গল্পটা সায়েন্স ফিকশন সংকলনের জন্য বিপুল উৎসাহে লেখা। লেখার পর দেখি ফিকশন আছে সায়েন্স নাই। শৈশব কেটেছে টুকি ও ঝায়ের গল্প পড়ে । সেই প্রভাব ঝেড়ে ফেলে নতুন কিছু লিখতে যথেষ্ট প্রতিভাবান হওয়া দরকার। তাছাড়া সংকলনের জন্য চমৎকার সব গল্প জমা পড়বে। আমার এই দরিদ্র না-সায়েন্স ফিকশনটা তাই এখানে দিয়ে দিলাম।
.............................................
বাচ্চাদের নিয়ে ঘরের ভিতরে বসে ছিলো নিমি। বাইরে প্রখর রোদ। বের হওয়া যাচ্ছে না। সন্ধ্যা নেমে আসলে সে তার পাঁচ সন্তানকে নিয়ে বের হবে খাবারের সন্ধানে। খাবারের প্রাচুর্য কখনোই ছিলো না। অনেকটা পরিশ্রম দেয়া লাগে অল্প কিছু খাবার খুঁজে পেতে।
তার উপর রিনু অনেক ছোটো। সে বের হয় না। ফেরার সময় তার জন্যও কিছু খাবার নিয়ে আসতে হয়।
সন্ধ্যা নামতে এখনও অনেক দেরি। রিনু গুটিগুটি পায়ে মায়ের দিকে এগিয়ে আসে।
বলে, -গতকাল তুমি বলেছিলে গল্প শোনাবে।
তা ঠিক। শ্রেষ্ঠত্বের গল্প দিয়ে ওকে গল্প বলা শুরু করা দরকার। এ বসতির সব ছেলেমেয়েরাই এসব গল্প শুনতে শুনতে বড় হয়ে ওঠে। চিন্তা করে নিমি কোথা থেকে শুরু করবে।
অনেক অনেক বছর আগের কথা। আমাদের পৃথিবীটা তখন অন্যরকম ছিলো। খাবারের কোনো অভাব ছিলো না। সংখ্যায় ছিলাম আমরা অনেক বেশি। অনেক দূর থেকে দেখলে পৃথিবীকে নীল রঙের বলে মনে হতো। আমিও তোমার মত নীল গ্রহের গল্প শুনেছি মায়ের কাছে।
খাবার থাকলেও শান্তি ছিলো না। তখন আমরা একা ছিলাম না। আরও অনেকে ছিলো। সবার সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিলো না। যুদ্ধ আর মারামারি লেগেই থাকতো। প্রায়ই ওরা আমাদের হত্যা করতো, ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দিতো। সেসব অত্যাচার মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না।
রিনু ভয় পেয়ে বললো, -কেনো ওরা এমন করতো ?
নিমি হাসে, "সেটাই নিয়ম ছিলো। শক্তিশালীরা দুর্বলদের পছন্দ করে না।"
-তাহলে তো আমরা এখনই ভালো আছি।
"হ্যা, ওরা দুর্বলদের সহ্য করতে পারতো না। নিজেদের মধ্যে যারা অসমর্থ তাদেরকেও ওরা মেরে ফেলতো। আমরা পারতপক্ষে ওদের সামনে যেতাম না। লুকিয়ে থাকতাম নিজেদের মত।
একদিন অনেক বড় যুদ্ধ লাগলো। ওরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে থাকলো। একদল এসে অদ্ভুত একটা যন্ত্র রেখে গেলো। যন্ত্র থেকে তৈরি হতে থাকলো ধূসর বর্ণের গাছ। গাছটা দেখতে ছিলো ভীষণ বড় ব্যাঙের ছাতার মত।
কিছুক্ষণের মধ্যে সারা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেলো। সেই গাছের বিকিরণে সবাই অন্ধ হয়ে গেলো, চামড়া খসে পড়লো, সবুজ গাছগুলি হয়ে গেলো কাঠের টুকরা, সব পাতা ঝরে পড়লো, পানি দূষিত হয়ে গেলো। আমরা আত্মরক্ষার্থে আশ্রয় নিলাম মাটির নীচে। অনেকদিন আর বের হতে পারলাম না। সেখানেই আমরা যুগ যুগ ধরে বংশ বিস্তার করলাম।
মাটির উপরে আর কোনো মানুষ বেঁচে থাকলো না। মানুষ তো দূরে থাক অল্প কিছু জীবাণু ছাড়া আর কারও অস্তিত্ব থাকলো না। খাবারের অভাব দেখা দিলো। এসব হাজার হাজার বছর আগের কথা। পৃথিবীতে এখন জৈব খাবার আবার বাড়তে শুরু করেছে।"
রিনু অবাক হয়ে বলে উঠলো -বাহ! এটাকে কি শ্রেষ্ঠত্বের গল্প বলে নাকি?!
"মানুষ ছিলো সৃষ্টির সেরা জীব। কোনো প্রাণী যখন নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংস করে সে আর সেরা থাকে না রিনু। পৃথিবীতে এখন আমরাই শ্রেষ্ঠ।"
গল্প করতে করতে সন্ধ্যা নেমে আসলো।
একদল পোকা মাটির নীচ থেকে বের হয়ে এলো খাবারের সন্ধানে।
মেয়ে
মন্তব্য
আমার মনে হয় মজাই হয়েছে গল্পটি। আপনি সংকলনে দিয়ে দেখতে পারতেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
সাধু! সাধু! শেষের টুইস্টটা আগে বুঝতেই পারি নাই। এরকম এক লাইনের টুইস্ট আমি বড় ভাল পাই
লেখাটা ভাল্লাগসে।
এইরকম লেখা কি সাইফাইয়ের অন্তর্গত ??
_________________________________________
সেরিওজা
সুন্দর!
--আরিফ বুলবুল,
----------------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন