ইদানীং কিছু ব্লগ পড়ে মনে চেপা থাকা কিছু ঘটনা ও কথা ব্যক্ত করতে ইচ্ছা হল। ফলশ্রুতিতে এই ব্লগের জন্ম।
ঘটনা ১!
গত বছর এপ্রিলে এক টিউশনি করবার সৌভাগ্য হয়েছিল। দু'ভাইকে একসাথে পড়াতাম। একই ক্লাসে। কেবল স্কুলের গন্ডি পেরিয়েছে, ভাতৃদ্বয়ের কলেজ ভর্তি তখনও প্রক্রিয়াধীন।
শিক্ষার যে অবস্থা, গরু ছাগলেও এখন ডিগ্রী পায়। যতদূর মনে পড়ে এ+ সিস্টেমে প্রথম বছর মাত্র একজন এ+ পেয়েছিল। তারপর y=x^2(১ম চতুর্ভাগে) কার্ভের মত বছর দশেক যেতে না যেতেই এ+ এর সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার+।
তো ভর্তি নিয়ে দুই ভাই বেশ বিপদে পড়ে, কারণ শিক্ষার্থীর ছেয়ে আসন সংখ্যা অনেক কম। যদিও তাদের সার্টিফিকেটে স্বর্ণাক্ষরে লেখা ছিল A+।
এর মাঝে একদিন গিয়ে দেখি তাদের মন বেজায় খারাপ।
কারণ জানলাম তাদের প্রত্যেকেই এক কলেজে ওয়েটিং লিস্টে ছিল। একজনের সামান্য একটু সুযোগ ছিল ভর্তি হবার, কিন্তু শেষ মুহূর্তে কে একজন মুক্তিযুদ্ধ কোটায় তার সন্তানকে ভর্তি করিয়েছে।
আমার ভেবে একটু খারাপই লাগলো। আসলে কোটা ব্যবস্থা যে কত ঝামেলা পাকায়।
এসব ভাবছি, এসময় ছোটজন বলে ওঠে,"মুক্তিযুদ্ধ কোটা, উপজাতি কোটার মত যদি রাজাকার কোটা থাকতো।"
আমি ওখানেই পুরা স্তব্ধ।কি কয়? মাথা ঠিকা ছে তো? হঠাৎ করে এই কথা কেন?
আমি না জিজ্ঞেস করে পারলাম না,"কেন?রাজাকার কোটা থাকলে কি হতো?"
"না, আব্বায় রাজাকার ছিল, মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফিকেটের মত রাজাকার সার্টিফিকেট থাকলে আর কোটা ব্যবস্থা থাকলে আজ আমরাও ঢুকতে পারতাম।"
আমি বাকরুদ্ধ। কি বলবো কিছুই বুঝতেছিলাম না।
সেদিন বাসায় আসার পথে অনেকক্ষণ ভেবেছি, টিউশনিটা করবো কি করবো না। রাজাকারকে ঘৃণা করতে পারি কিন্তু তাই বলে তার সন্তানের সাথে একই কাজ করতে হবে এমন কোন কথা নেই।
অবশ্য পরবর্তী ঘটনাবলী আমার ধারণাটি ভুল প্রমাণিত করে। বুঝিয়ে দেয়, দেখিয়ে দেয় আঙ্গুল দিয়ে, পাকিস্তানিরা চলে যাবার আগে কি ভয়াবহ কিছু জানোয়ার রেখে গেছে দেশে।
একদিন পড়ানোর সময় জানতে পারলাম ক্লাসে তাদের পদ্মানদীর মাঝি পড়ানো হচ্ছে, কিন্তু তাদের পিতা শক্তভাবে বলেছেন "ইহা একটি অশ্লীল পুস্তক, কোনভাবেই তা পড়া ঠিক হবে না। তাছাড়া বাংলা বইয়ে যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অধ্যায়টি আছে তা না পড়লেও চলবে। সেই একই প্যাচাল যুদ্ধ করতে গিয়ে মরে গেছে। মরে গিয়ে নিজের লাভটা হইলো কি?ভোগ তো কিছু করা হল না।"
আমি তাদের পিতার উত্তর শুনে জিজ্ঞেস করেছিলাম," তোমাদের কি মনে হয়, কোন লাভ হয়েছে?"
"মনে তো হয় না, বরং পাকিস্তানের সাথে থাকলেই ভালো হতো, অন্তত তখন পুরোপুরি পাকিস্তানের ক্রিকেট টীমকে সাপোর্ট করা যেত।"
সেদিন নিচে নেমে আর ও সিঁড়ি বেয়ে আমি কখনও উঠিনি।
ঘটনা ২!
পাকিস্তান টিমের কথা বলায় মনে পড়লো।
৯৯ এর বিশ্বকাপ, পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ।
ছেলেটার নাম ছিল রণ। আমারই সহপাঠী, সেই রকম স্বাস্থ্যবান এবং চৌকস। বাসায় সারাদিন ডাব্লিউডাব্লিউএফ দেখতো আর প্লেস্টেশন খেলতো। রণ ছিল প্রচন্ড জ়েদী ও একগুঁইয়ে। প্লেস্টেশন-২ বেড়িয়েছে সেবার। ওর কাছে ছিল পুরোনাটা। রণ ওর বাবাকে গিয়ে বলে," আব্বু নতুন প্লেস্টেশনটা কিনে দিতে হবে।"
আঙ্কেলের সাফ উত্তর,"আগে এটা ভাঙ্গুক, তারপর..."
দুমিনিট পর রণ ভাঙ্গা প্লেস্টেশন নিয়ে ঘরে ঢোকে। আঙ্কেল তো রেগে ফায়ার।
"শয়তানের হাড্ডি, এটা ভাংছোস কেন? মাইরে যদি তোর হাড্ডি আজ্ গুঁড়া না করছি।"
আঙ্কেল চরম মাইর দেন, রণ সেদিন বিকালে বাসার থেকে লাপাত্তা হয়ে যায়।
সেদিন রাতেই আবার ওকে খুঁজে পাওয়া যায় চাংখারপুলের কাছে, এক হোটেলে। ক্ষুধার চোটে হোটেলে ঢুকে খেয়েছে, কিন্তু টাকা না থাকায় বিল দিতে পারেনি। পরে হোটেল মালিক রণ'র আব্বার ফোন নাম্বার নিয়ে সব কথা জানায়।
আঙ্কেল আসেন রাত ১টায়। রণকে গাড়িতে উঠতে বলেন। রণ উঠবে না, যতক্ষণ না তাকে নতুন প্লেস্টেশন দেওয়া হবে। আঙ্কেল কথা দেন কাল সে নতুন প্লেস্টেশন পাবে।
এই রণ একদা আমার খুব কাছের বন্ধু ছিল। তো সেই বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচের দিন সে পাকিস্তানের জার্সি পড়ে ক্লাসে উপস্থিত। আমি তো পুরাই টাস্কি। জিজ্ঞেস করলাম "কিরে, তুই থাকোস বাংলাদেশে, খাসও বাংলা খাবার, আর সাপোর্ট করলে পাকিস্তান?"
"পাকিস্তান খেলে ভালো, সাপোর্ট করতেই পারি।"
তারপরও মানুষ তো নিজের দেশকে সাপোর্ট করে, তুই নিজের দেশকে সাপোর্ট করিস না কেন?"
"কারণ আমার বাসার কেউ করে না, আমারও বাংলাদেশ ভালো লাগে না।"
আমি, ক্লাসের স্যার আর বাকী কয়েকজন মিলে অনেক চেষ্টা করেও ওকে বাংলাদেশের সাপোর্টে আনতে পারলাম না। ক্লাসের সবাই বলেনি, কারণ অনেকেই পাকিস্তানের সাপোর্টার ছিল।
রণ এখন কোথায় আছে আমি জানি না, তবে আশা করি ছেলেটা ভালো আছে। অনেক সহজ সরল ছিল ছেলেটা।
ঘটনা ৩!
"তোর বাসায় কোন পত্রিকা রাখে?"
"ইনকিলাব না হয় সংগ্রাম।"
"কেন?প্রথম আলো, বা জনকন্ঠ রাখে না কেন?"
"ইসলামিকভাবে লেখা হয়, তাই সংগ্রাম/ ইনকিলাব রাখা হয়। অন্য পত্রিকাগুলোতে খবর তেমন একটা থাকে না।"
“কে বলছে তোকে?”
“আমি জানি খালি বিজ্ঞাপন আর বিজ্ঞাপন। খবর দেয় না।”
“কিন্তু তাই বলে সংগ্রাম বা ইনকিলাব?”
“আরে, এইসব কবে কার কথা, ওগুলো কি মনে রাখতে আছে?”
আমার ক্লাসমেট। কি আর বলবো তাকে???
ঘটনা ৪![i]
নাসিম, পড়ে এলএলবিতে। বাবা কোর্টে প্রাকটিস করেন, মুক্তিযোদ্ধা।
ওর বোন পড়ছে স্বনামধন্য শিবিরঘেষা কোচিং সেন্টার রেটিনায়। কথাটা নাসিমও জানে। কিন্তু ওর সাফ কথা,"দরকারের সময় এসব চিন্তা করলে চলে না। রেটিনার লোকজন দেখা গেছে কিভাবে কিভাবে প্রশ্ন পেয়ে যায়। বোনটা ডাক্তারি পড়তে চায়। তাছাড়া শিবিরঘেষা বলে যে সবকিছুই যে খারাপ হবে এমন কোন কথা তো নেই।"
একই কথা আমার আর এক বন্ধু দেব'র। ওর বোনও পড়ছে রেটিনায়।
পড়ুক, পড়ে অন্তত নিজেদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে তো পারবে।
এখন আমার মনের কথা বলি।
শিবির প্রতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি ফল প্রকাশের পর কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজন করে, আমাদের সময়ও করেছিল। বিশাল আয়োজন, বিশাল ব্যয়। আসে কোথা থেকে?
এখন আবার ইসলামী ব্যাংক দেওয়া শুরু করেছে। এই সপ্তাহে দেওয়া এসএসসি শীক্ষার্থীদের সংবর্ধনায় তারা প্রত্যেক ছাত্রকে দিয়েছে সার্টিফিকেট, ব্যাগ, ক্রেস্ট এবং ১০০০ টাকা। আসে কোথা থেকে এসব?
উৎস সম্পর্কে একটু বুঝতে পারলাম এই লেখাটি পড়ে। অত্যন্ত সময়োপোযোগী লেখা।
ওখানে সম্ভবত দুটো কি তিনটে খাত বাদ পড়ে গেছে, এর মধ্যে একটি হল এনজিও'র নামে বাইরে থেকে আসা অর্থ, আর একটি হল সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ।
এক্ষেত্রে বলে রাখি শেষোক্ত বিষয়টি অনেকটা চক্রের মত। শেষেরটার শুরু বাকী সবকিছুর ইন্ধনে।
অনেকটা এরকমঃ আপনি একটা মেশিন বানালেন। বানানোটাই যা কষ্ট, এরপর একজন অপারেটর তা মেইনটেইন করবে। হুবহু একই জিনিস।,একটা ব্যবস্থা শিবির বা জামাতে ইসলামী দাঁড়া করেছে, এখন বছরকে বছর এটা আণ্ডা দিচ্ছে।
ব্লগটি বৃহৎ চিত্রটি তুলে ধরতে পেরেছে। লেখককে আবারও অশেষ ধন্যবাদ। যেকোন কিছুর পিছনে ‘অর্থায়ন’ এক বড় ভূমিকা পালন করে। জামাতের ক্ষেত্রেও তাই।
আর একটা জিনিস আমার সাথে অনেকেই একমত হবেন, শিবিরের ছেলেপেলেগুলো মারাত্মক রকমের মেধাবী, এবং ওদের রিক্রটিং পদ্ধতিও অত্যন্ত ভালো। কেন?কারণ অন্যান্য সংগঠনের মত ওদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া বা শাসন করা নয়। যেকারণে ওরা অন্যান্য দিকগুলোতে ফোকাস করতে পারে।
আসি একাত্তর প্রসঙ্গে। যারা ভুলে যেতে চান, যারা অত্যন্ত দয়ালু আমার মতে তাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনী যেমনটা বাংলাদেশে করেছিল তেমনটা করা উচিত। দেখি তারা ৪০ বছর পর ভুলে যেতে পারেন কিনা???
যেসব রাজাকারকে পাকিরা এদেশে রেখে গেছে, তারা বিন্দুমাত্র বদলায়নি। তারা তাদের সন্তানদের দিয়ে নব্য রাজাকার বাহিনী গড়ে তুলছে।
বরং মুক্তিযোদ্ধারা বদলে গেছে। তাইতো দেখি এ আমলে সব রাজাকার এক সাথে থাকলেও সব মুক্তিযোদ্ধারা এক সাথে নেই! রাজাকার সব ভালো জায়গায় থাকলেও( আমি তো দেখিসবগুলার গাড়ি বাড়ি আছে!!!) মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের মাথার চালাটুকু নেই। মাহবুব আজাদের ম্যাগনাস ওপাস ও কয়েকটি গল্প’ বইয়ের একটি গল্পের কথা মনে পড়ে গেল হয়তো এমন দিন আসবে যেদিনা আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের কথা বিলুপ্তমান প্রাণিদের মত হয়ে যাবে। ভেবে খারাপ লাগে।
শিক্ষা আসলে খুব বড় হাতিয়ার, জিউসের লাইটনিং রডের মত, যার হাতে থাকে তার উপর নির্ভর করছে প্রয়োগ কেমন হবে। আফসোস একপক্ষ এটাকে সঠিকভাবে খারাপ পথে ব্যবহার করতে পারলেও আমরা পারছি না।
শেষ করছি আর একটি ঘটনা দিয়ে। আমার খুবই পরিচিত এক রিক্সাওয়ালা মহিউদ্দি। ৭১’এর মুক্তিযোদ্ধা। বয়স ছিল ১৭। এখন সে প্রায় একঘরে। গ্রামে যায় না, আশপাশের গ্রামে থাকে মাঝে মাঝে গিয়ে আত্নীয় স্বজনদের সাথে দেখা করে।
গ্রামে আরও মুক্তিযোদ্ধা ছিল, কিন্তু তার উপরই কেবল জুলুম। কেন?
৭১’এ মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার পর মহিউদ্দিদের হাতে ধরা পড়েছিল গুটিকতক রাকাকার। মহিউদ্দি এদের মধ্যে একজনকে কিছুটা উত্তম মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। সেই পাপের(!) শাস্তি সে এখনও ভোগ করছে।
এমন আরও অনেক ঘটনা আছে। যার বিন্দুমাত্র আমরা জানি না, জানতে চাইও না। আমরা বাঙ্গালি অনেক উদার জাতি, সহজে ক্ষমা করে দিতে পারি। পারে না শুধু অন্যরা(রাজাকাররা আমাদের জাত না, আমি মানি না)।
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
মন্তব্য
চমতকার লেখা।
ঘটনাগুলো পরে খুবই খারাপ লাগলো। কিন্তু এইটুকুই। এই খারাপ লাগা পর্যন্ত। এর বেশী আমরা কি করতে পারি?
আমরা সচেতন হতে পারি।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
অসাধারণ লেখা।
১
আমার পরিচিত এক মেয়ে পাকিস্তান বলতে অজ্ঞান। ইনজামাম বলতে পাগল। ইনজামাম যেদিন বিয়ে করল সে মেয়ে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে কেঁদেকেটে বুক ভাসালো। তার বাবা তাকে কথা দিয়েছিলো এইচএসসিতে রেজাল্ট ভালো হলে তাকে পাকিস্তানে বেড়াতে নিয়ে যাবে। আমি খুব খুশি হয়েছিলাম যখন সে ভালো রেজাল্ট করেনি
শুনেছি গ্রাম থেকে ঢাকায় পড়তে এসেছে এমন আনকোরা ছেলেরা শিবিরের সহজ শিকারে পরিণত হয়। নতুন শহরে থাকা-খাওয়া, পড়ালেখার সুবিধার বিনিময়ে ধীরে ধীরে এদের দলে টানা হয়।
শিক্ষা খুব বড় হাতিয়ার ঠিকই, কিন্তু আমাদের দেশে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রচলিত সেটা আদৌ চাকরিবাকরির বাইরে কোনো কাজে আসে কি না সে নিয়ে সন্দেহ আছে। অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষের মধ্যেও যখন ধর্মান্ধতা দেখতে পাই, শিক্ষা তাকে কতখানি আলোকিত করতে পেরেছে সে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত না হয়ে পারি না।
২
মাহবুব আজাদের "ম্যাগনাম ওপাস ও কয়েকটি গল্প" বইয়ের গল্পটির নাম "বিলুপ্তি"।
৩
লেখা ছাড়ার আগে দুয়েকবার প্রিভিউ দেখে নেবেন। এতে খুব সাধারণ ভুলগুলো এড়ানো যাবে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সবারই একই অবস্থা আপু, আসলে কি আর বলবো বলেন।
আজাদ ভাইয়ের বইটা আমার কাছে নেই, সুহানের কাছ থেকে নিয়ে পড়েছিলাম। গল্পটা বিলুপ্তি বলেই মনে হচ্ছিল কিন্তু নিশ্চিত না হোয়ায় উল্লেখ করিনি।
আর আপু, লেখাটা লেখা শুরু করি রাত চারটা ৩৫ এ। র পৌনে ৭ টায় সাবমিট করেই চলে যাই ময়মনসিং। যে কারণে চেক করা হয়নি। ভুল কিছু হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
তথ্যগত একটি ভুল আছে লেখায়। জিপিএ পদ্ধতিতে এস এস সিতে প্রথম বছর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিলো সম্ভবত ছিয়াত্তর জন, আর এইচ এস সিতে প্রথম বছর পেয়েছিলো পাঁচ জন।
ঠিকই ধরেছেন। তাড়াহুড়ো করে লিখলে যা হয় আরকি। তবু ভুল তো ভুলই।
অনাকাঙ্খিত এই ভুলের জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
এস এস সি ছিয়াত্তর জন আর এইচ এস সি তে কুড়ি জন।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
পাকিস্তানের সাপোর্টার কমতেসে মনে হয় আস্তে আস্তে, নাকি ...
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কমতেসে না আরো কিছু! ফেসবুকে ঝগড়া করতে করতে টায়ার্ড হয়ে গেলাম।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আপনার প্রতিপক্ষ কি টায়ার্ড?যদি না হয় তাহলে আপনারও হওয়া যাবে না।
আর যদি হয় তাহলে তো আরো না।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
এগুলো শিবিরের তৈরি করা মিথ এবং চরম বোগাস কথা।
----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
এই মিথ্যার পিছনে সামান্য সত্য আছে, সেটা হলো আমাদের দেশের তথাকথিত মেধাবী যারা আছে (যারা আসলে পাঠ্যবই ছাড়া কিছু পড়ে না) তাদের কেউ কেউ নিজেদের অজ্ঞানতার কারণেই শিবিরের ফাঁদে ধরা পড়ে। এরা কেউ সাধারনত সক্রিয় কর্মী না (সেটা তারা হবে না, পড়াশোনার ক্ষতি হবে বলে), কিন্তু ডিসপ্লে হিসাবে কাজ করে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
রিক্রুটিং আর কোথাও হয় না, শিবিরেই হয়। আমার বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছাগলগুলা শিবির করে বা শিবিরের জন্য সিমপেথাইজ করে। এই ছাগলগুলা যদি মেধাবী হয়, তাইলে আমি আইন্সটাইন।
"এই ছাগলগুলা যদি মেধাবী হয়, তাইলে আমি আইন্সটাইন।"
হে হে হে হে... একদম ঠিক কথা। ছাগল এবং/অথবা ব্যক্তিত্বহীন আবাল ছাড়া কারও শিবির করার কথা না।
জয়
দেখুন আমি যতদূর জানি, অন্যান্য গ্রুপে কিন্তু ছেলেপেলেরা এমনিতেই যায়, কেউ কিন্তু ছাত্র রাজনীতি করার সময় বলে না যে শিবির করবে(আমি এই পর্যন্ত একজনকেও বলতে শুনি নাই)। কিন্তু দেখা যায় মেধাবী সহজ সরল ছেলেপেলেগুলো এদের ফাঁদে ধরা দেয়। এদেরকেই আমি বুঝিয়েছি।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দির ঠিকানা দেয়া যাবে?
- সূর্ত দিক বদলে উঠতে পারে, কিন্তু একজন রাজাকার আর রাজাকারের সমর্থক, জীবনেও বদলায় না। এরা হলো কুকুরের লেজের মতো।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
একদম ঠিক কথা।
সুমিমা ইয়াসমিন
সহমত
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
লেখাটা ভালো লেগেছে।
এটার সাথে একমত নই। গাধা টাইপের ছাগু কম দেখিনি। ওদের সাংগঠনিক ডিসিপ্লিন আছে কিছুটা বাকি দলগুলোর তুলনায়।
এই পাকিপ্রেমিতার উত্থান হয় ৮০ এর দশকে, আমি স্মৃতির শহরের একটা পর্ব লিখেছিলাম এটা নিয়ে। এর গতি শ্লথ হয় নি, এই উট আমাদের জেট প্লেনের গতিতে নিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান অভিমুখে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শুভাশীষের সঙ্গে একমত। শিবির রিক্রুটিঙের সুবিধার জন্য মেধাবীদের চেহারাগুলো সামনে রাখে, যাতে নতুন নতুন নির্বোধদের ফাঁদে ফেলা যায়। ওরা ভালমানুষ আর মেধাবী এই দুটো চারিত্র্যানুষঙ্গকে নাকের ডগায় লটকে গরীব বোকা ছেলেগুলোকে দলে টানার চেষ্টা করে, সঙ্গে থাকে আবুল বারাকাতের গবেষণায় প্রকাশিত মৌলবাদী অর্থনীতি থেকে উদ্ভূত অঢেল পয়সা। শিবির জামাতের তত্ত্বকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে। আর জামাতের তত্ত্ব বা লক্ষ্য একটাই, বাংলাদেশের জন্ম ও অস্তিত্বকে ভ্রান্ত প্রমাণিত করে কোনও এক ভবিষ্যতে একে পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত করা। ওরা এখনও স্বপ্ন দেখে, বাংলাদেশ আবারও একদিন পাকিস্তানে বিলীন হয়ে যাবে। অন্তত পাকিস্তানি প্রভুদের কাছ থেকে এই প্রতিশ্রুতিতেই তারা পয়সা আদায় করে। রাজাকারদের এই যে সবার বাড়ি গাড়ি দেখেন, তার যোগান আসে কোত্থেকে? বেশির ভাগই লুটপাটের টাকা, বাকিটা দায়িত্ব পালনের পারিশ্রমিক হিশেবে পাকিস্তানি প্রভুদের কাছ থেকে পাওয়া। সমাজ থেকে এদের সম্পূর্ণ মূলোৎপাটন না করলে এদের বাংলাদেশবিরোধী রাজনীতিও কোনওদিন শেষ করা যাবে না। কীভাবে এদের মূলোৎপাটন করবেন? গরীব বোকা ছেলেগুলোর কাছে ওদের আগেই পৌঁছুতে হবে আমাদের, উন্মোচন করতে হবে ওদের আসল চেহারা। বর্তমানে রাজাকারবিরোধী যে রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজ করছে, তাকে কাজে লাগাতে হবে। ব্লগে তো বটেই, এর বাইরে নানা সামাজিক বলয়েও এ ব্যাপারে আমাদের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করতে হবে। শিবির ঠেকানর সবচে বড় উপায় হল রিক্রুটমেন্ট বন্ধ করা। সেটাতেই এখন যার যার জায়গা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তেব হবে। এবারের সংগ্রাম রাজাকার নির্মূলের সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম রাজাকারমুক্ত বাঙালি সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
অনেক বছর আগের কথা। প্রতিবেশী খালাম্মা একদিন সাথে দুই বোরকাওয়ালী মহিলাসহ বাসায় এসে মাকে প্রস্তাব দিল- আপা আসেন আমরা কোরআন চর্চা করবো সবাই মিলে।
মা বললো, উত্তম প্রস্তাব, কিন্তু এনারা কারা?
খালাম্মা বললেন, এনারা শুদ্ধ কোরআন শিক্ষা দেবেন।
মা বললো, আমি তো শুদ্ধ কোরআন বাচ্চাকাল থেকে শিখেছি, এদের কাছ থেকে শিখার কিছু নাই।
খালাম্মা বললেন, এনারা দ্বীন আখেরাতের ব্যাপারে কথা বলবেন।
মা বললো, আমার ওসব জানা শেষ। নতুন কিছু শেখার নাই।
কাটাকাটা উত্তর শুনে মাকে সাইজ করতে না পেরে চরম হতাশ হয়ে চলে গেলেও কিছুদিন পর দেখা গেল আশেপাশের আরো পাঁচ ছয় বাসায় দ্বীনের দাওয়াতে সফল হয়েছে। বোরকাওয়ালীর সংখ্যা বেড়ে গেল প্রতিবেশীর মহিলা সভায়। কয়েকমাস বাদে দেখা গেল পুরোটা জামাতী রিক্রুট। টার্গেট মহিলা মহল। মহিলা ম্যানেজ হলে, বাসার পুরুষটিও ম্যানেজড। বাবামা ম্যানেজড হলে পুত্র কন্যা বাই ডিফল্ট ম্যানেজড।
এই জন্য আমি সরল, নিরপেক্ষ, সহনশীল মানুষদের তীব্র অপছন্দ করি। প্রতিষ্ঠানের বাইরে এরাই দেশ জুড়ে জামাতের বড় আশ্রয়কেন্দ্র।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ওরা আগে ক্ষমতা চায় না, আগে চায় মানসিকতায় করায়ত্ত্ব।
সরল হওয়া আমাদের দেশে এক পাপ, মেধাবী হলে তো কথাই নেই।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
কিছু বলতে ইচ্ছা করতেছে না !
সময়মত বললেই হবে।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
(আমার নিজস্ব ভাবনা, যার পেছনে সামান্য অভিজ্ঞতা আছে, তবে কেউ বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দাবি করবেন না)
রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধা:
রাজাকারদের কমন চরিত্র হলো সুবিধাবাদিতা। আদর্শ-টাদর্শ পরের কথা, একাত্তরে পাকিস্তানের পক্ষে থাকাটা সুবিধাবাদিতা ফর্মূলায় বেটার অপশন ছিলো বলেই তারা রাজাকার।
রাজাকারের ছেলেপেলেরাও রাজাকারি মানসিকতায় বড়ো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, মানুষ সাধারণত তার আশেপাশের পরিবেশ থেকেই শেখে, মা-বাবার ওপর নির্ভরশীলতাও মানুষকে মা-বাবার মতো চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করে, বিশেষ করে মা-বাবা যখন সন্তানের চাহিদা পূরণ করতে সমর্থ হয়। রাজাকারেরা আজন্ম সুবিধাবাদি হওয়ায় স্বচ্ছলতর হওয়া স্বাভাবিক এবং সন্তানের কাছে রাজাকার মা-বাবাও প্রিয় হওয়া স্বাভাবিক। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার জন্য যে শিক্ষা বা সামাজিক মেলামেশার দরকার হয়, রাজাকার মানসিকতার মা-বাবা স্বভাবতই সেটার পথে প্রতিবন্ধক হয়। সুতরাং লুপ থেকে বের হওয়া খুব কঠিন।
মুক্তিযুদ্ধ ছিলো সময়ের প্রয়োজন। মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন সেই প্রয়োজনের অভিনেতা। সময়ের সাথে অনেকেরই প্রয়োজন পালটে যায়, অনেকের মধ্যে আশাভঙ্গজাতীয় ঘটনাও ঘটে, তখন সেই মানুষটা পথ পরিবর্তন করে। হয়তো এজন্যই এককালের মুক্তিযোদ্ধা এখন রাজাকারের সাথে একমঞ্চে বসে। বাংলাদেশ খুব সমৃদ্ধ এবং সভ্য একটা দেশ হলে হয়তো এই পরিবর্তন অনেক কম হতো বা হতোই না।
অন্যদিকে সময়ের বিবর্তনেও রাজাকারেরা বাংলাদেশকে মেনে নিবে না। কারণ, তাতে তাদের অবস্থান ভুল প্রমাণিত হয়। বরং বাংলাদেশের ক্ষতি হলে সেটাকে তারা লাভ হিসেবে বিবেচনা করবে; কারণ, এতে বাংলাদেশবিরোধী অবস্থানের পক্ষে 'যুক্তি' দিতে সুবিধা হয়। ফলে, সময়ের সাথে মুক্তিযোদ্ধার আদর্শ পরিবর্তিত হলেও রাজাকারের আদর্শ একই থাকে।
শিবিরের ভালোছাত্র মিথ:
ভালো 'রেজাল্টধারী' ছাত্রদের মধ্যে, ইন জেনারেল, স্বার্থপরতা বেশি, নিজেদেরকে হায়ার কাস্ট হিসেবে চিন্তা-ভাবনার প্রবণতা বেশি, রিস্ক নেয়ার প্রবণতা কম এবং শান্তপ্রিয়তা (শান্তিপ্রিয়তা নয়, সেটা ভিন্ন জিনিস) বেশি থাকে। আপাত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার কারণে সমাজজীবনের বাস্তবতা থেকে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় শিবিরের অপেক্ষাকৃত মধুর ও সাহায্যপ্রবণ অ্যাপ্রোচকে তাদের অনেকেই স্বাগতম জানায়। মিছরির ছুরিটা টের পেতে যে পরিমাণ সামাজিক অভিজ্ঞতার দরকার হয়, এদের অনেকেরই সেটা থাকে না।
মুক্তিযুদ্ধ ৪০ বছর আগের ঘটনা, আমার নিত্যদিনের রুটিরুজির ওপর তার কোনো প্রভাব চোখে পড়ে না; সুতরাং সেটা নিয়ে হল্লা করাকে একটা বিশৃঙ্খলা হিসেবে দেখা হয়। (পাকিস্তান ভঙ্গের পর অনেক পরিবারই সরাসরি রাজাকার না হওয়ার পরেও বাংলাদেশবিদ্বেষী হয়েছে, তার একমাত্র কারণ, যুদ্ধের পূর্বে তারা সুবিধাজনক স্থানে ছিলো এবং যুদ্ধের পরে সেই প্রতিপত্তি নষ্ট হয়েছে।) শিবিরের শান্ত অ্যাপ্রোচ এদের চিন্তাধারার সাথে মিলে যাওয়ায় এরা প্রভাবিত হয়।
আরেকটা বড়ো কারণ বিকল্প না থাকা। মেধার লালনে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর তেমন কোনো কার্যক্রম নেই, সরকারের কার্যক্রমও অপ্রতুল। এ অবস্থায় শিবির তাদের বেটার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং অস্তিত্বের প্রয়োজনে অর্জিত সুশৃঙ্খলতাকে কাজে লাগায়। 'শিবির করি, জীবন গড়ি' শ্লোগানটা ফেলনা না, এটা সত্য। ইন জেনারেল স্বার্থপর একজন ভালো রেজাল্টধারী ছাত্র জীবনে যা চায়, শিবির-জামায়াত তা তাকে পেতে যথাসাধ্য সাহায্য করে। বিনিময়টা বাংলাদেশের জন্মাদর্শকে ধর্ষণ করে হলো কিনা, এ নিয়ে আর কতোজনে মাথা ঘামায়!
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
পারফেক্ট বিশ্লেষণ, এর চেয়ে ভালোভাবে এই জিনিসগুলান বুঝানো সম্ভব না
দু'গ্রুপে মারপিট মাঝখান দিয়ে এরা আখের গুছায়।
একেবারে খাঁটি কথা।
যথার্থই।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
নতুন মন্তব্য করুন