স্বপন গাঙ্গুলি। আমাদের অফিসের পিয়ন। এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে অনেক বছর ধরে। পত্রিকা অফিসে সম্পাদক থেকে শুরু করে সবার আচরণই বন্ধুসুলভ। কিন্তু গাঙ্গুলি যেন এই পত্রিকা অফিসে বস। সবার সাথে চলে তার ধমকাধমকি। তাকে কোনো কাজের কথা বললেই ধমক! তবু তার আচরণে কেউ কিছু মনে করে না। তার মাথায় সামান্য দোষ আছে, এটা সবাই জানে।
একদিন বার্তা সম্পাদক বললেন, গাঙ্গুলি এক গ্লাস পানি আনো। সে শুনলো কি শুনলো না, বোঝা গেল না। স্বভাবমতই কোনো জবাব না দিয়ে চলে যায়। বার্তা সম্পাদক আবার পানির কথা বললে, সে এক ধমক লাগিয়ে বলে, চিল্লান কেন্, আমি কি দিমু না কইছি?
একদিন সম্পাদক তাকে বললেন, যা তো একটা কফি নিয়ে আয়। এক ঘন্টা পর গাঙ্গুলি বাজার থেকে একটা ফুলকপি এনে সম্পাদকের টেবিলে দিল। এর কদিন আগে তাকে ‘সন্দেশ’ পত্রিকাটি আনার জন্য পাঠানো হলে সে মিষ্টির দোকান থেকে একপিস সন্দেশ নিয়ে হাজির।
সহ সম্পাদক মেরী সেন একবার পরিচিত একটা দোকানে পাঠালেন গাঙ্গুলিকে। সে ফিরে এসে বলে, আপনার জিনিস দেয় নাই। ওরা আফনেরে চিনে না।
এবার মেরী সেন নিজে ওই দোকানে গিযে বললেন, কী ব্যাপার, পিয়ন পাঠালাম, দিলেন না কেন?
দোকানদার বললো, সে তো কইলো, মীর হোসেন তারে পাঠাইছে...! এই নামে তো আমি কাউরে চিনি না।
মেরী সেনের নাম বরাবরই সে 'মীর হোসেন' উচ্চারণ করে।
যে কোনো খাবার আনতে তাকে দোকানে পাঠানো হলে, সে অর্ধেক পরিমান আনে। বাকিটা তার পকেস্থ। দুকাপ চা আনতে পাঠালে এককাপ চা এনে গরম পানি ঢেলে দুই কাপ করে। একবার তাকে মিষ্টি আনতে পাঠালেন এক প্রতিবেদক। মিষ্টি খেয়ে ওই প্রতিবেদক অফিস থেকে বেরুচ্ছিলেন। পিয়ন রুমের কাছাকাছি যেতেই শুনলেন, আরেক পিয়ন গাঙ্গুলিকে বলছে, দাদা, আজ তো একটা মিষ্টিই আনতে দিছে, আপনার বুঝি কোনো ইনকাম হলো না! গাঙ্গুলি বললো, আজ শুধু রসটুকুই ইনকাম। মিষ্টি চুইস্যা তারপর দিছি!
বহুবার গাঙ্গুলির চাকরি গেছে। প্রতিবারই সে কাউকে না কাউকে দিয়ে সুপারিশ পত্র লিখিয়ে ফেলে। এবং আমরা যারা তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ, আমরা সবাই তাতে স্বাক্ষর দেই। আর এটা সে অফিসের ম্যানেজারকে জমা দিয়ে চাকরি ফিরে পায়। পুনরায় পুরোদমে সে আগের কাণ্ডগুলোই চালিয়ে যায়।
কিছুদিন আগে ম্যানেজার তাকে একটা ব্যাপারে খুব বকাঝকা করে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে চায়ের কথা বলা হয়। গাঙ্গুলি চা বানিয়ে তাতে একদলা থুতু ছিটিয়ে দেয়। এই দৃশ্য ম্যানেজার দেখে ফেলেন। আর যায় কই, এবার ফাইনালি চাকরি নট্।
সুপারিশ পত্রে আমাদের স্বাক্ষর এবার আর কোনো কাজে আসে না।
যাওয়ার সময় গাঙ্গুলি বিড়বিড় করে বলে যায়, লুলা হইবো, গজব পড়বো...!
মন্তব্য
আগে কতদিন যে থুথু দেয়া চা খাইছেন কে জানে??
__________
ত্রিমাত্রিক কবি
কে জানে!?
সুমিমা ইয়াসমিন
লেখায় মজাটা ঠিকমতো পাইলাম না, লেখাটা আরো মজার হ্ইতে পারতো। তবে মানুষটার মাথায় যে ছিট ( বসার সিট না) আছে এইটা বুঝবার পারছি...
জাহামজেদ,হইতে পারতো...
সুমিমা ইয়াসমিন
পিয়নের এমন কোন কান্ডকীর্তির পরিচয় পাওয়া গেলনা যা "তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ" সবাইকে তার চাকুরী ফিরে পাওয়ার আবেদনে সই করতে কিছুটাও হলেও উৎসাহ যুগায়। আমি হইলে ব্যাটারে পত্রপাঠ বিদায় করে দিতাম।
ব্যাটার উপর যেহেতু আমার রাগ উঠে গেছে, সেহেতু বলা যায় লেখা ভাল হইছে
সজল
সজল, ধন্যবাদ।
সুমিমা ইয়াসমিন
যাদের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয় তাদেরকে বকাঝকা করতে নেই, তাহলে প্রতিনিয়ত থুথু দেয়া চা খেতে হবে। থুথু মুক্ত চা খাওয়ার জন্য ওদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ।
টমটম।
টমটম, ভালো উপদেশ।
সুমিমা ইয়াসমিন
হাঃ হাঃ হাঃ কঠিন লোক। লেখাটা হঠাৎ শেষ করলেন কেন?
---------------------------------------------------------মানিক
মানিক, আরেকটু চললে কি ভালো হতো?
সুমিমা ইয়াসমিন
হুঁমমম---
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
রণদীপমদা,আমি তো চিন্তায় পড়ে গেলাম!
সুমিমা ইয়াসমিন
কেটা নামের একটা কাজের ছেলের গল্প পড়েছিলাম ছোটবেলায়। অনেকটা গাঙ্গুলির মতনই বলা চলে
তাই নাকি? সাফি, লেখক ও গল্পের নাম জানতে পারলে ভালো লাগতো।
সুমিমা ইয়াসমিন
মেরেছে
এ তো দেখি জব্বারের কাহিনী
আমরা এক জব্বারকে চিনতাম
একই রকম
তাকে কেউ একটা চকলেট আনতে পাঠালে খুলে কোনা থেকে এক কামড় খেয়ে তারপর এনে দিতো
হা...হা...হা...। লীলেন ভাই, এ তো দেখি আমাদেরটাই যেন। ধন্যবাদ।
সুমিমা ইয়াসমিন
সচলে ওয়েলকাম সুমি।
তবে রাগ করলে যে পিওনরা চায়ে থুথু মেশায় এটা সত্যি ঘটনা। আমি একসময় মির্জার চ্যানেল আইয়ের প্রোগ্রামটা শুটিংয়ের দিন গিয়ে নিয়মিত আড্ডা দিতাম। সেখানে এরকম একটা পিওন ছিল চ্যানেল আইয়ে, কোনো ডিরেক্টর তারে ধমক ধামক দিলে চায়ে থু থু মিশিয়ে দিত।
আরিফ জেবতিক,ধন্যবাদ। দেখা হবে,বন্ধু।
সুমিমা ইয়াসমিন
মজা পেয়েছি।
ইমরান
জেনে ভালো লাগলো,ইমরান।
সুমিমা ইয়াসমিন
ইদানীং লেখার চেয়ে লেখার ফরম্যাটিং এর দিকে আমার নজর বেশী যাচ্ছে। সে জন্য আগাম ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
বেশ কয়েকটা জায়গায় বিরাম চিহ্নের পরে স্পেস দেন নি। দুই জায়গায় অন্তস্থ অ এর স্থলে অন্তস্থ য হয়েছে (আপনার নামের বানানেও একই অবস্থা)। লেখায় দরদ কম মনে হলো। আরেকটু সময় নিয়ে পোস্ট করেন (অর্থাৎ পোস্ট করার আগে কয়েকবার প্রিভিউতে দেখে নিন)।
ধন্যবাদ,প্রকৃতিপ্রেমিক। যথার্থই বলেছেন।
সুমিমা ইয়াসমিন
- গাঙ্গুলি ভাইরে লাল সেলাম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুসর গোধূলি, আফনেরে লাল চায়ের নিমন্ত্রণ আমগো অফিসে।
সুমিমা ইয়াসমিন
চুইস্যা তারপর দিছি ......মারাত্মক
সাবরিনা সুলতানা
গাঙ্গুলির আরো অনেক কাণ্ড এখানে বাদ পড়ছে।
সুমিমা ইয়াসমিন
লিখে ফ্যালেন:)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
নতুন মন্তব্য করুন