতাটা নেই। লেখাগুলো বোধহয় গেল, সাথে স্মৃতিগুলোও। আমার সব সত্য মিথ্যে গল্পগুলো হয়ত আজ আবার বদলে যাবে।
যদি আমি নিজেই একদিন হারিয়ে যাই,তবে কেমন হবে?? এমন কোথাও যদি চলে যাই যেখানে আমায় কেউ চিনবেনা, আমার কোন দায়িত্ব থাকবে না, আমার কাছে কারও কোন চাওয়া থাকবেনা, আমার প্রতিদিন নতুন কিছু হারানোর থাকবে না, নিজেকে ছাড়া.........
ধূর, কি সব আবোল তাবোল লিখছি। যাই, পড়তে বসি। তিন সপ্তাহ পর ইয়ার ফাইনাল। কি-বোর্ডে বেহুদা না গুঁতোগুতি করে কবির হাজারির বই নিয়ে ঝিমাই, কাজে লাগবে।
নহক
ঢাকা সেনানিবাস
১১.০৪.২০১০
মন্তব্য
মন বেশি খারাপ?
কথাগুলো কিন্তু আমারো মাঝে মধ্যে মনে হয়। সব ছেড়ে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়। হয়তো আরো অনেকেরই হয়।
ডায়েরি বিপজ্জনক জিনিস। বেশ বিষাক্ত একটা ইতিহাসের পর ডায়েরি লেখা ছেড়েছি। আপনি ব্যক্তিগত ব্লগে কষ্টগুলোকে মুক্তি দিতে পারেন।
তবে একটা কথা কী জানেন? রক্তক্ষরা সময়গুলো সবচেয়ে বেশি সৃষ্টিশীল। এই যে আপনি দারুণ একটা লেখা লিখে ফেললেন!
লিখতে থাকুন। সুখে, দুঃখে, সবসময়।
[ খোঁয়া > খোয়া, ধূর > ধুর, গুঁতোগুতি > গুঁতোগুঁতি ]
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হুমম, মন বেশ খারাপ। আমিও ডাইরি লেখা ছাড়ব ভাবছি।
নীড় পাতায় গুঁতোগুতি বানানে একটা ঁ। বাকি দু'টা জানা ছিল না। ধন্যবাদ।
নহক
নীড় পাতার "গুঁতোগুতি" বানানটা ভুল।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
- আপনার ইমেইল এ্যাড্রেসটাতো জোসসস!!
রকেটমেইল, হা হা হা হা
ভাই, হেব্বি মজা পাইলাম এই মেইল আইডি দেইখা। ঈমানে কই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
হারাধনের দশ ছেলের দশা দেখি আপনের...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লেখাটা মনখারাপের হলেও আমি জানি না আমার খুব হাসি পাচ্ছিল! সব কিছু হারিয়ে যাচ্ছে, বাহ!
তবে একটা কথা মনে পড়ে গেল। আমার তো স্যারদের বেতনের টাকা প্রতি দু-তিনমাস পর একবার করে হারাতো! এছাড়া মাঝে মাঝেই দু-একজন ভার্চুয়াল স্যারদের কাছেও পড়তে যেতাম!
=======================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
আমি একজনকে দেখেছি যে সপ্তাহে একদিন একজন ভার্চুয়াল স্যারের কাছে পড়ার নামে ডেট করতো। সেই স্যারের বেতনের টাকায় ডেটিং-এর খরচ উঠে যেত, আর রিকশা ভাড়াতো মায়ের কাছ থেকেই পাওয়া যেত। আপনাকে অমন এলেমদার গোত্রের বলে মনে হচ্ছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পান্ডবদা, এইরকম অপবাদ দিয়েন না! আমি খুব ভাল ছেলে ছিলাম! (ওই বয়সে তো ডেটিং শব্দের মানেই জানতাম না)!
=======================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
বাহ?!
কাকারে আসল স্যারদের বেতন দিতে পারিনা, আর ভার্চুয়াল স্যার! তো, টাকা দিয়ে করেছেন কি? :-/ আমারে একটু ধারটার দেন....
নহক
স্যরি, ওই টাকাগুলা শেষ হয়ে গেছ্ তাই দিতে পারছি না! টাকাগুলা দিয়ে কি করেছি, এটা জানতে চাওয়াতে অনেক পুরনো কথা মনে পড়ে গেল! একটু দেখি চিন্তা করে......
১। সিগারেটের খরচ বাপ-মা দিত না! শুধু কলেজে যাওয়া-আসা, আর টিফিনের টাকা পাওয়া যেত!
২। প্রেমিকার সাথে ডেটিং মারার সুযোগ ছিল না, কিন্তু সপ্তাহে দুই-তিনদিন তার ছোট ভাইয়ের সাথে ডেটিং মারতে হত! (মানে কোক-চকলেট খাওয়াইতে হইত, সাথে সেখানে যাওয়ার রিকশাভাড়াটাও একটা উল্লেখযোগ্য খরচ ছিল)
৩। উমম, থাক...বাকিগুলা না বলাই ভাল!
=======================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
সচলায়তনে নিবন্ধিত নাম দিলে ইমেইল এড্রেস না দিলেও চলব। অথবা "smnhk অ্যাট রকেটমেইল" এভাবে দিতে পারেন। তাহলে স্প্যামবট গুলো এটা খুঁজে পাবে না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
জানলাম। ধন্যবাদ।
আমার দুইটা মুঠোফোন গেছে! প্রথমবার পকেট থেকে চুরি আর পরেরবার পকেট থেকে পরে গিয়ে। তাই এখন থেকে পকেট বিহীন জামা পড়ি।
একটা পানিতে ভিজেছে।
দু'টা ছিনতাই।
একটা পকেটমার।
শেষেরটার কি হয়েছে জানিনা।
মন খারাপ করবেন না। আপনার রেকর্ড আমার থেকে তো অন্তত ভাল!
নহক
স্বভাবে খুব গোছানো হলেও 'চাবি' আর 'চশমা' এ দুটো হারানোতে আমার বদনাম আছে!
আহ্, হারিয়ে যাওয়া...
রোজ সকালে একবার করে ভাবি; সব ছেড়েছুড়ে কোথাও পালিয়ে যাবো! হায়,
"আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই/
কিচ্ছু করার নেই"
মন ভালো হয়ে যাক, ভালো হোক পরীক্ষাও...
--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আহ চশমা। একসময় দিনে দু'বার হারাতাম। এখন পড়তে হয়না, আর হারানোও হয়না।
নহক
হারানোর লিস্টি বেশ সমৃদ্ধ।
এটা একদিকে ভালোই মনে হয়। না হারানো পর্যন্ত আমরা কোনকিছুর মূল্য দিতে শিখিনা।
নিজেকে না হারিয়ে বসলেই হলো।
পরীক্ষার জন্য শুভ কামনা।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
যে হারানোর পর ও মূল্য দিতে পারেনা, তাকে কি বলবেন?
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
নহক
আমি গতকাল মোবাইল হারাইছি (ওঁয়াওঁয়া)।
এখন ফেসবুকে সবার নাম্বার চাই। কেউ দেখি পাত্তা দেয় না
বকা খাই নাই। নতুন মোবাইলের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে
সমবেদনা। হারালেন কিভাবে ?
আমি সব নাম্বার খাতায় লিখে রাখি।
নহক
দারুন লাগলো আপনার লেখা পড়ে, হাড়ানোর লিস্ট ও হাড়িয়ে গেছে পড়ে আমি হাসতে হাসতে শেষ। আমিও খুবই মনভুলো আপনার মত, সব কিছুই ভুলে যাই, খুব ভাল লাগল লেখাটি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
হাসতে হাসতে শেষ? হুমমম.......
*দীর্ঘশ্বাস*
ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
নহক
নতুন মন্তব্য করুন