গত পর্বের লেখার মূল বক্তব্য ছিলো যে একটি ফন্ট-এর গঠনগত ও ব্যবহারিক সৌন্দর্য নির্ভর করে এর প্রতিটি বর্ণে ব্যবহৃত রং ও স্পেস-এর ভারসাম্যপূর্ণ প্রয়োগের ওপর। প্রথমদিককার টাইপোগ্রাফী ক্লাসগুলোতে আমাদেরকে সেজন্যে খুব বেশি বলা হত আদর্শলিপি বর্ণে ব্যবহৃত স্পেস খুব ভালোভাবে আত্মস্থ করতে । স্পেস নির্ণয়ের জন্যে আমরা কাটা কম্পাস ধরে একই বর্ণের বিভিন্ন অংশের দুরুত্ব তুলনা করতাম, রেখার ঘনত্ব তুলনা করতাম। পরবর্তিতে যখন আমরা নিজেদের মতো করে ফন্ট ডিজাইনের সুযোগ পেলাম তখন সবচে বেশি কাজে দিলো এই স্পেস সৃষ্টির অভিজ্ঞতা। কারণ একটা ফন্ট আরেকটা থেকে আলাদা হয় এই স্পেস-এর তারতম্যের জন্যে।
এই নাগাদ পড়ে আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যে আপনি ফন্ট ডিজাইন করবেন তাহলে আপনাকে কয়েকটা জিনিস নিয়ে বসতে হবে:
১. গ্রাফ পেপার (ইঞ্চিতে ঘর কাটা)
২. স্কেল
৩. কাটা কম্পাস
৪. লিড পেন্সিল অথবা সরু মাথার পেন্সিল
৫. আদর্শলিপির বর্ণমালার প্রিন্ট (গত পর্বে আমরা একটা ছবি দিয়েছিলাম যা ছিল আদর্শলিপি দেখে কপি করা একটি ফন্ট যার মধ্যে কিছু ত্রুটি আছে। তবে এটা দিয়ে শুরু করতে পারেন)
আপনার কাজ হবে প্রিন্ট দেখে প্রতিটি বর্ণ ১ ইঞ্চিতে রূপান্তর করা। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো বর্ণের মধ্যকার স্পেস ও রেখার ঘনত্ব আনুপাতিক হারে পরিবর্তিত হয়। আমার মতো যারা ভিতু ছিল তারা অবশ্য একটা 'চুরি' পদ্ধতি অবলম্বন করতো... প্রিন্ট করার সময় আদর্শলিপি বর্ণগুলোকে ১ ইঞ্চি আকার করে নিতাম। এরপর ওটা দেখেই হুবহুব কপি করার চেষ্টা করতাম। শিক্ষকরা এই পন্থা পছন্দ না করলেও আমাদের জন্যে এটা কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছিলো।
আমার মতে টাইপোগ্রাফী শেখার সবচে কার্যকরী পন্থা এটা। সুতরাং যারা বাংলা টাইপোগ্রাফী শিখতে চান তারা এভাবে শুরু করতে পারেন। এভাবে ১০টা বর্ণ কপি করে যাচাই করে দেখতে পারেন আপনার টাইপোগ্রাফী করার মতো ধৈর্য্য আপনার আছে কি না। আপনার কাজের ছবি তুলে আমাকে মেইল করে পাঠাতে পারেন। অল্প-বিস্তর পরামর্শ হয়তো দিতে পারবো। শুভ কামনা।
nazimuddaula milon
www.lifearoundme.com
মন্তব্য
ডরাইছি!!
মনে হচ্ছে "আঠালো পাছা" না হলে টাইপোগ্রাফি সম্ভব না!
- শুরুতে যতোটা সহজ মনে করেছিলাম, কাজটা তাহলে অতো সহজ না!
আসলে সহজ মনে না হওয়ার আরেকটা কারণ বোধ'য় আমার নিজের ভয়ানক রকমের ধৈর্য্যহীনতা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সিরিজটা দারুণ হচ্ছে। ফণ্ট তৈরীর ব্যাপারে কিঞ্চিৎ আগ্রহ ছিলো অনেকদিনের, কিন্তু কাজ আর কমিটমেণ্টের পরিমাণ হিসেব করে পিছিয়ে গেছি সবসময়ই। এই সিরিজটা পড়ে আবার ইচ্ছে চাঙ্গা হচ্ছে।
একটা প্রশ্ন। টাইপোগ্রাফি শেখা শুরু করারর জন্য আদর্শলিপির স্টাইলটা শেখাটা একটু কঠিন হয়ে যায় না? বাংলায় যদি sans-serif কোন ফণ্ট করা যায়, যেমন ইংরেজি arial এর মত, যেটাতে অক্ষরের বিভিন্ন অংশে লাইনের পুরুত্বের পার্থক্যটা তেমন বেশি না, তাহলে এই শেখার কাজটা সহজ হয় না?
তাছাড়া, যদি ডিজাইনার ফণ্ট তৈরী করতে চাই, ধরুন কোন আর্টিস্টের ভালো হাতের লেখা থেকে যদি একটা ফণ্ট তৈরী করা যায়, তাহলে তো ব্যাপারটা সেইরকমই দাঁড়াবে তাই না? মানে কলমে লিখলে তো আর আদর্শলিপির মত এক অংশ সরু বা আরেক অংশ চওড়া হবে না। তাই না?
যুধিষ্ঠিরদার মতো এই প্রশ্ন আমারও। অর্থাৎ আমি যদি আমার হাতের লেখাকেই ফন্ট বানাতে চাই, তাহলে কি এই প্রসেসেই এগুতে হবে?
সিরিজটা যথেষ্ট কৌতুহলোদ্দীপক। আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
পড়ছি।
-------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন