আমরা প্রায়ই বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ‘সোজা বাংলায়’ কথাটি ব্যাবহার করি। এই সোজা বাংলা যে আসলে কি, আর সেটি কার জন্য সোজা আর কার জন্য কঠিন তার কোন কুলকিনারা মনে হয় কারোরই জানা নেই। সোজা বাংলার বিষয়টি এই জন্য অবতারণা করা যে, ইংরেজী ভাষার সহজ একটি সংস্করণ কিন্তু আছে। শুধু আছেই না, তা দিয়ে রীতিমত লেখালিখি করা হয়।
কদিন আগেই উইকিপিডিয়াতে ঘোরাঘুরি করতে করতে দৈববশে বেড়াল বিষয়ক একটি প্রবন্ধের মুখোমুখি হলাম। বেড়ালের মত এমন নিরীহ প্রাণীকে নিয়ে যে অঙ্কের এমন জটিল প্যাঁচ লাগানো যায় আমার ধারণাতেও ছিলনা। কয়েক মিনিট গুঁতোগুঁতির পরে যখন চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলাম তখন দেখলাম পাশের অনুবাদগুলোর মধ্যে সহজ ইংরেজীর একটি লিঙ্ক। সেখানে একনজর বুলাতেই জিনিষটা বেশ সহজবোধ্য হয়ে গেল।
বিষয়টা এইরকম যে পরীক্ষার নিমিত্তে একটি ঘরে বিষাক্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থ একটি পাত্রে রেখে সেখানে একটি বেড়ালকে প্রবেশ করানো হল। এখন তেজস্ক্রিয় পদার্থটি কিছু সময় পরে বিক্রিয়া করে বিকিরণ ঘটাতে পারে যার ফলে বেড়ালের মৃত্যু হতে পারে। এখন এক ঘন্টা পরে আমাদের জানা নেই যে বেড়ালটি জীবিত না মৃত। এই সময়ে বিক্রিয়া নাও হতে পারে এবং বেড়ালটি বাঁচতে পারে আবার বিকিরণের ফলে মারাও যেতে পারে। কিন্তু দরজা খুললেই পরিক্ষাটি সমাপ্ত হয়ে যাবে। ফলে বেড়ালের স্বাস্থ্যের খবর জানা যাবে কিন্তু পরীক্ষাটি শেষ হয়ে যাবে। কোয়ান্টম পদার্থবিজ্ঞানের অনিশ্চয়তা বোঝানোর জন্য এটি একটি বেশ বিখ্যাত মনসপরীক্ষা। এখন আপনারাই খুঁজে দেখেন [url=http://simple.wikipedia.org/wiki/Schr%C3%B6dinger's_cat]অজ্ঞানীদের উই[/url]কি আর [url=http://en.wikipedia.org/wiki/Schr%C3%B6dinger's_cat]গিয়ানীদের উইকি[/url]।
চার্লস কে ওজেন নামের এক দার্শনিক ও ভাষাবিদ ১৯৩০ সালের দিকে বেসিক ইংলিশঃইন্ট্রোডাকশন টু রুলস এন্ড গ্রামার নামের একটি বই লেখেন তাতে সীমিত আকারে ইংরেজী শেখানোর বিশেষত বিদেশীদের ইংরেজী শেখানোর জন্য তিনি মৌলিক ইংরেজীর ভিত্তি প্রস্তাব করেন। এই সহজ ইংরেজীতে সাকুল্যে ৮৫০ খানা শব্দকে তিনি স্থান দিয়েছেন। যেসব শব্দ প্রতিদিনের ভাবপ্রকাশের জন্য সর্বত্র ব্যাবহার হয়। এর মধ্যে শপাঁচেক ক্রিয়া, শদুয়েক বিশেষ্য, শখানেক বিশেষণ আর গোটা পঞ্চাশেক বিপরীতের সমাহার। শব্দের তালিকার লিঙ্ক এখানে দেয়া হল।এই লিস্টি দেখলে নিজেরে বেশ গিয়ানী গিয়ানী মনে হয়। ভদ্রলোক মরার আগে আরো বেশকিছু শব্দ নিয়ে আরেকটু বৃহত্তর শব্দের তালিকা করে গেছেন যেগুলো আরেকটু উৎসাহী শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্য।
সহজ এই ইংরেজী শুধু তাত্বিকভাবেই সীমাদ্ধ নেই বরং উইকিপিডিয়ার আলাদা একটি ভাষা হিসেবে এটিকে লালন করা হয় এবং বহু দাঁতভাঙ্গা প্রবন্ধের সহজ ব্যাখ্যা পাবেন এই ভাষার লিঙ্কে গেলে।
বিদেশীভাষীদের জন্য বাংলা শেখার খুব বেশী মানসম্মত উপকরণ অনলাইন অথবা অফলাইন কোথাওই নেই। সোজা বাংলার একটি কাঠামো কেউ দাঁড় করালে হয়তো অনেকেরই জন্য সহজ হবে এই মিষ্টি ভাষার রস আস্বাদনের।
এখানে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন এই বেড়াল বিষয়ে আগ্রহের কারণ। বেশী ব্যাখায় না গিয়ে সরাসরি ভিডিও দিয়ে দিলাম।
আমাদের দুর্ভাগ্য যে যথেষ্ট স্থুলমস্তিষ্ক না হলে ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব। দেখি আর হিংসা করি। এটি নির্বাচিত হবার আগে গুগলের ক্যাম্পাসে ওবামার ইন্টারভিউর একটি অংশ।কান্নাকাটি করতে চাইলে ডিজিটাল বাংলাদেশের সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন।
ফরিদ
বইমেলা
মন্তব্য
হুমম। পড়লাম।
বিষয়টা আসলেই ভাববার মতো। তবে এই ৮৫০ টা শব্দ শিখলেই ইংরেজিতে মোটামুটি চালিয়ে নেয়া যাবে, এটা হয়তো আমাদের মতো অ-ইংরেজদের জন্য ! তেমনি অ-বাঙালির জন্য সহজ বাংলার বিষয়টা যৌক্তিকভাবে মেনে নেয়া গেলেও মাতৃভাষী বাঙালির জন্যে সহজ বাংলার বিষয়টা নিয়ে কী বলতে চাচ্ছেন তা কিন্তু আমার কাছে পরিষ্কার হচ্ছে না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ব্যাবহার সীমিত হলেও এক্কেবারে নাই বললেও চলে
বাচ্চাকাচ্চাদের বই লেখা ক্ষেত্রে। ৪-৮ বছর বয়সীদের বই লেখা যেতে পারে।
স্বল্পশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য নির্দেশিকা অথবা বইয়ের জন্য সার্বজনীন ভাষা হতে পারে
বাংলা শিখতে আগ্রহীদের জন্য বই এই নয়া বাংলায় হতে পারে
ফরিদ
কথা বলার সময় যদি কেউ না বোঝে তো বলা হয়- ক্যান, 'সোজা বাংলায়'ই তো বলছি- সেই সোজা বাংলা নিয়ে সোজা-সাপ্টা কথামালা বেশ ভাল লাগলো। বাংলা কে নিয়ে আরো লেখা আসুক এই প্রত্যাশা। শুভকামনা।
নতুন মন্তব্য করুন