মানুষ যখন বুড়ো হয়ে যায়, সামনের সময়ের দিকে তাকালে বার্ধক্যের ধূসর হাতছানি চোখে পড়ে, তখন তারা পিছন ফিরে পিছনের সময়ের দিকে তাকায়। সাধারণত। অন্তত বেশির ভাগ লোকে তাই করে। তাই আমরা মানে আমি আর আমার ছোট ভাই যখন রাত বিরাতে বসে ফেলে আসা ছোটবেলার স্মৃতি নাড়াচাড়া করতাম, আব্বা ঘুমাতে যাবার তাড়া দিতে এসে হেসে ফেলত,
“ তোরা এইটুকু পিচ্চি মানুষ, তোদের আবার স্মৃতি কতটুকু, যে সেটা আবার উলটে পালটে দেখিস, তাও এতক্ষণ ধরে? তোদের স্মৃতিচারণ তো ২ মিনিটেই ফুরিয়ে যাবার কথা।”
কি জানি কিসের এত স্মৃতি ছিলো আমাদের? ছোটবেলায় আমরা কি কি সব কান্ড কারখানা করতাম আর কি কি সব আজব খেলা খুজে বের করতাম সেগুলো মনে করে হাসাহাসি করতাম নিজেদের বোকামি আর উদ্ভট আইডিয়া গুলো নিয়ে। ছোটকালে যে আনন্দ নিয়ে ঐসব কীর্তিকলাপ করেছিলাম সেটার কিয়দংশ হয়ত আবার বুকের মাঝে খেলা করত। আব্বা যতই হাসাহাসি করুক, মাসে ২-৩ দিন রাতের খাওয়ার পর হয় হিমেলের ঘরে নয়ত আমার ঘরে গল্প টুকটাক কথা থেকেই একসময় স্মৃতির রাজ্যে হারিয়ে যেতাম।
কিসের এত স্মৃতি? ঐ যে কাঠালবাগানে আমাদের পাশের দোতলা বাড়ির ছাদে একটা বিড়াল ছিলো, সাদা আর কমলা রঙের, যার নাম দিয়েছিলাম মতি মিয়া, সেটার কথা। হিমেলের ঘরে একটা বাচ্চা টিকটিকি ছিল, যাকে “মোতালেব” নাম দেওয়ায় যে মন খারাপ করে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিল, সেটার কথা। মোতালেবের স্মরণে আড়ং থেকে কেনা একটা কুমিরের নাম রেখেছিলাম মোতালেব। সেটা হাতে নিয়ে খেলতে খেলতেই মনে পড়ত মোতালেবের কথা, সেখান থেকে মতি মিয়ার কথা। উলটা পালটা নামকরণ করতে আমাদের জুড়ি ছিলো না। মতি মিয়ার একবার একটা সঙ্গিনী জুটলো, তার নাম দিলাম মন্নুজান বিবি। ক’দিন পর দেখা গেলো মন্নুজান আপা আসলে একটা হুলো, তার ঔরসে মতি মিয়া চারটা ফুটফুটে বিড়ালছানা পয়দা করে ফেললেন। দোতলার ছাদে টিনের চালের আড়ালে সেগুলোকে লুকিয়ে রেখে সে কোথায় হাওয়া হয়ে যেত আর পাশের বাড়ির চারতলার জানালা থেকে আর আমি আর হিমেল পালা করে নজর রাখতাম সে বিড়াল ছানাগুলার উপর যাতে দুষ্টু কাক গুলা এসে ওদের জ্বালাতে না পারে। যখন কাকগুলা একটু বেশি সাহসী হয়ে বিড়ালের বাচ্চাগুলাকে ঠোকরাতে যেত তখন ওয়াটারগানে পানি ভরে রেসকিউ মিশনে নেমে যেতাম। রীতিমত অ্যাকশন মুভ, কাকের গায়ে লাগাতে হবে, কিন্তু সাবধান! বিড়ালের বাচ্চার কানে যেন পানি না ঢুকে। ছোটবেলার জীবনের সরলতা আমাদের আবিষ্ট করত। (মতি মিয়ার বাচ্চাগুলো পরে একদিন বৃষ্টিতে ভিজে মরে গিয়েছিল।)
আরো কত বিড়ালের গল্প। “আলীভাই” নামের সেই সাদা কালো বিড়ালছানাটা। আম্মুর দুপুরের ঘুমের সুযোগে হিমেল যেটাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে আমাদের বারান্দায় আটকে রেখেছিল। বারান্দার কাচের দরজায় নিজের প্রতিবিম্বকে যে নিজেই ঝাড়ি মেরে যাচ্ছিল। অতটুকু পুঁচকে বিড়ালটার তেজ দেখে আমরা মুগ্ধ আবার তার বোকামিতে বিনোদিত। আজকে রাস্তায় হিমেল নাকি আলীভাই কে দেখে এসেছে। তাই রাতে তার কথা বলতে বলতে আমরা আবার স্মৃতির রাজ্যে ডুব দেই।
“তোর কাউলার কথা মনে আছে?”,
“একেবারে ময়লা, গন্ধ ছিলো বিড়ালটা। একদমই কিউট ছিলো না, এতিম এতিম ফকির এর মতন। বৃষ্টির মাঝে কি কষ্ট করে কার্নিশের নিচে দেয়াল ধরে ঝুলে ছিল শুকনা থাকার জন্য।“
“ঐরকম পচা দেখতে বলেই ওর মা ঐটাকে ফেলে চলে গেছিল। আমরা একটু আদর করছি দেখে কিরকম জ়োর করে বাসায় থেকে যেতে চাচ্ছিল। আহারে বেচারা!”
আমরা বিড়ালের দুঃখে মাথা নাড়ি। এই বিড়াল বাচ্চা টাকে আমরা জানালার কার্নিশের নিচে থেকে উদ্ধার করেছিলাম ঘন্টাখনেকের জন্য। (আম্মার কুকুর বিড়াল পছন্দ না, এইজন্য আমাদের কোন ফিক্সড পোষা প্রানী নাই, আবার এইরকম ঘন্টাখানেকের পোষ্য অনেক আছে।) বেচারা বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে কার্নিশে উঠার চেষ্টা করছিল দেয়াল খিমচে খিমচে, কিন্তু এত ছোট যে লাফ দেয়া শিখে নাই বলে লাফ দিয়ে কার্নিশে আর উঠতে পারছিল না। দেয়াল খিমচে ঝুলে ছিল কোনরকমে, তখন হিমেলকে পাঠিয়ে ওটাকে ঘরে নিয়ে আসি। তারপর হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ওটার ভেজা শরীর শুকিয়ে শ্রী ফেরানোর চেষ্টা করি। এখানেই শেষ না।তাকে বাটিতে করে টেংরা মাছ দেয়া হয়, দুধ দেয়া হয়। তার সাথে আমাদের পোষা কাছিম দুটার পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। সাইজে দশ ভাগের এক ভাগ হলে কি হবে, কাছিম গুলোকেই বিড়াল ছানার উপর বেশি চোটপাট করতে দেখে এই গোবেচারা কাউলার উপর আমাদের আরো মায়া পড়ে যায়। আম্মু দুপুরের ঘুম থেকে উঠার আগে আমরা আবার বাচ্চাটাকে বাইরে রেখে আসতে যাই, কিন্তু বেচারা কিছুতেই যাবে না। আমরা যতক্ষন তাকিয়ে থাকি, মন খারাপ করে চলে যেতে থাকে, যেই পিছে ফিরে ঘরে ঢুকতে যাব, সে দৌড়ে এসে আমাদের আগে ঘরে ঢুকে পড়ে। কি চালাক! সোজা আম্মুর ঘরে ঢুকে ছোটাছুটি করতে থাকে। আমরা আতঙ্কিত হয়ে যথাসম্ভব নিঃশব্দে (আম্মু যেন উঠে না যায়) তাকে ধরার জন্য তার পিছে ছুটতে থাকি। অনেক কায়দা কানুন করে শেষ পর্যন্ত তাকে বাইরে রেখে দরজা আটকাতে পারি। কিন্তু বাইরে থেকে তার দুর্বল মিউ মিউ শুনে মন কেমন করতে থাকে,
“ইশ! বেচারা বাইরে না জানি কত কষ্টে থাকে বাইরে বাইরে, এই জন্য জোর করে থাকতে চাইছিলো আমাদের কাছে।”
“একটু ভালো খাওয়া দিলে আর শ্যাম্পু দিয়ে গোসল দিলে গন্ধটা চলে যেত মনে হয়।”
“বুদ্ধিমান ছিলো বিড়ালটা। কিরকম চলে যাওয়ার ভান করতেছিল।”
বিড়ালের সুখ দুঃখ নিয়ে চিন্তা করে আমরা বর্তমানের ঘোট পাকিয়ে দিন দিন জটিল হতে থাকা প্রাপ্তবয়স্কের জীবন থেকে ক্ষণিকের ছুটি কাটাই। রান্নাঘরের কাছ থেকে ঘুটুর ঘাটুর শব্দে আমরা সচেতন হই। রাত সাড়ে বারোটা বাজে। আম্মা তো কখনই আমাদের ঘুমাতে যাবার তাড়া লাগিয়ে, গ্লাসভর্তি দুধটা গিলিয়ে দিয়ে ঘুমাতে চলে গেছে। শব্দ করে কে?
“হারুন আসছে কাটা কুটা খেতে।” হারুন হচ্ছে আমাদের আরেকটা সেমি-পোষা বিড়াল মাস্কি (মুখের কালো ছোপ দেখে মনে হয় ব্যাট্ম্যানের মত মাস্ক পরে আছে)- এর বেটা (বেটিও হতে পারে।) এই একটা বিড়াল কিভাবে যেন আম্মাকে পটিয়ে ফেলেছে। আম্মা সারা দিনের মাছের কাটা, মুরগির হাড্ডি, বাসি তরকারি সব একটা বাটিতে করে রান্নাঘরের বাইরে একটা বাটিতে রেখে দেন, হারুন রাতে সেটা খেতে আসে, আর কোন কিছুতে মুখ দেয় না। সম্ভবত এই ভদ্র আচরণের কারনে সে আম্মার সম্মতি আদায় করতে পেরেছে।
লেখাটা বড় হয়ে যাচ্ছে। এক পর্বে শেষ হবে বোধ হচ্ছে না। কে বলে আমাদের পিচ্চি স্মৃতি দুই মিনিটেই শেষ? খালি বিড়ালের গল্পেই রাত কাবার? আমাদের সেই রিকশাওয়ালা খেলা, লুকান্তি নামে আমরা যে একটা আজিব খেলা বের করেছিলাম তার কথা, সেগুলা তো বলাই হলো না। আর আমাদের ম্যারাথন ভিডিও গেম খেলা ৯৬ এর অসহযোগ আন্দোলনের ছুটিতে কিংবা বছর শেষে হোমওয়ার্কের খাতা গুলি দিয়ে যে কাগজের প্লেনের ফ্যাক্টরি দিতাম সেসব কথা তো বাদই রইলো।
আশা করি পরের পর্ব তে লিখতে পারব সেসবের স্মৃতি চারণ।
=শিশিরকণা=
(নিজের নাম ঠিকানা দিতে ভুলে গেছিলাম, আগের ব্লগটি উপেক্ষা করবেন দয়া করে।)
মন্তব্য
ভালো লাগল!
আমারও বেড়াল ছিল। একাধিক বেড়াল পুষেছি আমি। একটার নাম দিয়েছিলাম জন। জন ছিল খুবই হিংস্র টাইপের। ওর সামনে অন্য কোন বেড়াল তো দূরে থাক কুকুরও আসতে সাহস পেত না। বেড়ালটিকে যখন পেয়েছিলাম বয়স তখন মাসখানেক হবে। দুই মাসের মধ্যে সে যে পরিমাণ বেড়ে উঠল তাতে আমি ও আমার ছোট ভাই ভীষণ খুশি হলাম। ও যখন সাইজে সাধারণ বেড়ালের প্রায় দেড়গুন হয়ে উঠল তখন আমার আনন্দ দেখে কে! আমারা ভাইবোনরা সবাই লম্বায়খাট। এ নিয়ে বিশেষ করে আমার ভিতরে খুব একটা বেদনা ছিল। অনেক ঝুলেটুলেও শেষ পর্যন্ত পাঁচফুট ছয় ইঞ্চির বেশি হতে পারিনি। কিন্তু বেড়ালের এই অভাবনীয় বৃদ্ধি আমাকে ভীষণ আনন্দ দিল। অপরিচিত কাউকে দেখলে ও যেভাবে ফ্যাঁচ করে উঠত তাতে আমরাই চমকে যেত। বন্ধুবান্ধব অনেকে বলত এটা বেড়াল না বাগডাসার বাচ্চা। আশেপাশের সব ফ্লাটবাড়ির পোলাপান জনকে ভয় পেত। কিন্তু যারা আমাদের ঘনিষ্ট ছিল তাদের সাথেও জনের একটা সুসম্পর্ক গড়ে উঠল। জনের সবচেয়ে ভালদিক হচ্ছে ও হ্যাঙলা ছিল না। দুধ খাওয়ার বয়স পার হলে ও আর খাবারের জন্য আমাদের মুখাপেক্ষি থাকেনি। ও বাইরে থেকে খাবার জোগাড় করত। আমাদের এলাকায় চিকা আর ইঁদুরের অভাব ছিল না। প্রচুর গাছপালা ছিল। ঝোপঝাড় ছিল। সোজাকথা একটা গ্রামীন পরিবেশে যা যা থাকার কথা তার সবকিছুই ছিল। জন পরিবেশ থেকেই তার খাবার জোগাড় করে নিত। মাঝে মাঝে সে বাসায় আসত। দরজার বাইরে আঁচড়াত। সেই শব্দে আমরা বুঝতাম জন এসেছে। আবার অনেক সময় সে বাসায় আসার জন্য জানালাও ব্যবহার করত। এটা অবশ্য পূর্ণ বয়স্ক হবার পরে। মাঝে মাঝে আমি জনকে কাঁধে করে ঘুরে বেড়াতাম। অন্যরা ভয় মিশ্রিত চোখে তাকিয়ে দেখত। গর্বে আমার বুক ফুলে উঠত। কিন্তু ওকে আমি সাইকেলে ওঠাতে পারি নি। সাইকেল দেখলেই জনের লোমগুলো সব খাড়া হয়ে উঠত। আমার ইচ্ছ করত জনকে হ্যান্ডেলের উপর বসিয়ে সাইকেল চালাই। কিন্তু জন এ ব্যপারে খুবই অনিচ্ছুক ছিল। আমি সাজে মাঝে ওকে কাধে নিয়ে সাইকেলে উঠতাম। এর ফল এই হত যে ও আমার কাঁধ থেকে লাফ দিয়ে নেমে যেত আর না হয় এমন ভাবে আমার কাঁধ আকড়ে ধরত যে আমার কাধে নখের দাগ লেগে যেত। মা আবার এসব ব্যপারে খুব কড়া। আমাকে পিটুনি দেবার জন্যে তার প্রিয় অসত্র ছিল হাতপাখা। অবশ্য হাতলওয়ালা কোন অস্ত্রেই তার অরুচি ছিল না। বেত, ঝাড়ু, পর্দা ঝোলাবার লাঠি এমন কি ঘুড়ি ওড়াবার লাটাই পর্যন্ত আমার পিঠে তিনি ভেঙ্গেছেন। শিশুকালে আমার ডিফথেরিয়া হয়েছিল। আমি মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। তাই বেড়াল নিয়ে বাড়াবাড়ি তিনি খুব সুনজরে দেখতেন না। কিন্তু জনের প্রতি গোপনে তারও একটা সফট কর্নার ছিল। আমাদের এলাকায় অনেক কুকুর ছিল। কিন্তু জনের দাপটে কোন কুকুর আমাদের বাসার আশেপাশে ঘেষতে পারত না। গর্বে আমার বুক ফুলে উঠতো। জন ছিল হুলো। রোজ সকালে বাইরে চলে যেত। আমরা থাকতাম একটা দোতালা ফ্লাটের দোতলায়। বাইরে যাবার সময় সে দরজা আঁচড়াত। আমরা দরজা খুলে দিতাম। ও বাইরে চলে যেত। স্টিলের ভারী চেন ওর গলায় পরিয়ে দিয়েছিলাম। রাস্তায় সাদা লোমের জন যখন ভারিক্কীচালে হাঁটতো, ওর চেনের উপর রোদ পড়ে ঝিকমিকিয়ে উঠত। আমি মুগ্ধ বিষ্ময়ে চেয়ে থাকতাম।
এ কি! মন্তব্য লিখতে বসে নিজের কাহিনী লিখতে শুরু করেছি। তবু তো লিখলাম।
শিশিরকণাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি। আপনার লেখাটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।
আপনার স্মৃতিচারণের জন্যও ধন্যবাদ। 'জন' কি এখনো আছে ?
-শিশিরকণা-
শিশিরকণা, এইসব ঘটনা ১৯৮১-৮২ সালের। জন বেশিদিন আয়ু পায় নি। ওর সাহসের কারণেই ও মারা যায়। এপাল কুকুরকে ও চ্যালেন্জ করে বসে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যুদ্ধ করে ও মারা যায়। আমি নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়েছিলাম খালাবাড়িতে বেড়াতে। এর মাঝে এই ঘটনা। কেউ দেখে নি। নৈশ প্রহরীর কাছ থেকে আমি পরে জানতে পারি।
বেড়াল নিয়ে লেখা, একে ভাল না বলে উপায় আছে কোন?!
লেখা ভাল হয়েছে, তবে ঘটনা বেশি তো, মনে হয় লেখার দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে দুই পর্বে ভাগ করে দিলেও দিতে পারতেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
অফটপিকঃ দেখেন তো, একে চেনেন কিনা?!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
পড়বার জন্য ধন্যবাদ। বেড়াল নিয়ে তো আসলে লিখতে বসিনাই, কিন্তু স্মৃতিচারণের বড় অংশ জুড়ে বেড়ালের পদচারণা, প্রথম পর্বে সেগুলাই লিখে ফেললাম। "মিয়াঁও" এর জন্য আদর রইল। আমি মানুষের চে' পশু পাখিই বেশি ভালু পাই।
কী মায়া- মায়া লেখাটা......
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ, তিথী'পু। আপনার লেখাও আমি ভালু আর মায়া মায়া পাই। (যার মনে মায়া সে সবখানেই মায়া খুজে পায়)।
-শিশিরকণা-
মতি মিয়া, মোতালেব, আলীভাই, হারুন আর মন্নুজান বিবির কাহিনী পড়ে বড়ই আনন্দ পেলাম। আচ্ছা, পোষা কাছিম দুইটার কোনো নাম ছিল না?
অবশ্যই নাম আছে।
বড়টার নাম ইবনে বতুতা, ডাকনাম কলম্বাস। ছোটটার নাম মার্কো পোলো, ডাকনাম ম্যাগেলান। যদিও তাদেরকে আমরা বড় কাইচ্ছা আর ছোট কাইচ্ছা নামেই ডাকি। এবং বরাবরের মত আমার নামকরণকে কাচকলা দেখিয়ে কলম্বাস মাসে ২-১টা করে ডিম পেরে নিজেকে স্ত্রী-জাতির প্রমাণ করেছে।
http://forum.petturtle.com/album_pic.php?pic_id=107 এখানে ছবি পাবেন।
ভালো লাগল। হাত খুলে দেদারছে লিখতে থাকুন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
- বিল্লি টিল্লি খুবেকটা পছন্দ না, পালাপোষাও হয় নি কখনো। কিন্তু আমার বাকি দুই ভাই সম্পূর্ণই আমার বিপরীত। ছোটজন তো দুই কাঠি সরেস। তার তত্ত্বাবধানে দুই-দুইটা বিলাই আমাদের বাড়িতে পালা হতো।
আমার একটা কচ্ছপ ছিলো, হাতের তালুর সমান বড়। তো এই ব্যাটাকে সাদা ভাত দিতাম, খেতো না। ডাল দিয়ে মেখে দিতাম, তাও খেতো না। পরে উপর মহলের আদেশক্রমে তাকে পুকুরে ছেড়ে দিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলাম।
পাখি পোষার খুব শখ ছিলো। কিন্তু কখনো পোষা হয় নি। বন থেকে যেগুলো ধরে আনতাম, সেগুলো হয় পটল তুলতো, না হয় ছেড়ে দিতাম বাধ্য হয়ে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ওয়াও! মহামান্য ধুগোর পদধুলি আমার পোস্টে!!! দ্বিতীয় পর্ব লেখার উৎসাহ পেলাম। নামিয়ে দিচ্ছি।
আমারও আসলে কুত্তা-বিলাই পুষতে বেশি ইচ্ছা নাই, হাগা মুতা পরিষ্কারের ঝামেলার ভয়ে। টেম্পরারী পোষ্যিই ভালো।
কাছিম শুকনাতে খায় না। পানিতে ভেসে ভেসে খায়, শসা, শাক পাতা, পেয়াজ, কিমা বানায় দিলে মাংস। সবচে মজা এদের রোদ পোহানো দেখতে, এত আরাম করে চোখ বুজে পড়ে থাকে, মনে হয়, আহ! এই তো জীবন।
আমার কাছিম জোড়া বিশেষ একজনের উপহার দেয়া। যখন পেয়েছিলাম ওজন ছিল ১৫ গ্রাম। এখন ১ কেজির কাছে। আরো ছিলো ২টা মুরগি।
-শিশিরকণা-
নতুন মন্তব্য করুন