- অনন্ত আত্মা
মদ আর মাতাল দুটো সমার্থক শব্দ। প্রথমটা কারণ দ্বিতীয়টা কাজ অথবা কি জানি হয়তো উল্টোটাও হতে পারে; কেউ মদ খেয়ে মাতাল হয় আবার কেউবা মাতাল হয়ে মদ খায়। আমার এ কথার সঙ্গে হয়তো আপনারা একমত, দ্বিমত কিংবা বহুমত পোষন করতে পারেন। যাইহোক, মাতালদের কথা উঠলেই আমার যেই জোকসটা মনে পরে, সেটা হল –
মদ খেয়ে অনেক রাতে বাসায় ফিরত বলে প্রতি রাতেই বউয়ের ঝাড়ি খেতে হত এক ভদ্রলোককে। এক রাতে ভদ্রলোক ঠিক করলেন তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবেন, তো মদ খেয়ে রাত গভীর না হতেই বাসায় এসে পরলেন। এরপর, হাত-মুখ ধুয়ে ভাল মানুষটির মত বিছানায় শুয়ে গভীর মনোযোগে মোটা একটা বই পড়া শুরু করলেন। কিন্তু একটু পরেই ভদ্রলোকের স্ত্রী এসে প্রতিদিনকার মত চিৎকার করল –
- তুমি আজকেও মদ খেয়ে আসছ?
ভদ্রলোক বলছে –
- কই না, মদ খাই নাইতো; কেন কি হইছে?
- তাইলে ব্রিফকেস খুলে মুখের কাছে ধরে রাখস কেন?
কাল্পনিক জোকস্ থেকে আমাদের এলাকার বাস্তব গল্পে আসা যাক; আমার দুই বন্ধু ফরহাদ আর রবিন। চাঁন রাতে দুই বন্ধু বোতল নিয়ে বসছে, বহু সাধ্য-সাধনা করে এন্তেজাম করা হয়েছে। পাড়ার এক বন্ধুর বাসা জোগার করা হয়েছে, সবাই গেছে বাড়ীতে ঈদ করতে। খালি বাড়ীটার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতেই দুই বন্ধুর এই বোতল-বিহার। খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে, রাত তখন প্রায় দুইটা। রবিনের হঠাৎ বিগাড় উঠল বাসায় যাবে। ফরহাদ বলল –
- বাদ দে, ঝামেলা করিস না, মাতাল অবস্থায় বাসায় যাবি মানে?
রবিন বলল –
- আমি তো টাল না, কোন সমস্যা নাই, বাসায় যাইগা।
ফরহাদ এরপর রবিনকে এগিয়ে দিয়ে বাসায় এসে শুয়ে আছে, একটু পরে শুনে দরজায় কে যেন নক করছে। এত রাতে কে আবার আসল; ভাবতে, ভাবতে দরজা খুলে দেখে রবিন।
- কি রে বাসায় যাস নাই?
রবিন বলল –
- গেসিলাম তো
- তাইলে ফিরা আইলি যে?
- তায় কি করুম, দরজা তো খুঁইজা পাইলাম না।
আমাদের বন্ধু-প্রতীম বড় ভাই বাবু। বাবু ভাইয়ের বাড়ী সিরাজগঞ্জ। এক আড্ডায় বাবু ভাই তার বাড়ীর গল্প করছে –
আমার আব্বা পাট ক্ষেতের মধ্যে গাঁজার চাষ করতেন। এটা অবশ্য দোষের কিছু না, আমাদের এলাকার অনেকেই এই কাজ করত। এক দিনের ঘটনা – আব্বা, মা’রে বলছে গাঁজার পাতা দিয়ে ইলিশ মাছের কাঁটা দিয়ে শাকের মত ভাজি করতে। মা রান্না করছে। রাতে খেতে বসছি, এলাকার মেম্বার সাবও আছেন। ভাজি খেতে ভালই হইছে, সবাই আরাম করে খাচ্ছে। একটু পরে আমার ছোট ভাই আব্বাকে উপদেশ দেয়া শুরু করছে; ‘এইডা করবা, ওইডা করবা, সেইডা করা তোমার ঠিক হয় নাই।’ বুঝলাম যে ভাইরে ধরছে্, আমারে আবার এইসবে ধরে-টরে না। বিছনায় যায়া শুইছি, এট্টু পরে দেখি যে- ও আল্লা বিছনাসহ আমি উইঠা ছাদে লাগে যাচ্ছি।‘ও আব্বা, আমারে ধর, আমি তো ছাদে লাইগা গেলাম।’ ছোট ভাই এদিকে পাশের বিছনায় হাসি শুরু করছে, ওর হিহিক হিহিক হাসি আর থামেই না।
মেম্বর সাবের কাহিনী শুনছিলাম পরের দিন। মেম্বার আমাদের বাসা থেকে কোন রকমে হাঁটতে হাঁটতে বাসায় পৌছায়। ওনার বাসার চারদিকে বাঁশের বেড়া দেওয়া, তো উনি বাসায় এসে ঐ বেড়া ধরে ঝাকাচ্ছে আর চিৎকার করছে ‘ও লালনের মা, লালনের মা দরজা খোলো; রাইতভর কি দরজার বায়রা থাকব?’
বাড়ীর কুকুরের কথা তো বলি নাই; দক্ষিনের দরজার পাশে মা ইলিশ মাছের কাঁটাগুলা ফেলছিল, সেইগুলা আবার বাড়ীর কুকুর খাইছিল। তিন দিন ধরে ওই কুকুর ঐ দরজার সামনেই ঘুমাইছে, পেচ্ছাপ-পায়খানাও ঐ খানেই করছে।
লেখা আজকের মত শেষ করছি এক ছোট ভাইয়ের গল্প দিয়ে। জীবনে প্রথমবার মদ খেয়ে জাকির বাসায় আসছে। বন্ধুরা বলছিল ‘যাইস না, কি দিয়া কি করবি।’ জাকিরের প্রবল আত্মবিশ্বাস –‘ক্কি কস? কি হইব? আমি তো আর টাল না।’ ফ্রেশ হয়ে, নিজের রুমে এসে জাকির বিছানায় শুয়ে আছে, এর মধ্যে এক বন্ধু ফোন দিয়েছে –
- কি রে ঠিক আছস তো?
- ক্কি কস? ঠিক থাকুম না মানে? খালি কালারে মনে হয় একটু সমস্যা হইতাছে।
- মানে?
- মানে বাথরুমে গেছিলাম, সাদা কমোডরে নীল কালার মনে হইল।
এমন সময় জাকিরের কাজিন রুমে আসে বলছে -
- তুই কি একটু আগে বাথরুমে গেছিলি?
- হ, কেন?
- মাথা-মুথা ঠিক আছে তোর?
- কেন কি হইছে?
- কি হইছে মানে, বালথির মধ্যে পিশাব করছস কেন?
[সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ মদ আপনার মানসিক ও শারিরিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আর মাতলামি পারিপার্শ্বিকতার জন্য ক্ষতিকর।]
মন্তব্য
মজার পোস্ট । কিন্তু প্রথম দুইটি কৌতুক বহুল প্রচলিত ।
ফাহিম হাসান
দ্বিতীয়টি জোকস্ না; উহা ব্যাক্তিগত উপাখ্যান তবে কোন জোকস্ এর সাথে মিল পরিলক্ষিত হইলে তাহা সহসা ঘটনা চক্রের সংঘটন বলিয়া ধরিয়া নিতে হইবে। সময় নষ্ট করিয়া পড়িবার জন্য ধন্যবাদ।
অনন্ত আত্মা
চুপার লিকেচেন বচ
ধন্যবাদ।
অনন্ত আত্মা
ওকে। তবে নতুন জিনিস চাই।
ধন্যবাদ। www.চেষ্টায় আছি.com
অনন্ত আত্মা
অনেকেই এই ভুলটা করেন, কাজেই আপনাকে দোষ দিচ্ছি না। জোক শব্দটা একবচন আর জোকস তার বহুবচন। কাজেই আপনি যখন বলবেন আমার সেই জোকসটা মনে পড়ল, সেটা ভুল, হয় আপনার একটা জোক মনে পড়ল হবে অথবা একাধিক হলে জোকস হবে।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
না জানা জিনিস জানানোর জন্য ধন্যবাদ। ভুলটা বের করার জন্যও সাধুবাদ আপনাকে।
অনন্ত আত্মা
নতুন মন্তব্য করুন