কিছু কিছু সম্পর্ক থাকে ব্যাখ্যাতীত। ঠিক যুতসই কোন নাম খুঁজে পাওয়া ভার। এরকম একটা সম্পর্কের বেড়াজালেই আটকে ছিলাম এতদিন। আটকে যে ছিলাম সেটাও এদ্দিন বুঝতে পারিনি।
শুনলাম এক বন্ধুর কাছ থেকেই। ওর এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে। প্রথম দু'ঘন্টায় খবরটা শুনে আমার মধ্যে তেমন কোন চাঞ্চল্য আমি নিজেও লক্ষ্য করিনি। কাজ করে গেছি অফিসে। ঘাড়টা গুঁজে। ঠিক প্রতিদিনকার অভ্যাসমতই কলিগরা মিলে দুপুরের খাবার খেয়েছি। সন্ধ্যাবেলা প্রায় ঠিক একই সময়ে বাড়িও ফিরে এসেছি।
বাড়ি ফেরার পরেই একটু একটু করে অস্থির হতে শুরু করলাম। মনটা শুধু ঘুরে ফিরে বছরখানেক আগের দিনগুলোয় ফিরে যেতে চাইল।
ওর সাথে আমার প্রথম দেখা অন্য এক বন্ধুর কল্যাণে। সে আসলো। তার প্রিয় আইসক্রীম ফ্লেভার ছিল সুইস চকোলেট। অনেক কথা বলছিল ও সেদিন। আমিও বলছিলাম। ও তো আমি সবসময়েই বলি; নতুন কিছু নয়। খানিক ঘোরাঘুরি শেষে আমার দুই বন্ধুই বিদায় নিল। সেদিন রাতে আমি আর একবারও ওকে নিয়ে চিন্তা করিনি।
ওর সাথে প্রথম দেখার ঐ সময়টায় আমি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই অস্থির ছিলাম। হতে পারে আর মাত্র অল্প কিছুদিন পরই বাবা-মা, বন্ধু-বান্ধব ছেড়ে দূরদেশে পাড়ি জমাতে হবে ভেবেই। দু'দিন বাদে কী মনে করেই তাকে খুঁজলাম। হ্যা, ফেসবুকেই খুঁজেছিলাম; পেয়েও ছিলাম।
যোগাযোগ হল। সাড়া পেলাম ওপাশ থেকে। ঐ কটা রাতে অনেকগুলো মুঠোবার্তাই তাকে পাঠিয়েছিলাম। পেয়েছিলামও সমানুপাতিক হারেই। হৃদ্যতা বাড়তে থাকলো।
ওর সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পর, সতের দিনের মাথায় আমি চলে আসি। এই সতের দিনে আমাদের দেখা হয়েছিল পাঁচবার। যে বন্ধুটি আমাদের দেখা করিয়ে দিয়েছিল সে সাথে ছিল মাত্র একবারই।
ওর পেপের জুস পছন্দ ছিল। কোন খাবারের দোকানে বসলেই আগে খবর নিত এখানে 'পাপায়া' জুস পাওয়া যায় কী না। এর মাঝেই একদিন, হঠাৎ করেই ওর সাথে দেখা করেছিলাম। মেয়েটা আমাকে দেখে ভীষণ অবাক হয়েছিল।
যেদিন আমি চলে যাবো, সেদিন দুপুরের দিকে দেখা করেছিলাম। তেমন কিছুই বলিনি। স্বাভাবিক কথাবার্তা। চলে আসার সময় হাত মিলিয়েছিলাম মনে পড়ে। ঐ একবারই তার ছোঁয়া পেয়েছিলাম। ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে সে রিকশার হুড উঠিয়ে চলে গেল। আমিও চলে এলাম। এখানে।
এখানে আসার পর পরও কিছুদিন আমাদের যোগাযোগ ছিল বেশ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবেই। ধীরে ধীরেই থিতিয়ে আসতে লাগলো সব কিছু। আমিও অভ্যস্ত হয়ে উঠলাম। সেও অভ্যস্ত হয়ে গেল আবার তার পরিচিত পৃথিবীর সাথে।
আমাদের আরও একবার দেখা হয়েছিল। আমি অল্প ক'দিনের ছুটিতে দেশে যখন আসলাম তখন। ততদিনে আমাদের সম্পর্কটা অন্যরকম হয়ে গেছে। আমরা তুই-তোকারি করি এখন। দু'ঘন্টার জন্যই মাত্র আমাদের দেখা হয়েছিল। ও সাথে করে ওর এক বন্ধু নিয়ে এসেছিল। আমরা কেউই অতটা সহজ আর হতে পারিনি এক অন্যের সাথে।
আমি জানতাম ওকে আমি পছন্দ করি। ভালোবাসি কী? আসলে, অতটা তলিয়ে দেখিনি কখনও। হয়তবা ভয়েই দেখিনি। ভালোবাসলে পরে হারানোর ভয় থাকে যে।
তুমি জানলে না। তুমি জানো না।
ভালো থেকো।
মন্তব্য
ভালোবাসা সব সময় দূরে থাকা ভালো।
ধন্যবাদ।
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
__________♣♣♣_________
না-দেখা দৃশ্যের ভেতর সবই সুন্দর!
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ কবি।
এই জন্যই সব বলে ফেলতে হয়, লুকিয়ে রেখে লাভ কী?
ঠিকই পিপিদা। কিন্তু কিছুই যে বলার ছিল না।
এমন দোলাচালে থাকলেই হারাতে হয়!
সে তো আমারই হয়নি কখনও। আমিও তার হইনি।
এগুলোকেই বোধহয় ভালোলাগা বলে। ভালোবাসাটা তার পরের পর্যায়। আপনার লেখাটা ভালো লাগলো।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ভালোলাগা? মনে হয় তাইই হবে।
ভালোবাসা প্রকাশ করলে ও তো হারাতে হয় । তার চেয়ে এই ভালো । ভালো থাকুক সে, ভাল থাকুক যে হারিয়েছে , ভাল থাকুক যারা হারিয়ে গেছে ।
লেখাটা দারুণ
বাবুই
অনেক ধন্যবাদ। আমরা সবাইই ভালো থাকি।
ভালো লাগল। খারাপ ও লাগল অনেক।
সজল
ধন্যবাদ।
ব্যাখ্যাতীত সম্পর্কগুলো ব্যাখ্যানুকুল সম্পর্কের চেয়ে সুন্দর।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আসলেই তাই!
নতুন মন্তব্য করুন