মধ্যবয়স্ক আসগর সাহেব আর পাঁচটা বাঙালি কেরানির মতই। অর্থাৎ অফিসে উপরওয়ালার ভয়ে আর ঘরে বৌয়ের ভয়েই কেটে যায় তাঁর দিনগুলো। তিনি প্রচণ্ডরকমের শান্তশিষ্ট পত্নীনিষ্ঠ – আপিসের ছোকরা কেরানিরা যখন তাঁর আশপাশে বসেই কম্পিউটারে স্বল্পবসনা শ্বেতললনাদের ছবি খুলে লুল ফেলে তখন তিনি সেসব দিকে তাকিয়েও দেখেন না, এমনকি বাথরুম যাবার সময়ে যে ওই দুরের চেয়ারের হোসেন সায়েব একটু ছোট্ট করে উঁকি দিয়ে যান তাও তিনি করেন না কখনও। তবুও তাঁর বিবি তাঁকে সন্দেহ করতে ছাড়েন না। বসের সেক্রেটারি বা আপিসের বন্যা ম্যাডাম কিংবা হাসিবের বোন কারুর কথা উঠলেই এমন সব প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে থাকেন তাঁকে যে আসগর সাহেব বাড়িতে আপিসের কোনো কথা বলাই ছেড়ে দিয়েছেন। তাতেও বিবির প্রাণে শান্তি নেই, এখন সন্দেহ করেন চুপে চুপে কিছু চলছে কি না।
আজকে অফিসে কিঞ্চিৎ গোলমাল হয়ে গেছে। বসের কানে বোধহয় উঠে গেছে ব্যাপারটা, এসে সবাইকে একচোট হুঁশিয়ারি গেছেন তিনি। অফিসের সময় নষ্ট করে অন্য কিছু করা উচিত নয়, ইন্টারনেটের মত মূল্যবান জিনিসের অপব্যবহার করলে পস্তাতে হবে, যুবকদের আরো দৃঢ়চরিত্র হতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। সন্দেহ করা হচ্ছে, ম্যানেজার এবং দ্বিতীয় বার বিপত্নীক ফজলুল সাহেব, যাঁকে আড়ালে ছেলেছোকরারা লুল সাহেব বলে ডাকে, কারণ তিনি বসের সেক্রেটারি দিওয়ানা ম্যাডামের প্রতি লুল ফেলে থাকেন বলে জনশ্রুতি আছে, তাঁকে; তিনি একবার ছবি দেখবার বাসনায় এসে ভুঁড়ি চুলকাবার অছিলায় পাশে দাঁড়ালে তারা চট করে ছবি সরিয়ে দেয়, এবং তার পরেই নাকি তিনি গিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বসের কানে কথাটা তোলেন।
বিকেল বেলায় হঠাৎ ধুম বৃষ্টি, ভিজে একশা হয়ে গম্ভীর মুখে বাড়ি এলেন আসগর সাহেব। একটু যে চা পাব এসে তারও উপায় নেই, বউ বাজার করতে মিলন মার্কেটে গেছে। ছাতার মাথা, হঠাৎ বাজার করতে যাবার কি দরকার ছিল? বাজার মানেই তো গুচ্ছের টাকা ধ্বংস করে শাড়ি কাপড় খাটের চাদর হ্যান ত্যান খরিদপত্র। মেয়েমানুষ মানেই ঝামেলা, ফেয়ারনেস-ক্রীম মাখা চাঁদবদন দেখে ঠকেছ কি মরেছ, ইত্যাদি গজরগজর করতে করতে টিভি খুললেন। একটু পরেই শুরু হবে ‘সোহাগ চাঁদ বদনী ধনি’ নৃত্য প্রতিযোগিতা। এইটা নিয়ম করে সপরিবারে দেখেন তাঁরা। কারণ এতে তাঁর বিবিজানের ভাই আর বোন অংশগ্রহণ করে। রোশনি বেগমের বাপের বাড়ি অনেক দূরে, এজন্য গত কয়েকমাস ধরে তাঁর ভাই চমকু আর বোন শিলু শহরে তাঁদের বাড়িতেই আছে। শালাকে আদৌ পছন্দ করেন না আসগর সাহেব, চোঙামার্কা জিন্সের প্যান্ট আর জেল দেওয়া খোঁচা খোঁচা চুলের ল্যাগব্যাগে ছোঁড়াকে দেখলেই মেজাজ গরম হয়ে যায় তাঁর। সে দুলাভাই দুলাভাই করে বারকয়েক ডেকেও বিশেষ পাত্তা পায় নি, এখন দিদির থেকেই পান-সিগারেটের পয়সা চেয়ে নিয়ে যায়। দিদিরও ভায়ের প্রতি অগাধ স্নেহ, সারা শহরে তাঁর ভায়ের মত হিরেরর টুকরো ছেলে নাকি আর দুটি নেই, আর তাঁর মতে শহরের সব মেয়েদেরও নাকি তাই ধারণা। শুনে খুবই হাসি পায়, কিন্তু বৌয়ের সামনে হাসার সাহস পান না আসগর সাহেব। বরং শিলু মেয়েটাকে ভালই পান তিনি। আধুনিক সাজপোষাক করলেও শান্ত মিষ্টি মেয়ে, দুলাভাইকে খুব সম্মান করে কথা বলে সে, বরং একটু বেশিই সম্মান করে, একটু দুষ্টুমিষ্টি রসিকতা করলে বরং মন্দ হত না, যাকগে; অনুষ্ঠানে নাচেও ভালই, হতচ্ছাড়া চমকুর মত চ্যাংব্যাঙে নাচ নয়। পর্বের পর পর্ব ওরা এগিয়ে যাচ্ছে কেবলমাত্র শিলুর জোরেই, ভাবেন তিনি।
হুড়মুড় করে রোশনি বেগম ঢুকে পড়েন ঘরে বিরাট এক প্যাকেট হাতে। সেদিকে তাকিয়েই মনটা উদাস হয়ে যায় আসগর সাহেবের; বিবিজান বলে ওঠেন, ‘কি, শুরু হয়ে গেছে নাকি? দেরি করে ফেললাম?’ তিনি বলেন, ‘না না, শুরু হয়নি তো। আর তাছাড়া শিলুদের নাচ তো গত সপ্তাহেই হয়ে গেল, আজ তো জাহানারা’দের দলের নাচ।’ প্রতি দলে দুজন করে, একটি ছেলে একটি মেয়ে; আধ ঘন্টার অনুষ্ঠানে প্রতিটি দল দশ মিনিট করে পায়। শিলুরা খুবই প্রশংসা পাচ্ছে, প্রথম, দ্বিতীয় রাউন্ড পার করে এখন কোয়ার্টারফাইনাল রাউন্ডে উঠেছে; মনে করা হচ্ছে তারা ফাইনালে যাবেই, আর তাদের মূল প্রতিযোগী ধরা হচ্ছে ওই জাহানারা’দের দলকেই। জাহানারা মেয়েটিকেও দেখতে শুনতে ভাল, ভাবেন তিনি; যদিও তাঁর বিবির মেয়েটিকে একদমই পছন্দ না। ‘ছেমরির গুমর কত! দেখতেই বা এমন কি চাঁদবদনী রে তোকে? আমাদের শিলুকে রেখে তোর পেছনেই এত লোক ভাল ভাল করে কেন বুঝিনা বাপু’ প্রায়ই বলেন তিনি। ব্যাপার নাকি এইরকম, একদিন অনুষ্ঠানের শেষে এর সঙ্গে একটু ঘেঁষাঘেঁষি করতে গেছিল চমকু, পাত্তা না দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে জাহানারা। সেই থেকেই রোশনি বেগমের তার উপর রাগ।
ভাই-বোনও বাড়ি ফিরে এসেছে ততক্ষণে, তাদের প্রতিযোগীরা কেমন করে তাই দেখতে বসেছে। দেখা শেষ হলে খেতে বসেন সবাই। খেতে খেতে ‘শিলুদের জন্য ভোট দিয়েছ তো?’ প্রশ্ন করেন রোশনি বেগম। এই অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোনে এসএমএস করে পছন্দের দলকে ভোট দেওয়া যায়, চমকু নিজেই তাঁর মোবাইল থেকে সেই এসএমএস পাঠিয়ে দিয়েছে। ‘আর কি করে ভোট দেব, ওরা তো দিয়েই দিয়েছে’ বলেন আসগর সাহেব। বিবি বলেন, ‘আরো কিভাবে জানি দেওয়া যায়, চমকু বলছিল... ইন্টারনেট করে না কি যেন... কই রে, বল না ওনাকে?’ সে বলে, ‘হ্যাঁ দুলাভাই, সেদিন খবর পেলাম, ওদের ওয়েবসাইটে গিয়েও নাকি ভোট দেওয়া যায়; আমি সাইবার কাফেতে গিয়ে তো দিয়েই এসেছি, আপনিও আপনার অফিস থেকে আমাদের নামে একটা ভোট দিয়ে দিন না?’ আসগর সাহেবের সঙ্কোচ হয় অফিস থেকে এসব করতে, আপত্তি জানান তিনি, কিন্তু তাঁর বিবি রেগে ওঠেন, ‘কেমন পুরুষ মানুষ তুমি? ঘরের লোকের জন্য এটুকু করতে পারো না? কি জন্য ছাই অফিস যাওয়া রোজ, যদি এইটুকু সাহায্যই না করতে পারো ওদের?’ ইত্যাদি আরো নানারকম টকঝাল ধেয়ে আসে তাঁর দিকে। কিছুই বলতে পারেন না তিনি, মনে মনে গুমসো হয়ে শুতে যাবার সময় ঠিক করেন, প্রতিবাদ করে লাভ নেই, বরং কাল অফিস থেকে ফিরে বলবেন, ‘হ্যাঁ, করে দিয়েছি’; কে আর দেখতে যাচ্ছে আসলে করেছেন কি না।
কিন্তু গন্ডগোল করে দিল শিলুই। সকালবেলায় অফিসে বেরনোর সময় এমন মিষ্টি করে ‘একটু দেখেন না, দুলাভাই’ বলল, যে গত রাতের পরিকল্পনা আর রাখতে পারলেন না তিনি। ঠিক করলেন, অফিস থেকে একটু ফাঁক খুঁজে কাজটা করে দিতেই হবে। অফিসে পৌছে সেইমত সুযোগ খুঁজছিলেন তিনি। গতদিন বস ধাতানি দিয়ে গেছেন, আজকে তাই ছেলেছোকরারা আর জটলা করছে না; ইন্টারনেট খুলে অবশ্য এদিক-ওদিক চাওয়াচাওয়ি অল্প হলেও চলছে। ‘জোয়ান বয়সের ধর্ম, যতই হোক’, ভাবেন তিনি।
লাঞ্চে যখন প্রায় সবাই উঠে গেছে, এমনকি ম্যানেজার লুল সাহেবও, তখন ফাঁক পেয়ে পকেটে রাখা চিরকুটটা বার করেন তিনি। গোটা গোটা হাতের লেখায় শিলু সেই অনুষ্ঠান কোম্পানীর ই-ঠিকানা লিখে দিয়েছে। কাগজটা হাতে নিয়ে একটু ভাবেন তিনি। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। বৌয়ের লেখা বাজারের ফর্দ পড়ে উদ্ধার করতে দম বেরিয়ে যায় তাঁর, মনে ভাবেন। তারপর ঘেঁটেঘুঁটে বের করেন তাদের ওয়েবসাইট। খুঁজে পেয়ে যান ভোট দেওয়ায় জায়গা; ওই তো ছবিতে উজ্বল নীল চুড়িদার পরা শিলুর হাত ধরে নাচছে একটা হাকুচ কালো পোষাকের চমকু। শিলুকেই ফোকাস করেছে ছবিটায়, কি সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। ভাবতে ভাবতে তাদের নামের পাশে টিপে দেন তিনি, আর তক্ষুণি পেছন থেকে শুনতে পান, ‘কি, ব্যস্ত নাকি?’ চমকে পিছনে ফিরে তাকিয়েই দেখেন, লুল সাহেব; কখন খাওয়া সেরে এসে দাঁড়িয়ে দাঁত খোঁচাচ্ছেন। ‘না না, ব্যস্ত কেন, ইয়ে, মানে, এই তো, লাঞ্চ করছিলাম...’ ব্যস্ত হয়ে বলে ওঠেন। ‘বটে? বেশ বেশ...’ বলতে বলতে চলে যান ম্যানেজার সাহেব, চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। ব্যাটা নিশ্চয়ই এখন গিয়ে বসের কানে লাগাবে। এই হতচ্ছাড়া চমকুর দুর্বুদ্ধিতেই এমন গর্দিশ; মেজাজটাই খিঁচড়ে ওঠে তাঁর। বস কালকেই অমন শাসানি দিয়ে গেছেন, আজকে নিশ্চয়ই বড়সড় কিছু করবেন। আর ভাবতে ভাবতেই দেহবল্লরী দুলিয়ে দিওয়ানা ম্যাডাম এসে বলে যান, ‘আপনাকে বস চেম্বারে একটু ডাকছেন।’ ততক্ষণে সবাই খাওয়া সেরে এসে গেছে, এই কথায় সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। বড়ই উদ্বিগ্ন হয়ে চেম্বারের পথ ধরেন তিনি।
যেতে যেতে তিনি ভাবেন, ভুজুংভাজুং দেওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। লুল ব্যাটা নিশ্চয়ই আরো কয়েক পরত রঙ চড়িয়ে ঘটনাটা ব্যাখ্যা করেছে। যা সত্যি তাই বলবেন, তারপর যা থাকে কপালে। ঘরে ঢুকে দেখেন, বস উত্তেজিত ভাবে দাঁড়িয়ে; তাও কি ভাগ্যি ম্যানেজার হতভাগা ঘরে নেই। বস বলে ওঠেন, ‘এসব কি শুনছি আসগর সাহেব? আপনি নাকি অফিসের কম্পিউটারে বসে মেয়েদের ইয়ে ছবি দেখছিলেন? ছি ছি, এমন সিনিয়ার কর্মচারী আপনি, আপনি এরকম করলে বাকিরা কি করবে?’ লজ্জায় গুটিয়ে যান আসগর সাহেব, তবুও মান বাঁচাতে তড়িঘড়ি বলে ওঠেন তিনি, ‘না স্যার, আপনি যা শুনেছেন তা ঠিক নয়। আমি মোটেও মেয়েদের ছবি দেখছিলাম না স্যার! আমি মোমিন মুসলমান, ঘরে বিবি রয়েছে, অন্য মেয়েদের দিকে নজর দেব কেন স্যার? দোহাই আপনার, আমাকে বরখাস্ত করবেন না, তাহলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে স্যার!’ আবেগভরে বলে ওঠেন তিনি, ফিল্মে দেখা নায়িকার দুঃস্থ বাপের সংলাপগুলোই যেন মনে এসে যায় তাঁর। বস বলে ওঠেন, ‘বটে? মেয়েদের ছবি দেখছিলেন না আপনি? ম্যানেজার সাহেব নিজে এসে বললেন যে আমায়? দাঁড়ান, ডাকি তাঁকে...’
ডাক পেয়েই দ্রুত হাজির হন লুল সাহেব, একটা কিছু ঘটাতে পারার আনন্দ তাঁর চোখেমুখে ঠিকরে বেরোচ্ছে। হুড়হুড় করে বলে ওঠেন তিনি, ‘সত্য কইছি স্যার, ইনি মেয়ের ছবিই দেখছিলেন! একবর্ণও মিথ্যা না। আমি দুপুরের নাস্তা সেরে এসেই দেখি ইনি কম্পিউটারে বসে নীল ছবি, থুড়ি, নীল পোষাক পরা মাইয়ার ছবি দেখছিলেন। আমারে দেখেই সরায়ে নিলেন। জিজ্ঞেস করে দেখেন!’ প্রায় আর্তনাদ করে ওঠেন আসগর সাহেব, ‘না স্যার, আমি মোটেও নীল পোষাক পরা মেয়ের ছবি দেখছিলাম না! ওটা তো আমার শালী শিলুর ছবি, ‘সোহাগ চাঁদ বদনী ধনি’ প্রতিযোগিতার জন্য। আমার শালা-শালী ওখানে নাচে, বলতে নেই, ভালই নাচে, এত করে বলল ইন্টারনেটে ওদের ভোট দিতে, তাই একটা ভোট দিয়েছি মাত্র। আর কিছু করিনি স্যার। ঈমানে বলছি স্যার, বিশ্বাস করুন। ভুল হয়ে গেছে, আর কখনও অফিসে বসে এসব করব না!’
বস ভুরু কুঁচকে বলেন, ‘তাই নাকি? ঠিক বলছেন? দেখান তো দেখি, কি দেখছিলেন?’ তড়িঘড়ি বসের কম্পিউটারেই খুলে দেখান আসগর সাহেব; বস লুল সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কি, ইনি ঠিক বলছেন? এই জিনিসই আপনি দেখেছেন ওনার কম্পিউটারে?’ বসের সুর যেন কেমন একটু পালটে গেছে মনে হয়, আমতা আমতা করে মানেজার সাহেব বলেন, ‘জি আজ্ঞে, তাই তো মনে হচ্ছে... তা ইনি অফিসে বসে এইসবই বা কেন করবেন বলুন? আমি তো দেখেই আপনাকে জানাতে এলাম... এখন যা ভাল বুঝেন...’ এবার বসের উত্তেজিত হবার পালা, তিনি প্রায় চেঁচিয়ে ওঠেন, ‘আরে, আপনি এই শিলু ম্যাডামের শালী, মানে ইয়ে, ইনি আপনার শালী? আমরা সবাই এনার নাচ খুব পছন্দ করি, মাশাল্লা ইনিই যেন ফাইনালে ওঠেন... আপনি এত দিনে ভোট দিলেন কেন? ছি ছি... আমি তো কবেই দিয়ে দিয়েছি।’ হালচাল দেখে মুখ ঝুলে যায় লুল সাহেবের, বস তাঁকে অনুরোধ করেন, ‘ম্যানেজার সাহেব, ধন্যবাদ আপনাকে, এখন একটু বাইরে যাবেন?’
বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে মিলন মার্কেট থেকে শিলুর জন্য একটা আকাশী চুড়িদার কিনে বাড়ি ফেরেন আসগর সাহেব; বস কাল তাঁর বাড়িতে চা খেতে আসছেন...
কৌস্তুভ
উৎসর্গঃ ধুগোদা’কে, আবার কাকে?
মন্তব্য
- শালীর গল্প শুনলেই বদ্দার বলা একটা পুরান ঢাকাইয়া চুটকির লাইন মনে পড়ে যায়। "ছালি হুইবো কই... ছালি হুইবো কই!"
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে জগতে যতো যার শালী আছে, তাদের দিকে তাকালেই এই অধমের মনহুঁশ খোমাখানা শালীদায়গ্রস্ত দুলাভাইয়ের মনের দেয়ালে বাইড়া বাইড়ি করতে শুরু করবে। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়, যেভাবেই হোক!
কিন্তু এই ব্যাটা অফিসের বস এরকম লুল ক্যান? শালীর কথা শুনেই চা খাইতে যাওয়া লাগবে নাচতে নাচতে! হালায় লুলের লুল।
তা বলছিলাম কি বস, শিলুর একটা ফটুক মটুক পাওয়া যাবে? তেমন কিছু না, এমনিই আর কি... হে হে হে
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বদ্দার চুটকি শুনতাম চাই... বদ্দার চুটকি শুনতাম চাই..
দুনিয়ার বেনিয়মই এই দাদা, উপরওয়ালা লুল হইলে অন্যায় নাই, কর্মচারী লুল হলেই মুশকিল... তবেই এই বস হয়ত ব্যাচেলর বেচারা... আমি জানি না, আসগর সায়েবরে জিগায়ে দেখেন।
শিলুর ফটুকও তাঁর কাছেই মাঙেন। আর নয়ত ওই নৃত্য কোম্পানীর সাইটে মিলতে পারে... তবে আমার জাহানারার দিকে নজর দিয়েন্না।
পড়নের লিগ্যা ধইন্যবাদ...
কৌস্তুভ
ইয়াদ কইরা গেলাম .... তয় ইয়াদ করার ধুসর গোধুলীয় মাজেজা ক্লিয়ার হৈল না ....
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
লিঙ্ক দিবার লগে অনেক ধইন্যাপাতা বদ্দা।
কৌস্তুভ
হাহাহহা......সেরকম মজা লাগল!
তবে লুল শব্দটার প্রয়োগ একটু বেশী মাত্রায় হয়ে গেছে সম্ভবত! এধরনের ইউনিক শব্দ বেশী ব্যবহার করলে 'রস' কিছুটা হারিয়ে যায় মনে হয়!
যাই হোক, এছাড়া আর সবকিছুই খুব ভাল লেগেছে - খুবই সাবলীল লেখা!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
লুল বেশি ফেলে দিসি বলতাসেন? হায় আল্লা, আমার মত সুপার-সচ্চরিত্রের নামে এমুন অপবাদ?
মন্তব্যের জন্য অনেক ধইন্যবাদ, সমালোচনা বড়ই কাজে লাগে গরীব লেখকের...
কৌস্তুভ
গল্প মজা লাগলো। 'গর্দিশ' মানে কি?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দুর্দান্ত। গর্দিশ মানে দুর্ভাগ্য।
কৌস্তুভ
আপনার লেখা এই প্রথম পড়লাম।
ভালো লাগলো।
লেখালেখি চলতে থাকলে আরো ভালো হবে, লেখায় সহজাত রস আছে বলেই মনে হলো।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
ধন্যবাদ মর্ম। আপনার উৎসাহে প্রাণে বল পেলাম। লেখালিখির চেষ্টা তো চলবেই।
কৌস্তুভ
বিয়া করি নাই, আশা করি করবও না। শালীর মর্ম বুঝবোও না। কিন্তু কাহিনী ভাল লাগছে। বউরা এখনও এমনি আছে।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
শালীর মর্ম বুঝতে হলে ধুগোদা'র কাছে কোর্স করেন, বিয়ার দরকার নাই। বিয়া কি ছাই আমিই করসি নাকি।
পড়নের লগে ধইন্যবাদ।
কৌস্তুভ
"দেখে শুনে বুঝিলাম করি তালিকা,
সব চেয়ে প্রিয় মোর ছোট শ্যালিকা"
-গোলাম মোস্তফা
আমার শ্লি নাই। ((
---মহাস্থবির---
হে হে... কবি ঠিক কয়েছেন।
এখানে যারা কথাবার্তা কইছেন বেশিরভাগেরই তো দেখি শালী নাই... চলেন যোগাড় করনের ব্যবস্থা দেখি...
কৌস্তুভ
মজা পেলাম পড়ে। খুব সাবলীল লেখা।
তার্কিক
ধন্যবাদ তার্কিক।
কৌস্তুভ
আপনি এই ধাঁচের লেখা আগে আরো লিখেছেন কিনা জানি না, এটা ত দূর্দান্ত লাগল। কিছু অভিনব শব্দের ব্যবহারের জন্য লেখাটা আরও প্রাঞ্জল হয়ে উঠেছে, যেমন- 'চমকু', 'লুল', 'চ্যাঙব্যাঙে'। সাবলীল ভাষায় লেখা আধুনিক রম্যগল্প- আবার ট্র্যাডিশনাল ভাবটাও একেবারে ফেলে দেয়া হয়নি।
এরকম স্টকে থাকলে আরো ছাড়ুন।
ধন্যবাদ ফারাবী। আপনার বিশ্লেষণ পড়ে আপ্লুত হলাম।
শব্দের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে সহমত, যে নতুন ধাঁচের শব্দ, বিশেষতঃ কথ্য শব্দ, ব্যবহারে লেখা স্বাদু হয়। তবে এটা খানিকটা আপেক্ষিকও বটে - কলকাতায় যে ধরণের সেমি-স্ল্যাং সবাই কথায় কথায় ব্যবহার করে ঠিক সেগুলোই হয়ত ঢাকায় ব্যবহার হয় না, বা উল্টোটা।
আমি অতিথি লেখক মাত্র, কটাই বা আর লেখা লিখতে পেরেছি... তবে আরেকটা রম্যরচনা লিখেছিলাম, পড়তে পারেন: বিমান সচলায়তন।
কৌস্তুভ
লেখাটা পড়লাম, মন্তব্যও দিছি।
অফটপিক- আচ্ছা 'কৌস্তুভ' শব্দের মানে কি? আপনার নাম দেখলেই আমার এই কথা মনে হয় খালি। তাই জিজ্ঞেস করা।
আমাদের পরিবারে এখন আর ধার্মিক কেউই নাই, তবে পৌরাণিক বা বৈষ্ণব-ঘেঁষা নাম দেবার অভ্যাস চলে আসছে। কৌস্তুভ একটি পৌরাণিক মণি'র নাম, যেটা বিষ্ণু পরতেন। অর্থ সেরকমভাবে কিছু না, proper noun আরকি।
আপনার অ্যাকাউন্ট সক্রিয়, কিন্তু আপনি সেটি ব্যবহার করছেন না। অনুগ্রহ করে মেইল চেক করুন, সক্রিয় অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে পোস্ট ও মন্তব্য দিন। ধন্যবাদ।
হা হা হা
মজা লেগেছে। আমার ভায়রা ভাই ধুগোর দেখি কোরবানীর উটের দশা! সবাই খালি মস্করা করে।
ভায়রা ভাইকে নিয়ে মস্করা করায় তীব্র প্রতিবাদ। গল্পে উত্তম জাঝা।
ধইন্যবাদ দ্রোহীদা।
আজ্ঞে ধুগোদারে লইয়া তো মস্করা করি নাই। গল্পটা শুধু তেনার নামে উৎসর্গ করা...
কৌস্তুভ
দেরীতে পড়লাম দেখি...
গল্প মজার হয়েছে, তবে টুইস্টটা শেষে টেনে নিয়ে গেলে আরেকটু ভালো হতো...
_________________________________________
সেরিওজা
ধন্যবাদ সুহান।
ঠিক বলেছেন, এটা আমিও লেখার পরে উপলব্ধি করেছি যে শেষে বসের ব্যাপারটা আরেকটু বিস্তারিত ভাবে লেখা যেত। এধরণের সমালোচনা খুবই সহায়ক, ভবিষ্যতে আরো পাবো আশা করি।
কৌস্তুভ
নতুন মন্তব্য করুন