চিঠি

সাবরিনা সুলতানা এর ছবি
লিখেছেন সাবরিনা সুলতানা (তারিখ: বুধ, ২৩/০৬/২০১০ - ৮:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই চশমিশ,
তুমি কি জানো, বিষন্ন কোনো সন্ধ্যায় প্রিয়জনের চিঠি পেলে মনটা খুব ভালো হয়ে যায় ?
তুমি কি কোনো এক বিষন্ন সন্ধ্যায় পেয়েছিলে নীল খামে ভালোবাসায় ভরা গোলাপী চিঠি ?
আমি কি পেয়েছিলাম কখনো ! সে কথা কেনো যেনো আজ আর মনে পড়ে না ।
তবে এমন অনেক চিঠি আমি লিখেছি । পাতার পর পাতা লিখে গেছি শুধু । কাকে জানো?
আমার আকাশকে । তুমি তো থাক সেই সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে । তাকে ছাড়া আর কাকে শোনাব আমার দুঃখকাহন, হুমমমমম !?
রাতে ঘুমুতে যাবার আগে আর ভোরে ঘুম ভেঙ্গে তার চেহারাখানি তো অন্তত দেখতে পাই ।
মনে মনে ভেবে নেই,
তুমিও সেখান থেকে তাকেই দেখছ ।

দেখেছো তার কান্ড, মুখ কালো করে বসে আছে সেই সকাল থেকে ।
তবে কাঁদছে না । শুধু থম ধরে আছে ।
ভাবছি কিসের এত দুঃখ তার !
একবার ভাবলাম জিগ্গেস করি, আমার দুঃখের চেয়েও কি বেশি কষ্ট তার?

.......................কি হবে জানতে চেয়ে ! আমি জানি সে জবাব দেবে না! বোবা হয়ে থাকাটাই যেনো তার এক মাত্র কাজ ।

যাকগে সে কথা,
এখন বলো, তুমি কেমন আছ আজ ? খেয়েছ তো ঠিক মত ?
শরীর কেমন ? জানো, সন্ধ্যায় তোমার ফোন পেয়ে এত্ত ভালো লাগলো ।
এই সময়ে তো সাধারণত ফোন করো না তুমি .....
ও হাঁ ভালো কথা, বিড়ালটা এখন ঠিক মতোন খাচ্ছে । তবে,
সারাদিন চুপটি মেরে বসে থাকে আর ইটুস পিটুস কি যেনো ভাবে ।
মাসীর সেই ব্যাথাটা গত রাতে একটু বেড়েছিলো । ভাবছি ডাক্তার চাচাকে দেখিয়ে আনি, কি বলো?
হুমম, কাল-ই যাবো । চিন্তা করো না । এই শোনো,
মাসী ডাকছে । আজ তবে উঠি ? হুমমম.... যদি তুমি অনুমতি কর তবেই ।
হয়েছে হয়েছে এমন করে হেসো না তো আর ।
কতবার বারণ করেছি । তোমার ওই বিচ্ছিরি হাসিটা আমার একেবারেই অপছন্দ । মানিইইইইই.....দিলে তো মেজাজটা খারাপ করে....
সত্যি-ই উঠছি এবার ।

হুম....শোনো, ভালো থেকো তুমি । অনেক ভালো থেকো ।
ভালো থেকো সারাবেলা । সারা রাত্তির ।
তুমি ভালো থাকলে যে আমিও অনেক ভালো থাকি । তাই, আমার জন্যে হলেও ভালো থেকো ।
ভালো না থাকলেও ভালো থেকো । আর নিজের দিকে একটু খেয়াল রেখো ।

ইতি -
"আমি"

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

সাবরিনা সুলতানা


মন্তব্য

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

ভালো থাকুন আপনারা দুজনেই

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো থাকুন আপনিও
ধন্যবাদ হাসি

সাবরিনা সুলতানা

সাফি এর ছবি

যারা চশমা পড়েনা তাদের কেউ চিঠি লেখেনা মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

চশমার সাথে চিঠির কি সম্পর্ক ভেবে পেলাম না চিন্তিত

সাবরিনা সুলতানা

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

এটার সাথে কেন যেন মর্মের একটা সম্পর্ক খুঁজে পালুম পালুম মনচ্ছে।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অতিথি লেখক এর ছবি

কে জানে, হবে হয়ত .....

সাবরিনা সুলতানা

সুজন সুপান্থ এর ছবি

অসাধারন একটি চিঠি | পড়ে খুবই ভাল লাগল | ভাল থেক |
তোমার জন্য শুভ কামনা

সুজন সুপান্থ

অতিথি লেখক এর ছবি

তুমিও ভালো থেক হাসি

সাবরিনা সুলতানা

অতিথি লেখক এর ছবি

"তুমি কি জানো, বিষন্ন কোনো সন্ধ্যায় প্রিয়জনের চিঠি পেলে মনটা খুব ভালো হয়ে যায় ?
তুমি কি কোনো এক বিষন্ন সন্ধ্যায় পেয়েছিলে নীল খামে ভালোবাসায় ভরা গোলাপী চিঠি?".........

আমিও চশমিশ। তবে কখনই চিঠি পাইনি। ভাল চিঠি লিখতেও পারিনি কখনই। তবে আপনার এ চিঠির প্রতিটি বাক্য অনুভব করতে পারি।

"কাকে জানো?
আমার আকাশকে । তুমি তো থাক সেই সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে । তাকে ছাড়া আর কাকে শোনাব আমার দুঃখকাহন, হুমমমমম !?".........

আমার মিতা পাহাড়। আমার দুঃখকাহন আমি তাকেই শোনাই।

"জানো, সন্ধ্যায় তোমার ফোন পেয়ে এত্ত ভালো লাগলো ।
এই সময়ে তো সাধারণত ফোন করো না তুমি ".....

ঠিক। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মত। বৃষ্টি বেশ ভাল লাগে।
সবশেষে বলতে চাই। হৃদয়ের অনুভূতিগুলো কাগজে কলমে বেশ গোছাতে পেরেছেন। আমি অত্যন্ত অগোছালো। হাসি......চমৎকার!! খুব্বি ভাল লাগল। আরও কিছু কথা বলতে চাই......

"শোনো, ভালো থেকো তুমি । অনেক ভালো থেকো ।
ভালো থেকো সারাবেলা । সারা রাত্তির ।
তুমি ভালো থাকলে যে আমিও অনেক ভালো থাকি । তাই, আমার জন্যে হলেও ভালো থেকো ।
ভালো না থাকলেও ভালো থেকো । আর নিজের দিকে একটু খেয়াল রেখো ।"
--তাসরিভা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ! এই তো কি চমৎকার গুছিয়ে লিখেছেন !! আপনিও একদিন পাবেন নিশ্চয় নীল খামে গোলাপী চিঠি যাতে মায়া আর ভালোবাসার এক অদ্ভুদ শিহরণ থাকবে ...ভালো থাকবেন অনেক ভালো ...আর যত্ন করে প্রতিক্ষা করুন সেই সুন্দর দিনটির ....

সাবরিনা সুলতানা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।