মাঝে মাঝে একটা কথা খুব মনে হয় ,কোথায় যেন পড়েছিলাম ,অর্থনাশ ,জরা -ব্যাধি ,প্রিয়জন হারানোর মর্মন্তুদ শোক সবকিছুই একসময় ফিকে হয়ে আসে ,কিন্তু স্বপ্নের টুঁটি চেপে ধরলে সেই দগদগে ক্ষত আজন্ম বয়ে বেড়াতে হয় ,স্বপ্নহননের স্মৃতি আমাদের ফেরারি হয়ে তাড়া করে বেড়ায় অবিরত ।আর বরাত যাদের একেবারেই মন্দ ,সেই অপূর্ণ স্বপ্ন তখন নিতান্তই দুঃস্বপ্ন হয়ে তাদের ওপর সিন্দাবাদের ভূতের মত আছর করে বসে ।হয়তো ...মাঝে মাঝে একটা কথা খুব মনে হয় ,কোথায় যেন পড়েছিলাম ,অর্থনাশ ,জরা -ব্যাধি ,প্রিয়জন হারানোর মর্মন্তুদ শোক সবকিছুই একসময় ফিকে হয়ে আসে ,কিন্তু স্বপ্নের টুঁটি চেপে ধরলে সেই দগদগে ক্ষত আজন্ম বয়ে বেড়াতে হয় ,স্বপ্নহননের স্মৃতি আমাদের ফেরারি হয়ে তাড়া করে বেড়ায় অবিরত ।আর বরাত যাদের একেবারেই মন্দ ,সেই অপূর্ণ স্বপ্ন তখন নিতান্তই দুঃস্বপ্ন হয়ে তাদের ওপর সিন্দাবাদের ভূতের মত আছর করে বসে ।হয়তো বলবেন ,এতো একেবারেই ছেঁদো কথা ,সবারই তো এরকম কিছু স্বপ্ন থাকেই ,আর সবগুলো যে পূরণ হবে সে দিব্যিও কেউ হলফ করে দিতে পারবেনা ।তবে যে স্বপ্নের সাথে আবেগ গলাগলি করে বেড়ে ওঠে ,যে স্বপ্ন নেশার মত আচ্ছন্ন করে ফেলে ,সেটার অপূর্ণতায় কোথাও না কোথাও সুর কেটে যায় বৈকি ।
পিটার ওয়েইরের "ডেড পয়েটস সোসাইটি" দেখতে গিয়ে এসব কথাই মাথায় বৃত্তাকারভাবে পাক খেতে লাগল ।নামজাদা এক স্কুলের একদল তরুণের নিস্তরঙ্গ জীবনে আচমকাই একটা পরিবর্তন আসে ।প্রথাগত স্রোতে গা না ভাসিয়ে নতুন সাহিত্যের শিক্ষক তাদের স্বপ্নের গতি-প্রকৃতি আমূল পালটে দেন ,তাদের কোমল মনে বুনে দেন নান্দনিকতার বীজ ,কবিতার প্রতি তাদের ভালবাসাকে দেন উস্কে ।স্বপ্নবাজ তরুণের দল যেন সৃষ্টিসুখের নেশায় পাগলপারা হয়ে ওঠে ,অন্তঃপুরবন্দী হয়েও শিক্ষকের প্রেরণায় মায় নিষিদ্ধ কবিসঙ্ঘ অব্দি গড়ে তোলে ।কিন্তু বড়ই পাষাণভাবে তাদের এই নিখাদ রোমান্টিকতায় জল ঢেলে দেওয়া হয় ,তাদের কাব্যচর্চা মুখ থুবড়ে পড়ে বড় অসময়ে ।আর স্বপ্ন আর বাস্তবের নির্মম সংঘর্ষের বলি হয়ে উঠতি কবিদের পরিণাম হয় মর্মান্তিক।
সিনেমাটি এমন কোন কালজয়ী কিছু নয় ,তবে স্রেফ একটি বাঁধাগতের হলিউডি ছবিও অবশ্যই নয় ,খানিকটা হলেও আপনার মনে তা রেখাপাত করতে বাধ্য ।সবচেয়ে বড় কথা ,কবিতার সনাতনী ধারণাকে আস্কাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে রবিন উইলিয়ামস যখন গমগম করে বলে ওঠেন ,"আমরা স্রেফ শখের খাতিরে কবিতা পড়িনা ,আমরা কবিতা পড়ি কারণ আমরা মানুষ ,আর কবিতা মানুষের বেঁচে থাকার খোরাক", তখন টের পাই ,আমার শিরদাঁড়া দিয়ে আবেগের এক ঠান্ডা চোরাস্রোত বয়ে চলছে ,এই যান্ত্রিক আমিও তখন ভীষণভাবে রোমান্টিক হয়ে ওঠি ,চিত্ত হয়ে ওঠে উতরোল।কারণ এই ভাবনাগুলোই আমি ভাবতাম ঠিক ঐ স্বপ্নদর্শী বয়সে ,আমার মধ্যেও হয়ত তখন সবকিছু দুমড়ে মুচড়ে দেওয়ার দুর্মর ইচ্ছে খেলা করত ,এবং বলাই বাহুল্য ,একসময় এই ক্লিশে নৈমিত্তিকতার চাপে সেই ভাবনাগুলোও আস্তে আস্তে মিইয়ে যায় ,একেবারে ঘুঁচে যায়না বটে, কিন্তু ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসে ।
তাই ছাত্রদের কানে যখন রবিন উইলিয়ামসের এই কথা অনুরণিত হতে থাকে ,"সিজ দ্য ডে ,মেক ইওর লাইভস এক্সট্রা-অর্ডিনারি"(অনুবাদ করলাম না ,পাছে রসভংগ হয় ),কেন জানি আমার কানেও কথাটি বারবার ঘুরপাক খেতে থাকে ,স্বপ্নধংসের শোকে আমি ফের আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি।
অদ্রোহ।
মন্তব্য
এই যা!!! পড়া শুরু করতে না করতেই দেখি শেষ হয়ে গেল। যাই হোক আপনার লেখা ভাল লেগেছে। পরের মুভি রিভিউগুলোতে আরো বিস্তারিত থাকবে আশা করি।
তার্কিক
এটা আসলে ঠিক রিভিউ হিসেবে লিখিনি। সিনেমা থেকে পাওয়া ভাবনাটুকু প্রকাশ করতে চেয়েছি মাত্র। যাই হোক,পরের লেখাটা হয়ত আরেকটু পৃথুল হবে।
অদ্রোহ।
ভীষণ রকমের পছন্দের সিনেমা এটি।
রিভিউ হিসেবে ঠিকই আছে, গল্পের কাহিনীর থেকে সুরের দিকেই বেশি নজর দিয়েছেন। নিয়মিত লিখুন।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
আপনার গদ্য কিন্তু বেশ সুন্দর।
কৃষ্ণ কানহাইয়া
শংসাবচনের জন্য ধন্যবাদ।
অদ্রোহ।
ঠিকাসে...বুঝতে পেরেছিলাম লেখা দিচ্ছিস...
একটু ছোট হয়ে গেসে- ঠিক বুঝলাম না ছবিটার ভেতরে কী আছে।
একটা বিষয় খেয়াল করিস-
তোর প্রতিটা বাক্যের শেষ শব্দের পর স্পেস দিয়ে তুই দাঁড়ি দিচ্ছিস। পরের বাক্যের প্রথম শব্দটা বসাচ্ছিস দাঁড়ির পরে স্পেস ছাড়াই। অন্যান্য পোস্ট বা এই মন্তব্যটা দেখ, এটা নিয়ম না। বাক্যের শেষ শব্দের পর স্পেস ছাড়াই দাঁড়ি, এরপরের বাক্যের প্রথম শব্দের আগে স্পেস...
এছাড়া দেখতে ক্যামন জানি চোখে লাগে।
_________________________________________
সেরিওজা
ছবির ভেতর কি আছে বলে দিলে মজা আর রইল কই?
আর স্পেসিং এর ব্যাপারটা মাথায় থাকলো।
কার্পে ডিয়েম! সিজ দ্য ডে!
অসাধারণ একটা ছবি- আর অবশ্যই চমৎকার একটা রিভিউ
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য,আমারও খুব প্রিয় ছবি এটি।
অদ্রোহ।
খুব প্রিয় একটা চলচিত্র। লেখাটাও তেমনি ভালো লাগলো।
দ্রোহী-স্বপ্নেরা
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।'
অদ্রোহ।
সুন্দর বাক্যবিন্যাস আর আবেগের চমৎকার প্রকাশ। ভালো লাগলো। ছবি নিয়ে কথা বলতে গেলে সবাইকে গল্পটা পুরো বলতেই হবে, এই দোহাই কে দেয়, কেনই বা?
আরো লিখুন।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ভাল কথা বলেছেন ,স্পয়লার অ্যালার্ট কথাটা তো এমনি এমনি আসেনি।
অদ্রোহ।
আমার অনেক, অনেক প্রিয় একটি ছবি। জি-স্টুডিওতে প্রায়-ই দেখায়, সময় পেলে আবার বসে যাই দেখতে। আমার কাজিন সিস্টার অবশ্য মুভিটার অল্প কিছুক্ষণ দেখেই নাকি ঘুম ঘুম ভাবে আক্রান্ত হয়েছিল। আবার তুলনা দেয় এর সাথে থ্রি-ইডিয়টসের, দিয়েছি ধমক দিয়ে বসিয়ে।
আপনার লেখনী চমৎকার। আরো নতুন লেখা এবং এমন সুস্বাদু রিভিউ পড়তে চাই।
ধন্যবাদ।
হুম ,জি স্টুডিওতে প্রায়ই দেখায় ,আর দেখার সুযোগ পেলে আমিও ছাড়িনা। তবে থ্রি ইডিওটসের এর সাথে তুলনার কথায় ব্যাপকই হাসি পেল ,কীসের সাথে কি??
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া...
লেখা সুন্দর
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এবার সময় করে দ্যাখে ফেলেন,পস্তাবেননা।
এবার সময় করে দ্যাখে ফেলেন,পস্তাবেননা।
অদ্রোহ।
খুবই ভাল লাগলো আপনার রিভিউ।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
কৃতজ্ঞতা রইল।
অদ্রোহ।
নামনো আছে, সময় করে দেখে ফেলবো।
রিভিউ ভালো লাগলো।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
দেখে ফেলুন , ভালই লাগবে আশা করি।
অদ্রোহ।
ভালো লাগার একটি ছবি ।
ভালো লাগলো আপনার আবেগ, ভালো লাগলো তার প্রকাশ আর আশা জাগলো কবিতা যতটা বিরক্তি নিয়ে লোকে বোরিং বলে তারো চেয়ে ভালোবাসা নিয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে বিশ্বাসএ ধারন কারীর সংখা নেহায়েত কম নয় ।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
অদ্রোহ।
পরের লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
সৌরভ
ও ক্যাপ্টেন মাই ক্যাপ্টেন। আঃ! রবিন উইলিয়ামস!
এই ছবিটাকে ঘিরে অনেক ব্যক্তিগত স্মৃতি এখনও তাড়া করে। আমার খালাত ভাই ছবিটা শেষে চিৎকার করে কান্নাকাটি করেছিল। আমরা নিঃশব্দে যে যার ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ি।
নতুন মন্তব্য করুন