• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ব আকার বা, ল ই-কার লি, তালব্য শ ইকুয়েল টু... পর্ব ১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৪/০৬/২০১০ - ৯:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

===নিশা===

"সে যেদিন আমার বুকে মুখ গুঁজিয়া ফুঁপাইয়া ফুঁপাইয়া কাঁদিয়াছিল, সেদিনের কথা আমি ভুলি নাই ।...সেই অন্ধকার গভীর রাত্রে সে আর আমি একা ।...তাহার অশ্রুজলে আমার বুক ভাসিয়া যাইতেছে ।.."

"...সেদিন অন্ধকার নয়, সেদিন জ্যোত্‍স্নায় পৃথিবী ভাসিয়া যাইতেছে । আমাকে বুকের মধ্যে জড়াইয়া যে উন্মাদনা সে প্রকাশ করিয়াছিল, তাহারও ভাষা নাই ।..."

"...কোনদিন তাহাকে কিছু বলি নাই । অথচ তাহার নিত্যসঙ্গী ছিলাম । তাহার সুখ, তাহার দুঃখ, তাহার উত্তেজনা, তাহার অবসাদ-সবই অনুভব করিতাম ।...সে কিন্তু একদিনও, এক নিমিষের জন্যও আমার কথা ভাবিত না ।..."

বাক্যগুলো বনফুলের "অক্ষমের আত্মকথা" ছোটগল্প থেকে নেয়া । এখানে এই অক্ষমটি ব্যক্তি নহে, বস্তু...যাকে মোরা বালিশ বলে থাকি ! বেচারা বালিশ এক তরুণীর প্রেমে পড়েছিলো । আর তাতেই তার এ দুঃখভরা আকুতি !

লেখকের কল্পনায় ছাড়া বালিশ বা কোলবালিশের প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা জানি না, তবে সত্যিই যদি থাকতো, তবে আমাদের এই বালিশগুলো আমাদের কত সুখ দুঃখের ভারে যে ভারি হতো, তার উপাখ্যান কে লিখবে!

কোলবালিশ নিয়ে সকলেরই অনেক কথা আছে বৈ কি। আরে ভাই, গোটা রাতই তো অনেকের কাটে গভীরভাবে এই জড় পদার্থটা বুকে জড়িয়ে পরম নির্ভরতায় ঘুমিয়ে। বেচারা বালিশকে বুকে নিয়ে এপাশ ওপাশ করে নিদ্রাহীন অস্থির রাতও কমজনের কাটে না। কারও কারও কাছে শূন্যতার হাহাকারে পূর্ণ বুকের মাঝখানটাতে প্রাণহীন কোলবালিশ হয়ে উঠে প্রাণসম্পন্ন কোন মানুষ কিংবা মানুষীর বিমূর্ত অবয়ব...আরও কত কী !

বিবাহিত পুরুষের বুকে ভালোবাসায় আলিঙ্গনে থাকা কোলবালিশ দেখে স্ত্রীর ঈর্ষার উদ্রেক হচ্ছে, এরকম কেসও জগতে বিরল নহে (আহেম)। আর সেই আবহমান কাল থেকে অতীব দুঃখে কিংবা উল্লাসে বালিশের উপর নায়িকাদের ঝাঁপিয়ে পড়ার দৃশ্য বাংলা সিনেমার সম্পূর্ণ রঙিন রূপালি পর্দাটি করেছে আরও মহিমান্বিত !

জয় হো বালিশ !!

অন্য লোকের কথা থাক। আমি আমার বালিশপ্রেমের কথা বলি।

পিচ্চিকালে অনেক মেয়েরাই পুতুল নিয়ে খেলে । আমার বাবা মা এটা পছন্দ করতেন না । তাঁরা পুতুল আর খেলনার হাঁড়িবাসন কিনে দেয়ার বদলে খেলতে দিতেন গাড়ি, প্লেন, ফুটবল, ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম, পাজল ইত্যাদি দিয়ে । আর এভাবেই আমার বাচ্চাকালের খেলাধূলার সাথে প্রায় অন্যসব মেয়েদের বৈসাদৃশ্য এবং ছেলেদের সাদৃশ্য ছিলো । আর আমার এই বাচ্চাকালের খেলার সাথীদের সবাই ছিলো ছেলে কেননা তখন আমার বয়সী কোন মেয়ে ওই এলাকায় ছিলো না।

এভাবে পিচ্চি এই আমার পাঁচ ছয় বছর কেটে যায়। যখন ওয়ানে পড়ি, পাশের বাসায় এক নতুন ভাড়াটে উঠলো । আমার সমবয়সী একটা মেয়েও ছিলো সেখানে। নাম ফারিহা। আস্তে আস্তে দেখতে পেলাম, ফারিহার খেলার সরঞ্জাম আর ধরণ আমার সাথে মিলে না। আমি দৌড়াদৌড়ি, লাফালাফি, ঝাঁপাঝাঁপি করে খেলা করি, আর ফারিহা বিভিন্ন প্রজাতির পুতুলে পরিবেষ্টিত হয়ে বসে বসে খেলে। খেলার নিয়মকানুন ওর কাছ থেকে শিখে বায়না ধরলাম বাবা মায়ের কাছে, পুতুল কিনে দিতে হবে। বায়নার জবাবে বাবা মা পুতুল খেলার অপকারিতা সম্পর্কে কী সব যে বুঝালেন। পুতুল না পেয়ে বিমর্ষ এই আমি তখন বালিশকে পুতুল বানিয়ে খেলা শুরু করলাম।

আমি আমার বিছানায় মোট পাঁচটা বালিশ নিয়ে ঘুমুতাম। একটা মাথায় দিয়ে বাকি চারটাকে দুইপাশে রেখে ওদেরকে বাচ্চা বানিয়ে নিজে মা সেজে সে কী মজার খেলা !

গল্প শুনাতাম, গান গেয়ে ঘুম পাড়াতাম, কোনটাকে আবার কাঁধে নিয়ে হাঁটতাম, আদর শাসন দুই ই করতাম, আর ঘুমানোর আগে আমার চার বালিশ-সন্তানকে চুমো দিয়ে ঘুমাতাম । চারজনের নামও ছিলো- জয়, বিজয়, দুর্জয়, অজয় । হাস্যকর হলেও সত্যের খাতিরে স্বীকার করতেই হয়, আমি ক্লাস সেভেন পর্যন্ত এ চার বালিশ-সন্তানদের নিয়ে ঘুমুতাম! সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমার এই বালিশ-সন্তানরা ছিলো ঈসা নবীর মতোই। অর্থাত্‍ তাদের পিতাকে কখনোই কল্পনা করি নি, এখনও করি না, কসম মোবাইল কি!

এরপর তো একটু বড় হলাম। সেই চারটা বালিশও নেই, বালিশ কোলবালিশ নিয়ে খেলার মানসিকতাও চলে গেছে।

টেস্টের পর আবার সেই বালিশপ্রেম আবির্ভূত হলো, কিন্তু অন্যরূপে। কলেজে ভর্তির পর এই প্রীতি দ্বিগুণ হয়ে উঠলো ( এখন তিনগুণ বেড়ে গেছে )।

আগের মতো বিছানায় পাঁচটা নয়, শক্ত মেঝেতে পাতা আমার শীতলপাটির শয্যায় এখন বালিশ সংখ্যা শূন্য । (পরশু এক ভাইয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো যে বাসায় বাড়তি দুটো খাট থাকতে আমি বাবা মায়ের কথার বিরুদ্ধে গিয়ে আমার রুমে খাট না বিছিয়ে কেবল পাটিতে বালিশ ছাড়া ঘুমাই কেন? উত্তরে বলেছিলাম, সাধনা করি। তার প্রশ্ন ছিলো কেন এই সাধনা। হেসে জবাব দিলাম, ইটস কমপ্লিকেটেড।

ওই হারামি এই কথাটাকে এমনভাবে প্রচার করেছে যে কাল রাতে আমার এক মামা আমাকে ফোন করে আবেগ্লাপুত কণ্ঠে বললো, "এ যুগে তোমার মতো ধার্মিক ও ইসলামী মানসিকতাসম্পন্ন মেয়েও থাকতে পারে ? আই এম রিয়েলি প্রাউড অব ইউ, মা। এভাবেই যেন সারাজীবন আল্লাহর পথে তাপসী রাবেয়া বসরীর মতো থাকতে পারো। এই বয়সেই তোমার এই মানসিকতা দেখে বুঝতে পারছি, ইসলামের প্রদীপ এখনও নিভে যায়নি" ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি বাকরুদ্ধ !)

যাই হোক, রাতে ঘুমানোর সময় আলমারি থেকে দুটো ভিন্ন রঙের জামাযুক্ত দুটো বালিশ বের করি। কোনটাই মাথায় দিই না। দুই পাশে দুটো থাকে। বলাই বাহুল্য, এই বালিশদ্বয়েরও নাম আছে, তবে নামগুলো না বলাটাই নিরাপদ!

একটা বালিশ হলো অবাস্তব বালিশ (রুট ওভার মাইনাস ওয়ান সংখ্যাটির মতো), আরেকটা বাস্তব (রুট ওভার ওয়ান)।

ঘুম না এলে কথা বলি অবাস্তব বালিশের সাথে (অন্য কাউকে ভেবে নিতে দোষ কী !)।

তীব্র কষ্ট পেলে মুখ গুঁজে কাঁদি বাস্তব বালিশের উপর (সে কিন্তু বালিশ নয় !)।

স্বপ্ন দেখি বাস্তব অবাস্তব বালিশকে বুকে নিয়ে (এ কি বালিশ?)। দিনের ক্লান্তিগুলো হয়তোবা জুড়ায়, হয়তোবা না...কে জানে!


মন্তব্য

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

আমাব বাল্য বেলায় বালিশ জনিত এক অপমানের কারনে অর্থাৎ আমার মামার ধারনা হলো আমার ভবিষ্যত এক প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চিতে কাটবে সেখান বালিশ পর্যন্ত কেনার সামর্থ হবে না এই অপমানের প্রতিবাদ স্বরপ আমি বালিশ ছাড়া ঘুমুতে শুরু করি । অভ্যেস আর পরিবর্তন হয়নি ।

হা হা হা আপনার লেখা পড়ে স্মৃতি গুলো ভেসে এলো ।

ভালো থাকুন

বক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।চালিয়ে যান।

নৃ [অতিথি] এর ছবি

হাহা.. খুবই ভালো লাগলো আপনার বালিশ বৃত্তান্ত।
পর্ব টুয়ের অপেক্ষাতে আছি :)

সাবিহ ওমর এর ছবি

ছোটবেলায় আমার একটা বালিশ ভাই ছিল হে হে

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

চলুক গাড়ি যাত্রাবাড়ি। আগাম শুভেচ্ছা।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

হরেকৃ্ষ্ণ এর ছবি

আপনি ডাবল ট্রিপল প্রমোশন পেয়ে শিশুকাল ডিংগিয়ে আসলেও বালিশের মাঝে যে অতৃপ্ত বাসনা পূরণ করছেন তা দেখে আমাদের মা-বাবাদের বোধোদয় হওয়া উচিত। আপনার উপেক্ষিত শিশুকালের সাথে আমাদের টেলিভিশনের শিশুদের অনুষ্ঠানের ভাল মিল আছে! তবে কোল বালিশের বর্ণনা দিয়ে আপনার লেখাটি খুব উপভোগ করেছি। এরকম আরো লেখা দেখার অপেক্ষায় রইলাম। ক’দিন আগে কোল বালিশ নিয়ে এরকম আরেকটি লেখা পড়লাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

সাহিত্যে কেউ ট্রিপল নোবেল পেলেও আমার মতো উল্লাসিত হতো না ! আমি আনন্দে বাকরুদ্ধ ! প্রথম কিনা !
গুরুদেব... কী বলবো !

অতিথি লেখক এর ছবি

এবং সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই অজস্র ! এতো বিস্মিত যে ভুলেই গিয়েছিলাম নাম লিখতে আর ধন্যবাদ জানাতে !

(নিশা)

অতিথি লেখক এর ছবি

জোশ জোস

<ভীত মানব>

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রখর রোদ্দুর, বক ও নৃ, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের । আমি বাস্তবিকই বহুত খুশি !

সাবিহ ওমর, এখন ভাইটা কই ?

মহাস্থবির জাতক, আপনার শুভকামনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।

হরেকৃষ্ণ, আমি এখনও শিশুকাল পেরিয়ে আসিনি মোটেও ! :-( আমি এখনও বাচ্চা ! :-D অনেক খুশি লাগলো ভালো লাগলো পড়ে ।

ভীত মানব.. অনেক ধন্যবাদ ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।