যে গোলাপের জন্য কোথাও কিছু মায়া রহিয়া যায়

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৪/০৫/২০১০ - ৭:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কমলকুমার মজুমদারের গোলাপ সুন্দরী পড়েছিলাম ১৯৮৫ সালে। তখন ময়মনসিংহে--কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। বিকেলে মাঝে মাঝে টিএসসি'তে যাই। পাথরের চেয়ারের হাতলে বসে থাকি। মাথার উপর দিয়ে মেঘ উড়ে যায়। দূরে তুরা পাহাড়। হাওয়া ঘুরে ঘুরে আসে।
তখন পাশের চেয়ারে বসেছেন অগ্রজ কবি কাজল শাহনেওয়াজ। সঙ্গে হাসানুজ্জামান কল্লোল, অমিতাভ পাল...। কখনোবা দেখ যায় তসলিমা নাসরিন নাম্নী এক শাড়িপরা মহিলাকে। ইনি কবিতা লেখেন। আর কী একটা পত্রিকা সম্পাদনা করেন। চাকরী করেন ফ্যামিলি প্লানিং অফিসে। তার অফিসের পিছনে ব্রহ্মপুত্র ক্রমশ বুড়িয়ে যাচ্ছে। বর্ষায় কাছিম শিশু একবার ডুব দেয় আবার জেগে ওঠে। জল নিয়ে খেলার অবিরাম সাধ। গাছের উপরে শকুন ঝিমিয়ে পড়ে।
কাজল ভাই একদিন শীর্ণকায় একটি বই দিয়ে বললেন, দ্যাখো। প্রচ্ছদ সুন্দর। গোলাপ ফুল আঁকা। গোলাপ সুন্দরী। লেখক : কমলকুমার মজুমদার।
কমলকুমার মজুমদারের ভাই বিখ্যাত শিল্পী নিরোদ মজুমদারের ছবি দেখে পাগল হয়েছি এক সময়। পড়েছি প্যারিস নিয়ে তার লেখালেখি--দেশের পাতায়। কমলকুমার মজুমদারও ফরাসী ভাষায় সুপণ্ডিত। সুনীল গাঙ্গুলীরা তার ছাত্র ছিলেন। কলুটোলার মদের দোকানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দিশি খেতে খেতে শিল্পের সাহিত্যের পাঠ দিতেন।
গোলাপ সুন্দরী উপন্যাসে বিলাস যক্ষারোগী। তার দিদি এবং জামাইবাবু তাকে স্যানাটারিআম থেকে স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্য নিয়ে এসেছেন তাদের কর্মস্থলে। শহরটি খুব ছোট। সেখানে বিলাসের দিদির একটি গোলাপ বাগান আছে। অসংখ্য দুর্লভ গোলাপ ফোটে। একদিন ঘন বৃষ্টি নামে রাত্রিরে। গোলাপ বাগানের ভেতরে একটি মেয়ে দাড়িয়েছিল। এ সেই বিলাসের গোলাপ সুন্দরী। এ সময় ডোমেরা বিলাসকে ডাকে মড়া পোড়ানোর কাজে সাহায্য করার জন্য। এর মধ্যে মেয়েটি চলে যায়। আর দূর থেকে শোনা যায় মড়া পোড়ানোর শব্দ। মাদলের কোলাহল। মৃত্যুর অসংখ্য প্রতীক। জলে ভেসে যায় বিলাসের ফুসফুস থেকে যক্ষার জীবানু। গোলাপ সুন্দরী কোথাও নেই।
কমলকুমারের বইটি একবারে পড়ে বোঝা কঠিন। শব্দের পিছনে খুব দ্রুতগতিতে আগানো যায় না। আর থাকে বাক্যের গোলক ধাঁধাঁ। এর মধ্যে কখনো আখ্যান লুকিয়ে থাকে--পালিয়ে বেড়ায়। অধরা। ধরতে হলে বারবার পড়া দরকার। তখনো মনে হয় কোথাও কিছু মায়া রহিয়া গেল। পূর্ণকে পাওয়া সহজ নয়। লেখকের কাজ হল পাঠককে কিছু ভাবনার টুকরো গুঁজে দেওয়া। পাঠকের কাঁধে চাপানো ভাবকে ভাষার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দেওয়া। এই গেঁরোকে খুলতে পারলে--লেখালেখির নবায়ন ঘটে যায়। সৃষ্টিশীলতার নতুন ঘোর পাওয়া যায়। গোলাপ সুন্দরী এরকমই একটি ঘোরের গুপ্তপাঠ--ভাষার ইন্দ্রজাল আর সংক্রামক খুনীর মতো তীক্ষ্ণধার এবং সম্মোহক। তাই সবার জন্য নয় কমলকুমার--তার গোলাপ সুন্দরী। তাকে পেতে হলে আয়োজন লাগে।

গোলাপ সুন্দরীকে পড়ে আরেকটি গোলাপ সুন্দরী লিখতে সখ জেগেছিল। মাঝখানে সময় এসে ২৫টি বছরকে ধরে নিয়ে গেল।
আমার গোলাপ সুন্দরী খুব সাদামাটা। কোনো ধন্ধ নেই। নেই কোনো আয়োজন। একে মনে রাখারও দরকার নেই। মাঝে মাঝে ভুলে যাওয়া খুব ভাল লাগে।
...........................................................................................................গোল

গোলাপ সুন্দরী
কুলদা রায়

গোলাপের জন্য অনেক মায়া। কিন্তু গোলাপ সহজে ফোটে না।
মন্দিরের পাশে তুলসীতলা। তার পাশে গাঁদা ফুল গাছ। ফুল ফোটে শীতে-বসন্তে। সেই ফুল ঠাকুরের পায়ে দিয়ে মা বলে, সবার ভাল করো।

স্কুলের পেছনেই একা একটি বাড়ি। ছোট্ট টিনের ঘর। পুরনো। নিকোনো উঠোন। উঠোনের পাশটিতে টগর, হাসনু হেনার ঝাড়। একটি কাঠালি চাঁপা। সবাই বলে চাম্পা ফুল। বর্ষায় কদম ফুটে ওঠে। আর অশোক গাছটিতে মাঝে মাঝে তক্ষক ডেকে ওঠে। তিনটি ছাতিম গাছে ফুল ফুটলে বাতাস আকুল হয়ে যায়। দাদু বলেন, ইহা ছাতিম নহে- সপ্তপর্ণী। একটি বোটায় সাতটি পাতা।

এই বাড়িটির নাম ফুলবাড়ি। এ বাড়ির গোলাপ গাছটিতে পাঁচ রঙের গোলাপ ফোটে। এ বাড়ির যে মেয়েটি ডুরে শাড়ি পড়ে, সে গাছে জল দিতে দিতে বলে, আমার বাবা যাদু জানে।

বাজারে ওর বাবার আলু-পটলের দোকান। যায় ভোরে। ফেরে সন্ধ্যায়।

এই মেয়েটি একদিন আমাকে একটি গোলাপ চারা দিল। তুলসী গাছের পাশে খুব গোপনে লাগালাম। এই গাছের জন্য কিছু যাদু দরকার। কোথায় পাব সে যাদু?
মেয়েটি বলল, ভালবাসা থেকে।

এরপর মেয়েটিকে আর কখনো দেখিনি। শুধু দেখেছি- ফুলবাড়ির উঠোনে ঘাস গজাচ্ছে।মাধুরীলতা ঘরের চাল বেয়ে নিচে নেমেছে। জানালা অবধি পারুল লতা। আর ওর বাবা সারাক্ষণ উঠোনে ছাতিম গাছের তলায় বসে থাকে। বিড়বিড় করে। একদিন লোকটি হয়ে ঊঠল রবীন্দ্রনাথ। শুধু আল্লাখাল্লা নেই। কোমরে গামছা বাঁধা। আর হাসনু হেনার তলায় দুটো সাপ থান গাড়ল। রাতারাতি বাড়িটার নাম পাল্টে গেল- জঙ্গলবাড়ি।

মাঝে মাঝে বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যে পেরিয়ে যায়। অন্ধকারে মডেল স্কুলের পেছনের জামরুল গাছটিকে অচেনা লাগে। গা ছম ছম করে। মা বলে, ভয় পাবি না। মনে মনে বলবি- তুলসী, তুলসী, তুলসী।

একদিন ফিরতে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেল। বৃষ্টি নামছে টিপ টিপ করে। চুল বেয়ে জল নামছে চোখে মুখে। জামরুল গাছের পাতা নড়ছে।
ঠিক এ সময় শুনলাম কে যেন ডাকছে, গোলাপ! গোলাপ!

মাত্র দুই কি তিনবার। কেঁপে কেঁপে। থেমে থেমে। স্নেহ ভরে। ভয়ে ভয়ে।

একবার জোরে বজ্রপাত হল। বিদ্যুৎ চমকাল। একটি ছায়ামুর্তি দ্রুত সরে গেল বৃষ্টি আর অন্ধকারের গভীরে। আঁতকে বলে উঠলাম, মা, মা। মা মনের ভিতর মা বলে দিল, তুলসী। তুলসী। তুলসী।

একদিন গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেল। বাবার সঙ্গে কে একজন লোক কাঁপা কাঁপা গলায় কথা বলছেন। বলছেন, এখন কী করি, শঙ্কর। এখন কী করি।
মনে হল এ গলা একজন বিপন্ন বাবার। একজন ভেঙে পড়া মানুষের। বৃষ্টির মত ভেজা স্বর। অথবা এই এই স্বরে পৃথিবীতে শেষ বৃষ্টিপাত হয়ে যাচ্ছে। তারই শব্দ মর্মরিত হয়ে হাহাকার করে উঠছে।

এর পরদিন মডেল স্কুলের পুকুর পাড়ে অনেক মানুষের ভিড় জমে গেল। কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো নতুন ফুলে সেজেছে। বাতাসে নড়ছে চিরল চিরল পাতা। জলে পড়েছে সবুজ ছায়া। সে ছায়ার মধ্যে একজন মানুষ ঝুলে আছে। শুন্যে দুটি পা। মাথা নিচু। এবং পরাজিত।

আর পুকুর পাড় থেকে একটু দূরে সেই ফুলবাড়িটা অথবা জঙ্গলবাড়িতে দুদল মানুষ হৈ চৈ করছে। একদল ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়েছে। সোনা দানা খুঁজছে। বলছে, এটা আমাদের বংশের ছেলে সোলেমানের বউয়ের বাড়ি।

আরেকদর মানুষ গোলাপ গাছটার গোড়ায় দিয়েছে কুড়ালের কোঁপ। এইখানে মন্দির গড়বে। এটা তাদের বংশের লোকের বাড়ি। কে যেন গঙ্গাজল ছিটিয়ে পবিত্র করছে বাড়িটার ভূমি।

এই জঙ্গলবাড়িটা একদা ছিল ফুলবাড়ি। হাসনুহেনা ফুটলে গন্ধে আকুল হত বাতাস। চাম্পা ফুল ফুটলে পরী নেমে পড়ত।

বেলা গড়িয়ে গেলেও কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো তেমনি দাঁড়িয়ে রইল। লোকগুলো নেই। পুকুরের ছায়ার ভিতরে শূন্য মানুষটি কেবল পশ্চিম থেকে পূবমুখী হয়েছে। এই জল ছায়াটি মুছে ফেলার কেউ নেই। যারা এসেছিল, তারা একটি মানুষের ভিতরের গোপন মানুষটিকে দেখে ফিরে গেছে নিজস্ব ঘরে।
সেদিন সন্ধ্যার গভীরে আবার বৃষ্টি নেমেছে। বাতাস হালকা- শীতল। জামরুল গাছের নিচে এসে বললাম, গোলাপ! গোলাপ!
ঠিক সামনেই একটি পোড়ো বাড়ি। জঙ্গলে ঢেকে আছে। বিদ্যুৎ চমকানোর মধ্যে দিয়ে একটি ছায়া এসে দাঁড়াল। ফ্যাকাসে মুখ। শরীরটা খুব শীর্ণ। শিউরে শিউরে উঠছে। বলল, বাবা, ভাত এনেছ? তিন দিন আসোনি। আমার খাওয়া হয়নি।

এই গলাটি কাঁপা কাঁপা। রিনরিনে। গোলাপের পাপড়ির মত মৃদু। যাদুকরি। এবং
মৃতপ্রায়।

কুলদা রায়


মন্তব্য

রাফি এর ছবি

দারুণ লেখা...নিয়মিত লিখুন না এরকম।।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সবজান্তা এর ছবি

কোথাও কিছু মায়া রহিয়া গেলো... দেখেই মনে পড়লো কমলকুমারের নাম। ঢুকে দেখি, তাঁর কথাই লিখেছেন শুরুতে।

তবে আপনার নিজের জীবনের অংশটুকু, কিংবা মূল (!!) গদ্যটুকুও এতো প্রাঞ্জল, এতো সাবলীল বর্ণনা।

আপনার আরো লেখা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।


অলমিতি বিস্তারেণ

রণদীপম বসু এর ছবি

সচলে স্বাগতম গো দাদাবাবু।
গল্পটার মধ্যে যাদুবাস্তবতার চমৎকার একটা মায়া লেগে আছে মনে হচ্ছে ! সেইরকম !

এখানে নিয়মিত লিখবেন আশা করছি।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

হাসিব এর ছবি

কুলদা রায় সচলের জন্য একটা উপন্যাস লিখতে শুরু করেন ।

অতিথি লেখক এর ছবি

এক সঙ্গে দুটো উপন্যাস শুরু করেছিলাম। একটি ১৯৭১-- আরেকটি ১৯৪৭ সাল নিয়ে। সর্পগন্ধার জলতরঙ্গ এবং আদুরীর শব্দকঙ্কাল। নানা কারণে লেখা খুব ঢিমাতালে চলছে।
ওকে, আদুরীর শব্দকঙ্কালের তৃতীয় পাঠ থেকেই না হয় শুরু যাবে যদি অনুমোদন মেলে আপনাদের।
--কুলদা রায়

হিমু এর ছবি

মুগ্ধ হলাম। আপনি গল্প লিখে চলুন। কলহ-কোলাহল থেকে দূরে সরে গল্প লিখে যান।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তিথীডোর এর ছবি

চমৎকার বর্ণনা! চলুক
আরো লেখা পড়ার অপেক্ষা থাকবে।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

পুতুল এর ছবি

কোনটা রেখে কোনটা খাই! পুস্তকালোচনা এবং গল্প দুটুই খুব ভাল লাগল। এতো অল্প কথায় কতো অসাধারণ গল্প!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তাসনীম এর ছবি

কমলকুমার মজুমদার সম্বন্ধে সুনীল মনে হয় বলেছিলেন যে ব্যক্তি জীবনের আলাপচারিতায় উনি নাকি প্রোফেইন ও প্রোফাউন্ডের এক আশ্চর্য সংমিশ্রন। বলতে গেলে পড়াই হয় নি উনার লেখা।

আপনার লেখাটা দারুণ লাগলো। আরও লেখা পাওয়ার অপেক্ষায় রইলাম

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

কমলকুমারের সেরা কাজটি মনে হয় অন্তর্জলী যাত্রা। ১৯৬২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি লিখেছেন, "এই ক্ষণ-চিত্র দেখিয়া তিনি, অনন্তহরি, নিষ্ঠার সহিত নমস্কার করিয়া কহিলেন,'চাঁদ যখন লাল তখন তার প্রাণ যাবে...যাবে কিন্তু একা যাবে না হে! দোসর নেবে...।'
আজ এইটুকু থাক।
আরেকদিন অন্তর্জলী যাত্রা নিয়ে আলাপ করা যাবে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

খুবই ভালো।

-----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

সচলে নিয়মিত লিখুন, মুগ্ধ হয়ে পড়ি আপনার লেখা।

নিবিড় এর ছবি
সুরঞ্জনা এর ছবি

খুব, খুব ভালো লাগলো লেখা।
লেখার জন্যে শুভকামনা রইলো।
................................................................................
জগতে সকলই মিথ্যা, সব মায়াময়,
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয় ।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

কমলকুমারের লেখায় শব্দের বিন্যাস,বাক্যের সর্পিল চলন আর অর্থের গোলকধাঁধায় মোহময় এক মন্ত্রজালে পড়ে যাই, কিছু তার বুঝি আবার, কিছূ পাই অনুভবে। কিছুর রহস্যময়তা হয়তো ভেদ করা যায় না কখনোই। কিছু মনের চোখের সামনে চিরকালের জন্যে রহিয়া যায়, যাদের জন্যে রহিয়া রহিয়া মায়া জাগিয়া ওঠে, এমনকি সাধূ বাংলার ব্যবহারও এই চৈত্রের কুয়াশামাখা শব্দগুলোর জন্যে অনিবার্য মনে হয়।
আশা করি,কুলদা ফেসবুক নোটে তুমুল তর্কে না জড়িয়ে চমৎকার সব লেখা উপহার দেবেন।

আদুরীর শব্দকঙ্কালের চাইতে আমার কিন্তু আপনার ‍মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত লেখাগুলোই ভালো লেগেছিল।

ফয়েজ আহমদ ফয়েজের ব্যাপারে বাঙালিদের স্থির সিদ্ধান্ত পেলেন কি?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

বইখাতা এর ছবি

তারা দেয়ার তো ক্ষমতা নাই, মন্তব্যেই তারা দিয়ে গেলাম আপনার গল্পটার জন্য। সময় করে আরো অনেক গল্প লিখুন। পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

কমলকুমার মজুমদারের লেখা বলতে গল্প পড়েছি বেশ কিছু। এবং সত্যি কথাটা হলো তাঁর কিছু গল্প আমি বুঝতে পারিনি, এমনকি বেশ কঠিন লেগেছে বলে বেশিদূর পড়তেও পারিনি। আর যেগুলো শেষ করতে পেরেছি, সেগুলো সম্পর্কে কিছু লেখার মতো দক্ষতা আমার নাই। একেবারেই অন্যরকম। অসাধারণ। কমলকুমারের গল্পগুলি নিয়ে যদি আলোচনা লিখেন এখানে, খুব আগ্রহ নিয়ে পড়বো।

বাউলিয়ানা এর ছবি

গোলাপ সুন্দরী পড়া হয়নি। তবে আপনার লেখা পড়ে খুব ইচ্ছে হচ্ছে।

দারুন লেগেছে আপনার নিজের অভিজ্ঞতাটুকু।

আরও চাই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কুলদা দাদা, লেখার সময়ই জেনেছিলাম। কিন্তু তবু পড়তে দেরি হয়ে গেলো। এক কথায় অসাধারণ।

প্রিয় একটি উপন্যাস নিয়ে আলোচনাটাও প্রিয় হয়ে থাকলো। আর আপনার গোলাপ সুন্দরীও মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। খুব সুন্দর।

সর্পগন্ধার জলতরঙ্গ পড়িনি। আদুরীর শব্দকঙ্কাল প্রথম দুই পর্ব পড়েছি অন্য ব্লগে। তৃতীয় পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

'সর্পগন্ধ অথবা না-মৃত্যুর জলতরঙ্গ' বেশ কয়েকটি পার্ট লিখেছি। কোথাও প্রকাশ করা হয় নি। এটা ১৯৭১ নিয়ে।
'আদুরীর শব্দকঙ্কাল' ১৯৪৭ সাল নিয়ে। লেখা চলছে।

কলহ-কোলাহল থেকে দূরে থাকি কিম্ প্রকারে?
ধন্যবাদ।
--কুলদা রায়

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বাহ! কী সুন্দর! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।