• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

কাক - [তৃতীয় কিস্তি]

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৫/০৭/২০১০ - ১:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[প্রথম কিস্তি]
[দ্বিতীয় কিস্তি]

০৬


রহমান সাহেব প্রচন্ড ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ফিরলেন। রাতের খাবারটা তিনি স্ত্রীর সাথে খেতে পছন্দ করেন। কোন পার্টি থাকলেও বাসায় তাকে স্ত্রীর সাথে ডাইনিং টেবিলে দেখা যায়। রহমান সাহেবের এই অভ্যাসটা কুমকুমের খুব পছন্দের। খেতে বসে তাদের মাঝে টুকটাক কথা হয়। টেবিলে ছেলে-মেয়েরাও থাকে। ছেলে রাকিব আর মেয়ে আনিকা। দুজনেই স্কুলে পড়ে।

“ফাইলের সমস্যা মিটেছে?” প্রশ্ন করে কুমকুম।
“উঁ? কিসের সমস্যা?” রহমান সাহেব একটু অন্যমনস্ক ।
“কাল রাতে যে সমস্যার কারনে ঘুমাওনি। সেই সমস্যার কথা বলছি।”
“নাহ, ধরতে পারছিনা ঝামেলাটা কোথায়। এতো ঝামেলা ভালো লাগেনা। পরশু ডেলিগেটদের সামনে সব কাগজপত্র দেখাতে হবে। মিটিং এ এই সমস্যা নিয়ে যাওয়া যাবেনা। তার আগেই সমাধান চাই।”
“সমস্যা থাকলে তার সমাধানও আছে। এতো দুশ্চিন্তা করতে হবেনা। ঠিকমত খাচ্ছোনা। রান্না ভালো হয়নি ?”
“নাতো, রান্না ঠিক আছে, খেতে ইচ্ছে করছেনা।”
“কিছু খেয়ে এসেছো নাকি ?”
“নাহ, দুপুরেও খাইনি। খেতে ইচ্ছে করছিলো না।”
“একটু কষ্ট করে খেয়ে নাও। না খেলে শরীর খারাপ করবে। যে ফাইল নিয়ে এতো দুশ্চিন্তা, সেই ফাইল নিয়ে শেষে বসতেই পারবেনা।”

টেবিলে রাকিব আনিকা দুজনেই গম্ভীর হয়ে বসে আছে। প্রতিদিন রুটিন করে স্কুলের ঘটনা বাবাকে শোনানো তাদের অভ্যাস। আজ তারা গম্ভীর।

“কি ব্যাপার তোরা খাচ্ছিস না কেন?” রহমান সাহেব প্রশ্ন করলেন।
রাকিব গম্ভীর গলায় বললো,”বাবা, আমাদের রন্টি-মন্টির শরীর খুব খারাপ।”
“কি ব্যাপার কুমকুম? রন্টি-মন্টির কি হয়েছে?”
“ঠিক জানিনা। দুটোই খুব অসুস্থ। সোবহান বললো, ওরা সারাদিন নাকি বমি করেছে। বিকেলে সোবহান ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো। ডাক্তার বলেছে তেমন কিছু না। ঔষধপত্র দিয়েছে, খাওয়ানো হয়েছে। বমি নাকি বন্ধ হয়েছে। অবশ্য গায়ে নাকি খুব জ্বর। খালি ঘড়ঘড় করছে।”
“তুমি দেখতে যাওনি ?”
“দেখে কি করবো? চিকিৎসা তো হচ্ছে।”
“যারা আমাদের বাড়ি সারারাত পাহারা দেয়, তাদের শরীর খারাপ। আর তুমি দেখতে যাবেনা?”
“কুকুর পোষা হয় বাড়ি পাহারা দেবার জন্য। তাদের কাজ পাহারা দেয়া। একে এতো বড় করে দেখার কিছু নেই। চুপ করে খাওতো।”

রহমান সাহেব স্ত্রীর কথায় খুব আহত হলেন। অর্ধেক খেয়েই টেবিল থেকে উঠে গেলেন। কুকুর দুটোকে দেখতে যেতে হবে। সারারাত জেগে যারা পাহারা দেয় তাদের প্রতি রহমান সাহেবের যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা আছে, ভালোবাসাও আছে।

০৭


“সোবহান, এদিকে এসো।”

গেইট থেকে ছুটে এলো সোবহান। বড় সাহেব সাধারনত নিচে নামেন না। রাতে মাঝে মাঝে তিনি হাঁটাহাঁটি করেন। সেটাও ছাদে, নিচে না।

“দরজা খোলো। রন্টি-মন্টিকে দেখবো।”
“স্যার, এইগুলার শরীল খারাপ। খালি ঘড়ঘড় করতাছে। চক্ষু লাল। আমারে দেইখা দাঁত বাইর কইরা খিঁচা দিছে। খুব ডরাইছি স্যার। এর লাইগা দরজা বন কইরা রাখছি, ছাড়ি নাই।”
“তুমি বেশি কথা বলো সোবহান। দরজা খুলতে বলেছি, দরজা খোল।”

সোবহান দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলতেই নাকে এসে ধাক্কা দিলো বিশ্রী একটা গন্ধ। রহমান সাহেব এবং সোবহান, দুজনেই দরজা থেকে পেছনে সরে এলেন। রন্টি-মন্টি বিচিত্র ভংগীতে বসে আছে। কুকুরের ঘরের ভেতর বাতি আছে। সেই বাতি জ্বালানো। বাতিটা কুকুরগুলোর পেছনে। তাই চোখ কেমন তা বোঝা যাচ্ছেনা। তাদের ঘাড়ের লোম সব খাড়া হয়ে আছে। থাবা বাড়ানো সামনে। পেছনের দিকটা শক্ত হয়ে গেছে। লেজ নিচু, লাফ দেবার পূর্বাবস্থা। তাদের মুখ থেকে লালা গড়িয়ে পড়ছে নিচে। এদের পায়ের কাছে কালো কিছু পালক দেখা যাচ্ছে।

দুটো কুকুরই বড় হয়েছে সোবহানের হাতে। সোবহানকে দেখে অন্তত তাদের অমন ভংগীতে থাকার কথা না। সোবহান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কুকুরগুলোর দিকে। মুখ দিয়ে বিড়বিড় করে শব্দ বের হচ্ছে। রহমান সাহেব একচুলও নড়াচড়া করার সাহস পাচ্ছেন না। তিনি মনে মনে নিজেকে সাহস দেবার চেষ্টা করছেন। ডোন্ট প্যানিক...ডোন্ট প্যানিক...। ভয় পেলে চলবেনা।

বাছুর সাইজের দুই এলশেসিয়ান রন্টি-মন্টি। এদের চোয়ালে জোরও অসম্ভব। শিকারকে এরা নিমেষের মধ্যে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে। রহমান সাহেব কুকুরদের এই ক্ষমতা সম্পর্কে ভালো করেই জানেন।

আস্তে বাপ...আস্তে...আস্তে...! হিসহিসিয়ে বলছে সোবহান। তাতে অবশ্য কুকুরদের মাঝে কোন ভাবান্তর দেখা যাচ্ছেনা। সময় যেন থমকে গেছে। কারও কোন নড়াচড়া নেই। সোবহানের কথাও বন্ধ। খালি ঘড়ঘড় শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শব্দটাকে মনে হচ্ছে অপার্থিব, কালো কুৎসিত কোন গহবর থেকে উঠে আসা শব্দ।

দরজা আটকানোর জন্য সোবহান হাত বাড়াতেই কুকুরদুটো ঝাঁপ দিলো। একই সাথে তারা লাফিয়ে পড়লো সোবহানের উপর। মাটিতে চিৎ হয়ে পড়লো সোবহান। দুটো কুকুরই সোবহানের বুকের উপর দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মুখ সোবহানের মুখের কাছাকাছি। জ্ঞান হারালো সোবহান। জ্ঞান হারাবার আগ মুহুর্তে সে দেখলো কুকুরদের ঝকঝকে দাঁত তার গলার দিকে এগিয়ে আসছে। তাদের মুখের তীব্র দুর্গন্ধও নাকে লাগলো সোবহানের ।

রহমান সাহেব স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে আছেন। নড়াচড়ার জন্য তার পায়ে কোন শক্তি নেই।

কুকুরদুটো সোবহানকে কিছুই করলোনা। শরীর থেকে নেমে এসে তারা তাকিয়ে রইলো রহমান সাহেবের দিকে। চোখের দৃষ্টি স্থির, তাদের শরীরে কোনরকম নড়াচড়া নেই। রহমান সাহেব ও তাকিয়ে আছেন। ভয় পাওয়া যাবেনা, একদম না।

এভাবে কতক্ষণ কাটলো রহমান সাহেব জানেন না। কুকুরদুটো একসময় ঘরের ভেতর ঢুকে গেলো। রহমান সাহেব হাত বাড়িয়ে দরজা আটকে দিলেন। ছিটকিনি ঠিকমতো লেগেছে কিনা দেখলেন। তার সারা শরীর ঘামছে। হাত-পা কাঁপছে। শ্বাস নিতে মনে হয় কষ্ট হচ্ছে। চারপাশে বাতাশ এতো কম কেন?
কুকুরদুটো আবারো ঘড়ঘড় শুরু করলো।

০৮


“কি বললো ডাক্তার? সোবহান কেমন আছে?” প্রশ্ন করলেন কুমকুম।
“কিছু বলেনি। তেমন কিছু হয়নি ওর। তারপরেও ডাক্তার টিটেনাসের ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছে। খুব ভয় পেয়েছিলো সোবহান। আর কিছু না। ভয় আমিও পেয়েছি। অনেকদিন পর এতো ভয় পেলাম। ভেবেছিলাম কুকুরগুলো খেয়েই ফেলবে।”
“এইসব কুকুর বাড়িতে রাখতে হবেনা। বাচ্চা-কাচ্চা আছে। কখন কি হয় বলা যায়না। আচ্ছা, এগুলো কি পাগল হয়ে গেছে?”
“জানিনা। বোধহয় পাগলই হয়েছে। ওদের ভ্যাক্সিন দেয়া হয়েছিলো না?”
“হ্যাঁ। আমি নিজে দিয়ে নিয়ে এসেছি।”
“তাহলে সমস্যা কোথায়? ভ্যাক্সিন দেয়া কুকুর কখনো পাগল হয়েছে বলে তো শুনিনি। বাদ দাও তো। ঘুমাও। গতরাতেও ঘুমাতে পারোনি। শরীর খারাপ করবে।”
“হিসেব মিলছেনা কুমকুম। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।”
“হিসেব এখন মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো।”
“এখন আবার জুটেছে কুকুর। অসহ্য। এক গ্লাস পানি দাও তো। ঠান্ডা পানি।”

কুমকুম পানি নিয়ে এলো। পানিতে দুটুকরো বরফ ভাসছে। রহমান সাহেব এক চুমুকে পানি শেষ করলেন।

“আর আনবো?”
“নাহ, লাগবেনা। একটু পাশে বসবে?”

বিছানার কিনারায় বসলো কুমকুম। কুমকুমের হাত ধরলেন রহমান সাহেব। অনেক দিন পর তিনি শরীরের আকর্ষণ বোধ করছেন। তীব্র আকর্ষণ।

[চলবে]
--------
মানিক চন্দ্র দাস
manikchandradas10[অ্যাট]gmail[ডট]com


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই পর্বটা ছোট হয়ে গেল না!
__________
ত্রিমাত্রিক কবি

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় ত্রিমাত্রিক কবি,
আমার টাইপিং স্পীড ভাই খুবই খারাপ। এই দোষ টুকু মাফ করবেন----------------------------------------------মানিক

সৈয়দ আফসার এর ছবি

ভালো লাগল।
_________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!

__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় আফসার ভাই,
ধন্যবাদ। আশা রাখছি পরের কিস্তিগুলোও পড়বেন।
---------------------------------------------------------------------মানিক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনি দারুণ লেখেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় প্রকৃতিপ্রেমিক,
আপনার মন্তব্যে আমি সন্মানিত বোধ করছি। ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------------------মানিক

অতিথি লেখক এর ছবি

(Y)
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
-শিশিরকণা-

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় শিশিরকণা,
আপনার নামটা সুন্দর। লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
------------------------------------------------মানিক

চয়ন [অতিথি] এর ছবি

ভালো লাগছে পড়ে। পরের পর্বগুলোর জন্যে অপেক্ষায় থাকলাম।
-চয়ন

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রিয় চয়ন,
ধন্যবাদ। আশা করছি পরের পর্ব গুলোতেও আপনার মন্তব্য পাবো। ভালো থাকবেন।--------------------------------------------মানিক

Arif Khan এর ছবি

মাঝে মাঝে ধরন পাল্টানো...ভালোই জমতেছে...ভালো হচ্ছে মানিক......
আরিফ ভাই

অতিথি লেখক এর ছবি

আরিফ ভাই,
আপনার ভালো লাগতেছে জাইনা ভাল্লাগতেছে। ভালো থাইকেন।
----------------------------------------------------------মানিক

Samiran এর ছবি

সাধারণ এর মধ্যে অসাধারণ সুন্দর ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সমীরন। ভালো থাকবেন।
......................................................মানিক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।