আমরা অসহায় কারণ আমরা সাধারণ জনগণ। আমাদের হাতে ক্ষমতা নেই, পকেটে টাকা নেই। আমাদের কোন টিভি চ্যানেল নেই, আমাদের পত্রিকা নেই, আমাদের কোন সংসদ ভবন নেই। আমাদের নিকৃষ্ট ভাষায় দখল নেই, আমাদের পক্ষে কোন কলম লেখক নেই।
আমরা অসহায় কারণ আমরা চাটকদারী কথায় প্রভাবিত হই, আমরা মিথ্যা আশ্বাসে বিভ্রান্ত হই, আমরা ইতিহাস পড়ি, মনে রাখি না। আমরা অতীত ভুলে যাই।
আমরা অসহায় কারণ আমদের খাকি পোষাকের মানুষ নেই (থুক্কু পুলিস নেই), আমাদের জলপাই রঙের কর্তা নেই। আমাদের পক্ষে সুশীল সমাজ নেই। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী নেই। আমাদের মুখপাত্র নেই।
আমরা অসহায় কারণ আমারা আমাদের ভোটের মূল্যটা বুঝিনা, আমরা ক্ষমতার প্রয়োগ জানি না। আমরা ক্ষুধাকে নিবারণ করতে পারি না। আমরা মৌলিক চাহিদা বুঝি না। আইনের শাসন কাকে বলে জানি না। আমরা আদালত চিনি না, আদালতের কপাট চিনি না।
আমরা অসহায় কারণ আমাদের কালো হাত নেই, অবৈধ অস্ত্র নেই, আমাদের গডফাদার নেই, আমাদের অঙ্গসংগঠন নেই। আমাদের কেউ সরকারী দলের কর্মী নেই। আমাদের কেউ সরকারী আমলা নেই, আমাদের কেউ নেই।
আমরা অসহায়, কারণ আমরা অর্জিত স্বাধীনতা ওদের হাতে তুলে দেই। আমরা অর্জিত গণতন্ত্র ওদের কাছে বন্ধক রাখি। আমরা আমাদের বিশ্বাস কিছু মোনাফেকের কাছে আমানত রাখি। আমরা আমাদের পথ চিনি না। আমরা অন্যের পিছে হাঁটতে চাই। আমরা ভুল মিছিলে শ্লোগান দেই।
আমরা অসহায় কারণ আমরা দুর্বল, আমরা অন্ধ, আমরা একতাবদ্ধ নই। আমরা আমাদেরকে নিয়ে ব্যস্ত। আমরা টাকায় বিক্রি হই। আমরা সিগারেটের আর বিড়ির বিনিময়ে অধিকার বন্ধক রাখি। আমাদের চাষাবাদের জমি নেই, জলে নৌকা নেই, মাছ ধরার জাল নেই।
আমাদের শুধু একটা জিনিস আছে, সেটা হলো ভোটাধিকার। পাঁচ বছর পর আসে, তাই এর মর্ম বুঝি না। কথার ফুলঝুরি আর মিথ্যা প্রলোভনের বিভ্রান্ত হয়ে ভুল প্রয়োগ করি। যখন উপলব্দি করতে পারি, তখন কপাল চাপড়াই। মিথ্যা কোনো আশ্বাসের জন্য আবার অপেক্ষা করি।
আমরা ভুলে যাই আমাদের শক্তি। আমরা ৫২সালে দেখিয়েছি, ৬৯ এ দেখিয়েছি, ৭১ এ দেখিয়েছি, ৯০ এ দেখিয়েছি। আমরা চাইলে সব পারি। আমদের দরকার মিলিত হাত, মুষ্টিবদ্ধ অঙ্গীকার, সঠিক নেতৃত্ব। আমাদের দরকার আমিত্ব ভুলে গিয়ে সার্বজনীন হওয়া।
আমরা অসহায় তাই আমদের কুত্তায় কামড়ায়, শকুনে ছিড়ে খায়, বাঘে থাবা মারে, বিড়াল শিকা ছিড়ে। ইঁদু ঘরের বান কাটে। ছাগলে ফসল খায়। মুর্খরা পাকা ধানে মই দেয়। আমরা অসহায় কারণ আমরা অসহায়।
ধন্যবাদ। আর কত দেখাবো? দেখতে দেখতে যে চোখও আন্ধা হইয়া যাইবো। চোখে ছানি পড়বো। তখন বিদেশীরাও অবাক না হয়ে বেকুব কইবো। দেখাদেখির দিন শেষ হবে কবে?
ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
আমাদের শুধু একটা জিনিস আছে, সেটা হলো ভোটাধিকার। পাঁচ বছর পর আসে, তাই এর মর্ম বুঝি না। কথার ফুলঝুরি আর মিথ্যা প্রলোভনের বিভ্রান্ত হয়ে ভুল প্রয়োগ করি।
ভাই........ আমাদের এই একটা জিনিসই আছে। ভূল বা ঠিক বাছাই করার কোন সুয়োগ নেই আমাদের হাতে। ভোটের কাগজটায় যে কয়টা নাম থাকে তাদের সবার সম্পর্কে মনে হয় আপনি আমার চেয়ে ভালোই জানেন। ওদের হাতে কি কি আছে তা তো আপনিই অনেক বলেছেন। সেনাপতি-সৈন্য-খোঁজা .... সবই আছে ওদের হাতে। আমরা তো এইটাও জানি না যে আমাদের ভবিষ্যত শিক্ষামন্ত্রী পদের জন্য কে কে পরিকল্পিত। তাহলে না হয় যাচাই করুম যে অমুকের চেয়ে অমুক শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভালো হইবো। অমুক যেহেতু আমার এলাকার.... তাইলে অমুকরে দেই ভুট। যাচাইটা করুম কিসের ওপর। আমরাতো তেনাদের দুই জনের ওপর ছাইড়া দিয়া রাখছি। তেনারাই ভালো জানেন। আমরাতো কিছুই জানি না। আমার দেশের মন্ত্রি-উপ মন্ত্রি-পরিষদ কিঙবা বাঙলাকথায় নেতৃত্ব পরিষদ জানার অধিকার তো আমার নাই। আমাদের আছে কেবল প্রধাণমন্তী বাছাই করবার ক্ষমতা। ৫ বছর পর পর এই ক্ষমতাটা ব্যবহার করি। নইলেতো এই জিনিসটাও লয়া গিয়া খোঁজা কইরা দিবো।
অভদ্র মানুষ
ধন্যবাদ।
আপনার কথা গুলো ভালো লাগলো। আমরা কী এই দলের গ্যাড়াকল থেকে বের হয়ে আসতে পারি না। আমরা কী মার্কা না দেখে, দল না দেখে মানুষ দেখে ভোট দিতে পারি না? আমরা যখন সিগারেট/বিড়ি আর চায়ের বিনিময়ে বিক্রি হই, তখন আমরা কিছুই পারি না। ভালো থাকবেন।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
কিছু বলার ভাষা নেই
আমরা নিজেরাই এই অসহায় অবস্থার জন্য দায়ী। রাস্তায় ছিনতাই হতে দেখলে পাশ কাটিয়ে যাই। বনের বাঘের গল্প শুনে মনের বাঘটাকে খাঁচায় পুরে রাখি। বঙ্গবন্ধু বলতেন ভয় করলেই ভয়। গান্ধীজীর সাহস দেখেছেন, তাজউদ্দীনের ঋজুতা, ভাসানীর কৃষকের অহংকার। আর আমরা হয়ে গেলাম দুধভাত।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
ধন্যবাদ মাসকাওয়াথ ভাই। পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া আমরা দুধভাত না, আমাদের দুধভাত বানিয়ে রাখা হয়। যখন সরকারের কালো নির্দেশে পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়, চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে যায়, তখন কি আমরা অসহায়ত্ব বোধ করি না? আমরা যখন দেখি কোন মন্ত্রীপুত্রের নামে খুনের রিপোর্ট হওয়ার পরও সে দাম্ভিক করে ঘুরে বেরায়, তখন কি অসহায় বোধ করেন না?
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
শক্তিশালী লেখনী... আরো লিখুন...
শুভকামনা রইল
___________________________
বর্ণ অনুচ্ছেদ
লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
================
মন্তব্য
আপনার লেখাটা পড়ে দৈনিক জনকন্ঠের অ্যাডের কথা মনে পড়ল
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
সাইফ ভাই পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ইদানিং আপনার লেখা কম পাই। আপনার নতুন লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
সাইফ ভাই, আমি জনকন্ঠ পড়ি না প্রায়ই বছর কয়েক হবে, ওরা কি লিখেছে, তা আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। সেটা হয়তো আমার পত্রিকা পড়ার প্রতি বিমুখ হওয়ার কারণ।
আমি আমার মনের কথা গুলো লিখেছি, সমাজের অংগতি গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। আমি জানি এই বিষয় গুলো নিয়ে অগ্রজ অনেক সচল ভাইয়েরা অনেক বেশী শক্তিশালী লেখা লিখেছে, এবং ভবিষ্যতেও তাদের ক্ষুরদার লিখনি অব্যাহত থাকবে। কিন্তু নিজের ভেতর যে মানুষটা আছে, তাঁ তাড়না থেকেই কাল রাত ২:৩০মিনিটের দিকে লেখাটা লিখে শেষ করে পোস্ট দেই। শঙ্কায় ছিলাম, প্রকাশিত হবে কিনা। যাক সচলায়তনকে এই লেখাটা প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ যারা পড়েছেন তাদের সবাইকে।
লেখার শেষে নিজের নামটা জুরে দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। মডারেশন ভাইদের প্রতি অনুরোধ সম্ভব হলে নামটা জুরে দিন।
ধন্যবাদ।
==========
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
যে অ্যাডের কথা বলেছিলাম, সেটা জনকন্ঠ লঞ্চের ভিডিও ছিল, সম্ভবত ১৯৯৩-৯৪ সালের। না দেখার কোন কারণ নাই, ভুলে গিয়ে থাকলে অন্য কথা, তখন বিটিভিতে দেখাতো, একজন লোক বাঁধা অবস্থায় বসে আছেন চেয়ারে, পিছন থেকে লাইট মারা হচ্ছে, তাই তার মুখ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না, চোখে কাপড় বান্ধা, আর একজন আপনার লেখার মত বিবৃতি আউড়ে যাচ্ছিলেন, "আমাদের চোখ বাঁধা, কিন্তু আমরা দেখি, আমাদের মুখ বাঁধা কিন্তু আমরা বলি ...". আপনার লেখার সাথে কোন সম্পর্ক নাই, টোনটা এক রকম। আর জনকন্ঠ কেন, ২০০৩ থেকে কোন পত্রিকাই পড়ি না। কাজেই তারা কি লিখতেছে আমিও জানি না।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
এতো পুরানো দিনের কথা কি আর মনে থাকে? আমরা পাঁচ বছর আগের কথাই ভুলে যাই। যাক মনে করিয়ে দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
আমরা অসহায় কারন আমাদের সততা নেই, আমাদের সহনশীলতা নেই, সৎ ভাবে বেঁচে থাকার প্রাণান্ত চেষ্টা নেই।
আমরা অসহায় কারণ আমাদের ইলেক্ট্রিসিটি বিল পুরোটা দেবার ইচ্ছা নেই, ওভারব্রীজ ব্যবহার করার ক্ষমতা নেই, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস নেই।
আমরা অসহায় কারণ আমাদের সুযোগ নেই। সুযোগ পেলেই আমরা আর অসহায় থাকব না। তখন আমরা অন্যদের অসহায় বানাতে উঠে-পড়ে লাগব।
আমাদের অসহায় থাকার এরকম আরও অজস্র কারণ বলে নিজেদের আর লজ্জা দিতে চাই না।
দেশের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ থেকে নয়, নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বললাম।দেশের প্রতি ভালবাসা থেকেই বললাম।
>>>আইজুদ্দিন<<<
আইজুদ্দিন ভাই, আপনার কথা সত্য, আমরা অসহায় কারণ আমরাই আমাদের অসহায়ত্ব সৃষ্টি করি।
ভালো থাকবেন।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
আমরা আরো দেখাব......আর বিশ্ব অবাক চেয়ে দেখবে......আমরা অবশ্যই দেখাব.........