সাবরিনা সুলতানা
আমার মা সব কিছুতেই একটু বেশি বেশি দুশ্চিন্তা করেন। নিজে অস্থির হয়ে পড়েন এবং ক্রমশ সেই অস্থিরতাকে অতি দক্ষতার সাথে আশেপাশে অন্যান্যদের মাঝে সংকক্রমিত করেন। তার বড় মেয়ে হওয়ার দরুন এই দু’টো গুণ আমার মধ্যে চমৎকার ভাবে গেড়ে বসেছে। খুব ছোটখাট সমস্যাতেও অতি মাত্রায় অস্থির হয়ে পড়ি আমি।
ইদানিং আমার অতি আদরের একমাত্র ছোট্ট বোন তাসনিন সুলতানা নীলাকে নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছি। বেশ ক’দিন ধরে কোন কাজেই ভালো করে মন বসাতে পারছি না। শরীর-মন কোনটাই ভালো নেই। অবশ্যি এবারের সমস্যটি এতো ছোটখাটও নয়। নীলা এবার সপ্তমশ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উঠলো এবং অষ্টম শ্রেণীকক্ষটি পড়েছে স্কুলভবনের দোতলায় । অভিভাবকগণের জন্যে এটি কোনভাবেই সমস্যা হতে পারে না! কিন্তু ওর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বাবা মাকে বিশেষভাবে ভাবায় সব কিছুতেই। আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই এটিতেও নেই কোন র্যাম্প অথবা লিফটের সুব্যাবস্থা।
গতবছরের শুরুতে এরচে’ বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো ওকে নিয়ে। কোন স্কুল কতৃপক্ষই ওকে ভর্তি করাতে রাজী হচ্ছিলেন না। কেউ কেউ পরামর্শ দিচ্ছিলেন ওকে বিশেষ স্কুলে ভর্তি করানোর জন্যে। নীলা শুধু মাত্র স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে না। কিন্তু ওর চিন্তাশক্তি আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতোই সচল। পরীক্ষায় প্রথম হতে না পারলেও বরাবরই ভালো রেজাল্ট করেছে, সবসময়ে প্রথম ছ’-সাতজনের মধ্যে থেকেছে। এইটুকুন বয়সেই এত ভালো ইংলিশ রপ্ত করেছে আমি নিজেই মাঝে মাঝে অবাক হয়ে উঠি। জেনে বুঝে কেউ বিশেষ করে তিনি যদি হয়ে থাকেন একজন ’মানুষ গড়ার কারিগর’ এমন কথা কিভাবে উচ্চারিত হতে পারে তার কন্ঠে আমি আজ অব্দি বুঝে উঠতে পারলাম না!
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অবশেষে ’চট্টগ্রাম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ’টির হালিশহরে এইচ ব্লকে অবস্থিত শাখার মহানুভব উপাধ্যক্ষ নীলাকে ভর্তি করাতে সম্মতি জানান। সপ্তম শ্রেণীকক্ষটি ছিলো দ্বোতলায়। নীলার জন্যে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠা কষ্টসাধ্য শুনে তিনি নিচতলায় বাথরুম সংলগ্ন একটি কেক্ষ নামিয়ে আনেন সপ্তম শ্রেণীকটি শুধুমাত্র নীলার সুবিধার্তে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন শিক্ষক-শিক্ষীকাসহ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মচারিগন।
এভাবেই চলতে থাকে । বছর শেষ হয়ে আসে একসময়ে । বছরশেষে আবারো আমার মায়ের চিন্তা- অষ্টম শ্রেণীকক্ষটি দ্বোতলায়, ”কতৃপক্ষ কি একজন ছাত্রীর জন্যে প্রতি বছর বিশেষ ছাড় দেবে !?” বার্ষিক পরীক্ষা শেষে উপাধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে মা জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রতি বছর বাচ্চারা একি ক্লাসরুমে পড়তে চায় না। আতঙ্কে আমি ভীষণ অস্থির হয়ে পড়ি। কারণ মায়ের চিন্তা স্কুলকতৃপক্ষ যদি শ্রেণীকক্ষ নিচতলায় নামিয়ে না আনেন নীলাকে ঘরেই শিক্ষক রেখে পড়াবেন। আর স্কুলের চাপ থেকে দূরে সরে গিয়ে ঘরে পড়ালোখার ভবিষ্যৎ কি হতে পারে তা আমারচে’ ভালো কে জানে!
”মাসকুলার ডিসট্রফি” নামক অসুখটি যখন ছোট্ট নীলার শরীরের প্রতিটি শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়ে তখন থেকেই আমি সবসময়ে একটা আতঙ্কের মাঝে থাকি। প্রতিমুহুর্তে মনে হতে থাকে এই বুঝি আমার জীবনের নিকষ কালো ছায়া ওর ওপরে এসে পড়লো....এই সব ছোটখাট সমস্যার কারণে আমার পড়ালেখাও সেই ছোট্টবেলায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। নীলাকেও যেনো একি পথের পথিক হতে না হয়। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন আছে.... সবার মতোই পড়ালেখা শেষ করে নিজের পায়ের নিচে শক্তভিত্তি তৈরি করবে। আমি যা করতে পারিনি ও তা করে দেখাবে!
অনেকটা সময় চরম দুশ্চিন্তায় কাটানোর পর অবশেষে উপাধ্যক্ষ মহদোয় রাজী হন শ্রেণীকক্ষ নিচতলায় নামিয়ে আনতে । অষ্টম শ্রেণীতে নীলাকে ভর্তি করানোর পর এখন একটু শান্তি। কিন্তু এভাবেও আর কতদিন! এই স্কুলে যতদিন আছে ততদিন হয়তো নিশ্চিন্ত। তারপর? অন্য কোথাও ওকে ভর্তি করানো যাবে তো! তাছাড়া আগামী বছর স্কুল কর্তৃপক্ষ আবারো নিলার জন্যে বিশেষ এই সুবিধেটি দেবেন তো !? কারণ কদিন আগেই আবারো তিনি আমাদের শুনিয়ে দিয়েছেন "প্রতিবছর বাচ্চারা একই ক্লাসরুমে পড়তে আগ্রহী হয় না" ।
যতদিন যাবে ওর শরীরের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এখনো ও নিজে হাঁটতে পারছে আর ক’দিন বাদে সেটাও সম্ভব হবে না, তখন? কোলে করে সবার সামনে দিয়ে ওকে আনা নেওয়ার সময়ে মানুষের তির্যক চাউনি এবং সেই সাথে কটু মন্তব্য যে কতটা ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক! সাধারণ মানুষ যদি এর মর্ম কিছুটা বুঝতো! এই অবস্থার কি কোন পরিবর্তন নেই?
প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প হলেও কিছু বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্যে আর তা হলো অন্ধ প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্যে ব্রেইলী পদ্ধতির বিশেষ ব্যবস্থা, বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্যে ইশারাভাষা পদ্ধতি এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধি শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে কিংবা তাদের বেড়ে উঠার স্বাভাবিক পরিবেশ গড়ে তোলার ল্েক্ষয রয়েছে বেশ কিছু বিশেষ বিদ্যা নিকেতন। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধি শিশুরা না পারে বিশেষ স্কুলে যেতে না পায় স্বাভাবিক স্কুলে যাওয়ার যথাযথ পরিবেশ। আমাদের দেশের মানুষের মাঝে একটা ধারনা বদ্ধমূল প্রতিবন্ধি শিশুরা বিশেষ স্কুল ছাড়া স্বাভাভিক স্কুলে অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে পড়তে পারবে না। এই ধারনাটি একেবারেই ভুল। শারীরিক প্রতিবন্ধি শিশুদের শুধুমাত্র সর্বোচ্চ প্রবেশের সুবিধেটুকু প্রয়োজন হয় আলাদা শিক্ষাব্যবস্থা নয়। লিফটের সুব্যবস্থা না থাকলেও শারীরিক প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নিশ্চিত করতে স্বল্প খরচে র্যাম্প বা ঢালু পথ এবং বাথরুম সংলগ্ন একটি শ্রেণীকক্ষ যদি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি করা যায় হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্যে অতি সহজেই প্রবেশগম্যতা তৈরি হয়। আমার জানা মতে সরকারি কিছু সংখ্যাক স্কুল এবং ঢাকায় দু’একটি বেসরকারি স্কুলে ছাড়া কোথাও র্যাম্প নেই। আমাদের দেশে শুধুমাত্র স্বাভাবিক প্রবেশগম্যতা নেই বলে শারীরিক প্রতিবন্ধি শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন যাপনের আনন্দ থেকে।
তবুও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো এগিয়ে এলো আমাদের দুঃশ্চিন্তামুক্ত করতে!
আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ’বি-স্ক্যান’ এর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানাই স্কুল কর্তৃপক্ষসহ প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত সকলকে। একবুক আশা নিয়ে প্রত্যাশা করি দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে নীলার মতো হাজারো শিশুর জন্যে শিক্ষার পরিবেশ উন্মুক্ত করবে।
মন্তব্য
মনটা খারাপ হল আপনার এবং আপনার বোনের ব্যাপারটি পড়ে। আপনাদের এই জীবন যুদ্ধে আমাদের সহযাত্রী হিসেবে পাবেন। দেশের বাইরে থাকি বলে সরাসরি কোন সাহায্য করতে না পারলেও মানসিক সহযোগীতা পাবেন সব সময়।
এক্ষেত্রে আপনার (এবং আমাদের সকলের) কয়েকটি করনীয় আছে।
১। অ্যাওয়ারনেস গড়ে তোলা
কোন একটি অর্গানাইজেশন গড়ে তুলুন। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় দৈনিকে লেখা দিন। কোন স্কুল এবং ব্যাপারে সহানুভুতিশীল এবং কোনটি নয় এটা চিহ্নিত করুন। তথ্যগুলো ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে।
২। আপনার বোনের জন্য একটা ক্যারিয়ার প্যাথ তৈরী করা
আপনার কী পড়তে চায়, কোথায় সেটা পড়তে পাঠালে সুবিধা হয় সেটা এখন থেকেই ঠিক করে ফেলুন। নতুন টেকনোলজীর মাধ্যমে কোন ধরনের সুবিধা এসেছে সেটা জেনে রাখুন এবং প্রয়োজনে সেটার ব্যবস্থা করুন। এই ব্লগটিতে দেখুন প্রচুর তথ্য আছে স্টেয়ার লিফট চেয়ারের। তাছাড়া এখানে দুটো সমাধান দেখতে পারেন - ১, ২।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অ্যাওয়ারনেস কেম্পেইন ইতিমধ্যেই শুরু করেছি আমি বাংলাদেশী সিস্টেমস চেইঞ্জ এডভোকেসী নেটয়ার্ক ’বি-স্ক্যান’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির ছত্রছায়ায়।
এটি মূলত অনলাইনে ফেসবুকে শুরু করেছিলাম চারটি লক্ষকে সামনে রেখে । ১. শিক্ষা, ২. সর্বত্র প্রবেশের সুবিধে, ৩. কর্মসংস্থান এবং ৪. সামাজিক মর্যাদা । যা কিনা আমাদের নাগরিক অধিকার অথচ আমরা বঞ্চিত ।
আমি খুব করে চেষ্টা করে যাচ্ছি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখা লেখি করে সচেতনতা সৃষ্টির । কিন্তু আমি বা আমরা গুটিকয়েক তো একাই পুরো বাংলাদেশকে সচেতন করার জন্যে যথেষ্ট নই । আমি মনে করি, এখানে আপনারা যারা আছেন কিংবা আমার এই লেখা যারাই পড়বেন তারা নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করে তুলবেন। প্রত্যেককেই যদি যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসে । নিজের মত করে চেষ্টা করে । আমাদের দেশেও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সম্ভব । আপনি দেশের বাইরে থাকেন তো কি হয়েছে! আমি জানি আপনি অনেক কিছু করতে পারেন । আপনিও পারেন লেখা লেখি করতে । অন্তত পক্ষে আপনার পরিচিত মহলে সচেতনতার বীজ ছড়িয়ে দিতে পারেন । যা কিনা তাদের থেকেও আরও ছড়াবে দিক থেকে দিকে .....প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে মানসিক সহযোগিতার চেয়ে খুব বেশি করে আমার এই সহযোগিতাটুকুই দরকার।
যাই হোক, আবারো ধন্যবাদ লিঙ্কগুলোর জন্যে।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
একটু সচেতনতায় অনেক বড় সমস্যারও সমাধান হতে পারে। আপনার সাথে পরিচয় না থাকলে আমার জানা হতো না, শরীরের এই অসু্স্থতা নিয়েও কী দৃঢ়তার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন আপনি! আবারো বলি, সবসময় পাশে আছি।
সুমিমা ইয়াসমিন
অসংখ্য ধন্যবাদ সুমিমা ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
"প্রতিবছর বাচ্চারা একই ক্লাসরুমে পড়তে আগ্রহী হয় না" ।
নিচতলায় শ্রেনী কক্ষ কি একটা থাকে নাকি ? একই রুমে পড়তে হবে কেন ?সদিচ্ছা থাকলে নবম শ্রেনীর শ্রেনীকক্ষও নিচতলারই আরেকটা রুম হতে পারে ।বোঝা যাচ্ছে প্রধান শিক্ষক মহৎ । বেসরকারি স্কুলেপ্রভাবশালী কিছু অভিভাবকের চাপে “মহৎ”থাকা যায় না ।
ঘরে বসিয়ে প্রাইভেটে পরীক্ষা দেয়াটা ভালো সিন্ধান্ত হবে না ।
তবে তার কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় জীবন যে সমস্যাবহুল হবে এতে সন্দেহ নেই ।
তাসনিন সুলতানা নীলার জন্য শুভকামনা ।
আপনার মায়ের দুশ্চিন্তা যথার্থ ।
স্কুলটিতে টয়লেট সংলগ্ন শ্রেণীকক্ষ একটি-ই।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
আরেকটা তথ্য উল্লেখ করতে ভুলে গেছি ।
স্টিফেন হকিং নতুন নতুন তত্ত্ব দিয়ে দুনিয়া মাতাতে পারলে তাসনিন সুলতানা নীলা ও পারবে ।ছাত্রী ভালো ,পড়াশুনায় আগ্রহ আছে সব দিকই ইতিবাচক শুধু সমাজ থেকে সুযোগসুবিধা পাচ্ছে না ।তাসনিনের মহিলা স্টিফেন হকিং হতে বাধা থাকার কথা নয় ।
দাঁড়ান আমার একজন প্রভাবশালী সহপাঠীর কথা মনে পড়েছে-যিনি এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকুরি করেন ।দয়া করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির
সভাপতির মোবাইল/ফোন নাম্বার দেয়া যাবে কি ?
স্টিফেন হকিং এর কথা খুব ভালো করেই জানি । কারণ তিনি এবং আমাদের দু' বোনের রোগটির মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই।
আপনি কিছু করতে চেয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো । তবে একটি কথা আপনাকে জানাতে চাই, আমরা অনেক কষ্টে চট্টগ্রামে একমাত্র এই স্কুলটি পেয়েছি যারা কিনা সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে । সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করানোর জন্যে অনেক স্কুলের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমার বাবা মা ব্যার্থ হয়ে অবশেষে এই স্কুলের মাননীয় অধ্যক্ষকে রাজি করাতে সমর্থ হয়েছিলেন । নীলা নিজেও এই স্কুলে মোটামুটি নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছে । আমাদের ইচ্ছে নীলা এই স্কুলেই ওর পড়ালেখাটা শেষ করে নিক । তাই ওপর মহল থেকে যদি আপনি কিছু করতে পারেন এই বিষয়টি মাথায় রেখে করলে কৃতজ্ঞ থাকব ।
স্কুলের একটি নাম্বার জানি, তা হলো - ০৩১২৫১০২৮৮
ধন্যবাদ
সাবরিনা সুলতানা
স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ, যে বাচ্চারা প্রতি বছর একই ক্লাসে বসতে চায় না তাদেরকে সহপাঠীর প্রতিবন্ধকরা পেরোতে সাহায্য করতে শেখান। এটাও শিক্ষারই অংশ। আজ একজন প্রতিবন্ধী সহপাঠীর জন্য ছাড় দিতে শিখলে জীবন চলার পথে প্রতিবন্ধীদের জন্য তারা ভাবতে শিখবে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
Disable না বলে Differently able বলাটাই উচিৎ, এক ক্লাসে এক শিক্ষিকা বলেছিলেন- বেশ যৌক্তিক মনে হয়েছিল আমার কাছে।
'প্রতিবন্ধি' শব্দটা ব্যবহার না করে আর কোন শব্দ কি ব্যবহার করতে পারিনা আমরা?
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
'প্রতিবন্ধি' শব্দটা ব্যবহার না করে অন্য কিছুই বলা উচিত যেমন বাইরের দেশগুলোতে সম্মান জানিয়ে বলা হয় Disable না বলে বলা হয় - Person with disability অথবা People with Disability.
ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
Disable শব্দের আরো সুন্দর একটি ব্যবহার আমি দেখেছি, ইংল্যান্ডের ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেড ক্লাবের গ্যালারীতে। প্রতিবন্ধীদের জন্য কতৃপক্ষ বিশেষ আসন রেখেছে যেখানে বসে প্রতিবন্ধীরা বিনামূল্যে খেলা দেখতে পারবে। সেই জায়গাটার নাম হলো 'এবিলিটি স্কয়ার' ।
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
এবিলিটি স্কয়ার !!! বাহ! দারুন তো ....
আমাদের দেশেও একদিন হবে আশা রাখি
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
বাহ্! এটাতো জানতাম না!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপনার মন্তব্যটি খুব ভাল লাগল। মিশনারি স্কুলগুলোতে একসময় এই বিষয়গুলো নিয়ে ক্লাসে আলোচনা হত। এখন হয় কিনা জানি না।
ফাহিম হাসান
একমত আপনার সাথে । আমরাও সেটি-ই চাই । মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
সহমত। বুনোহাঁসের সাথে।
--------------------------------------------------------------------------------
নীলার জন্য শুভ কামনা |
আর স্বাগত জানায় এই উদ্যোগকে |
ধন্যবাদ সাবরিনা |
এগিয়ে যাও সামনের দিকে ......
-সুজন সুপান্থ
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ সুপান্থ ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
নীলার জন্য শুভকামনা। পাশে আছি।
চট্টগ্রাম গেলে অবশ্যই দেখা করে আসবো ওর সাথে।
...........................
Every Picture Tells a Story
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
শুভকামনা রইলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শুধুই শুভকামনা!!! আমার ধারণা আপনি ডকুমেন্টরি তৈরী করেন।
আপনাকে কি আমি অনুরোধ করতে পারি, জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে একটি ডকুমেন্টরি বানানোর জন্যে !?
তথ্য দিয়ে আমি সহযোগিতা করতে পারব বলে আশা করছি ......
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
নীলার জন্য শুভকামনা রইল।
অবশ্যই।
আপনার আগের লেখাতেও বলেছিলাম যে আমি নিজেও সামান্য প্রতিবন্ধকতা নিয়ে স্কুল জীবন শেষ করেছি। শারিরীক সামান্য ক্রটির জন্য একজন শিক্ষক নাজেহাল করতেন ড্রিল ক্লাসে, আমি ঢাকার ল্যাবরেটরি স্কুলে পড়তাম, তখন এটাকে অন্যতম সেরা একটা স্কুল বলে ধরা হোত। আমাদের সেই ড্রিল স্যার স্কুলের অন্যান্য স্যারদের তুলনায় অনেক শিক্ষিত ছিলেন এবং পরে নিজের যোগ্যতা বলে শিক্ষাবিভাগের বড়কর্তাও হয়েছিলেন। কিন্তু ১০ বছরের বালককে উঠতে বসতে "ল্যাংড়া" বলতে তার শিক্ষায় বাঁধেনি।
এই সমস্যা আমি খুব ভালো মতে বুঝতে পারি যেহেতু সামান্য হলেও আমি নিজেও এর ভেতর দিয়ে গিয়েছি। কেউ কেউ প্রতিবন্ধকতাসহ মানুষদের জন্য কিছু "ফেভার" দেন, কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে এঁদের একটা অধিকার আছে সেটা রাষ্ট্রসহ সবাই মোটামুটি ভুলে বসে আছে।
সামান্য কয়েকটা সুযোগ-সুবিধার অধিকার ওঁদের দিলে ওঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ আত্মনির্ভর হতে পারবে সেটা সুনিশ্চিত। এটা সম্ভব সামাজিক এওয়্যারনেস ও সরকারের সহযোগিতার মাধ্যমে। আমি একবার শুনেছিলাম বর্তমান সরকার কিছু আইন করতে পারেন এঁদের জন্য।
আপনি এই বিষয়ে লেখালেখি চালু রাখুন।
এই কাজটার জন্য সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সুন্দর মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
আপনি স্কুলে যেই সমস্যায় পড়েছিলেন সেই একই সমস্যায় আমিও পড়েছিলাম একসময়ে । ক্লাস ওয়ানে এবং টু'তে পড়াকালীন সময়ে খুব বেশি কষ্ট হত ড্রিল করার সময়ে । তখন অনেক ছোট ছিলাম । এত কিছু বুঝতাম না । শুধু বুঝতাম ড্রিল করতে আমি একটুও ফাঁকি দিতে চাই না । কিন্তু উঠতে -বসতে, হাত এবং পা নাড়াতে খুব কষ্ট হত । তাই আমি ড্রিল করার সময় এলেই লুকিয়ে পড়তে চাইতাম এবং আমাকে খুঁজে পেতে বাধ্য করা হত ড্রিল করতে । আমি আঁকাবাঁকা করে হাঁটতাম বলে বকুনি শুনতে হত।
তখন জানতাম না আমার রোগটা সম্পর্কে এত কিছু । পড়ে যখন ভালো করে বুঝলাম, হয়ে পরলাম ঘর বন্দী ।
আমি কোনভাবেই চাই না আমার জীবনের ছায়া আমার ছোট বোনটার ওপরে পড়ুক ।
আমাদের দেশের মানুষের মানসিকতাও অবশ্যই বদলাবে । কিন্তু তার জন্যে মানুষের কটু মন্তব্যের ভয়ে দেশের আনাচে কানাচে লুকিয়ে থাকা হাজার নীলাকে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে । স্বাভাবিক জীবন যাপনের চেষ্টা করতে হবে । নীলার মতোই আঁকাবাঁকা পায়ে হেঁটে যখন আরও অনেক নীলা স্কুলে যেতে শুরু করবে মানুষের মানসিকতা তখন আপনাতেই পরিবর্তন হয়ে যাবে । কিন্তু নীলার বাবা -মাদেরও সচেতন হতে হবে । আর তার জন্যে চাই এই বিষয়ে প্রচুর প্রচারণা..... লেখালেখি .....
সাবরিনা সুলতানা
আপনি দেখছি আমার একেবারেই নিকট প্রতিবেশি।
নীলার জন্য অনেক অ-নে-ক শুভকামনা!!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তার মানে আপনি আমাদের চাটগাঁয়ের মেয়ে!
বাহ! তবে সম্ভবত, আমার ছোট বোন আপনার প্রতিবেশী আমি নই ।
আমি থাকি নাসিরাবাদ এলাকায়
যাই হোক, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
ভালো থাকুন।
নিজে সচেতন হন ।
অন্যকেও সচেতন করে তুলুন।
সাবরিনা সুলতানা
তাসনিন-এর পড়ালেখা কখনো বন্ধ হবে না। চিন্তার কিছু নেই। আমি অলস বলে সবাই অলস নয়।
কিন্তু আপনার মত অলস মানুষ-ই আমাদের প্রয়োজন অরণ্য
ভালো থাকুন
সাবরিনা সুলতানা
বোন নীলার জন্য শুভকামনা।
ভালো থাকুন।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
প্রতিবন্ধীদের অনেকেই দেশের বোঝা বলে। কিন্তু ওরা আমাদের বোঝা না। আমাদের একটু সাহায্য ওদের অনেকটা পথ এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের সহযোগিতা ওদের কে দেশের সম্পদ করে তুলবে।
নীলার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।
নীলার জন্য খারাপ লাগছে খুব।
আল্লাহ্ ওর সাথে থাকুক সবসময়,এই দোয়াই রইলো।
আপনার সংগঠনের পক্ষ থেকে জাফর ইকবাল স্যারের সাথে দেখা করে পুরো বিষয় টা নিয়ে কথা বলে দেখতে পারেন।এই বিষয়ে দেশব্যাপি জনসচেতনামূলক কিছু করতে চাইলে এরকম কাওকে সাথে পেলে অনেক ভালো হয়।
ভালো থাকুন।।
নতুন মন্তব্য করুন