১.
আমার দুই ছেলে, দুই মেয়ে, তারা আমার কল্পনার জগতে বাস করে।
বড় মেয়ের নাম রূপকথা।
তারপর দুই পিঠাপিঠি ভাই, যাফি আর ওয়াফি।
আরেক মেয়ে সবার ছোট, নাম তার শুকতারা।
এ চারজনকে নিয়ে কল্পনায় আমার বোকার সংসার।
২.
ক্লাস এইটে পড়ি তখন। একদিন হটাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, বিয়ের পর আমার প্রথম সন্তানটি হবে মেয়ে, তার নাম রাখব রূপকথা।
কিভাবে যেন ব্যাপারটা মাথায় গেঁথে গেল। ছোট মেয়ে দেখলেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি। ভাবি আমার মেয়েটি কেমন হবে, কেমন হলে ভাল হয়।
এভাবে কয়েক বছর চলে গেল।
দশম শ্রেণীর মাঝামাঝি, প্রি-টেস্ট চলছে। একদিন মনে হল একটি মেয়েতে আমার হবেনা, আমার আরো চাই! জনসংখ্যা নীতিকে কাঁচকলা দেখিয়ে ঠিক করে ফেললাম, আমার আরো দু'টো ছেলে আর একটি মেয়ে হবে। তাদের নামও ঠিক করে ফেললাম!
সেদিন নিজের কান্ডে অনেক হেসেছিলাম আমি। যে বয়সে ছেলেরা স্বপ্নে রাজকন্যা তৈরি করে সে বয়সে আমি আমার ছেলে মেয়ে কয়টা হবে, তাদের নাম কি হবে, দেখতে কেমন হবে ইত্যাদি ভাবছি। হায়রে বোকা!
৩.
পাগলামিটা আজকাল অনেক বেড়েছে।
বাচ্চাদের দেখলেই দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে, আমজাদ পীরের হাতে রূপকথারা পড়লে কি হত ভেবে শিউড়ে উঠি আর যখন হাতে কোন কাজ থাকেনা তথন কল্পনার রাজ্যে ডুব দেই।
যাফিকে গল্পের বই পড়ে শোনাই, ওয়াফির পিছে পিছে ছুটে বেড়াই সারা ঘর, ছোট্ট শুকতারাকে কোলে করে ঘুম পাড়িয়ে দেই, আর তারপর বসে বসে শুনি রূপকথার গল্প।
নিজের পাগলামিতে নিজের অনেক হাসি পায়। পাগলামিটা ঝেড়ে ফেলা উচিত জানি কিন্তু একদম ইচ্ছে করেনা। ভীষণ নিঃসংগ আমি, ওদের জন্য অসহ্য একাকিত্বটা তেমন গায়ে লাগেনা, তাছাড়া...
হারিয়ে যাওয়া রূপকথার জন্য দুঃস্বপ্ন দেখার চেয়ে নতুন রূপকথার গল্প শোনা ভাল।
নহক
ঢাকা সেনানিবাস
২৩.১১.২০১০
মন্তব্য
- হা হা হা
মজা লাগলো পড়ে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিকাছে...
আরেকটু নিয়মিত কী হতে পার না ?? আর অন্যদের ব্লগে মন্তব্য করাটাও কিন্তু জরুরী। নয়তো তোমায় চিনে নিতে সকলের দেরী হবে...
_________________________________________
সেরিওজা
ভাইয়া ইয়ার ফাইনাল চলে কলেজে। পরীক্ষার পর নিয়মিত হত চেষ্টা করব। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
নহক
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
হা হা মজার ব্যাপার। তবে আমার মনে হয় নিজের মেয়ে থাকার চেয়ে ভাগ্নি থাকা বেশি সুবিধার। প্রথম ভাগ্নি প্রায় মেয়ের মতই। লাভের মধ্যে আপনার ডাইপার পালটানো লাগছে না, গোসল করানো লাগছে না, কাঁথা ধোয়া লাগছে না। বাকি পুরা সময় তো পিচ্চি আপনার কোলেই আছে
ভাগ্নিরা বড় হয়ে গেছে। দু'টাই টু-থ্রিতে পড়ে, ফোন করলে জানতে চায় নববর্ষে কি কিনলাম, ''মামি'' কে নিয়া কই ঘুরতে যাব। সব পেঁকে গেছে।
আমাদেরকে বেক্কল বোঝান? বলেন একেকটা মেয়েকে দেখে সেই মেয়েরে বিয়ে করলে আপনার ছেলে মেয়ে কী করম হবে সেটা ভাবতেন আপনি
প্রথমে একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে (একপক্ষ) ভেবেছেন একটা মেয়ের কথা
তারপর আরো যতবার যত মেয়ের প্রেমে পড়েছেন ততবার তাদের ছেলেমেয়ের কথা ভেবেছেন
০২
ধানাই পানাই ছেড়ে কাচ্চাবাচ্চার মায়েদের কথা বলেন
জ্বী না স্যার, আপনার ধারণা ভুল।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
নহক
রূপকথা আর শুকতারা - সুন্দর নাম!
ধন্যবাদ।
হাহা! ভালো লাগল ।
আমার সাথে কিঞ্চিৎ মিল আছে আপনার! আমিও আমার মেয়ের কথা মাঝে মাঝেই ভাবি!
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
বাহ্ আমার মত মানুষ আছে তাহলে। ঃপ
নহক
শৈশবে আমার কাল্পনিক বন্ধু ছিলো। অনেকেরই থাকে শুনেছি। কাল্পনিক ছেলে-মেয়ের কথা আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম।
আপনার লেখার ঢঙে এক ধরনের অকপট সারল্য আছে যেটা আমার ভালো লাগে। নিয়মিত লিখুন।
অফটপিকঃ আপনি কি এখনো মুঠোফোনে লেখেন? টাইপোগুলো (হটাৎ > হঠাৎ, শিউড়ে > শিউরে) দেখে মনে হলো।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
হুমম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। হ্যাঁ, এখনো মুঠোফোনে লিখি, পিসিতে বসার সুযোগ তেমন হয়না। সামনে আরো সচেতন হব বানান নিয়ে।
নহক
নতুন মন্তব্য করুন