এখনো অসময়ে প্রকৃতি কাঁদে, মানুষ মনের আনন্দে বিহব্বল হয়ে সেই কান্নায় ভিজে, আমি পারিনা। নিজের কান্নায় কি নিজে ভেজা যায়? আমি বদ্ধ ঘরে বসে কপোত-কপোতীদের বৃষ্টি ভেজা উৎসব দেখি। তুমি নেই বলে বৃষ্টি পানি শরীরকে স্পর্শ করতে দেই না।
এখনো রাতে আকাশে চাঁদ উঠে, রুপালী জোছনা পসরা সাজায়। নদীর শান্ত পানিতে জোছনার বিচ্ছুরণ পরে সোনালী বর্ণ ধারন করে। অপরূপ দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। বিমুগ্ধ মানুষ ঘুমকে বিদায় দিয়ে নদীর বুকে ঢেউয়ের সাথে রূপালী জোছনার খেলা দেখে। জোছনা রাতে পাহাড় চূঁড়ায় বসে এখনো নবদম্পতিরা অভিসারে সুখের উৎসবে মাতে, জোছনার মায়াময় আলো শরীরে মেখে এখনো গাঁয়ের কিশোরীরা মনের স্বপ্ন সাজায়। আমি জোছনা দেখিনা। তুমি নেই বলে জোছনা আমার শরীরকে স্পর্শ করতে দেই না। রুমের জানালা বন্ধ করে ঘরকে আমি অমাবস্যা বানিয়ে রাখি। যার জীবন থেকে চাঁদ হারিয়ে যায়, তাঁর কি আর জোছনা দেখার অধিকার আছে?
এখনো ফুল ফুটে, প্রজাপতি ফুলে ফুলে নেচে বেড়ায়। ভ্রমর ছুটে আসে। অলির আহবানে বসন্ত আসে। পলাশ শিমুলে রাঙ্গা হয় পৃথিবী। কোকিল কুহু কুহু ডাকে। প্রকৃতি নবরূপে সাজে। মানুষের হৃদয়ে মিলনের জোয়ার আসে। আমি সেই জোয়ারে ভাসতে পারি না। আমি যার পাখায় উড়ে বেড়াবো সে যে উড়ে গেছে।
মানুষ দল বেঁধে বের হয়, প্রকৃতির নির্মল বাতাসে প্রান ভরে নিঃশ্বাস নেয়। শহরের কোলাহল পরিবেশ ছেড়ে চলে যায় শ্যামল শান্ত ছায়া ঘেরা পরিবেশে। প্রাণের উচ্ছ্বাসে অনাবিল সুখের সম্মোহনে কপোত-কপোতীরা উড়ে বেড়ায় স্বপ্নের ডানায়। বাসা থেকে একটু দূরে সবুজের বুক চিরে যে রেলপথ চল গেছে, সেখানে এখনো তরুন-তরুনীরা হাত ধরে হেঁটে যায় স্বপ্নের আঙ্গিনায়। আমার হাত ধরার তুমি নেই বলে ওদিকে আর পা বাড়াই না। নিজেকে পঙ্গু করে আটকে রাখি, পায়ে ভেরী পরিয়ে রাখি। যার হাত ধরার হাত নেই, তাঁর কি রেলপথে হাঁটা শোভা পায়?
আমি জানি প্রতি রাতে সুখ নিদ্রায় এখনো লক্ষ কোটি প্রান স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের ডানায় উড়ে বেড়ায় রঙ্গিন দুনিয়ায়। স্বপ্ন দেখে একটা স্বপ্নপুরীর। নিজের হাতে সাজায় স্বপ্নপুরীর ঘর, বিছানা, আসবাবপত্র। সকালে উঠে স্বপ্নের মোহ নিয়ে, সারাদিন থাকে উৎফুল্ল। চঞ্চলা হরিনীর মত, বাঁধভাঙ্গা ঝর্নার মত, কূল ভাঙ্গা নদীরমত ছুটে চলে স্বপ্ন মোহনায়। মিলনের দুর্নিবার টানে মিলিত হয়। আমি স্বপ্ন দেখিনা। যার চোখে ঘুম নেই তাঁর চোখে স্বপ্ন আসবে কি করে?
আমি যে বেঁচে আছি আক্ষরিক অর্থে, প্রকৃতির নিয়মে। দেহে রক্ত সঞ্চালন থাকলে নাকি মানুষ জীবিত থাকে, সেই অর্থে আমি জীবিত। রক্ত মাংসের মানুষের মত আমিও জীবিত। কিন্তু যার দেহে হৃদয় থাকে না, চোখে স্বপ্ন থাকে না, মনে কোন ইচ্ছা থাকে না, কোন সুখ যাকে স্পর্শ করে না, অনুভূতি যার ভোতা, সে কী জীবিত?
============
তারিখঃ ০৬।০৬।২০১০
মন্তব্য
ভেরী কী? বেড়ি বলতে চেয়েছিলেন কী?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মুর্শেদ ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
খুব ভালো লেগেছে। পাঁচতারা রইল। লেখকের নামটা জানলে ভালো হতো।
ধন্যবাদ। পাঁচ তারার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
ভালো লাগলো আপনার ব্লগরব্লগর!
ভালো লাগার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
এইরকম লেখা পড়লে ভেতরে কেমন কেমন যেন লাগতে থাকে।
তবুও আমার কাছ থেকেও পাঁচতারা।
নামটা জানি না এখনো।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
মনের ভেতর কেমন কেমন লাগানোর জন্য দুঃখিত।
পাঁচতারার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
নামটাতো এবার জানা হলো।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
কে বলে আপনি স্বপ্ন দেখেন না। আপনার মতো স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা ৯৯% ভাগ মানুষের নেই। আপনার বদ্ধঘরে দেখা স্বপ্ন হাজারো মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়।
এত সুন্দর একটা লেখা, অথচ নাম দিতে ভুলে গেছেন? দিয়ে দেবো নাকি?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
নীড় ভাই আমি আপনাদের অচল স্বাধীন।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত। একটা লেখা আপনার ভালো লাগাতে পারলাম।
তবে ভুল বানান এখনো আমার পিছ ছাড়েনি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
এযে আমার কথা। কেন আপনি লিখে ফেললেন আগে?
আহা, জীবন আর ভালোবাসা এতোটা কষ্টের কেন? এতো কষ্টের কেন?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
আপনার মনের কথা আপনার অনুমতি না নিয়ে লেখার জন্য দুঃখিত।
আপনার ভালো লেগেছে তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
অগ্রজ সচল ভাই ও অতিথি সদস্য বন্ধুদের কাছে প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি শিরোনামে বানান ভুলের জন্য। আমি জানি ভুলের পেছনে কোন যুক্তিই গ্রহন যোগ্য না। আর আমি তো ভুল করার ওস্তাদ। আমার লেখা মানেই হাজারটা বানান ভুল।
যারা পড়েছেন এবং ভালো লেগেছে, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বিলম্বে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আমি আন্তরিক দুঃখিত।
গতকাল রাত ১২টার দিকে পোষ্ট দেয়ার পরই চোখে পড়ে গেল শিরোনামের বানানটা ভুল। সকালে অফিস যেতে হবে, চোখে রাজ্যের ঘুম এসে পড়ল, তাই আর রিপোস্ট দেয়ার সময় পেলাম না। সারাদিন অফিসে ব্যস্ত ছিলাম, সচলায়তনে ঢু মারাও সময় পাইনি। সন্ধ্যায় ঢু মেরেই দেখলাম মুর্শেদ ভাই ভুলটা ধরে আসলটা জিনিসটা বলে দিয়েছেন। ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই।
বিনীত অনুরোধ রইল মডারেশন ভাইদের প্রতি শিরোনামের বানানটা শুদ্ধ করে দেয়ার জন্য। " ইচ্ছের আলতা পায়ে পরেছি বেড়ি।"
রাত গভীরে পোস্ট দেয়ার সময় নামটা প্রায়ই দিতে ভুলে যাই। এটা আমার একটা খারাপ অভ্যাস, এর আগেও দুইটা লেখায় নাম দিতে ভুলে গেছিলাম। আবারো বিনীত অনুরোধ থকলো মডারেশনের কাছে নামটা জুরে দেয়ার জন্য।
যাদের ভালো লেগেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা পড়েছেন তাদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
অনেকে হয়তো লেখাটা পড়ে ভেবেছেন আমি কোন মেয়ে। না আমি কোনো মেয়ে না। তবে লেখাটা একটা মেয়ের কষ্ট নিয়ে। যে তাঁর প্রিয়জনকে হারিয়ে নীরব হয়ে গেছে। যার কষ্ট আমাকে স্পর্শ করেছে দারুন ভাবে। আমি যে তাঁর কষ্টটা লেখায় তুলে ধরে আপনাদের মনে নাড়া দিতে পেরেছি, এতেই আমি ধন্য। আমি খুশী আরো একটা লেখা সচলায়তনে সচল ভাইদের ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সবাইকে।
কামরুজ্জামান স্বাধীন
07.06.2010
অসাধারণ লিখেছেন ভাই!
কি দারুণ সব বাক্য!
সেই শুরু থেকে আপনাকে নিয়ে আমি আশাবাদী। সে আশার মর্যাদা আপনি রেখেছেন। লিখতে থাকুন প্রাণ ভরে।
আর অবশ্যই পাঁচ তারা।
শুভেচ্ছা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
স্পর্শ ভাই, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার উৎসাহ আমার প্রেরণা। আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনার ই-মেইল টা কী পেতে পারি?
ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
দারুণ লিখেছেন।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
তানিম ভাই ধন্যবাদ। আছেন কেমন?
কামরুজ্জামান স্বাধীন
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ।
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
================
খুব সুন্দর লিখেছেন...পাঁচাধিকার প্রয়োগ করলাম
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ। আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।
=============
কামরুজ্জামান স্বাধীন।
================
নতুন মন্তব্য করুন